বখাটে
...
পর্ব-৫
শুভর মনে একটু একটু করে পরী জায়গা করে নিনে শুরু করলো।
শুভ যেদিকে তাকায় সেদিকে শুধু পরী আর
পরী।শুভ এ কোন অদ্ভত মায়ার বাঁধনে
পড়ে গেল শুভ নিজেও বুঝতে পারছে না।
.
বিকালে শুভ রাস্তার ধারে বসে উদ্দেশ্য
পরীকে এক পলক দেখা।
পরীকে এখন না দেখলে শুভ কেন জানি
ছটফট করতে থাকে।
.
শুভ দেখতে পেল পরী আসছে,শুভর মন
আনন্দে ভরে উঠলো।শুভর ভীষণ মন
চায়ছে পরীর সাথে কথা বলতে,কিন্ত কিভাবে কথা বলবে কি দিয়ে শুরু করবে?
শুভ ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসলো
পরীর ডাকে...
--এই শুনছেন??...পরী
--হ্যা হ্যা বলুন।
--বলছি এসময় তো আপনি বন্ধুদের সাথে
আড্ডা দ্যান,তাই না??
--থাকি কিন্ত আজকে...
--আজকে কি??
--মন চায়লো না আড্ডা দিতে।
--তাই বলে কি আমার বাসার সামনে
এসে বসে থাকতে হবে।
--ইয়ে মানে আপনাকে একটা কথা বলতে
এসেছিলাম।
--কি বলেন।
--ধন্যবাদ জানাতে এসেছিলাম।
--কেন?
--আমার বাসাটা সুন্দর করে গুছিয়ে দেওয়ার জন্য।
--আপনি ঐ রখম রুমে থাকতেন কিভাবে
চারদিকে ময়লা,ইদুঁরের বাসা আর তেলাপোকা।জানেন আমি তেলাপোকা দেখে কতটা ভয় পাই! তবু ঐ তেলাপোকার ভয়কে তুচ্ছ করে রুমটা পরিস্কার করেছি।
আর আপনি শুধু আমাকে ধন্যবাদ দিতে
এসেছেন!
--তোর আর কি দিবো?
--আপনার মনে একটু জায়গা দিলে কি
মহা-ভারত অসুধ্য হয়ে যাবে।
--না মানে ইয়ে ইয়ে
---কি ইয়ে ইয়ে করছেন? বলেন ভালবাসি।
--আপনি পারবেন না আমার সাথে
মানিয়ে চলতে।
--একশ বার পারবো হাজার বার পারবো
আপনার সাথে মানিয়ে চলতে,শুধু একবার
ভালবাসি বললে।
--এ হয় না।কারণ কি জানেন?
--কি কারণে হয় না শুনি।
--জানেন আমার মাথায় সবসময় এই লাল ফিতা কেন বাঁধা থাকে?
--কেন?
--সব সময় আমি মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াই,কখন একটা তাজা বুলেট এসে জীবন
নামে কারগার থেকে মুক্তি দিবে তার কোন
গ্যারান্টি নেই।
--কথা দিচ্ছি,তখন আমি ও এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করবো।
.
শুভ আর কোন কথা বলতে পারে না,কারণ
সে ও পরীকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।
শুভ সেখান থেকে বাসায় চলে আসে।
প্রতিরাতে শুভ কাশেম চাচার চায়ের
দোকানে আড্ডা দিতো সেখানে না গিয়ে
শুভ পরীকে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।
.
গতকাল সকাদের ন্যায় আজকে সকালে ও শুভর ঘুম ভাঙ্গে পরীর হাতের ছোঁয়ায়।
--তুমি এখানে??..শুভ
--কেন অন্য কারো থাকার কথা ছিলো বুঝি?
বলেই পরী উঠে চলে আসতে চাইলো।
--তখনি শুভ পরীর হাত ধরে ফেলল আর বললো..এই না ভালোবাসি তো।
--কচু বাসেন!
--হ্যা
--কি হ্যা??
--বলছি তোমাকে ভালোবাসবো সে আমার যোগ্যতা আছে?
দেখ আমার কোন দামী মোটরবাইক নেই,
আমি নিজেই ঠিকমত চলতে পারি না আর
তোমাকে কি করে রাখবো,তুমি থাকো বড়
অট্রালিকায় আর আমার বাসার অবস্থা
নিজ চোখেই দেখছো।এখন আপনিই বলেন
আমার মুখ থেকে ভালোবাসা শব্দটা কতটা
মানায়???
--হুম বুঝলাম।তোমার সাইকেল আছে??
--হুম আছে।কিন্ত কেন?
--ঐটাতে বসিয়ে মাঝে মাঝে নদীর পাড়ে
নিয়ে গেলেই চলবে।আর মাছ,মাংস বাদে দু-বেলা ডাল-ভাতের ব্যবস্থা
করে দিতে পারবে??
--মুচকি হেসে দিয়ে শুভ বললো পারবো।
--আর অট্টালিকার কথা বলছেন তাইতো
তাহলে বলবো,আমরা ভালোবাসা দিয়ে
এই ছোট কুটিরটাকে রাজপ্রসাদে পরিণত করবো যদি আপনি রাজি থাকেন।
--যদি তুমি এতো দুরে থাক তাহলে
রাজপ্রসাদ হবে কিভাবে??
--কোথায় আমিতো আপনার কাছেই আছি।
--কাছে থেকে যদি আমাকে তুমি করে বলা
বাদে আপনি বল,তাহলে যে হাজার মাইল
দুরে চলে যাই।
--তাহলে আপনি বাদে তুমি বললেই হবে??
--না।
--তাহলে??
--জড়িয়ে ধরতে হবে।
--শখ কত দেখছো চান্দুর।
--তাহলে আমিই কাজ সেড়ে ফেলি।
--সাবধান কাছে আসবে না বলে দিলাম।
--আহারে আমার হবু বউকে আদর করবো
জড়িয়ে ধরবো কিন্ত বউ অমন করে কেন?
--ইস বউ হয়ে গেলাম!
--শুধু তাই নয় কাল বাজার থেকে একটা
নামের বই কিনে আনবো।
--বই! বই দিয়ে কি হবে?
--বারে বাচ্চাদের ঠিক করতে হবে না।
--কি?
--হুম।আমার কিন্ত একটা মেয়ে চাই
তার নাম হবে নীলিমা।
--না ছেলে হবে।
--বলছি মেয়ে।
--হা হা
--হাসলে কেন?
--এখনো বউ বানাতে পারলে না আর আসছে মেয়ের আবদার নিয়ে!
--ও তাইতো।আমি কাল তোমার বাবার কাছে যাবো বিয়ের কথা বলতে।
--কিন্ত আমার অনেক ভয় হয়,বাবা যদি
রাজি না হয় তখন?
--তুলে আনবো তোমাকে।
--ঐটাই তো পারবে চান্দু তুমি।এমনেই তোমাকে বখাটে বলি নাকি?
--ঐ এখনি ঝগড়া শুরু করে দিলে আর তো দিন পড়ে রইছে।
--ঝগড়ার দেখছো কি? আমি চলে গেলাম
চান্দু,ভালো থাকো।
চলবে....
লেখক-Md Jasim uddin Shuvo
(ক্ষুদ্র লেখক)
বখাটে
.
.
পর্ব-৬
এরপর থেকে শুভর মাঝে পরিবর্তন আসতে থাকে।সবাই অবাগ হয়ে যায় যে ছেলেটা এত সহজে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে কিভাবে?
.
শুভ আর পরী বিকালে নদীর পাড়ে হাঁটছে দুজন-দুজনের হাত ধরে।বাতাস বইছে সাঁ সাঁ করে।পরীর চুল বাতাসে উড়ে বার বার পরীর মুখের সামনে এসে পড়ছে।
.
--চলো ঐখানে বসি..পরী
--চলো।
--দেখ প্রকৃতিটা এখন কত সুন্দর দেখাচ্ছে।
--তার চাইতে তুমি অনেক সুন্দর।
--পাগল একটা।
--তোমার জন্য।
--জানি।
--একটা কথা রাখবে?
--বলো।
--তোমার কোলে মাথা রাখতে দিবে?
--আমার কোলে তোমার মাথা রাখলে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবো।
--তাহলে রাখি?
--আবার বলা লাগে।
.
শুভ পরীর কোলে মাথা রেখে আছে আর পরীর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।পরীর দিকে তাকিয়ে যেন শুভ হাজারের বছর জমিয়ে রাখা তৃষ্ণা মিটাছে।
.
--একটা কথা বলি?..শুভ
--বলো।
--বাতাসে তোমার চুলে তোমার মুখ ঢেকে যাচ্ছে।আমাকে তোমার চুলগুলো ছুঁয়ে সড়িয়ে দিতে দিবে?
--তোমায় মানা করছে কে?
.
শুভ হাতের আলতো ছোঁয়ায় চুলগুলো সড়িয়ে দিলো।শুভ তাকি আছে আর ভাবছে,কি মায়াবী,নিষ্পাপ মুখ শুভ নতুন
করে পরীর প্রেমে পড়ে গেল।
.
--কি ভাবছো?..পরী
--কি মায়া করলে আমায় আমি যে আর পারছি না তোমার মায়ার বাঁধন ছিড়ে
দুরে থাকতে।
--দুরে থাকতে দিলে তো।
--পারবে আমায় তোমার বাহু ডোরে এবাবে
আজীবন বেঁধে রাখতে।
--কথা দিলাম মৃত্যু ছাড়া কোন বাঁধাই তোমার কাছ থেকে আমাকে আলাদা করতে পারবে না।
--তোমার কোলেই যেন আমার মৃত্যু হয়।
.
ভালোই যাচ্ছিল দিনকাল তাদের,প্রায়প্রতিদিন নদীর পাড়ে এসে দমকা হাওয়ায় সবুজ ঘাসের ওপর গা এলিয়ে
দিয়ে ছোট ঘর বুননের গল্প করা,মাঝে
মাঝে নদীর জলে দুর দুরান্তে হারিয়ে
যাওয়া।
.
হঠাৎ একদিন পরীর বাবা তাদের একসাথে
দেখে ফেলে এবং পরীকে অনেক মারধর
করে।
--ঐ বখাটে ছেলের সাথে তোর কিসের সম্পর্ক?..পরীর বাবা
--ওকে আমি ভালোবাসি।
--কি তুই ঐ বখাটেকে ভালবাসিস!
--ভুল বললে বাবা ও বখাটে নয়।
--তুই আমার মেয়ে হয়ে শেষ পর্যন্ত আমার মানসম্মান ডুবাইলি!
--এটাও ভুল বললে তোমার থেকে ঐ বখাটে
ছেলেকেই গ্রামের লোকজন বেশী মানসম্মান দেয়,ভালবাসে।
--তোর আজ থেকে ঘর থেকে বাহির হওয়া নিষেধ।
--আমাকে ঘরে আটকে রাখলেও ঐ বখাটে
মানে শুভ এসে তোমার সামনে থেকে উদ্ধার
করে নিয়ে যাবে।
--আমার মুখের ওপর কথা বলছিস,তোর ঘর থেকে বাহির সত্যি সত্যি বন্ধ।
--দেখ হিতে যেন বিপরীত না হয়।
.
পরী বন্ধ ঘরে বসে আছে কিন্ত তার কোন
কষ্ট নেই।কারণ সে জানে তাকে শুভ এখান
থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে এটা পরীর
আত্নবিস্বাস ,শুভর প্রতি তার পূর্ণ বিস্বাস আছে।তাই
পরী এতো অটল।
.
ঐদিকে শুভ জানতে পারে তার জান পাখিকে মানে পরীকে তার বাবা ঘরে আটকে রেখছে।শুভ দেরী না করে পিস্তলটা কোমড়ে নিয়ে
ছুটলো তার পরীর কাছে।অতঃপর..
--পরী পরী,তুমি কোথায়?..শুভ
--তোমার এতো বড় কলিজা যে আমার
বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে নাম ধরে
ডাকো!
--পরী আপনার মেয়ে হতে পারে কিন্ত সে
যে আমার আত্তা,আমার জীবন,আমার
ভালোবাসা।কোন বাঁধাই আমার কাছ থেকে পরীকে আলাদা করতে পারবে না।
--তোমার সাহস দেখে আমি সত্যিই অবাগ।
--ভালোবাসা মানুষকে হিংস্র বানিয়ে দেয়,আর আমি তো কেমন প্রকৃতির ছেলে
আপনার অজানা নয়।আপনি যে দুষসাহস দেখালেন এজন্য ইচ্ছে করলে আমি এই মূহুত্বে আপনাকে শেষ করে দিতে পারি।(কোমড় থেকে পিস্তল বের পরীর বাবার তাক করে কথাগুলো বললো শুভ)
--ঠিক আছে এক শর্তে আমি আমার মেয়েকে
তোমার সাথে বিয়ে দিবে।শর্তটা তোমাকে শর্তটা মানতেই হবে।
--কি শর্ত?
--আগে কথা দিতে হবে যে শর্ত মানতে না পারলে আমার জীবন থেকে তোমাকে দুর
সড়ে যেতে হবে।আর আমার মেয়েকে যদি
সত্যিই ভালোবাসো তাহলে তোমাকে এই
শর্ত পালন করতেই হবে।
--পরীকে পাওয়ার জন্য হাসতে হাসতে জীবনটা ও দিয়ে দিতে পারি আর এখানে তো মাএ একটা শর্ত।আমি রাজি।
.
পরী তার বাবা আর শুভর সব কথা শুনেছে।আর পরী ভাবছে সত্যি আমি
ভাগ্যবতি শুভর মতো একজনের ভালোবাসা পেয়ে।
.
--কি শর্ত বলুন?..শুভ
--তোমাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।তাও আবার ৫বছরের মধ্যে,এজন্য তোমাকে প্রবাসে যেতে হবে শীঘ্রই।
--না,না শুভ তুমি এ শর্তে কখনোই রাজি
থেকে না।এটা আমাকে আর তোমাকে দুরে
সরিয়ে দেবার নতুন পরিকল্পনা।..পরী
--আর এ শর্ত না মানলে যে তোমাকে হারাতে হবে চিরতরে।আমি পারবো না তোমাকে হারাতে বিস্বাস কর।
--তোমার যা ইচ্ছা তাই কর।কিন্ত একদিন
ঠিকি তুমি বুঝবে যে তুমি ভুল পদক্ষেপ নিয়েছিলে।
--না শুভ এই পদক্ষেপটা তোমার জন্য সঠিক সিদ্ধান্তই হবে..।পরীর বাবা
--কিন্ত আপনি যদি শর্ত ভঙ্গ করেন তাহলে দুনিয়া লন্ডভন্ড হয়ে গেলেও আমার হাত থেকে আপনাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
.
এরপর থেকে শুভ প্রবাসে যাওয়া জন্য যাবতীয় কাগজপ্রএ সগ্রহ করে এবং যাওয়ার দিন ও কনফার্ম হয়ে যায়। .
প্রবাসে যাওয়ার একদিন আগে শুভ পরীর বান্দীকে বলে,পরী যেন তার সাথে রাতে বকুল তলায় দেখা করে। গল্পের বাকীটুকু আরেক পর্বে দেওয়া হবে। .
লেখা-
Md Jasim uddin Shuvo
(ক্ষুদ্র লেখক)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ