#ভাড়াটে_গার্লফেন্ড
।
পর্বঃ সপ্তম (৭ম)
।
।
।
মাহির বাসার কাছে যেতে প্রায় ৩০-৪০ মিনিট লাগবে ।
আর এদিকে তাড়াতাড়ি সেই বাসায় যেতে হবে । মাথাটা কেমন জানি করছে । তবুও মামনির জন্য বাধ্য হয়ে কাজটা করতে হচ্চে । সে তো আমার গার্লফেন্ড না কিন্তুু মামনিকে বলতে পারছিনা ।
তাই মাঝ পথে এসে মাহিকে কল দিলাম ।
একবার রিং বেজে কেটে গেলো কিন্তুু ধরলোনা । আবার ফোন দিলাম । কিন্তুু ফোন বেজে কেটে যায় । হয়তো ফোন রেখে কোথায় গেছে । আর এই বিকেলে তো ছাঁদে ছাড়া কোথায় যায় না মনে হয় । আমি তো তাদের ছাঁদে যেতে পারবোনা কারণ আমি তো কোন ফেন্ড ও না কিংবা বয়ফেন্ড ও না । দুইবার ফোন দেওয়ার পর আর ফোন দিলাম না ।
আর কিছুখন যাওয়ার পর ফোনটা বেজে উঠলো । তাকিয়ে দেখি মাহি ফোন দিয়েছে । ফোনটা হাতে নিয়ে রিসিভ করে হ্যালো বলতে যাবো তখন মাহি বললো ,
---ফোন করেছেন কেনো ।
---একটা কথা বলার ছিলো ।
---বলেন । আর শোনেন সে বিষয়ে কথা বলতে পারবোনা কিন্তুু এখনো পুরোপুরি ডিসিশনস নিতে পারিনি ।
---আসলে সে কথা না ।
---তাহলে কোন কথা ।
---আমি আপনাদের বাসায় আসছি ।
---হয়াট ।
---না মানে আমি খুব বিপদে পরেছি ।
---তা আমাদের বাসায় কেনো ।
---মানে মামনি বলেছিলো আপনাকে নিয়ে তার বান্ধুবীর বাসায় যাবে দাওয়াত খেতে ।
---কিহ্ আমাকে কেনো ।
---মামনি মনে করেছিলো ।
---আজ যে আব্বু বাসায় আছে ।
---প্লিজ ম্যানেজ করেন আপনার আব্বুকে ।
---দেখি চেষ্টা করে ।
---ধন্যবাদ ।
---ধন্যবাদ দেওয়ার চাইতে আপনি...
---আমি চাইনা আমার লাইফে অন্য একজন চলে আসুক ।
---কেনো ।
---সেটা না জানলে হবে আপনার ।
---সেটা আপনার ইচ্ছা ।
---যেটা বললাম সেটা চেষ্টা করেন ।
---ওকে ।
.
বলেই ফোনটা কেটে দিলাম । হু মেয়েটা খুব ভালো । কথাগুলি সুন্দর করে বলে ।
কেমন জানি মেয়েটি আমার কাছে ভালো লাগে । কিন্তুু মিষ্টিকে যে ভালোবাসি তাই সেই ভালো লাগা কে আমি স্থায় দেই না বরং সেটাকে পাশকেটে চলতে চাই ।
.
কিছুখন পথ অতিক্রম করে আবার ফোন দিলাম ।
কিন্তুু ফোনটা ধরলোনা বরং কেটে দিলো । তাই আর কল দিলাম না ।
কিছুখন পর ম্যাসেজ আসে দেখি মাহি দিছে ।
তারপর ম্যাসেজ দেখি লিখেছে ,
আব্বুর সাথে কথা বলছি একটু পরে আপনাকে বলছি ।
.
আমি আর কল দিলাম না । আর মাত্র ১৫ মিনিট তাই তাদের বাসার সামনে চলে আসবো ।
.
ঠিক ১০ মিনিট পর মাহি ফোন দিলো ।
---হ্যালো ।
---রাজি হয়েছে । কিন্তুু ।
---কিন্তুু কি ।
---আপনাকে আমার আব্বুর সাথে কথা বলতে হবে ।
---আমি তো.. আচ্ছা আমি তো আপনার বয়ফেন্ড না কি বলবো আমি আপনার আব্বুকে ।
---তা ছাড়া আমাকে যেতে দিবেনা ।
.
এখন কি করা যায় ।
---কিছু ভাবছেন ।
---না মানে কি বলবো আপনার আব্বুকে ।
---কিছু না ।
---তাহলে যে ।
---আব্বু জানে ।
.
সে কি বলেছে নাকি আমি তার কিছু হই ।
---কিছু বলেছেন আপনার আব্বুকে ।
---হু ।
---আচ্ছা কি বলেছেন ।
---ফেন্ড ।
---ও আচ্ছা তাড়াতাড়ি রেডি হন আমি আপনাদের বাসার কাছাকাছি আছি ।
---জ্বী ।
.
কি মুসকিলে পরলাম রে বাবা । কি বলবে উনি আর আমি কি বলবো । কি সব হতে যাচ্ছে । পাগল হয়ে গেছি আমি কিছুই ঠিক মতো করতে পারিনা ।
কয়েক মিনিট পর মাহিদের বাসার সামনে পৌঁছেগেলাম । গাড়িটা তাদের গেটের সামনে থামালাম । বাসার ভেতর যেতে ভয় করছে কি বলবো তাকে সে কি বলবে নিজে জানিনা ।
.
পাঁচ মিনিট বসে রইলাম গাড়ির ভেতর ।
ভাবতেছি ভিতরে যাবো কি যাবো না । কিছুই ভালো লাগছেনা কি করা যায় ।
আরও কিছু সময় বসে রইলাম ।
তারপর হর্ণ দিলাম । কিন্তু তাতে কিছুই হলো না ।
আর এক বার হর্ণ দিবো তখন দেখি মাহির ফোন আসলো ।
---ভিতরে আসেন ।
---না আসলে চলে না । মানে ভিতরে না গেলে হয়না ।
---আব্বুর সাথে দেখা না করলে হবেনা ।
---আচ্ছা আসছি কিন্তুু আমি কিছু বলতে পারবোনার।
---আচ্ছা ।
---আপনার রেডি হয়েছেন ।
---হ্যা আর একটু ।
---তাড়াতাড়ি ভের হন ।
.
ফোন কাটতে না কাটতে মামনির ফোন ।
---হ্যালো মামনি ।
---আরে কত বাজে দেখেছিস ।
---না মানে ওর জন্য ধেরি হচ্ছে ।
---তাড়াতাড়ি আয় ।
---আধ ঘন্টার মধ্যে আসছি মামনি ।
.
মামনি ফোনটা কেটে দিলো ।
আমি গাড়ি থেকে নেমে বাসার ভেতর চলে গেলাম । মনের ভেতর একটা খটক্কা লাগছে কি বলবো মাহির আব্বুকে ভাবতে খেলাম একটা ধাক্কা ।
ইস্ কপালটা পচন্ড ব্যথা পেলাম ।
ধিরে পায়ে রুমের ভেতর ঢুকে গেলাম ।
ঢুকে ভয় খেলাম কারণ বয়স্ক লোকটাকে পেপার পড়ছে বসে ।
দাড়িয়ে গেলাম দরজার কাছে ।
লোকটা আমার উপস্থিতি বুজতে পেরে পেপার থেকে চোখ সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
আমি আর তার দিকে তাকালাম না । আর চোখে তাকিয়ে দেখি লোকটি আমাকে ভালো করে দেখে নিচ্ছে ।
আমি সেখানে দাড়িয়ে আছি একটু এদিক ওদিক তাকালাম । কোথাও কাউকে দেখতে পাচ্ছিনা ।
তারপর আবার তার দিকে তাকাতে বলে উঠলো ,
---এই ছেলে এদিকে আসো ।
.
কথাটা শুনে দৌড় দিবো কি দিবোনা ভাবতেছি । একবার মনে হলো দৌড় দিয়ে ভার হয়ে যাই আবার মনে হলো যখন এখানে এসেছি তার কাছে গিয়ে দেখি কি বলে ।
---এই ছেলে দাড়িয়ে কেনো এখানে আসো ।
---জ্বী আঙ্কেল ।
.
আমি তার কাছে চলে গেলাম ।
লোকটা আরও ভালো করে দেখে নিচ্ছে ভালো করে । আমার তো ভয় করছে সে কি মেয়ে দেখতে আসছে নাকি ।
---তোমার নাম কি ।
---মাহিম ।
---ফুলনাম ।
---তারিকুল ইসলাম মাহিম ।
---কি করো ।
---আব্বুর অফিসে দেখাশোনা করি ।
---বাসায় কে কে আছে ।
---মামনি আব্বু আর আমি ।
---দাদা দাদি চাচা চাচি কোথায় থাকে ।
---গ্রামে দাদুর বাসায় ।
।
আর কিছু বললেন না!
ঘড়ির দিকে তাকালাম দেখি আধ ঘন্টা পার হয়ে গেছে ।
---দাড়িয়ে কেনো বসো ।
---ঠিক আছে আঙ্কেল ।
---আরে দাড়িয়ে আছো এখনো মাহির রেডি হতে ১০ মিনিট ।
.
কথাটা শুনে গলা শুকিয়ে গেছে । এদিক ওদিক তাকিয়ে পানি খুঁজতে লাগলাম । তখন আঙ্কেলটি আমার এরকম দেখে পানির গ্লাসটি এগিয়ে দিলো । আমার এই একটা সমস্যা কোন একটা কাজ যদি ঠিক মতো না করতে পারি তাহলে আমার এই সমস্যা হয় ।
কিছুখন বসে রইলাম ফোন ভের করে টেপাটেপি করতে পারছিনা যদি বেয়াদব ভাবে । কারন এই শিক্ষাটা আমার মামনি দিয়েছে কোন বড় মানুষের সামনে কোন দরকার ছাড়া ফোন টেপাটিপি করতে নেই । তাই নিচের দিকে তাকিয়ে আছি ।
কিরকম লাগে মেজাজ ৪০০০+ বোল্টের মতো হচ্ছে কিন্তু কিছু করার নেই কারণ এটা নিজের জন্য আর সে তো নিজের গার্লফেন্ড না যে কিছু বলবো ।
আর কিছুখন বসে থেকে আর ধয্য দরতে পারলাম না । তাই ফোনটা ভের করে কল দিবো তখনি দেখি মাহি হাজির ।
আমিতো দেখে অবাক এটা কি মাহি নাকি অন্য কেউ । ঠিক চেনা যাচ্ছেনা ২ দিন ধরে যতটুক চিনি সেটুকু দিয়ে উপলব্দি করতে পারছি ।
.
সুন্দর একটা থ্রি পিস পড়েছে । সাথে ম্যাসিং করে ওরনা আছে সাথে । চুল গুলি খোলা রেখেছে ।
হালকা মেকআপ করেছে । চোখে কাজল নিয়েছে । ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপিস্টিক নিয়েছে । কানে দূল পরেছে । সাথে জুতোটা ম্যাসিং করা ।
ঠিক মিষ্টি যেভাবে সাঁজগোজ করে দেখা করতো ।
চোখের সামনে এরকম দেখে চোখটা জাঁপসে এলো ।
.
আমি মাহিকে দেখে তাকিয়ে আছি সামনে মাহির আব্বু আছে সেদিকে কোনো লক্ষ নেই আমার।।
আমার এরকম দেখে মাহি বললো ,
---আব্বু ।
.
আমি মাহির কথা শুনে মাহির দিক থেকে নিচের দিকে তাকালাম ।
মাহির আব্বু পেপারটা রেখে বললো ।
---আচ্ছা ঠিক আছে মা যা একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরিস ।
---ঠিক আছে আব্বু ।
আমার দদিকে ততাকিয়ে মাহি বললো ,
---কি হলো বসে আছো যে ।
---ওহ্ চলেন ।
---দেখে যাস তোরা ।
.
আমি আর ধেরি না করে বাসায় থেকে ভের হলাম।।
সিঁড়ি দিয়ে নেমে গাড়ির কাছে চলে এলাম । কিন্তু মাহি আসছেনা আর তাড়াতাড়ি আসবে কেমনে যে জিতো পরেছে ।
.
গাড়িতে উঠেন তাড়াতাড়ি ।
.
গাড়িতে উঠে তার দিকে উঠে একবার তার দিকে তাকালাম । দেখি কিছু একটা ভাবতেছে ।
আমি আর কিছু বললাম না ।
প্রায় বাসার কাছাকাছি এসেছি ।
একটা কথা বলতে মন খচ্ খচ্ করছে কিন্তু বলতে পারছিনা । কিন্তুু আমার সহ্য হচ্ছে তাই বলে ফেল্লাম ,
---টিপটা কপাল থেকে সরিয়ে ফেলুন ।
.
কথাটা শোনার পরে আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার সামনের দিকে তাকিয়ে বললো ,
---কেনো ভালো লাগছেনা আমাকে ।
---তা না আসলে প্লিজ খুলে ফেলুন ।
---তাহলে কেন ।
---জানিনা ।
---বাহ্ কি কথা নিজে বলে আবার নিজে বলে জানি না । আমি সরাতে পারবোনা ।
.
আমি আর কিছু বললাম না । সামনের দিকে তাককিয়ে গাড়ি চালাতে লাগলাম ।
.
এখন নেমে বাসায় আসেন মামনির সাথে সেই বাড়ি যেতে হবে ।
।
বাসায় যেতে না যেতে মামনি বলে উঠলো ,
---এতো ধেরি হলো বত বাজে সেটা লক্ষ করেছিস ।
---আসলে মামনি...
---যা তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নি ।
---জ্বী ।
.
---আর তুমি এ কি ড্রেস পরেছো হ্যা ।
---কেনো আন্টি এটা কি কোন সমস্যা ।
---হ্যা তোমাকে শাড়ি পরতে হবে তো ।
---আসলে আমি শাড়ি পরতে পারি না তাই ।
---কি বলছো বাঙ্গালী মেয়ে হয়ে এটা কোন কথা বললে । আসো আমার সাথে আমার রুমে ।
---না মানে এটা পরে গেলে হয়না ।
---এটা ভালো দেখাচ্ছেনা আসোতো আমার সাথে ।
.
অতঃপর
.
সফায় বসে ফোন ভের কিছু কাজ করছি ।
এর মধ্যে মামনি আর মাহি দেখি আসছে ।
তাকাতে আবার টাস্কি খাইলাম আমার পছন্দের নিল কালারের শাড়ি পরেছে ।
কাছে এলো মামনি আর মাহি তখন কি যেন পরেনি কিন্তু এখন সেটা পরেছে ।
ওহ্ গলায় হাড় পরেনি তখন ।
---কি রে মাহিম তুই এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো চোখ লেগে যাবে তো ।
.
একটু লজ্জা পেলাম দুজন।।
---আর লজ্জা পেতে হবেনা চল তোর আব্বু গাড়ি পাঠিয়ে দিছে ।
---চলেন ।
---এভাবে আর তাকাবিনা তাহলে কিন্তু সত্যি সত্যি চোখ লেগে যাবে হাহাহাহাহা ।
---হাহাহাহাহা
.
তিন জন এক সাথে হেসে উঠলাম ।
.
এখন গাড়ির ভেতর বসে আছি যাচ্ছি ।
আমি সামনে বসে আছি ড্রাইবারের কাছে আর পিছনে মামনি আর মাহি বসে আছে ।
।
অতঃপর
।
চলে এলাম মামনির বান্ধুবীর বাসায় । এটা বিয়ে বাড়ি বুঝতে বাকি নাই আন্টির মেয়ের বিয়ে আজ । এ বাসায় মনে হয় একদিন এসেছিলাম তাও আবার মিষ্টিকে নিয়ে মামনির সাথে । আমাকে তো অনেক মানুষ চেনে । আজ যদি এই মেয়েটার সাথে দেখে তাহলে তো আমাকে কি মনে করবে । না আমি যাবোনা ভিতরে ।
মামনির কথায় চুমকে উঠলাম ,
---কি রে গাড়ির ভেতর কি করিস মাহিকে সাথে নিয়ে আমার সাথে আয় ।
.
আমি পিছনে ঘুরে মামনির দিকে তাকালাম । মামনি তাকিয়ে আছে । আমি কি বলবো আমি যে পারবোনা তার সাথে ভেতরে যেতে ।
আমার এরকম মুখ দেখে মামনি বললো ।
---He's a friend of mind . No problem . ( সে আমার বন্ধু। কোন সমস্যা নেই )
---What do you advice me to do . ( আপনি আমাকে কি করার জন্য বলছেন )
---Let by gones be by gones . ( অতীতের জন্য শোক করো না ) যে চলে গেছে তার স্মৃতি মনে না করে নিজেকে পাল্টিয়ে সবার সাথে মানিয়ে নাও এতে সুখে থাকবে ।
---মামনি...
---আশা করি বুজতে পারছো । আর শোন তুমি যেটা নিয়ে চিন্তিত সেটা আমি আগে বলে রেখেছি ।
---Could I ask you a question ? ( আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি )
---Oh Sure .
---If you were me what would yo do . ( আপনি যদি আমার যায়গায় হতেন তাহলে কি করতেন ) আপনি কি ভুলে যেতে পারতেন ।
---Oh Sure. It's only something small . ( এটা খুবই সামান্য একটি জিনিস ) তুমি হয় তো জানো মানুষ সব পারে তুমিও পারবে ।
---Mamoni I'm afraid i can't . ( মামনি আমি মনে হয় আমি পারবোনা )
---for as a know . I am sure forget bygone your life . ( আমি যতটুক জানি । আমি জানি তুমি পারবে অতীতের জীবন ভুলে যেতে )
---Why do you need it . ( আপনি এটা কি জন্য চান )
---Good for you . ( তোমার ভালোর জন্য )
---What do you advice me to do . ( আপনি আমাকে কি করার জন্য বলছেন )
---Take my advice . Follow my advice . Tel by gones be bygones . Expect Obey your parents . ( আমার কথা শুনো । আমার কথা মতো চল । আশা করি আমার কথা রাখবে )
---Okay my life your advice Try do .
---তাহলে মাহির হাত ধরে নামিয়ে আমার সাথে সাথে আসো ।
---হুমমম ।
.
আমি মাহির দিকে তাকালাম । দেখি আমাদের কথাগুলি শুনছিলো । কোন কিছু বলছেনা ।
.
আমি গাড়ি থেকে নেমে মাহিকে হাত ধরে নামিয়ে মামনির পিঁছনে পিঁছনে যাচ্ছি ।
এই আবার অনেক দিন পর কারও হাত ধরলাম ।
.
সবাই তাকিয়ে আছে । কিছু করার নেই মামনির আদেশ । কেন যেন মনে হচ্ছে এটা মনে হয় মিষ্টির হাত ধরেছি ।
বুজতে পারলাম সবাই বলাবলি করছে আমাদের দেখে । কেউ বলছে স্বামী-স্ত্রী কেউ বলছে ক্যাপল ।
আমি মাহির দিকে তাকালাম দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে । মুখটা হাসিতে ভরা হয়তো সে কিছু ভাবছে আমাকে নিয়ে ।
।
রুমের ভেতরে ঢুকতে আন্টি এসে বললো ,
---তোর আসার সময় হলো আসতে বললাম বিকেলের দিকে কিন্তু আসলি রাতে ।
---না মানে অনেক কাজ আছে না ।
---হু জানি ম্যাডাম তা মাহিমের পাশে কে ওটা ।
---কে আবার আমার পুত্রবধূ ।
---মানে মাহিম বিয়ে করেছে ।
---না কিন্তুু করবে ।
.
কথাটা শুনে মাহি আমার দিকে তাকালো ।
আপনার মামনি কি বলছে হয়তে এটা বোঝাতে চাচ্ছে ।
মাহির দিকে এগিয়ে এসে আন্টি বললো ,
---তোমার নাম কি মা ।
---মাহি ।
---বাহ্ সুন্দর নামতো । কি করো মা ।
---মেডিকেলে....
.
বলতে না বললতে আন্টিকে ডাক দিলো একটা ভদ্রলোক ।
তখন আন্টি বললো ।
---যা তোরা গিয়ে ফ্রেস হয়েনি ।
.
আমি মামনি আর মাহি আন্টির পাশের রুমে চলে গেলাম ।
।
ফ্রেস হয়ে রুমে এলাম ।
তখন আন্টি খাবার নিয়ে আসলো ।
তারপর খেতে দিলো । আর বললো বিকেলে এক সাথে খাবি কিন্তুু না আসলি না এখন খা একা একা ।
আরও অনেক কথা হলো ।
।
আমি শুয়ে পরেছি তখন মামনি বললো ,
---আমি মাহিকে নিয়ে যাচ্ছি কন্যা দেখতে ।
---আচ্ছা যান ।
.
মামনি মাহিকে নিয়ে চলে গেলো ।
আমি একা শুয়ে আছি । বিয়েতে অনেক আত্মীয় সজন এসেছে কিন্তু আমি তাদের কাউকে চিনি না তাই কোথাো যাচ্ছি না ।
তাই ভালো লাগছেনা । বিছানায় থেকে উঠে ছাঁদের দিকে গেলাম ।
।
ছাঁদে গিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেল্লাম কেউ নেই । সুন্দর সুন্দর বাতি জ্বলছে দেখতে খুবই ভালো লাগছে । বিয়ে বাড়িতে ছাঁদে কেউ নেই এটা কেমন জানি দেখাচ্ছে ।
মনের ভেতর একটা ভয় কাজ করছে ভুতের জন্য তো না ।
সব ভয়কে জয় করে ছাঁদের এক কোণে গিয়ে দাড়ালাম ।
কিছুখন দাড়িয়ে থেকে আর ভালো লাগছেনা ।
।
একটুপর ফোনটা বেজে উঠে ।
ফোনটা ভের করে দেখি সেই নাম্বার থেকে কল ।
বুঝতে পারলাম না এখন এই নাম্বার থেকে কল কেন ।
কিছু হয়নি তো তার ।
।
।
।
চলবে পরবর্তী পর্বে ।।।
।
।
।
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ।।।
।
।
।
লেখকঃ নাসির ইসলাম মাহিম ( মাহাদীর আব্বু )
#ভাড়াটে_গার্লফেন্ড
।
পর্বঃ অষ্টম ( ৮ম )
।
।
।
ফোনের দিকে তাকিয়ে আছি । দীর্ঘ ২টি বছর পর মোবাইলের স্কিনে সেই চিরচেনা নাম্বারটা ভেসে আসছে । ভাবতে চোখ ২টি ঝাপসা হয়ে এলো । মিষ্টির নাম্বার আর এতো রাতে ফোন বুঝতে পারছিনা । অনেক কিছু ভাবতে ভাবত ফোনটা বেজে কেটে গেলো ।
আমি তখন তাড়াতাড়ি করে ফোন ব্র্যাক করলাম কিন্তু কম্পিউটার থেকে বলে উঠলো নাম্বারটা এখন ব্যাস্ত আছে দা নাম্বার ইস্ বিজি নাও ।
ফোনটা কেটে আবার ফোন দিলাম । কিন্তুু বরাবরের মতো আবার সে কথা বলে উঠছে কম্পিউটার থেকে ।
হয়তো দুজনে একি সাথে ট্রাই করাতে মনে হচ্ছে এই কথা বলছে কম্পিউটার থেকে ।
আমি আর ফোন দিলাম না ।
মনের ভেতর কেমন জানি করছে । ভড্ড ভয় করছে কিছু হয়েছে নাকি মিষ্টির । নাহ্ না এটা হতে পারেনা । এ আমি কি ভাবছি না না এ কখনো হতে পারেনা ।
।
আবার ঘড়ির দিকে তাকালাম দেখি ৯ঃ০৫ বাজে ।
আবার ফোন দিলাম রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ ধরছেনা ।
কেটে গেলো ফোনটা । ফোনের স্কিনের দিকে তাকালাম No Answer লেখা উঠলো ।
আবার ফোন দিলাম । ফোনে বেজে চলছে ধরছেনা কেনো । আবারও সেই একি লেখা ।
আরও মনের ভেতর ভয় করছে শুধু বারেবারে মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে মিষ্টির ।
আবার ফোন দিলাম মিষ্টির ফোনে ।
কিছুখন বেজে ফোনটা রিসিভ করলো ,
---হ্যালো মিষ্টি ।
---হ্যা বলো ।
---কিছু কি হয়েছে তোমার ।
---নাহ্ কেনো । আর তুমি এতো ঘাব্রে গেছো কেনো মনে হচ্ছে কোন টেনশনের মাঝে আছো ।
---এমনি আর সত্যি করে বলো কিছু কি হয়েছে তোমার ফোন ধরছিলেনা কেনো তখন ।
---আরে কিছু হয়নি আব্বু পাশে ছিলো তখন । আচ্ছা বলো তুমি এখন কোথায় বলো ।
---বিয়ে বাড়ি কেনো ।
---এমনি । তা কার বিয়ে ।
---মামনির এক বান্ধুবীর মেয়ের বিয়ে ।
---ও ।
---সত্যি করে বলো সত্যি কিছু হয়নি তোমার ।
---আরে সত্যি বলছি কিছু হয়নি ।
---ও ।
---এখনো আমাকে আগের মতো ভালোবাসো ।
---ভালোবাসি কি তা জানি না কিন্তু তোমাকে ছাড়া কাউকে ভাবতে পারিনা ।
---(নিশ্চুপ)
---আচ্ছা বাদ দাও সেসব কথা বলো তখন কেন ফোন দিয়েছিলে ।
---না মানে বলতে চাইছিলাম যে ।
---কি বলো ।
---আসলে আজ আব্বু আমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু আজ যাই নি তাই কাল যেতে হচ্ছে তাই আর কাল দেখা করতে পারবোনা ।
.
কথাটা শুনে বুকের ভেতর কেমন যেন করে উঠলো ।
আসলে আমার কপালটা খারাপ কাউকে আপন করে পেতে চাইলাম কিন্তু পেলাম না । আবার সেই মানুষটার সাথে দেখা করতে চাইলাম কিন্তু সেটাও হলো না ।
মিষ্টির কথায় আবার বাস্তবে ফিরলাম ,
---কি হলো কথা বলছোনা কেনো ।
---না মানে বলতে চাইছিলাম যে ।
---অন্য একদিন দেখা করতে পারো ।
---সেটা কবে কখন ।
---দেখি সেখান থেকে কবে আসি আর সেখান থেকে এসে ফোনে বলে দিবো ।
---কবে সেটা বলা যাবেনা ।
---তা বলতে পারবোনা কিন্তুু যত তাড়াতাড়ি পারি দেখা করবো আবার আমাকে ফিরে যেতে হবে ।
---ও আবার চলে যাবে ।
---হ্যা আর যেতে হবেনা বলো । আমি যে এখন অন্য জনের স্ত্রী । হয়তো নিজের ইচ্ছে মতো কিছু করতে পারবোনা তাই সে যা বলবে তাই করতে হবে ।
---ও ।
---কথা বলছোনা কেনো ।
---কি বলবো আমি ।
---এই ফোনটা রেখে দাও আব্বু আসছে আর শুনো আমি ফোন না দেওয়া পর্যন্ত আমাকে যেন আর ফোন দাও না । ভালো থেকো ।
---হ্যালো..... হ্যালো ।
.
ফোনটা কেটে দিলো । খুব ভয় পাই মিষ্টি তার আব্বুকে দেখে হার্টের রোগী বলে । যদি কিছু হয়ে যায় সেই ভয়ে । আর হার্টের রোগীকে সবাই ভয় পাই । আর সেজন্য মিষ্টি তার আব্বুর কথা মতো বিয়েটা করেছে ইচ্ছে না থাকা সত্যে ।
।
পিঁছনে কারও কথায় চুমকে উঠলাম ।
---আপনি এখানে আর আমি আর মামনি সাড়া বাড়ি খুঁজে হয়রান ।
.
কথাটা শুনে পিঁছনের দিকে তাকালাম দেখি মাহি ।
আমি কি বলবো এখন এদিকে মিষ্টির কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো ।
---কি হলো কিছু বলছেন না যে আর আপনার চোখে পানি কেনো ।
.
কথাটা শোনা মাত্র চোখের পানি মুঁছে ফেললাম ।
---না মানে চোখের ভেতর একটা পোকা ঢুকে গিয়েছিলো সেটা ভের করতে গিয়ে চোখে পানি এসে গেছে ।
---আচ্ছা আপনি এতো কথা লুকান কেনো ।
---কই নাতো আর কেন লুকাবো ।
---মিথ্যা বলার যায়গা পেলেন না ।
---না মানে সত্যি বলতে কি ।
---আন্টি তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে ।
---আচ্ছা সেটা কি ভেবেছেন ।
---হুমমম কিন্তুু ।
---কিন্তুু কি ।
---বেশি দিন #ভারাটে_গার্লফেন্ড এর অভিনয় করতে পারবোনা ।
---৪ মাস হলে হবে ।
---৪ মাস ।
---কেনো কোন সমস্যা ।
---হ্যা ।
---কি সমস্যা ।
---আমার সামনে ফাইনাল পরীক্ষা তাই এতো দিন আমার পক্ষে সম্ভব না ।
---কেনো সম্ভব না ।
---কারণ ৫ মাস পরে আমার পরীক্ষা তাই ।
---আপনার ১ মাস তো পাবেন পরে ।
---আমার জন্য ১ মাস সম্ভব না ।
---প্লিজ একটু ভেবে দেখুন ।
---আমি ভেবে দেখে পারবোনা ।
---প্লিজ ।
.
আমার কথাটা শুনে কি যেন ভাবতেছে ।
আমার তো আরও টেনশন হচ্ছে । তাকে যেভাবে হোক রাজি করাতে হবে ।
তাই আমি আগে বললাম ,
---বিনিময়ে যা চান তাই দেবো ।
.
সুন্দর আলো ছাঁদে । অনেক গুলি লাইট থাকাতে আলোতে মাহিকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ।
আমার কথাটা শুনে মাহি আমার চোখের দিকে তাকালো তারপর কি যেন ভেবে মনে মনে কি যেন বললো ।
আমি তার উত্তরের অপেক্ষায় আছি ।
তারপর কি যেন আরও ভেবে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো ,
---আমি যা চাইবো তাই দিবেন তো ।
---হ্যা তাই দিবো বলো । যদি আমার সম্ভব হয় ।
---ভেবে বলছেন তো পরে কিন্তুু বলতে পারবেন না যে এটা ছাড়া তুমি যা চাও সব দিয়ে দিবো ।
---ঠিক আছে তুমি যা চাইবে তাই দিবো ।
---আচ্ছা আমি রাজি কিন্তু ৪ মাসের বেশি না ।
---আচ্ছা ঠিক আছে ৪ মাস ।
---ওকে ডান ।
---বলো কি চাই তোমার ।
---এখন না যখন চাওয়ার তখন চাইবো ।
---আচ্ছা ঠিক আছে ।
---এখন চলেন আপনার আম্মা আর আন্টি অনেক খুঁজতেছে ।
---আচ্ছা চলেন ।
.
মাহি আর আমি দুজনে ছাঁদে থেকে চলে আসলাম নিচে ।
.
নিচে এসে মামনির কথা শুরু হলো আর আন্টি আমাকে অনেক খুঁজছে ।
মামনি বলে যাচ্ছে কোথায় ছিলি হু জানিস না এখন মেয়েকে নিয়ে যাবে । এখন তাড়াতাড়ি চল মেয়েকে এগিয়ে দিবি ।
.
আমি আন্টিকে খুঁজতেছি কারণ তার এক মাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা অনেক ভালোবাসে তাকে কখনো একা থাকতে দেয় নি । তার জন্য কখনো কোথায় গিয়ে থাকেন নাই ।
অনেক অনেক কথা যা বলে শেষ করা যাবেনা । কারণ এসব কিছু মামনি আমাকে বলে মাঝে মাঝে আমি এগুলি শুনি ।
তাই তাকে খুঁজতেছি সে অনেক শোক পাবে হয়তো সান্তোনা দিতে পারবোনা কিন্তু চেষ্টা করতে পারি ।
তাই তার রুমের দিকে গেলাম মামনি আর মাহি আমার পিঁছু আসছে ।
.
আমি গিয়ে দেখি ফ্লোরে বসে কেঁদে যাচ্ছে । আমি গিয়ে আন্টিকে বললাম আপনি এখানে আর ওদিকে সবাই খুঁজতেছে আপনাকে । আমি কথাটা বলার সাথে আন্টি আমাকে জরিয়ে ধরে আরও জোরে কেঁদে উঠলো আমি কি বলে সান্তনা দিবো আমার ভাষা নেই।।
আমার পাশে মামনি এসে অনেক কিছু বুজিয়ে নিয়ে গেলো ।
চোখের কোণে পানি এসে গেছে । হয়তো সবাই জানে প্রিয় মানুষটি যদি কাছে থেকে চলে যায় তার কেমন অবস্থা হয় সেই জানে ।
.
অতঃপর
.
আন্টির মেয়ে আন্টিকে ধরে অনেক কাঁন্না কাটি করে । মামনিকে ধরে অনেক কাঁন্না কাটি করলো । মেয়ের বাবা তো তার তো কোন কথায় নাই সে আন্টির চেয়ে তাকে কোম ভালোবাসে নাই । তাদের এরকম অবস্থা দেখে আমার আর ভালো লাগলো না ।
.
কিছুখন পর মেয়েকে বিদায় দিয়ে আন্টি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ।
.
অতঃপর
.
আন্টিকে সুস্থ করা হলো ।
.
অনেক রাত হয়ে গেলো কেউ ঘুমাই নাই ।
কিন্তু মাহির দিকে চোখ পরাতে দেখি ঘুম আসবে বোঝা যাচ্ছে । বেচারি এখন কোথায় ঘুমাবে ।
তখন একটা বুদ্ধি এসে গেলো ।
মামনিকে ডেকে বললাম কথাগুলি । হাজার হলে #ভারাটে_গার্লফেন্ড তাই বলে তাকে এভাবে কষ্ট দেওয়া ঠিক হবেনা ।
তাই মামনিকে বলে তার জন্য ঘুমানোর ব্যবস্থা করলাম । আন্টির পাশের রুমে ।
।
মাহিকে নিয়ে এলো মামনি সেই রুমে ।
তারপর মামনি বললো ,
---মা তুই ঘুমা তুই মনে হয় বেশি রাত জেগে থাকতে পারিসনা ।
---আসলে আন্টি আমি না বেশি রাত জেগে থাকতে পারিনা ।
.
ঘুম বেটা আমার চোখে এসে বাসা বেধেছে তাই আমি মানিকে বললাম ।
---মামনি আমি তালে শরিফ ভাইয়ার রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম ।
---তাহলে মা তুই ঘুমা । আমি তোর আন্টির কাছে যাচ্ছি । আর তুই গিয়ে শরিফের ঘরে ঘুমিয়ে যা ।
.
বলেই মামনি আর আমি চলে আসতে লাগলাম ।
তখন মাহি পিঁছন থেকে বলে উঠলো ,
---আন্টি ।
---মা কিছু বলবি নাকি কোন সমস্যা ।
---না মানে বলতে চাইছিলাম ।
---কি বলবি বল ।
---আমি না একা একা রুমে শুয়ে থাকতে ভয় পাই ।
.
মাহির কথাটা শুনে হাসি পেলো এতো বড় একটা মেয়ে সে কিনা রুমে একা থাকতে ভয় পাই । আর সে নাকি ডাক্তার হবে ভাবতে হাসতে মন চাচ্ছে ।
তখন মামনি বলে উঠলো ,
---একা থাকতে ভয় পাস মানে বুজলাম না ।
---আমি একা একা এক রুমে থাকতে পারিনা বাসায় ছোট বোনের সাথে শুয়ে থাকি একা থাকতে পারিনা তাই আপনি আমার সাথে শুয়ে থাকুন না । না হলে এই রুমে একা থাকতে পারবোনা ।
---আসলে কি মা তুই বল এখন একজন বান্ধুবীর উচিত তার বান্ধুবীর পাশে থাকা আমি এখন কি করি তুই বল মা ।
---তাহলে আন্টি আমি এই রুমে একা থাকতে পারবোনা আমি আপনার সাথে থাকবো ঘুমাবোনা ।
---কি বলিস তুই । তোর চোখে ঘুম দিয়ে ভরা আর তুই.. না এখন কি করি ।
.
কিছুখন মামনি কি যেন ভেবে বলে উঠলো ,
---আচ্ছা মাহিম তুই একটা কাজ কর তুই মাহির সাথে ঘুমিয়ে পর ।
.
কথাটা শুনে দুজনি দুজনার দিকে তালাম ।
মামনি কি বলছে আর মাহি তো আমার বউ বা গার্লফেন্ড বা বান্ধুবী কিছুই না । আর এক ঘরে থাকা এটা ঠিক হবে তো ।
মামনি আমাদের এরকম দেখে বলে উঠলো ,
---আসলে সেভাবে বলি নাই মা তুই গিয়ে বিছানায় শুয়ে থাক আর মাহিম তুই সোফায় গিয়ে শুয়ে থাক ।
.
মামনির কথায় শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো । সকালে সবাই কি বলবে হয়তো তাড়া জানে আমরা একে অপরকে ভালোবাসি কিন্তুু আসলে তাড়া জানেনা আমরা অভিনয় করে যাচ্ছি ।
এতে বেশি কিছু সমস্যা হবেনা কিন্তু পরে যদি আমাদের অভিনয়ের কথা জানতে পারে তাহলে আমাকে কি বা বলবে আর মাহিকে ।
---কি হলো এভাবে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছিস কেনো ।
.
মামনিকে বুজতে দেওয়া যাবেনা ।
---আসলে মামনি আমি বলতে চাইছিলাম যে মাহি...
.
পুরো কথাটা না শুনে মামনি বললো ,
---মা তুই কি বলিস । আমি যতটুক মাহিমকে চিনি সে এমন কাজ করবেনা যেটা সমাজে তোর কোন সমস্যা হয় ।
.
কথাটা শুনে মাহি আমার দিকে তাকালো ।
তারপর কিছু একটা ভেবে বললো ,
---ঠিক আছে আন্টি শুয়ে থাকুক ।
.
কথা শুনে আমি নিজেই থ্ হয়ে গেলাম ।
মাহি কেমনে বিশ্বাস করে নিলো ।
.
মানুষের চরিত্র দুই রকম ।
এক → মা-বাবার সামনে এক চরিত্রের প্রকাশ করে ।
দুই → বন্দু/বান্ধুবীর মাঝে এক চরিত্র প্রকাশ করে ।
( কেউ মা-বাবার সামনে ভালো চরিত্রের অভিনয় করে । আবার বন্দুদের মাঝে অন্য চরিত্র / সবাই এক না কেউ আছে সব যায়গায় একি চরিত্রের অভিনয় পাওয়া যায় , হয় কারও ভালো অথবা খারাপ )
.
আমি মাহির দিকে তাকালাম । আমার দিকে তাকিয়ে আছে । আমার চোখে চোখ পরাতে মাহি মামনির দিকে তাকালো ।
মামনি তখন বললো ,
---তাহলে দুজন ঘুমিয়ে যা আমি আবার তোর আন্টির কাছে যাচ্ছি ।
.
মামনি চলে যেতে লাগলো । আমি সোফার দিকে যাচ্ছি তখন মামনি বলে উঠলো ,
---মাহি ।
.
আমি এবার নিশ্চিত যে কোন একটা কথা বলবে নিশ্চয় ।
---জ্বী আন্টি বলেন ।
---কোন সমস্যা হলে বলিস আমি পাশের রুমে আছি ।
---জ্বী আন্টি ।
---আচ্ছা ঘুমিয়ে যা ।
.
যাক বাবা বাঁচা গেলো ।
সারাদিন কত কষ্ট হয়েছে ।
আজ অনেক ক্লান্ত এখন ঘুমিয়ে যাই ।
।
।
।
চলবে পরবর্তী পর্বে ।।।
।
।
।
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ।।।
।
।
।
লেখকঃ নাসির ইসলাম মাহিম ( মাহাদীর আব্বু )
#ভাড়াটে_গার্লফেন্ড
।
পর্বঃ নবম ( ৯ম )
।
।
।
কথাটা বলেই মামনি আন্টির কাছে চলে গেলেন ।
আমি দরজা লক করে সোফার কাছে যাচ্ছি ঘুমানোর জন্য । একটু রেশ নিব । কাল তো আর বাড়িতে যেতে পারবোনা যে ইচ্ছে মতো ঘুমিয়ে পরবো ।
মাহিকে পাশ কেটে এসে যেই সোফায় শুয়ে পরবো তখন মাহি বলে উঠলো ,
---আপনি খাটে গিয়ে শুয়ে পরেন ।
.
মাহির কথা শুনে মাহির দিকে তাকালাম ।
বাহ্ খুব ভালো তো । সে নিজে না শুয়ে আমাকে শুয়ে থাকতে বলেছে ।
আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম ,
---ঠিক আছে আপনি গিয়ে শুয়ে থাকেন । আমার অভ্যাস আছে কিছু হবেনা আপনি শুয়ে থাকুন ।
---আরে সমস্যা নেই একটা রাত তো কোন সমস্যা হবেনা । আপনি গিয়ে খাটে শুয়ে থাকুন ।
---আরে আপনি শুয়ে থাকুন আর আমি এখানে শুয়ে থাকি । গুড নাইট ।
.
বলেই সোফায় শুয়ে পরলাম ।
মাহি আর কিছু বললো না । আমিও কিছু না বলে ঘুমানোর জন্য চোখ বুঝলাম ।
.
একটু পরে চিৎকারের শব্দ পেলাম ।
আমি ভয় পেয়ে উঠে দৌড়ে গিয়ে মাহির মুখ চেপে ধরলাম ।
মাহি আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকের মাঝে মুখ লুকালো ।
তারপর মাহি মুখ উপরের দিকে তুলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
.
আমি ইচ্ছে করে তাকে ধরি নাই ।
কেউ যদি চিৎকার শুনে ফেলে তাহলে কিভাববে ।
এটা ছাড়া আমার কোন উপায় ছিলোনা । আমি তো আর ইচ্ছে করে তো তাকে মুখ চেপে ধরি নাই ।
.
মনে মনে খুব ভয় করছে কেউ তো শুনে ফেলেনি তো যদি শুনে ফেলে তাহলে মামনি ও সবাই আমার উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে । খুব ভয় করছে হয়তো নিজেকে অনেক অপরাধী মনে হচ্ছে কিন্তুু কিছু করার নেই আমার ।
আমি তার দিকে তাকালাম দেখি খুব ভয় পেয়েছে । মুখটি শুকনো হয়ে আছে । ভয়ে মেয়েটি আমাকে জরিয়ে ধরে আছে ।
আমি কিছু বলতে গিয়ে কিছু বলতে পারছিনা । কি বলবো আমি তো তার স্বামী না যে তাকে জরিয়ে ধরে থাকবো ।
আমি আমার বুকের বাহু থেকে মাহিকে সরানো চেষ্টা করলাম কিন্তু মাহি এমন ভাবে জরিয়ে ধরে আছে তাকে ছাড়ানো একদম কেমন জানি লাগছে । মেয়েটি খুব ভয় পেয়েছে ।
মাহি হঠাৎ এরকম চিৎকার দেওয়ার কারণ কি । কি দেখে ভয় খেলো মেয়েটিরর কাছ থেকে জানা দরকার ।
আমি তাকে হাত দিয়ে সরাতে চেষ্টা করলাম কিন্তুু এমন ভাবে জরিয়ে ধরে আছে তাকে ছেড়ে দিলে মনে হয় কেউ খেয়ে ফেলবে ।
আমি আবার চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুই হলোনা তাই মাহিকে বলতে লাগলাম ,
---কি হয়েছে আপনার ওরকম করে চিৎকার দিলেন কেনো ।
---ওখানে ও ।
---ও কে ।
---দেখেন বিছানায় আছে ।
.
মাহির কথা শুনে বিছানার দিকে তাকালাম দেখি কিছু নেই তো ভয় খাবার মতো ।
---কই কিছু তো নেই ।
---ভালো করে দেখেন ও সেখানে আছে ।
---কই আমি তো দেখতে পাচ্ছি না । ভুতের কথা বলছো নাকি ।
---না ।
---তাহলে কি বলেন ।
---ওই দেখেন বিছানায় আছে ।
.
মাথাটা ভের করে হাত দিয়ে ইশারা করে বললো । কোথাও কেউ নাই আর কিছু তো দেখতে পাচ্ছি না শুধু একটা তেলাপোঁকা ছাড়া ।
ভাবতে লাগলাম তেলাপোঁকা দেখেতো ভয় পাইনিতো ।
তাই আমি মাহিকে জিঙ্গেস করলাম ,
---আচ্ছা আপনি ওই তেলাপোঁকা দিয়ে ভয় খাচ্ছেন নাকি ।
.
মাহি মাথা দিয়ে হ্যা সূচক দিলো ।
আমার তখন হাসি পেলো । যে কয়দিন পরে ডাক্তারি পাস করে ডাক্তার হবে সে কিনা সামান্য তেলাপোঁকা দিয়ে ভয় খাচ্ছে ।
আমি হেসে উঠে আবার হাত দিয়ে মুখ চেঁপে ধরলাম । সবাই শুনে ফেলতে পারে । হয়তো এটা সবাই বিশ্বাস করবেনা কিন্তুু আল্লাহ আর মাহি ও আমি ছাড়া কেউ জানে না তাই হেসে উঠে আবার হাসি থামিয়ে বললাম ,
---আরে আপনি এই সামান্য তেলাপোঁকা দেখে ভয় খান ।
---হুমমম অনেক ।
---তাহলে কেমনে ডাক্তার হবেন ।
---একদিন দুপুরে শুয়ে ছিলাম হঠাৎ করে কোথা থেকে একটা তেলাপোঁকা এসে আমার পাশে পরে তখন আমি চিৎকার দিয়ে উঠি তখন দৌড়ে আব্বুর ঘরে চলে যায় । পরে আব্বু সেটা শুনে অনেক হেসেছিলো তারপরে সেটাকে মেরে ফেলে তারপর আব্বু এসে বলে এখন যা তাকে মেরে ফেলে দিছি । কিন্তু তবুও আমি রুমে যাইনি ভয় করে যদি আবার আসে । কিন্তু তারপরে রুম বদল করে ফেলে আমার রুমে আব্বু থাকে আর আব্বুর রুমে আমি ।
.
মাহি কথাগুলি একদমে এক এক করে সব বলে দিলো ।
মাহির কথাটা শুনে খুব হাসি পেলো কিন্তু হাসতে পারলাম না । মনে মনে তখন হেসেছিলাম ।
---আচ্ছা যদি সামান্য এই তেলাপোঁকা দিয়ে ভয় খান তাহলে ডাক্তার হবেন কেমনে ।
---আরে আমি কি তেলাপোঁকার ডাক্তার হবো বলেন ।
.
মাহির কথাটা শুনে এবার না হেসে পারলাম না । তাই হেসে ফেললাম ।
---হ্যা তাই তো আমি তো এটা ভাবিনি আপনি তেলাপোঁকার ডাক্তার হবেন না । আপনি তো মানুষের ডাক্তার হবেন ।
---হু এতখনে বুঝলেন ।
---হুমমম ।
---এখন তাড়াতাড়ি ওটা মেরে ফেলেন ।
---হুমমম আমাকে ছেড়ে দিন তা না হলে ।
.
কথাটা পুরোপুরি বলতেনা না বলতে ছেড়ে দিলো ।
.
আমি গিয়ে তেলাপোঁকাটি মেরে ফেললাম ।
তারপরও সে ভয় খাচ্ছে আমি যেখানে যাই মাহি পিঁছু পিঁছু যাচ্ছে ।
---আচ্ছা আপনি এখন শুয়ে পরুন এখন আর কোন ভয় নেই ।
---না মানে ।
.
কিছু একটা ভেবে বললো ,
---আপনি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে একটা কথা বলতে পারি ।
---আচ্ছা বলেন ।
---আমি ঘুম আসা না পযন্ত আমার পাশে বসে থাকবেন ।
.
মাহির কথাটা শুনে কেমন জানি মনে হলো সে এখন ভয় খাচ্ছে ।
আমার জন্য সে এরকম ভয় খাচ্ছে । আমি যদি না নিয়ে আমতাম তাহলে মাহির এরকম হলো না । আমার জন্য যদি এতোটুক করতে পারে আর আমি এইটুকু ।
সাত পাঁচ চৌদ্দ বুঝ বুঝে বললাম ,
---ঠিক আছে আপনি শুয়ে পরুন আমি আপনার পাশে বসে থাকবো ।
---না থাক আপনি গিয়ে শুয়ে থাকুন ।
---সমস্যা নেই আর আবার যদি ভের হয় না তাহলে আপনি আরও ভয় খাবেন ।
.
কিছু না বলে বিছানায় ওপাশ হয়ে শুয়ে পরলো ।
আমি বসে ভাবতে লাগলাম সামান্য তেলাপোঁকা দিয়ে ভয় খাচ্ছে নাকি এটা তার অভিনয় । না এটা তার অভিনয় না কারণ সে অভিনয় করলে বুঝতে পারলাম ।
.
কিছুখন পর চুমকে উঠলাম । বুঝতে পারলাম আমি বসে থেকে ঘুমিয়েছিলাম । চোখ দুটি ছোট হয়ে আসছে । মাহির দিকে তাকালাম দেখি ঘুম রাজ্যে চলেগেছে এখন আর কোন সমস্যা নেই ।
.
আমি উঠে লেপটা তার শরীরের উপর দিয়ে দিলাম ।
তারপরে সোফায় এসে শুয়ে পরলাম ।
শুয়ে পরার সাথে সাথে ঘুম মামা আমাকে ঘুমের রাজ্যে নিয়ে চলে যায় ।
.
সকালে ঘুমটা ভেংঙ্গে যায় কারও ডাকে ।
আমি অর্ধ ঘুম চোখে নিয়ে বলতে লাগলাম ,
---কি হয়েছে আর এতো সকালে ডাকা করছেন কেনো ।
---আপনি বিছানায় গিয়ে শুয়ে থাকুন ।
---আমি এখানে ভালো আছি আর ঘুমের ডিস্টার্ব করবেন না তো জানছে এখান থেকে ।
---আরে ভালো কথা বলছি ।
---আচ্ছা ঠিক আছে বিছানায় যাচ্ছি ।
.
আমি উঠে দাড়াবো দেখি শরীরে চাঁদর আমি তো চাঁদর নিয়ে শুয়ে নাই কে দিলো । চোখটা বুঝে ঘুমের মাঝে ভাবতেছি ।
---কি হলো দাড়িয়ে ঘুম পারছেন বিছানায় জান সেখানে গায়ে ঘুমান ।
---জ্বী ।
.
বলেই বিছানায় গিয়ে লেপটা শরীরে উপর নিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম ।
.
ঘুম চোখে কিছুই ভাবতে পারিনা । আমি কোথায় কি বলছি ইত্যাদি ইত্যাদি ।
.
কে যেন মাথায় হাত দিয়ে ডাকছে তখন তার ডাকে ঘুম ভেংঙ্গে গেলো ।
---মাহিম ওই মাহিম তাড়াতাড়ি উঠ ।
.
চোখটা খুলে দেখি মামনি । কি ব্যাপার এতো সকালে কেনো ডাকছে ।
---কি হয়েছে মামনি এতো সকালে ডাকছো কেনো ।
---কিহ্ এতো সকাল মানে ঘড়ি দেখেছিস আমার গাধা আব্বাজান ।
---মামনি আপনাকে কয় দিন বলেছি যে এটা বলে ডাকবেন না তাও আজকে আবার ডাকছেন ।
---ওহ্ ভুলে গেছি আব্বাজান । এখন উঠে তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে মাহিকে নিয়ে মেডিকেলে যা ।
---কেনো কি হয়েছে মাহির আর মাহি মেডিকেলে কেনো ।
।
।
।
চলবে পরবর্তী পর্বে ।।।
।
।
।
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ।।।
।
।
।
লেখকঃ নাসির ইসলাম মাহিম ( মাহাদীর আব্বু )
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ