গল্পের নামঃ " সুখের নীড় "
.
ছোট্ট বাসা ছোট্ট সংসার কিন্তু দায়িত্ব
যেনো অনেক বড়। মাত্র চারদিন বয়সের নতুন
সংসারের দুজন সদস্য আমি এবং ঈশিতা।
সবকিছু পরিপাটি আর ঝকঝকে তকতকে করে
রাখছে ঈশিতা। দুদিন আগে যে মেয়েটা
এসবের কিছুই বুঝতোনা এখন সে কোমরে
শাড়ির আঁচল পেঁচিয়ে অনায়াসে সবকিছু
করে যাচ্ছে শুধুমাত্র আমাদের দুজনের খুশির
জন্য। তাছাড়া তো আর উপায় নেই,
পরিবারের অমতে যখন নিজেদের ভবিষ্যৎ
নিজেরাই পছন্দ করে নিয়েছি অতএব
আমাদের ভবিষ্যৎকে সুন্দর করতে যা যা করার
তা আমাদেরকেই করতে হবে।
.
এইতো কদিন আগের কথা, মাল্টিন্যাশনাল
কোম্পানিতে একটা ভাল বেতনের চাকরী
পেলাম। ঈশিতাকে খবরটা জানানোর
সাথে সাথেই তার কি খুশি, খুশির চোটে
সেদিন মেয়েটা কেঁদে ফেলেছিলো যেই
কান্নায় মিশে ছিলো অনেক খুশি আর স্বপ্ন
পূরণের আশা। প্রায় তিনবছরের প্রেমের
সম্পর্কে দুজনে শুধু স্বপ্নই দেখেছি আর এখন
সেসব স্বপ্ন পূরন এর মহা ক্ষণ।
.
এতদিন ভাল একটা চাকরির অপেক্ষায়
ছিলাম আজ তা পেয়ে গেছি। দুজনে আরও
কাছাকাছি হতে, একসাথে সংসার বাঁধতে
আর কোনও দ্বিধা-বাধা নাই। দুজনের
পরিবারেই আমাদের ব্যাপারটা জানাতে
হয়, লাভ ম্যারেজ কে দুই পরিবারের অভিমতে
এরেঞ্জ ম্যারেজ এ রুপান্তরিত করার দরকার।
তাই ছয় নয় করে ছোট বোনের দ্বারা বাবা
মাকে বিয়ের কথা আর ঈশিতার ব্যাপারে
জানালাম। তারা ঈশিতাকে দেখতে
চাইলো, ঈশিতার ফ্যামিলির সাথে কথা
বলতে চাইলো। ওদিকে ঈশিতার
ফ্যামিলিরাও ঈশিতার কথায় এ ব্যাপারে
রাজি হলো। তারা তারাই কনে দেখতে
যাওয়ার একটা ডেট ফিক্সড করলো। সেদিন
রাতে ঈশিতার খুশি দেখে কে! আমাকে
নাকি তার খুব দেখতে ইচ্ছে হয়েছে
কালকেই দেখা করতে হবে। হবু বউয়ের কথা
আবার ভুলি কি করে! তাই রাজি হয়ে
গেলাম।
.
-স্বচ্ছ শোনো, আমি কিন্তু তোমার থেকে
তোমার আব্বু আম্মুর বেশী খেয়াল রাখবো,
তোমার ছোট বোন স্পর্শিয়ার সাথে গল্প
করবো, সবার জন্য নাস্তা বানাবো। তোমার
জন্য অপেক্ষা করে থাকবো তুমি কখন অফিস
থেকে ফিরবে! তারপর তুমি ফ্রেস হবে,
একসাথে খাবো, গল্প করবো একসাথে
ঘুমাবো।
-একসাথে ঘুমাবা শুধু আর কিছু না?
-না আর কিছু না, না আছে আছে ; যেদিন
আকাশে পৃর্নিমার বড় চাঁদ দেখা যাবে
সেদিন আমরা জোৎস্না স্নান করবো।
-বাহ এত শখ!
-হ্যা অনেক শখ, নিজের সংসার স্বামী
নিয়ে একটা মেয়ের অনেক শখ আর স্বপ্ন
থাকে! তুমি এসবের কিছু বুঝবানা...
-আচ্ছা শোনোনা ঈশিতা,
- হ্যা বলো
- আচ্ছা আমাদের বাসর রাত কিভাবে হবে?
- জানিনা,চুপ
এই বলে ঈশিতা লজ্জায় এই যে পিছন ঘুরলো
আর আমার দিকে তাকাচ্ছেইনা, লজ্জায়
তার কান,গাল লাল হয়ে যাচ্ছে দেখছি।
.
আজকে আব্বু আম্মুরা ঈশিতাকে দেখতে
যাবে ঠিক সে সময় কোথা থেকে আমার বকবক
করা পাতি রাজনীতিবিদ মামা আর মামার
বউ হাজির। আমার একমাত্র ভাগ্নের কনে
দেখা আর আমি আসবনা তা কি হয়, মন্ত্রীর
সাথে মিটিং ক্যান্সেল করে দৌড়ে চলে
আসলাম, বাহ! মামার কি ডায়লগ। যথাসময়ে
বেশ কয়েকজন রওনা দিলো আর এদিকে তো
আমি খুশিতে আত্মহারা।
.
কনে দেখে, এইংগেজমেন্ট এর আংটি
পরিয়ে, ডেট ফিক্সড করে তারা চলে
আসলো।
রাতে ঈশিতা ফোন দিলো,
- কি...
- কি... আবার কি?
- বিয়ে কিন্তু হচ্ছেই, প্রিপারেশন নাও ভাল
করে বুঝলা?
- বিয়ের আবার প্রিপারেশন লাগে নাকি,
পাঞ্জাবি পরবো, কবুল বলবো, বাসর রাত
করবো, ব্যস বিয়ে শেষ।
- বাহ! মনে হয় পুরোনো অভিজ্ঞতা
- হ্যা আগের জন্মে তো আমি সাতটা বিয়ে
করেছিলাম।
- ফাযিল,চলোনা কালকে দেখা করি।
- আচ্ছা
.
ঈশিতা আমার বউ, ঈশিতা আমার বউ এই বলে
ঈশিতার কানের কাছে প্যান প্যান করছি।
সে বিরক্তও হচ্ছে, খুশীও হচ্ছে আবার লজ্জাও
পাচ্ছে। আমি তার লজ্জার মাত্রা বাড়িয়ে
দেওয়ার জন্য আবার বাসর রাতের কথা
তুললাম। স্বচ্ছ তুমি পচা, পচা কথা বললে
বিয়ের দিন কিন্তু আমি কবুল বলবনা হুম।
.
বিয়ের শপিং শুরু, নিজের বিয়ে নিজের
পছন্দ অনুযায়ী শপিং করবে তাই আম্মু আর
মামী ঈশিতাকে ডেকে মার্কেটে নিয়ে
গেলো। ব্যস শপিং করতে গিয়ে ঈশিতার
অমায়িক ব্যবহারে আম্মু তো মুগ্ধ! এদিকে
আমিও খুশি।
.
পরেরদিন দুজনে রিকশা ভ্রমণ এ বের হলাম,
ঈশিতা তো গাল ফুলিয়ে আছে। তার
অভিযোগ, তাকে নিজে পছন্দ করে শপিং
করার কথা বলা হয়েছে কিন্তু সব নাকি আম্মু
মামীর পছন্দেই কেনা হয়েছে। বিয়ের দিন
স্টেজে বসার যেভাবে যেভাবে প্লান
করেছিলো সব নাকি খ্যাত কাতান
শাড়িটার জন্য ভেস্তে গেলো। বিয়ের পরে
তার পছন্দ মত শাড়ি কিনে দেওয়ার
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে কিছুটা রাগ কমানো
গেলো সেদিনের মত।
.
মোটামুটি একটা জরুরী কাজে ব্যস্ত ছিলাম
এমন সময় ঈশিতার ফোন তাও আবার বিয়ের
গয়নাগাটি নিয়ে। শাড়ি কেনা হয়েছে
নিজের অপছন্দে তাই এবার নিজের পছন্দমত
গয়না কিনতেই হবে এরকমই একটা ইচ্ছের কথা
জানালো সে। আমি বলছি যে আমি অনেক
বিজি, বাসায় গিয়ে ঠান্ডা মাথায় কথা
বলবো কিন্তু না গয়নার প্যানপ্যান করতেই
আছে। মেজাজটা পুরাই গরম হয়ে গেলো,
বন্ধুসহ এক আধটু ড্রাংক করে বাসায় ফিরলাম।
.
পরদিন দুপুর বেলায় মামা হাজির, কার না
কার কাছ থেকে শুনে এসেছে ঈশিতা
নাকি এইচএসসি র সময় কোন ছেলের সাথে
নাকি পালিয়েছিলো। এই শুনে আব্বু আম্মু
তো নারাজ হয়ে গেলেন, বিয়ে স্থগিত
করার চিন্তা ভাবনা করে ফেললেন। মামার
উপরে মেজাজটা যে এত খারাপ হলো যে
বলাই বাহুল্য। আমি একটা মানুষকে দুই
তিনমিনিটে চিনতে পারি আর আমার
ভাগ্নে দুই তিন বছরেও একটা মানুষকে
চিনতে পারলোনা, বাহ! মামার কি ডায়লগ।
.
বিকেলে ঈশিতার সাথে রেস্টুরেন্ট এ বসে
আছি, এ নিয়ে কথা তুলেই ফেললাম। রাগ
করে এইংগেজমেন্ট এর আংটিটা ফেলে
রেখে গেলো। পরে তো দুই ফ্যামিলির মধ্যে
তুমুল কথাকাটাকাটি যার ফলস্বরুপ আমাদের
বিয়ে ইম্পসিবল।
.
একটু রাগ উঠলেও ঈশিতার কথা ভেবে বুকের
ভেতরটা খাঁ খাঁ করে উঠলো। পৃথিবী
আমাদের পৃথক করার দুষ্ট প্লান করছে এই ভেবে।
জানিনা কোন অজানা ব্যথায় হু হু করে
কেঁদে উঠলাম। কোনও গুণীজন বলেছিলো,
প্রেমের ক্ষেত্রে যখন ছেলে বুঝে তখন
মেয়ে বুঝেনা, আর যখন মেয়ে বুঝে তখন
ছেলে বুঝেনা আবার যখন ছেলে মেয়ে উভয়ই
বুঝে তখন পৃথিবীই বুঝেনা; কথাটা সত্যিই
ঠিক। ঈশিতাকে ফোন দিলাম, ওপাশ থেকে
শুধু কান্নার আওয়াজ আসছে। ঈশিতা বলছে,
স্বচ্ছ প্লিজ আমাকে নিয়ে যাও, অনেক দূরে
কোথাও নিয়ে যাও।
.
এরপর আর কি! বাসায় ছোট্ট একটা চিঠি
রেখে ঈশিতাকে নিয়ে নিজেদের
পরিবার পরিজন ছেড়ে অনেক দূরে চলে
আসলাম এক বন্ধুর বাসায়। বন্ধু আর বন্ধুর বউ এর
সহযোগীতায় বিয়েটা সেরে ফেললাম।
.
বাসর রাতটা বন্ধুর বাসায় হলে কি হবে, সে
রাতের মত আর দ্বিতীয় কোনও রাত এ জীবনে
আসবে কিনা জানিনা। সেখানে তিনদিন
থেকে অন্য একজায়গায় ছোট্ট একটা বাসা
ভাড়া নিলাম, মোটামুটি ভালই বাসাটা।
.
আজ চারদিন হলো এ বাসায় উঠেছি, সকাল
বেলায় ঘুম ভাঙ্গা সত্বেও ঘুমের অভিনয় করে
ঈশিতার কাজ করা দেখছি। ঘর গোছাচ্ছে
আর দুই মিনিট পর পর ডাকছে, এই ওঠো আজকে
না তোমার ইন্টার্ভিউ আছে, এই ওঠোনা।
.
ঈশিতা কিচেনে গিয়ে রুটি বানাতে
ধরলো, আমি উঠে কিচেনের দরজায়
দাঁড়িয়ে তাকে দেখছি। হাতে ময়দা,
কপালে ময়দা, শাড়িতে ময়দা; ইস একদম
পার্ফেক্ট বউ আমার। আবার ডাকতে যাবে, এই
ওঠো এত ঘুমায় নাকি কেউ? ঠিক তখুনি দেখে
যে আমি দরজায় দাঁড়িয়ে।
- বাব্বাহ আজকে মনে হয় একটু তাড়াতাড়িই
উঠলে?
- হুম। ওগো তোমারি মধুর ডাকে; শুধু দেহ নয়
হৃদয়ের প্রেমও ওঠে জেগে, তাড়াতাড়ি
নাস্তা দাও; নইলে কিন্তু যাব আমি রেগে।
- হইছে থাক। এই শোনোনা
- বলোনা
- ওই কবিতাটা বলোনা
- কোন কবিতাটা?
- ওই যে ওইটা, বাসর রাতে যেটা বলেছিলে
- খালি পেটে আমার কবিতা আসেনা
- উহু, বললে কি সমস্যা, বলোনা প্লিজ
- আচ্ছা বলবো, কিন্তু আগে খেতে দাও
- একটু লেট হবে যে
- কিসের আবার লেট? এতো কয়েক মিলি
সেকেন্ড এর ব্যাপার! কাছে আসো
.
কাছে আসলো, আমি আলতো করে ঈশিতার
কপালে একটা চুমু খেয়ে বলতে শুরু করলাম-
" ওগো, আজ নিশীথে দুজন মিলে এসো করি
শপথ, একসাথে চলবো মোরা জীবনের
বাকিটুকু পথ।
হৃদয়ের গভীর থেকে ভালবাসবো দুজন দুজনায়,
সাধ্যমত সুখ দেব নেব; যা দেখেছি শুধু
কল্পনায়।
খুশীর সময় খুশী হবো; ব্যথায় দেব আশ্বাস,
প্রেম দিয়ে আগলে রবো কেটে যাবে
ত্রাস।
একে অপরের আয়না হয়ে দেখবো প্রতিচ্ছবি,
খুঁজে দিয়ে;শুধরে দিয়ে; মাফ করবো ভুল-চুক
সবি।
.
কবিতা শেষ করার সাথে সাথেই বলে
উঠলাম, উহু আবার খিদা লেগে গেলো,
আরো কাছে আসো।
ঈশিতার মুখে আস্তে করে শুধু শুনতে পেলাম
"যাও ফাযিল একটা"
.
লিখাঃ আমিম এহসান...
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ⧍⧧ āĻĢেāĻŦ্āϰুāϝ়াāϰী, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž
4701
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§:⧍ā§Ģ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ