নয়টি থাপ্পাড় অতঃপর ভালোবাসা
.
.
শুভ পিচঢালা পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে আনমনে কারণ তার
মনটা ভীষণ খারাপ।
কলেজের বকেয়া পরিশোধের শেষের দিন ঘনিয়ে আসতে
চললো কিন্ত শুভর হাতে বকেয়ার অর্ধেক টাকাও নেই।
শুভ পরিবারে আর্থিক অবস্থা একবারে নার্যেহাল,কোনমতে চলে।পরিবার থেকে শুভকে লেখাপড়ার খরচ দিবে কি,
মাস শেষে তাদেরকে আরে
কিছু টাকা দিতে হয় শুভর।
.
শুভ চারটি বাসায় টিউশনি
করে তার লেখাপড়ার খরচ
চালায় সেই সাথে তার মা-বাবার জন্য কিছু টাকা গ্রামে পাঠায়। কিন্ত এ মাসে তিনটা টিউশনির টাকা দিতে পারবে না বলে দেওয়ায় শুভ ভাবনার অতল সাগরে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। মাএ দুইটা টিউশনির টাকায়
সে কিভাবে কলেজের ফ্রী দেবে? শুভ চারদিকে অন্ধকার দেখছে আলোর প্রতিবিম্ব তাকে ছেড়ে যেতে চাচ্ছে।
শুভ হাঁটছে ধীর গতিতে এমন সময় পিছন থেকে কারো ডাকে থমকে দাঁড়ালো।
--এই শুভ দাঁড়াও একটু..জান্নাত
---বলেন?
--তোর অভ্যাসটা আর গেল না!
--কোন অভ্যাস?
--এই যে আমাকে আপনি করে বলা। কতোবার বলছি আমাকে তুমি
করে বলতে,কে শুনে কার কথা।
--আর আমি ও নিয়মিত আপনাকে একটা কথা বলি সেটা মনে থাকে না কেন?
--কোন কথা??
--আমাকে আপনি করে বলতে বলি নাই আপনাকে।
--কেন আপনি করে বলবো??
--কারণ আমি আপনার সিনিয়র।
--ঐ এক কথাই তো পাইছো, সিনিয়রের খ্যাতায় আগুন। আরে আমি আর তুমি একসাথে
তো একসাথেই একই ক্লাশে পড়তাম।কেন যে এক ক্লাশ ফেল মারলাম হয়ে গেলাম জুনিয়র। মনে হয় তোর এই ব্যাকা ত্যাড়া কথা শুনার জন্যই আলাহ
আমাকে পরীক্ষার দিন অসুস্থ বানিয়ে দিয়েছিলো।
--অনুতাপ করতে হবে না,আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।
--কিন্ত আমি তোমাকে আপনি করে বলতে পারবো না আর তুমি ও আমাকে আপনি বলতে পারবে না।
--ঠিক আছে এবার যাও ভালো লাগছে না।
--কেন কি হইছে?
--বললাম না তুমি যাও,আমার ভালো লাগছে না (মন খারাপ করে)
.
জান্নাত চলে গেল শুভর কাছ থেকে মন খারাপ করে।
জান্নাত আর শুভ সমবয়সী তারা একই সাথে গ্রামের পরিবেশে বেড়ে উঠেছে।মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে জান্নাতের শরীল খারাপ থাকায় একটা পরীক্ষা দিতে পারে নাই,সেজন্য শুভ আজ সিনিয়র আর জান্নাত জুনিয়র।
তারা কেবল মাএ বন্ধু হিসাবে কথাবার্তা বলে একসাথে চলে। .
শুভ নিম্মবিও পরিবারের সে জন্য অভাব অনটন লেগেই
থাকে তাদের সংসারে পক্ষান্তরে জান্নাত উচ্চ পরিবারের একমাএ ধনীর দুলালী।
.
পরদিন জান্নাত কলেজে গিয়ে শুভকে ক্যামপাসে কোথায় পেলো না।জান্নাত শুভর এক বন্ধুর কাছে জানতে পারলো শুভর
মন খারাপের কারণ এবং
কলেজে না আসার কারণ। জান্নাত আর এক মুহুত্বে দেরি না করে কলেজ থেকে
সোজা শুভর ম্যাসে উদ্দেশ্য রওনা দিলো।কিন্ত শুভকে সেখানে পেলো না।
জান্নাত জানে শুভর মন খারাপ থাকলে শুভ কোথায় যায়।
অতএব জান্নাত পরিচিত সেই নদীর পাড়ের দিকে ছুটলো
এবং পৌঠানোর পর দেখলো
শুভ নদীর পাড়ে কংক্রিটের উপর বসে আছে।
আর শুভর চোখের
পানিতে গাল দুটো চিকচিক করছে।শুভ কাঁদছে নিরবে
এ কাঁন্না দেখা যায় না শুধু অনুভব করতে হয়।
.
জান্নাত পিছন থেকে শুভর কাধে হাত রাখে।
শুভ তড়িগড়ি করে চোখের
পানি মুঁছে বললো,,
----তুমি এখানে!!..শুভ।
--তোমার এ সমস্যার কথা কেন আমার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখছো।
--কিসের কথা বলছো তুমি?? --ঠাস.এখনো বলছো এ কথা।
তোমার লজ্জা লাগে না এ সামান্য কথাটা আমার কাছে লুকিয়ে রাখতে!!
.
দুজনেই আনমনে বসে আছে। নিরবতা ভেঙ্গে জান্নাত শুভর হাতে তিন হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললো,,
--এটা রাখো।জানি তুমি আমার কাছে মুখ ফুটে টাকা চাইবে না।
--না জান্নাত এ হয় না।
--কেন হয় না?
--কারণ এর আগেও তুমি অনেক টাকা আমাকে দিচ্ছো সেগুলোই শোধ করতে পারি নাই আর এখন নতুন করে আর ঋণ বাড়ানো কি ঠিক হবে?
--ঠাস।আমি কি তোর কাছে
টাকা ফেরত চাইছি কোনদিন? এখন তুই টাকাটা যদি না নিস তাহলে তোকে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে দিবো (রেগে গিয়ে কথাগুলো বললো জান্না)
--ঠিক আছে নিবো,কিন্ত (অসহায়ের মতো জান্নাতের মুখের দিকে চেয়ে)
--কিন্ত আবার কি?
--তোর এ ঋণ আমি শোধ করবো কিভাবে তুই বলে দে?
--সারাজীবন যদি আমার পাশে থাকতে পারিসে তাহলে এমনিতেই শোধ হয়ে যাবে??
--বন্ধু হিসাবে তুই যা
চাস আমার সাদ্ধের মধ্যে থাকলে আমি তোকে দিয়ে দিবো রে।
--মনে থাকে যেন কথাটা।
--থাকবে।অন্যকিছু ভুলে গেলেও এ কথাটা আমি কখনো ভুলবো নারে স্মৃতির প্রতিটি পাতায় লেখা থাকবে তোর কথা গুলি।
--এখন যাবো বাসায় বলে আসি নাই,ভালো থাক আর যাবার
আগে একটু আমার তোর মুখ
দিয়ে মিষ্টি একটা হাসি আমাকে উপহার দিয়ে দে।
--মিষ্টি হাসি তো মেয়েদের মানায় আমি কিভাবে দিবো।
তবে আমার অন্তরের হাসিটুকু তোকে দেখাতে পারবো না,না পারলেও মুখের এক ফালি উজ্জল হাসি উপহার তোর জন্য।ভালো
থাকো আর বাসায় গিয়ে একটা
ফোন দিতে যেন ভুল না হয়।
.
লেখা-Md Jasim uddin Shuvo
(ক্ষুদ্র লেখক)
নয়টি থাপ্পড় অতঃপর ভালোবাসা
.
.
পর্ব-২
শুভ ও জান্নাতের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন এতোটাই অটুট যে তারা একজনে বিপদে পড়লে অন্যজন এগিয়ে আসতে কারপন্ন করে না।
এই বন্ধত্বের বান্ধন যেন ছিড়তে পারবে না,শত ঝড় আসলেও
এ বান্ধন থাকবে অতি যত্নে পরম ভালোবাসায়।
.
কিন্ত এ বন্ধুত্বের মাঝেই জান্নাত শুভকে কখন যে নিজের অজান্তেই ভালবেসে ফেলেছে সেটা জান্নাত নিজেও জানে না।
জান্নাত তার ভালোবাসাটা আকার ইঙ্গিতে অনেক বুঝনোর চেষ্টা করে কিন্ত শুভ অর্করমার ঢেঁকি কিছুতেই বুঝতেই পারে না। বুঝতে পারে না জান্নাতের দীর্ঘ কয়েক বৎসরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে জমানো পবিত্র ভালোবাসাকে। জান্নাত মাঝে মাঝে ভাবে আমি হয়তো শুভকে ভালোবাসার
কথা বুঝতে পারি না বা আমি এখনো শুভর মনে জায়গা করে নিতে পারি নাই।
জান্নাত আবার হেসে ফেলে পূরানো দিনের কথা গুলো মনে করে,একসাথে বাগানে আম কুড়ানো ঝগড়া,বিকাল বেলা সবাই মিলে বিয়ে বিয়ে খেলা যেখানে বর শুভ আর বউ জান্নাত।
ভাবতে ভাবতে একসয়য় জোড়েই হেসে ফেলে জান্নাত,কি আনন্দেই না কাঁটতো দিনগুলো জান্নাতের। .
পরদিন শুভ কলেজে গিয়ে বকেয়া পরিশোধ করে ক্যামপাসে জান্নাতকে খোঁজতে থাকে।
জান্নাত চিরচেনা বট গাছটার নিচে বসে আছে,,,
--তোকে খুঁজছিলাম..শুভ।
--জানি..জান্নাত।
--কিভাবে জানলি আমি তোকে খুঁজছি??
--এটাও জানি তুই এখন আমাকে ধন্যবাদ দিবি।
--হ্যা রে।এবার ও তুই আমাকে সাহায্য করলি,কিন্ত প্রত্যক বার তোর এই সাহায্য এর প্রতিদান স্বরুপ কিছুই দিতে পারি না।
--ঠাস!
--এখন মারলি ক্যান তাছাড়া তুই আমাকে মারতে পারিস না
কারণ আমি তোর সিনিয়র।
--তোর মতো সিনিয়রকে মাথা ফাটিয়ে ফেলা উচিৎ।আসছে সিনিয়র সাঁজতে।একসাথে
বড় হওয়া একসাথে পড়াশুনা করছি তোর সাথে মাঝপথে একটা দুরঘটনা বানিয়ে দিলো আমাকে জুনিয়র।যা তুই এখান থেকে আমার সামনে ও আসবি না কোনদিন।
--প্লীজ এমন করে বলিস না জানিস তো তুই আমার একমাএ বন্ধু,তোর সাথে মজা করবো
না তো ঐ লিলি মিলির সাথে
মজা করবো তুই বল?
--লিলি মিলি!!লিলি মিলি কে? কোথাকার লিলি?তোর সাথে মেয়েটার সম্পর্ক কি?(কলার ধরে কথাগুলো বললো জান্নাত)
--আরে ছাড় অন্যরা দেখছে।
আর আমি লিলি মিলিকে চিনি
না তোকে বুঝনোর জন্য মুখ ফসকে অজানা নাম বের
হয়ে গেল।
--আমি থাকতে অন্য মেয়ের নাম মুখ দিয়ে বের হয় কিভাবে?
--তুই আমার বন্ধু তোর নাম মুখে কেন অন্তরের প্রতিটি জায়গায় লিখা থাকবে আজীবন বুঝলি?
--আমি তোর শুধুই বন্ধু আর কিছু না!!
--আর কি?
--জানিস আমার প্রত্যকটি নিঃশ্বাস শুধু তোকেই খুঁজে কারণ আমি তোকে (জান্নাতকে থামিয়ে দিয়)
--আমি গেলাম রে পড়ানোর সময় হয়ে গেছে,ভালো থাক।
.
শুভ জান্নাতকে রেখে চলে এলো কাজের অযুহাতে,আসলে শুভর হাতে কোন কাজই ছিলো না।
শুভ বুঝতে পারছে জান্নাত কি, বলবে তাকে,বলবে ভালোবাসি তোকে।এই কথা শুনার ভাগ্য
কি আর শুভর আছে।
ঘুমের ঘোরে কুঁড়ে ঘরটাকে অট্রালিকা ভাবা আর জলে থেকে কুমিরের সাথে লড়াই,
কিংবা মাটিতে থেকে চাঁদকে ধরা একই কথা।
কিন্ত শুভ মন থেকে জান্নাকে সত্যি অনেক ভালোবাসে।
যদিও এ ভালোবাসা কখনো প্রকাশ করতে পারবে না শুভ অধরাই রয়ে যাবে শুভর মনে।
শুভ কথাগুলো ভাবছে আর হাঁটছে,হঠাৎ শুভর মনে হলো তার পায়ের আঙ্গুল কেমন জানি চিনচিন করে ব্যাথা করছে। তখধক মনে পড়লো জান্নাতের কাছ থেকে তাড়াতাড়ি আসার
সময় একটা কংক্রিটের সাথে
পা টা জোড়েই লাগছিলো। তাকিয়ে দেখে আঙ্গুল ফেটে রক্ত বের হচ্ছে,শুভ রক্ত ঝড়তে দিলো কোন প্রকার প্রতিশোধক করলো না মনে মনে বললো গরীবের আবার রক্তের দাম কি? ভাবতে ভাবতেই অজান্তেই শুভর দু চোখে অশ্রু খেলা করতে লাগলো,কিছুক্ষণ পরেই হয়তো চোখের পানিগুলো মৃত্তিকায় বুকে পড়বে,এটাকেই হয়তো বলে অশ্রু বৃষ্টি,এতে ফলাফল সরুপ ক্ষণিকের জন্য মৃত্তিকার হয়তো তৃষ্ণা মিটবে আর শুভর কষ্টটা ক্ষণিকের জন্য ছুটি পেয়ে যাবে।
.
লেখা-Md Jasim uddin Shuvo
(ক্ষুদ্র লেখক)
নয়টি থাপ্পড় অতঃপর ভালোবাসা .
.
প্রতিদিন মাগরিবের নামাজ পরে শুভ পড়ার টেবিলে বসে তারপর কিছু খাওয়া দাওয়া করে একটানা ১১টা পর্যন্ত পড়ার টেবিলে কাটিয়ে ঘুমিড়ে পড়া এটাই শুভর নিত্যদিনের রুটিন কিন্ত আজকে এই রুটিনের প্রায় ব্যতিক্রম।
নামাজ পড়ে এসে শুয়ে পড়লো শুভ একটু ঘুমের আসায়।
শুভ শুনেছে ঘুম নাকি সব চিন্তা,কষ্ট,এবং কান্তি দুর করে দেয়, কিন্ত ঘুম কই শুভ শত চেষ্টা করেও খুঁজে পাচ্ছে না বরং চোখ করলে বার বার জান্নাতের মুখখানি ভেসে বেড়াছে।.
.
রাত ৩টা বেজে ১১ মিনিট শুভ ঘুমে রাজ্যে হঠাৎ দেখতে পেলো জান্নাতের সাথে গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে বেড়াছে। জান্নাতের চুলের খোঁপায় লাল টকটকে রক্ত জবা,হাতে এক গুচ্ছ কাঁচের চুড়ি,চোখে হালকা পাতলা কাঁজল আর পরনে হলুদ রংয়ের শাড়ী দেখলে যে কেউ পাগল হয়ে যাবে।
এ যেন বিধাতার সৃষ্টির অপরুপ মহ্বিমা।জান্নাত বললো ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি,আমায় ছেড়ে যেও না কখনো।আমিও তোমায় অনেক ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি,ভালোবাসি।
.
হঠাৎ কারো চিৎকারে করা ডাকে
শুভর ঘুম ভেঙ্গে গেল।তাহলে কি এতোক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম আমি। মনে মনে বাবছে শুভ স্বপ্ন তো স্বপ্নই এটা কখনো সত্যি হয় না,
তবুও কোন কারণে শুভর মুখ থেকে এক চিলতে হাসি বেরিয়ে এলো,হোক এটা স্বপ্ন তবু তো আমি জান্নাতের পাশে আঁকাবাঁকা মেঠো পথে হেঁটেছি এতেই আমার অনেক বড় পাওয়া হয়েছে।
--ঘুমের ঘোরে কি বলতেছেন ভাই।
--না রে শাকিল একটা স্বপ্ন দেখছিলাম।
--ভাই আপনি আজকাল স্বপ্ন দেখা শুরু করলেন,নিশ্চয় জান্নাত আপুকে নিয়ে তাই না (হাসি মুখে কথা গুলো শাকিল বললো)
--অনেক পেঁকেছিস তাই না!!কান ধরে কথাগুলো বললো শুভ।(আসলে শাকিল হচ্ছে শুভর রুমমেট ৩ বছরের জুনিয়র কিন্ত তারা যেন একে অপরের বন্ধু,শুভ যে জান্নাতকে ভালোবাসে এবং জান্নাত ও শুভকে ভালোবাসে সেটা শাকিল ভালোভাবেই বুঝে গেছে।
আর জান্নাত শাকিলের মাধ্যমেই শুভর খোঁজ খবর নে সবসময়)
.
সকালে শুভ উঠে ছাএ পড়াতে গেল ফিরে এসে আর কলেজে গেল না। হাঁটতে হাঁটতে সেই চিরচেনা নদীর ধারে গেল।
কংক্রিটের উপর বসে ছোট ছোট পাথর ছুড়তে লাগলো কারণ
শুভ কারো কাছে জেনেছে যে
মন খারাপ বা উদাস উদাস থাকলে নদীতে পানিতে কিছু ছুড়তে থাকলে নাকি নদীর স্রোতের সাথে সাথে উদাসতা ভেসে যায়। না শুভর এগুলোও ভালো লাগছে না উঠে নদীর পাড় ছেড়ে আম বাগানের ভেতরে প্রবেশ করলো। চারদিকে সবুজের সমারোহ শুভকে যেন আরো কাছে টানতে চাচ্ছে, হ্যা সবুজের টানে শুভ আর থাকতে পারলো না গা এলিয়ে দিলো সবুজ ঘাসের উপর।
এ মূহুত্বে শুভর ভালোই লাগছে। শুভ ভাবছে যদি এভাবে জান্নাতের কোলে মাথা রাখে পারতাম আবার ভাবছে যা হবার না তা নিয়ে কেন ভাবছি ধুর।
.
প্রায় সারাদিন কাটিয়ে সন্ধার আগ মূহুত্বে শুভ ম্যাসে ফিরে এসেই ঘুমিয়ে পড়লো। রাত ১১টা ফোনের উচ্চ স্বরের আওয়াজে ঘুমের বারোটা বেজে গেল শুভর।ঘুম ঘুম চোখে শুভ ফোন তুললো,অতঃপর,,,
--কে বলছেন..শুভ?
--শাকিল কি বললো,তুমি নাকি আজ সারাদিন না খেঁয়ে আছো এবং কি রাতেও না খেঁয়ে ঘুমিয়ে পড়ছো?
--এতো রাতে কি এটুকু বলার জন্য আমার ঘুম ভাঙ্গালে??
--ঠিক আছে ঘুমিয়ে পড়।(জান্নাত জানে শুভ কতোটা ঘুম কাতুড়ে ছেলে, ঘুমের ডিস্টাব করলে তাকে একগাঁদা কথা শুনাবে সে যেই হোক।সে জন্য জান্নাত আর কথা বলে ফোনটা কেটে দিলো)
.
সকাল ৭টা শুভ ঘুমের ঘোরে অনুমান করতে পারলো কে যেন তার মাথার চুল বিলি কেটে দিচ্ছে আর আস্তে আস্তে করে শুভ বলে ডাক দিচ্ছে।
--শুভ এই শুভ উঠ না..জান্নাত।
--নিশ্চুপ
--ঠাস!!
--(লাফ মেরে উঠে) ঘুম আছি দেখছিস তারপর ও মারতে হব?
--কুত্তা তোরে কখন থেকে ডাকতেছি খেয়াল আছে।
--ভালোই তো লাগতেছিলো
তোর সেবা নিতে।
--(কিছু বলতে গিয়ে ও থেমে গিয়ে গেল জান্নাত) বাদ দে।
আজকাল তো দেখছি তুই
বড্ড কেয়ারন্যেস হয়ে গিয়েছিস। কাল সারাদিন প্লাস রাতে না খেঁয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলি কেন?
--এমনি।
--ওরে বিলাসীতা রে।
--বিলাসীতা না এটা পকেট ফাঁকা থাকার প্রতিক্রিয়া।
--তা পকেট যে পর্যন্ত ফাঁকা থাকবে সে পর্যন্ত তবে কি না খেঁয়ে থাকবে?
--বেশীক্ষণ ফাঁকা থাকবে না। আজ সকাল ১০টার ভেতরেই
পকেট ভর্তি হয়ে যাবে কারণ আমার ছাএ-ছাত্রীর অভিভাবকরা বলছে আজকেই দু মাসের টিউশনির টাকা একবারে দিয়ে দিবে।মোটমাট দশ হাজার টাকার মতো টাকা হবে আর তোর টাকাও এবার প্ররিশোধ করে দিতে পারবো। (অনেকটা হাসিমুখ নিয়ে কথাগুলো বললো শুভ)
--ঠাস!!আমি টাকা চাইছি তোর কাছে।
--এ পর্যন্ত দুদিনে পাঁচটা থাপ্পড় মারলি আমাকে!!
--প্রয়োজন হলে আরো মারবো
এতে যদি গাঁধাটা মানুষ।
--আমি বুঝি তাহলে গাঁধা??
--থাক থাক,ওলে বাবু তোমার বুঝি খুব লেগেছে।
তবে আর একটা খাওয়ার আগে জলদি উঠে ফ্রেশ হয়ে আয়,তোর জন্য খাবার আনছি।
--খাবার,অনেক ক্ষুধা লেগেছে রে তাড়াতাড়ি বের কর আমি এখনি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি।
.
শুভ খাঁচ্ছে আর জান্নাত তাকিয়ে আছে শুভর দিকে.বাচ্চা ছেলেদের মতো খাঁচ্ছে শুভ।আজ অনেকদিন পর পেট ভরে খেঁতে পারলো শুভ। শুভর মুখে তৃপ্তির হাসি,এ হাসি সদাচড় পাওয়া যায় না।
খাওয়া শেষে জান্নাত শুভকে বললো,,
--আমি তোর মুখটা একটু
ধুয়ে দেই?
--দে
--মুখ ধুয়ে দেওয়ার সময় জান্নাত বললো,এভাবে তুই আমাকে তোর সেবা করার সুযোগ দিবি সারাজীবন।
--হি হি।তোর বিয়ে হলে তোর স্বামী বাদে আমাকে সেবা করতে আসবি নাকি?
শুভর কথা গুলো শুনেজান্নাতের চোখে অশ্রু চলমল করছে।
শুভ ও এটা বুঝতে পেরেছে।
--আমি যাই রে বাসায় কাজ
আছে।
--আচ্ছা।
শুভ ভালোভাবেই এবার বুঝে গেছে জান্নাত আমাকে ভালোবাসে কিন্ত কি করার এ যে সম্ভব না। তেলে জলে কখনো মিশে যায়
না সুতরাৎ জান্নাত ক্ষণিকের জন্য একটী কষ্ট পাক তাকে করে পরে আমকে ভুলে থাকতে তার কষ্ট হবে না।আবার শুভ ভাবছে মেয়েটাকে শুধু আমি কাঁদিয়ে চলেছি আজকে টিউশনির টাকাটা হাতে পেলে জান্নাতকে কিছু একটা উপহার দিতে হবে তাতে ক্ষণিকের জন্য তার মুখে হাসি তো ফুটাতে পারবো।
.
লেখা-Md Jasim uddin Shuvo
(ক্ষুদ্র লেখক)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ