__রক্ত চোষা__
__লেখা:-দোলা রহমান__
__পর্ব:-এক__
আজ প্রায় ১ বছর হয়ে গেলো আমি বাসায় যাইনি।১
বছর আগে বাসা আর পরিবারের মায়া ত্যাগ করে
পড়াশোনার জন্য এই অচেনা শহরে পাড়ি জমিয়েছি।
আমার একদম ইচ্ছে নেই বাবা মাকে ছেড়ে অন্য
কোথাও পড়াশোনা করার।কিন্তু কী করবো বাবার
ইচ্ছে পূরণ করতে হলে এই ত্যাগটুকু মেনে
নেওয়া ছাড়া অার কোন উপায় নেই৷সব থেকে
বোরিং লাগে পড়াশোনা করতে অার বাবার ইচ্ছে
অামি পড়াশোনা করে বাবার মতো ওকালতি
করবো৷কিন্তু অন্য কারোর সাথে অযথা তর্কে
জড়িয়ে সময় নষ্ট করার ইচ্ছে অামার নেই৷বাবা মার
বাধ্য সন্তান বলে অামার ইচ্ছেগুলোকে গলা টিপে
হত্যা করে দিতে হয়েছে৷তারপরও অামার মন খারাপ
না কারন অামার বাবা মা কখনো অামার খারাপ চাইবে
না৷অাজকের দিনটা অামার কাছে অনেক
স্পেশাল৷অনেকদিন পর অাজকে নিজেকে খুব
খুশি মনে হচ্ছে৷এত খুশির কারন হলো অনেকদিন
পর অাজকে বাসায় যাবো৷পরীক্ষা শেষে
কলেজ লম্বা ছুটি দিয়েছে৷অনেকদিন পর নিজ
গ্রামের প্রকৃতিতে নিশ্বাস নিব৷ম্যাসে অাসার পর
থেকে অনেকবার ভিডিও কলে কথা হয়েছে
কিন্তু এখন তাদের সাথে অনেকদিন পর দেখা
হবে৷খুশিতে নাচতে ইচ্ছে হচ্ছে কি করবো অামি
অাবার নাচতে পারিনা৷বাসায় যাওয়ার জন্য অামার
প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিসপএ গুছিয়ে রেডি
হলাম৷কথা ছিল বাবা নিজে অামাকে রাজশাহীতে নিতে
অাসবে কিন্তু নতুন কেস হাতে অাসার কারনে
অাসতে পারেনি৷বাধ্য হয়ে অামাকে একা যেতে
হবে৷কোন সমস্যা হবে না যখন প্রথম অামি
এসেছিলাম রাজশাহীতে অাব্বুর সাথে অামাদের
কলেজের বাংলা প্রভাষক অানোয়ার অাংকেলের
সাথে পরিচিত হতে তখনি অাব্বু অামাকে প্রতিটা জায়গা
ভালো করে ঘুরিয়ে দেখিয়েছিল৷টিকিটের জন্য
কলেজের সিনিয়র তিশান ভাইকে ফোন দিয়ে টিকিট
কালেক্ট করতে বললাম৷একবার বলাতে তিশান ভাইয়া
অামাকে কয়েক মিনিট ওয়েট করতে বললো৷অামি
নিজে থেকে তিশান ভাইয়াকে ফোন করায় ওনাকে
একটু খুশি মনে হলো৷সেই কলেজের প্রথম দিন
থেকে তিশান ভাইয়া অামাকে প্রোপজ করার জন্য
অামার পিছনে লেগে অাছে৷সেজন্যে অাজকে
তার দূর্বলতা কাজে লাগালাম৷অামি তিশান ভাইয়ার
ফোনের অপেক্ষা করতে থাকলাম৷কিছুক্ষন পর
তিশান ভাইয়া ফোন করে অামাকে বললো জান্নাত
তোমার টিকেট কনর্ভাম৷সন্ধ্যা সাতটায় তোমার বাস
ছাড়বে৷অামি তিশান ভাইয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্যাগ নিয়ে
বাস স্ট্যাডের দিকে রওনা দিলাম৷রাজশাহী থেকে
নওগাঁ (মধইল)যেতে প্রায় তিন ঘন্টার মতো লাগতে
পারে৷অথাৎ অামার বাসায় পৌঁছাতে দশটা লেগে
যাবে৷মাকে ফোন দিয়ে বললাম অামি দশটার দিকে
বাসায় যাব তুমি মহোন কাকাকে বাস স্ট্যাডে অাসতে
বলে দিও৷রাতে অাসার কথা শুনে মার কন্ঠটা কেমন
যানি ভার হয়ে গেলো৷অাম্মু ছোট ছোট কন্ঠে
বললো তোকে রাতের টিকিট করতে কে
বলেছে৷অামি যানতে চাইলে তিনি বললেন গ্রামের
অবস্থা মোটেও ভালো না৷তোকে রাতে
অাসতে হবে না৷অামি বললাম অামি বাস স্ট্যাডে চলে
এসেছি৷একটু পরে অামার বাস রওনা দিবে৷তুমি চিন্তা
করিওনা অামার কিছু হবে না৷দশটায় মহোন কাকাকে
অাসতে বলে দিও৷অাম্মুকে অার কিছু বলার সুযোগ
না দিয়ে ফোনটা কেটে দিলাম৷অামি কিছু খাবার নিয়ে
বাসে ওঠে বসে পড়লাম৷কিছুক্ষন বসে থাকার পরে
বাস নওগাঁর উদ্দেশে চলতে শুরু করে দিল৷বাস তার
নিজ গতিতে এগিয়ে যেতে লাগলো অামি ফোনটা
ব্যাগ থেকে বের করে হেডফোন দিয়ে গান
শুনতে লাগলাম৷গান শুনতে শুনতে অামারে চোখে
ঘুম চলে অাসে পরের স্ট্যাডে গাড়ি ব্রেক করার
ঝাকুনিতে অামার ঘুম ভেঙ্গে গেল৷ফোনের
স্কিনে তাকিয়ে দেখলাম অাম্মু অনেকবার ফোন
করেছে৷অামি রিং দিতেই অাম্মু ফোন রিসিভ করে
বললো এতক্ষন ফোন রিসিভ করিসনি কেনো৷ঘুম
জড়ানো কন্ঠে বললাম অামি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম৷যানি
তুই যেখানে যাবি সেখানে ঘুম৷না ঘুমিয়ে একটু
সর্তক থাকতে পারিস না অার হ্যা মহোন তোকে
নিতে বাস স্ট্যাডে চলে গেছে বাস থেকে
নেমে অামাকে একটা ফোন দিস কথাগুলো
ধমকের সাথে বলে অাম্মু ফোন রেখে
দিলো৷অার কিছুক্ষন পরেই অামি পৌঁছে গেলাম৷বাস
থেকে নেমে অাম্মুকে ফোন দিলাম কিন্তু
কেন যানি রিসিভ করলো না৷একটু দূরে যেতে
দেখলাম মহোন কাকা একটা বড় র্টচ লাইট হাতে
দাঁড়িয়ে অাছে৷পাশে একটা ভ্যান দাঁড় করানো৷অামি
মহোন কাকাকে সালাম দিয়ে বললাম কাকা কেমন
অাছেন তিনি খানিকটা ভয়ে ভয়ে প্রশ্নের উওর
দিয়ে বললো অার দেরী করা ঠিক হবে না ভ্যান
দাঁড়িয়ে অাছে চলো অাগে ভ্যানে ওঠ৷অন্ধকারে
মৃদ্যু র্টচের অালোয় লক্ষ্য করলাম মহোন কাকার
চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পট৷কথা না বাড়িয়ে
ভ্যানে ওঠে পড়লাম৷যেতে যেতে মহোন
কাকার কাছে যানতে চাইলাম কি এমন ঘটেছে যার
কারনে সবাই এমন ভয় পেয়ে অাছে৷তিনি অামাকে
বললো এগুলো কথা রাস্তায় না বলাই ভালো যদি
ভালো মতো বাড়িতেযেতে পারি তাহলে সব ঘটনা
খুলে বলবো৷
=>চলবে<=
__রক্ত চোষা__
__লেখা:-দোলা রহমান__
__পর্ব:-দুই__
ভ্যান অাপন মনে চলে যাচ্ছে কিন্তু মহোন
কাকার মুখে কোন কথা নেই৷যে মহোন কাকা
কথা বলে সারাক্ষন কান ঝালাপালা করে
দিত সে মহোন এতদিন পর অামাকে দেখেও
চুপচাপ নিশ্চয় বড় ধরনের গড়বড় অাছে৷মাঝে
মাঝে দেখতেছি মহোন কাকা অাসেপাশে
তাকিয়ে কিছু দেখার চেষ্টা
করতেছে৷অামিও অার কথা বললাম না৷শুধু
মনের মধ্য একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে
অামাদের গ্রামে কি এমন হলো যার কারনে
সবায় চিন্তায় অাছে৷অল্প কিছুক্ষনের মধ্য
অামরা বাসায় পৌঁছালাম৷বাসায় গিয়ে
অাম্মুকে সালাম করলাম৷অাব্বুকে দেখতে না
পেরে বললাম অাব্বুকে দেখতেছিনা অাব্বু
কই৷অাম্মু জানালো গ্রামের অবস্থা ভালো
না দেখে রাত হলে অাব্বু বাসায় ফিরে
না৷অাম্মুর কাছে জানতে চাইলাম কি হয়েছে
এখন বলো তো৷অামাকে কেনো রাতে
অাসতে বারন করলে অাসার সময় মহোন কাকা
খুব ভয়ে ছিল৷
অাম্মু:-অনেক জার্নি করে এসেছিস অাগে
খেয়ে নে পরে সব বলতেছি৷
অামি:-না অামি এখনি শুনবো৷অামার জেদে
অাম্মু বলতে শুরু করলো...
অাম্মু:-একমাস অাগে থেকে অামাদের
গ্রামে এক প্রকার বাদুরের মতো প্রানী
এসেছে৷যার দেহটা বাদুর অার মাথাটা
মানুষের মতো৷রাতের বেলা কেউ যদি একা
বের হয় বাড়ি থেকে তাহলে তাকে অার
পাওয়া যায় না৷এই কয়েক দিনে প্রায় অনেক
মানুষ অামাদের গ্রাম থেকে উধাও হয়ে
গেছে৷
অামি:-তোমাদের মধ্য এখনো সেই পুরনো
সংস্কৃতিটা রয়েই গেছে৷অাম্মূু তুমি যথেষ্ট
শিক্ষিত অার এসব তুমি বিশ্বাস করো
কিভাবে৷
অাম্মু:-নিজের চোখে যদি না দেখতাম
তাহলে অামিও বিশ্বাস করতে পারতাম
না৷অাজ পর্যন্ত যারা যারা উধাও হয়ে গেছে
সবার তাজা রক্ত পড়েছিল৷অামরা তো
জানতাম না কেনো উধাও হচ্ছে গ্রাম থেকে
লোকজন৷কিছুদিন অাগে তোর অালোম
কাকাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলনা৷একদিন
পরে তোর অালোম কাকাকে অামাদের
গ্রামের পাশের জঙ্গলে অজ্ঞান অবস্থায়
পাওয়া যায়৷তখন তোর অালোম কাকার গলায়
দুইটা দাঁতের ক্ষত ছিল৷ক্ষতটা বেশি গভীর
না হওয়ার কারনে সেখান থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে
রক্ত পড়ছিল৷সবাই ধরাধরি করে হাসপাতালে
নিয়ে গেলে ডাক্তার জানায় শরীরের তিন
ভাগের একভাগ রক্ত শরীর থেকে বের হয়ে
গেছে৷তাড়াতাড়ি রক্ত না দেওয়া হলে মারা
যাবে৷সেইদিন সময়মত রক্ত না দেওয়া হলে
হয়তো তোর অালোম কাকাকে বাঁচানো সম্ভব
হত না৷জ্ঞান ফেরার পর তোর কাকা
জানালো রাতে কারেন্ট না থাকার কারনে
গরমের কারনে বাইরে বের হলে৷হাঁটতে
হাঁটতে বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে চলে
যায়৷কিছুক্ষন পর দেখে কয়েকটা বাদুরের
প্রজাতি প্রানী এসে তাকে জঙ্গলের দিকে
নিয়ে যায়৷ওই প্রানীদের মধ্য একজন রক্ত
খাওয়ার জন্য গলায় দাঁত বসালে তোর
অালোম কাকা ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে
কোনমতে পালিয়ে অাসে৷অাসতে অাসতে
অন্ধকারের মাঝে একটা গাছের সাথে
ধাক্কা খেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে অার
পরের দিন সেখান থেকে অালোমকে উদ্ধার
করা হয়৷সেই ঘটনার পরে অার কেউ বাড়ি
থেকে রাতের বেলা বেরুনোর সাহস পায়না৷
অামি:-এতকিছু হয়ে গেলো অার তোমরা
পুলিশকে কিছু জানাওনি৷
অাম্মু:-পুলিশ এসেছিল অনেক খোঁজখবরও
চালিয়েছে কিন্তু কোন ক্লু না পাওয়ার
কারনে চলে গেছে৷অার তোকে বলে দিলাম
রাতের বেলা একপা বাড়ি থেকে বের করবি
না৷
অামি:-কেনো যানি অদ্ভুদ লাগলো সব৷
অাম্মু:কথা না বাড়িয়ে ফ্রেস হয়ে খেয়ে
শুয়ে পড়৷বেশী রাত জাগতে হবে না৷
অামি:-অাচ্ছা অাম্মু তুমি যাও অামি খেয়ে
শুয়ে পড়বো৷
অাম্মু রুম থেকে গেলে টেবিলে রাখা খাবার
খেয়ে বেডে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম কি
সেই প্রানী অামাকে খুঁজে বের করতেই
হবে৷ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি
খেয়াল নেই৷সকালে ফোনের রিংয়ের শব্দে
ঘুম ভেঙ্গে গেলো৷ঘুমভরা চোখে ফোন
রিসিভ
করলাম৷ফোনের ওপাশ থেকে উওর অাসতেই
বুঝলাম এইটা জুঁই৷রাজশাহীতে যাওয়ার অাগ.
পর্যন্ত অামার প্রতিটা সময় অতিবাহিত
হয়েছে জুঁইয়ের সঙ্গে থেকে৷
জুঁই:-ওই সইতাননি তোকে কতবার বলেছি
রাজশাহী থেকে অাসলে অামাকে জানাবি
অার তুই না জানাই ঘুমাচ্ছিস দাঁড়া তোর
ঘুমের বারোটা বাজাচ্ছি৷তুই রুমে থাক অামি
অাসতেছি৷
অামি:-অাচ্ছা অায়...
ফোনটা রেখে ওঠে পড়লাম৷ফ্রেস হয়ে
হালকা খাবার খেয়ে রুমে বসে রইলাম৷ঘুমের
কারনে রাতের কথা ভুলেই গেছিলাম কিন্তু
হঠাৎ করে অাবারো মনে পড়ল৷তড়িঘড়ি করে
ল্যাপটপটা ব্যাগ থেকে বের করে
ইন্টারনেটে সার্চ দিলাম সত্যি কোন
রক্তচোষা প্রানী অাছে কিনা৷কিন্তু অাম্মুর
বিবরনের মতো কোন প্রানীর সন্ধান পেলাম
না৷এক প্রকারের প্রানী দেখতে পারলাম
কিন্তু সেটা দেখতে বাদুরের মতোই৷অার এই
বাদুরটা সাধারন বাদুরের থেকে একটু
অালাদা ধরনের৷বাদুরটা রক্তচোষা বাদুরের
নামে পরিচিত হলেও অাম্মুর বলা বাদুরের
সাথে মিলাতে পারলাম না৷চিন্তায় পড়ে
গেলাম এই বাদুরের খোঁজ করবো
কিভাবে৷মনে মনে একটা ফন্দি অাঁটলাম৷অার
কাজটা অামার একার দ্বারা সম্ভব না৷জুঁই
অাসলে এই অাইডিয়া নিয়ে পরার্মশ কর
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ