বাসর ঘরে ঢুকার পর নববধূর ঘোমটা সরাতে ই সে বললো, ছেঁচড়া কোনহানকার!
আমি হতবম্ব হয়ে গেলাম! বাসর ঘরে বৌয়ের ঘোমটা সরানো টা কী ছেঁচড়ামী? বেকুবের মতো চুপ করে বসে থাকা ছাড়া আর কোনো গতী দেখি না। হঠাৎ আবারো নববধূ বললো, আপনাকে বলি নাই তো। আপনি ভয় পেলেন কেনো? দোকানের এক লোককে ছেঁচড়া বললাম। উনি আমার রীতা নাম টা ও ঠিক করে লিখতে পারে নাই।
শুনে আমি আবারো গায়ে বাঘের শক্তি পেলাম। মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললাম, ও ব্যাপার না।
বলার পরে রীতার গালটায় হাত দিয়ে বলতে চাইলাম, এটা কী গাল না টমেটো বাগান?
কিন্তু না, বলতে পারলাম না! আলতো করে গালে হাত দেয়ার সাথে সাথে ই রীতা বললো, শালা লুইচ্চা।
আমি ভয়ে নিজের বুকে তিনবার থুঃ থুঃ দিয়ে নিলাম! বিয়ে করলাম এতো কষ্ট করে! আর বৌয়ের গাল ধরা যাবে না? এজন্য লুইচ্চা বলবে? মন খারাপ হলো। গালগোল ফুলিয়ে বসে রইলাম।
তা দেখে রীতা বললো, আরেহ আপনি এরকম গুটিসুটি মেরে বসে আছেন কেনো? লুইচ্চা তো পার্লারের একটা ছেলেকে বলছি। ছেলে টা প্রত্যেকদিন আমাকে প্রেমের প্রস্থাব দিতো! অথচ ছেলে টা বিবাহিত।
আমি আবারো আগের মতো হাসি দিয়ে বললাম, আমার তো মনে হচ্ছে আমাকে বলছেন!
অনেকক্ষণ পর রীতা আবারো মাথায় লম্বা ঘোমটা দিয়ে বললো, কিছু মনে করবেন না। আমি আসলে বাসর ঘরে বিড়াল মারলাম।
এ কেমন কথা? আমি তো জানি বিড়াল মারে ছেলেরা। আমার যতো জল্পনাকল্পনা ছিলো বাসর রাত নিয়ে সব শেষ! সবার আগে হলাম আমি বেকুব। তা ও বানালো নতুন বৌ! না না না এ মানা যাবে না।
এর একটা শিক্ষা দিতে ই হয়। আমি বললাম, আপনি একটু বসেন আমি বাইরে থেকে আসি। বেশি না পাঁচ মিনিট লাগবে।
বলে রুম থেকে বের হলাম। বাইরে থেকে রুমের দরজায় তালা মারলাম। বাড়িতে আসলে আর কেউ নেই। নেই বলতে সবাই আজকের রাতটার জন্য পুরো বাড়ি টা আমাদের দিয়ে গিয়েছে। এরকম টা আসলে একটা নীতি বলা চলে আমাদের পরিবারে। আমার দাদার বেলায় এমন হয়েছিলো।
আমার বাবার বেলায় এমন হয়েছে বিধায় আমার বেলাতে ও এমন। বাড়ির প্রধান গেইটে তালা দিয়ে আসলাম। তারপর মায়ের রুমে গেলাম। গিয়ে সাদা কাপড় খুঁজতে লাগলাম। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পেলাম।
শার্ট টা খুলে গায়ে পেঁচালাম ভালো করে সাদা কাপড় টা। পায়জামা টা খুলে পরলাম সাদা লুঙ্গি। একটা মুখোশ পেলাম ছোট ভাইয়ের রুমে। কঙ্কালের মুখোশ। তার উপরে দশ টা সাদা কলম বেঁধে নিলাম।
এগুলো হচ্ছে দাঁত। ভূতের দাঁত। মাথার পেছনে লাগিয়ে নিলাম সাদা পাট। পাটগুলো বাঁধতে খুব অসুবিধে হয়েছিলো কিন্তু কোনোরকম বেঁধে নিয়েছি। বাকী রইলো হাত আর পা। হাতে পরলাম সাদা হ্যান্ড-গ্লাপ্স।
পায়ে পরে নিলাম সাদা জুতো। পুরোপুরিভাবে ভূত সেজে আয়নার সামনে গিয়ে একবার নিজেকে দেখলাম। দেখে ভয় পেলাম! আল্লাহ্ কী ভয়ংকর লাগছে দেখতে! এতো ই ভয়ংকর যে দ্বিতীয়বার আর দেখতে পারলাম না।
আমার রুমের একটা গোপন দরজা আছে। সেখান দিয়ে রুমে প্রবেশ করলাম। হাতে একটা সাদা লাঠি। ঠিক খাটের পিছনে গোপন দরজা টা। দেখলাম রীতা ঘোমটা দিয়ে আগের জায়গাতে ই বসে আছে।
খাটে না উঠে ই আমি লাঠি দিয়ে রীতার ঘোমটা টা সরালাম। রীতা চোখ মেলছে না। যখন ই খুললো তখন ই দিলো এক চিৎকার, ইয়ায়ায়ায়া করে।
আমি স্থির দাঁড়িয়ে রইলাম। কাগজের জিহ্বা টা নাড়াচ্ছি। রীতা চোখ-মুখ উল্টিয়ে দিলো। খাট থেকে নেমে দেয়ালের সাথে পিঠ লাগিয়ে চিৎকার করছে। কিন্তু কেউ শুনছে না, শুনবে ই বা কীভাবে?
আমি আস্তে আস্তে রীতার কাছে গেলাম। রীতা দৌড় দিয়ে দরজা খুলতে গেলো। কিন্তু খুলতে পারছে না। আর হাউমাউ করে কান্না করছে। আমি দেখছি রীতা অজ্ঞান হয়ে যাবে প্রায়। তা ও আমি গিয়ে রীতার খুব কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম।
জড়িয়ে ধরা যাবে না তাহলে ধরা খেয়ে খেতে পারি। রীতা কান্নাকাটি করে সারা মুখ ভিজিয়ে ফেলেছে। আর চিৎকার করছে, বাঁচাও বাঁচাও। ভূত ভূত।
হঠাৎ মুখোশ থেকে দাঁত গুলো মাঠিতে পরে গেলো। ভাগ্য ভালো রীতা দেখেনি। রীতা চিৎকার করতে করতে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলেছে। কিন্তু তবু ও আমি ভূত সেজে রীতার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
রীতা কী করবে ঠিক বুঝতে পারছে না। আমার দিকে আর তাকাতে পারছে না। দরজায় ঠকঠক করছে। আর মাঝেমাঝে দরজায় লাথি দিয়ে ভাঙ্গার ও চেষ্টা করছে। আর আমাকে ডাকছে, ঐ কোথায় আপনি? ভূত ভূত। বাঁচান আমাকে। আমি শেষ।
আমি চুপ টি করে গোপন দরজা দিয়ে রুম ত্যাগ করলাম। তারপর তাড়াহুড়ো করে মুখোশ খুললাম। পাটের চুল খুললাম। পা থেকে সাদা জুতো ও খুললাম। পরনে শেষমেশ রইলো লুঙ্গি আর সাদা কাপড়!
তা নিয়ে ই বাইরে থেকে রুমের তালা খুললাম। তালা খুলতে ই রীতা আমাকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে। আর শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে সাথে বলছে, ভূত ভূত।
প্রায় বিশ মিনিট পর রীতার দীর্ঘশ্বাস নেয়া বন্ধ হলো। তারপর যখন খেয়াল করলো আমার গায়ে সাদা কাপড়! তখন ই কিছু বলতে চাইলো কিন্তু আমি মুখ চেপে ধরে বুকে টেনে বললাম, কিছু মনে করবেন না। আমি আসলে বাসর ঘরে বিড়াল মারলাম!
সিয়াম আহমেদ জয়
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ