4786

লিখেছেনঃAsaduzzaman jibon

রাতের বেলায় বিছানায় সঙ্গম চলাকালীন সময়ে একজন অন্যজনকে কো-অপারেট করা দম্পতিও অনেকসময় সঙ্গম শেষে কো-অপারেট করা ভুলে যায়!
দাম্পত্য কলহের একটা বড় সমস্যা হলো,
কো-অপারেশন এবং কম্প্রোমাইজ এর অভাব।
পৃথিবীর বেশিরভাগ দম্পতি দাম্পত্য জীবনে ভালো থাকার প্রাকটিসটা করে কম্প্রোমাইজ এর মধ্য দিয়ে।
সঙ্গমে একজন অন্যজনকে কো-অপারেট করলে যে তৃপ্তিটা পায়,
জীবনে চলার পথে প্রত্যেকটা মুহূর্ত এভাবে কো-অপারেট করতে পারলে বেলাশেষে তারচেয়ে বেশি তৃপ্তি পাওয়া যেত।

বিছানায় আজ কে উপরে যাবে আর কে নিচে যাবে তার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ মনে হলেও,
বিছানার বাইরের জীবনে একজনের সিদ্ধান্তের সাথে সবসময় অন্যজনের সিদ্ধান্ত মিলে না।
আমরা আসলে বিছানার বাইরের জগতটাকে জটিল বানিয়ে ফেলি।
একটু ছোট-খাটো ভুলে আমরা এগ্রেসিভ আচরন করা শুরু করি।
মানুষটার ভুল হয়ে গ্যালে, তার কানের কাছে ফিসফিস করে বলিনা, এটা এভাবে না করে যদি ওভাবে করা হয়, তাহলে ভালো হবে।
অথচ, পাশের বালিশে শুয়ে থাকা মানুষটার কানের কাছে যেয়ে জিজ্ঞেস করি " who will be first, Tonight"?
আমরা বিছানাকে বিছানা পর্যন্তই রাখি। বাইরের জীবনে আমাদের এডজাস্টমেন্ট না হলে আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
বিছানায় আলাদা হওয়ার সুযোগ থাকে না। প্রয়োজন আমাদের আলাদা হতে দেয়না।
বিছানায় এডজাস্ট করতে সমস্যা হলেও আমরা একটা সমাধান বের করে সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা করি।
বিছানা থেকে আমরা কিছু শিখি না। তৃপ্তি মিটে গেলে আমরা উল্টাপাশ হয়ে শুয়ে পরি।
অথচ, বিছানা থেকেই আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।

ভালো না থাকাটা সহজ, ভালো থাকাটা তারচেয়েও বেশি সহজ, যদি আপনি জীবনটাকে সহজ ভাবে গ্রহন করতে পারেন।
যে মানুষটার সাথে বাকি জীবন কাটাতে হবে, যার চোখের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হতে হবে,
যার পাশের চেয়ারে বসে দু বেলা খাবার খেতে হবে, যে মানুষটার নিশ্বাসের শব্দ শুনে ঘুমাতে হবে, তার সাথে যদি এডজাস্টমেন্টই না করা যায়, তাহলে সবকিছু জটিল হবে এটাই তো স্বাভাবিক।

সম্পর্ক টিকে থাকে কম্প্রোমাইজ করার মধ্য দিয়ে। কম্প্রোমাইজ মানে আসলে কেউই হেরে না যাওয়া। কম্প্রোমাইজ মানে একজন অন্যজনকে জিতিয়ে দিয়ে, আনন্দ পাওয়া।
আর এডজাস্টমেন্ট মানে হলো, দুজন মানুষ একসাথে জিতে যাওয়া।
শুধু একটু এডজাস্টমেন্টের মানসিকতা থাকলেই সংসার জীবন আনন্দের।

আমরা গুরুত্ব পেতে ভালোবাসি কিন্তু গুরুত্ব দিতে ভালোবাসিনা।
যেদিন থেকে আমরা বিপরীত মানুষটার গুরুত্ব দিতে শিখে যাবো, সেদিন থেকে আর দূরত্ব বাড়বে না।
মানুষ আসলে গুরুত্ব চায়।
কেউ একজন আপনাকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছে জানার পর আপনি কখনোই তাকে অবহেলা করতে পারবেন না।
কেউ আপনার ইমপরটেন্স দিচ্ছে এটা জানার পরও যদি আপনি তাকে অবহেলা করেন, মূল্যায়ন না করতে পারেন, তাহলে দয়া করে মানুষের লাইন থেকে বেরিয়ে আসুন।
মানুষের লাইনে আপনার জন্য যথেষ্ট জায়গা বরাদ্দ নেই।

বিছানায় কাছে আসার প্রাকটিসটা যেদিন আমাদের জীবনে পুরোপুরি চলে আসবে,
সেদিন আমাদের দাম্পত্য জীবনেও আর কলহের সৃষ্টি হবেনা।
আজরাতে কে আগে স্পার্ম আউট করবে, এটা যদি জিজ্ঞেস করতে পারেন! আজ কে উপরে আর কে নিচে থাকবে, এটা যদি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন!
কোন পজিশন নিলে দুজনই তৃপ্তি পাবেন, তা যদি এডজাস্ট করতে পারেন! একজনের ছেড়ে দেওয়া কার্বন-ডাই-অক্সাইড যদি আরেকজন অক্সিজেন হিসেবে গ্রহন করতে পারেন, তাহলে বিছানার বাইরেও বাকি কাজ গুলো ঠিকঠাক করতে পারবেন।

বিলিভ ইট অর নট, দুজন মানুষ একসাথে সারাজীবন তৃপ্তিতে কাটানো, বিছানাতে তৃপ্তি পাওয়ার চেয়েও সহজ।