গল্পঃ "প্রেমের সূত্রপাত"
.
লিখাঃ আমিম এহসান
.
.
একটা ছেলে আর একটা মেয়ের অবাঞ্চিত ধাক্কায় অনেক বই পুস্তক আর শপিং ব্যাগ ভূপতিত হয়, আর এই ঘটনার সূত্র ধরে প্রেম ভালবাসা নামক মিষ্টি সম্পর্কও গড়ে উঠে যেটা টেলিভিশন আর অনেক রোমান্টিক গল্পে আমরা প্রায়শই দেখি।
.
বেশ কয়েকবার যখন বিভিন্নভাবে এ ঘটনা দেখলাম তখন থেকেই মনের মধ্যে ইচ্ছে জাগলো যে, যেমন করেই হোক এমন করে সুন্দরী একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে লাইফটা স্যাটেল করে নিতে হবে। তাইতো সবসময় এই সুযোগের সন্ধানে কলেজ আর শপিং মলে এলোপাথাড়ি আর অমনোযোগী হয়ে চলাফেরা করতাম।
.
বেশ কিছুদিন হয়ে গেলো, আমার সাথে এমন ঘটনা কিছুতেই ঘটছেনা দেখছি। আসলে, যা চাই তা পাইনা। বুঝলাম যে প্লান করে উক্ত কাহিনী না ঘটালে আমার জীবনে প্রেমের ফুল ফুটবেনা।
.
পরেরদিন ভার্সিটিতে এসে সিড়ি আর বেলকনি নিয়ে পদার্থ বিজ্ঞান আর সম্ভাব্যতার সূত্র নিয়ে গবেষনায় পড়ে গেলাম। সবকিছু ঠিকঠাক, আমি বেলকনির এ পাশে লুকিয়ে থাকবো, আর সিড়ি বেয়ে উঠে কোনো মেয়ে যখুনি বেলকনির দিকে ঘুরতে যাবে তেমনি আমিও একটু অন্যমনস্ক ভাবে হেটে গিয়ে সজোরে ধাক্কা খাবো তার সাথে। তারপর বইগুলো তার হাত থেকে পড়ে যাবে,চোখাচোখি হবে, রাগারাগি হবে,বকাবকি হবে। আবার দুজনই একসাথে বই তুলতে গিয়ে নতুন একটা বিপত্তি ঘটবে। দুজনেরই মাথা টক্কর লেগে যাবে, বই তুলতে গিয়ে হাতে হাতে ছোঁয়া লাগবে সাথে সাথে দুজনার শরীরে কয়েক ভোল্টেজ এর বিদ্যুৎ বয়ে যাবে। এরপর থেকে ভার্সিটিতে দেখা হবে মাঝেমাঝে, কথা হবে, বন্ধুত্ব হবে, প্রেম হবে, বিয়ে হবে, বাচ্চা হবে...। নাহ! আর ভাবতেই পারছিনা, খুশীর বন্যায় ভেসে যেতে ইচ্ছে করছে।
.
সবকিছু ঠিকঠাক করলেও একটা ব্যাপার নিয়ে সমস্যায় পড়ে গেলাম। বিপরীত দিক থেকে আসা মেয়েটা তো আর যে কেউ হলে হবেনা, তাকে তো মোটামুটি সুন্দরী হতেই হবে। প্রতিটা সমস্যারই সমাধান আছে যা আমি মুহুর্তের মধ্যেই বের করে করলাম।
.
আমার প্রেমের মিশনে হেল্প করার জন্য আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধু নাজমুলকে নিয়োগ দিলাম। তবে তার কাজ শুধু ইশারা করা। সে সিড়ির সোজাসুজি বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে থাকবে আর যখুনি কোনো একটা সুইট মেয়ে সিড়িববেয়ে উঠবে তখুনি সে আমাকে ইশারা করবে তারপর আমি আমার কাজ শুরু করবো।
.
.
দুই বন্ধু নিজ নিজ পজিশনে ঘন্টাখানেক ধরে অপেক্ষা করতে করতে নাজমুল ইশারা করে জানান দিলো যে আসছে একটা সুন্দরী মেয়ে। আমিও সাথে সাথে রেডি হলাম। অন্যমনস্ক ভাবে হাটার একটা ভাব করে এগুতে লাগলাম। মেয়েটা আসছে, আমিও আসছি মেয়েটার কাছাকাছি, এই ধাক্কা লাগবে লাগবে...। কিন্তু একি মেয়েটা হাইড্রলিক ব্রেক কষে থেমে গেলো। মাত্র কয়েক ইঞ্চির জন্য ধাক্কা টা সম্পন্ন হলোনা, ধ্যাৎ। তবে মেয়েটার এত কাছাকাছি আসতে পেরে আমি ধন্য, নাজমুলের পছন্দের তারিফ করতে হয়। কি অপরূপ! বিমুগ্ধ করা চেহেরা তার। ভেবেছিলাম মেয়েটা কিছু বলবে কিন্তু না, মেয়েটা কিছু না বলেই পাশ কেটে চলে গেলো।
.
মেয়েটাকে ফলো করা শুরু করলাম। মেয়েটা বোটানি ডিপার্টমেন্ট এ ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে নাম হচ্ছে আলো। বেশ কিছুদিন ধরেই ফলো করছি, ফলো করতে ভালই লাগে আমার। আলোর গতিবিধি নজরে রাখা আমার নিত্যদিনের অবধারিত কাজ হয়ে গেলো । হটাৎ করে একদিন ধাক্কা লাগানোর আরেকটা সুযোগ পেয়ে গেলাম, আবার পুরোনো সূত্র প্রয়োগ করে ধাক্কা খেতে যাবো, এই ধাক্কা লাগলো, লাগলো...। কিন্তু একি আগেরবারের মত মেয়েটা আবার হাইড্রলিক ব্রেক কষে থেমে গেলো আর আমার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো। তবে ভেবেছিলাম, মেয়েটা আজকে হয়তো কিছু বলবে কিন্তু না! কিছু না বলেই আগের মত পাশ কেটে চলে গেলো সে, তবে যাওয়ার আগে কিয়ৎক্ষণ শুভদৃষ্টি করে গিয়েছে মাত্র।
.
আচ্ছা আলো মেয়েটা কি কথা বলতে পারেনা! ববা মেয়ের প্রেমে পড়লাম নাতো আবার। তবে ববা হলেও সমস্যা নেই কেননা ওমন মিষ্টি আর লাজুক একটা মেয়ে মনের মানুষ হিসেবে পাওয়া চাট্টেখানি কথা নয়। কয়েক মাস হয়ে গেলো মেয়েটাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখিই শুধু, সাহস করে কোনোদিন কথা বলতে পারিনি, একচুয়েলি ইচ্ছে করেই বলিনি, কেননা আমার ইচ্ছেটাই তো আলাদা। আমার ইচ্ছে হলো তার সাথে ধাক্কা খেয়ে প্রেমের সূত্রপাত ঘটানো।
.
উপরওয়ালা আমার প্রতি সুপ্রসন্ন হলেন। আলোকে দেখছি লাইব্রেরি থেকে এক গাঁদা বই নিয়ে বের হচ্ছে আর এই চরম সুযোগটা আমি কাজে লাগালাম, ধাক্কা খাওয়ার সব রকমের প্রস্তুতি নিলাম, শুধু ধাক্কা খাওয়াটাই বাকি। এই ধাক্কা লাগলো লাগলো...। কিন্তু একি মেয়েটা আগের দুবারের মত হাইড্রলিক ব্রেক কষলো, আবার কয়েক ইঞ্চির জন্য ধাক্কাটা অসম্পূর্ণই রয়ে গেলো। তবে এবার ঘটনা অন্যরকমভাবে ঘটতে যাচ্ছে বুঝতে পারলাম।
.
সাথে সাথে আলো তার হাতের সব বই ফেলে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। এমন গভীরভাবে তাকানোর সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবেনা তাই আমিও তাঁকিয়ে রইলাম। এমন সময় মেয়েটার মুখ থেকে মধু মিশ্রিত কথা নিঃসৃত হতে শুরু লাগলো,
.
"বই গুলো তুলে দিন।"
"আ, আ, আমি তো ফেলিনি।"
"ফেলেননি তো কি হয়েছে! ফেলার নিয়তে তো এসেছিলেন।"
.
বইগুলো তুলে তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম, সে বইগুলো আমার কাছেই রাখতে বললো, এটা নাকি আমার শাস্তি।
.
"আমার সাথে ধাক্কা খাওয়ার এত শখ আপনার অমি সাহেব।"
"তু... তুমি আমার নাম জানো?"
"হুম, জানি, আগে বলেন ইচ্ছে করে ধাক্কা খেতে আসেন কেনো?"
"কে বলেছে ইচ্ছে করে?"
"আমি ভাল করেই জানি ইচ্ছে করে, এখন শুধু এই দুষ্ট ইচ্ছের কারণটা বলেন?"
"কি আবার কারণ থাকবে!! কোনো কারণ নাই।"
.
ভয়ে হাটু কাঁপছিলো, তাই আর আলোর সাথে কথা না বলে চলে আসলাম। আলো অবশ্য ডেকেছিলো কয়েকবার কিন্তু আমি শুনিনি, কেননা তার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সাহস নেই এখন আমার।
.
.
আলোর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা ভাবতে ভাবতে সাড়ে নয়টার দিকেই ঘুমিয়ে পড়লাম, যেখানে আমি দশটা ছাড়া ঘুমাতেই যাইনা।
.
ঘুম ভাঙলো ফোনের রিংটোনে, স্ক্রিনে অপরিচিত নাম্বার দেখে বিরক্ত হয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম। ওপাশ থেকে কোনো কথা নেই, আমি সালাম দিয়ে আর কয়েকবার হ্যালো হ্যালো বলে বিরক্ত স্বরে বললাম,
.
"কথা না বললে,ফোন কেটে দিলাম।"
.
ফোনটা কান থেকে নামাতে যাবো, এমন সময় ফোনের ওপাশ থেকে সুইট একটা মেয়ের কন্ঠ,
.
"আমি আলো।"
.
এইটুকুন কথা শোনার সাথে সাথে আমার বিরক্তি, আমার ঘুম সব উধাও হয়ে গেলো, কিন্তু খুব বেশি নার্ভাস ফিল করতে শুরু করলাম। এবার আমিই চুপ।
.
"কি হলো? চুপ করে রইলেন যে?"
"না মানে, তুমি আমার নাম্বার পাইলা কিভাবে?"
"আপনার বন্ধুর কাছে নিয়েছি। আপনাকে বিরক্ত করলাম নাতো?"
"না না, আমি খুশীই হয়েছি।"
"খুশী, খুশী হয়েছেন কেনো জানতে পারি?"
.
আমার মনে হয় খুশীর কারণ আলো নিজেও জানে তবুও শুনতে চাইছে। আমি আবার চুপ করে থাকলাম।
.
"কালকে ডিপার্টমেন্ট এর সামনে দেখা করতে পারবেন?"
"হুম পারবো।"
.
বিদায় বাক্য আদান প্রদান করে ফোনটা কেটে দিলো আলো। আমি মনে মনে অনেক খুশী হচ্ছি, কেননা আলোকে দিনে দিন আমি নিজের করে নিতে পারবো বলে মনে হচ্ছে।
.
.
পরেরদিন ডিপার্টমেন্ট এর সামনে যেতেই দেখি আলো অপেক্ষা করছে, আমার জন্য, কেবল আমার জন্য। কুশল বিনিময় করলাম। আলোকেও আজ খুশী খুশী লাগছে, আর আমিও অনেক খুশী। আলো একটা গাছের দিকে ইশারা করে বললো,
.
"চলো, ওই বেদিটায় গিয়ে বসি?"
"আচ্ছা চলো।"
.
আলো আমাকে তুমি করে বলছে এটা ভেবে আমার খুশীর মাত্রা বহুমাত্রায় বেড়ে গেলো। নাহ আজকে মেয়েটাকে ভালবাসার কথা বলবই, মেয়েটা অনেক খুশী হয়ে যাবে।
.
পাশাপাশি বসে আছি, পনেরো মিনিটের মত দুজনার মুখে কোনো কথা নেই। আমাকেই শুরু করা দরকার,
.
"আলো"
"বলো"
"একটা কথা"
"কি কথা?"
"ভয় লাগছে যে..."
"উহু! ভয় নেই, বলো..."
.
আলো আমার কথা শুনার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলো। "এক মিনিট বসো, আমি এখুনি আসছি।"- এই বলে দৌড়ে ডিপার্টমেন্ট এর সামনে আসলাম, ডিপার্টমেন্ট এর গেটে থেকে বেশ কয়েকটা গেটফুল হাতে নিয়ে দৌড়ে আলোর সামনে আসলাম।
.
ফুলগুচ্ছ আলোর সামনে বাড়িয়ে ধরে হাপাতে হাপাতে বলতে লাগলাম,
.
"ভালবাসি তোমায় আলো, আরো ভালবাসতে চাই তোমায়।"
.
"আমি জানি তো।" - এই বলে ফুলগুচ্ছ গ্রহণ করে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো আলো। আমি দাড়িয়েই থাকলাম। আলো বসতে বললো পাশে, বসলাম।
.
"আলো"
"কি?"
"তুমি কিছু বললেনা যে"
" কি বলবো আবার?"
"আমাকে তুমি ভালবাসো কিনা!"
"শুনতেই হবে?"
"হুম, শুনলে আমার ভাল লাগতো।"
"ও..!"
.
আবার দুইজনেই চুপ। আমি উঠতে চাইলে আলো হাত ধরে বসতে বললো, বসলাম। সে বললো,
.
"শুনতেই হবে?"
"হুম। শুনতেই হবে"
" ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি। অনেক ভালবাসি তোমায় অমি।"
.
কথাটা বলেই একরাশ লজ্জা নিয়ে আলো হনহন করে হাটা শুরু করলো, পিছু নিতে নিতে গিয়ে দেখি আলো চলন্ত ক্লাসে ঢুকে পড়লো। আমিও তার সাথে সাথে তার ক্লাসে ঢুকে পড়লাম। এভাবে বেশ কিছুদিন আলোর সাথে আলোর ডিপার্টমেন্ট এ ক্লাস করেছিলাম কিন্তু পরে আর ক্লাস করতে পারিনাই, কেননা স্যারেরা চিনে ফেলেছিলো।
.
.
সমাপ্ত।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ⧍⧧ āĻĢেāĻŦ্āϰুāϝ়াāϰী, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž
4677
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§:ā§Ļā§ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ