āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ā§Šā§Ļ āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž

4922

.............গল্পঃ #মৃত্যুর_যন্ত্রণা
.
(১)
.
সামিয়া ভালো করেই বুঝতে পারছে তার শ্বাস-প্রশ্বাস আস্তে আস্তে ভারি হয়ে উঠছে। গলার নিচে বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছে সে। মনে হচ্ছে কেউ একজন সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তার বুকে চেপে ধরেছে। কাউকে যে ডাকবে সেই কথা বলার বাক শক্তিও যেন সে হারিয়ে ফেলেছে। হঠাৎ করেই তার চোঁখের সামনে বীভৎস এবং অত্যাধিক ভয়ংকর এক ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটলো। সামিয়া জীবনে বহু ভৌতিক মুভি দেখেছে এবং বহু মানুষের কাছে তাদের ভৌতিক চেহারার গল্প শুনেছে। কিন্তু তার সামনে উপস্থিত ব্যক্তিটি ওই সব বর্ণনার চরিত্রের চেয়েও এবং তার দেখা সব ভৌতিক মুভির ভৌতিক চরিত্র গুলার চেয়েও অনেক ভয়ংকর।
....
..
আশ্চার্যের ব্যাপার হলো সামিয়া তার শরীরের সমস্ত অঙ্গের শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। সেখান থেকে উঠে যাওয়া তো দূরের কথা সে একটু নাড়াচাড়াও করতে পারছে না। তার চোঁখের সামনে শুধু তার পাপের কর্ম কান্ডগুলা ফুটে উঠছে। তাহলে কি সামিয়ার ধারণাই সঠিক হচ্ছে তার সামনে উপস্থিত ভয়ংকর ব্যক্তিটি আর কেউ নয় তিনি স্বয়ং মালাক উল মউত ( মৃত্যুর ফেরেশতা)। সামিয়ার ভয় যেন এখন আগের চেয়ে আরো বহুগুণ বেড়ে গেলো।
......
...
সামিয়ার আর বুঝতে বাকী রইলো না যে তার হাতে আর সময় নেই। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আজরাইল (আঃ) এখনি তার জান কবজ করবে। এখনি তার রুহকে তার শরীর থেকে আলাদা করবে। এর আগে অবশ্য একে একে হয়রত মিকাঈল (আঃ) সহ আরো বেশ কিছু ফেরেশতা সামিয়ার কাছে এসে তাকে সালাম দিয়ে বলে হে আল্লাহর বান্দা আমি আপনার জন্য খাদ্য সরবাহের দায়িত্বে ছিলাম কিন্তু সারা পৃথিবী তন্ন তন্ন করে খুঁজেও আপনার জন্য জন্য কোনো খাবার খুঁজে পেলাম না,হয়তো আপনার মৃত্যু আপনার অতি নিকটে তাই আমি চললাম। এরপর অন্যজন সালাম দিয়ে বলে হে আল্লাহর বান্দা আমি আপনার পানি সরবাহের দায়িত্বে ছিলাম কিন্তু পুরা পৃথিবী তন্ন তন্ন করে খুঁজেও আপনার জন্য এক ফোঁটা পানি খুঁজে পেলাম না আমার দায়িত্ব শেষ আমি চললাম। একই ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ফেরেশতাও জানিয়ে দেয় সারা পৃথিবীর কোথাও তার জন্য কোনো শ্বাস-প্রশ্বাসের বরাদ্দ নেই।
......
...
কথা গুলা বলা শেষেই ফেরেশতারা তার কর্মজীবনের হিসাব তার সামনে তুলে ধরে। সামিয়া তখন একবার ডান দিকে আর একবার বাম দিকে তাকাতে থাকে যাতে সেই হিসাব আর কেউ দেখতে না পারে। তারপর তারা সেখান থেকে চলে যায়। তারা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আজরাইল (আঃ) সামিয়ার ডান পাশের রহমতের ফেরেশতা এবং বাম পাশের আজাবের ফেরেশতা নিয়ে হাজির হন। আজরাঈল (আঃ) তার পরিচয় দেয়ার পর পরেই সামিয়ার জান কবজ করার কাজ শুরু হয়ে যায়। রহমতের ফেরেশতা এবং আজাবের ফেরেশতা সামিয়ার শরীরের ভেতর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করতে থাকে সামিয়ার রুহকে। প্রচন্ড কষ্ট যন্ত্রণায় সামিয়ার চোঁখ মুখ পুরা কালো হয়ে গেছে। সামিয়ার কলিজা যেন ফেটে যেতে লাগলো। জীবনে বহু কষ্ট সে পেয়েছে কিন্তু এই তীব্র যন্ত্রণার কাছে সেগুলা কষ্ট যেন কিছুই না। এই কষ্ট এতই যন্ত্রণাময় যে সামিয়া এই কষ্ট আর সহ্য করতে না পেরে নিজেই চাচ্ছে তার রুহ যেন তার শরীর থেকে বের হয়ে যায়। বুকের পাঁজরের হাড় সহ শরীরের সবগুলা হাড় ভেঙ্গে, ফুসফুস,কলিজা ফেটে সামিয়ার রুহ সামিয়ার গলায় এসে আটকে যায়। সামিয়া হাত-পা ছুটাছুটি করে এক নাগাড়ে ছটপট করেই যাচ্ছে। তারপর আজরাইল (আঃ) সামিয়ার গলায় আটকে যাওয়া রুহকে কবজ করে নেয়। সাথে সাথে সামিয়ার কন্ঠনালি ছিঁড়ে তার রুহ বেড়িয়ে আসে। সেই সাথে মুখ দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে কলিজার ফেটে যাওয়া রক্তগুলা। শেষ সময়ে সামিয়া এতটাই কষ্ট পেয়েছে যে জিহ্বায় কামড় দিয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে।
.
(২)
.
প্রতিদিনকার মত আজকেও রাগ করে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায় সামিয়া। রাগ করার কারণ তার স্বাধীনতার উপর তার বাবা মায়ের হস্তক্ষেপ করা। তার ভাষ্যমতে সে এখন সাবালিকা। তার ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা তার হয়েছে। তাই ছোট বাচ্চার মত সারাদিন তার পিছনে না লেগে থেকে তাকে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে দেয়া উচিৎ। সামিয়া মনে করে বর্তমানের এই আধুনিক সময়ে একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েকে সেই মধ্য যুগীয় উপায়ে ঘরের মাঝে বন্দী করে রাখা মানে নারীর অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত করে রাখা।
......
...
সামিয়ার সাথে তার বাবা মায়ের মতের অমিল হওয়ার অন্যতম কারণ হলো সামিয়ার আধুনিক জীবনব্যবস্থা। সামিয়া তার বাবা মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান। তাই ছোট থেকেই সামিয়া যা চেয়েছে তার বাবা মা তাই পূরণ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এই অতিরিক্ত ভালোবাসাই যে তার পরবর্তী জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াবে তা তার বাবা মা কখনোই কল্পনা করতে পারেনি। সামিয়ার বাবা মা অত্যন্ত ধার্মিক হলেও সামিয়া ধার্মিকতার ধারের কাছেও নেই।
......
...
সামিয়া নিজেকে সবসময় আধুনিকতার মাঝে রাখতেই পছন্দ করে। নতুন নতুন ড্রেসআপ নতুন নতুন ফ্যাশান এইসব নিয়েই তার সময় কেটে যায়। বাবা মা যখন ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত থাকে সামিয়া তখন বন্ধু বান্ধবীদের সাথে হাসি,তামাশা এবং আড্ডায় ব্যস্ত থাকে। সময় পেলেই তাদের সাথে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া বা সিনেমা হলে যেয়ে সিনেমা দেখা আবার কখনো বা গভীর রাত জেগে বিভিন্ন ছেলেদের সাথে আড্ডায় মেতে থাকা। এর কিছু কিছু তার বাবা মা বুঝতে পারলেও বেশীর ভাগই তাদের অজানা থেকে যায়। সামিয়াকে অনেক কয়বার শাষণ করেও কোনো ফল হয়নি উল্টো আগের চেয়ে সে আরো বেশী উচ্ছৃঙ্খল এবং জেদি হয়ে উঠেছে।
.
আজকে সামিয়ার এক বান্ধবীর বাসায় এক বিরাট অনুষ্ঠান আছে যেখান থেকে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যাবে। যার ফলে সামিয়ার বাবা মা তাকে সেখানে কিছুতেই যেতে দিবে না। আর এতেই সামিয়া তার বাবা মায়ের সাথে প্রচন্ড রাগারাগি করে বেড়িয়ে যায়। সামিয়ার বাবা মেয়ের দিনের পর দিন এমন আচারণ দেখে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়ে। যে মেয়ের খুশির জন্য তার সব আবদারই তারা পূরণ করেছে আজকে কিনা সেই তাদের সাথে দূর্ব্যবহার করছে। অন্যদিকে সামিয়ার মা প্রতিবার নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে যাতে আল্লাহ তার মেয়েকে হেদায়েত দান করেন। তাকে যেন সঠিক পথে ফিরে আসার তৌফিক দান করেন। পাপের পথ থেকে যেন আল্লাহর পথে ফিরে আসে।
.
(৩)
.
ফজরের আযান দিলে সামিয়ার মা সামিয়াকে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য প্রতিদিন ডাকতে আসেন। যদিও এতে কোনো কাজ হয়না উল্টা তাকে প্রতিদিন এক গাদা ঝাড়ি খেতে হয়। তবুও সামিয়ার মা হাল ছাড়েন না যদি এই রকম করতে করতেই তার মেয়ের একদিন হেদায়েত হয়। সামিয়াকে অনেকবার ডাকার পরেও সামিয়া আজ কোনো সাড়া দিচ্ছে না। সামিয়ার মায়ের মনে খটকা লাগে এমন তো কখনো হয় না সামিয়া তো একবার না একবার হলেও তার মায়ের উপর রাগান্বিত স্বরে কথা বলে তাহলে আজ এত ডাকার পরেও নিশ্চুপ কেনো??
.
সামিয়ার মা যখন সামিয়াকে ডাকছিলো সামিয়া তখন অনেক চিৎকার করেই তার মায়ের কথার জবাব দিচ্ছিলো কিন্তু সে জবাব তার মায়ের কাছে পৌঁছাচ্ছিলো না কারণ রুহকে কথা বলার শক্তি আল্লাহ তা'য়ালা দিলেও তার কথা শোনার শক্তি মানুষকে আল্লাহ তা'য়ালা দেয়নি। সামিয়ার রুহ ভয়ে কুঁকড়ি লেগে তার বিছানার এক কোনায় বসে রয়েছে কারণ ঠিক তার দরজার সামনেই আজরাইল (আঃ) দাঁড়িয়ে আছেন।
......
...
দরজায় অনেক কয়বার নক করার পরেও যখন সামিয়া দরজা খুললো না তখন সামিয়ার মা সামিয়ার বাবাকে ডেকে আনলেন। সামিয়ার বাবা অনেক কয়বার চেষ্টা করার পরে যখন দরজা ভাঙ্গতে সক্ষম হলেন তখন ভেতরে যেয়ে মেয়ের মৃতদেহ ছাড়া আর কিছুই পেলেন না। মেয়ের মৃতদেহ দেখে দুইজনই কান্না করতে শুরু করে দিলেন। সামিয়ার রুহ তার বাবা মাকে অনেকবার বলতে লাগলো তোমরা কাঁদছ কেনো আমি তো এখানেই আছি কিন্তু কোনো বারেই তার বাবা মা তার কথার উত্তর দিলো না।
......
...
একে একে সব আত্নীয় স্বজন,বন্ধুবান্ধবী, পাড়া প্রতিবেশী সহ দূর দুরান্ত থেকে অনেকেই সামিয়াকে দেখতে আসলো। যারা সামিয়ার কাছের তারা সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। সামিয়া তাদের সবার কাছে যেয়ে ডাকতে লাগলো কিন্তু বরাবরের মতই কেউই তার ডাকে সাড়া দিলো না। আজরাইল (আঃ) মাঝে মাঝে তার সামনে এসে ভয়ংকর গলায় বলতে লাগলেন আজ কেউ তোমার ডাকে সাড়া দিবে না, তোমার কথা কেউ শুনতে পারবে না। তোমার সেই ক্ষমতা আমি কেড়ে নিয়েছি। তুমি যেমন তোমার প্রভুর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলে ইবাদত বন্দেগী ত্যাগ করার মাধ্যমে ঠিক তেমনি আমিও আজকে তোমার সাথে দুনিয়ার সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছি তোমার জান কবজ করার মাধ্যমে। আর সামিয়ার রুহ সাথে সাথে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
......
...
সামিয়াকে গোসল করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সামিয়ার রুহ সবার পায়ে ধরে কান্না করছে যাতে তাকে গোসল করতে নিয়ে না যাওয়া হয়। অথচ এই গোসলই এক সময় সামিয়ার অনেক প্রিয় ছিলো। গোসলের মাধ্যমে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতো বাথরুমে। কতই না দামি সাবান, স্যাম্পু এবং ফেসওয়াস ব্যবহার করতো তার কোনো হিসাব নেই। অথচ আজকে সামান্য পানি দেখেই সে ভয় পাচ্ছে।
......
...
সামিয়ার এক আত্নীয় সামিয়াকে অত্যন্ত যত্নের সহিত গোসল করে দিচ্ছেন। পবিত্র আগরবাতি তার আশেপাশে ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। পবিত্র ঠান্ডা পানি যখন তার শরীরে ঢালা হচ্ছে ঠিক তখনি আজরাইল (আঃ) টগবগে ফুটন্ত গরম পানি তার শরীরে ঢেলে দিচ্ছে। ঠান্ডা পানি ঢালার সময় সামিয়ার মৃতদেহ নিথর অবস্থায় পড়ে থাকলেও আজরাইল (আঃ) এর ঢালা গরম পানিতে সামিয়ার রুহ চিৎকার-চেঁচামিচি এবং ছটফট করতে লাগলো। রুহ'র শরীরে যেখানেই গরম পানি পড়তে লাগলো সেখানেই ঝলসে যেতে থাকলো।
......
...
একদিন রান্না ঘরে চা করতে যেয়ে অল্প একটু গরম পানি তার হাতের উপর পড়েছিলো। সেদিন কত কান্ডই না হয়েছিলো। কত মেডিসিনই না লাগিয়েছিলো হাতে। এমনকি ডাক্তার পর্যন্ত দেখানো হয়েছিলো। সেই দিনের গরম পানির চেয়ে আজকের গরম পানির উষ্ণতা হাজার গুণ বেশী। সেই দিনের গরম পানিতে সর্বোচ্চ ফোসাই পড়তো কিন্তু আজকের গরম পানিতে দেহের মাংস ঝলসে তো যাচ্ছে যাচ্ছেই সাথে হাড়ও গলে পড়ছে। অথচ আজকে সামিয়াকে মেডিসিন লাগিয়ে দেওয়ার মত কেউ নেই। ডাক্তারকে ডাকার মতও কেউ নেই। পুরা ১ ঘন্টা সময় লাগলো সামিয়ার গোসল, কাফনের কাপড় পড়ানো সহ যাবতীয় কাজ শেষ করতে। এই ১ ঘন্টা সামিয়ার রুহ'র উপর যে নির্যাতন চললো তা একজন জীবিত মানুষের সমস্ত জীবনের নির্যাতনের চেয়েও বেশী যন্ত্রণাদায়ক।
.
(৪)
.
সামিয়ার মা হাফেজা হওয়ায় যখনই সময় পেতো তখনই সামিয়াকে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত শুনাতো এবং সেগুলার অর্থ বুঝিয়ে দিতো। কিন্তু সামিয়া তার মায়ের এই উপদেশ গুলা আজাইরা বকবকানি ছাড়া কিছুই মনে করতো না। সে এক কান দিয়ে শুনতো আর এক কান দিয়ে বের করে দিতো। যখন বেশী বিরক্ত হতো তখন তার মায়ের উপর রাগ হয়ে সেখান থেকে উঠে যেত। না হলে কানে ইয়ার ফোন ঢুকিয়ে উচ্চস্বরে গান শুনতো। তার মা যখন তাকে কুরআন শরীফ পড়তে বলতো তখন তার মুখে লেগে থাকতো ভিন্ন দেশের নানারকম গান।
......
...
রোজা পালনের প্রতিও সামিয়ার অনিহা। পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব তাকে বলেও কোনো লাভ হয়নি। রোজা রাখুক আর নাই রাখুক প্রতিদিন বন্ধু বান্ধবীদের সাথে রেস্টুরেন্টে যেয়ে ইফতার তাকে করতেই হবে। বাবা মা এত বার করে বলতো অন্তত একটা দিন তাদের সাথে ইফতার করুক কিন্তু বরাবরই সে তাদেরকে হতাশ করতো। তার কথা এমন চুপচাপ ভাবে ইফতারে কোনো মজা নেই,বন্ধু বান্ধবের সাথে হৈ চৈ করে অনেক সেলফি তুলে ইফতার করার মজাই আলাদা। তারপর সেগুলা এফবিতে দিয়ে হাজারো লাইক,কমেন্ট পাওয়ার ফিলিংসই অন্যরকম।
......
...
আত্নীয়তার সাথেও সামিয়ার সম্পর্ক তেমন একটা ভালো নেই। তার বেশীর ভাগ আত্নীয় স্বজনেরই অর্থনৈতিক দুর্বলতা থাকায় তাদের সাথে বিশেষ কোনো সম্পর্ক রাখেনি সামিয়া। তার স্ট্যাটাসের সাথে তারা যায়না দেখেই তাদেরকে এড়িয়ে চলে সামিয়া। তার মা বার বার বলতো আত্নীয় স্বজনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা ঠিক না। কুরআনে বলা আছে যে আত্নীয় স্বজনের সাথে সম্পর্ক ইচ্ছা করে ছিন্ন করে তার জন্য জাহান্নাম অপেক্ষা করছে। সামিয়ার মা সামিয়াকে আরো ৬ ধরনের জাহান্নামী নারীর কথা বলে। ১. ঐ নারী যে মাথার চুল খুলে বেপর্দা হয়ে ঘর থেকে বাহির হয়। ২. ঐ নারী যে তার স্বামীর সাথে তর্ক করে এবং স্বামীকে সম্মান করেনা। ৩. ঐ নারী তার স্বামী থাকার সত্ত্বেও পর পুরূষের সাথে হাসি তামাশা ও কুকর্মে লিপ্ত হয়। ৪. ঐ নারী যে অপবিত্র থাকা সত্ত্বেও পবিত্রতা অর্জন করতে অলসতা করে এবং নামাজের প্রতি অমনোযোগী। ৫. ঐ নারী যে মিথ্যা কথা বলে এবং গীবত বলে রেড়ায়। ৬. ঐ নারী যে অন্যের সুখ দেখে হিংসা করে এবং উপকার করে খোটা দেয়। তাই সামিয়ার মা সামিয়াকে এইসব বিষয় থেকে বার বার দূরে থাকতে বলে। কিন্তু সামিয়া বরাবরই তার মায়ের এইসব কথার প্রতি বিরক্ত হয়।
.
(৫)
.
পুরা বাড়ি কুরআন তিলাওয়াতে মুখরিত হয়ে উঠেছে। সুমধুর সুরে কুরআন তিলাওয়াত করছে অনেকেই। কিন্তু সেই তিলাওয়াতের বদলে বেঁচে থাকা অবস্থায় ভিন্ন দেশের গান গুলা সামিয়ার রুহ'র কানে বাজছে। আর সাথে সাথে তার কানের পর্দা ছিঁড়ে যাচ্ছে। সামিয়ার রুহ বারবার সবার পায়ে পড়ে কান্নাকাটি করছে তোমরা চুপ করো। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আমার কান ছিঁড়ে যাচ্ছে। আমি তো তোমাদের সামনেই আছি তাহলে কেন এগুলা পড়ছো। কেউ যখন তার কথায় কোনো উত্তর দিলো না তখন সামিয়ার রুহ কান শক্ত করে চেপে ধরে মেঝেতে মাথা বাড়ি দিয়ে কান্নাকাটি করতে লাগলো ইশশ কেনো আমি কুরআন পড়িনি?? কেনো গান বাজনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম?? যা আমার মস্তিষ্কে তীব্র যন্ত্রণা দিচ্ছে। তখন আজরাইল (আঃ) তার কাছে এসে আবারো বললেন সামিয়া ভোগ করো তোমার কর্মফল। এটা তো তোমারই প্রিয় সুর যা তুমি সব সময় শুনতে তাহলে আজ কেনো এটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছো??? কেনো এটা থেকে পালানোর চেষ্টা করছো???
......
...
আত্নীয় স্বজনের বিদায় শেষে সামিয়াকে নিয়ে যাওয়া হলো জানাজা পড়ানোর জন্য। এলাকায় বাবা মার খ্যাতি থাকায় এবং তার এমন অকাল মৃত্যু হওয়ায় জানাজার লোক সংখ্যা মোটামুটি ভালোই হয়েছে। সামিয়ার লাশ যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন চারিদিকে অনেক গুলা কুকুর অনাবরত ডেকেই যাচ্ছিলো। জানাজায় যাওয়ার কিছু লোক কুকুর গুলাকে অনেক তাড়ানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু সেগুলা কিছুতেই ওখান থেকে যাচ্ছে না। বেঁচে থাকা অবস্থায় সামিয়ার মা সামিয়াকে প্রায়ই বলতো যারা খারাপ ব্যক্তি তাদের মৃত্যু অনেক নির্মম ভাবে হয়। এতটাই নির্মম ভাবে হয় যে আশেপাশে থাকা অবলা প্রানী গুলা অনাবরত ডেকেই যায়। তারা সেই খারাপ আত্নাটাকে সহ্যই করতে পারে না। মায়ের সেই কথাটা আজ সামিয়ার অনেক মনে পড়ছে। কেনো যে বেঁচে থাকা অবস্থায় মায়ের কথাগুলা শুনেনি?? কেনো যে ঈমানের সহিত চলেনি?? সেই অনুশোচনা তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। এখন আফসোস করেও আর লাভ নেই কারণ এখন অনেকটাই দেরী হয়ে গেছে।
......
...
জানাজায় দাঁড়িয়ে ইমাম সাহেব যখন জানাজায় উপস্থিত সকলদের উদ্দেশ্যে বললেন জীবিত অবস্থায় মেয়েটি কেমন ছিলো??? তিনি কি পর্দার সহিত জীবন যাপন করেছেন?? তখন কেউই তার কথার উত্তর দিতে পারলো না। আর দিবেই বা কি করে?? সামিয়া তো জীবিত থাকাকালে কখনোই পর্দা করেনি। সবসময়ই আধুনিকতার নামে ছোট ছোট পোষাক বা অশালীন পোষাক ব্যবহার করতো। তার মা তাকে কত বলেছে অন্তত বাহিরে যাওয়ার সময় পর্দা করে যাক। কিন্তু সামিয়া তার মায়ের প্রতিটি কথার মতো এটাও শুনে না শুনার মতই হয়ে থাকতো। বাবা মায়ের অর্জিত সম্মান সামিয়ার কারণেই আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। উপস্থিত মুসল্লিরা পড়ে গেলো বিপাকে। তারা না পারছে মিথ্যা বলতে না পারছে সত্যটা বলতে। কারণ সত্যটা বললে যে তার শাস্তি আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে। সামিয়ার বাবা সকলের কাছে মেয়ের হয়ে ক্ষমা চাইলেন যাতে তারা তার মেয়েকে সব ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা করে দেয়।
......
...
লাশ যখন কবরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন সামিয়ার রুহ তার বাবাকে ডেকে ডেকে অনেক কান্নাকাটি করছিলো। সে বার বার তার বাবাকে বলতে লাগলো বাবা আমাকে তোমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? এইতো আমি? আমাকে তোমরা ওইদিকে নিয়ে যাওনা বাবা। আমি তোমাদের ছাড়া একা একা ওখানে থাকতে পারবো না বাবা। আমি কথা দিচ্ছি বাবা আমি আর কখনো তোমার অবাধ্য হবো না। আমি তোমার আর মায়ের সব কথা শুনবো। তোমাদের একদম লক্ষ্মী মেয়ে হবো। তাও আমাকে ওইদিকে নিয়ে যেয়ো না বাবা।
.
সামিয়ার কান্নাকাটি দেখে পিছন থেকে আজরাইল (আঃ) সামিয়াকে ডাকতে লাগলো। সামিয়া সেখানে যাওয়ার পর তাকে তার লাশটার দিকে তাকাতে বললো। সামিয়া তাকাতেই দেখলো তার লাশের উপর একটা কুকুর বসে আছে। তখন আজরাইল (আঃ) সামিয়াকে বললো এটাকে চিনতে পারছো? এটা হচ্ছে তোমার দুনিয়ার জীবনের কর্মফল। সামিয়া যখন কান্নাকাটি করে বলতে লাগলো আমাকে আর একবার সুযোগ দিন। আমি দুনিয়াতে যেয়ে এবার সব ভালো কাজগুলা করবো। আজরাইল (আঃ) তখন বললেন সে সুযোগ তুমি আর পাবে না। আজ যদি তুমি কুরআন ঠিক ভাবে পড়তে তাহলে অবশ্যই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিতে। আজকে আর এই দিনটা দেখতে হত না।
......
...
সামিয়ার মাও সামিয়াকে বলতো মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও। কখন আমাদের মৃত্যু হবে তা আমরা কেউ জানিনা। কারণ আল্লাহ তা'য়ালা সূরা আন কাবুতের ৫৭ নাম্বার আয়াতে বলেছেন প্রত্যেককেই একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আবার সূরা সিজদার ১১ নাম্বার আয়াতে বলেছেন প্রত্যেককেই একদিন তার কাছে ফিরে যেতে হবে। আমাদের দুই পাশে নিযুক্ত ফেরেশতারাই আমাদের জান কবজে সাহায্য করবে। তাই তার কাছে যাওয়ার আগেই সেটার প্রস্তুতি নিতে হবে। মায়ের এমন কথা শুনে সামিয়া হেঁসেই ফেলতো আর বলতো মা কতটাই না বোকা। অথচ নিজের কর্মের জন্য আজ নিজেই লজ্জিত, নিজেই অনুতপ্ত। নিজেকেই আজ বড় বোকা মনে হচ্ছে কারণ সত্যকে ছেড়ে কিভাবে মিথ্যাকে নিয়ে পড়েছিলো সে? যা আজ তার কোনো কাজেই আসছে না। আর চারপাশে কুকুরগুলা তো অনাবরত ডেকেই যাচ্ছে। মনে হচ্ছে কোনো অশুভশক্তিকে তারা দেখতে পাচ্ছে। দেখতে পাচ্ছে কোনো ভয়ানক শাস্তিকে। যার ভয়েই তারা কান্নাকাটি করছে।
.
(৬)
.
সামিয়া মাটি ধরে অঝোরে কাঁদতে লাগলো আর বলতে লাগলো ইশশ আমি যদি মাটি হতাম তাহলে এই দিনটা আজ দেখতে হতো না। আমি যদি বাতাস হতাম তাহলে এই দিনটা আজ দেখতে হতো না। আমি যদি পানি হতাম তাহলে আজ এই দিনটা দেখতে হতো না। সামিয়া দূর থেকেই তার কবরটা দেখতে পাচ্ছে। আজরাইল (আঃ) তাকে বলতে লাগলো এসো সামিয়া এসো, এখন থেকে এটাই তোমার ঘর হবে। এখানেই তুমি থাকবে চিরকাল। এটাই হবে তোমার একমাত্র বাসস্থান। সামিয়া তখন চিৎকার করে তার বাবাকে বলতে লাগলো বাবা আমি এই ছোট জায়গায় থাকতে পারবো না। তোমরা আমাকে নিয়ে যাও। নিয়ে যাও আমাকে মায়ের কাছে আমাদের বাড়িতে।
......
...
সামিয়ার মা একদিন সামিয়াকে বলেছিলো তুই যে নামাজ-কালাম পড়িস না, আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করিস না মৃত্যুর পর তোর কি হবে একবারো ভেবেছিস? সামিয়া তখন বলেছিলো কেনো তোমরা তো আছোই,তোমরা তো সারাদিন ইবাদত বন্দেগীই করো,সারাদিন আল্লাহর কাজ করো, তো তোমরা আমার জন্য দোয়া করো তাহলেই আমার জন্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'য়ালা তোমাদের দোয়া ফিরিয়ে দিবে না। সামিয়ার এমন কথার জবাবে সামিয়ার মা সামিয়ার দিকে মুঁচকী হেসে বলেছিলো আমি তোকে একটা গল্প বলছি, আশা করি এই গল্পের মাঝেই তুই তোর সব উত্তর পেয়ে যাবি।
হযরত ফাতিমা (রাঃ) মারা যাবার পর যখন তাকে কবরে নামানো হচ্ছিলো তখন হজরত আবু জর গিফারী (রাঃ) কবরের কাছে যেয়ে কবর কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন------------
......
...
""আতাদরী মানিল্লাতী জি'না বিহা ইলায়কা?"""
অর্থ--হে কবর, তুই কি জানিস, আজ
তোর মধ্যে কাকে রাখছি?
.
"""হা-যিহী সায়্যিদাতু নিসায়ী আহলিল জান্নাতী ফা- তিমাতা (রাঃ) আনহা। """
অর্থ--এটা জান্নাতের সকল মহিলাদের সর্দার, ফাতিমা (রাঃ) আনহা৷
.
যখন কবর থেকে কোন আওয়াজ আসলো না তখন তিনি আবার বললেন----
.
"""হা-যিহী উম্মূল হাসনাইন (রাঃ) আনহুমা। """
অর্থ--এটা হযরত হাসান হুসাইন
এর আম্মা ৷
.
এরপরেও যখন কবর থেকে কোন আওয়াজ আসলো না, তখন আবার বললেন---
.
"""হা-যিহী ঝাউযাতু আলিয়্যিন কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ্"""।
অর্থ---এটা হযরত আলী (রাঃ) এর স্ত্রী।
.
এবারও যখন কবর নিশ্চুপ থাকলো। তখন বললেন ----
.
"""হা-যিহী বিনতু রসুলুল্লাহি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম"""
অর্থ---এটা,দো জাহানের বাদশাহের মেয়ে।
......
...
খবরদার কবর কোন বেয়াদবী করবি না এই ব্যক্তির সাথে।
"আল্লাহ্ তা'য়ালা এবার কবরের জবান খুলে দিলেন। তারপর কবর কি উত্তর দিয়েছিলো জানিস?? মায়ের মুখে এমন প্রশ্ন শুনে সামিয়াও একটু কৌতূহলী হয়ে উঠলো। জানার ভঙ্গিতে উত্তর দিলো আর উত্তর দিবে, হয়তো বেয়াদবি করবে না তাই বলেছিলো। সামিয়ার এমন উত্তরে তার মা হেসে বললো কবর উত্তর দিয়েছিলো-----
.
"""আনা বায়তুয-যুলমাতি।"""
অর্থ--আমি অন্ধকার ঘর৷
"""আনা বায়তুদ-দূদাতী।"""
অর্থ---আমি সাপ বিচ্ছ্যুর ঘর৷
"""আনা বায়তুন-নফরাতী।"""
অর্থ---আমি এমন একটি ঘর যার মধ্যে কোন বংশ পরিচয় কাজ হয়না।
.
আমি দো জাহানের বাদশাহের মেয়ে ফাতিমা কে চিনিনা। হজরত আলীর স্ত্রীকে চিনিনা। হাসান হোসাইনের আম্মাকে চিনিনা। জান্নাতের মহিলাদের সর্দারনীকে চিনিনা। আমি শুধু চিনি-
"ঈমান আর আমল।"
আমার মধ্যে যদি কেহ ভাল আমল নিয়ে আসে তাহলে আমি কবর তাকে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দিবো। আর যদি কেহ খারাপ আমল নিয়ে আসে, তাহলে আমি কবর দু'দিক থেকে এমন জোরে চাপা দিবো, হাড় মাংস মিশে একত্রিত হয়ে যাবে। তাহলে ভেবে দেখ যার এত এত পরিচয় কবর তার প্রতিও অনড়। সেখানে আমাদের দোয়া কি তোর জন্য শুধু প্রযোজ্য হবে??? মায়ের এমন কথা শুনেই একরাশ বিরক্তি নিয়ে সামিয়া সেখান থেকে উঠে যায়। আজ মায়ের সেই কথাগুলা বড্ড মনে পরছে সামিয়ার। কেনো যে সেই কথাগুলা গুরুত্বের সহিত নেয়নি? যদি মায়ের কথাগুলা শুনত তাহলে হয়তো এমন আজাবের সম্মুখীন আজ হতে হতো না। হায়! কবরকে আমি এখন কি জবাব দিবো?? বলেই সামিয়া কান্না শুরু করলো।
......
...
সামিয়ার লাশ তার কবরের পাশে এনে রাখা হলো। সামিয়া তার কবরের ভিতরে তার লাশের উপরে বসে থাকা কুকুরটিকে দেখতে পেলো। যা তাকে সেখানে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত রয়েছে। সামিয়ার লাশ কবরের ভিতরে সঠিক নিয়মে রাখার পর সবাই নিয়ম মাফিক মাটি দিয়ে দিলো তারপর কেউ একজন কবরের মাটি গুলাকে সুন্দর করে সাঁজিয়ে কবরের আকৃতি বানিয়ে দিলো। সবাই চলেও গেলেও সামিয়ার বাবা তার কবরের পাশেই দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকলো বড় আদরের মেয়ে ছিলো তাকে এইভাবে একা রেখে যাবে তা তিনি ভাবতেই পারেননি। সামিয়ার রুহও তার বাবার সামনে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে আর বলছে আমাকে নিয়ে যাও বাবা। আমার এখানে খুব ভয় করছে। খুব অন্ধকার এখানে। আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমি এখানে থাকতে পারছি না। কিন্তু সামিয়ার বাবা সামিয়ার কথা কিছুতেই শুনতে পাচ্ছে না। সামিয়ার মামা এসে সামিয়ার বাবাকে ধরে বাসার উদ্দেশ্যে নিয়ে গেলেন।
......
...
যেই তার বাবা তার কবর থেকে ৭০ হাত দূরে গেলেন আর সাথে সাথে তার কবরে আজাব শুরু হয়ে গেলো। আজাবের ফেরেশতা তার রুহকে কবরের মাঝে টেনে নিলেন। এরপর মুনকার - নকীর নামক নীল চোখ এবং কালো গাত্রবর্ন বিশিষ্ট দুইজন প্রশ্নকারী ফেরেশতার অগমন ঘটে। তারপর তারা তাকে তিনটি প্রশ্ন করলেন। সামিয়া প্রশ্ন তিনটির সঠিক উত্তর দিতে না পারায় শুরু হয়ে গেলো তার উপর কবরের আজাব। কবরের মাটি জোড়া লাগতে শুরু করলো। অত্যন্ত জোড়ে মাটি গুলা সামিয়ার শরীরকে চাপ দিতে লাগলো। অতিরিক্ত চাপের ফলে সামিয়ার শরীরের হাড় গুলা সব ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। আবার তার শরীর পূর্বের ন্যায় হয়ে গেলো। আর কবরের মাটি গুলা চাপা দিতে লাগলো আবার তার শরীরের হাড় গুলা ভেঙ্গে যেতে থাকলো। এইভাবে আরো অনেক কয়েকবার চললো। তারপর সব বিষধর পোকা মাকড় মাটির মধ্য থেকে সামিয়ার কবরে এসে পড়লো। একে একে সব গুলা তাকে কামড় দিতে থাকলো আর সামিয়া চিৎকার চেঁচামিচি করতে লাগলো। বেঁচে থাকা অবস্থায় যেসব কীট পতঙ্গগুলাকে সে ভয় করতো সেগুলাও তাকে কামড় দিতে থাকলো। সামিয়ার চিৎকার কেউ শুনলো না। কেউ তাকে বাঁচাতে আসলো না। এরপর আরো ভয়ংকর ভয়ংকর সাপ তাকে দংশন করতে লাগলো। যা পৃথিবীর সাপের চেয়েও অনেক বেশী বিষাক্ত।
দুজন অন্ধ এবং বধির ফেরেশতা এসে একের পর এক সামিয়াকে শক্ত লাঠি দিয়ে আঘাত করতে লাগলো। সামিয়া হাজার চিৎকার করা সত্ত্বেও তারা কিছু শুনতে পায়না এবং দেখতে পায়না তাই তারা অনবরত তাকে আঘাত করেই যায়। এরপর সামিয়ার কবর পুরাটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠলো এবং প্রচন্ড তীব্র আগুনে জ্বলে উঠলো। এই আগুনের উষ্ণতা দুনিয়ের আগুনের চেয়ে হাজার হাজার গুণ বেশী তীব্র। আগুনের উত্তাপে সামিয়া পুরাই গলে যেতে লাগলো আর প্রচন্ড জোরে চিৎকার করতে লাগলো।
......
...
সামিয়ার চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে তার মা বাবা ছুটে আসতেই সামিয়া তাদের শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো আর বলতে লাগলো আমাকে মাফ করে দাও। আমি আর তোমাদের কথার অবাধ্য হবো না। সামিয়া এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলো। এতক্ষণ যা যা তার সাথে ঘটেছে তা সবকিছুই স্বপ্নে হওয়ায় সামিয়া আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালো। তারপর তার মা বাবাকে সব খুলে বললো। সামিয়ার স্বপ্নের কথা শুনে তার বাবা মা একসাথে বলে উঠলো সুবাহান আল্লাহ। সন্তানের দোয়া যেমন বাবা মার জন্য তড়িৎগতিতে আল্লাহর দরবারে কবুল হয় ঠিক তেমনি ভাবে মা বাবার দোয়াও আল্লাহর দরবারে তড়িৎগতিতে কবুল হয়। হয়তো সেই জন্যই আল্লাহ তা'য়ালা তাদের দোয়া কবুল করেছেন। তাদের মেয়েকে হেদায়েত দেয়ার জন্যই হয়তো তাকে এমন স্বপ্ন দেখিয়েছেন। যাতে সামিয়া তার ভুল বুঝতে পারে। সত্যিই তাই হয়েছে,সামিয়া এখন পরিপূর্ণ পর্দাশীল নারী হয়ে উঠেছে। হয়ে উঠেছে পূর্ণ ঈমানদার ব্যক্তি। খারাপ বন্ধু বান্ধবীদের সঙ্গ ছেড়ে সারাদিন আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আর সময় পেলেই তার মায়ের কাছে কুরআন হাদিসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা শুনে। এটাই তো চেয়েছিলো তার বাবা মা,যা আজ তারা পেয়েছে। সত্যিই আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা কখনো বৃথা যায়না। যদি তা পূর্ণ ঈমানের সহিত ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে চাওয়া যায়।
................................
................................
.
.
★★★লেখকঃ #ShahaRier_Nasim.

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ