গল্পঃ কদমফুল
.
রাশেদ অনেকক্ষণ ধরে নদীর পাড়ে বসে আছে। সামনে অবশ্য চিত্রাও আছে। রাশেদ সময় পেলেই এখানে চলে আসে চিত্রাকে দেখতে। মাঝে মাঝে অফিস ফাঁকিবাজি করেও এখানে আসে। চিত্রা বলল ' অনেক দেখছনা? এবার যাও বাসায় যাও ' রাশেদ একটু চুপ করে থাকল। তারপর বলল ' মাত্র তো আসলাম। তাছাড়া আমার অনেক কথা বাঁকি আছে বলার ' চিত্রা ভেংচি দিয়ে বলল ' তোমার কথা জীবনেও শেষ হবেনা। আমার বাসায় যেতে হবে। জানই তো কত জনকে ফাঁকি দিয়ে এখানে আসতে হয়। ' রাশেদ বলল ' জান তুমি দেখতে অনেক পঁচা? ' চিত্রা চোখ ঘুরিয়ে বলল ' হ্যাঁ আমি জানি আমি দেখতে পঁচা। এজন্যই তো।দিনের মধ্যে তিনবার পাগলের মত ছুটে আস আমাকে দেখতে। কে বলে আসতে? আমি কোনদিন বলি? ' রাশেদ হেসে বলল ' তুমি বললেও কি আর আমি আসব? আমার যেদিন থেকে ইচ্ছে হবেনা সেদিন থেকে আর আসব না ' চিত্রা আবারো ভেংচি দিয়ে বলল ' আমি বললে আসবে না? ' রাশেদ এবার কিছু বললনা। কিছুক্ষণ পর ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে দেখল সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। রাশেদ বলল ' চিত্রা তোমার হাতটা খুব সুন্দর ' চিত্রা হেসে বলল ' আমার যেতে হবে। আর পঁচা মেয়ের হাতও পঁচা হুঁ। ' রাশেদ আবারো আবদার করল ' চিত্রা একবার ধরি না? আচ্ছা শুধু একটা আঙুল? ' চিত্রা বলল ' তুমি আমাকে পঁচা বলছ আজকে। আমি বাসায় যাব। আরেকটু দেরী হলে মা হাজারটা প্রশ্ন করবে। ' রাশেদ মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে আছে। চিত্রা মাথায় কাপড় দিয়ে হাঁটা শুরু করল। কি ভেবে একটু পথ গিয়ে আবারো রাশেদের সামনে এসে জিজ্ঞেস করল ' আচ্ছা তোমার না বেতন বাড়ার কথা ছিল? সেটার কি হল? ' রাশেদ বলল ' বলবনা। তুমি আমাকে একটা আঙুলও ধরতে দাওনি ' চিত্রা বিরক্ত হয়ে বলল ' উফ বল তো আমার যেতে হবে কখন থেকে বলছি। আর শোন এতই হাত ধরার ইচ্ছে থাকলে বিয়ে করে বউয়ের হাত ধরে বসে থেক। শুধু হাত কেন চোখ, মুখ, নাক সব। ' রাশেদ এবার কাঁধে ব্যাগ তুলল। তারপর বলল ' সামনের মাস থেকে বাড়বে। বেতন বাড়লেই কি আর না বাড়লেই কি? আমার এত টাকা লাগেনা। ' চিত্রা ' তাহলে আর কোনদিন বিয়ে করোনা ' বলে হাঁটা শুরু করল। রাশেদ দাঁড়িয়ে আছে। নদীর পাশেই চিত্রাদের বাড়ি। রাশেদের বাড়ি এখান থেকে অনেক সময় লাগে যেতে। দুজনের দেখা হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে। সে অনেক কাহিনী।
...
চিত্রা অনেক চিন্তায় আছে সকাল থেকে। তার ডায়েরীটা আর খোঁজে পাচ্ছেনা। ডায়েরীটার জন্য তার ভয় হচ্ছেনা কিন্তু ডায়েরীর ভীতরে কিছু চিঠি আছে তা যদি বাসার কারো চোখে পরে তাহলে তার খবরই আছে। চিত্রার মনে হচ্ছে ঝুমুর নিলেও নিতে পারে। ঝুমুরকে ডেকে চিত্রা জিজ্ঞেস করল ' কিরে তুই খাটের নীচ থেকে আমার ডায়েরীটা নিয়েছিস? ' ঝুমুর ভেংচি দিয়ে বলল ' অ্যাঁ তোমার ডায়েরী নিতে আমার বয়েই গিয়েছে। তোমার ডায়েরী দিয়ে আমার কোন কাজ নেই। ' চিত্রা বলল ' তাহলে সকাল থেকে ডায়েরীটা পাচ্ছিনা কেন? আমার খাটের নীচ থেকে কে আর ডায়েরী নিবে? বাসায় কি ডায়েরী চোর এসেছে নাকি? ' চিত্রার চোখেমুখে ভয় দেখতে পাচ্ছে ঝুমুর। হেসে বলল ' আপু তোর চোখে কিন্তু ভয় দেখাচ্ছে। কাহিনী কিন্তু সুবিধের মনে হচ্ছেনা। কি আছে গো আপু ডায়েরীতে? ' চিত্রা রেগে বলল ' সর তো সবসময় ফাইজলামু ভাল লাগেনা। ' ঝুমুর মুখ বাঁকা করে রুম থেকে যেতে চাইল। চিত্রা দাঁড় করিয়ে বলল ' শোন না ঝুমুর। আমার ডায়েরীটা খোঁজে দে না। আমি তোকে টাকা দিব। যদি ডায়েরীটা দাদার হাতে যায় তাহলে আমি শেষ রে আপু। ' ঝুমুর আবারো ভেংচি দিয়ে বলল ' টাকা দিয়ে ঝুমুরকে কিনতে চাচ্ছ না? তুমি কিন্তু আমাকে অপমান করলে। ' চিত্রা বলল ' না রে। তুই তো আমার লক্ষ্মী আপু। আচ্ছা যা আমার ডায়েরী আমি খোঁজে নিব তোর খোঁজে দেয়া লাগবেনা। ' ঝুমুর বলল ' ঢং দেখ। ডায়েরীটা যদি দাদা ভাইয়ের হাতে পরে তাহলে কি যে হবে তা তো তুমি ভাল করেই জান? আমি দেখছি খোঁজে। এখন আপাদত আমাকে পাঁচশ টাকা দাও। ভেবনা ঘোষ নিচ্ছি ঠিকাছে? ছোট বোন হিসেবে চাচ্ছি। ' চিত্রা অসহায়। মেজাজ প্রচণ্ড গরম তবুও নরম গলায় কথা বলতে হচ্ছে। ' আমার কাছে পাঁচশ টাকা নাইরে আপু এখন এই নে তিনশ আছে। পরে আম্মুর কাছ থেকে নিয়ে দিবনে। এখন আমার ডায়েরীটা খোঁজে দে না ' ঝুমুর হাত থেকে টাকা নিয়ে বলল ' মনে থাকে যেন ' চিত্রা ঝুমুরের দাদা আশেক রহমান। খুব জেদি যে তা না। কিন্তু যদি রেগে যায় তাহলে তুমুল কাণ্ড বেজে যায়। বিয়ে করেছে তিন বছর। একটা ছেলেও আছে রোদ নামের।
...
রাশেদের মা রান্নাঘরে রান্না করছে। হাতে কয়টি কদমফুল নিয়ে রাশেদ রান্না ঘরে গেল। 'আম্মুউ' বলে ডাক দিল। রাশেদের মার বুঝতে অসুবিধে হলনা ছেলের কিছু দরকার। বয়স তো আর কম হলনা। এই সংসারে তার প্রায় দুই যুগ। রাশেদের মা বলল ' হুম বল। কদমফুল রান্নাঘরে এনেছিস কেন? ' রাশেদ কদমফুল তার মায়ের হাতে দিয়ে বলল ' তোমার জন্য ' রাশেদের মা হাসছে। তারপর বলল ' ধন্যবাদ ' রাশেদ মাথা কুঁচকাচ্ছে। মায়ের মন বুঝতে বাঁকি থাকে কি? রাশেদের চোখেমুখে যে কি তা রাশেদের মা ভাল করেই বুঝতে পারছে। রাশেদের মা বলল ' নাম কি মেয়েটার? রাশেদ এমন একটা ভাব করল মনে হল আকাশ থেকে পরেছে। রাশেদ বলল ' মা আমি আর মেয়ে? আমি তোমার ছেলে না? তুমি জাননা তোমার ছেলে কেমন? ' রাশেদের মা হাসতেই থাকল। তারপর বলল ' আমার ছেলে বলেই তো বলছি। ' রাশেদ এবার রস লাগিয়ে বলল ' আচ্ছা মা তুমি এরকম কেন? তিন সন্তানের মা হয়েছ এখনো কত ইয়াং তুমি। বড় আপুর সাথে দাঁড়ালে তো বুঝাই মুশকিল কে মা কে মেয়ে? আর খালারা তো বুড়ী হয়ে গিয়েছে আর তুমি এখনো অনেক শক্তিশালী। ' রাশেদের মা বলল ' সর তো। কি বলার জন্য এসেছিস সেটা পারলে বল নাহলে যা। আমার অনেক কাজ আছে। আর শোন ডিম খাবিনা? ' রাশেদ আবারো মাথা কুঁচকিয়ে বলল ' ডিম তো খাবই। আমি কি বলছি সেটা শোন ' রাশেদের মা রাশেদের দিকে তাকিয়ে বলল ' নে রান্না বন্ধ করে দিলাম। তোর বাপে এসে যদি বকে তাহলে কিন্তু সব দোষ দিব তোর। বল কি বলবি? ' রাশেদ ফোন বের করে চিত্রার ছবি দেখিয়ে বলল ' দেখ মা। আমি এই মেয়েটাকে চিনি। রান্নায় তোমার মত বুঝছ? আর কাজকর্মে তো সেই পটু ' রাশেদের মা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল ' বুঝলাম সুন্দরী কাজের মেয়ে। আমিও ভাবছি একটি কাজের মেয়ের দরকার ' রাশেদের রাগ হল। মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল ' ধ্যাত্তেরি কাজের মেয়ে হবে কেন? রান্না কর তুমি। আমি গেলাম ' রাশেদের মা হো হো করে হাসছে। কাহিনী কি আর বুঝতে বাঁকি রইল না রাশেদের মায়ের।
...
দুজনেই চুপ করে আছে। চিত্রার চোখ দেখে রাশেদ বুঝতে পারছে কিছু একটা হয়েছে। রাশেদ বলল ' মুখ গোমড়া করে আছ কেন? তোমার গোমড়া মুখ দেখতে আমার ভাল লাগেনা ' চিত্রা ভাবছে ডায়েরীটার কথা রাশেদকে বলবে কি না। রাশেদের কাছে চিত্রা মিথ্যা বলতে পারেনা। চিত্রা বলল ' একটা সমস্যা হয়ে গিয়েছে। ' রাশেদ তাড়াতাড়ি জিজ্ঞেস করল ' কি সমস্যা? ' চিত্রা আঙুল কামড়িয়ে বলল ' আমার ডায়েরীটা খোঁজে পাচ্ছিনা হঠাৎ ' রাশেদ হো হো করে হাসল। তারপর বলল ' এটা কোন সমস্যা হল? বাসায় ভাল করে খোঁজলেই তো হয়। ' চিত্রা বলল ' এজন্যই তোমাকে বলতে চেয়েছিলাম না। তুমি কি বুঝবে ডায়েরীর? ডায়েরীটা যদি দাদা ভাইয়ের হাতে যায় তাহলে নিশ্চিত এক সপ্তাহের ভীতরে বিয়ে দিয়ে দিবে আমাকে নাহয় বাসা থেকে বের করে দিবে। ' রাশেদ আবারো হো হো করে হাসল। তারপর বলল ' তাহলে তো ভালই হয়। ' চিত্রা রাগ দেখিয়ে বলল ' ভালই হয় তাই না? অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়ে যাবে আমার বুঝতে পারছ? ' রাশেদ হেসে বলল ' হুম বুঝতে পারছি। তোমাকে না পাই তোমার ছোট বোনকে পেলেই হয়। ঝুমুর। আহা কত্ত সুন্দর নাম। আচ্ছা নামটা কে রেখেছে বল তো? যে রেখেছে সে নিশ্চিত একজন কিংবদন্তী। ' চিত্রা এবার রেগেমেগে বলল ' আমি রেখেছিলাম নামটা। আর হ্যাঁ কাল থেকে আমার বদলে আমি ঝুমুরকে পাঠিয়ে দিব কেমন? আর আমি দাদা ভাইকে বলি আমার জন্য পাত্র দেখতে হ্যাঁ? ' রাশেদ মিঠমিঠিয়ে হাসল। তারপর বলল ' বল বল আর হ্যাঁ ঝুমুরকে পাঠাতে ভুলনা। ' চিত্রা উঠে হাঁটা শুরু করল। রাশেদ চিত্রার হাত ধরে বলল ' এত তাড়া কিসের? ' চিত্রা চোখে রাগ আগুন নিয়ে বলল ' হাত ছাড় বলছি ' রাশেদ ব্যাগ থেকে কিছু চুড়ি বের করে বলল ' চুড়িগুলো দেখেই মনে হচ্ছিল। চুড়িগুলো শুধু তোমার হাতের জন্যই বানানো হয়েছে। ' চিত্রার রাগ ফানুস। কিছুক্ষণ স্থীর হয়ে দাঁড়িয়ে রইল চিত্রা। তারপর বলল ' নাও হাতে পরিয়ে দাও। ' রাশেদ হাতে চুড়ি পরিয়ে দিচ্ছে। এক অজুহাতে হাত ধরা আরকি। চিত্রা বলল ' তোমার পছন্দ আছে বলতে হবে। শোন অনেক্ষণ হয়ে গিয়েছে এবার যাব। ' রাশেদ আবারো ব্যাগ থেকে মেহেদী বের করে দিয়ে বলল এটা আমার অর্ধেক প্রেমিকা আর মনে হয় অর্ধেক বউয়ের জন্য। মানে তোমার বোনের জন্য। শুনেছি ঝুমুর নাকি খুব মেহেদী দেয়?' চিত্রা রাশেদকে বকবে না কি করবে বুঝতে পারছেনা। হেসে বলল ' এত কিছু কেন আন বল তো? রাশেদ মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে বলল ' ভাল তো আর হাজারটা মেয়েকে বাসিনা। একজনকেই বাসি। আমাকে কেউ ভাল না বাসুক। ' চিত্রা অভিমান করে বলল ' তাই না? এই আমার হাত থেকে তোমার চুড়ি খোল তাড়াতাড়ি খোল। কেউ তো তোমাকে ভালবাসেনা। তাহলে কাউকে চুড়ি দিবে কেন? রাশেদ হেসে বলল ' সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে বাসায় যাও। দেরী হলে আবার সমস্যা হবে তোমার। ' চিত্রা ভেংচি দিয়ে বলল ' যাচ্ছি হুঁহ এত ভাবতে হবেনা। '
...
যেখানে বাঘের ভয় হয় সেখানেই সূর্য উঠে। ডায়েরীটা চিত্রার দাদা ভাইয়ের হাতেই পরে। কিভাবে পেলেন তা উনিই ভাল করেই জানেন। ডায়েরীটার ভীতরের সবগুলো পাতা সে পড়েনি। একেবারে শেষ পাতাটা পড়েই রাশেদের সাথে যোগাযোগ করে। তার রাশেদকে ভালই লাগে। খারাপ লাগার মত কিছু দেখেননি আশেক। সে হিসেবে তারা পারিবারিকভাবে কথাবার্তা বলে। বিয়ে নিয়ে বাজে আরেক গণ্ডগোল। অনেকে শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানটা দেখে বিয়ের ঝামেলা দেখেনা। কবুল বলার সময় যা হয় আরকি। সেই কান্নাকাটি। চিত্রা যে সময় কাঁধছিল সেসময় রাশেদের হাসি পেয়েছিল বড্ড। কেন পেয়েছিল সে নিজেও জানেনা। মুখে রুমাল থাকার কারণে কেউ বুঝতে পারেনি। বাসর ঘর। নানারকম ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। কিন্তু তবুও চিত্রার মনে হচ্ছে কদমফুল থাকলে আরো ভাল হত। কিছুক্ষণ পর রাশেদ হাতে কিছু কদমফুল নিয়ে প্রবেশ করল। রাশেদ ঘোমটা সরিয়ে কদমফুল দিয়ে স্বাগতম জানায় চিত্রাকে। চিত্রার কদমফুল খুব পছন্দ তা অনেক আগ থেকেই ভাল করেই জানে রাশেদ। আবারো পাঞ্জাবীর পকেট থেকে মেহেদী বের করল রাশেদ। মেহেদী দেখে চিত্রা বলল ' মেহেদী কেন? ' রাশেদ বলল ' আমার হাতে একবারও তাকাইছ? দেখ হাতে মেহেদী দেইনি বাসর রাতে তোমার হাত দিয়ে মেহেদী দিব বলে। আর কদমফুল দিয়ে বাসর ঘর সাজানো হয়নি বলে দুঃখীত ' চিত্রা মুখে হাত দিল। সে অবাক। এরকম ভালবাসা সবার কপালে জুটেনা। চিত্রা বলল ' আল্লাহ বাসর ঘরে কেউ মেহেদী দেয়? দিয়ে দিতেই হবে? ' রাশেদ মাথা নাড়িয়ে বলল ' হুম দিতেই হবে। নাহলে তোমাকে পিটাব। মেহেদী পরে দিব আগে একটা কাজ বাঁকি আছে সেটা শেষ করে নেই। ' চিত্রা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল ' কি কাজ? ' রাশেদ চোখ বাঁকা করে বলল ' বিড়াল মারব ' চিত্রা আবারো অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল ' কিসের বিড়াল? ঘরে বিড়াল আসবে কোথ থেকে? রাশেদ হেসে বলল ' আরে এই বিড়াল সেই বিড়াল না। ' চিত্রা ভাবছে প্রশ্ন করবে তাহলে কোন বিড়াল? ততক্ষণে চিত্রা বুঝে যায়। তারপর বলল ' অ্যাঁ তুমি এত শয়তান? '
...
কয়েক বছর পরের কথা। ঝুমুরের পরিক্ষা শেষ হয়েছে তাই কিছু দিনের জন্য রাশেদদের বাসায় বেড়াতে এসেছে। আরেকটা কারণ হল ছুটির দিনগুলো সমদ্রর সাথে কাটানোর জন্য। বোনের ছেলে মানেই তো নিজের ছেলে। দুজন ছাদে ঘুড়ি উড়াবে ভাবছে। সমুদ্র বলল ' খালামণী খালামণী তোমাকে আব্বু অর্ধেক বউ বলে কেন? ঝুমুর সমুদ্রর কথা শুনে ভাবছে এই পিচ্ছি এত পাঁকল কিভাবে? ঝুমুর বলল ' মজা করে বলে সোনা। ' ঝুমুরের ঘুড়ি উড়ানো ভাল লাগছেনা। সমুদ্রকে কোলে নিয়ে তাঁর মা বাবার বিয়ের গল্পটা শোনাচ্ছে। যেই না খাওয়াদাওয়ার কথা শেষ হল ওমনিই সমুদ্র কাঁধতে শুরু করল। ঝুমুর বলল ' কি হল বাবু? কাঁধছ কেন? ' সমুদ্র কেঁধে কেঁধে বলল ' তোমরা কত সার্থপর আমাকে রেখে বিয়ে খেয়ে ফেললে। ' সমুদ্রর কথা শুনে ঝুমুরের হাসতে হাসতে পেট ফেটে যাবে অবস্থা। ঝুমুর বলল ' আমি তো তোমাকে নিতেই চেয়েছিলাম কিন্তু তোমার আম্মু মানা করেছিল। ' সমুদ্রর কান্না আরো বেড়ে গেল। আর ঝুমুর হাসতে হাসতে শেষ। সমুদ্র বলল ' আমাকে আম্মুর কাছে নিয়ে যাও এক্ষণি। ' ঝুমুর সমুদ্রকে নিয়ে নিচে গেল। চিত্রার কাছে সমুদ্রকে নিয়ে গিয়ে বলল ' রাতে আমাকে ভেংচি দিয়েছিলেনা আপু এখন নিজের ছেলের সামলাও। ' সমুদ্র সমানে কেঁধে কেঁধে বলছে ' আম্মু তুমি পঁচা আম্মু তুমি পঁচা। ' চিত্রা সমুদ্রকে কোলে নিতে চাইল। তখন আবার সমুদ্র বলল ' ধরবেনা আমাকে একদম। ' চিত্রা অবাক হয়ে বলল ' কি করেছি আব্বু? ' সমুদ্র চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল ' আব্বু ডাকবেনা। আমি তোমার আব্বু না। কেউ কি আব্বুকে রেখে নিজের বিয়ে খায়। ' পিছনে দাঁড়িয়ে ঝুমুর হাসছে। চিত্রা মুখে হাত দিয়ে বলল ' এই কথা কে বলেছে আব্বু? ' সমুদ্র বলল ' খালামণী বলেছে। খালামণী আমাকে নিতে চেয়েছিল কিন্তু তুমি মানা করেছিলে। কেন করেছিলে বল? আমি বিয়েতে গেলে কি ক্ষতি হত তোমাদের? ' এবার চিত্রাও হাসছে। সমুদ্রকে কোলেও নিতে পারছেনা। ধরতে গেলেই ঝাঁড়ি দিচ্ছে। চিত্রা বলল ' সব তোমার আব্বুর দোষ। তুমি তো খুব ছোট ছিলে তাই তোমাকে নেয়নি। ' সমুদ্র আরো কাঁদতে লাগল। চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল ' আমি এতকিছু জানিনা তুমি আবার বিয়ে কর। আমি বোরহানি খাব বিয়েতে। ' চিত্রা আর কিছু খোঁজে না পেয়ে বলল ' আমি বুড়ী হয়েছি না? আর বুড়ী মেয়েকে কেউ বিয়ে করেনা। এবার কোলে আস। ' সমুদ্র বলল ' না একদম কাছে আসবেনা। কেউ বিয়ে করবে কেন? আব্বু তোমাকে বিয়ে করবে। বিয়েতে আমি আর খালামণী বোরহানি খাব। এর আগে কোলে নিতে আসবেনা। চল খালামণী আমি তোমার সাথে থাকব। চিত্রা চোখ বড় বড় করে বলল ' অ্যাঁ ' |
Siam Ahmed Joy
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ