#গল্প_(৪৭)_ব্রেকাপ!
(প্রথম পর্ব)
লেখক: শেখ আলী(আফরান)
--তুমি কি আমায় সত্যি ভালবাস?
--হঠাৎ এ কথা!
--কেননা, আমার এখনও বিশ্বাস হয়নি।
--যেখানে বিশ্বাস নেই, সেখানে ভালবাসা থাকবে কিভাবে?
--একটা কথাও না!
--সত্যি কথা!
--তর মুখ সেলাই করব।
--এরকম করছেন কেন?
--তো কি করব, শালা প্রেম করতেছি দুইবছর, আর একবারও আমায় তুমি বলিসনি।
--আমি তো আপনি বলতে ভালবাসি,
--যদি আর একবার আপনি বলছিস তো..
--তো কি?
--ব্রেকাপ!!
বলেই চলে গেল,আমি অবাক।আপনি বললে না কি ব্রেকাপ,এ কেমন ব্রেকাপ। মাথায় তো কিচ্ছু ডোকছে না,কেন যে প্রেম করতে গেলাম।
আমি শেখ আফরান,আর ইনি আমার প্যারা,প্রেমিকা
আনিকা। যার একটাই কাজ আমাকে প্যারা দেয়া।
ভার্সিটি ক্যাম্পাসে বসে আছি একা। হঠাৎই আমাদের ডিপার্টমেন্টের এক মেয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
--কি চাই?
--আপনাকে!
--মানে?
--একাউন্টিং এর একটু অঙ্ক দেখিয়ে দিবেন!
--কোন অঙ্ক?
--ওই যে ট্রায়েল ব্যালেন্স!!
--এটা তো অনেক সহজ,আচ্ছা আমি দেখিয়ে দিচ্ছি!
হঠাৎ কোথা থেকে আনিকা এসে বলে উঠল,
--তা আমাকে একটু দেখিয়ে দিবেন?
--আপনি যাননি?
--এই তুই আবার আমাকে আপনি বললি।
--দুঃখিত, অভ্যাস হয়ে গেছে,
--তা স্যার কখন হলেন।
--স্যার, কে স্যার!
--আপনি!
--কে বলল?
--না হলে কেউ অঙ্ক বুঝতে আসে।
--উনি বুঝেন নাই,তাই একটু বুঝিয়ে দিচ্ছি!
--তা আমাকে তো কখনও দেননি।
--দরকার তো পড়েনি!
--তুই বুঝাইবি না?
--না!
--ব্রেকাপ।
মাইয়া দুচোখ ভাজা লাল মরিচের মত অগ্নি দৃষ্টিতে চেয়ে চলে গেল। তখনই পাশের মাইয়া বলে উঠল।
--ওটা কে?
--প্যারা!
--মানে?
--প্রেমিকা।
--অনেক সুন্দর কিন্তু!
--যতটা সুন্দর, ঠিক ততটাই রাগী।
--কি বলেন?
--হ্যা,
--তাহলে তো আপনার কপালে শনি আছে।
--হুম,দেখেন না কথায় কথায় ব্রেকাপ করে দেয়।
রাত প্রায় একটা বাজে, আমি লাগাতার আনিকার ফোনে কল দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু ধরছে না। অসহ্য হয়ে
আমি নিদ্রায় চলে গেলাম।
রাত প্রায় দুইটা বাজে, মোবাইলের তীব্র আওয়াজে ঘুমটা আর হল না। ঘুম ঘুম চোখে ফোন ধরলাম।
--হ্যালো!
--ঘুমে!
--হ্যা,
--বাসার সামনে এস?
--এখন।
--হ্যা,
--কি বলেন, এতরাতে, আর এই শীতে!
--আসবি কি না?
--তাই বলে এতরাতে?
--হ্যা, আসবি কি না?
--না,
--যা ব্রেকাপ!
লেপটা ছেড়ে, মোবাইলটা পকেটে ভরে , চাদরটা গায়ে জড়িয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। আনিকাদের বাসার সামনে এসে ওকে কল দিলাম।
--হ্যালো,
--বারান্দায় আসুন?
--তুই এখনও আপনি বলবি!
এই রে এখন কি করি। এটা তো অভ্যাস হয়ে গেছে, পাল্টাই কি করে।আর এই মেয়েকে আপনি করে বললেই বা সমস্যা কি?
--হ্যা, তুমি!
--আসছি।
..........চলবে।
#গল্প_(৪৭)_ব্রেকাপ
(দ্বিতীয় পর্ব)
লেখক: শেখ আলী
আমি আনিকাদের বাসার নিছে দাঁড়িয়ে আছি। বারান্দায় এসেই আমাকে কল দিল!
--হুম, বলেন,
--কি?
--কিসের জন্য ডাকলে?
--এমনি!
--মানে? এতরাতে আপনি আমায় এমনি ডেকেছেন?
--হ্যা।
রাগান্বিত হয়ে, চোখ দুটো লাল করে মেয়েটার দিকে চেয়ে আছি!
--কিন্তু কেন?
--এটা শাস্তি।
--কিসের?
--ওই মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য।
--আরে ওই মেয়ে তো সাহায্যের জন্য এসেছিল।
--আমি কিছু জানি না।
বলেই বারান্দা থেকে চলে গেল, আমি এক বুক হতাশা নিয়ে বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি। শীতে প্রায় পুরু শরীর কাঁপছে। এই মেয়ের শাস্তির হাত থেকে বাচার কোন উপায় খোঁজে পাচ্ছি না। তখনই মোবাইলটা ও বেজে উঠল, মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি বাসা থেকে কল এসেছে। আমি কাপাকাপি হাতে কলটা ধরলাম।
--হ্যালো!
--তুই কোথায়?(মা)
--আমি তো বাহিরে!
--বাইরে কি করিস এত শীতের মধ্যে।
--না,গরম লাগছিল তাই বের হয়েছি,
--তাড়াতাড়ি আয়?
--আসছি।
দূর কেন যে এই মেয়ের সাথে প্রেম করতে গেলাম, এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি,এ কেমন বজ্জাত মেয়ে।
কিন্তু এ শাস্তি থেকে নিজেকে বাচাব কিভাবে?
আর না বাচলে এই শীতেই আমাকে মেরে ফেলবে।
হঠাৎ একটা আইডিয়া মাথায় আসতে না আসতেই বিজয়ের হাসিটা মুখে ফোটে উঠল।
আমি খুব জোড়ে,চিল্লাচিল্লি করা শুরু করে দিলাম।
আর বলতে লাগলাম আমি তোমাকে ভালবাসি আনিকা।
কথাটা এমন জোড়ে বলেছি, যাতে আনিকার বাবার কান ওব্ধি যায়। তখনই আনিকা বারান্দায় আসল,
--কি হয়েছে কুকুরের মত চিৎকার করছ কেন?
--আমি কুকুর!
--না হলে কেউ এমন ভাবে চিৎকার করে।
অপমান, আমাকে। ইচ্ছে করছিল নিজের মাথায় নিজেই হাতুড়ে দিয়ে বারি মাড়ি। এমন মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখি কি করে। কিন্তু এর পাগলামি গুলা ছাড়া তো আমার দিন কাটবে না। তখনই বলে উঠল,
-- বাসায় যাও,আর কাল ভার্সিটি দেখা হচ্ছে।
--আচ্ছে।
আমি হাটছি,এই শীতে।আর মেয়েটার চোখে বিজয়ের সেই হাসি। আমি মুগ্ধ হয়ে সেই হাসিকৃত মুখটা দেখি।
...
সকালে ঘুম থেকে উঠতেই পারছিলাম না। শরীরটা কেমন যেন হয়েছে। মনে হচ্ছে কালকের শীতের কাঁপুনিতে আজ জ্বর হয়ে গেছে।
তখনই মা এসে রুমে প্রবেশ করলেন!
--কি রে কি হয়েছে?
--শরীরটা কেমন যেন লাগছে।
--কি বলছিস, দেখি!
মা কপালে, হাতে হাত দিয়ে দেখলেন! আমি মায়ের চোখে বিষন্নের চাপ দেখেছিলাম।
--গায়ে তো অনেক জ্বর! আমি ডাক্তার কে কল দিচ্ছি।
তখনই আমার মোবাইলের তর্জনগর্জন শুরু!
হাতে নিয়ে দেখি আনিকার কল,
--হ্যালো,
--তুই কই রে?
--বাসায়,
--এখনও ঘুমাচ্ছিস,
--না।
--তাহলে ভার্সিটি আসলি না কেন?
--জ্বর।
--কি জ্বর,কিভাবে হল।
--কাল যে শীত খাইলাম,তাতে জ্বর হবে, না তো কি হবে।
--দাড়াও,আমি আসছি,
--কোথায়,
--তোমাদের বাসায়।
বলেই কলটা কেটে দিল। এদিকে আমি আছি মহা চিন্তায় মাকে কি বলব। এই মেয়ে তো আসবেই আসবে।
তবে যতই পাগলামি করুক না কেন,ভাল কিন্তু আমাকেই বাসে, আর আমিও। কিন্তু সেটা অন্য ভাবে প্রকাশ করে।
.....চলবে।
#গল্প_ব্রেকাপ! (তৃতীয় পর্ব)
লেখক: শেখ আলী
ঠিক বিশমিনিট পর,হঠাৎই আমার রুমে কোন রমনীর আগমন।
আমি মুগ্ধ নয়নে চেয়ে আছি সেই রমনির দিকে,কেননা খুব চেনা চেনা লাগছিল সেই রমনীকে।
তখনই রমনী বলিয়া উঠলেন!
--আফরান ভাই!
--কে গো আপনি।
--আমাকে চিনতে পারছেন না।
--না রমনী।
--আমি স্বর্ণা, (খালাতো বোন)
--ওহ, স্বর্ণা। তা আমাদের বাড়িতে কখন আসলি,
--এই তো একটু আগে।
--ওহ,
--শুনলাম তোমার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে,
--হ্যা,
--কিভাবে হল,
--জ্বর কিভাবে হয়,ঠাণ্ডা লেগে।
--কিন্তু মুখ তো অন্য কথা বলছে।
--তুমি কিভাবে বুঝলে,
মেয়েটা বেডের একপাশে এসে বসে পড়ল।
তখনই রুমে আনিকার প্রবেশ,
কিন্তু আজ তাকে একদম অন্য রকম লাগছিল।
--দুঃখিত, আমি মনে হয় ভুল সময় চলে এসেছি।
মেয়েটার কথায় কেমন যেন একটা কষ্ট ছিল।
আমি বলে উঠলাম।
--ভুল সময় মানে,
আর কিছু না বলেই রুমে থেকে চলে গেল। আমি বিছানা থেকে উঠে,আনিকার পিছু নিলাম। মেয়েটা সোজা বাসা থেকে বের হয়ে গাড়ী করে চলে গেল।
পিছু ডেকেও আটকাতে পারলাম না।
মোবাইলটা বের করে বারবার কল করেই যাচ্ছি, কিন্তু মোবাইল বারবার বন্ধ দেখাচ্ছে।
আমি খোঁজে পাচ্ছিনা,এরকম আচরণ করার মানে কি?
বাসার মধ্যে চলে এলাম। কিছুই ভাললাগছে না, কি এমন দেখল যে আমার সাথে এরকম আচরণ করল,সেটাই খোঁজে পাচ্ছিনা। অপ্রত্যাশিতভাবে শোফার মধ্যে বসে আছি, তখনই স্বর্ণা এসে পাশে দাঁড়াল।
--খোঁজে পাইছেন?
--না।
--মেয়েটা মনে হয়, ভুল কিছু ভেবে আছে।
--আমিও সেটাই মনে করছি।
--তা এ মেয়ের সাথে প্রেম করলে কিভাবে,আমি যতদূর জানি তুমি কখনও কোনোদিন মেয়েদের কে প্রেম নিবেদন করতে পারবে না।
--হ্যা,তাই তো মেয়েটা নিজে এসে প্রেম নিবেদন করেছিল।
--তা এখন কি করবে!
--ওর সাথে দেখা করতে হবে।
--খোঁজে পাবে কোথায়।
--আমি জানি, এসময় ও কোথায় আছে।
--তা এ শরীর নিয়ে যেতে পারবে,
--যেতে তো হবেই।
বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম, আমি জানি মেয়েটা রাগ করলে একটা জায়গায় যায়।আমি সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলাম।
দেখি আনিকা মেয়েটা নদীর পাড়ে একা বসে আছে।
আমি পাশে গিয়ে বসলাম।
--আমার পাশে বসার অধিকার আমি কেড়ে নিয়েছি।
মনে হচ্ছে অনেকটা রেগে আছে।
--তুমি যা ভাবছ তা সঠিক তো না ও হতে পারে।
--আজ হঠাৎ তুমি,
আমি নিজেই ভেবাচেকা খেয়ে গেলাম, মুখ দিয়ে তুমি আসাতে।
--.......(আমি নিশ্চুপ)
--আমাকে আর ফোন না দিলে খুশি হব।
--আমাকে অবিশ্বাস করছ,আর একটা সম্পর্কে বিশ্বাস্টাই কিন্তু আসল।
--আর আমার চোখের দেখা।
--দেখ, অনেকটা সময় আমরা যা দেখি, তা কিন্তু সঠিক না ও হতে পারে।
--তোমার মত আমার চোখে প্রবলেম নেই, যার কারণে আমার দেখা কখনও ভুল হতেই পারে না।
খুব একটা অবাক হয়েছি মেয়েটার কথায়,আবার অনেকটা পরিমাণে কষ্টও পেয়েছি,যা গোপন রেখে দিয়ে হাসিমুখে মেয়েটার দিকে থাকিয়েছি।
--আসি!!
আমি আপনমনে নদীতে প্রবাহিত পানি,আর কচুরিপানার দিকে চেয়ে আছি। ইচ্ছে করছিল, কিছু একটা বলি।
--সম্পর্কের ইতি কি এখানেই টানলে!
--হ্যা,
--ওহ,তা একটা শেষকথা ছিল।
--বল?
--আমি রাগ কি জিনিস তা জানি না,তবে অভিমান কি জিনিস তা আমি জানি। কারো উপর কখনও রাগ আমি করিনা,বা করিনি। তবে অভিমান অনেই করেছি, আর সেই অভমানের দেয়ালটা কিন্তু অনেক উঁচু। যা চাইলেই ভাঙ্গা সম্ভব নয়।
--আমি আর আসব না, তাই অভিমান ভাঙ্গার কোন কারণ দেখিনা,আসি।
আমি মেয়েটার চলে যাওয়ার দিকে চেয়ে আছি।
খুব ইচ্ছে করছে তাকে আটকানোর, কিন্তু সেই সামর্থ্য যেন হারিয়ে ফেলেছি। অপ্রত্যাশিতভাবে সেই জায়গার মধ্যে বসে আছি। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে,যেন অশ্রু জড়াতে চোখ দুটো অধিক আগ্রহ নিয়ে বসে আছে।
চশমার ফাক দিয়ে অশ্রু বেয়ে পড়ছে চোখ দিয়ে।
আমার এখনও বিশ্বাস হয়নি, এই ব্রেকাপ নিয়ে।
মোবাইলটা হঠাৎই কেপে উঠল, হাতে নিয়ে দেখি বাসা থেকে কল। কলটা ধরলাম,
- কোথায় তুই(মা)
- আসছি।
- তাড়াতাড়ি আয়।
বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছি। যে সম্পর্কে বিশ্বাস নেই
সে সম্পর্ক কখনও ঠিকে তাকে না। কিন্তু দুষী আমি না,এটা বুঝার ভুল।
আমি হাটছি অজানা পথে, আজ কেন জানি না নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছিল। চারিদিকের পরিবেশটাও আজ, কেমন জানি।
............চলবে।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ