#বোকা_ছেলে 5
☆
সন্ধ্যা বেলা…
চারিদিকে হৈ-চৈ হচ্ছে। অনেক আত্নীয় এসেছে বাড়িতে। এক মাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা। সজলের মা তাই কাউকে বাদ দেয় নি। গায়ে হলুদ হবে সজলের একটু পরেই। সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এখন শুধু বাকি সজলকে নিয়ে যাওয়া। সবাই অনেক মজা করছে। আর সজল জানতেছে বিয়ের পর কি অবস্থা হয়। কেমন করে চলতে হয়। সে সুখী হবে কি না। যারা বিয়ে করেছে তারা সুখী কি না। কত বছর বয়সের মেয়েকে বিয়ে করলে সুখে থাকা যায়। কিন্তু এগুলো বলে কি আর চলে। বোকা ছেলেটার বিয়ে হয়ে যাবে।
একটু পর সজলকে টেনে নিয়ে যাওয়া হলো মহিলা মঞ্চে। যেখানে সজল শুধু একটা গামছা আর সাদা ধূতি পরে আছে। জীবনে কোন দিন এই পোশাকটা পরেনি। ওর বড় শখ এই ধুতি পরা। কিন্তু তা হয়ে ওঠেনী। আজ যখন ওর ইচ্ছা পূরণ হলো তখন ও বলছে…
-যদি আমার এই ইচ্ছাটা কোন দিন পূরণ না হত তাহলেই বোধ হয় ভাল হত… (মনে মনে)
আর না বলারও কিছুই নেই। একবার এদিকে টানে তো অন্যদিকে খুলে যায়। আবার অন্যদিকে টানলে এই দিকে যায়। তার উপর আবার চারিদিকে মহিলা দিয়ে ভরা। শুধু যে মহিলা তা নয়। কিছু ছেলেও আছে তবে ওরা সজলের অবস্তা দেখে হেসেই খুন। সবাই তো এমনিতেই হাসতেছে। তার উপর ওদের হাসি সজলের মাথা নিচু করে দিল।
>খুব দাত কেলিয়ে হাসা হচ্ছে না… ও কোন দিন ধূতি পরেছে কেউ তো ঠিক করে পরিয়ে দিলে পারো। আর না পারলে একটু বুঝিয়ে দাও তাহলেও তো হয়। তা না খুব মজা নেওয়া হচ্ছে। সব গুলো বদের দল। আর এই যে তুমি কেমন মানুষ হ্যাঁ একটু তো চালাক হবে। বোকা আবালের মত আছে। বলি বুদ্ধি শুদ্ধি মাথায় কবে হবে… (শশী)
যাক বেচারা সজলের পাশে দাড়ালো সজলের মামাতো বোন শশী। এতক্ষণ পর সজলের দলে কেউ একজন এলো। নইলে তো সজলের ধুতি খুলেই নিত। এখন অবশ্য সে ভাবনাটা আর নয়। আর সজল কেমন করে শশীর দিকে তাকিয়ে আছে।
-মেয়েটা কত ভাল এটাকে বিয়ে করলেই বোধ হয় ভাল হত। কিছু না হলেও ধূতিটা তো পরিয়ে দিতে পারতো… (মনে মনে)
>আমার দিকে এই ভাবে দেখে লাভ নেই। এখন বড় হয়েছো। বিয়ে করতে যাচ্ছো। একটু তো চালাক হও। আর কত কাল বোকা বনে থাকবে… (সজলের ধুতি ঠিক করে দিয়ে)
-জানিস তোর বউদির মাথায় অনেক বুদ্ধি…
>হুম পারলে তার থেকে কিছু বুদ্ধি ধার নিও…
-এই এই আমি বুদ্ধি ধার নিব কেন… তুই সিনেমা দেখিস না। নায়ক নায়িকাকে কি বলে… বলে যে আমার যা কিছু তোমার আর তোমার যা কিছু সেসব আমার। তাহলে তোর বউদির বুদ্ধি ধার নিতে হবে কেন… সব তো আমার হবে…
>সিনেমা তো ভালই বুঝ… ঐটা নায়িকা নায়ককে বলে… আবুলদের বলে না...
-ঠিকি তো… আমি কি আবুল নাকি… আমি হলাম সজল…
>হুম তুমি আমার নায়ক ভাই… এখন ভাল হয়ে দাড়াও হলুদটা লাগাই…
বলেই সজলকে সোজা করে দাড় করানো হলো। না না রকম ছন্দে সজলের গায়ে হলুদ লাগানো হচ্ছে। একে একে সবাই লাগাচ্ছে। আর সজল সবাইকে বলে যাচ্ছে…
-আমার কাতু কুতু লাগছে…
কিন্তু তাই বললে কি হয়। নিয়ম তো মানতেই হবে। কিন্তু নিয়ম মানতে গিয়ে সজলের অবস্থা খারাপ। কাতু কুতুর কারলে অতিরিক্ত হাসি আসছে সজলের। আর পেট নিচের দিকে চলে যাচ্ছে। যার ফল ধূতি খুলে যাওয়ার উপক্রম।
-কি জালায় পরলাম রে বাবা… ধূতি খুললে তো সর্বনাশ। নাহ্ কিছু একটা করতে হবে… হুম…হু… পেয়েছি… এ শশী আমার ধূতিটা খুলে যাচ্ছে আর একবার একটু ঠিক করে দে না… (সজল)
সবাই সজলের কথায় হো হো করে হেসে উঠল। কেমন ছেলে যে কিনা নিজের ধূতি সামলাতে পারে না সে কিনা বউ সামলাবে। না না বউ সজলকে সামলাবে। কি দিনকাল পরল এমনও বদল মার্কা ছেলে আছে। না জানি বাবা মেয়েটার কপালে কি আছে। বলেই সবাই হাসতেছে। এতক্ষণে অনুষ্ঠান প্রায় শেষ। কিন্তু তবুও শশী এসব দেখে একদম রেগে মেগে আগুন হয়েছে। বোকা বলে এত। জের ধূতি ঠিক করার কথা সবার সামনে এভাবে বলতে হবে
>আমি পারবো না। তোমার ধূতি তুমি নিজেই ঠিক করো। বারবার আমাকে ঠিক করতে হবে…
রাগী গলায় কেথা গুলো বলে শশী চলে যাচ্ছে। আর বেচারা সজল…
-রাগ করল কেন… আমি কি কিছু খারাপ করলাম (মনে মনে) এই শশী শোন আরে দেখ রাগ করে… আমার কথাটা শোন না… (সজল)
>না তোমার কোন কথা আর আমি শুনবো না। এখন থেকে একটু চালাক হও…
বলে শশী চলে গেল। আর সজল পিছু পিছু ডাকছে।ডাকার সময় ধূতির কোণায় পারা পরে ধূতি একদম খুলে গেছে। আগে যেটুকু ভাল ছিল এখন আর সেটুকুও নেই। সজলের কোন খেয়াল নেই সে দিকে। সবাই তো চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। কি লজ্জার কথা…
>এই যে দাদা এইটা নেন… (আমি সজলের গলার গামছাটা দিয়ে)
-এইটা দিয়ে কি করবো… (রাগী গলায় সজল)
>এইটা পরেন না হলে… আপনার হয়ে যাবে…
-এই যে কে ভাই আপনি আমি এইটা পরবো কেন। আমি তো ধূতি পরে… আ… (নিজের দিকে দেখে)
>তারাতাড়ি পরেন…
-হুম পরছি… আপনি কিছু দেখেননি তো…
>না না কিছু দেখিনী আপনার প্যান্ট আছে না... তবে বাকিরা মনে হয় দেখেছে…
-সে দেখুক… হ্যাঁ...
>কেন…
-দয়া করে কাউকে বলবেন না। না হলে আমার আর আমার বলে কিছু থাকবে না।
>আচ্ছা ঠিক আছে… এবার তারাতাড়ি এখান থেকে যান…
*
ওফফফ্ বাবা অতঃপর শেষ হলো গায়ে হলুদ। কি কান্ড! কি কান্ড! সজল এখন নিজের ঘরে। বাইরে সবাই নাচানাচি করছে। শুধু সজলই করছে না। আর করবেই বা কি করে যেখানে যাবে সেখানে তো একটা ঝামেলা তৈরী করবে। তার চেয়ে ঘরে বসে থাকাই ভাল।
*
সব শেষ হয়ে গেল আজকের মত। সবাই পরিশ্রান্ত। এখন যে যার যার মত ঘুমে ব্যাস্ত। শুধু জেগে আছে সজল আর শশী। নানান কথা বলছে সজলের সাথে…
>তোমার মাথায় কি আছে বলতো… (শশী)
-কেন তুই জানিস না… চুল আছে। ঘন কালো চুল... তোর ও তো আছে তবে তোর গুলো একটু বড় তুই যদি বলিস আমিও বড় বানাবো… (সজল)
>হ্যাঁ তাই করো। চুল গুলো বড় করে শাড়ি পড়ো…
-ধুর তুই কি আমার সাথে মজা করতেছিস… শাড়ি কি ছেলে মানুষ পরে…
>হ্যাঁ মজা করতেছি… তোমার তাই করা উচিৎ…
-তোর তো অনেক বুদ্ধি কত সুন্দর করে মজা করলি আমার সাথে…
>ওফফফ কোন পাগলকে বোঝাচ্ছি…
-বলনা বলনা তোর এত বুদ্ধি কি করে…
>বলবো না...
-আহ্হা বলনা…
>বলে কি হবে… (চুল টেনে)
-ওও বুঝেছি…
>কি…
-তোর চুল বড় জন্য তোর বুদ্ধি বেশী আর আমার মাথার চুল ছোট জন্য আমার কম…
>তোমার মাথা…
-আমার মাথা হতে যাবে কেন… দেখিসনি তোর বউদির মাথার চুল কত বড় বড় আর ওর কত বুদ্ধি….
>ধুর থাকো তুমি তোমার বড় চুল নিয়ে… আমি গেলাম খুব ঘুম পেয়েছে...
-শশীও চলে গেল। যাক তাতে আমার কি… এখন বরং একা একা জ্যোস্না বিলাস করি…
সবাই চলে যাওয়ার পর সজল রাত্রির অর্পূবক্ষণ ভোগ করতে ব্যস্ত। চারিদিকটায় রুপালী আভা ঝলমল করছে। কারো হাত ধরে হাটতে ইচ্ছা হচ্ছে সজলের। কিন্তু তা সম্ভব না সজল সেটা জানে। তবুও কল্পনা করতে বাধা কোথায়। আজ হয়নি তো কি হয়েছে কাল হাটবে সে। কল্পনায় হাটতে হাটতে সজল ক্লান্ত। ঘুমিয়ে পরেছে একদম বাচ্চাদের মত। হাত পা গুটিয়ে।
কিছুক্ষণপর শশী এসে সজলের গায়ে চাদর দিয়ে গেল। আর সজল সেটা বেশ টেনে নিল। সজলের এমন বাচ্চাপনা মুগ্দ্ধ নয়নে দেখছে শশী।
শশী মেয়েটা অনেক ভাল। সজলকে ছোট ভাইয়ের মত দেখে। যদিও বা সজলই বড়। কিন্তু তবুও সজলকে সে ছোট ভাই মনে করে। শশীর কোন ভাই নেই। সজলের বাবা মারা যাওয়ার পর সজল শশীদের বাসায় থাকতো। আর তখন থেকেই শশী সজলকে ছোট ভাইয়ের মত দেখে। ছেলেটা বেশী সহজ সরল কিনা। কত মজা করেছে ছোট বেলায়। কিন্তু কোন এক কারণে সজলের মা ঐ বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। আর শশী হারায় সজলকে আদর করার অধিকার। শশী অনেক কান্না করেছিল ঐ সময়। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তবুও সজলের প্রতি ভালবাসাটা একটুও কমেনি। কেউ সজলকে বাজে কথা বললে শশীর সেটা সহ্য হয়না। ভাই বোনের ভালবাসাটা আসলে এমনি হয়।
শশীও চলে গেল। রাত প্রায় ২টা বাজে। প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে শশীর। সজলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে গেল শশী। সমস্ত এলাকা শান্ত।
*
বিয়ের দিন…
সবাই কাজে ব্যস্ত। যে যার যার মত কাজ করছে। সবাই সবার মত। কেউ খাচ্ছে আবার কেউ খাওয়াচ্ছে। সজলকে ডেকে তোলা হচ্ছে। বিয়ের আগে যেসব নিয়ম কানুন আছে সেগুলো সব পালন করা হচ্ছে। সবাই বলে বিয়ের নিয়ম সব ঠিক ঠাক মানা হলে নাকি বিয়ের পর সংসার এ সুখ আসে। কোন ঝামেলা হয় না। আর তাই জন্য শশী যার কাছে যেটা শুনেছে সব একের পর এক পালন করাচ্ছে। সকাল থেকে সব নিয়ম পালন করা হচ্ছে। এখন প্রায় ২টা ৩০ তবুও শেষ হয়নি। শশী চায়না ওর ভাইয়ের জীবন অসুখী হোক। তাই সে এখনো কিছু খায়নি আর সজলকেও খেতে দেয়নি। সব নিয়ম প্রায় শেষ। আর একটা বাকি আছে, সজলের মাথায় বাসি জল ঢালা হলো এক কলসি। সজলের শরীরে যেন কাপুনী চলে এলো। কিন্তু শশীর ধমকে সব বন্ধ। বিকেল ৪টার দিকে সব নিয়ম শেষ।
এখন সবাই সাজতে ব্যস্ত। বরযাত্রী যেতে হবে যে। সবাই বেশ করে সাজতেছে। শুধু সজল ছাড়া। সবাইকে বলে দেওয়া আছে সজল সাজবে সবার শেষে। আর সজলকে সাজাবে শশী। তাই সজলকে নিয়ে কেউ চিন্তা করছে না। সবার সাজা শেষ। শশী এখনও বাকি আগে সজলকে সাজাবে তারপর নিজে সাজবে। সজলকে সাজাতে চলে এসেছে…
-ভাল হয়ে বসো… তোমাকে সাজিয়ে দিচ্ছি… (শশী)
>আচ্ছা ঠিক আছে… ভাল করে দিবি কিন্তু… (সজল)
-ঠিক আছে…
দেখতে দেখতে অনেক বড় হয়ে গেলে। বিয়ে করছো… বুঝতেই পারলাম না আমরা। বিয়ের পর এই বোনটা কথা মনে পরবে নাকি বউ পেয়ে ভুলেই যাবে। আমার কথা হয়তো মনেই পরবে না। তুমি সারা জীবনটা বোকাই রয়ে গেলে বোনটার কষ্টটা একটুও বুঝলে না। সেই যে ছোট বেলায় আমাদের বাড়ি থেকে চলে আসলে আর তুমি আসলে না। অনেক ইচ্ছে করছিল তোমাকে দেখার কিন্তু তুমি আসোনি। হয়তো আমার কথা তোমার মনেই পরেনি। আর আজ যখন তোমাকে দেখছি তখন তুমি অনেক বড়। কিন্তু সেই বাচ্চাটিই রয়ে গেছ। সে কথা তোমার বিয়ে হচ্ছে একটু বুদ্ধি করে কাজ করো… কারো মন্দ বুদ্ধি শোনার প্রয়োজন নেই। মন যেটা বলবে সেটা করো…
একটানা কথা গুলো বলল শশী। বলতে বলতে দুফোটা চোখের জল গরিয়ে পরল গাল বেয়ে। আর অন্যদিকে সাজালো এখন সজল সর্ম্পূণ তৈরী। বর বেশে ছেলেটাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। দুচোখ ভরে দেখছে সজলকে। হয়তো আর এভাবে দেখতে পাবে না বলে।
-এই পাগলি কাদিস না। আমিও তোকে আগেরমতই ভালবাসিরে। তোকেও খুব সুন্দর একটা ফুটফুটে রাজকুমার দেখে বিয়ে দিয়ে দেব যাতে তুই আমাদের বাসায় আসতে পারিস। তোকে কি করে ভুলবো বল… তুই তোমার আদরের ছোট বোন বড় বোন সব। তোকে কি করে ভুলবো বল…
বলতে বলতে সজল শশীর চোখর জল মুছে দিল। তারপর সজলের গলা জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করল। সজল আর কিছু বলল না। সজলের মা সজলকে ডাকতে এসে এসব শোনার পর আর চোখের জল আটকে রাখতে পারলো না। চোখের কোণা থেকে দুফোটা জল গরিয়ে পরল। তিনি আর থাকতে না পেরে চলে গেলেন। সজলও শশীকে কান্না থামাতে বলল। আর সাথে গিয়ে ভাল করে সাজতে।
*
রাত প্রায় ৭টা বাজে। সবাই প্রস্তুত। গাড়িতে উঠে পরল। শশী সজলের গাড়িতে সজলের পাশেই বসেছে। ভাইয়ের সাথে আজকে আর কাউকে বসতে দিবে না…
*
প্রায় ৮টার দিকে সবাই বয়ে বাড়িতে উপস্থিত। অনেক গুলো গেটের মধ্যে দাড়িয়ে আছে। তাদের দাবি পুরণ করা হলো… এখন তাদের গেট ছাড়ার পালা। কিন্তু তার আগে…
>দাঁড়ান দাঁড়ান… এত তারা কিসের আপনাদের… আগে জামাইবাবুকে মিষ্টি মুখ করাই… (মেয়েগুলো)
-যাক বাবা শাশীগুলো বেশ ভাল… তারা আমার কষ্টটাতো বুঝতে পারলো… খুব খিদে পেয়েছে… (সজল মনে মনে)
>জামাইবাবু হা করেন…
অনেকটা লজ্জা ভাব নিয়ে সজল হা করল… আর…
-আহ্ আমার দাঁত গেলরে… মিষ্টি মধ্যে কি…
>একি জামাইবাবু কি হলো… আপনার দাঁতে আবার কি হলো…
-বদের দল মিষ্টির মধ্যে পাথর দিয়ে হাসা হচ্ছে… (মনে মনে)
>আপনি মনে হয় দাঁত ব্রাশ করেন না… এই দেখেন আমরা খাচ্ছি আমাদের তো কিছু হচ্ছে না… (হো হো করে হেসে)
-ঠিকি তো ওরা খাচ্ছে ওদের তো কিছু হচ্ছে না… (মনে মনে)
>এই নেন শরবত খান আপনার ক্লান্তি দুর হয়ে যাবে… (শরবত এগিয়ে দিয়ে)
*
শরবত খাওয়ার পর…
-আরে বাবারে মরে গেলাম মরে গেলাম… এটা শরবত নাকি নিমপাতার রস… (সজল থু থু ফেলতে ফেলতে)
মেয়েগুলো তো হেসেই খুন।
>ঠিকি ধরেছেন এইটা নিমপাতার রস… দেখলাম আপনার তেতো খাওয়ার অভ্যাস কেমন… আমাদের বোনকে সহ্য করতে পারবেন কি না...
-তোমরা আর কথা বলো না… যার বোন গুলো এমন তেতো সে যে কত তেতো কে জানে…
>কিহ্… ঠিক আছে… ভেবেছিলাম আপনাকে শেষে মিষ্টি খাওয়াবো কিন্তু আপনি তার যোগ্যই নন। থাকেন আমরা গেলাম…
বলেই মেয়েগুলো গেট ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। বেচারা সজল আচ শেষ। অতঃপর মেয়ের বাড়িতে ঢুকে সজল মিষ্টি খেয়ে তেতোর অবসান ঘটালো। বিয়ের তোর জোড় চলছে। সবাই ব্যস্ত। একটু পর বিয়ে শুরু হলো…
*
সজল আর ঐশীর বিয়েটা হচ্ছে। সেদিনের পর সজলের মা ঐশীর ঠিকানা জোগার করে। আর গিয়ে দেখতে পায় ঐশীর মা সজলের মায়ের বান্ধবী। আর ঐশী হলো সেই মেয়েটা যে মেয়েটা প্রথম সজলকে ডেকে তুলেছিল। আর সেদিন লোক গুলো সজলের বিয়ের পাকা কথা বলতে এসেছিল। এসব কিছু সজলের কাছ থেকে লুকানো হয়েছে। সজল ভাবছে বিয়েটা ঐ কারণে হচ্ছে।
*
বিয়ের সব নিয়ম শেষ। বিয়ে শেষ হলো। খাওয়া দাওয়া করে রাত ১২টার দিকে বাসায় চলে আসল। সবাই বউ বরণ করছে। বউ বরণ শেষে বউকে তার রুমে নিয়ে যাওয়া হলো…
*
রাত ১টা সজল বাইরে দাড়িয়ে। ভিতরে ঢুকবে কি ঢুকবে না ভাবছে। সজলের মনে ভয় কাজ করছে যদি মাঝ রাতে রাক্ষসী হয়ে যায়। সেতো বলেছিল সে রাক্ষসী। রাক্ষসী বউ আমার…
>সজল এখানে কেন তুই… বউমা ঘরে বসে আছে ঘরে যা… (সজলের মা)
-তুমি যাবে না... (সজল)
>ঐ বাদর ছেলে আমি তোদের মাঝে কি করবো…
-ঘুমাবে… আর কি করবে…
>আমাকে ঘুমাতে হবে না… যা বউমা তোর জন্য অপেক্ষা করছে…
বলেই সজলের মা চলে গেল। আর সজলের রুম থেকে শশী বের হয়ে আসল…
>চলো তোমাকে বউদির কাছে নিয়ে যাই… (শশী)
-বলছিস যাবো… খেয়ে ফেলবে না তো…
>কি যা তা বলছো… বউদি অনেক ভাল… আর বউদি কি রাক্ষসী যে তোমাকে খাবে…
-হ্যাঁ তাই তো…
>কি তোমার বুদ্ধি কোন দিন হবে না… এখন চলো… বউদি তোমার পথ চেয়ে বসে আছে…
একপ্রকার টেনেই সজলকে রুমে ঢুকিয়ে দিল শশী। সজল একপা দু পা করে ঐশীর দিকে আগাচ্ছে। বিছানায় বসে পরল…
-বউমা তোমার মুখটা একটু দেখি… (সজল)
>জ্বি বাবা… থুক্কু এই তুমি আমাকে কি বললে… (ঐশী রাগী গলায়)
-কেন বউমা বললাম…
>ঐ বলদের বলদ আমি তোমার বউমা হই…
-কেন মা তো তাই বললো…
>মা কি বলেছে…
-মা বলেছে যে বউমা ঘরে একা তুই যা…
>তাহলে আমি তোমার বউমা…
-তা না হলে কি…
>ওরে বলদ আমি তোমার বউ আর তোমার মায়ের বউমা…
-ওওও তুমি আমার বউ…
>হ্যাঁ…
-তোমাকে অন্যভাবে বলি…
>বলো…
-তুমি হলে আমার রাক্ষসী বউ… (গাল টেনে)
>ভালই রোমান্টিক হয়েছো দেখছি… (কাতু কুতু দিয়ে)
-এই কি করছো… কাতু কুতু লাগে তো…
>হে হে লাগুক… (আরো দিয়ে)
-এবার কিন্তু মাকে ডাকবো… (সজল)
>হে হে ডাকো ডাকো… (ঐশী)
-মা দেখতো বউমা… থুক্কু বউ কাতু কুতু দেয়… শশী এই শশী দেখতো তোর বউদি কাতুকুতু দিচ্ছে…
>এই চুপ চুপ…
-মা…
<ধুর মরা তুই ও দে… (মা)
-হে হে মা বলেছে তোমাকেও কাতু কুতু দিতে… হেহে হে… (সজল)
>এই না না একদম না… (ঐশী)
To be continue…
লেখা: লিটন (খচ্চোর)
#বোকা_ছেলে 6
☆
>এ যে… অনেক হয়েছে… এখন ওঠো বেলা কত হলো… সবাই কি ভাববে… (ঐশী)
-আর একটু ঘুমাই না মা… (সজল)
>মা… এই কি বললে আমি তোমার মা… (ঐশী রেগে গিয়ে)
-তুমি কি আমার সাথে মশকরা করতেছো সকাল সকাল মা… (ঘুমিয়েই)
>আমি তোমার মা হই… দাঁড়াও... (সজলের হায়ে পানি দিয়ে)
-মা উঠতেছি তো পানি দিচ্ছো কেন…
>আবারো মা বলে। মা… মা… মা… (চিৎকার করে)
<কি হয়েছে বউমা… (সজলের মা ছুটে এসে)
>আমি আপনার বোকা ছেলেকে বিয়ে করেছিলাম… কিন্তু এটাতো একটা পাগল… (ঐশী)
<ছিঃ বৌমা এমন কথা বলে না…
>বলবো না তো কি করব… আমাকে বলছে মা… (কান্নার মত করে)
<ঐ বলদা… বউকে কেউ মা বলে… তোকে কি আমি স্বাদে বলদা বলি… (সজলকে ধাক্কা দিয়ে)
-বলদা না মা বলদ বলো… (সজল)
>দেখছেন মা…
<ঐ তুই বউমাকে কি বলেছিস… (মা)
-ওও বউমা তুমি রাগ করেছে… রাগ করো না লক্ষি বউমা আমার… (ঐশীর হাত ধরে)
>মা দেখছেন কি বলছে… (ঐশী কান্না করতে করতে)
<ঐ বলদ ও তোর বউমা হয়… (মা)
<কি হয়েছে বউদি… (শশী)
>কি আবার হবে… তোমার ভাই আমাকে একবার বলছে মা আর একবার বলছে বউমা… কি করবো বলো… (কাদতে কাদতে ঐশী)
<তুমি বউদিকে কি বলছো এসব… (শশী সজলকে বলল)
-বুঝতে পেরেছিরে কি বলতে হবে… (সজল)
<তাহলে বউদির হাতটা ধরে বলে ফেল…
-ও সোনা… সোনা বউদি তুমি আর রাগ করো না… (সজল)
>কি আমি তোমার বউদি… (চোখ বড় বড় করে ঐশী)
-হ্যাঁ… তা নয় তো কি… শশী আর আমি ভাই বোন তাহলে ওর তুমি যা হবে আমার ও তো তাই হবে…
>আমি পাগল হয়ে যাবো… (ঐশী)
<তুমি এত বোকা কেন হ্যাঁ… ও হলো তোমার বউ আর আমার বউদি… (শশী)
-হ্যাঁ হ্যাঁ রে মনে পরেছে… মনে পরেছে… ও তো আমার বউ রাক্ষসী বউ (সজল)
>হুম এবার একটু আদর করে দাও…
বলে শশী আর সজলের মা ঘর থেকে বের হয়ে আসল। ঐশী মুখ ফুলিয়ে বিছানায় বসে পরল। সজল বার বার ওর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু বার বার ওকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। না পেরে সজল নিজে নিজে ফালতু প্রলাপ করছে…
-ইহ্ সব দোষ মনে হয় এখন আমার। আমি মনে হয় ইচ্ছে করে বিয়ে করেছিলাম। কথা বলবানা ঠিক আছে আমিও আর কথা বলবো না… হুম
মাথা হেলে ঐশীকে দেখল। সেতো আরো রেগে আগুন।
-ওরে বাবা আরও রাগিয়ে দিলাম মনে হয়… (মনে মনে) ঠিক আছে সত্যি আর কথা বলবো না…
বলেই সজল একটু দূরে সরে গিয়ে বসল। কিছুক্ষণ পর পর মাথা হেলে দেখছে রাগ কমেছে কি না। কিন্তু বার বার গোঘরা সাপের মত ফোস দিয়ে উঠছে। আর সজল আগের অবস্থানে আসছে। কিন্তু এভাবে কতক্ষণ থাকা যায়। তাই তো সজল একটু পাশে গিয়ে হাত ধরার চেষ্টা করে…
-রাক্ষসী সোনা বউ তুমি কি রাগ করেছো… আমাকে মারো তুমি আমি একটা বলদ…
কিন্তু কোন লাভ নেই আবার একই ফলাফল। এবার তাই নতুন বুদ্ধি ইমোশনে আঘাত হানতে হবে…
-ইহ কত শখ ছিল আমার… আমার বউ আমাকে গলা জড়িয়ে ধরে ভালবাসবে। আমার সাথে সব সময় কথা বলবে। আমার বোকা বোকা কথা অট্টহাসি হাসবে। মাঝে মাঝে আমার নাকটা টেনে বলবে আমার বোকা বর। কত মজা করবো বউয়ের সাথে… হ্হ কিন্তু আমার সেই কপাল কোথায়… ভাবলাম একটা রাক্ষসী বউকে বিয়ে করলে হয়তো সেটা হবে কিন্তু সব কিছুর তো কপাল লাগে। আমার বুদ্ধিও নাই কপালটাও নাই…
উপরের দিকে তাকিয়ে সজল হাপ ছাড়তে ছাড়তে কথা গুলো বলল। বোকাটার এই সব কথা শুনে আর ঐশী রাগ ধরে থাকতে পারলো না সেও উপরের দিকে তাকিয়ে বলা শুরু করল…
>আহ্ কত শখ ছিল আমার একটা বোকা বর হবে। যে আমাকে অনেক অনেক ভালবাসবে। আমি রাগ করলে আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে গলায় গাল ঘষতে ঘসতে বলবে রাগ করনা লক্ষিটি। তোমাকে ভালবাসিতো। হাত দুটো দিয়ে পিছন থেকে জুড়য়ে ধরবে আমায়। না না ভাবে রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা করবে… কিন্তু সে কপাল আর আমার হলো না। বোকা বর পেলাম ঠিকই কিন্তু সেই ভাগ্যটা আর হলো না। আর হবেই বা কি করে আমার বরটা তো বোকাদের মধ্যে বোকা…
ঐশীর কথা শোনার পরই সজল পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে গলায় ওর গালটা ঘষতে ঘষতে বলতে শুরু করল…
-আমার রাক্ষষী বউটাকি রাগ করেছে। আর রাগ করে থেকো না। তুমি রাগ করলে যে আমার কিছু ভাল লাগে না। তুমি কি বোঝনা। তবে রাগলে তোমাকে অসেক সুন্দর লাগে। তাই তো তোমাকে রাগানোর জন্য বোকামি করি… (চাপা) কিন্তু তুমি যখন রাগ করে কথা বলনা তখন আমার কিছু ভাল লাগে না। তোমাকে ভালবাসি বলে…
ঐশী বোকা ছেলেটার পরশ নিতে নিতে চোখ বন্ধ করে ওর কথা গুলো শুনতেছিল। প্রতিটা শব্দ যেন ওর কাছে সুখকর। কিছু বলছে না ঐশী। শুধু বোকা ছেলেটার কথা শুনে যাচ্ছে। ওর কাছে মনে হচ্ছে এই বোকা ছেলেটাই কেবল পারবে ওর ভালবাসার মূন্য দিতে আর কেউ নয়।
>আমরা আজ কোথায় যাবো জানো… (ঐশী)
-কোথায় যাবো… (সজল)
>আমাদের বাড়িতে…
-আমাদের বাড়িতে তো আছোই আবার কোথায় যাবো…
>আরে বুদ্ধু আমাদের বাড়ি মানে আমার বাবার বাড়ি…
-ওও আচ্ছা…
>ও আচ্ছা না… ওখানে গিয়ে কিন্তু কোন রকম বোকামি করবা না…
-পাগল নাকি আমি কি অত বোকা নাকি… আমার মত বুদ্ধিমান আর একটা আছে নাকি…
>হুম… তোমার অনেক বুদ্ধি… যার কোন জবাব নেই
আগের অবস্থায় থেকে দুজনে কথা বলছে। অন্য ঘর থেকে সজলের মা ঐশীকে নাস্তা করার জন্য ডাকছে… আর ঐশী সজলের বন্ধন খুলে নাকটা টেনে বলে গেল…
>ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আসো আমার বুদ্ধিমান বর…
কথাটা বলার সময় ঠোটের কোণায় ছিল এক চিলটে হাসি। যেটা দেখার জন্য সজল এতক্ষণ থেকে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু এভাবে যাওয়ার জন্য নয়। যাক মা ডেকেছে এখানে ওর দোষ কি। অতঃপর সজল ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করার জন্য চলে গেল।
*
সবার নাস্তা করা শেষ। সবাই গল্পে ব্যস্ত। আজ বিকালে সজল ঐশীকে নিয়ে ওর শশুড় বাড়ি যাবে জামাই আদর খেতে। শশী সজলকে না না ভাবে বোঝাচ্ছে যেন কোন কিছু উল্টা পাল্টা না করে। সজল সবার কথা মনযোগ দিয়ে শুনছে। কিন্তু কি শুনছে সেটা ও ভাল জানে। গল্প করতে করতে দুপুর হয়ে গেল। দুপুরের খাওয়া শেষ হলে সজল আর ঐশী বিকালে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সজল আর ঐশী প্রস্তুত যাওয়ার জন্য। সজলের মা সজলকে বলে দিচ্ছে কার সাথে কি করতে হবে…
>শোন শশুড় বাড়িতে গিয়ে বিয়াই-বিয়াইনকে সালাম করবি। বিয়াই-বিয়াইন কে জানিস তো… তোর শশুড় শাশুড়ি। আর বোকামিটা একটু কম করবি। কিছু লাগলে বউমাকে বলিশ। তোর তো কোন ঠিক নেই। বউমা তুমি ওকে একটু দেখো… না হলে কি থেকে কি করবে… (মা)
<ঠিক আছে মা… আপনি কোন চিন্তা করবেন না… (ঐশী)
>তুমি যখন বলছো তাহলে তো আর কোন চিন্তা নেই… তোমার মত যদি ওর একটু বুদ্ধিটা হতো… আচ্ছা ঠিক আছে তারাতাড়ি যাও… আর পৌঁছে ফোন করিও…
<ঠিক আছে মা…
অতঃপর গাড়িতে উঠে বসল দুজন। গাড়ি চলতে শুরু করেছে। গাড়ির ভিতর ঐশী সজলকে বলছে…
>দেখ তুমি যদি আমার বাড়িতে কিছু উল্টা পাল্টা করো তাহলে কিন্তু আমি আর আসবো না তোমার সাথে… (ঐশী)
-না না আমি কিছু করবো না। মা যা-যা বলেছে তাই করবো… এর বাইরে আর কিছু করবো না… (সজল)
>হুম মনে থাকে যেন… নইলে খেয়ে ফেলবো…
*
ওরা পৌঁছে গেছে ঐশীদের বাড়িতে। দুজনে গাড়ি থেকে নামল। গাড়ির ভেতরের জিনিস পাতি একটা ছেলে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেল। সজল ঐশীকে বলল…
-তুমি যাও আমি একটু পর আসতেছি…
>কেন তুমি আবার কোথায় যাবা… (ঐশী)
-কোথাও না আমার একটু লজ্জা লাগছে তাই আমি একটু পরে আসছি…
>আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু বেশী দেরি করো না…
বলে ঐশী বাড়ির ভেতরে ঢুকল। আর সজল চারিদিকটা দেখছে। হঠ্যাৎ করে সজল ভারসিটির সেই সোলার প্রফেসরকে দেখতে পেল। আর সাথে সাথে…
-এই যে সোলার কাকু… সোলার কাকু… (চিৎকার করে সজল)
>এই কে তোমার সোলার কাকু হুম… (প্রফেসর)
-কে আবার আপনি… সেদিন তো আমাকে আমার সোলার দেখালেন না… আজ দেখান…
>এই ছেলে তুমি কি পাগল নাকি… যে আমার কাছে সোলার দেখতে চাচ্ছো…
-না না আপনার কাছে না থাকতে পারে এটা কোন কথা হলো…
>তোমার মাথায় কি সিট আছে…
-দিলেন তো মাথাটা গরম করে… এই আপনি এই বাড়ির সামনে ঘোড়া ঘুড়ি করছেন কেন…
>এই কে তুমি হ্যাঁ যে তোমাকে বলবো…
-কে আমি আমি এই বাড়ির জামাই… কিন্তু তুই কে… বল না হলে তোর সোলার দেখা…
>আমি সোলারও দেখাবো না আর বলবোও না আমি কে…
-তাহলে দাড়া… কি করে কথা বের করতে হয় দেখে নে…
>ওরে বাবারে গেলাম রে… কেউ বাচাও আমাকে এই পাগলের হাত থেকে…
বলেই প্রফেসর দৌড় দিয়ে পালালো। আর সজল খানিকটা দৌড় দিয়ে থেমে গেল। আর বাইরে না থেকে শশুড় বাড়িতে ঢুকে পরল। ঢোকার সাথে সাথে সেদিনের সেই মেয়েটা চিৎকার করে বলতে লাগলো…
>কে কোথায় আছো দেখে যাও জামাইবাবু এসেছে...
আর সাথে সাথে কোথা থেকে যেন মহিলা পল্টন ছুটে এলো। একেক জন একেক কথা বলছে… কেউ বলছে ঐশীর কপাল আছে বটে নইলে এমন রাজপুত্রের মত বর পায়। আবার কেউ বলছে দারুন মানিয়েছে দুজনকে। সবাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সজল কিছু না ভেবে পেয়ে মায়ের কথা মত ছোট বড় সবাইকে সালাম করতে শুরু করে দিল। আর সবাই ব্যাঙ এর মত লাফাতে শুরু করলো। আর সবাই বলতে শুরু করল…
আরে আরে জামাই লাগবে না… আবার কেউ জামাইবাবু কি করছেন। ঐশী এসব দেখে হাসতে হাসতে সজলকে টেনে ঘরে নিয়ে গেল। সজলকে বিছানায় বসিয়ে রাখল। সজলের ছোট শালি এসে ওকে শরবত দিয়ে গেল... কিন্তু বিয়ের দিনের কথা মনে করে আর খেলনা। বাবা যদি আজও নিম পাতার রস দেয়। আর এইটা করাতে ঐশী চরম রেগে গেছে সজলের উপর। তাই ঠিক করেছে এবার থেকে যা নিয়ে আসবে সব খেয়ে ফেলবে।
*
ঐশী একটা ফ্যামিলি অ্যালবাম বের করে নিয়ে আসল। একে একে সবাইকে চিনিয়ে দিচ্ছে। কে কি হয়। কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হবে। প্রথমে ঐশীর মায়ের ছবি…
>ইনি বিয়াইন তাই তো… (সজল)
>কি বললে… এনি আমার মা… (ঐশী)
-হুম তাই জন্য তো বললাম বিয়াইন…
>ইনি তোমার বিয়াইন হয়…
-কেন মা তো তাই বলে দিল… তুমি শোন নি…
>কি রকম লাগে… আরে আমার মা মানে তোমা শাশুড়ি মা… আর তোমার মায়ের বিয়াইন…
-ওওও… আর এই সোলার কাকু কে…
>কি বললে… ইনি আমার বাবা…
-কি… আজ আমি শেষ কি করেছি (মনে মনে)
>হ্যাঁ… ইনি তোমার শুশুর… কিন্তু বাবা বলবা…
-খাইচ্ছে আজ আমি শেষ… (মনে মনে) কি বললে…
>বললাম এনাকে বাবা বলবে…
-পারবো না…
>কেন…
-আমার কি বাবা নেই… যে ওনাকে বাবা বলতে হবে…
>তোমার বাবা আছে সেটা তো আমি জানি… আমারও তো মা আছে তাহলে তোমার মাকে আমি মা বলি কেন… আজ থেকে তোমার যা সব আমার আর আমার যা সব তোমার…
-তাহলে দেও তোমার শাড়িটা আমি পরি আর আমার র্শাটটা তুমি পরো…
>হা হা আচ্ছা ঠিক আছে পরবো এখন… তবুও বাবা বলিও না হলে বাবা রাগ করবে…
-তোমার বাবা তো এমনিতেই রাগ করে আছে… (মনে মনে)
>কিছু বললে…
-না কিছু না… ইনি কে…
>ইনি হলো…
একে এক সবাইকে দেখিয়ে দিল ঐশী। সজল কি বুঝতে পেরেছে সেটা সজলই জানে ভাল।
কিছুক্ষণ পর…
সজল ওর শশুড়িকে সালাম করল। কেমন আছে সেটা জেনে নিল। বলতে গেলে ঐশী যা যা শিখিয়ে দিয়েছে সব বলল। সবাই মিলে গল্প করছে। এমন সময় ঐশীর বাবা মানে সজলের শশুড় আসল। ওনার অবস্থা দেখে তো সবার চোখ কপালে। আর সজল…
-একি বিয়াই আপনার এমন অবস্থা কেন… (যেন কিছুই জানে না)
সজলের কথা শুনো সবার চোখ যেন মাথায় উঠে গেল…
>হুমম… (ঐশী সজলের দিকে চোখ বড় বড় করে)
-থুক্কু থুক্কু বাবা আপনার একি অবস্থা রেসলিং খেলে আসলেন নাকি…
এশীর বাবা না পারছে কিছু বলতে আর না পারছে সহ্য করতে…
>ওরে বদের হাড্ডি নিজেই আমার এই অবস্থা করে আবার ভেংচি কাটা হচ্ছে… (মনে মনে সজলের শশুড়)
To be continue…
লেখা: লিটন (খচ্চোর)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ