তোমায় ভালোবেসে
:Hosain Ahmed(আমি হিমু)
-
:এই দেখতো এই পান্জাবিটা কেমন লাগে।(রুমী)
:অনেক ভালো।কার জন্য এটা কিনবে?(আবির)
:এত কথা বলো নাতো।
:মামা এই পান্জাবিটা প্যাক করে দিনতো(দোকানদারকে উদ্দেশ্য করে)
কেনাকাটা শেষ করে রুমী আর আবির মার্কেট থেকে বেড়িয়ে একটা রিক্সা নিলো। রিক্সায় দুজন বসে আছে।
ও আপনাদেরতো পরিচয়ই দেওয়া হয়নি।আবির হলো গ্রামের ছেলে।পড়াশুনার জন্য শহরে এসেছে।আর রুমী সে এখানকার স্থানীয়।বড়লোক বাপের একমাএ মেয়ে।আবির আর রুমী দুজন এক ইয়ারে একই ভার্সিটিতে পড়ে।
--
:পান্জাবি প্যান্ট এগুলো কার জন্য কিনলে(আবির)
:তোমার জন্য।(রুমী)
:এত দামী পোশাকে আমাকে মানাবে না।এগুলো বড়লোকদের গায়ে মানায়। আমার মত গরিবদের জন্য নয়।
:আমাকে অপমান করছো?আচ্ছা নিতে হবেনা।আমি এগুলো ফেলে দিচ্ছি।
:আমি কী বলেছি ফেলে দিতে।এত বেশি বুঝো কেনো? তুমি কী জানো তোমার দেওয়া পোশাক পড়ে ভার্সিটিতে আসলে অনেকেই আমাকে অপমান করে।সবাই বলে গরিবের ছেলের ভাব দেখে আর বাঁচিনা।
আবির পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ পেলো।রুমীর দিকে তাকিয়ে দেখলে সে কাঁদছে।আবির রুমীর চোখের পানি
মুছে দিয়ে বললো
:সরি।
:না ঠিক আছে।আমিতো এগুলো শুনারি যোগ্য।তুমি প্রতিদিন এক পোশাক পড়ে কলেজে আসো সেটা আমার ভালো লাগেনা।আমার সব বান্ধবীরাও বলে তুই এত সুন্দরমেয়ে হয়ে ওর মত একটা ক্ষ্যাত ছেলেকে কেনো ভালোবাসলি।আমি তখন কিছু বলতে পারিনা।মুখ বুজে সব
সহ্য করে নিই।আর মনে মনে বলি তোমাকে পেয়ে আমি খুব সুখি।কারণ তোমার মত ভালোবাসা কেউ আমাকে দিতে
পারবেনা।
:সরি বললামতো।এই দেখো কানে ধরছি
আবিরকে কানে ধরতে দেখে রুমী ফিক করে হেঁসে দিলো।আবির মুগ্ধ হয়ে সে হাঁসি দেখছে আর মনে মনে ভাবছে মেয়েদের বোঝার ক্ষমতা এই পৃথিবীর কারো নেই।
:ওই এই ভাবে কী দেখো?এভাবে তাকিয়ে থাকলে আমার বুঝি লজ্জা করেনা।(রুমী)
:তোমাকে দেখি।
:বাসার সামনে চলে এসেছি।এখন তুমি মেসে গিয়ে আমাকে ফোন দিবে।তারপর খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাবে।
:ওকে মহারানী।
রুমী রিক্সা থেকে নেমে গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলো
:কীহলো ভিতরে যাও(আবির)
:আগে তুমি যাও তারপর আমি ভিতরে যাবো।(রুমী)
:আচ্ছা।(রুমী প্রতিদিনই এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে তাই আবির আর কিছু বললো না।)
:মামা চলেন(রিক্সা ওয়ালাকে)
--
আবির মেসে এসে রুমীকে ফোন দিলো।রিং হওয়ার সাথে সাথেই ফোনটা রিচিভ হলো।
:মেসে পৌঁছেচো।(রুমী)
:হ্যাঁ(আবির)
:তাহলে এখন গোসল করে খাওয়া দাওয়া করবে তারপর ঘুমাবে।
:তুমিও। তাহলে এখন রাখি।
:আচ্ছা।বাই
------
সন্ধাবেলা
আবির এখন দাঁড়িয়ে আছে রুমীদের বাসার সামনে।অনেকক্ষণ হলো দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু রুমীর কোন দেখাই নেই।আবির আজ নীল পান্জাবি পড়েছে।আরো ৫ মিনিট
পরে রুমীর দেখা পেলো আবির।রুমীকে দেখে আবির হা করে তসকিয়ে আছে।রুমী আজ শাড়ি পড়েছে।এর আগে আবির কখনো রুমীকে শাড়ি পড়তে দেখেনি।
:এভাবে হা করে থাকলে মুখে মাছি ঢুকবে(রুমী)
রুমীর কথায় আবির লজ্জা পেলো।তারপর বললো
:তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে।(আবির)
:আর পাম দিতে হবেনা।একটা রিক্সা ঠিক করো তাড়াতাড়ি যেতে হবে।সবাই আমাদের জন্য ওয়েট করছে।
আবির একটা রিক্সা ঠিক করে তাতে দুজন চড়ে বসলো।
রিক্সাতে বসার পর রুমী আবিরের কাঁধে মাথা রাখলো।
বাতাসে রুমীর চুলগুলো আবিরের মুখে উড়ে এসে পড়ছে আর আবির মুগ্ধ হয়ে সেটা দেখছে।
আজ রুমীর এক বান্ধবীর জন্মদিন সেখানেই তারা যাচ্ছে।
অনুষ্ঠাতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ৮ টা বেজে গেলো।তারা গিয়ে দেখলো সবাই প্রায় চলে এসেছে।
:রুমী এদিকে একটু আয়তো(রুমীর বান্ধবী নীরা)
:তুমি এখানে একটু দাঁড়াও আমি আসছি।(আবিরকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বললো রুমী)
:আচ্ছা যাও।(আবির)
আবির চারদিক ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো।সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক বড়লোক সবাই।একমাএ আবিরই গরীব।
হঠাৎ মাইক থেকে ঘোষনা আসসলো
""""এখন আপনাদের সামনে নাচ আর গান নিয়ে আসছে রুমী এবং সুমন""""'
দুজন গান গাওয়ার জন্য যখন ষ্টেজে এলো তখন আবিরের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।এতো তার রুমী।আবিরের প্রচন্ড
রাগ হচ্ছে।রুমীর ফোনে ফোন দিলো সে
:হ্যালো কে বলছেন(অন্যকেউ ফোনটা ধরেছে)
:আমি আবির। রুমীকে একটু ফোনটা দিনতো।(আবির)
:তুমি ওই গরীব ছেলেটা।এখন রুমী কথা বলতে পারবেনা।আর ওর সাথে এখন যেই ছেলেটাকে দেখছো সেই ছেলেটা আজ রুমীকে সবার সামনে প্রপোজ করবে।রুমীও হয়তো রাজী হয়ে যাবে।(একটা মেয়ে ওপাশ থেকে বললো)
:কিন্তু রুমীতো আমাকে ভালবাসে।
:হাসালে।তোমার মত একটা গরীবের ছেলেকে ভালোবাসবে রুমী এটা কী করে ভাবলে।ওতো এতদিন শুধু তোমার সাথে অভিনয় করেছে।আচ্ছা আজ একটপরীক্ষা
হয়ে যাক রুমী তোমাকে সত্যি ভালবাসে কীনা?আমি রুমীকে ফোনটা দিচ্ছি তুমি যদি ওর নাচা আজ আটকাতে
পারো তাহলে বুঝবো রুমী তোমাকে ভালবাসে।আর যদি না পারো তাহলে বুঝবো রুমী তোমাকে ভালবাসেনা।
:আমি রাজি।
:ওকে আমি রুমীকে ফোনটা দিচ্ছি।
আবির জানে রুমী তাকে অনেক ভালবাসে তাই চ্যালেন্জটা নিলো।
মেয়েটা রুমীকে ফোন দিলো।
:রুমী তুমি এখানে নাচবে না।(আবির)
:কী বলছো তুমি।নাচলে সমস্যা কী?(রুমী)
:আমি বলেছি তাই তুমি নাচবে না।
:দেখো আবির সব সময় এত শাষন ভালো লাগেনা।আমি এখন রাখছি বাই।
আবিরকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রুমী ফোনটা রেখে দিলো। আবিরের বিশ্বাস হচ্ছেনা রুমী এমনটা করতে পারে।
।নাচ শুরু হলো।ছেলেটি রুমীর হাত ধরে নাচছে।এত মানুষের সামনে কিছু বললে রুমি অপমান হবে তাই কিছু
বললো না। আবির সেখান থেকে বেড়িয়ে সোজা মেসে চলে আসলো।মেসে এসে রুমীকে মেসেজ করলো
---
রুমী আমি তোমার যোগ্য না এটা জানি।তোমার বান্ধবি ঠিকই বলেছে আমার মত গরীবের ছেলে তোমাকে কখনো
ভালোবাসতে পারেনা।আমি বামন হয়ে চাঁদে হাত দিতে গিয়েছিলাম।আজ তুমি যে ছেলেটার সাথে নাচছো তার সাথে তোমাকে অনেক ভালো মানাবে।বড়লোকের
মেয়েকে বড়লোকের ছেলের সাথেই মানায়।আমার মত গরীবের ছেলের সাথে তোমাকে একটুও মানায় না"""""
মেসেজ দিয়ে আবির ফোনটা অফ করে দিলো।
ফোন অফ করে দিয়ে কাঁদছে সে।আর মনে মনে বলছে আর কোনদিন রুমীর সামনে সে যাবেনা।যে তাকে ভালোবাসেনা কেনো অযথা তাকে বিরক্ত করতে যাবে।
--
অপরদিকে নাচ শেষ করে রুমী আবিরকে খুজতে লাগলো।আবিরকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করলো আবিরকে ফোন দেওয়ার জন্য।ফোনের স্কিনে তাকাতেই দেখলো আবিরের ফোন থেকে একটা মেসেজ এসেছে।রুমী মেসেজটা পড়ার পর আবিরকে ফোন দিলো।আবিরের ফোন অফ বলছে।রুমী আবিরের রুমমেটকে ফোন দিলো।
:হ্যালো ভাইয়া আবির আছে?(রুমী)
:হ্যাঁ আছে।(নিরব)
:ওর কাছে একটু দেনতো।ওর ফোন অফ করে রেখেছে।
:ওকে দিচ্ছি।
আবির রুমী ফোন দিয়েছে তোমার সাথে কথা বলবে।
নিরবের কথা শুনে আবির বিছানা থেকে ওঠে ফোনটা নিলো আবির।
:কীজন্য ফোন দিয়েছো?(আবির)
:তুমি এ কী মেসেজ দিয়েছো?আর আমাকে না বলে চলে গেলে কেনো?(রুমী)
:চলে এসেছি তাতে কী হয়েছে?আমার যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাবো তাতে তোমার কী।
:আমার সাথে এভাবে কথা বলছো কেনো?আমি কী করেছি?
:এখনতো কিছুই জানোনা।ধোয়া তুলসি পাতা।তোমাকে অনেক বিশ্বাস করে ভালোবেছিলাম কিন্তু তুমি এমন করবে
ভাবিনি।তুমি আর কোনদিন আমাকে ফোন দিবেনা।
আবির ফোনটা কেটে দিলো।
ফোনটা কেটে যাওয়ার পর রুমী ভাবছে আবির কেনো
তার সাথে এমন করছে?তবে কী আমার নাচতেতে যাওয়াটা আবিরের পছন্দ হয়নি?রুমী এখন বুঝতে পারছে
কেনো আবির তার সাথে খারাপ ব্যবহার করছে আর আবিরের সাথে তার কোন বান্ধবি খারাপ ব্যবহার করেছে সেটাও বুঝতে পারছে।রুমী আবার নিরবের নম্বরে
ফোন দিলো।
:নিরব ভাইয়া আবার আবিরকে ফোনটা একটু দিনতো।(রুমী)
নিরব আবিরকে ফোনটা দিলো।আবির প্রথমে কথা বলতে রাজি না হলেও রুমীর জোরাজুরিতে রাজি হয়।
:আবার কেনো ফোন দিলে।(আবির)
:তুমি এখনি আবার অনুষ্ঠান বাড়িতে আসো।তুমি যদি না আসো তাহলে আল্লাহর নাম নিয়ে বলছি আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।(রুমী)
কথাগুলো বলেই রুমী ফোনটা কেটে দিলো।
আবির ফোনটা রাখার পর ভাবছে কী করা যায়।রুমী যখন বলেছে সে না গেলে নিজেকে শেষ করে দিবে লেছে সেহেতু
করবেই।তাই ইচ্ছা না থাকার পরেও আবির গেলো সেখানে।কারণ এর আগেও আবিরের সাথে ঝগড়া করে রুমী নিজের ক্ষতি করেছে।
আবির অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়ে দেখলো রুমী গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।আবিরকে দেখে রুমী আবিরের কাছে এগিয়ে এসে বললো
:আমাকে ক্ষমা করে দাও।আর কোনদিন তোমার কথার অবাধ্য হবোনা।(রুমী)
:ক্ষমা চাইছো কীসের জন্য?(আবির)
:তোমার কথা শুনিনি এবং তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করার জন্য।
:তুমিতো ঠিকই বলেছো আমিইতো সারাক্ষণ তোমাকে পেরা দিই।তোমাকে বিরক্ত করি।তুমি হলে চাঁদ আর আমি হলাম বামুন।চাঁদকে কখনো বামুনের হাঁতে মানায় না।
আবিরের মুখ চেপে ধরলো রুমী।রুমী বলতে শুরু করলো
:তোমার সাথে আমার বান্ধবীরা কী করেছে আমি জানিনা কিন্তু ওরা যা করেছে তা ঠিক করেনি।ওরা আমাকে অনেক অপমান করেছে।আজ তোমার কাছে আমাকে খারাপ বানিয়ে দিয়েছে।আমি আজ নাঁচতে
চাইনি কিন্তু ওরা আমাকে জোর করে নাঁচিয়েছে।বিশ্বস করো আমি তোমাকে সত্যিই ভালবাসি।
এতটুকু বলেই থামলো রুমী আবির চুপ করে আছে।আবিরকে চুপ করে থাকতে দেখে রুমী আবার বললো
:আমাকে ক্ষমা করবেনা।বুঝেছি আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছেনা।দাঁড়াও আমি প্রমান করে দিচ্ছি আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি।
রুমী দৌঁড়ে বাড়ির মধ্যে চলে গেলো।২ মিনিট পর হাতে একটা কাঁচের বোতল নিয়ে ফিরে এলো।আবিরের সামনে এসে কাঁচের বোতলটা ভেঙ্গে ফেললো।তারপর একটা
টুকরা নিয়ে হাতে চালিয়ে দিলো।সাথে সাথে হাত দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করলো আবির এতসময় চুপ ছিলো কিন্তু এবার আর চুপ থাকলে পারলো না।জোরে একটা
থাপ্পর বসিয়ে দিলো রুমীর গালে।
:এই তোমাকে আমি কতবার বলেছি যতই রাগারাগি হোক নিজের ক্ষতি করবেনা তারপরেও কেনো করলে।
তারপর রুমীর হাতে নিজের রুমাল বেঁধে দিয়ে ডাক্তারের দোকানের উদ্দেশ্য রুমীকে নিয়ে চললো।একটু দুরে গিয়েই একটা ডাক্তারের দোকান দেখলো।সেখানে
গিয়ে রুমীর হাতে বেন্ডেজ করে দিলো ডাক্তারের দোকান থেকে বেড়িয়ে একটা রিক্সা নিলো।আবির রুমীর হাত ধরে রিক্সায় তুলে দিলো।তারপর সে নিজেও
চড়ে বসলো।রিক্সা রুমীদের বাড়ির উদ্দেশ্য ছুঁটে চললো
:তুমি আমাকে এত ভালবাসো কেনো (আবির)
:নিশ্চুপ
:যদি আমি কখনো মরে-----
কথাটা শেষ করার আগেই রুমী আবিরের মুখ চেপে ধরলো।
:এই কথাটা আর কোনদিন বলবে না।(রুমী)
:ওকে বলবোনা।
:আমার পাগলটাকে আমি অনেক ভালবাসি।
:আমিও আমার পাগলীটাকে অনেক ভালবাসি।
:তোমার কাঁধে একটু মাথা রাখবো।
:এতে অনুমতি নেওয়ার কী আছে।
রুমী আবিরের কাধে মাথা রাখলো।চাঁদের আলোয় রুমীকে আরো সুন্দর লাগছে আর আবির মুগ্ধ হয়ে তাকে দেখছে।
:আচ্ছা রুমী তোমাকে এত ভালো লাগে কেনো?(আবির)
:ভালোবাসো তাই।(রুমী)
:ভালোতো নীলাকেও বাসি কিন্তু ওকেতো এত ভালো লাগেনা।
আবিরের কথা শুনা মাএই রুমীর চেহারা ডায়নি আকার ধারণ করলো
:কি বললি তুই?তাড়াতাড়ি বল নীলাটা কে?(আবিরের গলা চেপে ধরে বললো রুমী)
:কি ডায়নি মেয়েরে বাবা এভাবে কেউ কারো গলা চেপে ধরে।(আবির)
:-তাড়াতাড়ি বল নীলা কে নাহলে তোকে আজ আমি মেরে ফেলবো।
রুমী এবার আরো শক্ত করে আবিরের গলা চেপে ধরলো।শক্ত করে গলা চেপে ধরায় আবিরের নিঃশাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো।
:ছাড়ো ছাড়ো মরে গেলাম।(আবির)
আবিরকে হাঁপাতে দেখে রুমী আবিরের গলা ছেড়ে দিলো।
:আমিতো মজা করে বলেছি কথাটা।(আবির)
:নিশ্চুত
:সরি। আর কখন এমন মজা করবোনা।
:নিশ্চুপ
:সরি বললামতো।এইযে কানে ধরছি আর কখনো এমন করবোনা।
আবিরকে কানে ধরতে দেখে রুমী ফিক করে হেঁসে দিলো।রুমী শব্দ করে হাসছে আর আবির মুগ্ধ হয়ে সে হাসি দেখছে আর বারবার রুমীর প্রেমে পড়ছে।
কিছুদিন পর
খুব ভোরে রুমীর ফোন।
:কি ব্যাপার আজ মহারাণী এত সকাল সকাল ফোন দিয়েছে?(আবির)
:তুমি কী ফ্রি আছো?(রুমী)
:তোমার জন্য সব সময়ই ফ্রি,তুমি চাইলে ধরতে পারি জীবন বাজি, তুমি যে আমার মহারাণী।
:আবির মজা করো নাতো। খুব টেনশনে আছি। তুমি দশটার সময় পার্কে এসো।
:কোন পার্কে??
:তোমার মাথায় কাঁঠাল ভাঙ্গবো হাদারাম।আমরা সব সময় যেখানে দেখা করি সেখানেই।
:ঠিক আছে মহারাণী আমি যথা সময়ে পৌঁছে যাবো
:এখন রাখছি।
:ওকে
আবির ফোন রেখে ভাবছে রুমী কী নিয়ে এত টেনশন করছে?বাসায় কোন প্রবলেম হয়নিতো?হুর এত ভেবে কাজ নেই দেখা করলেই সব জানা যাবে।
৯:৪০ এ আবির রেডি হয়ে রুমীর সাথে দেখা করতে গেলো।আবির গিয়ে দেখলো রুমী আগে থেকেই বসে আছে।রুমীকে আজ অনেক চিন্তিত দেখাচ্ছে।
:কী হয়েছে মহারানীর মুখটা এমন শুকনো কেনো?(আবির)
:আবির বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না(রুমী)
:তো বিয়ে করে ফেলো।
:আবির আমি মজা করছিনা।সিরিয়াসলি বলছি।
:বিয়ে ঠিক করলেই হবে নাকি।তোমার মতামত নিবেনা।
:আমার ফ্যামিলিতে আমার মতামতের কোন দাম নেই।
:আমি কী করবো বুঝতে পারছিনা।তুমি বাড়িতে যাও আমি ভেবে দেখছি কী করা যায়।
আবির রুমীকে রিক্সায় তুলে দিয়ে আবার পার্কে এসে বসলো।আবিরের মাথায় হাজার রকমের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে।আবির ভাবছে সে যদি রুমীর বাবার সামনে গিয়ে
তার ভালবাসার কথা বলে তাহলে কোনদিন মেনে নিবেনা।আবার রুমীকে নিয়ে পালিয়েও যেতে পারবেনা।কারণ আবির পরিবারেরর বড় ছেলে তার উপর
অনেক দায়িত্ব।আরো কিছুক্ষণ পার্কে বসে থেকে আবির মেসের দিকে রওনা দিলো।আবির মেসে এসে তার রুমমেটদের সাথে ব্যাপারটা শেয়ার করলো।
:আচ্ছা রুমী যদি কোনদিন মা হতে না পারে তাহলেতো তোর সাথে বিয়ে দিবে?(নিরব)
:কী বলছিস তুই?রুমী মা হতে পারবেনা মানে(আবির)
:আগে আমার পুরো কথাটা শোন তারপর বলছি।কাল রুমী কলেজে আসার সময় রিক্সা থেকে পড়ে যাবে।এরপর
ওকে তাড়াতাড়ি করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবি।এখানকার হাসপাতালের ডাক্টার আমার মামা।আমি মামাকে বলে সবকিছু মেনেজ করে রাখবো।হাসপাতালে
আসার পর রুমীর বাড়িতে ফোন করে ওর পরিবারের লোকদের আসতে বলবি।মামা রুমীকে দেখে একটা ভুল রিপোর্ট করে দিবে।রিপোর্টে লেখা থাকবে রুমী আর
কোনদিন মা হতে পারবেনা।আমার মামা সরকারি ডাক্টার তাই অবিশ্বাস করার কোন কারণই নেই।
:আইডিয়াটা খুব ভালো।
:তাহলে কাজে লেগে পড়ো।
পরেরদিন প্লান অনুযায়ী কাজ হলো।কালকের প্লান অনুযায়ী সবকাজ ঠিকঠাক মত সম্পন্ন হলো।রুমীর বাবা মা অনেক চিন্তার মধ্যে আছে। ইতিমধ্যে রুমীর যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে তারাও কীভাবে যেনো জেনে গিয়েছে রুমী মা হতে পারবেনা।হয়তো আবিরই ফোন করে মিথ্যা গল্পটা বলেছে।
---
৩ বছর পর।
আজ আবির আর রুমীর বিয়ে।পারিবারিক ভাবেই তাদের বিয়েটা হচ্ছে।সেদিনের ঘটনার পর রুমীকে অনেক ছেলেই দেখতে এসেছে কিন্তু যখনি শুনেছে রুমী মা হতে পারবেনা তখনি বিয়ে ভেঙ্গে গেছে।আবির যখন বিয়ের প্রস্তাব পাঠালো তখন রুমীর বাবা মা আর আপওি করেনি। কারণ অনেক চেষ্টা করেও কোন জায়গায়
রুমীকে বিয়ে দিতে পারেনি।আবিরের বাবা মা জানেনা রুমী মা হতে পারবেনা।তারাও জানলে হয়তে বিয়ে দিতোনা।কিন্তু আসল কাহিনীটা শুধু আবির,রুমী আর আবিরের বন্ধুরাই জানে।
----
রুমী অনেকক্ষন হলো রাসর ঘরে বসে আছে কিন্তু আবিরের দেখা পাচ্ছেনা।আবিরের উপর তার অনেক রাগ
হচ্ছে।আরো অনেকক্ষণ পর আবির আসলো।রুমী খাট থেকে নেমে আবিরকে সালাম করে আবার খাটে গিয়ে বসে পড়লো।
:মহারাণীর কী রাগ হয়েছে?(আবির)
:আমি কারো মহারানী না।(রুমী)
:ওরে বাবা এত রাগ আগেতো জানতাম না।
রুমী খাট থেকে ওঠে এসে আবিরের কলার ধরে বললো
:এত দেরী করে কেনো আসলি?
আবির রুমীর এই রুপের সাথে পরিচিত নয়।তাই কিছুটা ঘাবড়ে গেছে সে।নিজেকে সামলিয়ে বললো
:বন্ধুদের বিদায় দিতে দেরী হয়ে গেলো তাই।
:এখনতো আমার কথা মনে থাকবেই না।কারণ এখনতো তোমার বউ হয়ে গেছি বউ হয়ে গেলেই ছেলেদের ভালবাসা কমে যায়(রুমী)
আবির এক ঝটকায় রুমীকে কাছে এনে বললো
:আমার ভালবাসা কোনদিন কমবে না।বরং প্রতিদিন বাড়বেই।
:ঘোড়ার ডিম বাড়বে।
আবির আর কিছু না বলে রুমীর কপালে ছোট্র একটা ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো।
-----সমাপ্ত-----
--ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ