4271

মেকআপের গল্প

তিন বছরের প্রেমের
সম্পর্ক বিয়েতে রূপ নিচ্ছে।
এটা ভেবেই বর মনে মনে পুলকিত ছিল। বিপত্তিটা
বাধল বিয়ের আসরে গিয়ে যখন কনের পাশে
বসল
তখন। সামনে হাজার হাজার অতিথি। সবাই
হাসিমুখে তাদের দিকে চেয়ে আছে। বর আবার
তাকাল কনের দিকে। স্টেজের অদূরে দাঁড়িয়ে
থাকা
বন্ধুকে ইশারায় ডেকে ফিসফিস করে বলল,
‘দোস্ত,
বউ তো অন্য মেয়ে।’
—মানে?
—মানে সুমী না। অন্য কেউ। তুই আব্বাকে বল।
বিয়ে
ভেঙে দে। সুমী আমার সঙ্গে এমন করবে
ভাবতে
পারিনি।
বন্ধুটি নিজে কনেকে দেখল। হ্যাঁ, কথা সত্য।
সে
কনেকে ভালো করে চেনে। বন্ধুর সঙ্গে
প্রেম হওয়ার
আগে সেও চেষ্টা করেছিল। তার কপাল খারাপ।
কিন্তু যাকে কনে হিসেবে এখানে বসানো
হয়েছে,
সেও খারাপ না। তবুও দায়িত্ব নিয়ে বন্ধুর বাবাকে
ঘটনা খুলে বলল। ততক্ষণে পুরো বিয়েবাড়ি
জেনে
গেছে যে যার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছে, তার
বদলে
অন্য মেয়েকে বউ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সবাই
যে
যেখানে ছিল, স্টেজের কাছে ছুটে
এসেছে। বরের
বাবা মহারাগী। তিনি স্টেজের সামনে গিয়েই
চিত্কার শুরু করলেন—‘এই বিয়ে হবে না। বন্ধ
করেন
সব। বন্ধ করেন।’
হবু বেয়াইয়ের চিত্কার শুনে অবাক হয়ে কাছে
গেলেন কনের বাবা—‘কী হয়েছে ভাই
সাহেব?
কোনো সমস্যা?’
—সমস্যা মানে, ফাজলামো করেন? দেখানোর
সময়
একটাকে দেখিয়েছেন। এখন আবার আরেকটা
মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
করতেছেন।
বিয়ে কী খেলা?
—কী বলেন আবোলতাবোল!
—বুঝবেন না তো। ধরা খেয়েছেন না।
আপনাকে আমি
পুলিশে দেব। প্রতারণার দায়ে জেল খাটবেন
আপনি।
—ভাই সাহেব, শোনেন আমার কথা...
—প্রতারকের কথা শুনি না। ওই কে আছিস, পুলিশে
ফোন লাগা।
—ভাই সাহেব...
কনের বাবার কথা থামিয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে
বরের বাবা বললেন, ‘তুই বসে আছিস ক্যান? উঠে
আয়।
বিয়ে বন্ধ।’
এইটুকু শুনে হুড়মুড় করে কনে স্টেজ থেকে
উঠে এলো।
মেয়েটা ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘প্লিজ! বিয়ে
ভেঙে দেবেন না। প্লিজ! দুইটা মিনিট সময় দেন।
আমি ওয়াশরুম থেকে মেকআপটা পরিষ্কার করে
আসি। সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে।’

CM Bidhan Roy