#প্রতিস্থাপন
*
“বাবু সোনা আমার যাও এবার ঐ রোদের মধ্যে দুপায়ের ফাকে হাত জোড়া করে রোদের মধ্যে গিয়ে দাড়িয়ে থাকো” বলেই একটা ছেলেকে কলেজ মাঠের রোদ যেখানটায় বেশি সেখানে পাঠিয়ে দিলাম। বন্ধুরা মিলে মজা নিতেছি। আজ সকাল থেকে অনেককে এভাবে মুরগি করছি। আর আমার হিসাবে এটা আজকের ছয় নম্বর মুরগি। আদুরের দুলাল। এবার বুঝবে কেমন লাগে। আমি আর কয়েক জন বন্ধু মিলে প্রায়সই এই কাজ করি। পুরো বলতে গেলে র্যা গিং টিম আমাদের। কলেজের বড় ভাই হওয়ার সুবাদে বেশ রাজার হালেই আছি। কেউ চোখ তুলে কথা বলার সাহস পায়না। বলে গেলে র্দুবলের উপর সবলের অত্যাচার। যদিও নীতি কথা অনেক জানি কিন্তু যখন মজা নিতে ইচ্ছে করে তখন আর ঐসব মনে থাকে না। মজাটাই যেন বড় বিষয় হয়ে দাড়ায়। ঠিক তাই বিনোদনের সময় অন্য দিকে খেয়াল না দেওয়াই ঠিক তাতে করে বিনোদনের ব্যঘাত ঘটে। আর আজ কাল কার যুগে বিনোদনের কোন সুযোগ নেই। তাই যেটুকু সময় পাচ্ছি সেটা নষ্ট করতে ইচ্ছে করছে না।
কিরে শান্ত কি ভাবছিস? আমার বেখেয়ালী ভাব দেখে রাসেল ডেকে বলল। না কিছু না। আজকে অনেক হলো রে আর বেচারাদের কষ্ট না দেই। চল ক্যান্টিন থেকে ঘুরে আসি। আমার কথাটা যেন ওদের কারো ভাল লাগলো না। সবাই হা করে গেটের দিকে তাকিয়ে আছে। বাবা বলেছে যে জনতা জর্নাদন। তাই আমিও ওদের দৃষ্টিকে লক্ষ্য করে তাকালাম। তাকিয়ে আমার ও হা হওয়ার অবস্থা। মনের মধ্যে রোমান্টিক কবিতা ঘোরপাক খাচ্ছে।
যদি বলো এভাবে কি দেখ, তবে আমি বলবো হেসে
জানো তোমার চোখে আমি আকাশ দেখি।
তোমার চোখের দিকে চাহিয়া থাকিলে আমার যেন হৃদয়ে কম্পন অনুভুত হয়
আমার কথা শুনে তোমার হাসি পেতে পারে আবার লজ্জাও করতে পারো
কিন্তু তুমি কি জানো তোমার ঐ হাসিতে কত মায়া লুকানো আর
আর কি?
আর তোমার কালো চুলের সমুদ্রে আমি দেখি কোন এক রুপকথার পরি
তুমি বলতে পারো এসব আমার বানানো কথা তবে
তবে এটা শোন ছন্দ না থাকলেও এটাই আমার কবিতা।
তবে এ গুলোকে কে কবিতা বলা ঠিক হবে কিনা জানিনা। হয়তো কবিতা বললে কবিতার অসম্মান করা হবে। তবে আমার হৃদয়ে এখন এটাই বাজছে এই বড় বড় চশমা পড়া আর ঠোঁটে গোলাপি লিপিস্টিক পড়া মেয়েটিকে দেখে।
শান্ত এই শান্ত আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলছে রুহি। আহ্হ ডির্স্টাব করিস না তো দেখতে দে ভাল করে। আমার কথায় যেন অস্কার পেল। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আমার দিকে দেখছে। আর সবাই মিলে বলে উঠল, কিরে কাকে দেখিস? আরে তোদের বউদিকে দেখি, কথাটা শুনে ওরা সবাই বলে উঠল বউদিকে দেখি, হুম বউ দিকে দেখি। তা কোথায় বউদি? কোথায় মানে চোখে কি ছানি পরেছে, দেখছিস না গেটের সামনে চশমা পড়া একটা মেয়ে। হুম মেয়ে না মেয়ে। ওদের কথা কিছু বুঝতেছি না, তাই রাগ হয়ে বললাম ঐ দেখ দেখেছিস? তবুও যেন বলছে কোথায়? ঐ তোদের সমস্যা কি? আমি দেখছি আর তোরা দেখতেছিস না মানে কি? মানে সামনে ভাল করে দেখ গেটে কোন মেয়ে কেন একটা ছেলেও নাই। আছে শুধু পটকার দিদিমা। যার বয়স কিনা ৭০ এর উপরে।
ওদের কথায় ভাল করে তাকাতেই ভীষণ লজ্জা পেলাম। আসলেই ওখানে কোন মেয়ে নেই। কিন্তু আমি যেন স্পষ্ট দেখলাম। তাহলে কি আমি ভুল দেখলাম। এর আগেও কয়েক বার আমার এমনটা হয়েছে। তাহলে কি এটা আমার মনের ভুল। নাকি আমার কল্পনার কেউ একজন। না থাক আর ভেবে কাজ নেই।
কিরে কি ভাবছিস? তোর সেই মেয়েটার কথা তো রাসেলের কথায় ভাবনায় ছেদ পরল। হুম হ্যাঁ না মানে ইয়ে, আমার ইয়ে মানে শুনে বলল হয়েছে আর ইয়ে মানে মানে করতে হবে না মেয়েটা ক্যান্টিনের দিকে গেছে। আর মেয়েটার নাম মেঘলা।
কি মেঘলা। আহ্হ কি রোমান্টিক নাম। আর আজকের দিনটাও মেঘলা। আমার প্রেমের সূচনা হলো আজ। আমার কথা শেষ না হতেই বলে উঠল
এত লাফানোর কিছু নেই। এটা সেই মেয়েটা যে কিনা তোকে দুচোখে একদম দেখতে পারে না। একবার, দুইবার নয় তিন তিন বার রযাে গিং করেছিস মেয়েটাকে। তাই সূচনা না বলে বল উপসংহার, যে মেঘলা দিনে ঝড়ে পড় বারি ধারা আমার প্রেমের উপর ধুয়ে দাও মনের জীবাণু।
কথাটা আমাকে যেভাবেই বলুক না কেন? আমার ভালই লেগেছে। বারি ধারার কথা বলে একটা ভাল বুদ্ধি মাথায় এনে দিয়েছে। তাই তো ওদের বলে দিলাম প্রেমের ভাইরাস আগুনেও ধ্বংস হয়না আর তো তোর পানি। আর যদি চেষ্টাও করে তাহলে ছাতা তো আছেই। বলেই ক্যান্টিনের দিকে চলে গেলাম।
*
কোথাও দেখতে পাচ্ছিনা। কিছু মেয়ের পিছনে দাড়িয়ে সর্ম্পূণ ক্যান্টিনটা লক্ষ্য করলাম। কিন্তু কোথায় নেই। আমি নিরাশ। তাই উপরের দিকে তাকিয়ে উপরওয়ালাকে বলছি, তুমি কি আমার আর ওর জোড়াটা বেঁধে দেবে? যদি অন্য কারো সাথে জোড়া থাকে তাহলে দয়া করে তাকে সরিয়ে প্রতিস্থাপন করে আমাকে ঐ স্থানটা ধরিয়ে দাও। কথা দিচ্ছি আমাদের বাচ্চার নাম তোমার মতই একটা রাখবো। তাহলে ঐ কথায় রইল আমি মাথা ঘুরাচ্ছি। যদি ওর সাথে দেখা হয় তাহলে বুজবো হবে আর না হলে আমিও মেঘলা আকাশের নিচে হারিয়ে যাবো। ঠিক আছে, ঘুরলাম ঘুরলাম কিন্তু
বলেই মাথা নামিয়ে পায়ের দূরত্ব দেড় ফুট রেখে বাম পা টা মেঝে ঘেষে ১২০ ডিগ্রি কোণে ঘুরাচ্ছি। কিন্তু ৭০ ডিগ্রী যাওয়ার সাথে সাথে কারো পায়ের সাথে সংর্ঘষ অনুভব করলাম। আর কারো একটা চিৎকার। সেই সাথে কারে একটা হাত আমার গলার পিছন দিকটা গিয়ে পরল আর আমার একটা হাত কারো পিঠের উপর আর অন্য হাতটা আমার হাতের সাথে শক্ত করে। কোথা থেকে যেন সাদা ফুলের মত কিছু একটা মুখে পরেছে বুঝতেছি পপকন। একদম সিনেমাটিক। আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি আর মেয়েটাও। মনে হচ্ছে বিয়েতে কেউ ফুল ছড়িয়ে দিচ্ছে আমাদের গায়ে।
উপরের দিকে তাকিয়ে বলাম। তোমার নেটওর্য়াক তো অনেক ফাস্ট। চাইলাম দেখতে আর তুমি শুভ দৃষ্টি করিয়ে দিলে। আমারদের বাচ্চা দের একটা ক্রিকেট টিম বানাবো। আর নাম দেব “গড ব্লেস সি.সি”।
মেয়েটা আমার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু চাইলে কি হয়। উপর থেকে ঠিক হয়ে গেছে ফেবিকলের মত লেগে গেছে। মেয়েটার দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম মেয়েটা রেগে আগুন। ৫৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়। তাই ফেবিকল আর টিকলনা। নষ্ট হয়ে গেল। সাথে সাথে হাতটাও খুলে ছুটে বেড়িয়ে গেল। রাগে কটমট করতে করতে বলতে শুরু করল,
আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি হ্যাঁ? বারবার আপনি আমাকে অপদস্ত করছেন। তিন দিন আমার উপর পানি ঢেলেছেন। আর আজ আবার আমার পপকন গুলো ফেলে দিলেন। কি মনে করেন কি নিজেকে। সিনিয়র হয়েছেন জন্য কি গোটা কলেজটা কিনে নিয়েছেন নাকি। আপনার জ্বালায় কি আর কলেজে আসতে পারবো না নাকি। আর উপরে কাকে ঐসব বাজে কথা বলছিলেন। সি আপনাকে দেখে কি ছোটরা শিখবে আর আপনি ছোটদের শুধু অপদস্ত করতে জানেন। আর এর থেকে বা আপনার কাছে কি আশা করা যেতে পারে?
বলে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমার কিছু মনে হলো না। প্রেম করতে হলে আরো অনেক কথা শুনতে হবে। আর বলবে না কেন যেভাবে ধরেছিলাম। তবুও বললাম, আজ থেকে তোমাকে পপকন খাওয়ানোর দায়িত্ব আমি নিলাম। আমার কথাটা শুনে পিছনে দেখে ১৩০ ডিগ্রি কোণে বাকা করে চলে গেল।
যাক তবুও ভাল। কিন্তু বলেতো দিলাম যে পপকন খাওয়ানোর দায়িত্ব আমার সেটা পালন করতে পারবো তো? সেটা দেখাই যাক। আগে রাজি করাই তারপর না হয় হবে।
কিরে শান্ত মেয়েটার মনতো করে দিলি অশান্ত। জানিনা কোন ঝড় আসে। রুহির কথায় পিছনে তাকিয়ে দেখতে পেলাম পুরো পল্টন একবারে হাজির। এরা যে কিভাবে সব খবর পায় কে জানে? তোদের মনে হয় পরপাখা আছে? কিছু বললি? না কিছুনা আতিককে থামিয়ে বললাম। তা আমাদেরও একটু পপকন খাওয়া? শুধু কি ভাবিকে খাওয়ালে হবে। তার দুষ্টু মিষ্টি দেবরদের খাওয়াতে হবে না? রুহি বলল। দুষ্টু মিষ্টি দেবর তোরা একেকটা হলি তিতা, আমার কথা শুনেই রাসেল বলে ফেলল তাহলে একটু মিষ্টি খাইয়ে তিতা থেকে মিষ্টি করে দে না। আচ্ছা ঠিক আছে সে হবে এখন তোরা আমার বিয়েতে মিষ্টি নিয়ে আসিস আমি তোদের সবার হাতে হাতে একটা করে মিষ্টি ধরিয়ে দেব। আমার কথায় সবাই বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকালো। তুই কি কৃপণ রে। আমরা নিয়ে যাবো মিষ্টি আর তুই সেই মিষ্টি একটা একটা আমাদের খাওয়াবি? রুহির কথার তীব্রপ্রতিবাদে আমি বললাম, তোরা আবাল নিজেরা গিফ্ট করে সেটাই খেতে চাস? আরে আমি কি তোদের মিষ্টি তোদের খাওয়াবো? আমার শালিকারা যে মিষ্টি নিয়ে আসবে সেই মিষ্টি তোদের খাওয়াবো আর তোদেরটা ওদের খাওয়াবো। হয়ে গেল না মিষ্টি বদল। আমার কথায় সবার মুখে একদম হাসি। তা একটা করে কেন ভাই? রাসেল বলল। আরে এমনিতেই তো মিষ্টি তাতে আবার শালিকাদের মিষ্টি মিষ্টিয়ের বর্গ হয়ে যাবে। আর বেশি খেলে আবার ডায়বেটিস হতে পারে। তোরা আমার বন্ধু আর দোস্ত তোদের কি করে অসুস্থ করি বল। তাই একটা করে, বলেই সবাই হেসে উঠলাম। আচ্ছা চল ক্লাশে যাই। বলেই সবাই ক্লাশের দিকে পা বাড়ালাম।
to be continue...
#প্রতিস্থাপন 2
ক্লাশ শেষ করে বাসায় চলে আসলাম। প্রতিদিন আড্ডা দিয়ে তারপর আসি। কিন্তু আজ বাসা থেকে ফোন করায় কলেজ থেকে সোজা বাসায় আসতে হল। বাসায় এসে জানতে পারলাম সবাই নাকি কার একটা বিয়েরে অনুষ্ঠানে যাবে। তাই আমাকে বাসায় থাকতে হবে। মেজাজ যেন চরম উপরে উঠে গেল। শুধু আমার আড্ডটা নষ্ট হলো। কি আর করার নিজের রুমে গিয়ে পুরোনো দিনের সেই গানগুলো শুনছি। আর গিটার বাজিয়ে বৃথা চেষ্টা করছি গান গাওয়ার। ভাল একটা সময় কাটছে। আরো ভাল হত যদি ছাদে গিয়ে গাইতে পারতাম। হোক যেটা বতর্মানে আছে সেটাতেই সন্তুষ্ট থাকাই ভাল। বেশি চাইলে সমস্যা হতে পারে।
রাতে সবাই বাসায় আসল। প্রতিদিন এই সময় আমার বাইরে যাওয়া অভ্যাস কিন্তু আজ কেন জানি ইচ্ছে করছে না। মেঘলা না মেয়েটার হ্যাঁ মেঘলা মুখটা বারবার মনে পরছে। আগে যে কেন এমন লাগেনি? আগে যদি লাগতো তাহলে কি আর এমনটা করতাম। নিজের গালে নিজেরই চড় দিতে ইচ্ছে করছে। যাক অতীত ভেবে লাভ নেই। সামনের দিকে তাকাতে হবে। একটু ঘুমানো দরকার।
সকালে মা ঘুম থেকে ডেকে দিল। যথারীতি প্রতিদিনের কাজ কর্ম শেষ করে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম। তবে একটু ভদ্রভাবে। কিন্তু একটু সামনে যেতেই দেখতে পেলাম একটা বাচ্চা ছেলেকে একজন লোক মারছে। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে ভাই? একজন বলল ও নাকি খাবার চুরি করেছে। কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগল। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে দোষ দিচ্ছে। আর যে ক্ষমতায় আসছে সে সম্পদের পাহাড় গড়ছে নিজেদের। কিন্তু বলছে দেশ উন্নত হচ্ছে। আর আজকে এখনও আমাদের দেশের মানুষ না খেয়ে থাকে। সবাই র্স্বাথবাদি। বললাম কত টাকার খাবার নিয়েছে? ২০টাকার, লোকটা জবাব দিল। মাত্র ২০ টাকার জন্য ছেলেটাকে এভাবে মারছেন? আপনাকে জ্ঞান দিতে হবে না? লোকটার তীব্র প্রতিবাদ। কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগল। তবুও এই নিন টাকা আর ওকে ছেড়ে দিন। টাকাটা নিয়ে লোকটা ছেলেটাকে ছেড়ে দিল। বললাম খাবার কেন চুরি করেছো? স্যার, আমার মা অসুস্থ দুই দিন ধরে কিছু খায়নি? তা তোমার বাবা কোথায়? স্যার আমি জানিনা, মাকে বলেছিলাম, মা কিছু বলেনি? শুধু বলেছিল আমিই তোর মা আর আমি তোর বাবা। আর স্যার আমি চুরি করিনী? বাবু কাউকে কিছু না বলে নেওয়াই হল চুরি? যদি কেউ কাজ করে কিছু অর্জন করে তখন সেটা চুরি নয়। আমার কথাটা ছেলেটা মনযোগ দিয়ে শুনল, কিন্তু স্যার আমি তো কাজ করেই নিয়েছি? ছেলেটার কথায় অবাক হলাম। তাই বললাম, মানে আমাকে বুঝিয়ে বল? স্যার ঐ লোকটা আমাকে সকাল থেকে এখন পযন্ত হোটেলের যত কাজ আছে করিয়েছে, আর কাজ করানোর আগে বলেছিল যে আমাকে ৫০ টাকা আর খাবার দিবে? কিন্তু যখন কাজ শেষ করে আমি ওনার কাছে গেলাম তখন লোককটা অস্বীকার করল। কিন্তু আমার মায়ের কথা মনে পরায় আমি খাবার নিয়ে দৌড় দেই, আমি ছোট কিনা তাই পালাতে পারিনী আমাকে ধরে ফেলে। বাচ্চা ছেলেটার কথা শুনে রক্ত যেন মাথায় উঠে গেল। এরাকি মানুষ নাকি অন্য কিছু। একটা বাচ্চাকে দিয়ে কাজ করে নেয় আবার অস্বীকার করে। সাত পাঁচ না ভেবে সোজা ভিতরে গিয়ে লোকটার কলার ধরে বাইরে নিয়ে আসলাম। তারপর সামনে একটা চিকন ডাল পরেছিল ঐটা দিয়ে পেটাতে শুরু করলাম। ছেলেটা ভয় পেয়েছে। সবাই অবাক। কিন্তু আমার সর্বনাশটা হল ঐখানে আমার মারামারি করা মেঘলা দেখেছে। আর মুখটা ঘুরিয়ে হাটতে হাটতে দ্রুত বেগে চলে গেল। তাই আর পেটালাম না। পকেট থেকে টাকা বের করে নিয়ে বাচ্চাটাকে দিলাম। বাচ্চাটা চলে গেল। আর লোকটাকে বললাম, অনেক কষ্ট করে মানুষের মত দেখতে হয়েছিস তাই পারলে মানুষ হওয়ার চেষ্টা করিস।
সামনে এগুতে শুরু করলাম। নাহ্ মেঘলা বেশি দুর যায়নি। একটু জোড়ে হাটলেই ধরতে পারবো। কিন্তু ও এই দিক দিয়ে কেন? তাহলে কি ওর বাসা এই দিকে। হতে পারে। বলেই দেখলে হয়। একটু দ্রুত হেটে মেঘলার কাছাকাছি চলে আসলাম। কিন্তু একি এখানে তো আরও একজন দেখছি। ভাবলাম একটু একান্তে কথা বলতে বলতে যাবো। কিন্তু আর একজন আবার এসে জুটেছে। ধুর তাতে কি বান্ধবী হবে হয় তো। অবশ্য বান্ধবীটা থাকলে একটু নিরাপদে থাকবো।
এই যে, আমার মনটা চুরি করে হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে যে জন তার সাথে কি আমি একটু কথা বলতে পারি? আমার কথা শুনে দুজনেই পিছু ফিরে তাকালো। কিন্তু কোন কথা বলল না। মেঘলা শুধু ঠোটের কোণাটা বাকা করল। তাতেই যেন মনে হল কেউ আমার হৃদয়ে 5.5’’ গুলি চালিয়েছে। অনেকটা সাহস পেলাম। সোজা সামনে গিয়ে দাড়ালাম পা দুটোর দিক পরিবর্তন করে মাথা নিচু করে হাত দুটো প্রসারিত করে দিলাম। এই যে মেঘ কণ্যা একটু কি সময় হবে কথা বলার জন্য? রোমান্টিক ভাবে কথাটা বলতে বলতে মাথাটা উপরের দিকে তুললাম। কিন্তু আমার সব ভাব নষ্ট করে দিয়ে সে বলে দিল, আমি রাস্তার কোন গুন্ডা বদমাশের সাথে কথা বলিনা। আমাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল। বুঝতে পারলাম আমাকে ভুল বুঝেছে। অবশ্যই অবশ্যই আমাকে ওর ভুলটা ভাঙ্গাতে হবে। না হলে আমি তো শেষ। তাই আবারও সামনে চললাম তবে একটা নূন্যতম দুরত্ব বজায় রেখে।
আসলে তুমি আমাকে ভুল বুঝছো আমি আসলে… আমার কথা শেষ না হতেই বলল, আমি কি বুঝেছি আর কি বুঝিনি সেটা কি আপনাকে বলতে হবে নাকি? আরে তুমি পুরো ঘটনা না জেনেই রাগ করতেছো? আমি যেন কথাটা বলে মহা ভুল করে ফেললাম, পুরো ঘটনা কি সেটা আর আপনাকে বলতে হবে না। আর কারণ জানাচ্ছেন? আমি কি আপনাকে জানিনা আপনি অকারণে মানুষকে নিয়ে মজা করেন। আর এটা কলেজের সবাই জানে। আর আজতো আপনি চাঁদাবাজি করতেছিলেন। হয়তো লোকটা টাকা দিতে চাইছিলনা আর তাই তাকে র্নিমম ভাবে মারলেন। আর কি বলবেন আমাকে। বুঝতে পারছি তুমি বেশ চটে আছো? কিন্তু, আমার কথা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করল, আবার বলছেন কিন্তু। আপনার আসলে লজ্জা বলতে কিছুই নেই। আপনাকে আমার ভাল করে চেনা আছে। এতদিন কলেজে ডিসট্রাব করেছেন আর এখন, তুই থাম আমাকে বলতে দে? মেঘলার বান্ধবী থামাতে বলার সাথে সাথে ওকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিল। আর আবার বলতে শুরু করল, কেন আপনাদের জন্য কোন মেয়ে কি কলেজে আসতে পারবে না নাকি। কলেজেও ডিসট্রাব করবেন আবার কলেজের বাইরেও। আপনারা সমাজের একটা কীট। আমার সামনে আর কখনো আসবেন না। আর আমাকে বিরক্ত করলে এবার অন্য কলেজে চলে যাবো।
কথা গুলো শুনে আমি থমকে দাঁড়ালাম। আমার সম্পর্কে এভাবে এখনও কেউ কথা বলেনি। তাহলে কি আমি খারাপ। আসলেই কি আমি সমাজের একটা কীট। হ্যাঁ মানছি আমি কলেজে একটু র্যাগ করি কিন্তু রাস্তায় তো কখনও কাউকে ডিস্ট্রাব করিনী। না না আমারই ভুল। হয়তো কখনও কাউকে ডিস্ট্রাব করেছি। হয়তো কলেজে যাদের র্যাগ করেছি তারা বাইরেও আমাকে ভয় পায়।
আর কলেজে যেতে ইচ্ছে করছে না। তাই বসে পরলাম। নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছে। আমি এতটা খারাপ। পাশে একটা রাস্তার কুকুর এসে বসে পরল। ওর দিকে তাকিয়ে হাসতেছি। হ্যাঁ এটাই আমার জাত। একটা কথা আছে তো জাতে জাত চেনে। তবুও তুই ভালরে কেউ তো তোকে আর গালি দিতে পারে না। তুই আমার বন্ধু নস্ তবুও আমার পাশে বসলি। তুই সত্যি অনেক ভাল। তবুও তোকে কেউ দেখতে পারেনা। তোরও কি মনের মানুষ তোকে এভাবে বলেছে। বুঝিরে কষ্টটা কি? আমি যে তোর পথের পথিক।
এই যে, কি সব উল্টা পাল্টা বলছেন? আর কার সাথে কথা বলছেন? কন্ঠটা কোন মেয়ের হবে। কথাটা শুনে পিছনে তাকালাম। হুম মেয়ে তবে মেঘলা নয় মেঘলার সঙ্গে যে মেয়েটা ছিল সেই মেয়েটা। মেয়েটাকে দেখে অনেকটা অবাক হলাম। ওরা তো চলে গিয়েছে, তাহলে আবার এখানে কেন? জিজ্ঞেস করলাম। আপনাকে আসতে না দেখে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম আপনি এখানে বসে আছেন তাই আসলাম। ও তা আপনার বন্ধু আবার কিছু মনে করবে না তো? আপনি চলে যান? আমার কথা শুনে মুচকি একটা হাসি দিল। হাসিটা অনেক সুন্দর। তারপর বলল, আরে ছাড়েন তো ওর কথা। আপনার উপর একটু ওর রাগটা বেশি তাই এভাবে বলেছে। তবে মন থেকে কিছুই বলেনি। আপনি কিছু মনে করবেন না, আমি ওর হয়ে আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থি। কথা গুলো মনযোগ দিয়ে শুনছিলাম। আসলেই তো আমার উপর রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক আমি যা করেছি। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে বললাম, আরে না ঠিক আছে আমার এটাই প্রাপো ছিল। আমার কথাটা যেন মেয়েটার পছন্দ হলো না। তাই বলে ফেলল, মোটেও না। আপনি অনেক ভাল। আর এমনেই আপনাকে আমার ভাল লাগে? কথাটা ঠিক বুঝলাম না। তাই বললাম, মানে? কথাটা শুনে মেয়েটা খানিকটা অসস্তিতে পরে গেল। একটু ভেবে বলল, চলেন কলেজে। দেরি হয়ে যাচ্ছে। মেয়েটার কথার মানে কিছুই বুঝলাম না। আর বোঝার চেষ্টাও করলাম না।
দুজনেই হাটছি। কারো মুখে কোন কথা নেই। আসলে অপরিচিত কারো সাথে কথা বলতে গেলে আমি কেমন একটা অসস্তি বোধ করি। তাই কথা বলিনা। কিন্তু এভাবে তো আর চলে না। মেয়েটা বিরক্ত হচ্ছে বুঝতে পারছি। কিন্তু কি বলল সেটাই বুঝতে পারছি না। অতঃপর মেয়েটাই কথা বলতে শুরু করল, আপনি শান্ত তাই তো। মেযেটার কথায় অবাক হলাম। আমার নাম জানে সে, জিজ্ঞেস করলাম আপনি আমার নাম জানলেন কি করে? আমার কথা শুনে মেয়েটা আবারও হাসলো অর্পূব এক হাসি। বলল, আপনারা দুই ভাই বোন, আপনার বাবার কাপড়ের ব্যবসা আছে। আরে আপনি এত কিছু জানলেন কি করে? আপনি কে বলুন তো যে কিনা আমার চৌদ্দগষ্টীর খবর জানে? অবাক হয়ে কথাটা বললাম। আবারো মেয়েটা হাসল আর হেসে বলল, সেটা না হয় অন্য কোন দিন জানবেন। কলেজে এসে গেছি আজ শুধু এটুকু জানেন, আমি পুষ্পিতা। বলেই চলে গেল। সত্যি মেয়েটা পুষ্পের মতই। পরিস্কার মনের। হাসিটাও ফুলের মত। পুষ্পিতা, নামটা অনেক সুন্দর। মেয়েটা মেঘলার কাছে চলে গেল। ওরা দুজনেই কথা বলছে। হয়তো আমাকে নিয়ে। যাই হোক মেয়েটার কারণে মেঘলাকে দেখতে পেলাম। ভারি অবাক করা কথা, মেয়েটা আমার সম্পর্কে সব কিছু জানে অথচ আমি মেয়েটাকে চিনিই না। থাক এসব ভাবনা পরে এসে ভাবা যাবে।
হুম, শান্ত এখন সব মেয়েদের মন করছে অশান্ত। আমাকে ঘিরে পুরো পল্টন এসে গেছে। আরে কি সব যাতা বলছিস। শুধু অবাক হচ্ছি? আমার কথা শুনে বলল, কেন ভাই? মেয়েরা তোমার প্রতি এভাবে আটকে যাচ্ছে জন্য । বলেই সবাই হেসে উঠল। ওদের থামিয়ে দিয়ে বললাম, আরে তেমন কিছু না। শুধু… কথা শেষ না হতেই কথাটা কেড়ে নিয়ে রাসেল বলল, তেমন কিছু না শুধু তোকে ভালবেসে ফেলেছে। আবার হাসতে শুরু করল। এই চুপ… এক ধমকে সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, তোরা সব সময় এক লাইন বেশি বুঝিস। মেয়েটা আমার সম্পর্কে সব জানে আর আমি মেয়েটাকে চিনিনা। আমার কথাটা যেন ওদের কাছে কৌতুক মনে হল। হুম, এটাই ভালবাসা। তোকে ভালবাসে জন্যই তো তোর সব কিছু জানে? রুহির কথায় যেন মাথাটা গরম হয়ে গেল। ধুর তোদের সাথে থাকবই না। বলেই চলে আসলাম ক্লাসের দিকে। আর ওরা পিছন থেকে চিৎকার করে বলল, ভাবি কিন্তু সেই। আমাদের পছন্দ হয়েছে। ট্রিট দিতে হবে কিন্তু। তোদের ভাবির কাছ থেকে ট্রিট নে? তোরাই যেহেতু ভাবি বানিয়েছিস তাহলে যা গিয়ে ট্রিট দিয়ে আয়। পিছন ফিরে বলে দিলাম।
ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে আড্ড দিয়ে বাসার দিকে আসতেছি। মেঘলা সামনে দাড়িয়ে আছে। হয়তো রিকশার জন্য অপেক্ষা করছে। সামনে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। না ভালবাসায় ভয় পেলে চলবে না। বুক ফুলিয়ে সামনে গেলাম। কিন্তু ততক্ষণে রিকশায় উঠে পরল। রিক্শায় কি উঠবো। একবার বলেই দেখি কি হয়? এই যে, মেঘ কণ্যা আমি কি আপনার এই রিকশা ভ্রমনের সঙ্গি হতে পারি। বলেই নিচের দিকে তাকালাম। জানিনা আবারও কথা শোনাবে? কেন যে বলতে গেলাম। প্রায় দুই মিনিটের মত হয়ে গেল কিন্তু কোন কথা শুনতে পারলাম না। মনে হয় আমার মত আজগুবের সাথে কথা বলবে না। তাই না বলেই চলে গেছে। আর কি! ধীরে ধীরে মাথাটা তুললাম। সত্যি নিজের চোখ কেও বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার জন্য মেঘলা রিকশা দাড় করিয়ে রেখেছে। চোখ গুলো বড় বড় করে বলছে, “এই যে মিস্টার কি হলো, উঠে পরেন। ভালবাসার মানুষের সাথে রিকশা ভ্রমণ করবো সেটা তো অনেক ভাগ্যের ব্যপার। আর শোন এখন থেকে ভালভাবে থাকবা। কারো সাথে মারপিট করবা না। যদি মারামারি কর তাহলে খুব খারাপ হবে কিন্তু? আর একটা কথা, ভালবাসি তোমাকে।” সত্যি! এই মিস্টার কি সত্যি হ্যাঁ? কি? মানে ভা-ভা-ভা আপনি ।তাহলে কি আমি এতক্ষণ কল্পনায় ছিলাম। আমার তোত লামো শুনে বলল, কি ব্যপার তোতলাচ্ছেন কেন? আপনি কি তোতলা? বুঝতে পারলাম রিকশা আমারজন্য না পুষ্পিতার জন্য দাড়িয়ে ছিল। অনেকটা বিপাকে পরে গেছি। তাই বললাম, আরে না তোতলা হবো কেন? আমার কথা শুনে মেঘলা বলল, এই তুই ওনার সাথে এত কথা বলছিস কেনো রে? চল দেরি হয়ে যাচ্ছে। এই মামা চলেন তো। বলেই দুজনে চলে গেল। আর কোন কিছু না করে বাসায় চলে আসলাম।
To be continue...
লেখা: লিটন (খচ্চোর)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻļুāĻ্āϰāĻŦাāϰ, ā§Ŧ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3100 (1)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ģ:ā§Ļā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ