পথশিশু
লেখক: Hosain Ahmed
-
:-ভাইয়া ১০ টা টেহা দেন ভাত খামু।
রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম এমন সময় ৫ বছর বয়সি একটা ছেলে পিছন থেকে হাত ধরে কথাটা বললো।আমি ছেলেটার দিকে ভালো করে তাঁকালাম।গায়ে জামা নেই পড়নে একটা ছেড়া প্যান্ট।চুলগুলো এলোমেলো।ছেলেটার মুখটা খুব মায়াবি।ওর মায়াবি মুখের মায়ায় পড়ে গেলাম।মনে হচ্ছে অনেকদিন গোসল করেনা।আমি ওকে বললাম
:-নাম কী তোর?(আমি)
:- নিরব(ছেলেটি)
:-১০ টকায় তোকে কে ভাত দিবে?
:-খালা বলে দিয়েছে ১০টেহা তাঁকে দিলে আমাকে ভাত দিবে।
:-আমার সাথে চল আমি তোকে ভাত খাওয়াবো।
:-না আমি যাবোনা।আপনি টেহা দিলে দেন নাহলে আমি যাই।
:-ভয় পাস না আমি তোর কোন ক্ষতি করবোনা।
ছেলেটা যেতে রাজি হচ্ছিলো না।আমি এক প্রকার জোর করেই ওকে একটা রেষ্টুরেন্টে নিয়ে গেলাম।রেষ্টুরেন্টে গিয়ে বিরিয়ানি ওডার করলাম।আমি বসে অবাক হয়ে ওর খাওয়া দেখছিলাম।মনে হয় অনেককাল ধরে এমন তৃপ্তির খাবার খায়নি ও।নিরবের খাওয়া শেষ হলে খাবারের বিল দিয়ে রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হলাম।এরপর ওর সাথে একটা চায়ের দোকানে বসলাম।
:-তোর বাবা মা কোথায়(আমি)
:-আমাকে আর আমার ছোট একটা বোনকে ছোটছোটবেলায় আমার বাবা ফালায়া রাইখা চইলা গেছে।আর মা ২ মাস আগে মারা গেছে।(নিরব)
:-ও।তোর বাড়িতে কে কে আছে?
:-আমি খালা আর আমার একটা ছোট বোন।
চা খাওয়া শেষে নিরবকে বললাম চল তোর বাড়িতে যাবো।নিরব প্রথমে নিতে রাজি হচ্ছিলো না কিন্তু আমার জোরাজুরিতে নিয়ে যেতে রাজি হলো।ওর পিছু পিছু ওর বাড়িতে গেলাম।একটা বস্তির মধ্যে ও আমাকে নিয়ে গেলো।একটা ভাঙ্গা কুটিরের কাছে নিয়ে গেলো।
:-আপনি এইহানে থাহেন আমি খালারে ডাইকা আনি(নিরব)
:-আচ্ছা যা
ও চলে গেলো।২ মিনিট পর ভিতর থেকে চিৎকারের আওয়াজ পাইলাম।ভিতর থেকে ভেষে আসা কথাগুলো ছিলো এরকম(
(((কুওার বাচ্চা এ বেলা পর বাড়িতে আইলি এক টাহাও আনতে পারলি না।তোর বাপ তো তোদের রাইখা ছোট বেলায় চইলা গেছে।আর তোর হারামিটাও মইরা গেলো।যত দায় পরছে আমার ঘারে।তোরা দুই ভাই বোন মরতে পারিস না।))
এবার আসলো মারের আওয়াজ।আমি তাঁড়াতাঁড়ি ঘরের ভিতরে গেলাম।গিয়ে দেখি নিরবের খালা নিরবকে একটা লাঠি দিয়ে পিটাচ্ছে।আমাকে যেতে দেখে নিরবের খালা বললো
;-ওই মিয়া আপনি কী করেন এইহানে।যান এইহান থেকা।
আমি গিয়ে মহিলার হাত থেকে লাঠি কেঁড়ে নিলাম।নিরবের পিঠের দিকে তাঁকিয়ে দেখলাম প্রতিটা মারের দাগ ওর পিটে বসে গেছে।ওর পিঠের দাগ গুলো দেখে আমার চোখ দিয়ে মুহুর্তেই পানি ঝড়লো। এতটুকু ছেলেকে কেউ এভাবে মারে।আমি মহিলাটির গালে একটা থাপ্পর মারলাম।মনে মনে বড় ধরনের একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম।এরপর আমার বাসার গাড়ির ডাইভারকে বললাম ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বস্তিতে চলে আয়।এরপর মহিলাটির সাথে অনেক কথা কাটাকাটি হলো।চেঁচামেচি দেখে আশেপাশের বাড়ির লোকজন চলে আসলো।মহিলাটি খারাপ ভাষায় গালাগালি শুরু করলো।১০ মিনিটের মধ্যেই ডায়ভার চলে আসলো।ডায়ভারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মহিলাটিকে দিয়ে বললাম
:-এই নিন টাকা।ওদের দুইভাই বোন এখন থেকে আমার।
মহিলাটি টাকে পেয়ে অনেক খুশি হলো।নিরবকে বললো সবকিছু গুছিয়ে ওনার সাথে চলে যা।পরে ঝামেলা হতে পারে এই ভেবে মহিলাটির কাছ থেকে একটা সই নিয়ে নিলাম।
:-তোর বোনকে নিয়ে আয়।
নিরব আমার কথামত ওর বোনকে নিয়ে আসলো।এবার ওর বোনকে দেখে সত্যিই কেঁদে দিলাম।মেয়েটার বয়স ৫ মাসের মত হবে।মুখে একটা দুধের ফিটার কিন্তু ওতে দুধ নেই শুধু পানি ভর্তি।ছোট্র মেয়েটাকে একদম পরীর মত লাগছে।এত সুন্দর একটা বাচ্চার সাথে কী করে এই মহিলাটি এমন খারাপ ব্যবহার করে।
নিরবকে আর ওর বোনকে নিয়ে গাড়িতে ওঠলাম।
:-ওর নাম কীরে?(আমি)
:-এখনো নাম রাখা হয়নি।(নিরব)
:-ও
গাড়ির মধ্যে বসে মনিকাকে ফোন দিলাম।
:-তুমি কী বাসায়?(আমি)
:-হ।কেনো?(মনিকা)
:-এখন আমার বাসায় এসে বুয়াকে দিয়ে ১ কেজি দুধ আনা।
:-তুইতো দুধ খাস না তাহলে দুধ দিয়ে কী করবি।
:-আনতে বলছি আনা।বাসায় এসে কথা হবে।
ফোনে রেখে দিলাম।ও আপনাদেরতো পরিচয়ই দেওয়া হয়নি। আমি হুসাইন। পড়াশুনা শেষ।আর যার সাথে কথা বললাম ও আমার খালাতো বোন আবার আমার ভালবাসার মানুষও বলতে পারেন।বাবা মা ৩ বছর হলো মারা গেছে। বাবা মা গাড়ি দুরঘটনায় মারা যায়।বাবা মা মারা যাওয়ার পর আমি একদম ভেঙ্গে পড়েছিলাম।তখন মনিকা আমাকে স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে। আমাকে কষ্ট থেকে ওর ভালবাসা দিয়ে দুরে রাখে।প্রথম ৬ মাস আমি বিছানা থেকেই ওঠতে পারতাম না।এত বড় একটা ধাক্কা সহ্য করার ক্ষমতা আমার ছিলনা।তখন মনিকা আর ওর বাবা মা আমার পাশে ছিলো।মনিকার এরকম কেয়ার একসময় ওর প্রেমে ফেলে দেয় আমাকে।মনিকাও বোঝে আমি ওকে ভালবাসি তাই আমার আরো বেশি কেয়ার করে।কিছু কিছু সময় মুখে আই লাভ ইউ না বললেও ভালবাসা হয়।
পথে মার্কেট থেকে নিরব আর ওর বোনের জন্য কিছু কিনে নিলাম।বাসায় এসে দেখলাম মনিকা চলে এসেছে।মনিকা আমাকে দেখে বললো
:-এরা কারা(মনিকা)
:-আজ থেকে ওরা আমার ভাই বোন(আমি)
:-এদের কোথায় পেলে?
:-একটা বসতি থেকে নিয়ে আসলাম।
:-বাচ্চাটাকে আমার কোনে দাও
মনিকা বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বললো
:-ওমা মেয়েটাতো একদম পরীর মত।
:-ওর নাম কী রাখা যায় বলতো।
:-মায়া দিয়ে দাও।মনিকা থেকে মায়া
:-আচ্ছা তোমার যা ইচ্ছা।
মনিকা মায়াকে নিয়ে রুমে চলে গেলো।আমি নিরবকে নিয়ে সেলুন এর দোকানে গেলাম।ওর চুল কাটিয়ে বাসায় নিয়ে আসলাম।নতুন পোকাশ পড়ায়ে দিলাম।
:-আমি আপনাকে কী বলে ডাকবো?(নিরব)
:-ভাইয়া।(আমি)
:-আচ্ছা।
:-তোর ক্ষুদা লাগেনি?
:-হ লাগছে।
বুয়াকে ডেকে বললাম নিরবকে খেতে দিতে।নিরব খেতে চলে গেলো।এরপর মনিকার কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি ও মায়াকে অনেক সুন্দর করে সাঁজিয়ে দিয়েছে।মায়াকে দেখে এখন যে কেউই বলবে অনেক বড় ঘরের মেয়ে।
:-মনিকা তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো?(আমি)
:-বলো?(মনিকা)
:-আমাকে বিয়ে করবে।
আমার কথা শুনে মনিকা কিছুক্ষণ আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকলো তারপর বললো
:-আজকেই?
:-হ্যাঁ।
:-তাহলে আমি আব্বু আম্মুকে আসতে বলি।
:-আচ্ছা।
খালা খালু সন্ধায় বাসায় আসলো।উনাদেরও এ বিয়েতে মত আছে। রাতে কাজি ডেকে আমাদের বিয়ে পড়ানো হলো।আমার কাছের কিছু বন্ধুদের দওয়াত দিয়েছিলাম আর কয়েকজন আত্নীয়।বিয়ের সবকাজ শেষ হলে সবাই চলে গেলো।খালা আর খালু থেকে গেলেন।নিরবকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে দেখি মনিকা মায়াকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছে। আমি রুমের দরজা আটকিয়ে দিয়ে মনিকার কাছে গিয়ে বসলাম।
:-মায়া ঘুমিয়ে গেছে?(আমি)
:-মাএই ঘুমালো।(মনিকা)
:-আমার কিছু কথা রাখবে?
:-বলো।
:-মায়া আর নিরবকে কখনো কষ্ট দিওনা।ওদেরকে নিজের ছেলে মেয়ের মত মানুষ করো।
মনিকা আমার বুকে মাথা রেখে বললো
:-সে চিন্তা আপনাকে করতে হবেনা।
---
:-ভাইয়া এই ভাইয়া।কই হারিয়ে গেলে সেই কখন থেকে তোমাকে ডাকছি শুনছোই না।আমার স্কুলের টাইম হয়ে গেছে।
মায়ার ডাকে বাস্তবে ফিরলাম।এতক্ষণ অতীত নিয়ে ভাবছিলাম
:-তুমি রেডি হয়ে নাও আমি আসছি।
:-আমিতো রেডি।
:-তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো আমি আসছি।
মায়া আমার কপালে একটা চুমো দিয়ে চলে গেলো।যায় রেডি হয়ে নিই নাহলে আমার বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে
মায়া এখন ক্লাস ফোর পড়ে।আর নিরব এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিবে।আর মনিকা ওদের দুজনকে খুব ভালবাসে তাইতো এখনো কোন সন্তান নেয়নি।
মায়া মনিকা আর নিরবকে পেয়ে আমি খুব খুশি।আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া এমন সুন্দর মানুষগুলোকে আমার জীবনে দেওয়ার জন্য।
**সমাপ্ত***
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϏোāĻŽāĻŦাāϰ, ⧧⧝ āĻĢেāĻŦ্āϰুāϝ়াāϰী, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž
4245
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§:ā§Šā§Ž AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ