গল্প(): ছাত্রীপ্রেমিকা।
লেখক:শেখ আফরান
--ভাইয়া?
--হ্যা,
--চলেন না গল্প করি?
--পরীক্ষা কবে?
--আর বিশ দিন আছে।
--না পড়ে গল্প করবে,তাহলে পরীক্ষায় গিয়ে ঘোড়ার ডিম লেখবে।
অভিমানের দৃষ্টিতে অন্য দিকে চেয়ে আছে।বিশ দিন পর পরীক্ষা, আর উনি গল্প করতে আসছেন।
--একাউন্টিং বইটা বের করুন,
--এই যে(এগিয়ে দিল)
--কি কি পারেন?
--জাবেদা,
--আর?
--আর কিছু পারিনা।
--তাহলে এতদিন পড়াইলামটা কি?
--কেন বই!
--চুপ,একদম চুপ।খাতাটা বের করুন।
খাতাটা বের করে বসে আছে।
--রেওয়ামিলের ছক কয়টা?
--(হাতে গুনে গুনে বলতেছে) পাঁচটা।
--এটা হাতে গুনে বলতে হয়।এবার একটা অঙ্ক করুন?
--কোনটা?
--বইয়ের এক নাম্বারটা।
বিশ মিনিট পর......
--খাতা দেখান?
--(এগিয়ে দিল)
--এটা কি? প্রাপ্য হিসাব ক্রেডিট, আর উপভাড়া ডেবিট কেন?
--ভাইয়া,,ভাড়া তো খরচ,আর খরচ তো ডেবিট হয়।
আমার ছাত্রীর অবস্তা দেখুন।
আমি শেখ আফরান,এবার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
আর ইনি আমার হত ভাগ্যবতী ছাত্রী আনিকা তাবাচ্ছুম।,ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আমি তাহার একাউন্টিং শিক্ষক।
--শুনুন, ধরুন আপনি এই রুমে থাকেন, আর আপনার পাশের রুমটা খালি,যা আপনার প্রয়োজন নেই।তখন আপনি পাশের রুমে আমাকে থাকতে দিলেন কিছু অর্থের বিনিময়ে।
--সত্যি ভাইয়া,আপনি থাকবেন?
--চুপ,একদম চুপ।
--সরি, তারপর.....
--তখন আপনি মালিককে যে অর্থে দিবেন সেটা ভাড়া,
আর আমি এর বিনিময়ে যে অর্থ দিব আপনাকে সেটা উপভাড়া।বুঝেছেন?
--হ্যা,কিন্তু আপনি এখানে থাকলে আমাকে অর্থ দিবেন কেন? এমনিতেই তো থাকতে পারেন।
--মুখটা বন্ধ করে পড়তে বস।
কিছুটা নিরবতা...
--ভাইয়া,আপনার জন্য কফি নিয়ে আসি?
--না,আমি খাইনা।
কি এক মহা ঝামেলায় পড়লাম এই ছাত্রীকে নিয়ে।পড়া তো দূরে থাক,সবসময় উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে আমার মাথা খেয়ে ফেলছে।
ছাত্রীর দিকে চেয়ে দেখি, বইয়ের বদলে আমার দিকে হা করে থাকিয়ে আছে।
--অন্ততপক্ষে বইয়ের দিকে যদি এভাবে থাকাতে তাহলে নিশ্চিত কিছু একটা শিখতে।
--সরি!
--আজ উঠছি,
--কাল আসবেন তো?
--সেটা কাল দেখা যাবে।
বাসায় এসে সবেমাত্র বসেছি।তখনই মোবাইলের টুংটাং শব্দ। আমার ছাত্রীর কল,..
--হ্যালো!
--আপনি কি বাসায় পৌঁছেছেন?
--হ্যা,
--খেয়েছেন?
--সবেমাত্র এসেছি,এখনও ফ্রেশ হইনি।
--ওহ,
--ঠিক আছে,রাখছি।
কলটা রেখে দিলাম। কি একটা ছাত্রী পেয়েছি আমি,
যে কি না,আমার খোঁজখবর নেয়ার পিছনে পুরাই এক্সপার্ট, কিন্তু পড়ার বেপারে একদম ঢেঁড়স, যেন কিছুই পারেনা।
কিছুটা হলেও আমি বুঝতে পারি এই মেয়ের ইচ্ছেটা কি?কিন্তু আমার এখন এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনো ইচ্ছেই নেই,নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত আছি।ওসব আমার কাছে ফালতু ছাড়া কিছুই না।
পরেরদিন ভার্সিটি থেকে টিওশন ছাত্রীর বাসায় চলে গেলাম। বাসায় ঢোকতেই!
--কেমন আছেন?
--ভাল,বইটা বের করুন!
--জ্বি!
আজ আনিকাকে আর্থিক বিবরণীর অঙ্ক পড়াচ্ছিলাম।
--শুনুন,আর্থিক বিবরণীর দুইটা পক্ষ থাকে, যেমন
মোট সম্পদ এবং দায় ও মালিকানাস্বত্ব। এদের দুই পক্ষই সমান হতে হবে না হলে অঙ্ক মিলবে না।
--আপনার চুল গুলা অনেক সুন্দর।
--সেটা আমি জানি!
--আর...
--অন্য মনস্ক হয়ে যাচ্ছেন?
--সরি!
--ঠিক আছে,একটা রেওয়ামিলের অঙ্ক করেন তো?
--পারিনা,
--কি?
--আসলে আপনার সামনে এলে সবকিছু ভুলে যাই!
--কেন?
--জানি না।
........ কিছুটা নিরবতা।
--আচ্ছা আপনার কোন মেয়ে বন্ধু আছে?
--না,
--কেন?
--কারণ মেয়ে বন্ধু আমার পছন্দ না।
--কেন?
--জানিনা।
আনিকাকে পড়ানো শেষ করে যেই বের হব,ওমনি সামনে এসে হাজির....
--একটা কথা বলব?
--বলুন?
--আপনি কি সবাইকে আপনি করে বলেন?
--হ্যা,আসি!
--আর একটা কথা..
--বলেন?
--আমি আপনাকে ভাইয়া ডাকতে পারব না,
--তাহলে?
--আফরান ডাকি?
আমি অবাক দৃষ্টিতে মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে আছি,
এ কেমন ছাত্রী। মেয়ের সাহস দেখে নিজের কপালেই
বারি মাড়তে ইচ্ছে করতেছে। কিন্তু তারমধ্যেও নিজের অজান্তেই মুখে এক চিমটে হাসি বের হয়েছিল।বুঝতে
পারছিনা,আমি তাহলে ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি।কিন্তু আমি তো সেটা চাইনি,ভুলবশত সেটাই হয়েছে।
রাতে নিজের রুমের মধ্যে শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিলাম,
তখনই মোবাইলের টুংটাং শব্দ।হাতে নিয়ে দেখি,আনিকা বার্তা পাঠিয়েছে!
--কিছু কথা বলতে চাই?
--বলেন.
একমিনিট পর রিপ্লাই আসল.....
--আপনার সামনে গেলে বুকটা কেমন ধড়ফড় ধড়ফড় করে,কিছু বলতে চাইলে বলতে পারিনা ভুলে যাই।
সত্যি বলতে আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি।
--আপনার প্রপোজালটা গ্রহণ না করতে পারার জন্য দুঃখিত।
ঠিক
আধাঘণ্টা পর, কল আসল আমার মোবাইলে আনিকার নাম্বার থেকে। কলটা ধরার তেমন কোনো ইচ্ছে ছিল না।
তারপরও কলটা ধরলাম।
--হ্যালো।
--বাবা আমি আনিকার মা বলছি,
--জ্বি আন্টি,বলেন?
--তুমি একটু আমাদের বাসায় আসতে পারবে?
--কেন?
--আনিকা আধঘণ্টা ধরে নিজের রুমে দরজা লাগিয়ে আছে,এখনও খোলেনি।
--কি বলছেন,ঠিক আছে আমি আসছি।
প্রায় পনেরো মিনিট পর আমি আনিকাদের বাসায় পৌঁছালাম,এই শীতের মধ্যে।মাথায় শুধু একটাই চিন্তা ছিল, ভুল করে কিছু করে না বসে।
বাসার ভিতরে ঢোকে দেখি
সবকিছু ঠিকঠাক, আনিকাও পড়তে বসছে।
আমি গিয়ে আনিকার পাশে বসলাম...
--এখন আমি নিশ্চিত, যে আপনি আমায় ভালবাসেন!
না হলে আমার বিপদ শুনে এতরাতে আসতেন না।
--কাজটা তাহলে আপনার?
--এখনও বিশ্বাস হয়নি!
বলেই আমার গালে...... ৪৪০ ভোল্টের শক দিল।যা খেয়ে আমি মূর্তির মত দাঁড়িয়ে ছিলাম প্রায় পাঁচ মিনিট।
তারপরই কষে একটা থাপ্পড় মেড়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম। কিন্তু মাথায় আর একটা চিন্তা রয়েছে,
যে মেয়ে আমার সাথে এভাবে একটা কাজ করতে পারে, সে অন্যকিছুও করতে নিজেকে আটকাতে পারবে না।
সঙ্গে সঙ্গে ভিতরে ঢোকলাম!
দেখি আনিকা এখনও সেই জায়গায় বসে কাঁদতেছে।
আমি ওর পাশে গিয়ে বসলাম।
--দুঃখিত!!!
--(নিশ্চুপতার সহিত কেঁদে চলছে)
--ভালবাসি!!!
অতঃপর ছাত্রী, প্রেমিকায় রুপ ধারণ করল!!
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ