ঘটনাঃ ০১
-- স্যার আপনার সাথে একজন মহিলা দেখা করতে আসছে।
-- মহিলা!!!
-- হুম। বাহিরে দাঁড়িয়ে।
-- আচ্ছা যাও আমি আসছি।
পিয়ন এসে হাসানকে ডেকে যায়। হাসান একটু অবাক হয় তার সাথে আবার কোন মহিলা এলো দেখা করতে। ভাবতে ভাবতে অফিসের গেটের কাছে আসে। দারোয়ান হাসানকে দেখে সামনে এগিয়ে আসে। হাসানের সামনে একটা টিফিন বক্স এগিয়ে দিয়ে বলল,
-- স্যার আপনার খাবার দিয়ে গেছে।
-- কে?
-- একটা মহিলা। বলল খাবার শেষ করে বক্সটা রেডি রাখতে এসে আবার নিয়ে যাবে।
হাসান মুচকি হেসে বক্সটা হাতে নিয়ে অফিসের ভিতরে পা বাড়ায়। হাসানকে টিফিন বক্স হাতে দেখে তার পাশের কলিগ বলে উঠল,
-- কি হাসান সাহেব!! নিশ্চয়ই ভাবী খাবার পাঠিয়েছে।
হাসান মুচকি হেসে হ্যাঁ বলে কাজে মনোযোগ দিলো।
.
মেয়েটার সাথে আজ ঝগড়া করে অফিসে এলো হাসান। বিয়ে হয়েছে দু'মাস হলো। একে অন্যের প্রতি তেমন কোন আগ্রহই পোষন করে না। হাসান যতটা করে তার এক ভাগও মেয়েটা করে না। সারাদিন চুপচাপ থাকে, কথা কম বলে, রুমের মধ্যেই বসে থাকে আর কাজকর্ম করে কিছু। তাও নিজের জন্যই হাসানের একটা কোন কাজ করে না। হাসান ভাবে মা কি দেখে এক মহারানী তার গলায় ঝুলিয়ে দিলো। যাকে নাকি তারই রান্না করে খাওয়াতে হয়। কোন রান্নাই পারে না করতে। অফিস করে বাসায় গিয়ে রান্না করা এটা যেনো তার সেই আগের ব্যাচেলর লাইফই রয়ে গেলো। বিয়ে করেও ব্যাচেলর থেকে মুক্তি পেলো না। যাক আজ ঝগড়াটা তাহলে কাজে দিয়েছে। তাই মেয়েটা নিজে রান্না করে খাবার পাঠিয়েছে। হাসানের মনে আনন্দের ঝড় বইছে একটা কাজ তাহলে ভাগ করে নিলো।
.
দুপুরে খাবারের সময় বক্সটা খুলতেই হাসানের চোখ দুটো ছানা বড়া। খাবার দেখেই তার জিবে জল চলে এলো। ইলিশ ভাজা, বেগুন ভাজা, সাথে দুটো শুকনো মরিচ, গরুর মাংসের ভুনা, আর ঘন করে ডাল। বাহ্ মেয়েটা দেখি অনেক কিছু রান্না করেছে। সাথে সরি বলে একটা চিরকুটও দিয়েছে। খাবার মুখে দিতেই হাসান যেনো তৃপ্তির সাগরে ভাসছে। এত ভালো রান্না জানে মেয়েটা অথচ তাকে বলা হয়েছে রান্না পারে না। যাক হয়তো একটু আরামে খেতে চেয়েছিলো তাই বরকে দিয়ে রান্না করিয়েছে। এটা ব্যাপার না একটু আধটু হয়ই। খাওয়া শেষে তৃপ্তির ঢেকুর তুলল। ছোট্ট করে একটা চিরকুট লিখল আর সাথে একটা লাল গোলাপ টিফিন বক্সটাতে ভরে দিয়ে দারোয়ানকে দিয়ে এলো। হাসান নিজে দিতে চাইলেও লজ্জায় বক্সটা দারোয়ানের হাতে দিয়ে চলে এলো। মেয়েটাকে সকালে যা তা বলল। এখন আবার কিভাবে কি?
.
ঘটনাঃ ০২
কলিংবেল বাজতেই রিদি উঠে গিয়ে দরজা খুলে।
-- আফা বাটি টা।
রিদির হাতে টিফিন বক্সটা দিয়ে মহিলাটা চলে যান। রিদি রান্না ঘরে ঢুকে টিফিন বক্সটা ধুয়ে রাখতে। বক্সটা খুলেই একটু অবাক হয়। একটা লাল গোলাপ সাথে ছোট একটা চিরকুট। রিদি আস্তে আস্তে চিরকুটটা খুলে। চিরকুটে লিখা
"দুঃখিত সকালের জন্য। ধন্যবাদ খাবারের জন্য। রান্নাটা অনেক মজা হয়েছে"।
রিদি মুচকি হেসে চিরকুটটা ভাঁজ করে তার ডায়েরির মধ্যে রেখে দেয়। এই প্রথম তাকে রাগী ছেলেটা এত সুন্দর করে চিরকুটে সরি বলেছে। বিয়ের দু'মাস হয়েছে। টুকটাক রাগারাগি হয় তাদের মধ্যে রিদি সরি বললেও রাগী ছেলেটা ভুলেও বলে না সরি। আর আজ…… যাক ভালোই হয়েছে খাবার পাঠিয়ে। রোজ সুন্দর করে রান্না করে দুপুরে খাবার পাঠাবে। রিদি ভাবে তাকে একটা ভালো আদর্শ স্ত্রী হতে হবে।
.
ঘটনাঃ ০১
হাসান বাসায় ফেরার পথে ভাবছে বউ তার এত ভালো রাঁধুনী, না জানি আরো কত কিছু রেঁধে রেখেছে তার জন্য। নাহ মেয়েটাকে আর বকবো না। একজন ভালো স্বামী হয়ে উঠবো। বউ কে ভালোওবাসবো। গিয়েই ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বউকে নিয়ে চট করে একটা ঘুম দিবো। আহ্ আজ যে ছুটি আনন্দে তর সইছে না। বাসায় এসে কয়েকবার বেল বাজিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। বউ তো দরজাই খুলে না। পকেটে হাত দিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে এক্সট্রা চাবিটা বের করে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে। লাইট অন করতে করতে হাসান তার আদরের রাঁধুনী বউটাকে ডাকতে লাগলো।
-- নিতু…… এই নিতু।
কয়েকবার ডাকার পর চোখ ডলতে ডলতে নিতু রুমে থেকে বেরিয়ে আসে। ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে,
-- কি হয়েছে?
-- ঘুমিয়ে ছিলে নাকি?
-- হুম।
-- আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে আসো দুজনে একসাথে খেয়ে তারাতারি শুয়ে পড়বো।
-- রান্না করবে না??
-- রান্না করবো মানে?
-- রান্না না করলে খাবো কি?
-- কেনো তুমি রান্না করোনি?
-- আমি রান্না করবো? তুমি জানো না আমি রান্না করতে পারি না।
-- তাহলে খাবার কে পাঠালো?
-- কিসের খাবার?
-- দুপুরে তুমি খাবার পাঠাওনি অফিসে?
-- দুপুরে তোমাকে খাবার পাঠালে আমি আবার না খেয়ে থাকি নাকি? আজ তো সকালে কম নাশতা বানিয়েছো। দুপুরে কিছুই খাইনি।
-- কি বলো?
-- হুম।
-- তাহলে কাকে আমি……
.
ঘটনাঃ ০২
বেল বেজে উঠতেই রিদি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে। হাসনাতের কাছ থেকে ব্যাগটা নিয়ে পানি এগিয়ে দেয়। হাসনাত পানি সরিয়ে দিয়ে সোজা রুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার টেবিলে বসতে বসতে বলে,
-- তারাতারি খেতে দাও। অনেক খিদে পেয়েছে। দুপুরে কেবল দুটো সিঙ্গারা আর এক কাপ চা খেয়েছি।
-- সিঙ্গারা মানে?
-- সিঙ্গারা মানে কি? সিঙ্গারা চিনো না?
-- সিঙ্গারা খাবে কেনো? আমি না তোমার জন্য দুপুরে খাবার পাঠালাম?
-- খাবার?
-- হ্যাঁ…… পাশের ফ্ল্যাটের ভাবীদের খাবার নেয় দুপুরে… পিন্টু না যেনো মিন্টুর মা। উনার কাছেই তো তোমার জন্য খাবার দিয়ে দিলাম।
-- কি বলো আমি তো কোন খাবার পাইনি।
-- তাহলে কে খাবার খেলো? খাবার খেয়ে তো ছোট একটা চিরকুটও দিলো।
-- কিসের চিরকুট?
-- দাঁড়াও দেখাচ্ছি।
রিদি চিরকুটটা নিয়ে এসে হাসনাতকে দেখায়। হাসনাত দেখে হাহাহা করে হাসতে থাকে। হাসতে হাসতে বলল,
-- কেবল এই চিরকুট টাই দিয়েছে?
রিদি আস্তে আস্তে করে বলল,
-- না সাথে একটা গোলাপ ফুল।
-- তুমি জানো না আমি যে গোলাপ ফুল পছন্দ করি না?
-- কিন্তু আমি যে করি। ভেবেছি তুমি হয়তো আমার জন্যই…………
-- তুমি একটা ফোন দিয়ে তো জানাতে পারতে। আর ভালো করে বলে দিবে না? কোথায় কাকে খাবারটা দিতে হবে?
রিদি মাথা নিচু করে আস্তে করে বলল,
-- আমি তো সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম।
-- হুম বুঝলাম তবে সকালের জন্য সরি কেনো লিখলো।
-- আমি কিভাবে বলবো?
-- হাহাহা……… হয়তো বেচারাও সকালে তার বউয়ের সাথে ঝগড়া করে বেরিয়েছে।
হাসনাত জোরে জোরে হাসতে লাগলো। রিদি চুপ করে রইলো আর কিছু বলল না।
.
ঘটনাঃ ০১
আর এদিকে হাসান চুলোয় রান্না বসাচ্ছে। আর মনে মনে হাসছে কার খাবারটা খেয়ে এত গুনগান গাইলো। না জানি মহিলাটি কি না কি ভাবছে। এত আশা নিয়ে বাড়িতে এসে তার সব আশাই ছাই হয়ে উড়ে গেলো। মহারানী তো কোন কাজেরই না।
.
পরেরদিন…………
খাবার নিতে এলে রিদি মিন্টুর মাকে ধরে। মিন্টুর মা বলেন,
-- আমি তো আপনার স্বামী হাসান সাহেবরেই খাবার দিয়ে আসছি। ভুল জায়গায় খাবার যাইবো কেন? ঠিকানা মতোই দিয়ে আসছি।
রিদি আর কি বলবে, এত করে বলে দিলো হাসনাত আর উনি শুনে গেল হাসান। ঠিকানা ভুল না হলেও মানুষটা ভুল ছিলো। আর লোকটাই বা কেমন অন্যের খাবার গপাগপ গিলে ধন্যবাদও জানায়।
.
আর হাসান অফিসে বসে ভাবছে আহ্ ভুল করে যদি ভুল জায়গায় এসে আবার কেউ তাকে খাবার দিয়ে যায়। ইসসসস চেটেপুটে খেয়ে আবার ধন্যবাদ বলে ছোট একটা চিরকুট লিখে দিতে মোটেও ভুল করতো না। ফ্রীতে এমন কষ্ট ছাড়া খাবার ক"জনই বা খেতে পারে?
.
"ভুল টিফিন বক্স"
Adhora Zafrin
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ā§Ē āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3014
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧍:ā§Šā§¨ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ