āĻŽāĻ™্āĻ—āϞāĻŦাāϰ, ā§§ā§Š āĻĢেāĻŦ্āϰুāϝ়াāϰী, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž

4175


মিনা ও রনি এগারো বছর প্রেম করার পর বিয়ের সিন্ধান্ত নেয়। তাদের বিশ্বাস পৃথিবীর সেরা সুখি দম্পতিদের একজন হবে। দুজনই পরিবারকে জানায়। দুজনের পরিবারই শিক্ষিত; বিয়েতে কোনো বাধা থাকার কথা নয়। রনির বাবা মিনাকে দেখতে যায়। মিনাকে পছন্দ হয়নি। শিক্ষিত পরিবার তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু রনির বাবার কাছে মনে হয়েছে মিনা দেখতে কঙ্কালের মতো, চাপা ভাঙ্গা; আর তার ছেলে দেখতে যেমন লম্বা তেমনি সুদর্শন। এই মেয়েকে সে কিছুতেই ছেলের বউ বানাবে না। তার ওপর মেয়ের পরিবার বিত্তবান নয়। ছিমছাম একটা দোতলা বাড়ি মাত্র! আর রনিদের ঢাকায় কয়েকটা পাঁচতলা বাড়ি আছে। তাছাড়া গ্রামে জায়গা-জমির অভাব নেই।
রনির বাবা শিক্ষিত হলেও সেকেলে ধ্যানধারণার মানুষ। ছেলের শ্বশুরকেও হতে হবে বিত্তবান। রনিদের তুলনায় মিনারা গরিবই বটে। রনির মা ও মামা রনির বাবাকে বুঝায় কিন্তু রনির বাবা নারাজ। এক কথার মানুষ-মেয়ে যতই শিক্ষিত হোক না কেন, পরিবার যতই ভদ্র হোক না কেন, গরিব ঘরের মেয়ে আনবে না।
রনির বাবা কখনও তার মুখ দিয়ে না বললে সেটাকে কেউ 'হ্যাঁ' করাতে পারেনি। রনি ছোটবেলা থেকেই বাবাকে খুব ভয় পায় কখনও মাথা তুলে কথা বলেনি বাবার সাথে। বাবা ডানে বললে ডানে; বামে বললে রনি বামে গিয়েছে। বাবা রাত বললে রাত; দিন বললে দিন। কখনও বাবার কথার বাইরে যায়নি। বাবা-মায়ের কথা মানেই তার কথা। বাবা-মা কষ্ট পাক এমন কাজ কখনও করেনি। বাবা-মা বলেছে,আড্ডা, বন্ধুবান্ধব, খেলাধুলা কম; পড়-পড়-পড়! রনি তাই করেছে মাথা গুঁজে। বাবা-মায়ের আদর্শ ছেলে। সারাজীবন যে ছেলে বাবা মায়ের কোন কথার বাইরে যায়নি, সব সময় বাবা-মা কীসে খুশি হয় তাই করেছে, অথচ আজ তার জীবন-মরণ সমস্যায় বাবা একরোখা সিদ্ধান্তে অটল! ছেলের সুখের কথা ভাববে না? ছেলের কষ্টের কথা ভাববে না?
বিয়ে করবে সে; মেয়ে ও তার পরিবারের সবাই শিক্ষিত অথচ বিত্তবান হতে হবে! জীবনটা তার, অথচ ছোটবেলার মতই বাবার ইচ্ছে-মতামত-সিদ্ধান্তকেই সব সময় বড় করে দেখবে! বড় হয়েও বাবাই তার জীবনটা নিয়ন্ত্রণ করবে! বাবার এমন কাজে রনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। মন ভেঙ্গে গেলেও তবুও বাবাকে বলতে পারে না- 'আমি মিনাকেই বিয়ে করব'।
পৃথিবীতে রনির মতো অল্প কিছু ছেলেই জন্মায় যারা কিনা পরিবার জন্য নিজের শখ-আহ্লাদ-স্বপ্ন-ইচ্ছে সব ত্যাগ করতে পারে। রনির মা রনির পাগলপ্রায় অবস্থার কথা বললেও বাবার মন গলে না। কেবল পায়ে ধরা বাকি ছিল বিয়েতে রাজি করানোর জন্য। রনির বাবা বলে, 'রনি চাইলে বিয়ে করতে পারে আমার অমতে। কিন্তু আলাদাভাবে সংসার করতে হবে। আমি আর কখনই কিছুতেই রনির মুখ দেখব না। ভাবব রনি বলে আমার কোন সন্তান নেই আমি নিঃসন্তান।'
মিনাকে শেষমেশ রনি কান্না ভেজা চোখে বলে, 'এই জীবনে তোমাকে আর পাওয়া হলো না। আমাকে ক্ষমা করে দিও।'
মিনার কাছে থেকে দুঃখ প্রকাশ করে বিদায় নেয়। রনির বেঁচে থাকাটা অর্থহীন হয়ে পড়ে। কোনো কিছুই ভালো না। জীবনে বিতৃষ্ণা এসে পড়ে। জীবনটা হয়ে উঠে অসহ্য। ভুলে যেতে চায় মিনাকে। জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ায় রনি। ভীষণ কষ্ট চেপে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। কেউ রনির খোঁজ দিতে পারে না। মিনা অন্য ছেলেকে বিয়ে করে বিদেশ চলে যায়...।
                                                           ২
২৫ বছর পথে পথে ঘুরেছে যাযাবর হয়ে। কোথাও মন টিকেনি। কেবল হেঁটেছে যেন কবি জীবনানন্দের মত হাজার বছর ধরে হেঁটেছে পৃথিবীর পথে খুঁজেছে বনলতাকে...। মিনার এক ছেলে এক মেয়ে। তার স্বামী সানির ক্যান্সার ধরা পড়ে। মিনাও ২৫ বছর পর বাংলাদেশে ফিরে আসে। তার স্বামী একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে থাকে। মিনার খবর পেয়ে রনি দেখা করে। মিনা তার ছেলে-মেয়ের সাথে রনিকে পরিচয় করিয়ে দিলে; ছেলে ও মেয়ে জানায় তারা রনির কথা অনেক শুনেছে...।
প্রায় প্রায় হাসপাতালের লবিতে ও নির্জন কোন যায়গায় গল্প করে ২৫ বছর কীভাবে? কেমন করে কাটল? চিকিৎসা খরচ চালাতে যে হিমশিম খাচ্ছে মিনা কিন্তু রনিকে কিছুই বলে না। রনি জানতে পারে মিনার ছেলে-মেয়ের কাছে। টাকার জন্য তার বাবাকে বাঁচান সম্ভব হবে না। মিনা কষ্টে আছে রনি সহ্য করতে পারে না। রনি মিনাকে না জানিয়ে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সব খরচের ভার নেয়। মিনা তার স্বামী সানির সাথে রনিকে পরিচয় করিয়ে দেয়।
একদিন একান্তে রনিকে সানি বলে, 'আমাদের যখন দুই সন্তান হলও তখন জানতে পারলাম, মিনা ও আপনার প্রেমের কথা। মিনাকে আমি বলেছিলাম আপনার কাছে চলে যেতে কিন্তু নারী জাতি তো সব পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে ভীষণ সাংসারিক হয়ে উঠে; স্বামী ও সন্তান ছেড়ে যেতে চাইল না। ২৫ বছর আপনাকে এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারেনি। ওর শরীর ছিল আমার কাছে আর মনটা ছিল আপানার কাছে। আপনাকে আমার খুব হিংসা হত। আমার নিজেরও কোন কিছু কমতি ছিল না তবুও পুরোপুরি মিনাকে পাইনি। মিনার মতো মেয়ে আপনাকে কি প্রচণ্ড ভালোবাসে। আমার সব কিছু থাকা সত্ত্বেও কেবল আপনাকেই ভালোবেসেছে।'
'প্রতিমুহূর্তে আপানাকে খুঁজেছে যেন কোন এক উত্তাল প্রেমসমুদ্র মিনাকে ডাকছে বিশাল বিশাল ঢেউ গর্জন করে আঁছড়ে পড়েছে, কিন্তু সেই ডাকে সাড়া দিতে না পেরে আহত পাখির মতো ছটফট করেছে। বিদেশের ডাক্তাররা বলে দিয়েছে, আমার বেঁচে থাকার কোন চান্স নেই। আমি আর বেশি দিন বাঁচব না। মিনা শুধু শুধু চিকিৎসা করাচ্ছে। নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছে। আমার একটা অনুরোধ রাখবেন কি?'
'আমার মৃত্যুর পর আমার সন্তান ও মিনার দায়িত্ব নিতে পারবেন? আমি ২৫ বছর পথে পথে ঘুরেছি। আমার অবচেতন মন বলেছে মিনা আমার জন্য অপেক্ষায় করছে। শুন্য হাতে ওর পাশে কেউ নেই, জীবনযুদ্ধে পরাজিত একা, নিঃসঙ্গ মৃতপ্রায় এক সৈনিক। কেবল আমার ভালোবাসাই ওকে বাঁচাতে পারে। কেবল আমাকেই ডাকছে। আমার পথ চেয়ে আছে। তাই ওর ডাকেই ২৫ বছর পর বাড়ি ফিরলাম ওর দায়িত্ব নেবার জন্য সারাজীবন পাশে থাকার জন্যই।'
এভাবেই একদিন হাসপাতালের বেডে সানি মারা যায় হাসিমুখে। রনি মিনা ও তার ছেলে-মেয়েকে বাবার মত আদর করে আগলে রাখে। মিনার ছেলে রাফি ও মেয়ে তিনার কাছে রনি যেমন প্রিয় হয়ে উঠে তেমনি রনির কাছে প্রিয় হয়ে উঠে রাফি ও তিনা। রাফি ও তিনা একটা প্লান করে। যেভাবেই হোক মিনা ও রনিকে বিয়েতে রাজি করাবে। অনেক চেষ্টার পর সফল হয়।
মিনা ও রনির ৫৩ বছর বয়সে বিয়ে হচ্ছে! রাফি ও তিনা বাবা-মায়ের জন্য খুব যত্ন করে বাসর ঘর সাজায়। বাসর ঘরে দুজন দুজনকে পেয়ে আত্মহারা হয়ে যায়। জীবনানন্দ দাশ যেন হাজার ধরে পৃথিবীর পথ হেঁটে বনলতাকে পেল। পেল দুদণ্ড শান্তি...। রনি যেন জিজ্ঞাস করে উঠে- 'এতদিন কোথায় ছিলেন? পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন। ...সব পাখি ঘরে আসে-সব নদী-ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন; থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন। '

অথবা বনলতা সেন । ওসমান সজীব

1 āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ: