___মায়ার বাঁধন...
-
ঘরে ডুকতেই হঠাৎ একটা ছোট্ট ছেলের উপর আমার চোখ পড়লো।
বয়স ৩-৪ হবে।খুবই কিউট।যে দেখবে তার ই মায়া পড়ে যাবে।
আমি ও তার ব্যতিক্রম নই।আমার ও খুবই মায়া জন্মে গেল ছেলেটির জন্য।
-
ছেলেটি একটা খাতায় কি জানি লিখছিলো খুবই মনোযোগ সহকারে।
আমি কাছে যেতেই বলল,বসুন।
আমিও বসে পড়লাম।
আমি বসতেই ও লিখাটা বন্ধ করে দিয়ে,পৃষ্ঠাটা ভাজ করে ওর পকেটে রেখে দিলো।
পরে আমার হাতটা ধরে বলল,তুমিই কি আমার নতুন মা???
আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না,এইটাই আবিদ।আমার স্বামীর আগের বউয়ের ছেলে।
আমি আমার স্বামীর ২য় বউ।
আমি আবিদ কে কোলে বসিয়ে বললাম,হুম আমিই তোমার নতুন মা।
কথাটা বলতেই আবিদ তার পকেট থেকে ওই কাগজ টা আর কিছু চকলেট আর একটা লাল গোলাপ আমার হাতে দিয়ে বলল,নাও নতুন মা।তোমার জন্যই রেখেছিলাম।
আমিও একটা হাসি দিয়ে বললাম,ঠিক আছে।
কিন্তু আমি তো তোমাকে কিছুই দিতে পারলাম না।
আমার কিছুই লাগবেনা নতুন মা।
চলো নতুন মা,আমাদের ঘরে।
আমিও আবিদ কে অনুসরন করতে লাগলাম।
পরে আমাকে নিয়ে গেল তাদের রুমে।যেখানে ও আর ওর আব্বু ঘুমায়।
খুব সুন্দর করে বাসর সাজানো।
আমার দিকে তাকিঁয়ে বলল,নতুন মা তুমি এখানে বসো আমি আসছি।
আমিও লক্ষি মেয়ের মতো বসে রইলাম।
হঠাৎ ই ভাজ করা পৃষ্ঠাটার কথা মনে পড়লো।
খুলে দেখি কোন রকমে তিনটা মানুষের ছবি আঁকছে।
আর মেয়ের ছবি টাতে মার্ক করে লিখে রাখছে "মা"।
যতটুকু ই পারে,তাতে হয়তো লিখতে কষ্ট হইছিল।
তবে দুই অক্ষরের একটা শব্দ-ই তো।
কিন্তু এতে যে কত আশা ভরসা লুকিয়ে আছে,তা কেবল যিনি মা,তিনিই জানেন।
-
অনেকক্ষন পর আমার স্বামী আমার ঘরে ডুকলো।
ডুকতেই আমি সালাম দিলাম।
সালামের উওর নিয়ে আমার পাশে বসে রইলো।কেউ কিছুই বলছিনা।মনে হচ্ছিল নিরবতা পালন করছি।হয়তো মনে মনে কোন সংশয় কাজ করছিল।
হঠাৎ ই নিরবতা ভেঙ্গে আমার হাতটি ধরে বলল, আরিবা তুমি আমাকে মন থেকে মেনে নিয়েছো তো??
আমি বললাম,হুম।
কারন আমি তোমাকে জেনে শুনেই বিয়ে করেছি।
আবার বলল,তুমি কি পারবানা আমার ছেলে কে মন থেকে মেনে নিতে??
পারবোনা কেন গো,আমি তো মেনে নিয়েই ফেলেছি।পরে বলল,আমি তোমার কাছে তেমন কিছুই চাইনা।
শুধু আমার পরিবার টা কে, নিজের পরিবার মনে করো।
আর আমার ছেলে টাকে নিজের ছেলে মনে করো প্লিজ।
কথাটা বলতেই আমি থামিয়ে দিয়ে বললাম,এইটা তোমায় আমাকে বলে দিতে হবে না।
আমি আবিদ কে আমার নিজের ছেলের মতো করেই লালন পালন করবো।
-
হঠাৎই কে জানি দরজায় ঠক্ ঠক্ আওয়াজ করলো।
তাই সজিব আমায় বসিয়ে রেখে দরজা খুলতে গেলো।
আমি ও তাকিঁয়ে আছি দেখার জন্য কে আছে দরজার ওপারে।
দরজাটা খুলতেই এক দৌড়ে ডুকে পড়লো রুমে।
দৌড়ে এসে আমার কোলে বসে বলল,তুমি কেমন গো নতুন মা?
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম,কেমন আমি???
ভালো না একদম।পচাঁ।
গাল দুটো টিপে ধরে বললাম,
ওলে বাবা লে,,,, লক্ষি সোনা।কি করছি গো আমি??
আমার জান পাখিটা আমার উপর রাগ কেন করছে??
একটা করুনার চাহনি দিয়ে বলল,জানো নতুন মা,আমার মা না, আমার জন্য চাদঁ আনতে গেছে।
জানিনা কবে আসবে??
তুমি আবার চাদঁ আনতে যাবে না তো?আমাকে একা রেখে??
লাগবেনা ওই চাদঁ,সত্যি বলছি নতুন মা, আমার চাদঁ লাগবেনা।কথা গুলো বলেই ফুপিয়ে কেদেঁ উঠলো।
আমি আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না।
পরে আমার শাশুড়ি এসে আবিদ কে নিয়ে চলে গেল।
আমি আমার স্বামীর দিকে একটু অবাক হয়ে তাকিঁয়ে রইলাম।
আচ্ছা সজিব,চাদঁ আনতে গেছে মানে???
আসলে আমি একদিন রাতে আবিদ কে নিয়ে ছাদে বসে ছিলাম।তখন আকাশে খুব সুন্দর বড় একটা চাদঁ ছিল।
তখন আবিদ আমাকে হঠাৎ চাদঁটা এনে দিতে বলল।
জীবনে কখনই আবিদের কোন চাওয়া অপূর্ন রাখিনি।কিন্তু এই চাওয়াটা পূরন করা আমার সাধ্যে ছিল না।
তাই চুপ হয়ে বসে ছিলাম।কিছুই বলছিনা।
কিন্তু আবিদ বায়না করেই যাচ্ছিল, করেই যাচ্ছিল।
তাই বাধ্য হয়ে বলেছিলাম,তোমার আম্মু চাদঁ আনতে গিয়েছে।
তখন বলল,তো মা চাদঁ নিয়ে এখনো কেন এলোনা আব্বু।
তখন আমি বলেছিলাম,
চাঁদের বুড়ি তোমার মা কে খুব পছন্দ করে ফেলেছে তো,তাই এখনও আসতে দেয়নি।
তখন আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,আব্বু লাগবেনা চাদঁ।
কারণ যদি চাঁদের বুড়ি তোমাকে ও পছন্দ করে মায়ের মতো তার কাছেই রেখে দেয়,তবে আমি কার কাছে থাকবো আব্বু।
সেদিন বুঝেছিলাম,বাবু আমার ছোট হলেও খুবই বিচক্ষণ।
-
আমি শুধু মনোযোগ দিয়ে সজিবের কথা শুনছিলাম।
আবার বলল,জানো আরিবা,তোমায় কেন বিয়ে করছি??
আমি শুধু আস্তে করে বললাম, কেন???
আসলে একদিন স্কুল থেকে এসে আমাকে খুব করে ধরলো একটা মা চাই।
কিন্তু কোথায় পাবো মা??
বলল,জানিনা।মা চাই, মানে মা চাই।
তখন আমার মা বলল,আবিদের জন্য একটা নতুন মা আনতে।
আমার যদিও ইচ্ছে ছিলোনা,তবুও ওদের চাপাচাপিতে বিয়ে টা করতেই হলো।
পরে আমার দিকে তাকিঁয়ে বলল,
কথাটা শুনে কি রাগ করলে তুমি???
আমি একটা হাসি দিয়ে বললাম,রাগ করা উচিত ছিল বুঝি??
ছিলো তো।
তবে সরি মিঃ আমি এতো অল্পতে রাগ করিনা।
আর কি জানি বললে,আবিদের চাপাচাপিতে বিয়ে করছো হুম???
...ও শুধু হুম বলল।
সাথে সাথে খাট থেকে ওর বালিশটা নিচে ছুড়ে দিয়ে বললাম,তো খাটে আমার সাথে কেন ঘুমাতে আসছো হুম??
যেদিন মনে মনে ফিল করবে যে,আরিবা কে তোমার জীবনেও প্রয়োজন,সেদিন তোমার সাথে ঘুমাবো।
সজিব তো পুরাই অবাক, ও হয়তো হঠাৎ এমন ব্যবহার আশা করেনি।
তবে আমি ও একটু ভয় পাওয়ানোর জন্য ই এমন টা করেছি।
এবং সাথে সাথে আবিদ কে নিয়ে এসে ওকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লাম খাটে।
আর বেচারা নিচে মশার কামড় খাচ্ছে।
একটু পর কয়েল জ্বালিয়ে গায়ে একটা চাদর চাপিয়ে দিলাম।শত হোক স্বামী বলে কথা।
-
সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের সংসারের মতো কাজে লেগে পড়লাম।
রান্না করছিলাম হঠাৎ ই কেউ একজন আঁচল ধরে টান দিলো।
পিছনে তাকিঁয়ে দেখি হাসি হাসি মুখ নিয়ে আবিদ দাড়িয়ে আছে।
আমি গাল টিপে বললাম,কিছু চাই তোমার??
না। নতুন মা।
দেখতে আসলাম কি করো।
তুমি তো খুব ঘেমে গেছো।বাতাস করবো??
নারে বাবা,বাতাস লাগবেনা।তবে একটা কথা,।
কি কথা নতুন মা??
আমাকে নতুন মা নয়।
মা বলতে হবে,পারবেনা বাবু??
কিছুক্ষণ ভেবে বলল,পারবো মা।
পরে রান্না শেষ করে, ওরে খায়িয়ে, সবার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
সজিব ও বসেছিল একটু দুরে।
তাকিঁয়ে দেখি খুব বিষন্ন দেখাচ্ছে ওকে।
তাই ইশারা দিয়ে ছাদে ডেকে নিলাম।
দাড়িয়ে আছি আমি।
পিছন থেকে বলল,কেন ডেকেছো বলো??
তাকিঁয়ে দেখি খুব রেগে আছে।হেচকা টানে কাছে নিয়ে বললাম,বাবুর কি খুব রাগ হয়েছে রাতের ব্যাপারে??
না রাগ কেন করবো?
বিয়ে তো আর আমার জন্য করিনি।
আস্তে করে কানে কামর বসিয়ে দিয়ে বললাম,তো কেন হুম????
আমার সব চাই।
বাবু আর বাবুর বাবা।
আর রাজি না থাকলে জোর করে কি করে আদায় করতে হয়,তা আমার খুব ভালো করেই জানা আছে বুঝলেন মিঃস্বামী???
-
পরে ছেড়ে দিতেই,
কি জানি ভাবতে ভাবতে চলে গেলো।
হয়তো ভাবছে কি গুন্ডি মেয়ে কে বউ করে নিয়ে আসলাম আবার??
আমি হঠাৎ আবিদের ডাকে বাস্ববে ফিরলাম।
মা গো,ও মা।
কখন ঘুড়তে যাবো আমরা??
ঘুড়তে??
যাবো তো বাবা।
চলো রেডি হয়ে নেই।
-
বিকেলে ঘুড়তে গেলাম তিনজন।
অনেক মজা ও করলাম।
-
দেখতে দেখতে কেটে গেল ১টা বছর।
আবিদ ও নার্সারিতে উঠে গেল।
আমার দ্বিতীয় বাচ্চা নেওয়ার কোন ইচ্ছে তেমন ছিলোনা।
তবে আবিদের নাকি একটা বোন চাই।
যে সারাক্ষণ ওর সাথে খেলবে।
ওর কথা মতো আমরা বাচ্চা নিলাম।
ভাগ্যক্রমে মেয়েই হলো।
তবে আমার মেয়েটি যখন হলো,তখন আমাকে সিজার রোমে নেওয়ার পর নাকি,আমার স্বামী খুব কান্না করছিল।
আবিদ ও ওর আব্বুর সাথে নামাজ পড়ে আমার জন্য দোয়া করছিল।
ওদের দোয়া কবুল কতটা হলো জানিনা।
আমি ঠিকই বেচেঁ গেলাম।
কিন্তু আমার মেয়েটা পৃথিবীর আলো দেখতে পেলোনা।
এতে আমার চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছিল আমার ছেলেটা।
যে কিনা বোনের জন্য আগে থেকেই অনেক খেলনা এনে রেখেছিল।
কত স্বপ্ন, কত কি।
সব ই নষ্ট হয়ে গেলো।
খারাপ লাগছিল খুব।
এর মধ্যে ডাক্তার এসে জানালো অপারেশনের সময় আমার এমন কিছু কেটে ফেলে দিলো,এতে করে আমি আর কখনই মা হতে পারবোনা।
কথাটাতে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।
এখন কিভাবে একটা বোন উপহার দিবো আমার আবিদ কে??
কেদেঁ ফেললাম আমি।
সজিব বুঝে গেল কেন কান্না করছি।
অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলো।
কাজ হলোনা।
তখন আবিদ আমাকে জড়ীয়ে ধরে খুব কাদঁছিল আর বলছিল,চাই না আমার বোন।
আমি শুধু আমার মা-কে ই চাই।
এক মাকে চাদঁ আনতে পাঠিয়ে হারিয়েছি।
অন্য মা-কে বোন আনতে পাঠিয়ে হারাতে চাইনা।
আমি ও শক্ত করে জড়িয়ে বললাম,আমার ও আর বাবু চাই না রে।
তুকে নিয়েই সারাটা জীবন কাটিয়ে দিতে চাই।
ভালোই কাটছে আমাদের সুখের সংসার।
-
লিখাঃতানিয়া..
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ā§Ŧ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3067
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ē:⧍⧠AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ