#গল্প_অভিশপ্তের_কারাবাস!
লেখক: শেখ আলী
কলেজের গেইট ধরে ঢোকেই ব্যবসায়ে বিভাগের ক্লাসরুমটার মধ্যে ঢোকে পড়লাম।
শেষের একটা বেঞ্চিতে ব্যাগটা রেখে, একটু বের হলাম হাত মুখ ধুতে। টিউবওয়েলের পাশে এসে সামনে থাকাতেই আমার বুকের ধড়ফড়ানি দ্বিগুণ বেড়ে গেল।
মনে হচ্ছে প্রেশার উঠানামা করছে অটোমেটিক।
বুকের বামপাশটা একহাত দিয়ে ধরে আমি অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি সামনে থাকা রমনীর দিকে।
আমার চেয়ে থাকা দেখে রমনী রাগান্বিত হয়ে টিউবওয়েল ছেড়ে চলে গেলেন।
আমি এখনও মুগ্ধ নয়নে থাকে দেখে চলেছি।
হঠাৎ কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম, চেয়ে দেখি
নুহাস (আমার ক্লাসমেট).
--কি রে শুধু দেখবি না কি?
--কি করব বল, বুকের ধড়ফড়ানির বেপারটা না এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
--তারজন্য এতদিন লাগে,সেই ক্লাস টেন থেকে দেখে আসছি, মেয়েটাকে শুধু দেখিস।
--তো কি করব?
--কথা তো বলতেই পারিস।
--সামনে গেলেই তো হাত পা কাঁপে, কথা বলব কিভাবে?
--তাহলে বসে বসে আঙুল শুষ।
ফ্রেন্ডও রাগ করে চলে গেল।
আমি শেখ আফরান,এবার ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র। আর ইনি আনিকা,আমার ঠিক গফ না,মানে ওই আর কি?
ক্লাসরুমে ঢোকেই লাস্ট বেঞ্চিতে বসে পড়লাম। স্যার এসে পড়াচ্ছেন কিন্তু আমার মন সেদিকে নয়,আমি তো সেই মায়াময়ী দুইটা চোখের সন্ধানে।
প্রায় দশমিনিট খোজার পর, পেলাম সেই মায়াময়ী রূপসীকে।
ক্লাসের ফাঁকে আমি অপলক দৃষ্টিতে মেয়েটার দিকে চেয়ে আছি।
শ্যামল মায়াকান্ত চেহারার অধিকারী মেয়েটা হঠাৎই আমার দিকে চেয়ে ভয়ানক বিদুষী রূপধারণ করলেন। যা দেখে আমি প্রায় অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্তা।
শেষ ক্লাসটা আর দেখা হয়নি তাকে।
কলেজ শেষে আমি বসে আছি সেই বেঞ্চিতে, এখন শুধু অপেক্ষায় মেয়েটা আসার। তখনই মাইয়া ব্যাগ নিয়ে
আসতে লাগলেন, আমার দিকে।
বুকটা ধড়ফড় করছে, আমি চোখদুটো নামিয়ে ফেললাম নিজ থেকে। মেয়েটা পাশ ফিরে চলে গেল,
আর আমি বসে আছি সেখানে।
বসা থেকে উঠে দাড়িয়েছি, বাড়ি যেতে হবে। তখনই নুহাস আসল,,,
--কি রোমিও শুধু দেখেই গেলি।
--হ্যা।
--আচ্ছা তর সমস্যাটা কি?
--সমস্যা কিসের?
--এই যে কথা বলতে পারিস না।
--দুস্ত আমি চাইনা, কেউ আমাকে নিয়ে কোনো বাজে কমেন্ট করুক,তাই সবার সামনে কোনো মেয়ের সাথেই কথা বলতে পারিনা।
--তো আমরা দেখলে সমস্যা কি?
--পরে আমার সাথে যাতে কেউ ফাজলামি না করে তারজন্য।
--ফাজলামি করলে সমস্যা কি?
--আমি পছন্দ করিনা।
--এবার চল, বাড়ি ফিরা যাক।
.........
আসরের আযান হতেই রুম থেকে বের হলাম মসজিদের উদ্দেশ্যে।
সালাত আদায় করে, হাটা ধরলাম নদীর দিকে।
প্রতিটা বিকেল আমি,এখানেই কাটাই।
নদীর পাড়ে এসে বসে পড়লাম ঘাসের উপর।
স্বচ্ছ পানির দিকে আপনমনে চেয়ে আছি,ভাবনায় শুধু একজনই আছে,সে হল আনিকা।
যার মায়াকান্ত মুখ দেখে আমি বিস্মিত, মুগ্ধ।
যাকে ভুলতে পারিনা কখনও। সবসময় যে থাকে মনের গহীনে। তাকে বন্ধি করতে চাই মনের কারাগারে।
রক্তিম লাল সূর্যটা এখান থেকে অনেক সুন্দর লাগে।
একসাথে দুটো সৌন্দর্য দেখা যায় এখান থেকে।
আমি মুগ্ধ নয়নে,নিরবে নির্জনে দেখে চলেছি সেই সৌন্দর্যকে।
চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসছে। রক্তিম লাল সূর্যটাও ডুবে গেছে। মসজিদে আযানের সুর ভেসে আসছে, বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম মসজিদের উদ্দেশ্যে।
সালাত আদায় করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বেশি দূর নয়, পাঁচমিনিটের রাস্তা। আমি আবছা অন্ধকারের মধ্যে আমি হেটে চলেছি।
বাড়িতে আসতেই মা এসে হাজির...
--প্রতিদিন কোথায় যাস এসময়, খোঁজে পাইনা।
--এই তো নদীর পাড়ে ছিলাম।
--তা নদীর পাড়ে কি করিস,
--বসে বসে পানি দেখি।
--কি?
--হ্যা।
--আর কোনো কাজকাম নাই না কি?আর দিন দিন কেমন বদলে যাচ্ছিস।
একাউন্টিং বইটা,আর খাতাটা নিয়ে বসলাম অঙ্ক করতে। একা একা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু তবুও অঙ্ক বুঝতেছি।
তখনই মা চা নিয়ে হাজির হলেন.....
--এই নে তর চা?
--টেবিলের উপর রেখে দাও।
--খেয়েনে, না হলে ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
--আচ্ছা।
রাতে শুয়ে শুয়ে ফেইসবুকে লগইন করছিলাম। পাসওয়ার্ডটা লেখতেই পাশে থাকা ভাই বলে উঠলেন
আমি দেখে ফেলেছি।
যা শুনে আমার সমস্ত শরীরটা কেঁপে উঠল। কেননা পাসওয়ার্ড ওই মেয়ের নামে।
ভয়টা বেশি পেয়ে গেছি। যার ফলে মোবাইলটা পাশে রেখে ঘুমানোর চেস্টা করলাম। কিন্তু ঘুম তো আসছে না, চোখের পাতায় শুধু ওই মেয়ে ভেসে আসছে।
অন্ধকার রুমের মধ্যে, আমার চোখ দুটো খোঁজে
ওই মায়াকান্ত চোখকে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়েছি তা মনে নেই।
সকালে ঘুম ভাঙ্গল মায়ের ডাকে...
--কলেজ যাবি না?
--হ্যা যাব তো।
--তাড়াতাড়ি উঠ।
...
কলেজে এসে আমি খুঁজতেছি আমার আমিকে। মানে ওই মেয়েকে। নাহ, কোথাও খোঁজে পেলাম না ওই মায়াকান্ত চোখ দুটো।
তখনই রাস্তার দিকে চোখ পড়ল,হ্যা মেয়েটা আসছে!
আমি ক্লাসরুমের মধ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে একটা বেঞ্চিতে বসে আছি। কালসরুমে এসে মেয়েটা আমাকে দেখে, কমনরুমের দিকে হাটা ধরল,
কেমন একটা ভয়ানক দৃষ্টিতে থাকায়, যা দেখলেই আমার ভিতরের সবকিছু ঘুলিয়ে যায়।আর বুক ধড়ফড়ানিটা তো আছেই।
ক্লাসরুমের ফাকে আজও মেয়েটাকে দেখে চলেছি ওর অজান্তেই। কিন্তু কথা যে বলতে পারিনা, শুধু দেখলে তো আর হবেনা। যে করে হউক কথা বলতে হবে,কিন্তু কি করে?
ক্লাস শেষ হতেই নুহাস এসে দাঁড়াল...
--এই ভীতুর ডিম, তুই আমার বন্ধু, এটা ভাবতেও আমার লজ্জা লাগে।
--আমাকে ভীতুর ডিম বললি!
--তাহলে কি বলব!শালা দুইবছর ধরে দেখতেছি, শুধু দেখেস।কিন্তু আজও কথা বলতে পারলি না।
--কালকেই ওকে প্রপোজ করব!
--সত্যি
--হ্যা,কিন্তু....
--কিন্তু কি?
--মাইয়া যদি না করে দেয়।
--সেটা পরের বেপার,আর তুই এত নেগেটিভ ভাবছিস কেন?
--না রে দুস্ত,চিন্তা হচ্ছে অনেক। রাতে ঘুমাতে পারিনা
এসব চিন্তায়।
--শুন,ওসব একটু হয়!
--দুস্ত, প্রপোজ তো করব,কিন্তু আমার তো ওর সামনে গেলেই হার্ট এট্যাকের মত অবস্তা হয়,তাহলে প্রপোজ করব কিভাবে?
--মনে একটু সাহস জাগা !
--না রে আমাকে দিয়ে হবেন,
--শুন, তাইলে তুই একটা চিঠি লেখে বলে দে?
--এই তো, সুন্দর একটা বুদ্ধি দিলি।তাহলে আমি কালকেই একটা চিঠি লিখে নিয়ে আসব।
--আচ্ছা।
যাক শেষমেশ একটা বুদ্ধি পেলাম। এবার তাহলে বলা হবে আমার না বলা কথা গুলা।
রাতের অন্ধকারে মোমবাতি জ্বলিয়ে লেখতে বসেছি তুমি সেই মায়াকান্তের জন্যে।
প্রিয় মায়াকান্ত!
মায়াকান্ত নামটা দেয়ার জন্য দুঃখিত। কেননা
আমি আপনার মায়ার জালে নিজেকে বন্ধি করে ফেলেছি,তাই মায়াকান্ত নামটা দেয়া। আসলে কিভাবে কি বলব কিছুই মাথায় আসছে না।
আসলে আপনাকে আমার অনেক ভাললাগে,মানে অনেক ভালবাসি বলতে পারেন।
কিন্তু ভীতু হওয়ার ধরুন কিছুই বলতে পারছিনা,সরাসরি।তাই এই প্রাচীন কালের চিঠি দিয়ে
বলতে চাইলাম আপনাকে,আমার মনের ভিতরে থাকা
কিছু অগোছালো কথা। যা দুইবছর ধরে জমা আছে মনের গহীনে।
হ্যা আমি আপনাকে ভালবাসি!আপনার উত্তরের অপেক্ষায় থাকব।
--ইতি
আফরান।
চিঠিটা পকেটে ভরে পরেরদিন কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
কলেজে এসেই নুহাসের সাথে দেখা...
--লিখেছিস!
--হ্য।
--দেখি?
--তুই কেন দেখবি!
--শালা বুদ্ধি দিলাম আমি!
--আচ্ছ এটা ওকে দিব কিভাবে?
--কেন, হাত দিয়ে দিবি।
--না রে, ওর সামনেও আমি যেতে পারব না।
--কেন?ওহ তুই তো আবার ভীতু।
--কি করব বল, হাত পা তো কাপে!
--তাইলে মর গিয়ে।
--এভাবে বলছিস কেন?
--তো কিভাবে বল?
--একটা বুদ্ধি দে না রে!
--দাড়া,দেখি মাথায় কিছু আসে কি না!
দুইজনে বুদ্ধি বের করতেছি,হঠাৎ দেখি মাইয়া কলেজে এসে পড়েছেন। সাথে একটা ছেলে,
--ওই ছেলেটা কে রে?
--একি গ্রামের দুইজন, তাই একসাথে আসে।
--ওহ,
--এই আমরা যদি ওই ছেলেকে দিয়ে চিঠিটা দেই,তাইলে কেমন হয়।
--ঠিক বলেছিস।
তারপর আনিকার সাথে আসা ছেলেকে সব বলে তারপর রাজী করিয়ে চিঠিটা দিয়ে আসলাম।
কিন্তু উত্তর যদি নেগেটিভ হয়।
সেই চিন্তায় সারাটা রাত আমি ঘুমাতে পারিনি।এই প্রেম জিনিসটা তো মহাজ্বালা।
একবার বলি যে হ্যা বলবে,আরেকবার না!
হঠাৎ মনে হল গেইম খেলে দেখি কি হয়। যেই ভাবা, সেই কাজ,দুই টুকরো কাগজ নিয়ে, দুইটাতে হ্যা, বা না লিখে কাগজ দুটো বাজ দিলাম।
চোখটা বন্ধ করে একটা কাগজ তোলে নিলাম।
এবার চোখ দুটো খোলে কাগজের বাজটা খোলে
হতাশার নিশ্বাস ফেললাম। না ই উঠল।
মাইয়া কি তাইলে না কইরা দিব।
রাত দুটো বাজে। মোবাইলটা হাতে নিয়ে নুহাসকে কল দিলাম। পাঁচবারের মাথায় নুহাস কল ধরল!
--দুস্ত!
--কি রে এই দুইটার সময় ফোন দিলি?
--শালা শান্তি মত ঘুমাচ্ছিস, আর আমি ভেবে শেষ।
--কেন কি হয়েছে?
--চিন্তা হচ্ছে মাইয়া যদি না করে দেয়।
--কি হবে ছ্যাঁকা খাইবি।
কলটা কেটে দিলাম। এ ফাজলামি করা শুরু করে দিয়েছে।
বিছানার মধ্যে পড়ে রয়েছি, ঘুমটাও আজ আসছে না।
হঠাৎ ভাইয়ার ডাক....
--কি রে এখনও ঘুমাস নাই?
--না,কিসের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল!
--ঘুমা!
বলে ভাইয়াও ঘুমে চলে গেলেন।
রুম থেকে বাইরে চলে আসলাম। মুক্ত আকাশটা দেখছি, কেমন অন্ধকারে ডাকা পড়েছে আজ।
হাজারো মেঘের ভিড়ে চাঁদটা যেন হারিয়ে গেছে।
আমি সেই কালো অমাবস্যার মত রাতের মধ্যে বসে আছি।
আজকের আকাশটা কেমন নিঃসঙ্গ,একাকিত্ত।
সবকিছুর চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে, রুমের দিকে পা বাড়ালাম। চেস্টা করে দেখি ঘুম আসে কি না।
হাজারো চেস্টার পর কখন জানি ঘুমিয়ে পড়েছি তা নিজেও জানি না।
পরেরদিন সকালে ঘুমটা ভাঙ্গল এলার্মের শব্দে।
ঘুম থেকে উঠে,ফ্রেশ হয়ে ছোটলাম কলেজের দিকে।
আজ কেমন উদাস উদাস লাগছিল নিজেকে।
কলেজের গেইট দিয়ে ঢোকতেই নুহাস এসে সামনে দাঁড়াল!
--কি রে,তর এই অবস্তা কেন?
--আর বলিস নে, কাল সারারাত ঘুমাতে পারিনি।আর তকে তো কল করেছিলাম।
--ওহ,তা চোখ যে পরিমাণে লাল হয়েছে,তাতে তকে একজন জুয়ারি লাগছে।
--কি?
--হ্যা।
তখনই পাশে এসে সেই ছেলেটা দাঁড়াল....
--কি কবর ভাই!
--কই কিছু না(ছেলেটা।)
--মাইয়া কি কিছু কইছে?
--হ্যা,বলল এখন পরীক্ষা! এসব নিয়ে সে চিন্তা করেনি।
--ওহ,(হতাশার নিশ্বাস)
--তাহলে পরীক্ষার পর তো হতে পারে!(নুহাস)
--হ্যা এটা ঠিক বলেছে(আমি)
তারপর আর শুধু চোখেই দেখেছি, কিছু বলতে পারিনি। কেননা ও পরীক্ষার সময় এসব নিয়ে চিন্তা করতে চায়নি।
কিন্তু আমি ভাল ভাবে পরীক্ষাটা দিতে পারিনি। মাথায় ভূত চেপে বসেছিল ওই মেয়েটা।সবসময় মনের ভিতর থাকত।
প্রতিটা বিকেল আমি বসে থাকতাম ওই নদীর পাড়ে।
আড়ালে কাঁদতাম,
প্রতিটা রাত চোখ দুটো অশ্রু জড়াতে শুরু করে দিত।
কেন যে কান্না আসত সেটাই জানতাম না।
পরীক্ষাটা শেষ হওয়ার পর আমি জানতে চেয়েছিলাম,
তার মতামত। ঠিক সেই মুহূর্তে, উত্তরটা শুনে আমি নিস্তব্ধ, নিঃসঙ্গ, নির্জন হয়ে গিয়েছিলাম। এতটা প্রতীক্ষার পরও যে আমি এরকম একটা উত্তর পাব তা আমি নিজেও জানি না।
এরপর থেকেই নিজেকে বিবাগী করে রেখেছিলাম।
অন্ধের মত কাউকে ভালবেসে ছিলাম, তাই এরকম অবস্তা।
জীবনটা অন্ধকারে পরিণত হয়ে ছিল আস্তে আস্তে।
নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী করে, অভিশপ্তের মত বসবাস শুরু করেছিলাম। সবকিছু থেকে আড়াল হতে চেয়েছিলাম।
তাই তো সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছিলাম এই অচেনা শহরে। বসবাস শুরু করেছিলাম নতুন এক জায়গা, একদম নতুনভাবে। কিন্তু অতীথটা ভুলা সম্ভব হয়নি কখনও। প্রতিটা মুহূর্তে আমি মনে করেছি সেই অন্ধকার অতীথকে।
নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী করে লেখালেখিতে প্রবেশ করেছিলাম,সবকিছু ভুলে থাকতে। তবুও অতীথটা মনে পড়ে যায়। যার ফলে কিছুটা খোঁজখবর নিয়েছিলাম।
যেনে ছিলাম সে এই শহরের কোনো এক ভার্সিটিতে
ভর্তি হয়েছে।
আমি মনে হয় সেই হত ভাগা, যে প্রেম না করেই ছ্যাঁকা খেয়ে ব্যাকা হয়েছিলাম।
পার্কের থাকা বেঞ্চিতে অপ্রত্যাশিতভাবে বসে আছি।অতীথটা মনে পড়ছিল বারবার । তখনই কোনো এক রমনী এসে পাশে দাঁড়ালেন, ভাবনাটা মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেল।
--আফরান সাহেব!
--জ্বি!
মুখ তোলে থাকিয়ে বড় ধরনের একটা শক খাইলাম।
আনিকা এখানে!
--চিনতে পেরেছেন?
--না!(মিথ্যে কথা)
--ভুলে যাওয়ার তো অভ্যাস ছিল না।
--এখন আছে।
--না চেনার ভান করছেন কেন?
--ভুলতে চাই!তবে...
--তবে কি?
--তবে আপনাকে আমি খোঁজে বের করতাম!
--কেন?
--কারো কাছে ঋণী আমি থাকতে চাইনা।
--মানে?
--ধন্যবাদ!
--কিসের জন্য?
--আমাকে ছেড়ে আসার জন্য।
--আজ প্রথম কাউকে দেখছি, যে ব্যর্থ হয়ে আবার আমাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে!
--এই ব্যর্থতাই যে আমার লক্ষ্যে পৌছে দিয়েছে।
--আজ প্রথম শুনলাম, ব্যর্থতা কারো লক্ষ্যে পৌছে দিতে পারে!
--হুম,
--একটু বুঝিয়ে বলুন?
--কবিতা লেখতে চেয়েছিলাম,কিন্তু পারিনি। আমার মাথায় আসত না। শেষে স্যার একদিন বলেছিলেন যে ব্যর্থ,ছ্যাঁকা খাওয়া মানুষের কষ্টটা, যে কথা দিয়ে প্রকাশ করে তাই কবিতা,আর সেই থেকেই ব্যর্থতা আমার জন্য অভিশাপ নয়,আনন্দ সরূপ।
--ওহ,
--তা এখানে কি?
--ক্ষমা চাইতে।আর....
--আর সম্পর্ক নতুন করে স্থাপন করার জন্য বলবেন না
--কেন?
--আমি আমার কবিতা হারাতে চাইনা,চাইনা এই নতুন জগত কে হারাতে।
--ওহ,
--আসি!
--ভাল থেক?
--আপনিও।।
পিছু ফিরে আর দেখা হয়নি মেয়েটাকে। আমি তো সত্যি এই জগত হারাতে চাইনা।
.........সমাপ্তি।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ