বাবুর্চি কাকু
( বাস্তব জীবনের গল্প )
চট্রগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৩০/৩৫ কিলোমিটার দূরে পটিয়া - মুজাফফরাবাদ গ্রাম । ছোট্র, সুন্দর ও গোছানো একটি গ্রাম । এই গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষ হিন্দুধর্মাবল্মী, অল্প কয়েকটা দোকান নিয়ে ছোট্র একটি বাজার, বাজারে একপাশেই আছে মৃত হিন্দু মানুষদের দাহ করার স্থান, আমি আর আমার দুই বন্ধু রিয়াজ ও বেলাল, আমরা চট্রগ্রাম আগ্রাবাদে থাকি একই সাথে এস এস,সি পরীক্ষা দিয়েছি, তারপর হাতে অনেক সময় তাই ভাবলাম কিছু একটা করি, যেই ভাবা সেই কাজ, রিয়াজের বড় ভাই আবু তালেব ভাই মুজাফফরাবাদ একটি মুরগীর খামারের দায়িত্ববান ম্যানাজার হিসেবে কাজ করেন ভালো বেতনই পান, ওনার সাথে কথা বলে ২/৩ মাস চাকুরী করবো বলে সেখানে যাই , প্রথম দিন কোনো কাজ নাই সারাদিন ঘুরাঘুরি করে ভালোই লাগলো, রাত হতেই মনটা ভয়ে কেঁপে উঠলো, তার কারনও আছে খামারে ডুকতেই চোখে পড়লো গোটা ১০/১৫ হিন্দুদের দাহ স্তম্ব, গাছ ও ঘন জজ্ঞলে ভরা একটা ছোট্র পুকুর, তার একপাশে রয়েছে একটা গ্লোব ফুল গাছ ( স্থানীয় নাম) সব মিলিয়ে রহস্যময় একটা জায়গা, পুকুরটার দিকে তাকাতে কেমন যেনো লাগলো জানিনা কেনো? যাই হোক এইখানে আমরা ৩ জন ছাড়াও আরো ৪ জন মানুষ আছেন তারা সবাই নতুন, তার মধ্যে একজন বাবুর্চি আছেন অনেক আগের প্রায় ২ বছর চাকুরী করেন এইখানে, উনাকে দেখলে বুকের ভিতর কেমন যেনো মোচড়ে উঠে ৬৫ বছর বয়সী মানুষটার চোখগুলো লাল,চেহারায় বয়সের ছাপ, কালো ও খাটো গড়নের মানুষটা খুবই স্বল্পভাষী আর গম্ভীর টাইপের, উনি আবার মুজাফফরাবাদের স্থানীয় মানুষ বাকী সবাই এইখানে থাকে শুধু উনি ছাড়া, রাত রাতের খাবার খাইয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়, আবার সকাল ৭ টার আগেই এসে কাজে যোগ দেয়, আর প্রতিদিন রাতে যাওয়ার আগে সবাইকে বলে যেতেন রাতে কেউ যেনো দরজা না খোলেন, যদি উনিও এসে দরজা খুলতে বলেন, রাত ১০ টার পর রুম রুম থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ, তো এইভাবে ৫/৬ দিন কেটে গেলো ভালোই লাগছিল, একদিন আমি ও রিয়াজ সন্ধ্যার পর পাশের রওশন হাটে যাই আর আসতে আসতে ৯ বেজে যায় রাতের অবস্থা দেখে খুব ভয় পেয়ে যাই, যদিও ভুতে বিস্বাস নাই জিন আছে মানি, যাই হোক রাস্তায় হাটছি আর দুইজনেই বলতেছি তালেব ভাই খুব রাগ করবেন, আর দুইজনেই দুষ্টামি করে বলতেছি,, এই বুজি চিতা থেকে উঠে ঘাড় মটকাবো বলে কোনো আত্না সামনে এসে পড়বে, এইসব বলছি আর হাসছি আর হাটছিলাম,, এই ভাতিজারা তোমরা এইখানে আর তোমাদের জন্য সবাই খুব চিন্তা করতেছে, চল আমার সাথে, তাড়াতাড়ি চলো আমি তোমাদেরকে খাইয়ে দিয়ে আবার বাড়ী যাবো আমার বউয়ের শরীরটা ভালো না,, একনাগাড়ে কথা গুলো বলেই যাচ্ছেন সেই বাবুর্চি কাকু,, যাক এই রাতে আমাদের চলার আরেকজন সাহসী সাথি হলো,, উনার উদ্দেশ্যে বললাম কাকু আপনি আসাতে সাহস পেলাম আমাদের খুব ভয় করছিল, উনি আর কোনো কথা বলছিলেন না শুধু হাটছেন আর আমরা পিছু পিছু,,, হাটতে হাটতে খুব ক্লান্ত হয়ে কাকুকে বললাম আর কতোদুর? উনি বললেন এইতো আমরা চলে এসেছি আর অল্প,, যাই হোক একসময় আমরা সেই গ্লোব ফুল গাছের তলায় আসলাম, রিয়াজ বললো কাকু আমি একটু হিসু করবো, উনি বললেন তাড়াতাড়ি করে নাও, রিয়াজ অন্ধকারে গাছটার পাশেই দাঁড়িয়ে পড়লো,, হঠাৎ মৃদু বাতাস বইতে শুরু করলো গ্লোব ফুল গাছটার উপর একটি ডাল ভাঙ্গার মতো শব্দ হলো, আমি রিয়াজকে বললাম কিরে হলো তোর,, ও কোনো কথা বলতেছেনা,,! দাঁড়িয়ে আছে রিয়াজ আমি তাকে ধাক্কা দিলাম কিরে বেটা শেষ করবি না,, ও কোনো কথাই বলছেনা অন্ধকারেও যেনো তার চোখ দুটো জ্বলে উঠলো আমি ভয় পেয়ে যাই,, বাবুর্চি কাকু কই আপনি,,? কাকু ও কাকু,, কোনো শব্দ পাওয়া গেলোনা, অন্যদিকে রিয়াজের চাহনি আর গ্লোব গাছে শন শন বাতাসে আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম,, প্রাণপনে চিৎকার কর তালেব ভাইকে ডাকতে শুরু করলাম, হটাৎ দেখলাম রিয়াজ উধাও, আমি আর নিজের মধ্যে ছিলাম না, ভয়ে আমার মাথায় কিছু কাজ করতেছেনা, রিয়াজ কই তুই? এই রিয়াজ ফাইজলামি করিস না দোস্ত প্লিজ আওয়াজ দে কই তুই,,?? কোন সাড়া নাই, ভয়ে বুক শুকিয়ে গেলো, এক কদম পা ফেলতে পারছিনা, চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলাম, হটাৎ গ্লোব গাছটা বাতাসে নড়ে উঠলো, মনে হচ্ছে যেনো গাছটা আমার মাথার উপরেই ভেঙ্গে পড়বে, মাথাটা চক্কর দিলো, হটাৎ এই অন্ধকার আর বাতাসের মধ্যে অনুভব করলাম কেউ আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বলছে কি বাতিজা এইখানে কি করো,,? ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতেই দেখলাম সেই বাবুর্চি কাকু,!!! আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম,,,, জ্ঞান ফিরে দেখি রিয়াজ আর আমি একসাথেই শুয়ে আছি পুকুরপাড়ের চিতাস্তম্বের ভিতরে,,!! চারদিকে উজ্জ্বল রোদের আলো,,,, খুব কষ্টে রিয়াজকে ডাকলাম ও উঠে বলে কিরে আমরা এইখানে কেনো,, সারা শরীর প্রচন্ড ব্যাথা হয়ে গিয়েছিলো, কোনোমতে রুমের কাছাকাছি এলাম, এরই মধ্যে সবাই আসলো,, কাকু এলোনা,,,!! জিজ্ঞেস করলাম কাকু কোথায়?? তালেব ভাইয়া বললেন উনি গতকাল দুপুরবেলা রান্নার পর ২ দিনের ছুটিতে গেছেন,,,
আমাদেরকে অনেক প্রশ্ন করেছিল আমরা কাল রাতে কোথায় ছিলাম,, কোনো উত্তর না দিয়ে শুধু বললাম ভাইয়া আমরা যাচ্ছি বলেই বেরিয়ে পড়লাম,,,,,,,
( Collected
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ