গল্প(: গুণ্ডি মাইয়ার ভালবাসা!
লেখক: শেখ আলী (আফরান)
মোবাইলের এলার্মের শব্দে, নিদ্রা থাকা হয়নি সকালে।
বিছানা থেকে লেপটা সরিয়ে মোবাইলটা এসে বন্ধ করলাম।চোখ দুটো কচলাতে কচলাতে জানালার পাশে এসে,জানালা খোলে থুথু বাহিরে ফেললাম।
ঠিক সেই মুহূর্তে কোনো রমনীর ফাটা বাশের মত চিৎকার শুনে নিজেকে সামলাতে পারিনি।
চোখ দুটো খোলে ভাল করে দেখি, পাশের বাসার মাইয়া বেলকুনিতে, আর তার ঠিক বাম চোখের পাশেই থুথু।
এই মুহূর্তে আমি বুঝে গেছি ঘটনা ঠিক কি হয়েছে।
যেই সরি বলতে যাব, ওমনি রমণী রাগী চোখে থাকিয়ে চলে গেলেন।
আমি কি করব,দেখেশুনে তো আর ফেলছি না।আর এমনিতেই ওর বেলকুনি আর আমার জানালার দূরত্ব
চার পাঁচ হাত হবে।
বাসা থেকে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বের হলাম।
কিছুটা দূর যাওয়ার পরই আমার পথ আটকে কয়েকজন রমনী দাঁড়িয়ে আছেন।
--জ্বি কি চাই?
--তোকে!
--মানে?
সেখানের একটা মেয়ে বলে উঠল!
--থুথু ফেলার আর জায়গা পেলি না।
--আসলে আমি দুঃখিত, দেখতে পাইনি।
--কানা না কি?
--না।
--তাহলে একশত বার কান ধরে উঠবস কর?
--কি?
--হ্যা,এটাই তোর শাস্তি, না হলে...
সব কয়টা মেয়েই পিছন থেকে একটা একটা করে হকি স্ট্রিট বের করল!
আমি ভয়ে একদম চুপসে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি।
যদি আমি কানে না ধরি,তাহলে নিশ্চিত হাসপাতালের একটা বেড আমাকে গ্রহণ করতে হবে।
অজ্ঞতা মাইয়ার মাইর খাওয়ার ভয়ে একশত বার কান ধরে উঠবস করতে হল।
--এখন যা!আর ভবিষ্যৎ...
--আপনার সামনেও আসব না।
--মনে থাকে যেন।
একশত বার কান ধরে হাতে, কানে, পায়ে ব্যথা করতেছিল। নিরুপায় হয়ে ফার্মেসী থেকে ব্যথানিবারণের জন্য ঔষধ খেতে হল।
ভার্সিটি থেকে ফিরার পথে একজন মিস্ত্রি নিয়ে বাসায় আসলাম। তখন আপু এসে বলল.
--আফরান!
--কি?
--মিস্ত্রি কিসের জন্য?
--ওই জানালাটা বন্ধ করব
--কেন?
--কেননা,জানালার পাশে এক শয়তান থাকে।
--শয়তান!
--না, শয়তান্নী!
বিকেলে বাসা থেকে বের হয়েছি হাটব বলে।
দেখি রাস্তার পাশে একা দাঁড়িয়ে আছে।আমি মাথা নিচু করে নিচের দিকে চেয়ে হাটছি।তখনই মাইয়া ডাক দিল!
--জ্বি আপু বলেন?
--আপু! কে আপু?
--কেন আপনি।
--আমাকে আপু ডাকবে না।
--কেন?
--বললাম না,
--আচ্ছা!
--তোমার নাম কি?
--জ্বি,আফরান।
--ভার্সিটিতে পড়তেছ!
--হ্যা,অনার্স প্রথম বর্ষ।
--আমি কে জানতে চাইবে না!
--না,আমার প্রয়োজন নেই!
--কি বললি?
--না,কিছু না।
--নাম জিজ্ঞাস কর?
--হ্যা,আপনার নাম?
--আনিকা, ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
--এখন আমি আসি!
--আচ্ছা,নাম্বারটা দিয়ে যাও?
--কেন?
--বললাম না দিতে?
--আমার তো মোবাইল নাই!(মিথ্যে কথা)
--তাহলে পকেটে ওটা কি?
এই রে ধরা খাইছি!
--না,না,এটা ক্যালকুলেটর!
মাইয়া জুড় করে মোবাইল নাম্বারটাও নিয়ে নিল।তবে মাথায় চিন্তা আসতেছে, আজ হঠাৎ করে তুমি বলল কেন। আল্লাহ্ জানেন আর কোন বিপদে আমাকে ফেলতেছে।
রাতে নিজের রুমে শুয়ে বই পড়িতেছিলাম, তখনই মোবাইলটার তর্জনগর্জন শুরু!
একটা অপরিচিত নাম্বার....
--হ্যালো?
--কেমন আছ(রমনীর কণ্ঠস্বর)
--কে?
--আমি আনিকা।
--কোন আনিকা?
--জানালার পাশে আয়,দেখাচ্ছি কোন আনিকা।
--ওহ,আপু আপনি!
--তুই জানালার পাশে আয়(ধমক দিয়ে)
--ওই জানালার গ্লাসটা তো একবারের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি।
--কি?
--হ্যা.
--কাল পাই তকে,জানালা বন্ধ করার মজা বুঝবি।
লাইনটা কেটে গেল। এ কি মেয়েরে বাবা।জানালা খোলা থাকলেও সমস্যা,এখন জানালা বন্ধ করেছি,তা ও সমস্যা।আল্লাহ্ জানেন কাল পাইলে আমার কপালে কি আছে।
পরেরদিন ভার্সিটি যাব না বলেই ঠিক করেছিলাম,কিন্তু
একটা গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস থাকায় যেতেই হল।
বাসা থেকে আল্লাহ্র নাম নিয়ে বের হয়েছি,যেন ওই মেয়ের সাথে দেখা না হয়।কিন্তু ওই যে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়।
চেয়ে দেখি মাইয়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে। মনে হচ্ছে আমার প্রেশার হাই হয়ে আছে।
আমি মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছি। আমার সামনে এসে বলল....
--চল?
--কোথায়!
--একটা রিক্সা নাও!
--যাবটা কোথায়?
--নদীর পাড়ে।
--আর আমার ক্লাস!
--শালা,দশদিন ধরে কলেজে যাচ্ছিনা,তর জন্য। আর একদিন ভার্সিটি মিস দিতে পারবি না।চল?
একটা রিক্সাতে দুজনে গাঘেঁষে বসে আছি। মেয়েটার শরীর থেকে আলাদা একটা গন্ধ অনুভব করছিলাম,
মনে ভিতরে হঠাৎই একটা প্রশ্নের উদ্ভাব,আমি কি ওকে ভালবেসে ফেলছি। না, না,এটা কখনও সম্ভব নয়।
এ মেয়েকে ভালবাসলে আমার জীবন নিশ্চিত তেজপাতা হয়ে যাবে।
নদীর পাড়ে এসে দুজনে বসে পড়লাম সবুজ ঘাসের উপর। আমি আড়চোখে আনিকার দিকে চেয়ে অনেকটা অবাক হয়েছি,কেননা ওকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। একটা নীল শাড়ি,মেচিং ব্লাউজ, একদম নীল পরী মনে হচ্ছিল।
--এখানে নিয়ে এলে কেন?
--প্রয়োজনীয় কিছু কথা আছে।
--কি?
--দাঁড়ান, বলছি।
একমিনিট চোখ বন্ধ করে কি যেন মনে
--কি হল বলেন?
--আমার লজ্জা করতেছে!
--আপনার আবার লজ্জা।
--কি?
--না,কিছু না।
--সেই প্রথম দিন থেকে আমি তোমার বোকাসোকা চেহারার প্রেমে পড়ে গেছি।
--কি?
--হ্যা,(নিচের দিকে চেয়ে আছে)
--আজই বুড়িগঙ্গা নদীতে যেতে হবে।
--কেন?
--স্নানটা করব!
--ওই নোংরা পানিতে।
--হ্যা,
--কেন?
--আমার কপালটা ভাল না,না হলে এমন গুণ্ডি মাইয়া আমার প্রেমে পড়ে,তাই নিজেকে অশুদ্ধ করব।
--কি কইলি!
--না,আপু।
অতঃপর পঞ্চম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা!!
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ