রাফিনের ঘরের ভিতর থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে। আবছা আলোতে বুঝা যাচ্ছে এটা রাফিনের মা সাহেরা বানু। জায়নামাজে বসে একমাত্র ছেলের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে আকুতি করছেন তিনি। যে কোন মায়ের হৃদয়ে অশান্ত স্রোত বয়ে যায়, যখন তার সন্তানটি অসুস্থ অবস্থায় কাতরাতে থাকে। গত তিনদিন থেকে রাফিনের ভীষণ জ্বর। থামার কোন লক্ষনই নেই।
.
রাফিন এবার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো। ভার্সিটি এডমিশনের জন্য কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছে। রাফিনরা দু'বোন আর এক ভাই। বাবা গোলজার মিয়া স্কুল শিক্ষক। একসময়ে বাধ্য ছেলে রাফিন বাবার সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তে কখনো ভুল করতো না। গত দু'বছরের চিত্র ভিন্নরূপ। নামাযের কথা কয়েকবার বলেছেন সাহেরা বানু ও গোলজার মিয়া।
.
বর্তমান নামাযের প্রতি অনিহা দেখে গোলজার মিয়া কয়েকদিন আগে প্রচুর মেরেছিলেন। তিনি চান, তার রাফিন তারই আদর্শে মানুষ হোক। মানুষের উপকার করুক,ক্ষতি নয়। গরীব মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াক। যথাসম্ভব তাদেরকে সাহায্য করুক। এই শিক্ষাগুলো সবসময় রাফিনকে দিতেন।
.
বাবার মার খেয়ে পুরো দু'দিন অভুক্ত ছিলো রাফিন। একমাত্র পানি ছাড়া কোন কিছুই মুখে তুলে নি। কেঁদেছে সারাক্ষণ। ছেলের এমন অবস্থা দেখে গোলজার মিয়াও অভুক্ত, সাথে সাহেরা বানুও। ছেলেকে অভুক্ত রেখে কিভাবে গলা দিয়ে খাবার নামবে, তাদের জানা নেই। রাফিনকে অনেক বুঝিয়েছেন গোলজার মিয়া ও সাহেরা বানু। কোন কাজ হয়নি।
.
রাত প্রায় দু'টোর কাছাকাছি।
রাফিনের বিছানার পাশে কাঁদছেন সাহেরা বানু। বেলকনিতে বসে অশ্রুজল ফেলছেন গোলজার মিয়া। বারবার কপালের পট্টি পরিবর্তন করে দিচ্ছেন সাহেরা বানু। মুনাজাতের চোখের পানি ফেলছেন সাহেরা বানু,
"হে আল্লাহ,আমার বুকের ধনের অসুখ তুমি মাফ করে দাও। প্রয়োজন হলে সেই অসুস্থতা তুমি আমাকে দাও। তবুও রাফিনকে তুমি ঠিক রাখো,ভালো রাখো। রাত এখন অনেক গভীর মওলা। তুমি তো বলেছে, """রাত্রের শেষাংশে পৃথিবীতে নেমে আসো আর তোমার বান্দাদের ডাকতে থাকো, কে আছো বিপদগ্রস্ত আমার কাছে চাও,আমি বিপদ দূর করে দিবো, কে আছো গুনাহগার, আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো আমি তোমাদের ক্ষমা করব।" হে মওলা আমার মুনাজাতকে তুমি কবুল করে নাও, আমার রাফিনকে তুমি সুস্থ করে দাও। ইসলামের পথে ওকে কবুল করে নাও। হেদায়াতের আলো ওর কর্ণকুহরে প্রবেশ করাও। ওকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযী বানিয়ে দাও।"
.
মায়ের মুনাজাতের কথাগুলো রাফিনের কানে বাজতে লাগলো। মায়ের কান্না সে একদম সহ্য করতে পারে না। অনুশোচনা হতে লাগলো। মনে মনে ভাবলো, "যখন সে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তো, তখন সংসারে শান্তি আর শান্তি। আনন্দময় পরিবেশ যেন পুরো সংসারে। মধ্যবিত্ত সংসারে এর চেয়ে কাম্য আর কি হতে পারে।" রাফিন দেখেছে, যবে থেকে সে নামায আদায় ছেড়ে দিয়েছে তখন থেকে গোলজার মিয়া তার সাথে ঠিকমতো কথা বলেন না। বিষণ্ণতা তাকে ঘিরে রাখে যেন সবসময়।
.
চোখের কোণা দিয়ে ঝরঝর করে পানি পরতে শুরু করলো রাফিনের। মাধ্যমিকে যখন সে পড়তো তখন বাবার ইসলামীক অনেক বই পড়েছে। তাতে একটা বইয়ের নাম ছিলো "পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য"। বইয়ে অনেক কিছু পড়েছিলো। একটা হাদীসের কথা স্পষ্ট মনে আছে,
" পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি। পিতা-মাতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি।"
হাদীসটি মনে পড়তে মাথায় গোলযোগ শুরু হয় রাফিনের। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলে জান্নাত নিশ্চিত। আর যদি কারো উপরে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন,তাহলে জাহান্নাম তার বাসস্থল। জাহান্নামে কথা মনে উঠতেই চমকে উঠে, সে জানে জাহান্নাম মানেই কষ্টের স্থান, শাস্তির স্থান। যেখানে অনেক আগুন। আগুনকে অনেক ভয় পায় রাফিন।
.
সারা শরীর ঘামতে শুরু করেছে। ভিতরের গেঞ্জি ভিজে গেছে। অস্পষ্ট ভাষায় "মা " বলে শব্দ করে উঠে। সাহেরা বানু দ্রুত মুনাজাত শেষে রাফিনের পাশে বসেন। জলপট্টি পাল্টিয়ে দেন। রাফিন মায়ের উরুর উপরে মাথা রাখে। সাহেরা বানু খানিকটা অবাক হয়।
- মা?
- রাফিন কিছু বলবি বাবা?
- মাগো আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দাও।
- কি হয়েছে বাবা? হঠাৎ একথা বলছিস কেন?
সাহেরা বানু গোলজার মিয়াকে ডাকেন।আর বলতে থাকেন, " কই গো, রাফিন কি সব বলছে। তুমি একটু আসো।"
গোলজার মিয়া রাফিনের ঘরে ঢুকে রাফিনের পাশে বসেন।
- কি হয়েছে বাবা?
.
বাবার আসতে দেখে বিছানায় উঠে বসতে চেষ্টা করে রাফিন। সাহেরা বানু তাকে সাহায্য করে।
- বাবা আমি তোমাদের সাথে অন্যায় করেছি। খারাপ ব্যবহার করেছি। আমাকে তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দাও। কথা দিচ্ছি বাবা, তোমাদের কথার আর অবাধ্য হবো না। কাল থেকে নিয়মিত নামায পড়বো। তোমরা আমার আপনজন,তোমরা ক্ষমা না করলে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন না।
ছেলের কথা শুনে সাহেরা বানু ও গোলজার মিয়ার চোখে পানি ঝরতে শুরু করেছে। ছেলেকে বুকে টেনে নেন গোলজার মিয়া। আর বলতে থাকেন,
" ক্ষমার কথা বলতে হয় না বাবা। সব পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের ক্ষমা করেন।"
সকলের চোখে অশ্রু। এই অশ্রু ভালোবাসার অশ্রু, এই অশ্রু সুখের অশ্রু।
.
.
গল্পঃ আপনজন
লেখাঃ সাজ্জাদ আলম বিন সাইফুল ইসলাম
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦৃāĻšāϏ্āĻĒāϤিāĻŦাāϰ, ā§Ģ āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3063
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:⧍ā§Ŧ PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ