গল্পঃ """খুনসুটি সংসার"""
•
ফারাহ বাজারের ব্যাগ থেকে এক এক করে সব তরি-তরকারি দেখতে থাকে, আর তাওহীদ! মুগ্ধ নয়নে ফারাহর দিকে তাকিয়ে থাকে।তরকারি গুলো দেখে ফারাহর মেজাজ টা খারাপ হয়ে যায়,
তাই রাগে বলে
.
- ঐ তুই আজকেও এগুলা কি আনছস? আজ তোকে শেষ করেই ফেলব।আজ তোর আর কোনো কথাই শুনব না।
.
তাওহীদ ভেবেছিল প্রতিদিনের মত ঝাড়ি না দিয়ে তরকারি গুলো দেখে মিষ্টি সুরে কিছু বলবে, কিন্তু প্রতিদিনের মত তার এই ভাবনাটা আজকেও পালটে গেল।ভয়ে ভয়ে তাওহীদ বলে
.
- কেন কি হয়েছে?
ফারাহ বাজারের ব্যাগ থেকে তাওহীদের সামনে নষ্ট তরি-তরকারি ও মাছ ফেলে রাগে বলে
.
- তুই এগুলো কি আনছস? বাজারে কি ভাল তরকারি ছিল না? ভাল মাছ ছিল না? এগুলো কি?
.
অপরাধী চোখে নরম সুরে তাওহীদ বলে
- কেন এগুলো ভাল না!
আমি তো ভাল ভেবেই এনেছি।
.
- তোর চোখ কি উপরে ছিল! তুই দেখিস নাই? আমি কি তোকে পঁচা তরি-তরকারি আর পঁচা মাছ আনতে বলেছি? নাকি সব কিছু তাজা আনতে বলেছি!
.
করুণ সুরে তাওহীদ বলে
- কিহ! সব গুলোই পঁচা?
আমি তো ভেবেছি সব গুলোই তাজা।
.
এমন কথা শুনে বিস্ময় চোখে ফারাহ বলে
- কিহ!
.
- হু আর তারাও তো বলেছিল সব গুলোই ভাল।তাই আমি আর ঝাছাই করেনি; তাদের কথামত নিয়ে এসেছি।
.
- ঐ তোর কি চোখ নাই? তোর নাকে কি গন্ধ শক্তি নাই? তোর নিজের জ্ঞান বলতে কি কিছুই নাই?
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে তাওহীদ বলে
- সরি বউ আর ভুল করব না, এবারের মত ক্ষমা করে দাও!
.
- প্রতিদিন এক কথা বার বার শুনতে আর ভাল লাগে না।
.
- সরি বলছি তো আর কখনো এমন হবে না, এই দেখ কান ধরেছি।
.
- না হবে না, তোর যখন বাজার করার মুরাদ নাই তাহলে বিয়ে করছিলি কে?
কথাটা বলে ফারাহ নিজের জিহবাতে নিজে কামুড় মারে।কারণ রাগের মাথায় যে তুই তুই করেছে ও আরও অনেক কথা বলে ফেলেছে।মনে মনে ফারাহ বলে একি করলাম আমি!
.
এই কথাটা শুনে তাওহীদ চমকে ওঠে।কারণ ফারাহ এরকম কথা এর আগে কখনো বলেনি; কিন্তু আজকে বলে ফেলে।
- তাওহীদ শুধু একবার তার দিকে তাকিয়ে অন্য রুমে চলে যায়।
.
ফারাহর এখন নিজেকেই নিজের গালি দিতে ইচ্ছা করছে।কারণ তাওহীদ কথা কম বলে কাজ বেশী করে।আর আজ যে কথা বলেছে, তার হিসাব যে পাই পাই করে নিবে তার চোখ দেখেই বোঝেছে।
•
তাওহীদ রুমে এসে মনে মনে বলতে থাকে
বাবা মায়ের ইচ্ছা ছিল বৌয়ের হাতে কতকিছু খাব।কিন্তু এখন! ঠিকেই কত কিছু খাই সাথে বৌয়ের ঝাড়িটাও খাই। এটাও মনে হয় আমার কপালে লেখা ছিল! হঠাৎ ফারাহর ঐ কথাটা তার মনে পড়ে যায়।মনে মনে বলে, ঠিকেই তো বলেছে আমাকে দিয়ে এই সামান্য কাজটা হয় না, তাহলে আমাকে দিয়ে আর কি হবে!
.
ফারাহ নষ্ট তরকারি গুলো বেছে বেছে ভাল গুলো নিয়ে রান্না করতে থাকে, তখন তার ও তাওহীদের পুরোনো দিন গুলির কথা মনে পড়ে যায়।পুরোনো দিন গুলির কথা মনে হতেই মুখে একটা হাসি চলে আসে।কখনো ঝগড়া-ঝাটি করা, কখনো মান-অভিমান করা, আবার কখনো সব ভুলে গিয়ে ভালোবাসায় জড়িয়ে পরা।এভাবেই তাদের দিন গুলি চলে যাচ্ছিল।
.
তাওহীদের সাথে তার বেশী ঝগড়া হতো বাজার নিয়ে।কারণ তাওহীদ ঠিকমত বাজার করতে পারে না।তাদের বিয়ের ছয় মাস পার হয়ে যায়, কিন্তু এখনো তাওহীদ ঠিকঠাক ভাবে বাজারটা করতে পারে না।আর তা নিয়ে প্রায় সময় ফারাহর সাথে তার ঝগড়া হতো, মান-অভিমান হতো, আবার একজন অন্য জনের মান-অভিমান ভাঙ্গাতো।
.
রান্না শেষ করে এসে দেখে তাওহীদ ঘুমিয়ে আছে।তাওহীদের মুখের দিকে তাকিয়েই একটা হাসি দেয়।কারণ তার মুখটার মাঝে যে এখনো একটা বাচ্চা বাচ্চা ভাব লেগে আছে।যখনেই তাওহীদকে ঘুমের মাঝে দেখে তখনেই হেসে পেলে, না হেসে পারে না।
.
তাওহীদের পাশে দাঁড়িয়ে শাড়ির আঁচল দিয়ে সুরসুরি দিতে থাকে, আবার ভয়ও পেতে থাকে।কারণ ঘুমের ঘোরে যদি চড়-থাপ্পড় মারে।এই যে ঘুম বাবু উঠেন; ফারাহ মনে বলে বলে সুরসুরি দিতে থাকে আর হাসতে থাকে।
•
ফারাহর দুষ্টামিতে তাওহীদের ঘুম ভেঙ্গে যায়।পাশে ফিরতেই দেখে ফারাহ অপরাধী চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।তাওহীদ অভিমানে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
.
ফারাহ এমন ভাবে কথা বলতে শুরু করে, তাদের মাঝে যেন কিছুই হয়নি।
- এই যে উঠেন খাবেন না? রান্না তো হয়ে গেছে খেতে চলেন!
অভিমানী সুরে তাওহীদ বলে
- যাদের বাজার করার মুরাদ নাই তাদের খাওন নাই।আমিও তো পারি না, তাই আমারও আর খেতে হবে না।
.
- কে বলেছে? আর বাজার হলেই হলো খারাপ হোক আর ভাল হোক বাজার তো বাজারেই; তাই না?
- যাদের বলা দরকার তারা বলেছে, আর বাজার এক হলেই হলো না।তার মাঝে ভাল মন্দ আছে বুঝেছেন?
.
- তাই না? তাতে কি হয়েছে এখন খেতে আসেন।খাওয়ার পর বাজারের দোষ গুণ নিয়ে কথা বলবেন।
- না আমার খাওয়ার কোন মানে নাই।আগে বাজার করা শিখব তারপর খাবার মুখে দিব
.
কথাটা শুনে ফারাহর হৃদয়টা কেঁদে ওঠে।এখন নিজেকেই নিজের মুখে চড় মারতে ইচ্ছা করতেছে, কেন যে তখন ঐ কথাটা বলতে গেল।তারপর ফারাহ বলে
- সরি, আমি ভুলে বলে ফেলেছি।
- সরি কেন বলছেন? আমি তো রাগ করেনি; আর আপনি তো ভুল কিছু বলেন নি(তাওহীদ অভিমান করলে ফারাহকে আপনি বলে ডাকে)
.
- সরি বলছি তো, তখন মুখ ফসকে কথাটা চলে আসে
- না আপনি তো ঠিকেই বলেছেন।আমার মত ছেলের বিয়ে করতে নেই।
- আমাকে মাফ করে দেন আর কখনো বাজার নিয়ে কথা বলব না।
- নানা ভুল করলে তো বলবেনেই তাই না?
.
তাওহীদের এরকম আচরণে ফারাহর এখন খুব কান্না করতে ইচ্ছা করছে কিন্তু পারছে না।ফারাহ কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে তারপর তাওহীদের হাত ধরে টানতে থাকে আর বলতে থাকে
- আমার সাথে আসেন, আসেন বলছি
- আমার হাতটা ছাড়ুন
- না ছাড়ব না
- প্লিজ হাতটা ছাড়ুন বলছি!
- না আগে চলুন তারপর ছাড়ব
ফারাহর ঝুরাঝুরিতে তাওহীদের রাগ ওঠে যায়।তারপর রাগে
- ঠাসসস(চড় বসিয়ে দেয়)
.
সে মনে করেছিল হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলে তার অভিমান চলে যাবে।কিন্তু এই আচরণটা করবে বুঝতে পারেনি।চড় খেয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।আর তাওহীদের দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে থাকে।
আবার তাওহীদ বলতে থাকে
- বার বার হাতটা ছাড়তে বলেছি হাত ছাড়ে না, আসছে অধিকার ফলাতে।যারা ভাল বাজার করতে পারে যান তাদেরকে গিয়ে বিয়ে করেন।
- তাওহীদের কথাটা শুনে টপ টপ করে চোখ থেকে পানি ঝরতে থাকে।
.
ফারাহ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে চোখের পানি ফেলতে থাকে।তারপর হঠাৎ শার্টের কলার ধরে কান্না সুরেই ফারাহ বলে
- ঐ ছেলে ঐ এত ভাব নেস কে হ্যা! মারছস কাঁন্না করাইছস এখনো সাদ মিটেনি?
.
ফারাহর এমন আচরণে তাওহীদ ভয় পেয়ে যায়।
- সে ফারাহর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।
- কি হল কথা বল! বেশী মান দিয়ে ফেলেছি না? আর দিব না।
- তাওহীদ চুপচাপেই থাকে
- নিজে ঠিকমত বাজার করতে পারবে না, আবার অন্যজন কিছুই বলতে পারবে না।
বেশী ভালোবাসি বলে বেশী কথা বলে ফেলি এটাই তো আমার দোষ! এটাই তো আমার অপরাধ! আচ্ছা আর কখনো কিছু বলব না।
.
এসব কথা শুনে তাওহীদের হৃয়টা কেমন করে যেন ওঠে।এখন নিজের কাছেই খুব খারাপ লাগতে থাকে।কি করবে বুঝতে পারছে না, কি বলে শান্তনা দিবে সেটাও বুঝতে পারছে না।তারপর কোন কিছু না ভেবে ফারাহকে ধরে বুকে টেনে নিতেই; ফারাহ বলে
.
- না আদর নাগবে না, আমাকে ছাড়েন।আমি তো আপনাকে ভালোবাসি না, যারা আপনাকে ভালোবাসবে তাদের কাছে যান।
ফারাহর কথায় কান না দিয়ে তাকে বুকের মাঝে নিয়ে আসে।ফারাহ অভিমান করে আর থাকতে পারেনি; তাওহীদের বুকেই মাথা রেখে কেঁদে কেঁদে তার বুক বাসাতে থাকে।
ভেজা কন্ঠে তাওহীদ বলে
- এই কেঁদে কি আমার বুকটাকে সাগর বানাবে?
- হুম তাতে আপনার কি? আমি আমার স্বামীর বুকটাকে কেঁদে সাগর বানাব।আবার ভালোবাসা দিয়ে সব পানি শুকিয়ে নিব।
.
ফারাহকে তারদিকে ফিরিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।তারপর ফারাহ তাওহীদের বুকে মুখ লুকিয়ে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে।কিছুক্ষণ পর মুচকি হেসে তাওহীদ বলে
- পেটে ক্ষুধা লাগছে চলেন খেতে চলেন।কান্না-কাটি পরে করেন
ফারাহ ভেজা চোখে মুচকি হেসে বলে
- হুম চলেন।
.
তারপর ফারাহ নিজ হাতে তাওহীদকে খাইয়ে দিতে থাকে।তাওহীদ ফারাহর দিকে তাকিয়ে থেকে খেতে থাকে, আনন্দে তার চোখে পানি চলে আসে।আবার তাওহীদ ফারাহকে খাইয়ে দিতে থাকে।ফারাহ ও তাওহীদদের দিকে তাকিয়ে থেকে খেতে থাকে।
তারপর তাওহীদের বুকে মাথাটা রেখে চুপচাপ চোখ বন্ধ করে থাাকে।আর তাওহীদ এক হাতে তাকে আদর করতে থাকে।
তখন মনে মনে ফারাহ বলে, ভাগ্যগুণে এমন স্বামী পাওয়া যায়।আবার মনে মনে তাওহীদও বলে, ভাগ্যগুণে স্ত্রী পাওয়া যায়।
এই গল্পটা আমার পুরনো আইডিতে লিখেছিলাম।
•
লিখাঃ MD Mahmudur Rahman Tauhid
(Ovimani Mrt)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ā§Ē āĻ āĻ্āĻোāĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3009
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧍:⧍⧠AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ