গল্প(: পাগল ছেলে!
লেখক: শেখ আলী(আফরান)
--মা!
--কি?
--মাথাটা একটু দেখবে।
--কেন?
--মনে হয় উকুন হয়েছে।
--দাড়া,আমি চিরুনি নিয়ে আসছি,আঁচড়িয়ে দেব।
--আচ্ছা।
মা চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়িয়ে দিচ্ছে,আর আমি খাতায় পরে থাকা উকুন মাড়ছি।আর গুনছি..(১,২,৩...................৪২)
--কয়টা আসছে?
--মা,৪২টা।
--কি?
--হ্যা।
--হবে না,মাথার মধ্যে তো উকুনের বাসা বানাচ্ছিস।
--মা!
--আচ্ছা,এত চুল দিয়ে তুই কি করবি।
--তোমরা কি কর?
--কি করি মানে!
--তোমাদের চুল লম্বা কেন?
--আমি ওত কিছু জানি না। (মা চলে গেলেন)
আমি অবাক দৃষ্টিতে খাতায় মরে থাকা উকুনের দিকে
থাকিয়ে আছি।
কিন্তু একটা কথা চিন্তা করে কোল কিনারা পাচ্ছিনা।
মেয়েদের তো অনেক লম্বা চুল,তাহলে তাদের মাথায় কি উকুন নেই।
শ্যাম্পু কিনার জন্য বাসা থেকে বের হতেই যাব,ওমনি দেখি দরজার সামনে এক রমনী দাঁড়িয়ে আছেন।
সামনে যেতেই দেখি মেয়েটা অপলক দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে আছে।
--এভাবে দেখবেন না,চোখে সমস্যা হতে পারে!
--তবুও!
--কি?
--দেখব।
--মানে!
--না,কিছু না।(আমতা আমতা করে)
--এখানে কি চাই?
--আপনাকে!
--মানে?
--না,কিছু না।
আর কিছু বলার সুযোগ না দিতেই মাইয়া জায়গা পদত্যাগ করলেন।
আমি সিঁড়ি দিয়ে নিচের দোকানে চলে গেলাম।
--কি নেবেন?
--আমাকে উকুন বিন্যাস নাশক শ্যাম্পু দিন।
--এই ইংলিশ শ্যম্পুটা নিন।
--শ্যাম্পু, আবার ইংলিশ।
--হ্যা।
বাংলা ব্যবহার করতে করতে এখন ইংলিশও ব্যবহার করতে হবে।
শ্যাম্পু নিয়ে বাসায় সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই দেখি সেই মাইয়া আমাদের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে উকি মাড়তেছে।
--কি চাই?
--না,না,কিছু না।
--নাম কি?
--স্বর্ণা!ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি।
--শুধু নাম জিজ্ঞাস করেছি, কোন ক্লাসে পড়ে সেটা জিজ্ঞাস করিনি!
--সরি!!
বলেই চলে গেল।এ কেমন মাইয়া!!
আমি শেখ আফরান,অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।আর এই উকি মাড়া মেয়েটা কে আমি জানি না।শুধু জানি ওরা আমাদের পাশের ফ্লাটেই থাকে।
বিকেলে ছাদে বসে আছি।তখনই মনে হল ছাদে আর কেউ একজন প্রবেশ করেছে।
আমি পিছনে ফিরে চেয়ে দেখি সেই মেয়েটা অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আমার দিকে।
--ড্যাবড্যাব করে কি দেখেন?
--কই!(আমতা আমতা করে)
--তাহলে এভাবে থাকিয়ে আছেন কেন?(ধমক দিয়ে)
--একটা কথা ছিল,
--কি?
--আমি না,
--আপনি কি?
--আপনাকে ভালবাসি!
শুনে তো আমি পুরাই ঠাস্কি খাইলাম।এরকম ডাইরেক্ট প্রপোজ, তাও আবার একটা মেয়ে।হ্যা বলব না না বলব,কিছুই বুঝতে পারছিনা।মুখটা হা করে দাঁড়িয়ে আছি।নিরবতা ভেঙ্গে বলে উঠল,
--মুখে মশা ডোকে যাবে।
মুখটা বন্ধ করে মেয়ের দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি।
রক্তিম লাল সূর্যটা অস্ত গিয়েছে অনেকক্ষণ হল,
আমি তার ঠিক পাঁচ হাত দূরত্বে নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। নিরবতা ভেঙ্গে বলে উঠল....
--আমার উত্তরটা?
--কিসের?(এখনও চেয়ে আছি)
--প্রপোজ তো করলাম!
--আমার তো চোখ সরছে না।
--কি?
ডিপ্রেশনে ভোগছি,কি করব।একসেপ্ট করব,না করব না।করেই দেখি!!
--ওহে রমনী,
আমি ভালবাসি তোমায়!!
শুরু হল,ভাড়াটিয়া বনাম ভাড়াটিয়ার প্রেম।
পরেরদিন, ভার্সিটি থেকে ফিরে এসে আবার মাথা আছড়ালাম। তখন প্রায় ৩০ টা উকুন আসছে।
আমি অসহায়ের দৃষ্টিতে মরে থাকা উকুনের দিকে চেয়ে আছি। এখন তো মনে হচ্ছে এক বছর ধরে যে চুল আমি রেখেছি, সেটা কেটে ফেলতে হবে।না! না! এটা কখনও সম্ভব নয়।
সেই মুহূর্তে কলিংবেলের আওয়াজ!
দরজা খোলে দেখি আনিকা দাঁড়িয়ে আছে,আমাকে দেখেই হাসতে হাসতে মাটিতে পড়ে যাবার মত অবস্তা।
--হাসছ কেন?
--চুলের একি অবস্থা, পুরাই পাগল লাগছে!
--আমি পাগল!
--না, লাগছে।
রাগটাকে সংযত করে বক্তব্য শুরু করলাম।
--কালই পাবনা চলে যাব!
--কেন?(অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে)
--শুনেছি ওখানে সব থেকে ভাল মানসিক হাসপাতাল আছে তাই!
--আমি তো মজা করে বলছি!
--কিন্তু আমি তো সত্যি পাগল! (মাথাটা চুলকিয়ে)
--মানে?
--মানে কি?আমি পাগল পাগল পাগল!আর তুমি কে সুন্দরী?
--তুমি আমাকে চিনতে পারছ না,
--না,তুমি কে গো?
--.....(অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে)
--আমি খাব!আমি খাব!
--কি খাব বল?
-- গরুর দুধ খাব😜
--কি?
আমি দরজা লাগিয়ে উচ্চস্বরে হাসতে লাগলাম।এই মেয়ের অবস্থা দেখে আমি এতক্ষণ ধরে কিভাবে না হেসে থেকেছি আমি নিজেই জানি না।
মাইয়া দেখ মজা আমাকে পাগল বল কিভাবে?
নিজের রুমে বসে আছি।তখনই আবারও কলিংবেলের আওয়াজ!
খোলে দেখি ছোটু( স্বর্ণার ভাই) দাঁড়িয়ে আছে।
--কি হয়েছে!
--ভাইয়া,আপু?
--কি?
--আপু দরজা খোলছে না,
--মানে?
--আধঘন্টা হয়ে গেছে,এখনও দরজা খোলেনি!কোন কথাও বলছে না!
--কি বলছিস!
--হ্যা।
--চল তো দেখি।
স্বর্নার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।কিন্তু দরজা খোলছে না,মাথায় তো অনেক কিছুই ঘুরছে।যদি কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে।
--আনিকা দরজা খোল!
--.........(নিশ্চুপ)
--আনিকা আমি পাগল নই,দরজাটা খোল!
আমার প্রায় কেঁদে ফেলতে ইচ্ছে করছিল।তখনই দরজা খোলার শব্দ পেলাম।
রুমের মধ্যে ডোকেই দেখি মেয়েটার মুখে একটা বিজয়ের হাসি।
--কি শুধু নিজে ভয় দেখাতে পার, আমি পারিনা।
--কি?
আমি অজ্ঞান হওয়ার বদলে সত্যিই পাগল হয়ে গেলাম।
কিন্তু কেউ বিশ্বাস করে না কেন?
হা আমি পাগল! আমি পাগল!!আমি পাগল!!!
.........সমাপ্তি।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ