পরী আর পরীর আন্টি
-( ১ম পর্ব)
-
আঁকাশে প্রচন্ড মেঘ জমেছে।বৃষ্টি আসার আগেই বাসায় পৌঁছাতে হবে।কলেজে ক্লাস শেষে বাসায় ফিরছি।আজ যেনো পথ ফুরাতেই চাচ্ছেনা।রাস্তার পাশে একটা কেজি স্কুলের সামনে আসতেই থমকে দাঁড়ালাম।একটা ছোট্র মেয়ে কেজি স্কুলের গেট ধরে কাঁদছে।উল্টোদিকে ঘুরে থাকায় আমি মেয়েটার মুখ দেখতে পাচ্ছিলাম না।আমি মেয়েটার কাছে এগিয়ে গেলাম।মেয়েটার হাত ধরে আমার দিকে ঘুরাতেই অবাক হয়ে গেলাম।এতো একটা ছোট্র পরী।আমার মনে হলো কোন পরীর দল থেকে হারিয়ে গেছে সে তাই কাঁদছে।আমি কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে মেয়েটার দিকে তাঁকিয়ে থাকলাম।মেয়েটার বয়স বেশি হলেও ৭ বছর হবে।তারপর জিঙ্গেস করলাম
:-কাঁদছো কেনো?(আমি)
:-একটা ছেলে আমার ক্যাডবেরি নিয়ে চলে গেছে।(মেয়েটি)
:-এখানতো কাউকেই দেখতে পাচ্ছিনা।
:-সবাই চলে গেছে।
হঠাৎই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।আমি মেয়েটার হাত ধরে টেনে নিয়ে একটা দোকানের মধ্যে গেলাম বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য।মেয়েটার দিকে তাঁকিয়ে মনে হলো সে আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছে।আমি ওকে স্বাভাবিক করার জন্য বললাম
:-তুমি ভয় পেওনা।আমি তোমার কোন ক্ষতি করবোনা।নাম কী তোমার?(আমি)
:-আমার নাম আপনাকে বলবো না।(মেয়েটি)
:-কেনো বলবেনা?
:-আমার আন্টি বলেছে অপরিচিত কারো সাথে কথা বলবিনা।
:-ওমা তাই।আমি তেমাকে ক্যাডবেরি কিনে দিবো
:-আমি অন্যের দেওয়া জিনিস খাইনা
:-এটাও কী তোমার আন্টি মানা করেছে?
:-হ্যাঁ
:-তোমার আন্টি মিথ্যা বলেছে।
:-না আমার আন্টি মিথ্যা বলেনা।তুমি মিথ্যাবাদী
এতটুকু মেয়ের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম।কী সুন্দর করে কথা বলে।আমি দোকান থেকে দুইটা ক্যাডবেরি কিনে মেয়েটাকে দিলাম কিন্তু ও নিলোনা।৩ মিনিট পরে মেয়েটা নিজেও আমাকে বলছে
:-ক্যাডবেরি আমি নিতে পারি কিন্তু কালকে আপনাকে টাকা দিয়ে দিবো।
আমি হাঁসতে হাঁসতে বললাম দিও
:-আচ্ছা তাহলে একটা দাও।আর আমার আন্টিকে কিন্তু বলোনা আমি ক্যাডবেরি খেয়েছি। উনি শুনলে খুব রাগ করবে।
:-আচ্ছা বলবোনা।
মেয়েটা আমার হাত থেকে ক্যাডবেরিটা নিয়ে খেতে শুরু করলো।আমি মুগ্ধ হয়ে ওর খাওয়া দেখছি।
:-তোমার নাম কী?(আমি)
:-পরী
:-খুব সুন্দর নামতো।কে রেখেছে এই নাম?
:-আমার আন্টি রেখেছে।
:-ওমা তাই।তোমাকে এখন কে নিতে আসবে?
:-আন্টি আসবে।
:-তোমার আম্মু কোথায়?
:-আম্মু আব্বু দুজনেই আল্লাহর কাছে থাকে।
পরীর কথা শুনে এবার কিছুটা কষ্ট লাগলো।বাচ্ছা ছেলে মেয়েরা কখনো মিথ্যা বলেনা।আমি আবার জিঙ্গেস করলাম
:-তুমি কী তোমার আন্টির সাথেই থাকো?
:-হ্যাঁ।আমার আন্টি খুব ভালো
হঠাৎ কে যেনো পরী বলে ডাক দিলো।পরী ডাকটা শুনা মাএই ছুটে চলে গেলো।আমি সামনের দিকে তাঁকিয়ে দেখলাম হিজাব পড়া একটা মেয়েকে গিয়ে পরী জরিয়ে ধরলো।আমার আর বুঝতে বাঁকি রইলো না এটাই পরীর আন্টি।পরী ওর আন্টির কাছ থেকে দৌঁড়ে আবার আমার কাছে আসলো।আমার গালে একটা চুমু খেয়ে ধন্যবাদ দিয়ে চলে গেলো।আমি ওর চলে যাওয়া দেখছি।দোকানের বাইরেই একটা মাইক্সো দাঁড়ানো ছিলো সেটাতে ওঠে ওরা চলে গেলো।বৃষ্টি কমে গেছে তাই আমিও বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে কিছুতেই পরীর কথা ভুলতে পারছিলাম না।সেদিন শুধু পরীর কথায় মনে হলো।পরেদিন সকাল থেকেই পরীকে মিস করছিলাম।পরীদের স্কুল ছুটি হয় ১২ টায়।আমাদের বাসা থেকে পরীদের স্কুল বেশি দুরে না তাই জানি ওদের স্কুল কখন ছুটি হয়।১২ টার সময় পরীর স্কুলের সামনে গেলাম।গিয়ে দেখি স্কুল ছুটি দিয়ে দিয়েছে।সব ছেলে মেয়েরা বের হচ্ছে।দেখলাম পরীও গেট দিয়ে বের হচ্ছে।পরী আমাকে দেখে আমার কাছে এগিয়ে আসলো।ওর সাথে সামনের দোকানটায় বসে গল্প করতে বসে গেলাম।আস্তে আস্তে পরীর সাথে ভালোই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।আমি প্রতিদিন পরীর স্কুলের সামনে যেতাম।প্রতিদিন ওর সাথে মাএ ১৫ মিনিট কথা বলার সুযোগ পেতাম।১৫ মিনিট পর ওর আন্টি এসে ওকে নিয়ে চলে যেতো।পরীর আন্টিকে কোনদিন হিজাব ছাড়া আসতে দেখিনি। পরীর কাছ থেকে ওর আন্টির ব্যাপারে অনেক কিছুই জেনেছি।পরীর আন্টি কোনদিন আমার সাথে কথা বলেনি আবার আমিও বলিনি।এভাবে কেটে যায় ৭ দিন।পরী আর আমি এখন খুব ভালো বন্ধু
আজ পরীর জন্নদিন।ও আমাকে ইনভাইট করেছে ওদের বাড়ি।প্রথমে যেতে চাইনি কিন্তু পরে ওর আন্টির অনুরোধে যেতে রাজি হয়েছি।পরীর জন্য একটা গিফট কিনেছি আর একটা জামা।সন্ধায় অনুষ্ঠান।এখন সন্ধা ৬ টা বাজে।রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।পরীর দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী পৌঁছাতে পৌঁছাতে ৬:৫০ বেজে গেলো।বাড়ির সামনে গিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম।এত বড় বাড়ি ওদের।বাড়িটা সম্পুর্ন নানা রকম লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে।আমি গেট দিয়ে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলাম।বাসার মধ্যে ঢুকতেই পরীকে খুঁজতে লাগলাম।বেশিক্ষণ খুজতে হলোনা।পরী আমাকে দেখেই এগিয়ে আসলো।পরীর সাথের মেয়েটাকে দেখে আমি বড় ধরনের একটা ক্রাশ খেলাম।এ যেনো সাক্ষাৎ পরী।আমি একদৃষ্টিতে মেয়েটার দিকে তাঁকিয়ে আছি।পরীর হাতের ধাক্কাতে বাস্তবে ফিরলাম।
:-চাচ্চু তোমাকে দারুন লাগছে।(পরী)
পরী আমাকে চাচ্চু বলে ডাকে
:-তোমাকেও অনেক সুন্দর লাগছে মামনী।পরী একটু এদিকে আসতো(আমি)
পরীকে একটু সাইডে এনে জিঙ্গেস করলাম
:-তোমার সাথে ছিলো ওই মেয়েটা কে?
:-ওমা তুমি মিলি আন্টিকে চিনছোনা
:-চিনবো কী করে এর আগে কী কোনদিন হিজাব ছাড়া দেখেছি।
:-তাও ঠিক।আচ্ছা তুমি আবার ক্রাশ খাওনিতো
কী বলে পিচ্চি মেয়েটা।এতটুকু মেয়ে ক্রাশ খাওয়াও বোঝে।
:-চাচ্চু কেথায় হারিয়ে গেলে।
:-কোথাও না মামনি।
:-আপনার সাথে কথা বলা যাবে?(মিলি)
:-যাবেনা কেনো?(আমি)
:-আমি মিলি।হাত বাড়িয়ে
:-জানি।আর আপনি ইন্টার ফাষ্ট ইয়ারে পড়েন এটাও জানি।আমি হুসাইন
:-জানি।
:-ভালো।আচ্ছা পরীর আব্বু আম্মুর কী হয়েছিলো।
:-উনারা দুজন একটা দুরঘর্টনায় মারা যান।তারপর থেকে পরী আমার কাছেই থাকে।
:-একটা কথা বলবো
:-বলুন
:-আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে
আমার কথা শুনে পরী বললো
:-সুন্দর লাগবেনা মুখে দশ কেজি আঁটা মেখেছে।
মিলি পরীর কথা শুনে পরীর কান ধরে বললো
:-এই বুড়ি আমি কখন মুখে আটা মাখলাম।
পরী মিলির হাত থেকে কান ছুটিয়ে আমার কোলে এসে বললো
:-আমি পাকনা বুড়ি না।তুমি পাকনা বুড়ি।(পরী)
:-তবরে বুড়ি(মিলি)
কথাটা বলেই পরী মিলির দিকে ধেয়ে আসলো।পরী আমার কোল থেকে নেমে দিলো এক দৌঁড়।মিলিও ছুটলো পরীর পিছু পিছু।আমি দাঁড়িয়ে ওদের দৌঁড়ানো দেখছি আর হাঁসছি।কিছুক্ষণ পর মিলি ওর বাবা মায়ের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলো।ওদের সব আত্মীয়স্বজন আসার পর কেট কাটা হলো।সেদিন রাতে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত ১টা বেজে গেলো।মিলির আম্মু অনেকবার থাকতে বললো কিন্তু আমি চলে আসলাম।বাসায় এসে খুব ক্লান্ত লাগছিলো তাই ঘুমিয়ে পড়লাম।এভাবে কাঁটতে থাকে দিনগুলো।সেদিনের পর থেকে মিলির সাথেও অনেকবার কথা হয়েছে।আস্তে আস্তে মিলির সাথেও একটা ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।পরীর সাথে পরিচয়ের ২৪ তম দিনে শুনতে পায় পরীর প্রচন্ড জ্বর হয়েছে।পরীকে হাতপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমি তাঁড়িতাঁড়ি হাতপাতালে যায়।গিয়ে দেখি পরী শুয়ে আছে।ওর পাশে মিলি বসে আছে।মিলির বাবা মা সহ ওদের বাড়ির অনেকেই আছে।আমাকে যেতে দেখে পরী বললো
:-তুমি এসেছো চাচ্চু।জানো তোমাকে খুব মিস করছিলাম(পরী)
:-আমিও বুড়িটাকে খুব মিস করছিলাম।(আমি)
:-জানো চাচ্চু আমি মনে হয় আর বাঁচবো না।জানো চাচ্চু আব্বু আম্মুর কথা খুব মনে পড়ছে।স্কুলে যখন সবার আম্মু এসে তাঁদের বাচ্চাদের খাইয়ে দেয় তখন আমারো আম্মুর কথা খুব মনে পড়ে।
পরীর মুখে এমন কথা শুনে আমি সহ সবাই অনেক অবাক হয়ে গেলাম।এতটুকু মেয়ে বলে কী।পরীর মুখে এমন কথা শুনে আমার চোখে পানি চলে আসলো।মিলির আম্মুতো কেঁদেই ফেললেন।সবার দিকে তাঁকিয়ে দেখলাম সবার চোখে পানি।আমি মিলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম
:-বুড়িটার কিছুই হবেনা।খুব তাঁড়াতাঁরিই বুড়িটা ভালো হয়ে যাবে।এবার আমি বুড়িটাকে অনেকগুলো ক্যাডবেরি কিনে দিবো।
:-বুড়িটার কিছুই হবেনা।খুব তাঁড়াতাঁরিই বুড়িটা ভালো হয়ে যাবে।এবার আমি বুড়িটাকে অনেকগুলো ক্যাডবেরি কিনে দিবো।(আমি)
:-শুধু ক্যাডবেরি দিলে হবেনা আমাকে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে(পরী)
:-আচ্ছা নিয়ে যাবো।এখন ঘুমিয়ে পড়ো।
:-না ঘুমাবো না।আমি ঘুমালে তুমি চলে যাবে।
:-যাবোনা তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।
:-আচ্ছা।
আমি পরীর মাথার কাছে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম।কিছুক্ষণের মধ্যেই পরী ঘুমিয়ে পড়বো।
পরী এখন মুটামুটি বিপদ মুক্ত।ওর সব আত্নীয় স্বজন চলে গেছে।আমি, মিলি,মিলির আব্বু আম্মু এই কয়জনই আছি।
:-হুসাইন তোমার কী বাড়িতে কোন কাজ আছে?(মিলির আম্মু)
:-না আন্টি(আমি)
:-তাহলে তুমি আর মিলি এখানে থাকো আমি আর তোমার আঙ্কেল বাসা থেকে ঘুরে আসি।
:-আচ্ছা যান।
মিলির আব্বু আম্মু চলে গেলো।আমি পরীর মাথার কাছে বসে আছি আর মিলি পরীর পায়ের কাছে।আমি বারবার আড় চোখে মিলির দিকে তাঁকাচ্ছি আবার মিলিও তাঁকাচ্ছে।মাঝে মাঝে চোখাচোখিও হচ্ছে।
:-কী ব্যাপার দুজনের মধ্যে খুব চোখাচোখি হচ্ছে দেখছি।(পরী)
পরীর কথা শুনে আমি মিলি দুজনেই লজ্জা পেলাম।কিছু হয়নি এমন ভান করে বললাম
:-তুমি কখন জাগলে।
:-মাএই।তো কবে থেকে সামথিং সামথিং চলছে হু।
:-ওই বুড়ি কিসের সামথিং সামথিং।বেশি পেঁকে গেছিস তাইনা।চুপচাপ ঘুমা(মিলি)
:-সত্য কথা বললেই দোষ।
:-আবার কথা বলিস।চুপ করে ঘুমা(মিলি)
:-ও বুঝতে পারছি আমার জন্য তোমাদের সমস্যা হচ্ছে তাইনা।ঠিক আছে এইযে চোখ বন্ধ করে ঘুমালাম।
পরী অন্যপাশে মুখ করে শুয়ে রইল।আমি চুপ করে বসে আছি।মিলির দিকে তাঁকালাম।দেখি ও একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে।আমি চোখ নামিয়ে নিলাম।মিলির আব্বু আম্মু আসলো সন্ধার দিকে।ওনারা আসলে আমি বললাম
:-আন্টি এখন আমাকে বাসায় যেতে হবে।আবার কাল সকালে আসবো।(আমি)
:-আচ্ছা যাও।বাইরে গাড়ি দাঁড় করানো আছে।আমি ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি তোমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসবে।(আন্টি)
:-আচ্ছা
:-আমিও বাসায় যাবো(মিলি)
:-তাহলে হুসাইনের সাথে এক গাড়িয়ে চলে যা।(আন্টি)
আমি আর মিলি বাইরে এসে গাড়িতে ওঠলাম।মিলি আমার পাশের সিটে বসলো।গাড়ি চলতে শুরু করলো।মিলি বারবার আমার দিকে আড়চোখে তাঁকাচ্ছে।আমিও তাঁকাচ্ছি তা না।গাড়ি আমার বাসার সামনে এসে থামলো।আগে থেকেই ড্রায়ভারকে বলে রেখেছিলাম কোথায় যেতে হবে। গাড়ি থেকে নামার আগে মিলির ফোন নম্বরটা নিয়ে নিলাম আর আমারটা দিলাম।তারপর গাড়ি থেকে নেমে বাসায় মধ্যে চলে আসলাম।বাসায় আসতেই আম্মু জিঙ্গেস করলো পরীর এখন কী অবস্থা। আমি বললাম ভালো।আম্মুকে পরীর কথা অনেক আগেই বলেছি।মিলির কথাও বলেছি।আমার আম্মুকে আমি একজন ভালো বন্ধু ভাবি তাই আম্মুর কাছে সবকিছু শেয়ার করি।আম্মু ফ্রেশ হয়ে খেতে যেতে বললো।আমি ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে আমার রুমে আসলাম।রুমে এসে ভাবলাম মিলিকে ফোন দিবো কীনা ভাবছি।না থাক এখন ফোন দিলে কী মনে করে এই ভেবে দিলাম না।অনেক ক্লান্ত লাগছে তাই শুয়ে পড়লাম।
-
ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো।ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে দেখি ১ টা বাজে।ফোনের স্কিনে তাঁকিয়ে দেখি মিলির ফোন।ফোনটা রিচিভ করলাম
:-হ্যালো।আপনাকে সেই কখন থেকে ফোন দিচ্ছি ধরেন না কেনো?(মিলি)
:-ঘুমাচ্ছিলাম(আমি)
:-পরীর ঘুম ভাঙ্গার পর শুধু আপনাকে দেখতে চাচ্ছে।আব্বু ফোন করে বললো আপনাকে নিয়ে তাঁড়িতাঁড়ি যেতে।আমি গাড়ি নিয়ে বেরোচ্ছি আপনি রেডি হয়ে বাসার সামনে দাঁড়ান।
:-ওকে
বিছানা ছেরে ওঠে আম্মুদের রুমের সামনে গিয়ে আম্মু ডাক দিলাম
:-কী হয়েছে।এতরাতে ডাকাডাকি করছিস কেনো?(আম্মু)
:-পরী নাকি আমাকে দেখতে চাচ্ছে।এখনি হাসপাতালে যেতে হবে।
:-এতরাতে কীভাবে যাবি
:-মিলি গাড়ি নিয়ে আসছে।
:-আচ্ছা সাবধানে যাস।
রেডি হয়ে গেটের সামনে দাঁড়ালাম।কিছুক্
ষনের মধ্যেই মিলি চলে আসলো।মিলি নিজেই গাড়ি চালাচ্ছে।আমি গাড়িতে ওটে বসলাম।আমি পিছনের সিটে বসতে গেলাম কিন্তু মিলি বললো সামনে বসতে তাই সামনে বসলাম।গাড়ি নিয়ে মাঝ পথে আসতেই পুলিশ আটকালো আমাদের। মিলি ওর বাবার নাম বলাতে পুলিশ আমাদের ছেড়ে দিলো।মিলি গাড়ি চালাচ্ছে আর মাঝে মাঝে আমার দিকে তাঁকাচ্ছে।আমিও তাঁকাচ্ছি।হাসপাতালে পৌঁছাতে বেশিক্ষণ লাগলো না।গাড়ি থেকে নেমে আমি আর মিলি দুজনেই ভিতরে গেলাম।পরী আমাকে দেখেই বেড থেকে নেমে ছুটে আসলো।এক দৌঁড়ে আমার কোলে এসে উঠলো।
:-চাচ্চু তুমি আমাকে ছেড়ে কোথায় চলে গিয়েছিলে।জানো তোমাকে খুব মিস করছিলাম(কাঁদতে কাঁদতে কথাটা বললো পরী)
পরীর কান্না আমার সহ্য হয়না।ওর চোখ মুছায়ে দিয়ে বললাম
;-একটু বাড়িতে গিয়েছিলাম।
:-আমাকেও নিয়ে গেলেনা কেনো।
:-তুমি সুস্থ হলেই নিয়ে যাবো।
আমি পরীকে আবার বেডে শুয়ায়ে দিলাম।পরীর পরিবারের সবাই আমার প্রতি পরীর এমন ভালবাসা দেখে অবাক হয়ে গেছে।মাএ এই কয়দিনেই পরী আমাকে এতটা ভালবেসে ফেলবে সেটা উনারা ভাবতে পারেননি।আমি পরীর মাথার কাছে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম।পরী আমার একহাত ধরে রেখেছে যাতে আমি কোথাও চলে না যায়।এতটুকু মেয়ের ভালবাসা আমাকে মুগ্ধ করে দিয়েছে।কিছুক্ষণ হাত বুলিয়ে দেওয়ার পরেই পরী ঘুমিয়ে পড়লো।
-
সকালে মিলির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো।রাতে পরীর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ওর মাথার কাছেই ঘুমিয়ে পড়েছি।পরী এখনো ঘুমাচ্ছে।আমার হাতটা এখনও ধরে রেখেছে।আমি ওর হাত থেকে আমার হাত ছাড়াতে গেলাম ওমনি পরী জেগে ওঠলো।আমি বললাম
:-ঘুম ভাঙ্গলো মহারানীর(আমি)
:-হ্যাঁ ভাঙ্গলো।
১০ টার দিকে ডাক্টটার এসে পরীকে দেখে বললেন এখনি ওকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি।১০:৩০ এ আমরা সবাই হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে পড়লাম।বাইরে এসে সবাই গাড়িতে ওঠলাম।সামনের সিটে মিলির আব্বু আর আম্মু ওঠলো।ড্রায়ভার আসেনি তাই মিলির আব্বুই চালাবে।আমি পরী আর মিলি পিছনে বসলাম।পরী মাঝে বসলো আমি আর মিলি দুজন দুপাশে বসলাম।
:-চাচ্চু তোমার সামথিং সামথিং কতদুর? (পরী)
:-মানে(বুঝেও না বুঝার ভান করলাম)
:-মানে তোমার আর আন্টির কতদুর
:-ওই তুই চুপ করবি নাকি থাপ্পর খাবি(মিলি)
মিলির কথা শুনেই পরী কেঁদে দিলো।কাঁদতে কাঁদতে বললো
:-আজ আমার আমু আব্বু নেই বলে আমাকে ধমক দিয়ে কথা বলছো তাইনা।আমি যেদিন মরে যাবো সেদিন---
আমি আর পরীকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরলাম।মিলিকে বললাম থামো।
পরীর কান্না থামালাম।গাড়ি মিলিদের বাসার সামনে এসে থামলো।সবাই ভিতরে চলে গেলো।আমিও গেলাম।পরীকে বললাম
:-আমি এখন বাড়িতে যায় বিকেলে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো(আমি)
:-তোমার কথা বিশ্বাস করিনা।প্রমিস করো।
:-আচ্ছা বাবা প্রমিস করলো।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে ভাবছি আজ মিলিকে আমার ভালবাসার কথা বলে দিব কীনা।না এ হয়না।মিলির পরিবারের সবাই আমাকে ভালো ভেবে ওদের পরিবারে জায়গা দিয়েছে।এখন যদি শুনে মিলির সাথে আমি প্রেম করি তাহলে উনারা অনেক কষ্ট পাবে।এমনকী আমার সাথে সব সম্পর্ক নষ্টও করে দিতে পারে।সবকিছু ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম মিলিকে ভুলে যাবো।কিন্তু যতই মনকে কথাটা অনেক বার বুঝালাম কিন্তু কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছেনা।
-(চলবে)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ