.
এলিয়েন ও ভালবাসা
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
....
..
.
হঠাৎ কিছু একটার শব্দে চিন্তার অবসান হলো মাহিরের। ঘরের ভিতর কেউ নেই, তো শব্দ টা করলো কে। দুশ্চিতায় তার কপালে ভাজ পড়ে গেলো। কিছুদিন হলে কিসের যেনো শব্দ প্রায়োশয় তার কানে আছে, শব্দ উৎপত্তির এই সময়টাতে হয়তো সে চিন্তিত থাকবে, আর তার চিন্তার অবসান হবে এই শব্দে। কোথায় থেকে আসে শব্দ, কে করে সেটা মাহিরের অজানা। হয়তো বিড়াল, না হয়তো ইদুর, নাকি অন্যকিছু। ভুত হতে পারে কি, মাহিরের মতে ভুত বলতে কিছু নেই কিন্তু শয়তান আছে। তবে সে তো তার সাথে এমন মস্করা করবে না। এমন একটা বিষয় নিয়ে তার চিন্তা মানায় না তবুও চিন্তায় যেনো তার কপালে ভাজের ফাকে ফাকে ঘাম জমে গেছে, আবারও সে মগ্ন চিন্তায়, আসলেই কি এলিয়েন বলতে কিছু আছে, নাকি এটা শুধু বিজ্ঞানের এক সৃষ্টি। বিজ্ঞানকে বিশ্বাস করা যায় আবার যায় না।
.
তবে মাহির সাহেব গত এক সপ্তাহ ধরে এই একটা বিষয় নিয়ে মসগুল। কতো রকমের বই ঘেটেছে, কুরআন শরিফ ও। কুরআনে সব তথ্যের উপাত্ত আছে।
কুরআনের মতে, পৃথিবীর সকল সৃষ্টি কে আল্লাহ তায়ালা মহাশূন্যের মাঝে রেখেছেন, পৃথিবীর বাইরেও হয়তো সৃষ্টি আছে । আর সেটাই হয়তো সেই এলিয়েন যা বিজ্ঞান বলে।
এতো চিন্তা তার মাথা টা ধরিয়ে দিলো।
.
বারান্দায় পাতানো চেয়ার থেকে উঠে দাড়িয়ে রুমে প্রবেশ করলো মাহির। মাথা টা ধরে গেছে তার। রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো । গলাটা বাড়িয়ে নিরুকে বললো একটা কড়া করে চা দিতে
.
মিনিট তিনেক পর চায়ের কাপ হাতে রুমে প্রবেশ করলো নিরু। সামান্য চিন্তিত গলায় বললো, কিছু হয়েছে নাকি তোমার, এখন শুয়ে আছো যে
চোখ খুলে নিরুর দিকে তাকিয়ে মাহির বললো, না তেমন কিছু না সামান্য মাথা ধরেছে এই আরকি
ও, তাহলে তুমি শুয়ে থাকো আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি, বলেই নিরু মাহিরের কপালের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো।
নিরু মাহিরের মাথা সুন্দর করে টিপে দিচ্ছে। ধিরে ধিরে মাহিরের মাথা ব্যাথাটা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। নিরুর সব থেকে ভালো গুন গুলোর মধ্যে একটি হলো এটি, মাহির মাঝে মাঝে মিথ্যা বলে নিরুকে দিয়ে মাথা টা মালিস করে নেয়।
হঠাৎ নিরুর ডাকে চিন্তার অবসান মাহিরের।
নিরু বললো, তুমি কাল রাতে কি যেনো কি বলতে চাচ্ছিলে?
মাহির এবার সামান্য চমকালো, সেতো কাল রাতে নিরুকে কিছু বলতে চায় নি।
নিরু বললো, কি হলো বল তো কি বলতে চাইছিলে।
মাহির এবার সংকোচের সাথে বললো, কি বলো, আমি তো কাল রাতে তোমায় কিছু বলতে চায় নি।
তুমি না রাতে বললে যে, নিরু শোনো তোমায় একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলি। আমি বললাম, ঠিক আছে বলো, আমি শোনার জন্য তৈরী হচ্ছি এর মাঝেই দেখি তুমি নাক ডাকা শুরু করছো। ঘুমিয়ে গেছো বলে তোমায় আর জাগাই নি।
মাহির এবার চিন্তিত স্বরে বললো, আমি তো মনে করতে পারছি না কি বলতে চেয়েছিলাম। হয়তো ঘুমের ঘোড়ে এমনি বলে ফেলেছি।
নিরু বললো, হবে হয়তো। আচ্চা তুমি শুয়ে থাকো আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
.
মাহির শুয়ে শুয়ে আবার চিন্তায় মগ্ন। এক সপ্তাহ আগে তার দেখা একটা আজব প্রানী নিয়ে সে এখনও সংকিত। প্রানী টা দেখতে অনেক টা মানুষের মত, তবে তাদের মাথা মানুষের মাথা থেকে বড়ো। মাথায় কোনো চুল নেই, কান টা কেমন যেন ভিন্ন রকম, নাক টা বোচা, মুখ মানুষের মুখের চেয়ে ছোট, মাথার তুলনায় তার শরীর টা সামান্য বড়ো। হাত পায়ের নখ ৪ টি করে। পুরোই ভিন্ন।
কেমন লাগছে এখন, নিরুর কথায় ভাবনায় ছেদ পড়লো মাহিরের।
মাহির শুধু মাথা নাড়লো। নিরু বললো, তুমি তো চা খেলে না, আমি আবার তোমার জন্য চা গরম করে আনছি। নিরু চলে গেলো।
নিরু রুম থেকে বের হতেই মাহির ডায়রী টা তার ডয়ার থেকে বের করলো, মাহিরের বিয়ের পরের সমস্ত ভাল লাগা মন্দ লাগা লেখা আছে এতে। মাহিরের মন খারাপ হলে এই ডায়েরী টা পড়ে। তবে আজ তার মন খারাপ না। ডায়েরী তে কিছু লেখার জন্য বের করেছে সে ডায়েরী ।
পুরো দুই সপ্তাহ পর বের করলো সে ডায়েরী। প্রত্যেক টা দিন যেনো আগের দিনের পুনরাবৃত্তি। তাই তো ডায়েরী তে লেখার কিছু পায় না মাহির।
আজ অনেক দিন পর লেখার কিছু পেয়েছে সে।
ডায়েরীর অনেক গুলো পেজ পেরিয়ে একটা অলেখা পেজের দেখা পেলো সে।
তারিখ সময় টা বসিয়ে, সযত্নে লেখা শুরু করলো সে,
.
আজ অনেক দিন পর নিরুকে মিথ্যা বললাম। মিথ্যা বলাটা ঠিক হয়নি তবুও বললাম। যে গুরুত্বপূর্ণ কথা টা তোমায় বলতে চেয়েছিলাম নিরু, সেটা হলো আমি একটা আজব জিনিস দেখেছি, সেটা হয়তো তুমি বিশ্বাস করবে না, জিনিস টা পৃথিবীর কোনো প্রানী নয়। প্রানিটা আমি সাথে করে নিয়ে এসেছি বাসায়। এই কথা অবশ্য তুমি জানো না, তুমি ভয় পাবে বলে তোমায় দেখায় নি।
হঠাৎ নিরুর ডাকে লেখা রেখে নিরুর দিকে তাকালো মাহির। ডায়েরী টা বন্ধ করলো সে।
নাও তোমার চা, কথা টা বলে চায়ের কাপ টা মাহিরের দিকে এগিয়ে দিলো মাহির।
মাহির চায়ের কাপ টা হাতে নিলো।
নিরু এবার সংকোচের সাথে বললো, তোমায় কতবার বললাম তোমার ডায়েরী টা একবার আমি পড়বো, তুমি কখনো আমায় দাও নি ডায়েরী। শুধু মাঝে মাঝে আমায় নিয়ে কিছু লেখা পড়ে শোনাও, কেন?
মাহির এবার চায়ের কাপ টা টেবিলে রেখে বললো, শোনো না তোমায় নিয়ে ২ লাইনের একটা কবিতা লিখেছি শুনবা।
তুমি আবার কথা ঘুরিয়ে নিচ্ছো, ঠিক আছে যাও তোমার ডায়েরী টা পড়বো না, এখন তোমার ২ লাইনের কবিতা টা বলো।
সুন্দর দেখা যদি অপরাধ হতো তবে তোমায় দেখার দায়ে আজ আমার যাবতজিবন কারাদন্ড হতো।
.
-নিরু এবার লজ্জায় লাল হয়ে গেলো, কি যে বলো না আমি কি সুন্দর নাকি
.
মাহির চায়ের কাপে ছোট একটা চুমুক দিয়ে বললো, অবশ্যয় তুমি সুন্দর, তুমি অনেক সুন্দর।
হয়েছে তোমার ঢং আমি যায় রান্না করতে হবে, বলে নিরু চলে গেলো।
মাহির চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে কিছুক্ষন বসে বসে চিন্তা করলো। ডায়েরী ডয়ারে ঢুকিয়ে, চা শেষ করে নিচের গেস্ট রুমে চলে গেলো সে।
রুম টা বন্ধ পরে ছিলো অনেক দিন হলো, আজিব প্রানী টিকে লুকাতেই এই রুমে প্রবেশ করছে মাহির। রুমে ঢুকে রুমের লাইট জ্বালালো মাহির। লাইট জ্বালাতেই দেখা গেলো আজিব প্রাণীর দেহ টি। বিছানায় শুয়ে আছে প্রানি টি। মাহির পা গুনে গুনে এগিয়ে গেলে প্রানী টির দিকে, মাঝে মাঝে তার ভয় হয় যে প্রানি টা তার কোনো ক্ষতি করবে নাতো।
প্রানিটির দিকে তাকিয়ে মাহিরের ঠোটের কোনে সামান্য হাসির রেখা ফুটে উঠলো, এ যে আনন্দের হাসি। প্রানিটির শরিরের ক্ষত গুলো মুছে যেতে শুরু করেছে, তার মানে খুব তাড়াতাড়ি এটা সুস্থ হয়ে উঠবে। অনেক ক্ষত বিক্ষত শরীর ছিলো যখন মাহির এটা কে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলো, কিন্তু এখন এটা অনেক টাই সুস্থ। নিজেকে বাহবা দিচ্ছে মাহির। আজ তার জন্যই এই অবুজ প্রানিটি সুস্থ। ওষুধের বাক্স থেকে একটা ক্ষত পুরনের মলম বের করলো মাহির। কিছুটা বের করে মাখিয়ে দিচ্ছে মাহির, হঠাৎ প্রানিটি কেপে উঠলো, ভয়ে পিছিয়ে আসলো মাহির দু পা। কিছুক্ষন পর সাহস জুগিয়ে আবার এগিয়ে গেলো মাহির। শরিরের বিভিন্ন জায়গায় মলম লাগিয়ে দিলো সে। তারপর একটা ইনজেকশন পুষ করে দিলো প্রানিটির দেহে। সব কাজ শেষে রুমে তালা লাগিয়ে উপরে উঠে আসলো মাহির। তবে মাঝে মাঝে তার কেমন যেনো ভয় হয়, কি হবে যখন নিরু জানতে পারবে। পরের টা পরেই না হয় দেখা যাবে।
.
রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো মাহির। রাতে খেতে বসেছে মাহির আর নিরু।
নিরু উৎসাহের সাথে বললো, কেমন হয়েছে খাবার।
মাহির মুখে হাসির ভাব ফুটে তুলে বললো, ভালো হয়েছে, অনেক ভালো হয়েছে
মিথ্যা কেন বলছো
মিথ্যা কেন বলবো, সত্যিই বলছি
মাহির আমি নিজে ইচ্ছা করে আজ তরকারি তে লবন আর ঝাল কম দিয়েছে আর তুমি বলছো তরকারি ভালো হয়েছে, মাহিরের দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে কথা গুলো বললো নিরু।
মাহির এবার আর কোনো কথা বললো না, নিরু যা বলছে সব সত্যি, তরকারি খুব একটা ভাল হয়নি, তবে নিরু কষ্ট পাবে বলেই তাকে মিথ্যা বলেছে মাহির।
মাহির, নিরুর ডাক তার দিকে তাকালো মাহির।
কি ভাবছো মাহির
তেমন কিছু না
তুমি কখনো বলো না যে খাবার খারাপ হয়েছে, কেন, তুমি না বললে আমি বুঝবো কি করে যে খাবার টা কেমন হয়েছে, কিছু কম অথবা কিছু বেশি হলো কিনা।
মাহির বললো, সত্যি কি জানো নিরু, তুমি যা রান্না করো তাই আমার কাছে ভালো লাগে।
নিরু আর কোনো কথা বললো না, কারন সে জানে মাহির তাকে কখনো কষ্ট দিবে না, এটা মাহিরের দ্বারা সম্ভব না। যার মুখের কথায় নিজের প্রান দিয়ে দিতে রাজি মাহির তার খাবারের নিন্দা কি করে করবে।
চুপচাপ খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো মাহির। কিছুক্ষন পর নিরু আসলো।
নিরু নিচু স্বরে বললো, ঘুমিয়ে পড়েছে মাহির
না কিছু বলবে, চোখ বন্ধ করেই বললো
চলো না বারান্দায় গিয়ে বসে বসে চাদ দেখি।
ঠিক আছে চলো, বলেই বিছানা থেকে উঠে পড়লো মাহির
চাদের দিকে অপলক তাকিয়ে মাহির আর নিরু। মাহিরের কাধে মাথা টা রেখে নিরু বললো, মনে আছে আমাদের বাসর রাতে আমি আর তুমি সারারাত বারান্দায় বসে বসে চাদ দেখেছিলাম।
নিস্তব্ধ মাহির মুখ খুলে বললো, মনে থাকবে না আবার তোমার পাগলামির জন্য সেদিন সারারাত বারান্দায় বসে ছিলাম।
আজো ও থাকবে, নিরু উৎসাহের সাথে বললো
হুম তুমি যদি থাকো তবে আমি ও থাকবো।
তুমি আমার কেনো কথায় না বলো না কেন
না বলবো কেনো, তোমার শখ আল্লাদ ই যদি না পূরন করি তবে কার তা পুরন করবো তুমিই বলো।
হয়েছে এবার থাক, চলো রুমে যায়, ঘুম পেয়েছে কথা টা বলে নিরু দাড়িযে গেলো
ঠিক আছে চলো, বলে মাহির আর নিরু রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
সকালে খুব ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠলো মাহির। নিরু এখন ও ঘুমে। মাহির রুম থেকে বের হয়ে সোজা নিচের তলায় গেস্ট রুমে প্রবেশ করলো। রুমে লাইট টা অন করতেই সামনে দেখা মিললো আজিব প্রানি টির। মাহির প্রানিটির কাছে গিয়ে দাড়ালো। খুব কাছে থেকে লক্ষ করছে মাহির প্রানিটিকে। সব গুলে ক্ষত এতো তাড়াতাড়ি সেরে যাচ্ছে, মাহিরের বিশ্বাস ই হচ্ছে না। তবে প্রানিটি চোখ খুলছে না কেন সেটাই মাহিরের প্রশ্ন। পুরো এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলো তবুও কেনো চোখ খুলছে না প্রানিটি। নাকি কোমায় চলে গেলো। এতো কিছুর মাঝে মাহির দেখলো প্রানিটির হাতের নিচের দিকে একটা গোলাকৃতির যন্ত্র। মাহির সেটা হাতে নিতেই স্কিনে লেখা উঠলো কেমন যেনো ভাষার একটা অক্ষর।। মাহির কিছু বুঝতে পারলো না। যন্ত্রটা যেখানে ছিলো সেখানেই রেখে দিলো মাহির। প্রানিটিকে ওষুধ লাগিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে দোতারায় উঠে আসলো। এসে দেখে নিরু এখনও শুয়ে আছে। কি অপরুপ লাগছে নিরুকে। ঘুমালে নাকি মেয়েদের অনেক সুন্দর লাগে, কথা টা যে বলেছে সে মিথ্যা বলেনি। বারান্দায় গিয়ে বসলো মাহির। বসে বসে চিন্তা করছে মাহির।
নিরু কে খুব তাড়াতাড়ি আজিব প্রানিটির কথা বলতে হবে, আর কতো মিথ্যা বলবো, তাছাড়া নিরুকে কথাটা না বলতে পেরে পেট টা ফেপে গেছে।
মাহির, কই তুমি, ঘুমন্ত চোখে বললো নিরু।
বারান্দা থেকে দ্রুত রুমে প্রবেশ করলো মাহির।
কি হয়েছে তোমার, দুঃস্বপ্ন দেখছো নাকি
আরে না তোমায় দেখতে পাই নি তো তাই।
ও আমি ভাবলাম কি না কি।
নিরু আবদারের সুরে বললো, শোনো না আজ আমার রান্না করতে মন চাইছে না, তুমি কি প্লিজ আমাদের জন্য রান্না করতে পারবে
মাহির হাসি মুখে জবাব দিলো, পারবো না কেনো, তুমি শুয়ে থাকো আমি রান্না করে আনছি।
নিরু শুয়ে থাকলো আর মাহির চলে গেলো রান্না ঘরে।
পুরো ঘন্টা খানেক পর, মাহির গরম গরম পরোটা আর ডিম ভাজি নিয়ে হাজির হলো।
নিরু আর মাহির খেতে বসলো।
খাওয়া শেষে মাহির সব কিছু গোছাতে যাবে তখন নিরু বললো, আচ্ছা মাহির তুমি আমাকে বকো না কেন।
তোমায় বকবো কেন
অবশ্যই বকবে আমি যখনি ভুল করবো তখনি বকবে
বকলে কি খুশি হবে
হুম
ওকে মাঝে মাঝে বকবো
প্রমিজ করো
তা পারবো না
কেন
এমনি
নিরু আর কথা বাড়ালো না কারন সে জানে মাহির তাকে কখনো বকবে না।
এভাবে তিন দিন পার হয়ে গেলো,
মাহির এবার দৃঢ় বিশ্বাসি যে, অবুজ প্রানিটির খুব তাড়াতাড়ি তার জ্ঞান ফিরে পাবে। কারন প্রানিটির শরীরের সমস্ত ক্ষত সেরে গেছে।
প্রানিটিকে দেখতে খুব ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠলো মাহির। নিরু এখনও ঘুমে
সিরি বেয়ে নিচে নেমে আসলো।
দড়জা খুলতে যাবে মাহির ঠিক তখনই ভিতরে অদ্ভুদ তবে মৃদু একটা আওয়াজ পেলো। তাড়াফুড়া করে দড়জা খুললো মাহির।
ভিতরে তাকিয়ে অবাক সে। মাহির ভেবে রেখেছিলো প্রানিটি খুব তাড়াতাড়ি জ্ঞান ফিরে পাবে তবে সেটা এতো তাড়াতাড়ি সে তার বিশ্বাস হচ্ছে না
দড়জা ভিরিয়ে পা বাড়াতেই এলিয়েন মুখ ফিরে তাকালো মাহিরের দিকে।
মাহিরের দিকে তাকিয়ে, আমি এখানে এলাম কি করো।
মাহির কম্পিত গলায ভয়ে ভয়ে বললো, আমি আপনাকে এনেছি, রাস্তার পাশে অসুস্থ ও ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় পেয়েছিলাম আপনাকে, তাই আপনাকে সুস্থ করার জন্য বাসায় নিয়ে এসেছি।
এলিয়েন মুদ্ধ দৃষ্টিতে মাহিরের দিকে তাকালো আর বললো, ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি না থাকলে হয়তো আজ আমার বেচে থাকা হতো না।
হঠাৎ কিসের যেনো একটা শব্দে মাহির আর এলিয়েন দুজনেই ফিরে তাকালো একই দিকে।
এলিয়েন তার হাতের পাশ থেকে যন্ত্র টা বের করলো, মাহির তাকালো যন্ত্র টির দিকে, তার মানে এই যন্ত্র থেকে প্রতিদিন শব্দ হতো।
এলিয়েন গম্ভির গলায় বললো, আপনি কি এই যন্ত্র তে হাত দিয়েছেন।
মাহির ইতস্থতার সাথে বললো, ভুলে দিয়েছিলাম।
কেনো এই কাজ টি করেছেন
কেনো খুব বড়ো ভুল করলাম নাকি
হুম অনেক। এই যন্ত্রে প্রথম যে স্পর্শ করবে তাকেই আমার পৃথিবী থেকে নিয়ে যেতে হবে, আর এটাই আমার উদ্দেশ্য ছিলো।
এর মাঝে মাহির কে খুজতে খুজতে নিরু গেস্ট রুমে চলো আসলো, এসেই এলিয়েনের মাহিরকে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে চিৎকার করে কেদে উঠলো।
মাহির নিরু দিকে তাকিয়ে রইলো নিস্তব্ধ চোখে।
এলিয়েন নিজেও হক চকিয়ে গেলো।
নিরু কাদতে কাদতে বললো, আপনি কে আর আমার মাহির, আমার আত্না কে কেনো নিয়ে যাবেন
এলিয়েন এবার নিরু কে কান্না থামাতে বললো,
আমি আপনাকে সব বলছি,
আমাকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে একটা মানুষকে নিয়ে যেতে, যাতে করে আমরা মানুষ নিয়ে গবেষনা করতে পারি, এর আগেও তিন জনকে নিয়েছি আমরা। যাদের উপর গবেষনা করে আমরা আপনাদের ভাষা অনুভুতি ইমোশন সব কিছু আয়ত্ত করেছি, এর জন্যই এখন আপনাদের সাথে কথা বলছি অনায়াশে।
মানুষ নিযে যাবেন নিন তো আমার স্বামী কে কেনো নিবেন, ভারী স্বরে কথা গুলো বললো নিরু
আমি আপনার স্বামীকে নিতাম না, তাছাড়া আমি তার কাছে চির ঋনী। কিন্তু সমস্যা হলো আমি যে মানুষ কে নিয়ে যাবো সে মানুষের হাতে এটা ধরিয়ে দিলে আমাকে সিগন্যাল দেই একে নেওয়া যাবে নাকি।
আপনার স্বামী এই যন্ত্র টা ধরেছিলো এবং তার ডাটা আমাদের গ্রহে চলে গেছে আর ওরা আমাকে সিগন্যাল দিছে মাহির সাহেব কে নিয়ে যেতে বলছে। এখন আমি কি করবো, আমি নিরুপায় ।
নিরু এবার অনেক শব্দ করে কান্না শুরু করলো।
মাহির নিরু কে সান্তনা দিচ্ছে, কেদোনা ভাগ্যে যা আছে তাই হবে।
কে শোনে কার কথা, এবার নিরু হাত জোড় করে বললো, প্লিজ আমার স্বামী কে ছেড়ে দাও, ওকে ছাড়া আমি বাচবো না।
আমি তো নিরুপায়, এলিয়েন বললো। তবে তোমার তো একটা বেবি দরকার, তুমি যদি চাও আমি তোমাকে একটা বেবি এনে দিতে পারি কিন্তু মাহির সাহেব কে আমার সাথে যেতে দিতে হবে।
কান্না জরিত কন্ঠে নিরু বললো, আমার কোনো বেবী টেবী লাগবে না, আপনি প্লিজ আমার স্বামী কে ছেড়ে দিন।
সত্যি বলতে কি জানেন আপনার স্বামী আমার জিবন বাচিয়েছে তার জন্যই তাকে একটা চান্স দিতে পারি, তবে উনাকে যদি না নিয়ে যেতে পারি তবে হয়তো আমার শাস্তি হবে।
আপনার কেনো শাস্তি হবে, মাহির বললো
এটা আমাদের গ্রহের নিয়ম। তবে আইডিয়া পেয়েছি একটা।
উৎসাহের সাথে নিরু বললো, কি
সেটা আপনাদের না জানলেও হবে আমি আমার গ্রহে স্পেস যানের জন্য মেসেজ দিয়েছিলাম, সেটা হয়তো একটু পরে চলে আসবে আমাকে চলে যেতে হবে। তবে কখনো যদি পৃথিবী তে আছি তখন আপনাদের জন্য একটা বেবী এনে দেব। বাই ভালো থাকবেন
মাহির আর নিরু হাত বাড়িয়ে বাই দিলো
এলিয়েন মুহুর্তে তাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেলো।
মাহির নিরুর দিকে তাকিয়ে, সরি
কেনো
তোমাকে সত্য টা জানাতে পারি নি
এটা ঠিক করো নি, তোমার কিছু হলে আমি কিন্তু বাচবো না, এটা মাথায় রেখো।
ওকে,
কাহিনি টা এবার বলা যাবে কিভাবে কি হলো
হুম চলো খেতে খেতে বলি।
মাহির সব কথা খুলে বললো নিরু কে
পুরো ১৪ বছর পর এলিয়েন টা পৃথিবীতে এসেছে তাও শুধু মাহিরের জন্য। সাথে একটা বেবী।
বেবি টা দেখতে পুরোই নিরুর মত। নিরু জানে না এই বাচ্চা টা এলিয়েন কোথায় থেকে এনেছে, তবে তার মুখে সেই বিষয়ে কোনো কথা নেই, সে আছে বেবী নিয়ে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। কেমন হলো জানাবেন।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ