-- জানো, আজ পূর্ণিমা!
আমি লাবণ্যের দিকে তাকাই। লাবণ্যের চোখের মণিতে গোল চাঁদ ভাসে..। ওদিকে তাকিয়ে থেকে আমি বলি,
-- ও।
একটু ভ্রুঁ কুঁচকায় সে। বলে,
-- ও কি?
আমি বাঁ হাত দিয়ে ডান হাতের কনুই চুলকাতে চুলকাতে লম্বা একটা হাই তুলে বলি,
-- কিছুনা। আমি ভাবছি আজ শাবনুর।
মেয়েটির হাসা উচিৎ। হাসলোনা। রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-- ফাইজলামো করো?
-- হ্যাঁ।
-- আর করবানা।
-- আচ্ছা।
লাবণ্য আবারো আকাশের দিকে তাকায়। আমি লাবণ্যের কানের পাশে গুজে রাখা চুল দেখি। আজ সে জোছনা রঙ এর শাড়ি পড়েছে। ধবধবে সাদা নয়, মলিন সাদা। ধবধবে সাদা রঙে মৃত মৃত ভাব থাকে, জোছনা রঙে সে ভাব নেই। লাবন্যের চুলগুলো খোলা। আমার কেন জানি মনে হলো, আমার পাশে এক টুকরো চাঁদ দাঁড়িয়ে আছে। শুভ্রতায় এই চাঁদ মোড়া.. এই চাঁদের কোনো কলঙ্ক নেই। লাবণ্যের গলার আওয়াজ পাই,
-- জানো, আমি যেদিন প্রথম নাকফুল পরি, সেদিন পূর্ণিমা ছিলো।
-- তাই নাকি?
লাবণ্য আবার আকাশ থেকে চোখ ফিরিয়ে আনে আমার দিকে। এবারো চোখে রাগ, বললো,
-- এতো জোরে "তাই নাকি" বলবানা।
-- আচ্ছা। ফিসফাস করে বলবো?
-- নাহ। ফিসফাস করেও বলবানা।
আমি চুপ করে থাকি। লাবণ্য আমার হাতে আঙ্গুল ছোঁয়ায়..। কেঁপে উঠি আমি, আবেগ ভেজা গলা শুনি তার,
-- কি করে মনে আছে জানো?
-- জানি। তুমি প্রচন্ড মেধাবী একজন মেয়ে, স্মরনশক্তি অস্বাভাবিক রকম বেশি, বুদ্ধি আইনস্টাইনের কাছাকাছি না হলেও অনেক বেশি দুরেও নয়। যারা বুদ্ধিমান হয়, তাদের আবেগ থাকে কম। তোমার আবেগ ও প্রচন্ডরকম বেশি। যাদের আবেগ বেশি হয়, তারা অধিকাংশ সময় ভীষণ বোকা হয়। সুতারাং, তুমি বুদ্ধিমতী সাথে ভীষণরকম বোকা ও!
লাবণ্য চুপ করে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। আমি এখনো আকাশের দিকে তাকাইনি একবার ও। জোছনায় ভিজতে হলে চাঁদের দিকে তাকাতে হয়, নইলে চাঁদ অপমানিত বোধ করে। ফর্সা মানুষ অপমানিত বোধ করলে চেহারা লজ্জ্বায় লাল হয়ে যায়, চাঁদের ও কি তেমন হয়? লাবণ্য আমার দিকে মুখ করে দাঁড়ায়, শক্ত করে হাত ধরে বলে,
-- জানো, প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে এমন একটা সময় আসে, যখন তার মরে যেতে ইচ্ছে করে খুব। অথচ মানুষ জানেনা, এমন একটা সময় পাওয়ার জন্যে দাঁতে দাঁত পিষে হলেও বেঁচে থাকা লাগে।
লাবণ্যের চোখে অশ্রু জমে, জোছনা এসে চোখের কোণায় ছলছল করে, আমি মুগ্ধ হয়ে তাকাই। একটি মেয়ে এতো মায়া নিয়ে কাঁদতে পারে কিভাবে? লাবণ্যের ভেজা গলার স্বর শুনি,
-- তৃতীয়বার যখন আমি নাকফুল পরি, তুমি নাকফুলে একটা চুমু দিয়েছিলে। মনে আছে?
-- মনে নেই।
-- তুমি জানো, তুমি ভান করে থাকো; ভালোবাসতে জানোনা। অথচ তুমি এটা জানোনা যে তুমি ঠিক করে ভান করতে ও জানোনা।
-- বুঝিনা তোমার আবোল তাবোল।
-- বুঝতে হবেনা।
-- চাইছি ও না।
-- চলো রাস্তায় হাঁটি..
-- পায়ে ব্যথা করে।
-- চা খাবা?
-- নাহ।
-- একটা গান গাও
-- গলা ব্যথা করে।
-- চাঁদের দিকে তাকাও না কেন?
-- তাকাই তো।
-- কই?
-- এই যে।
আমি লাবণ্যের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকাই। ওর জোছনা রঙের শাড়ি, খোলা চুলের গন্ধ, নাকফুলে জমে থাকা মায়া আমায় মাতাল করে। লাবণ্য হাসে। আমি চতুর্থবারের মতো পরা ঐ নাকফুলে চুমু দিতে এগিয়ে যাই। টের পাই, চাঁদের আলো লাল হয়ে আসছে..! একটা লাজুক লালচে আলো ঘিরে ধরছে আমাদের.. কি অপূর্ব সে আলো.. আহা.. কি মায়া সে আলোয়..!
Collected
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ