>>>>>>>>আমাদের ভালবাসা<<<<<<<<<
মোঃ-রাশেদুর ইসলাম শিমুল (আবেগি ছেলে)
---এই আর কত ঘুমাবেন উঠুন, অনেক বেলা হল তো।
---আরেকটু ঘুমায়, আজ তো অফিস নেয়।
---অফিস নেয় বলেই কি বেলা করে ঘুমাতে হবে?????
হাত ধরে টান দিয়ে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলাম।
---তুমিও ঘুমাও, আজ তোমারো ছুটি।
বলে কপালে ছোট্ট একটা চুমু একে দিলাম।
---এই আবার দুষ্টুমি করা হচ্ছে???? মাকে ডাকব????
---মাকে ডাকবা কেন, আমি কি পরের বউয়ের সাথে দুষ্টুমি করছি, নিজেরই তো বউ।
---সাত সকালে এসব করা লাগবে না, ছাড়ুন।
---না ছাড়ব না, দেখি কি কর।
---মাআআআআআআ
সাথে সাথে ছেড়ে দিয়েছি, না হলে মা এখুনি ছুটে আসবে। এসেই আমাকে ইচ্ছা মত ঝাড়বে।
ছাড়া পেতেই পাগলিটা দৌড়ে চলে গেল, দরজার সামনে গিয়ে আবার ভেঙচি কেটে চলে গেলো।
আমি শিমুল আর আমার বউ সাবনাজ।
কি আমাদের দেকে হ্যাপি কাপল মনে হচ্ছে????
হ্যা এখন হ্যাপি, কিন্তু এর আগের কাহিনি মোটেই সুখের না।
অনেক কষ্টের পরে আজকের এই সুখি জিবন পার করছি।
আজ থেকে তিন বছর আগের কথা,
পড়াশোনা শেষ করে কেবল চাকরিতে জয়েন করেছি।
একদিন অফিসে যাচ্ছি রিকসা করে, আমাদের বাড়ি থেকে কিছুদুর পরেই একটা কলেজ আছে। কলেজের সামনে আসতেই চোখ দুটো এক জোড়া চোখের উপর আটকে গেল।
যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। ক্রমেই যেন ঐ চোখের গভীরতাই নিমজ্জিত হচ্ছি।
মেয়েটি কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে ফুসকা খাচ্ছিল।
পরম যত্নে একটা করে ফুসকা মুখে নিচ্ছিল আর মুখের সৌন্দর্যটা যেন আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল।
সেদিনের পর থেকে রুটিন হয়ে গেল কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েটিকে দেখা।
১মাস হয়ে গেল শুধু দেখেই গেলাম, নামটাই পর্যন্ত জানতে পারলাম না। আমি অবশ্য চেষ্টা করিনি।
আজ একটু আগেই বের হলাম, বাড়ি থেকে বের হতেই দেখি মেয়েটা হেটে আসছে। তারমানে এদিকেই কোথাও বাড়ি। মনের মাঝে লাড্ডু ফুটছে, বাড়ির সামনে থেকেই ফলো করে যেতে পারব।
আমিও পেছন পেছন হাটতে লাগলাম।
কলেজ পযর্ন্ত গেলাম। বেশ কিছুদিন এভাবে যাওয়ার পরে একদিন ঘটল ভিন্ন ঘটনা।
সেদিন গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি ওর অপেক্ষায়, দুর থেকে লক্ষ করলাম মেয়েটি আসছে।
আমার সামনে আসতেই দাড়িয়ে গেল।
আমার পা থেকে মাথা পর্য়ন্ত কয়েক বার দেখে নিয়ে।
---নাম কি??? (মেয়েটি)
---রাশেদুর ইসলাম শিমুল (আমি)
---কি করা হয়???? (মেয়েটি)
---মআনে.....(আমি)
---এত মানে মআনে করা লাগবে না। সোজা উত্তর দিন।
---একটা কম্পানিতে চাকরি করি।
---বাড়িতে কে কে আছে???
---বাবা মা।
---প্রত্যেকদিন আমাকে ফল করেন কেন????
এই যা ধরা পরে গেলাম, আগে অনেক শুনছি মেয়েদের যদি কেও ফলো করে তাঁরা সেটা সহজেই বুজতে পারে।
---না মানে মানে....
---আবার মানে মানে করছেন কেন???? ফলো করা খারাপ দেখায়, চাইলে পাশা পাশি আসতে পারেন তবে শর্ত আছে।
---কি শর্ত??
---দাড়িয়েই বলব না হাটতে হাটতে বলি????
---এগোন যাক...
---প্রথম শর্ত আর ফলো করা যাবে না। পাশাপাশি হাটতে পারেন, অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালে চোখ তুলে নিব।আর কোন গিফ্ট দেয়া যাবে না। তবে মাঝে মাঝে ফুসকা খাওয়াতে হবে।
---সব শর্ত মেনে নিলাম।
এভাবে হাঁটতে হাঁটতে কখন কলেজের সামনে চলে এসেছি টের পাইনি।
কলেজের সামনে থেকে ওকে বিদায় দিলাম, গেট দিয়ে ঢুকতে যাবে ঠিক সে সময় পেছন ফিরে
---আমার নাম শাবনাজ, বলেই একটা মুচকি হাসি দিয়ে ভেতরে চলে গেল।
এবার নিজেকে একটা আবুল মনে হল, একটা মেয়ে হয়ে আমার থেকে কত কিছু জেনে নিল আর আমি নামটাও জানতে পারলাম না?????
সেদিনের পর থেকে সব খুব দ্রুত হতে লাগল, ফোন নাম্বার নেয়া, ফেসবুক।
ফোনে তেমন একটা কথা হত না, ফেসবুকেই বেশি কথা হত।
দেখতে দেখতে আমাদের সম্পর্কের ১ বছর পার হয়ে গেল।
একদিন অফিসের জন্য বের হতেই বলা নেই কওয়া নেয় কয়েক জন এসে আমাকে মারতে লাগল।
বেশ আহত হলাম, পরে জানতে পারি শাবনাজের সাথে মেশার কারনে ওর বাবা লোক পাঠিয়ে ছিল।
কোন ভাবে আমাকে আর শাবনাজের ব্যপারটা জানতে পেরেছে।
এর পর থেকে শাবনাজের সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেল, আসলে ওর বাবাই বন্ধ করে দিসে।
মাঝে মাঝে চুরি করে অন্য কারো ফোন থেকে আমাকে কল করত।
এর মাঝে ওর বাবা ওর জন্য ছেলে দেখতে শুরু করে।
আমিও কোন ভাবেই ওর সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না।
আমার পরিবারকেও নানা ভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে য়েন কোন প্রকার যোগাযোগ না করি।
ধিরে ধিরে শাবনাজের সাথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ, অন্য দিকে শাবনাজের বাবার চাপে মা আমার ক্ষতির ভয়ে ওর সাথে আর যোগাযোগ না করার প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিল।
এবার তো পুরোই বন্ধ করতে বাধ্য হলাম, অনেক কষ্টে এক মাস অতিবাহিত করলাম।
এই দিন গুলো কিভাবে পার করলাম আমিই জানি, জানিনা শাবনাজের কি অবস্থা, কেমুন আছে।
একদিন অফিসে যাব বলে রেডি হচ্ছি, মা ডাকদিল
---শিমুল এদিকে আয় তো বাবা।
---জি মা আসছি।
বসার ঘরে যেতেই কেও একজন দৌড়ে এসে আমার হাত জড়িয়ে ধরল।
নিচের দিকে খেয়াল. থাকাই মুখটা দেখতে পারি নি।
---আমার মেয়েটাকে বাঁচাও বাবা, আমার মেয়েটাকে বাঁচাও ।
এবার মুখের দিকে খেয়াল করলাম, শাবনাজের বাবা ।
আমি মায়ের মুখের দিকে একবার তাকালাম, কিছু বুজতে পারলাম না কি করব।
---আপনার মেয়েকে আমি কিভাবে বাঁচাব, তাছাড়া তাকে ভাল রাখার জন্যই তো আমার থেকে সরিয়ে রেখে ছিলেন।
এখন আমার কিছু করার নেয়। আপনি আসতে পারেন।
যখন মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা না করে আমার থেকে আলাদা করেছিল তখন মনে ছিল না, এখন আসছে।
বলেই অফিসের জন্য বেড়িয়ে গেলাম।
তবে টেনসন হতে লাগল, পাগলিটা আবার কিছু করে বসল না তো????
ডেস্কে বসে ভাবতে লাগলাম,
মানুষের মাঝে কত পরিবর্তন হয়। মেয়েকে ভালবাসার অপরাধে মারলেন, নানান ভাবে হেনস্থা করলেন, বাড়িতে চাপ দিলেন।
আজ আবার আসছে সেই মেয়েকে বাঁচানোর কথা বলতে।
তবে বেশ চিন্তা হচ্ছে ও আবার কিছু করে বসলনা তো?????
যদি কিছু করে বসে????
এসব ভাবতে ভাবতেই বাবার ফোন।
---হ্যা বাবা বল।
---এখুনি হাসপাতালে যাবি, আর বিকেলে বউমাকে সাথে করে ফিরবি আজই তোদের বিয়ে হবে। আমি সব ব্যাবস্থা করছি।
বলে হাসপাতালের নাম ও কেবিন নং বলে রেখে দিল।
আর দেরি না করে চলে গেলাম। অনেক দিন হল পাগলিটাকে দেখিনি, তাই পাগলিটাকে দেখার জন্য আর তর সয়ছে না।
হাসপাতালের কথা শুনে একটু ভয় ভয় করছিল।
কেবিনে ঢুকতেই দেখি সাদা বেডে শুয়ে আছে, মুখটা মলিন হয়ে আছে। শুভ্রতার মাঝে যেন জীর্ন একটা মুখ উকি দিচ্ছে.....
বিকেলে রিলিজ করে ওকে নিয়েই বাড়ি ফিরলাম, বাড়িটা অল্প সময়েই সাজানো হয়েছে লাইট দিয়ে, বাড়ি ভর্তি মানুষ, বিয়ে বিয়ে রব। ভেতরে গিয়ে দেখি অনেক আত্নিয় চলে আসছে।
আমাদের লক্ষ করতেই শাবনাজকে নিয়ে চলে গেলো, আর আমাকে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলল।
হ্যা অনেক সাধনার পরে সেদিন আমাদের বিয়ে হয়।
"" অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন,
পেলাম খুজে এইভুবনে আমার আপন জন"""
আমাদের সংসার বেশ সুখেই কাটছে কিন্তু
বিয়ের পর হাজার চেষ্টা করেও কেও ওকে ওর বাবার বাড়ি নিতে পারেনি। আমার সাথেও না। তাই আমারও যাওয়া হয়নি, যদিও ইচ্ছাও হয়না কখনো। বাবার উপর রাগ করেই কোন দিন যায়নি ও বাড়িতে।
---কি জনাব ফ্রেশ হওয়া লাগবে না????
শাবনাজের কথায় ঘোর কাটল। আপনাদের গল্প বলতে গিয়ে ভুলেই গিয়েছিলাম কেও একজন নাশতার টেবিলে আমার অপেক্ষায় আছে। আপনারা থাকুন আমি গেলাম....
ফ্রেশ হয়ে এসে নাশতা করলাম। দুপুরে জুম্মার নামাজ পরে এসে একটু ঘুমালাম, বিকেলে বের হলাম ওকে নিয়ে।
উদ্দেশ্য রিকসা করে ঘোরা, শপিংকরা, আর রাতের খাবার খেয়ে বাড়ি ফেরা.
..
রিকসায় বসে আছি পাশাপাশি, ওর অবাদ্ধ চুল গুলো উড়ে এসে আমার মুখে আছড়ে পরছে, যেন উত্তাল সাগরের ঢেও। শাবনাজ বার বার কানের পাশে গুজে দিচ্ছে চুল গুলো। তাতে কী আর বাঁধ মানে অবাদ্ধ চুল, বাতাসের সাথে মিল্ নিজের কাজটা ঠিক করেই যাচ্ছে। সারা বিকাল ঘুরা ঘুড়ি, কেনাকাটা ও খাওয়া দাওয়ার পরে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। মনে মনে বলছি আজকের মতই সারাটি জিবন কাটিয়ে দিতে চাই পাশা পাশি.......
সমাপ্ত
লেখকঃ- মোঃ রাশেদুর ইসলাম শিমুল (আবেগি ছেলে)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ