গল্পঃ অন্যকণ্যা
__Siam Ahmed Joy (গান গবেষক)
.
- ঝর্ণা কদিন ধরে বাড়িতে আসছে না দেখছি।
- সেটা আমাকে কেনো বলতেছো বোঝতেছিনা।
- ঝর্ণার সাথে ঝগড়া তো আর আমি করিনা।
- মা! তুমিও না।
- ওরে কি বলছিস এইটা বল আগে।
- আমার তো আর খেয়েদেয়ে কোন কাজ নেই।
- দাঁড়া জিজ্ঞেস করে নেই। আসুক।
কথা হচ্ছিলো সিয়াম আর সিয়ামের মার মধ্যে। ঝর্ণা হলো তাদের বাড়ির একটু দূরে থাকা রাইহান চাচার মেয়ে। রাইহান চাচা পেশায় আইনজীবী। তার মেয়ে তার চেয়েও পটু। বিশেষ করে কথাবার্তায়। প্রাচীন ইতিহাসে তার অসীম জ্ঞান। নিজেকে পন্ডিত ভাবতে শুধু বাকি আছে। এই ঝর্ণাকে সিয়ামের মায়ের খুব মনে ধরেছে।
.
কথা বলবে দার্শনীকদের মতো। প্রতিদিন এসে তো ভালই যন্ত্রণা করে। আজকে কেনো এলোনা ভাবার বিষয়! সিয়াম হাটছে। গন্তব্য ঝর্ণার বাড়িই। তিন মিনিটের বেশি সময় লাগেনা যেতে। ঝর্ণার ছোট ভাই রায়ানকে পড়ায়। তবে এটা টিউশনি নয়। রায়ানকে পড়াচ্ছে সিয়াম। ঝর্ণা শর্বত নিয়ে এসে বললো। রায়ান তোর গেমস খেলতে ইচ্ছে করছেনা? যা আজকে তোর ছুটি। রায়ান এক লাফে রুমের বাহিরে। চোখে আগুন নিয়ে সিয়ামের দিকে তাকিয়ে আছে ঝর্ণা বললো।
- আমি দেখতে সুন্দর না?
সিয়াম মাথা নাড়িয়ে বললো হুম।
আবারো প্রশ্ন করলো।
- আমার, চুল, চোখ, মুখ, নাক এসব সুন্দর না?
সিয়াম আবারো মাথা নাড়িয়ে বললো হুম।
ঝর্ণা আবার বললো।
.
- আমি কি কারো ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য না?
সিয়াম আগের মতোই মাথা নাড়িয়ে বললো হুম।
রেগেমেগে ঝর্ণা বললো।
- বোবা নাকি? মুখ নেই?
সিয়াম বললো।
- আছে।
- তাহলে মুখে কথা বলেন।
- বলার কিছু নেই আমার।
- নেই বললে হবেনা আপনাকে বলতে হবে।
- আমি উঠবো এখন। তবে এটা বলে যাই যে আপনার রুপ আছে বলেই কেউ আপনাকে ভালবাসবে সেটা ভাবা ভুল। রুপ তো আপনি ছাড়া অন্য মেয়েরও আছে সে তো তাদের কেউ একজনকেও ভালবাসতে পারে? পারে তো? ভালবাসা অর্জনের বিষয়। আপনার রুপ আল্লাহ দিয়েছে। এখানে আপনার কোন ক্রেডিট নেই।
কথাগুলো বলে বের হয়ে আসে সিয়াম। একটা জরুরী কাজ আছে।
.
বাসায় আসার পর মা জিজ্ঞেস করলো।
- কিরে ঝর্ণার সাথে দেখা হলো?
- হুম।
- কিছু বলেছে?
- না।
- কদিন ধরে আসছে না যে!
- সে কি আমার বউ? না তোমার কেউ হয়? বুঝিনা আমি!
- এখন বউনা পরে হবে। আর ঝর্ণা আমার মেয়ে। জানিস না ওর মা নেই।
- বাহ পৃথিবীর সব মা হারা মেয়েরা তোমার মেয়ে।
- হ্যাঁ তাই'ই।
- তাহলে সবাইকে ধরে এনে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে দাও!
- সুযোগ থাকলে দিতামই।
- আল্লাহ বাঁচাও আমাকে।
সিয়ামের মাঝে মাঝে অতিরিক্ত মেজাজ খারাপ হয়। কিন্তু মা বলে কথা। সহ্যও করতে পারেনা। কিছু বলতেও পারেনা।
.
ঘুমাচ্ছে সিয়াম। ঝর্ণা পাশে বসে আছে সিয়ামের ঘুম ভাঙ্গার অপেক্ষায়। তিনবেলা সিয়ামকে বিরক্ত না করলে তার পেটের ভাত হজম হয়না। সিয়াম উঠে বসলো। সামনে কে বসে আছে সে ভালো করেই জানে। ঝর্ণা বললো।
- শুনোন।
- আমি মানা করলেও আপনি বলবেন। বলুন।
- অনুমতি চেয়েছে কে? আমি রুপবতী এটা কি আমার অপরাধ?
- না।
- তাহলে আমি অর্জন করা না করা বোঝিনা। আপনি আমার।
- মগের মুল্লুক নাকি?
- হ্যাঁ তাই।
- আচ্ছা আপনি আমাকে পছন্দ করেন। করতেই পারেন স্বাভাবিক। আমিও তো কাউকে পছন্দ বা ভালবাসতে পারি? নাকি পারিনা?
- হুম। কেনো পারবেন না। কিন্তু আপনি কাউকে ভাল বাসেন না আমি জানি।
.
- ভুল জানেন। আমিও একজনকে ভালবাসি।
- সত্যিই?
- হুম।
ঝর্ণা আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো চোখের পানি মুছতে। যদিও সিয়াম মিথ্যে বলেছে। বিকেলে রায়ানক পড়াতে যাবে। আজকে পড়াতে গিয়ে বুঝলো সিয়াম যে এই বাসা পরিবর্তন করবেন ঝর্ণারা। আজকে একবার ঝর্ণাকে দেখলোনা। অবাক করা বিষয়! রায়ান কে বললো।
- কি ব্যাপার রায়ান? তোমরা কি বাসা চেঞ্জ করবে নাকি?
- না তো স্যার। গ্রামের বাড়ি চলে যাবো একেবারে। আপনাকে আব্বু বলেন নি?
- না তো! হঠাৎ গ্রামের বাড়ি? তাও একেবারে? কেনো?
- দিদি বললো এখানে আর থাকবেনা। আর জানেনই তো দিদির কথাই ফাইনাল।
- তাই বলে এভাবে? কবে যাবে?
- এই সপ্তাহেই। আব্বুর একটা কাজ বাকি আছে।
.
সিয়ামের একটু খারাপ লাগলো। তবে মেয়েটা এতো রাগ করবে বোঝতে পারেনি। যাহোক গেলে ভালই হয় সিয়ামের। কদিন তো শান্তিতে থাকা যাবে। ঘুম থেকে উঠে আজকে একটু মিস করছে ঝর্ণাকে। নাহ প্রতিক্ষণেই মনে পড়ছে ঝর্ণার কথা। কিছু একটা নেই নেই মনে হচ্ছে সব থেকেও। মা'ও কথা বলেনা বেশী। পড়াতে গেলেও ঝর্ণার দেখা নেই। এদিকে সব কিছু গুজগাজ করা হচ্ছে। আসবাবপত্র, খাট পালং যা আছে। আজকে দেখলো সিয়াম ঝর্ণা এসে মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে গেলো। চলে যাওয়ার ব্যাপারটা মাকে বলেনি তবুও। সিয়ামকেও কিছু জিজ্ঞেস করেনা মা। বেশ অদ্ভুতকর ব্যাপার।
.
রাতে ঝর্ণার ফোন থেকে সিয়ামের কাছে টেক্সট এলো।
চলে যাচ্ছি আমি। ভাল থাকবেন আপনি । আমি হয়তো ভালবাসা কি বোঝিনা। তবে শুধু এটুকু জানি আপনি আমার আজও-কাল। প্রথম ভাললাগা। বোঝতে পেরেছি সবারই একটা মন আছে। আমি আপনাকে ভালবাসি আপনিও কাউকে ভালবাসতেই পারেন। জোর করে কমপক্ষে ভালবাসা হয়না। তা আমি বোঝতেছ পেরেছি। সবসময়ই জ্বালাতন করেছি আপনাকে। ক্ষমা করে দিবেন। আমার প্রথমও শেষ আপনি। আপনার ভালবাসার মানুষকে নিয়ে সুখে থাকবেন এজন্যই বাসাটা ছাড়ছি। এখানে থাকলে আপনাকে না দেখে থাকতে পারতাম না। আর দেখা হলে দুষ্টুমী, পাগলামু করতামই। সত্যি বলতে আপনার সামনে গেলে সবকিছুই ভুলে যাই। সব কিছুর জন্য আবারো ক্ষমা চাচ্ছি। কারন আর কোনদিন দেখাও হবেনা কথাও হবেনা।
.
সিয়াম কি বলবে বা করবে বোঝতে পারছেনা। শুধু বোঝতে পারছে অনেক বড় একটা ভুল করতে যাচ্ছে। ঝর্ণার মতো আর কেউ তাকে ভালবাসতে পারবেনা। প্রতিটা মুহুর্তে ভীতর থেকে পীড়া পাচ্ছে। না এটা কে কি করছে সে? মেয়েটা একটু অগোছালো আছে গুছিয়ে তো নেয়া যাবে। মায়েরও পছন্দ। তাহলে সমস্যা কোথায় বোঝতে পারছেনা সিয়াম। শুধু জানে ঝর্ণাকে দরকার। তা ভালবাসার জন্যই হোক বা সারাদিন ঝগড়া করার জন্যই হোক। ভালবাসা তৈরি হয়ে গিয়েছে এতোদিনে। সিয়ামও ভালবেসে ফেলেছে। নাহলে এতো চিন্তা করতোনা। ঘুম আসছেনা। একবার মায়ের কাছে যেতে ইচ্ছে হলো। না যাওয়া যাবেনা। রাত্তিরে ঘুম ভাঙ্গা ঠিক হবেনা।
.
রাত্রে ঘুম হয়নি ঠিক করে। ফজরের আজানের একটু আগে ঘুমিয়েছে। সকালে প্রচণ্ড ঘুমের ঘোরে আছে সিয়াম। মা ডাকছে। সিয়াম উঠলো।
- তোর তো আজকে খুশীর দিন। এই নে মিষ্টি খা।
সিয়াম কিঞ্চিৎ ব্যাস্ত হলো। মাথায় এলো ক্ষণে এই আজকে তো ঝর্ণারা চলে যাবে এজন্য!
- আমার খুশির দিন কিভাবে?
সিয়ামের মায়ের চোখে পানি এসে গেলো।
- তোর যন্ত্রণা তো আজ বিদায় হচ্ছে। জানিস না?
সিয়াম আর কিছু বললোনা। ফ্রেশ না হয়েই এক দৌড়। উদ্দেশ্য ট্রেন স্টেশন। বেশি না পাঁচ মিনিট লাগে। আর কোন কিছুর খেয়াল নেই। শুধু জানে যেভাবেই হোক ঝর্ণাকে আটকাতে হবে। স্টেশনে পোঁছালো। কিন্তু ঝর্ণাদের খোঁজে পাচ্ছেনা।
.
একটু সামনের বেঞ্চিতে বসে আছে। চোখ দিয়ে পানি বেয়েবেয়ে পরছে। ট্রেন এখনো আসেনি মনে হয়। সিয়াম সামনে যেতেই ঝর্ণা দাঁড়িয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো।
- আপনি?
- হুম আমি।
- কেনো এসেছেন?
- ভালবাসার টানে। নিতে তোমায়।
- কিসের ভালবাসা? আপনি না অন্য একজনকে ভালবাসেন?
- নাহ সেটা অন্য একজন না। সেটা তুমিই।
ঝর্ণা থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
- ফিরবেনা আমার সাথে?
- কেনো ফিরবো? আমি আপনার কে?
- তুমি আমার পৃথিবী।
- করুণা দেখাচ্ছেন?
- না। বিশ্বাস করো আমি সত্যিই তোমাকে ভালবাসি। দিনরাত ঝগড়া করার জন্য হলেও আমার তোমাকে চাই। দেখো তুমি না ফিরলে মা আমাকে আস্তো রাখবেনা। ফিরে যাবেনা মায়ের কাছে?
.
ঝর্ণার চোখ দিয়ে পানি ঝড়তেই আছে। সিয়াম চোখের পানি মুছে দিলো। ঝর্ণা কান্না স্বরেই বললো।
- সত্যি তো সব?
- এই দেখো আমার কানে ধরে... না তোমার কানে ধরে বলছি। এক সত্যি দুই সত্যি তিন সত্যি।
- তাহলে এখনো দাঁড়িয়ে আছেন কেনো? জড়িয়ে ধরতে পারেন না?
সিয়াম চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে ঝর্ণার দিকে।
- কি হলো?
সিয়াম এতোকিছু না ভেবে জড়িয়েই ধরলো। তারপর বললো।
- চাচা কোথায়?
- ট্রেনে।
- কিহ? আর রায়ান?
- সেও ট্রেনে। গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে।
- কিহ? তাহলে তুমি যাওনি কেনো?
- অহ আমিও গেলে খুব খুশি হতেন তাই না? আর কেউ বিরক্ত করতো না।
- না না লক্ষী সেটা না। কিন্তু হাতে কিসের টিকিট তোমার?
- সিনেমার টিকিট। ট্রেনের টিকিট ছিড়ে ফেলেছি মন বলছিলো আপনি আসবেন। এখন কি মুভি দেখতে যাবো না বাসায়?
.
সিয়াম মুচকি একটা হাসি দিয়ে ঝর্ণার হাত ধরলো। দুজনে হাটছে। গন্তব্য সিনেমা হল নাহয় বাসা। সিয়াম বললো।
- চিন্তা করছি তোমাকে একেবারেই বাড়িতে তুলে নিয়ে যাবো।
ঝর্ণার চোখ মুখ লজ্জায় লাক হয়ে গেলো।
- এমা! তুমি লজ্জাও পাও? তোমার লজ্জা আছে? যাক বাচা গেলো।
- মানে কি হুম? আমার লজ্জা নেই? আমার অনেক লজ্জা আছে হুহ।
- হ্যাঁ সেই লজ্জা কতটুকু জানি। জনমহলে বলে জড়িয়ে ধরতে।
- সমস্যা কি আপনার? গায়ে পরে ঝগড়া করছেন কেনো?
- ঝগড়া করবো বলে।
- তাই না?
ঝর্ণাও হাসছে সিয়ামও হাসছে.........
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ļ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3505
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:ā§¨ā§Š PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ