~~অস্তিত্ব
Writer:-Afsana Akter
খুব বিরক্ত নিয়ে বড় ঘোমটা টেনে বসে আছে নীলা...সাথে তো গহনা আর ভারি শাড়ি আছেই। শাড়ি পড়াটা বরাবরই অপছন্দের ছিলো নীলার..কিন্তু আজ শত বিরক্তি উপেক্ষা করে শাড়ি পড়েছে সে,,,কারন আজ তার বিয়ে। শাড়ি পড়ে থাকাটা যতোটা বিরক্তিকর অনুভব হচ্ছিল তার থেকে আরও বেশি বিরক্ত লাগছে বাসর ঘরে বসে নীলয়ের জন্য অপেক্ষা করাটা। নীলয়ের সাথে নীলার বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হয়,,পরিবারের পছন্দ মতোই নীলা বিয়ে করে তবে বিয়েতে তার একটু অমত ছিলো...কারন সে চেয়েছিলো তার পড়ালেখা সম্পূর্ণ করে তারপর বিয়ে করবে কিন্তু কে শুনে কার কথা,,,, নীলার বাবা তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য ওঠে পড়ে লেগেছিলো আর বাবার কথর উপর না বলার সাহসটা তার কখনোই ছিলো না। তাই নিরুপায় হয়ে বিয়েটা করেই নেয়...মেয়েদের বিয়ের আগে তার স্বামী সংসার নিয়ে খুব স্বপ্ন থাকে নীলার তেমনি অনেক স্বপ্ন ছিলো,,,, কিন্তু যাকে নিয়ে এতো দিন ধরে এতো স্বপ্ন বুনেছে তারই কোনো খবর নেই.....নীলা খুব বিরক্তি নিয়ে এসব ভাবছিলো এমন সময় নীলয় রুমে প্রবেশ করল। সে নীলয়কে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে গেলে নীলয় পা সরিয়ে নেয়,,, যা দেখে নীলা খুব অবাক হয়!!!
--আপনি আমার একদম কাছে আসার চেষ্টা করবেন না(নীলয়)
--_____(নীলা অবাক হয়ে দাড়িয়ে আছে)
--আর শুনুন... আমি আপনাকে নিজের ইচ্ছেতে বিয়ে করিনি,,,বাবা জন্য আপনাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি। আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি। আপনার সব চাহিদাই আমি পূরণ করব কিন্তু কখনো আমার কাছে থেকে স্ত্রীর অধিকার পাবেন না।
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলে নীলয় রুম থেকে চলে যায়। নীলয় এই সব কি বলে গেলো নীলা বুঝে উঠতে পারছিলো না। এক নিমেষেই যেনো তার দেখা সব স্বপ্ন কাচেঁর ন্যয় ভেঙ্গে গেলো। কি ভেবেছিলো আর কি হলো...নিয়তির লিখন ভেবে নীলা সব কিছু মেনে নিয়েছিলো। প্রতিদিন সকালে নীলা নাস্তা বানিয়ে টেবিলে গুছিয়ে নীলয়ের জন্য বসে থাকে একসাথে খাবে বলে কিন্তু তা আর হয় না কখনো সে খায় কখনো বা না খেয়েই চলে যায়। রাতে মাঝে মাঝে বাড়িতে পিড়ে আবার কখনো পিড়ে না,,,,নীলার সাথেও সে প্রয়োজন ছাড়া কোনো কথা বলে না। এভাবেই কেটে যায় পাঁচটি মাস...এই পাঁচ মাসের মধ্যে কোনো দিন হয়তো নীলয়ের মনে নীলার জন্যে একটু ভালোবাসা জন্মেছিলো তার পরিণাম হিসেবে নীলা আজ অন্তঃসত্ত্বা। নীলা ভেবেছিলো নীলয় এটা জানার পর হয়তো পুরনো সব ভুলে নতুন করে শুরু করবে। তাকে এবং তার মাঝে বেরে ওঠা অস্তিত্বটিকে মেনে নিবে। কিন্তু নিয়তির যে তার জন্য অন্য কিছু লিখে রেখেছিলো সেটা যে ছিলো তার অজানা___
--কিছু বলার কিছু(নীলা)
--আমার খুব তাড়া আছে(নীলয়)
--একটু সময় কি হবে না....
--কি বলার তাড়াতাড়ি বলেন...নিহা আমার জন্য অপেক্ষা করছে(নিহা নীলয়ের গার্লফেন্ড)
--না মানে....
--এতো মানে মানে করার কি আছে??(একটু দমক দিয়ে)
--আমি আপনার সন্তানের মা হতে চলেছি(ভয় পেয়ে)
--What??
--জ্বি.....
নীলয় একটু স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে থেকে রুমে চলে যায়...এবং একটি কাগজ নিয়ে আসে___
--এখানে কিছু টাকা আছে... হাসপাতালে গিয়ে এভোশন করিয়ে নিও,,,আর এই যে ডিভোর্স পেপার দয়া করে এতে সাইন করে আমাকে মুক্তি দাও। আমি আর এই মিথ্যে সম্পর্ক ধরে রাখতে চাই না। আমি নিহাকে বিয়ে করবো....(নীলয়)
কথাগুলো বলে নীলার হাতে টাকা আর ডিভোর্স পেপারটি ধরিয়ে দিয়ে নীলয় চলে যায়। নীলা কি করবে বুঝতে পারছিলো না একটা মানুষ যে এতোটা নিষ্টুর হতে পারে সেটা তার জানা ছিলো না....তবে সে কোনো ভাবেই এভোশন করাবে না বলে ঠিক করে নিয়েছিলো.... রাতে নীলয় বাসায় পিড়ে খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলো কারন নীলা বাসায় ছিলো না দরজাটা খোলাই ছিলো। নীলাকে বাসায় না দেখতে পেযে নীলয় একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলো...এমন সময় তার নজর যায় টেবিলের উপর টাকা দিয়ে চেপে রাখা চিরকুটটির উপর। নীলয় চিরকুটটি হাতে নিয়ে পড়া শুরু করল.....
নীলয়,,,
জানো সবার মতো না আমারও অনেক স্বপ্ন ছিলো। তোমার সাথে একসঙ্গে বাচার স্বপ্ন, সংসার করার স্বপ্ন....কিন্তু আমার এই স্বপ্নটা তুমি পূরন হতে দিলে না। বিয়ের দিন রাতে যখন তুমি আমাকে নিহার কথা বলেছিলে,,, সারা রাত যখন নিহার সাথে কাটাতে তখন আমার এতোটা কষ্ট হয়নি যতোটা কষ্ট আজ তুমি এভোশনের কথা বলাতে হয়েছে। আচ্ছা কি দোষ করেছিলো আনার সন্তান যে তাকে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই পৃথিবী থেকে চলে যেতো বলছো???ওরতো কোন দোষ ছিলো না তাহলে ও কেনো শাস্তি পাবে?? জানি এর জবাব তোমার কাছে নেই। তাই চলে যাচ্ছি তোমার অস্তিত্বটুকু কে সঙ্গে করে। ভয় পেয়ো না...আমি কখনো তোমার কাছে আমার সন্তানের অধিকার চাইতে আসবো না। ওকে ও কখনো তার এই নিষ্টুর বাবার কথা জানতে দিবো না...কথা দিচ্ছি। ওহ,,,হে ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিয়েছি,,,,এবার আর নিহাকে বিয়ে করতো তোমার কোনো সমস্যা হবে। তাড়াতাড়ি বিয়ে নতুন জীবনটা শুরু করে নাও....শুভ কামনা রইল। আর হে টাকা গুলোর আমার কোনো প্রয়োজন নেই...তাই রেখে গেলাম। ভালো থেকো____নীলা
নীলয় ডিভোর্স পেপারটা হাতে নিয়ে দেখছে এমন সময় নিহার ফোন আসল,,,,
--হে নিহা...তোমার জন্য গুড নিউজ আছে(নীলয়)
--আমারও তোমাকে একটা নিউজ দেওয়ার আছে(নিহা)
--ওকে আগে তুমি বলো তারপর আমি বলছি,,,
--তোমাকে বলেছিলাম না,,,বাবার এক ফেন্ডের ছেলে ইতালি থাকে। ও আজ রাতে দেশে পিরছে। আর বাবা চায় ওর সাথে আমার বিয়েটা হোক,,,তুমিতো তোমার বউকে নিয়ে খুব সুখেই আছো তাই আমিও ভাবছি বিয়েটা করেই ফেলি। বিয়ের এক সপ্তাহ পর আমি ইতালি চলে যাচ্ছি...
--কি বলছো এসব তুমি???(একটু অবাক হয়ে)
--শুনোনা ও না ফোন দিচ্ছে...এখন রাখি। আর হে আমার সাথে আর যোগাযোগ করার চেষ্টা করো না।
--তুমি এমনটা আমার সাথে করতে পারো না নিহা...
--টু,,,টু,,টু...
নীলয় কোনো ভাবেই নিহার কথা গুলো মেনে নিতে পারছিলো না। যার জন্য সে এতো কিছু করলো সেই আজ তাকে বলছে আর যেনো যোগাযোগ না করে। সে এখন বুঝতে পারছে যে কে তাকে সত্যিকারের ভালোবাসতো,,, কিন্তু এখন বুঝে কি লাভ সময় যে পুরিয়ে গেছে। নীলয় নিলাকে অনেক খুজেছে কিন্তু পায় নি,,,কি করেই বা পাবে সে যে তার মনের ভেতর হাজারো রাগ অভিমান লুকিয়ে আর নীলয় এর অস্তিত্বকে নিয়ে সাবার আরালে চলে গিয়েছিলো.....
___পাঁচ বছর পর___
নীলার ছোট্ট একটি ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে....নুহা। নীলা একটি NGO তে জব করে...মেয়েকে নিয়ে খুব ভালোই দিন যাচ্ছিলো তার। বাবার অনুপস্থিতি মেয়েকে কখনো বুঝতে দেয় নি...কিন্তু মাঝে মাঝে যখন খেলতে গিয়ে বন্ধুদের তাদের বাবার সাথে দেখে তখন মার কাছে তার বাবার কথা জানতে চাইলে নীলার উওর চোখের পানি ছাড়া আর কিছুই থাকে না____ #স্বপ্নপরী
~~অস্তিত্ব..২
Writer:- Afsana Akter
--আম্মু কালতো আমার জন্মদিন.... (নুহা)
--হুম,,,মামনি..(নীলা)
--কাল আমার বন্ধুরা সবাই আসবে তাই না?
--হে আমার রাজকুমারী,,,,, সবাই আসবে
--সবাই....তাহলে আব্বুও নিশ্চয় আসবে!!!
--_____(চুপ করে অন্যদিকে মুখ করে আছে)
--কাল ও কি আসবে না? আব্বু খুব পঁচা...(কান্না ভাব নিয়ে)
--এভাবে বলতে নেই,,,,, আসবে...
--সত্যি কাল আব্বু আসবে....দাড়াও আমি আমার বন্ধুদের বলে আসি...(দৌড়ে চলে যায়)
--না,,, মা.... শোন..
--পড়ে শুনবো....
____পরদিন রাতে____
--চলো মামনি,,,,আমরা এখন কেক কাটবো...
--না....(বার বার দরজার দিকে তাকাচ্ছিল)
--কেনো...সবাইতো চলে এসেছে...আর বার বার ওদিকে কি দেখছো
--আম্মু কোথায় সবাই এসেছে,,,আব্বুতো এখনো আসেনি?
--____(চুপ করে দাড়িয়ে আছে)
--কি হলো বলো না....কখন আসবে??
--আসবে না....
--না আসবে....তুমি বলেছো আজ আসবে(একটু রাগ নিয়ে)
--বলেছি তো আসবে না..
--আমি জানি আব্বু বাহিরে দাড়িয়ে আছে...অনেক গুলো চকোলেট নিয়ে,,,দাড়াও আমি নিয়ে আসছি(দৌড়ে বাহিরে চলে গেলো)
আজ নুহার জন্মদিন। আগে যখন তার মার কাছে বাবা কখন আসবে জানতে চাইতো তখন তার জন্মদিনে আসবে বলে মিথ্যে সান্তনা দিতো...আর আজ সেই দিন। আজ কিভাবে সান্তনা দিবে তার উপায় নীলার জানা নেই। নীলা এই ভাবিছো আর বসে চোঁখের পানি পেলছিলো.....
--কেঁদো না আম্মু...আব্বু খুব পঁচা, তাই আজও আসে নি....আর আসতেও হবে না। আমিও আর কখনো আব্বুর কথা জানতো চাইবো না...তুমি কেঁদো না,,,প্লিজ। চলো আমরা কেক কাটবো...(নুহা)
--হুম....আর কাদঁবো না
ওইদিকে নীলয় আজও নীলা খুজে যাচ্ছে শুধু মাত্র একটি বার তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য,,তার ভুল গুলো ঠিক করে নেওয়ার জন্য। নীলয় একটি কোম্পানিতে জব করে আর কোম্পানির কাজে তাকে অন্য একটি শহরে শিপ্ট হতে হয়। পার্কের এক কোনে বসে নীলার কথা ভাবছিলো। তার সামনেই কতগুলো বাচ্চা খেলা করছিলো....ওদের দেখে নীলয় এর তার সন্তানের কথা মনে পড়ে যায়...তার সন্তানও তো এখন অনেক বড় হয়ে গেছে কোথাও হয়তো কারো সাথে এইভাবে খেলা করছে....
--এই যে আংকেল... (একট বাচ্চা মেয়ে)
--কি চাই...(নীলয়)
--আমাদের বলটা না ওই গাছে আটকে গেছে...একটু নামিয়ে দেন না প্লিজ
--কোথায়....চলো
--ওইতো ওইখানে...(গাছের উপর বলটিকে দেখিয়ে দিয়ে)
--এই নাও তোমাদের বল...তার আগে বলোতো নাম কি তোমার???(বলটি এগিয়ে দিয়ে)
--আমি নুহা...আর ওরা হলো আমার বন্ধু(সবাইকে দেখিয়ে দিয়ে)
--খুব সুন্দর নামতো তোমার...কে রেখেছে নামটা???
--আপনি একটা বোকা....আম্মু ছাড়া আর কে রাখবে আমার নাম?
--কোনো,,,তোমার আব্বু রাখবে...
--ওর আব্বু নেই..(বাচ্চা গুলোর মধ্যে একজন বললো,,,,আর নুহা মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে)
--আচ্ছা তোমরা চকলেট খাবে?
--হ্যাঁ...(সবাই জোড়ে এক সাথে বলে ওঠল)
--আচ্ছা তোমরা এখানে দাড়াও আমি নিয়ে আাসতেছি...(এই বলে নীলয় দোকানের দিকে চলে যায়)
--নুহা এইবার চলো,,,অনেক খেলেছো(নীলা)
--আর একটু খেলি আম্মু(নুহা)
--কাল খেলো আজ চলো..(নীলা নুহাকে নিয়ে চলে যায়)
--এই নাও তোমাদের চকলেট,,,আর তোমাদের সাথে ওই মেয়েটি কোথায় (নীলয়)
--ওর আম্মু এসে তাকে নিয়ে গেছে...(বাচ্চা গুলোর মধ্যে একজন)
--ওহ,,,এই নাও চকলেট.. (সবাইকে চকলেট গুলো দিয়ে)
--ধন্যবাদ...আংকেল(সবাই এক সাথে বলে চলে যায়)
নীলয় ছাদে বসে তারা দেখছিলো আর নুহার কথা ভাবছিলো...এতো মিষ্টি একটা মেয়ের বাবা নেই,,,কথাটি শুনতেই কেমন জানি লাগছিলো তার। খুব মায়া হচ্ছিলো মেয়েটির উপর...
--আম্মু জানো পার্কে না আজ একটা বোকা আংকেলের সাথে দেখা হয়েছে(নুহা)
--বোকা আংকেল!!!(একটু অবাক হয়ে)
--হুম,,বোকা। আমাকে কি না প্রশ্ন করে যে আমার নামটা কে রেখেছে...আব্বু নাকি আম্মু,,,,আচ্ছা তুমিই বলো আমার নামটা তুমি ছাড়া আর কে রাখবে। পুরো বোকার মতো কথা না।
--তাই বলে তুমি ওনাকে বোকা বলবে নাকি??ওনি কি ভাববে বলতো...ভাববে মেয়েটা খুব খারাপ। পরে যখন দেখা হবে তখন তাকে সরি বলবে....
--আচ্ছা...
--মনে থাকে যেনো...
পর দিন সকালে নীলয় পায়ে হেঁটে অফিসের দিকে যাচ্ছিলো...এমন সময় নুহার সাথে দেখা
--আরে তুমি এখানে কি করছো?(নীলয়)
--স্কুল ড্রেস পড়ে, স্কুলের সামনে মানুষ কেনো আসে?(নুহা)
--ওহ,,,সরি...তা কেমন আছো?
--ভালো দেখেই তো আম্মু স্কুলে পাঠিয়েছে...
--তাও ঠিক...(নুহার কথা শুনে মনে মনে হাসছিলো,,যে এতোটুকু একটা মেয়ে এতো চালাক)
--সরি....
--সরি কেনো(একটু অবাক হয়ে)
--কাল যে আপনাকে বোকা বলেছি...তাই আম্মু বলেছে আপনাকে সরি বলতে...
--সত্যিইতো আমি একটা বোকা..
--তাহলে আমি আপনাকে বোকা আংকেল বলে ডাকবো ঠিক আছে(একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে)
--আচ্ছা...ঠিক আছে।
--আম্মু আসবে নাকি তোমার?
--হুম...আপনি দাড়ান আমি আপনাকে আম্মুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো..
--আজ না অন্য একদিন..আমার লেইট হয়ে যাচ্ছে(এই বলে নুহার কপালে একটা চুমু দিয়ে নীলয় চলে যায়)
--এখানে দাড়িয়ে কি করছে আমার মামনিটা(নীলা)
--বোকা আংকেলের সাথে কথা বলছিলাম(নুহা)
--তুমি আবারও
--আংকেলি তো বললো তাকে বোকা আংকেল ডাকতে...
--অনেক পাকনামো হয়েছে...এখন বাসায় চলো
--হিহিহিহিহি...
--পাকা বুড়ি একটা....
বিকেলে আজ আবারও নীল পার্কে বসে আছে আর বাচ্চাদের খেলা দেখছিলো। কিন্তু আজ নুহা আসে নি...নীল নুহাকে খুব মিস করছিলো..বিশেষ করে তার কথাগুলোকে। কেন জানি খুব একটা মায়া পড়ে গিয়েছিলো তার উপর। এমন সময় দেখে নুহা আসতেছে...একজনের হাঁত ধরে...নীল শাড়ি পড়া,,হাত ভর্তি চুড়ি সাথে খোলা চুল...বাতাসে চুল গুলো মুখের উপর চলে আসায় ভালো করে মুখটা দেখা যাচ্ছিলো না। নীলয় বসা থেকে ওঠে নুহার একটু কাছে যাওয়াতে সে আবাক হয়ে যায়। কারন ও যে নীলা... যাকে সে পাঁচ বছর ধরে খুচ্ছে..নুহা দৌড়ে এসে নীলয়কে নীলার সামনে টেনে নিয়ে যায়....
--আম্মু,,,, এই হচ্ছে আমার বোকা আংকেল...আর বোকা আংকেল এ হচ্ছে আমার আম্মু(নুহা)
-_____(নীলয় আর নীলা অবাক হয়ে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে)
--কি হলো...কিছু বলছো না যে তোমরা?
--চলো নুহা(একটু রাগ নিয়ে নীলা নুহাকে কোলে তুলে নিয়ে চলে যায়)
--নীলা দাড়াও(নীলয় দৌড়ে নীলার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে)
--পথ ছাড়ো আমার(নীলা)
--প্লিজ নীলা..আমাকে একটা সুযোগ দাও তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার...প্লিজ
--আমি কিছু শুনতে চাই না....(এই বলে নীলা চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে নীলয় তার হাতে ধরে তাকে থামিয়ে দেয়)
--আমি জানি তোমার সাথে আমি যা করেছি তার ক্ষমা হয় না..তারপরও সরি নীলা প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও..
--হাত ছাড়ো...(রাগ নিয়ে)
--প্লিজ নীলা...
--ঠাস্....(নীলা নীলয়ের গালে চড় বসিয়ে দিয়ে নুহাকে নিয়ে চলে যায়)
--নীলা.......
রাতে নুহাকে নীলা খাবার খাওয়াচ্ছিলো...
--আম্মু তুমি কিন্তু এখনো বলোনি যে তুমি কেনো বোকা আংকেল কে মেরেছো ?? (নুহা)
--চুপ করে খাইতে বলছি তোমাকে(নীলা)
--না আমি খাবো না..
--জেদ করে না নুহা...
--আমি খাবো না,,, খাবো না,,, খাবো না,,,,(এই বলে নুহা রুমে গিয়ে দরজা অফ করে দেয়)
--নুহা দরজা খোলো।
--না আমি খুলবো না....আগে বলে ওই আংকেল টা কে
--আগে দরজা খুলো তার পর বলছি....লক্ষ্মী মা আমার দরজাটা খোল...
--নীলা আপু বাসায় আছো...(অনু পাশের বাসায় থাকে)
--আরে অনু তুমি ভিতরে আসো...কি মনে করে আসা হলো??
--একজন অনেকক্ষন ধরে তোমার খোজ করছিলো..তাই...আরে ভিতরে আসুন...(দরজার দিকে নীলয়কে লক্ষ করে বললো)
--তুমি....(নীলা)
--আচ্ছা আমি এখন আসি...(এই বলে অনু চলে যায়)
--তুমি এখানে কেনো এসেছো(নীলা)
--সরি নীলা...প্লিজ একটা বার আমাকে সুযোগ দাও(নীলয়)
--চলে যাও তুমি...তোমার নিহার কাছে(একটি রাগ নিয়ে)
--নিহা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে...ধোকা দিয়েছে আমাকে..
--ওহ..নিহা চলে গেছে তাই বুঝি এখন আমার কথা মনে পড়েছে??আর তোমার এটাই প্রাপ্য
--না নীলা....আজ পাঁচটা বছর তোমাকে আমার মেয়েকে আমি...
--চুপ....নুহা শুধু আমার মেয়ে....ওর উপর তোমার কোনো অধিকার নেই। আমিই ওর মা আমিই তার বাবা
--এমন করো না নীলা।
--তুমি কি ভেবেছো আমার কাছ থেকে আমার মেয়েকে কেড়ে নিবে...ওটা তুমি কোনো দিনও পারবে না।
--আমি তোমাদের দুজনকেই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছি...চলো নীলা প্লিজ....
--তোমার এই ইচ্ছে কোনো দিনও পূরণ হবে না...
--নতুন করে কি আবার শুরু করা যায় না...
--না যায় না...
--আব্বু....তার মানে বোকা আংকেলি আমার আব্বু(এতোক্ষন দাড়িয়ে নুহা তাদের সব কথা শুনে নিয়েছিলো)
--না নুহা উনি তোমার কেউ হয় না।(নীলা)
--না উনি আমার আব্বু,,, তুমি মিথ্যে বলছো(দৌড়ে গিয়ে নীলয়ের কোলে ওঠে)
--বললাম তো ও তোমার কেউ হয় না...আসো আমার কাছে..
--না আমি যাবো না..
--প্লিজ নীলা ওর জন্য কি সব ভুলা যায় না...প্লিজ(নীলয়)
--আজ থেকে আমরা এক সাথে থাকবো.... কি মজা....(নুহা)
নীলা স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে...কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না। একবার ভাবছে সব ভুলে নতুন করে শুরু করবে... আবার ভাবছে সেই পুরানো কথা গুলো....একদিকে তার মেয়ে অন্যদিকে নীলয়ের প্রতি তার সব রাগ অভিমান গুলো....
--কি ভাবছো নীলা???(নীলয় নীলার হাত ধরে)
--......(চুপ করে কেঁদেই যাচ্ছে)
--অনেক কেঁদেছো...আর না(নীলয়)
--কেনো এমন করলে আমার সাথে??(নীলয়কে জরিয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে)
--সরি নীলা....সরি...আর এমন হবে না।
--হুম....আর যদি আম্মুকে কাঁদাও তাহলে তোমার হাড্ডি গুড্ডি ভেঙ্গে প্যাকেট করে পানিতে ভাসিয়ে দিবো....(নুহা)
--হিহিহিহি....আচ্ছা পাপাবুড়ি ঠিক আছে..(নীলয়)
--আম্মুকে ছাড়ো... আমাকে কোলে নাও,,,
--ছাড়ো...(নীলা একটু লজ্জা পেয়ে)
______ #স্বপ্নপরী
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ