āĻŦৃāĻšāϏ্āĻĒāϤিāĻŦাāϰ, ā§§ā§­ āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž

4905 (1)

#ভুল ১

- তুমি ঝাড় দিচ্ছ কেন ?  মা কোথায়?

রুমি আঙিনা ঝাড় দিচ্ছিলো,  পরিচিত কন্ঠস্বরটা শুনতে পেয়েই চকিতেই তাকালো,  দেখলো আবির দাড়িয়ে আছে ওর সামনে। বিষ্ময়ে নির্বাক হয়ে রইলো কিছুক্ষন।  যে মানুৃষটা'র ঢাকা যাওয়ার সপ্তাহ হয় নি,  সে মানুষ হঠাৎ কোন যোগাযোগ ছাড়াই বাড়িতে হঠাৎ এলে বিষ্মিত হতেই হয় ! বিষ্ময় ভাবটা কেটে যেতেই প্রায় চিৎকার করে উঠলো সে,

-তুমি!  তুমি  হঠাৎ বাড়িতে?

- 'কেন আমার হঠাৎ বাড়ি আসতে মানা না কি?'          জবাবে পাল্টা প্রশ্ন করলো আবির।

- না নয়!  সোমবার গেলা,  আজ রবিবার - সাত দিনও হয় নি,  বলা নাই কওয়া নাই হঠাৎ চলে এলে তাই জানতে চাইলাম। তোমার কি কিছু হয়েছে?

- তা হবে কেন?  এলাম।  তুমি ঝাড় দিচ্ছ কেন?  মা কোথায়?

- বড় আপার বাড়িতে গেছে পরশুদিন। যাও কাপর পাল্টিয়ে ফ্রেস হয় নাও,  ততক্ষনে আমি ঝাড় দেয়া শেষ করি।

ঘরের দরজা পর্যন্ত গিয়ে হাতের ব্যাগটা ঘরের দরজায় রেখে ফিরে এলো আবির  আবার পূর্বের অবস্থানে।  রুমি তখনো দাড়িয়ে,  এক হাতে ঝাড়ু ধরা,  অন্য হাতে শাড়ির আঁচল কোমরে গুজে দিতে ব্যস্ত। আবিরকে ফিরে আসতে দেখে জিজ্ঞেস করলো, 

- কি হলো?

- ঝাড়ুটা দাও।  আমি ঝাড় দেই।

বলেই রুমির হাত হতে ঝাড়ুটা প্রায় কেড়ে নিল আবির। নিয়েই আঙিনা ঝাড় দেয়া শুরু করলো। রুমি বাধা দিতে গিয়েও থেমে দাড়ালো,  ওর পেটে ব্যাথা অনুভব হচ্ছে এখন।  গোয়ালে  গরুকে খড় দিতে গিয়ে বেশ কিছুক্ষন পূর্বে আঘাত পেয়েছে  পেটে,  যদিও খুব সামান্য আঘাত,  কিন্তু তার এ পরিস্থিতিতে এই আঘাতটা ভয়ানক। তার পর হতেই শুরু হয়েছে ব্যাথাটা,  তবে এই প্রথম সেটার তীব্রতা অনুভব করলো সে।  তবু ব্যাথাটা চেপে,  আবিরকে বললো,

- কি শুরু করলে বলো তো?  কেউ তোমাকে ঝাড় দিতে দেখলে কি বলবে? আবার সবে জার্নি করে এলে - একটু বিশ্রাম নাও।  আমি ঝাড় দেই...

বলেই রুমি আবিরের কাছ হতে ঝাড়ু নেয়ার জন্য ওর দিকে হাত বাড়ালো।

- আমি কি কারো বাসায় খাই না কি কারো পরি?  কে কি বললো তাতে কিছু যায় আসবে না আমার।  তোমার এভাবে ঝাড় দেয়া নিষেধ তবু ঝাড় দিচ্ছিলে কেন?  ডাক্টার না মানা করেছিল?

- মা বাড়িতে নেই, দেখো না কত নোংরা গেছে সব !

- তাই বলে তোমাকে ঝাড় দিতে হবে?  পেটের উপর চাপ পরে সেটা বুঝো না?  যদি বাচ্চার ক্ষতি হয়?

রুমি আর কোন কথা বলে না  ।  চুপ করে দাড়িয়ে থাকে ।  কি বলবে?   সে গর্ভবতী,  অাট মাস চলছে।   বাড়িতে তিনটা গরু,  চারটা ছাগল- হাঁস মুরগি - কত কত কাজ। এ কাজ গুলো ও না করলে করবে কে? শ্বাশুড়ি দুই দিন হতে বাড়িতে নেই।   বাড়িতে শ্বশুড় থাকলেও মানুষটা আমড়া কাঠের ঢেঁকি!  কোন কাজই করে না,  সারা দিন হাট বাজারে সময় কাটায়!  আবিরের সে কথা না জানার কথা নয়। সেও জানে। তাই বাধ্য হয়েই ওকে এসব করতে হচ্ছে।

আর এসব করতে গিয়েই পেটে আঘাত পেয়েছে সে।  আবিরকে বলতে চেয়েও বললো না।  রেগে যেতে পারে সে।

ঝাড় দেয়া শেষ করে ঘরে আসে আবির।  পেছনে রুমি। শরীর হতে শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে প্রশ্ন করে সে ।

- আব্বা কোথায়?

- 'উনি তো সারাদিন বাজারেই থাকেন। বাজারেই আছেন হয় তো!'    রুমি জবাব দেয়।

- গরুর পানি,  খড় দিছে কে?

- আমি।

- তুমি?  তোমাকে কে যেতে বলেছে গোয়ালে?  যদি গরু শিং দিয়ে একটা গুতা দিত তাহলে কি হতো শুনি?

প্রায় চিৎকার করে ওঠে আবির। মহুর্তের জন্য বাপ মা দুজনের উপরে রেগে যায় সে।  কি রকম মানুষ তারা,  ভাবতেই নিজেকে অসহায মনে হয় ওকে। এ বাড়িতে ওর বাপ মায়ই যেন ওর শত্রু।  তা অবশ্য মিথ্যে নয় -  ওর বিয়েটা স্বাভাবিক ছিল না।ও জানে ওর বাবা মা কেউই ওদের বিয়েটা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয় নি।  তা না হলে ওর অসুস্থ গর্ভবতী স্ত্রী বাড়িতে রেখে ওর মা ওর বোনের বাড়িতে যায় কি করে?

আবির ঢাকা যাওয়ার পর হতে মোটেই ভালো কাটছিলো না রুমির। সারাক্ষন শুধু স্বামীর চিন্তায় পাগল প্রায় হয়েছিল সে। মনে মনে চিন্তা করেছিল ফোনে আবিরকে বাড়ি আসতে বলবে,  কিন্তু শ্বাশুড়ির কথা শুনতে হবে ভেবেই আর বলে নি আবির কে। আজ সারাটা দিন মনটা ভীষন খারাপ ছিল রুমির , আবিরকে  দেখে সেখানে খুশির ঢেউ উঠেছে। আবির কি তাহলে ওর মনের আবেদন শুনতে পেয়েছে?  এই বাড়িতে ওর একান্ত আপন মানুষ আবির। সবচেয়ে কাছের বন্ধু।  হ্যা বন্ধু,  একজন স্বামীই তো একজন নারীর সবচেয়ে কাছের বন্ধু।

কিন্তু আবির আসাতে ওর যে খুশির ঢেউ - তার মাঝে  একটা ভয় উঁকি দেয় শুশুকের মতো!  আবির যে সাতদিন না পেরুতেই বাড়িতে চলে এসেছে,  এর জন্য না আবার ওর শ্বাশুড়ি ওকে দোষারোপ করে!  ছেলে ঢাকায় ইনকাম করতে গিয়ে যদি মাসে সাতবার বাড়ি যাওয়া আসা করতে টাকা নষ্ট করতে না পারে সেজন্য তিনি পূর্বেই রুমিকে সাবধান করে দিয়েছিলেন! সেটা রুমি ভোলে নি। সেজন্য হঠাৎ আবিরের বাড়ি আসার কারন জানতে চায় সে।

- হঠাৎ বাড়িতে এলে যে ?

- সে আর বলো না।  আমার সাথে লালমনিরহাটের যে ছেলেটা কাজ করে,  ওর হঠাৎ একটা পা প্যারালাইজড হয়ে গেছে ।  ও বাড়ি আসবে,  আমাকে বললো একা পারবে না,  আমি যেন ওর সাথে আসি।  তাই আসলাম। এখন বাড়ির কাছাকাছি যখন এসেছি তখন.....

বলা শেষ করতে পারলো না। ও যে মিথ্যা বলছে,  রুমি সেটা বুঝতে পেরেছে তা রুমির মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝলো সে। তার পর কিছুক্ষন চুপ থেকে
আবার বলতে শুরু করলো,

- না মানে,  তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিল খুব।  কাজে মন বসাতে পারছিলুম না।  তাই চলে এলুম। জানো আমি আমাদের মেয়ের নাম ঠিক করে রেখেছি?

প্রসঙ্গ পাল্টাতেই শেষের প্রশ্নটা করে আবির। রুমিও বুঝতে পারে।  তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল আমারো ,  বলতে চেয়েও বললো না।  না বলে বললো,

- মেয়ে হবে তোমাকে কে বললো? আমার একটা বাবু হবে।

এ নিয়ে পূর্বেও বহুবার এদের দুজনের তর্ক হয়েছে। রুমি ইচ্ছা ছেলে হবে,  তাই সে বলে তাদের প্রথম সন্তান হবে ছেলে।  আর আবির বলে মেয়ে,  আর সে মেয়ে হবে রুমির মতো।

- "না মেয়েই হবে। তার নাম হবে রুমকি। কি সুন্দর নাম তাই না? "  

- না ছেলে হবে।  আর তার নাম হবে আশিক। আশিক মানে প্রেম। সে হলো আমাদের প্রেমের ফসল। 

- না,  মেয়ে হবে।

- ছেলে   ।  আচ্ছা বাজি।

- বাজি।

- শুধু বাজি বললেই তো হবে না।  ছেলে হলে আমি যা চাইবো তাই দিতে হবে। প্রমিস করো।

- প্রমিস ।  কিন্তু যদি মেয়ে হয় তুমি কি দেবে আমাকে?

- দুটো কিস!

আবির চোখ গোল করে তাকায় রুমির দিকে। মনে মনে নিজেকে বলে, - নারী,  স্বামীর কাছে চিরকালই জিততে চায়। সে যা চাইবে তাই দিতে হবে,  আর আমার ক্ষেত্রে দুটো কিস!  এই না হলে বাজি? মুকে বলে,

- কিস?  সে তো আমি যখন তখন পেতে পারি!

- না,  কারন বাবু না আসা পর্যন্ত তোমাকে কাছে আসতে দিচ্ছি না।

- তবে তো.....! 

বলেই এগিয়ে যায় রুমির দিকে,  রুমি হাত বাড়িয়ে বাধা দিকে চেষ্টা করে।  কিন্তু  তা পারবে কেন?  আবির রুমির ঠোটের দিকে ওর ঠোট এগিয়ে দেয়। রুমির পেটের ব্যাথাটাও বেড়ে যায় সে মহুর্তেই ।  অষ্ফুট একটা কাতর ধ্বনি বের হয়ে আসে মুখ হতে।  পেট চেপে বসে পরে সে বিছানার এক কোনে - তার পর শুয়ে পরে । আবির প্রথমে কিছু বুঝতে পারে না  ।  পরে বুঝতে পারতেই রুমিকে প্রশ্ন করে কন্ঠে উৎকন্ঠা নিয়ে -

- কি হলো তোমার?

- পেটে ব্যাথা।

- ডাক্টার ডাকবো?

- ডাকো।

আবির ভয় পায়,  ও কি কোন ভাবে আঘাত দিয়েছে রুমিকে । কিন্তু শুধু তো হাতই ধরে রেখেছিল সে!

ধীরে ধীরে ব্যাথা ক্রমশ বেড়েই চলে ।  সেই সাথে রুমির কাতর ধ্বনি। পাশের বাসা হতে আবিরের চাচী,  ভাবী  রা ছুটে আসে আবিরের ডাকাডাকিতে ।  ডাক্তার আসে ।  এসেই তাড়া দেয় - রোগীকে হাসপাতারে নিন।  দ্রুত।

কেউ একজন এম্বুলেন্স ডাকে ।

এম্বুলেন্স আসে।  পাড়া পড়শিরা এসে দাড়িয়ে দেখছে  । দুজন মহিলা সহ এম্বুলেন্সে এনে শোয়ালো রুমিকে। রুমির হাত নিজের হাতে শক্ত করে ধরে রেখেছে আবির ।  ওর চাচী এক ভাবীও উঠে বসলো এম্বুলেন্সে ওদের সাথে ।  মহুর্তেই হুইছেল দিতে দিতে দ্রুত গতিতে এম্বুলেন্স ছুটতে শুরু করলো সদর হাসপাতালের দিকে।

#ভুল ২

- বাবা,  তুমি রুমির পাশে থাকো।  বাচ্চাটাকে আমি নিয়ে গিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করি।

আবিরকে বললো ওর শ্বশুড়। বাসা হতে হাসপাতালে রুমিকে নিয়ে আসার পর পরই শ্বশুড় বাড়িতে খবর পাঠিয়েছিল আবির।  খবর পেয়েই ছুটে এসেছে ওর শ্বশুড় শ্বাশুড়ি।  তারা এসে পৌছানোর কিছু মহুর্ত পূর্বেই স্বাভাবিক ভাবেই রুমি প্রসব করে,  ছেলে সন্তান।  খবরটা আবিরকে খুশি করেছিল!  কিন্তু তা মহুর্তের জন্য! ডাক্তার যখন বললো  " যত চেষ্টাই করা হোক - এ বাচ্চাটাকে বাঁচানো যাবে না।  আঘাত পেয়েছিল - এখনো যে বেঁচে আছে এটাই কম আশ্চর্যের না!"

তার বাবা হওয়ার খুশিতে জল ঢেলে বিষাদের বৃষ্টি নেমেছিল মহুর্তেই!  বাবা হওয়ার পরে যে কখনো কখনো কষ্টের অনুভূতি হয়,  তা বুঝলো আবির। তার পর দেড় ঘন্টা বেঁচে ছিল ছেলেটা। ডাক্তারেরা তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল।  কিন্তু নিয়তি,  জীবন মৃর্তু মালিকের হাতে। 

- বাবা,  না আমিই যাই।  আপনারা রুমির পাশে থাকেন। আর ও যেন জানতে না পারে ছেলেটা বেঁচে নেই। ও যদি জানতে চায় বা দেখতে চায়  বলবেন নার্সের হেফাজতে আছে।  আমার কথা জিজ্ঞেস করলে বলবেন বাড়িতে গেছি।

ওর শ্বশুড় কথা বাড়ায় না। এমনিতেই রাত আটটা বাজে,  দেরি করা যায় না। উনি গিয়ে একটা অটো ডেকে নিয়ে আসেন। আবির বাচ্চাটাকে কাপরে পেঁচিয়ে নিয়ে অটোতে ওঠে।  ওর সাথে ওর চাচীও। 
অটো ছুটতে শুরু করে ওদের বাড়ির দিকে ।  অটো চালক কে কেউই বলে নি যে, একটা মৃত শিশুকে বাসা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে! তাহলে হয়তো সে যেতে রাজি হতো না!  অনেকেই তার গাড়িতে লাশ বহন করতে ভয় পায়।

মাঝ রাস্তায় যখন আবির ওর মোবাইল বেজে ওঠে। ও দেখে ওর বাড়ি হতে ফোন দিয়েছে ওর মা। রিসিভ করে মোবাইল কানের কাছে নিয়ে আসে।

- হ্যালো আবির,

ওপাশ হতে আবিরের মা বলে।

- হুম।

আবির জবাব দেয়।

- বৌমা কেমন আছে?

- ভালো।

- শোন,  আমরা আসছি।  তোর বোন,  দুলাভাই,  তোর বাপ আর আমি।

রুমি যে বাচ্চা প্রসব করেছে এ খবর আবির বাড়িতে জানায় নি। শোকের যে মর্মবেদনা,  তা ওকে সে সুযোগ দেয় নি।  তাই ওর একবারো মনে হয় নি বাড়িতে খবরটা মা বাবাকে জানায়।  আর জানায় নি বলেই বাড়ির লোক কেউই জানে না সে কথা।

- আসা লাগবে না। আমি বাড়ি আসতেছি।  রাখি।

বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় আবির। মায়ের কন্ঠস্বর অসহ্য মনে হচ্ছিলো ওর কাছে!  অবশ্য এই মহুর্তে সন্তানের লাশ বুকে একজন পিতার পৃথিবীর সব কিছুই অসহ্য মনে হবে!  কতই না সপ্ন ছিল ওর! সে সপ্ন এখন কাপরে জড়ানো একটা লাশ,  কিছু সময় পরেই যার স্থান হবে মাটির নিচে ।

ওর কেন যেন মনে হচ্ছে,  তার এ সন্তানের মৃর্ত্যুর পেছনে তার মা অনেকাংশে দায়ী!  হঠাৎ রেগে যায় মায়ের উপর,  ওর স্ত্রীকে বাসায় একা ফেলে ওর মা,  ওর বোনের বাড়ি না গেলে হয়তো এমনটা হতো না ! আচ্ছা ,  রুমি ব্যাথা পেল কি করে?  প্রশ্ন করে নিজেকে। নিশ্চই গোয়ালে কিংবা ভারি কোন জিনিস তুলতে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছিল!

বাড়িতে যখন পৌছালো  তখন রাত এগারোটা। দেখলো বাড়ির লোক কেউই ঘুমায় নি।  গাড়ি ভাড়া মিটিয়ে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বাড়ির আঙিনায় যেতেই ওর মা  বাবা বোন,  দুলাভাই বের হয়ে আসে ঘর হতে।

- বৌমা কোথায়?  কি হয়েছিল?

শুধু আবির আর ওর চাচীকে ফিরতে দেখে ওর মা প্রশ্ন করে। পরোক্ষনে আবিরের হাতের দিকে চেয়ে কাপরের পোটলা দেখে চমকে ওঠে।  বুঝতে পারে কি ঘটেছে! ছেলের বৌকে মনে প্রানে বাড়ির বউ হিসাবে মেনে না নিলেও হঠাৎ বুকের ভিতর কি যেন হারানোর ব্যাথা ওঠে ।  ছেলেকে আবার প্রশ্ন করেন,

- তোর হাতে কি?

- বাচ্চা।  দু ঘন্টা বেঁচে ছিল  ।  কি সুন্দর দেখতে হয়েছিল,  একদম ওর বাবার মতোই...সব আল্লার ইচ্ছা।

আবির জবাব দেয়ার পূর্বে ওর চাচী বলে।

- আল্লার ইচ্ছা?  শুধু আল্লাকে দায় দেয়া কেন?  ডাক্তার বলেছে রুমি পেটে ব্যাথা পাওয়ার কারনে এমন হয়েছে । 

আবির ওর চাচীর কথা শুনে বলে। কিন্তু এ পর্যন্তই,  এর পর আর কেউ কোন কথা বলে না। যদি কেউ কথা বলতো তাহলে হয়তো মৃত সন্তানকে বুকে নিয়েই আবির ওর মাকে দোষারোপ করতো! কিন্তু তা হয় না, এক দুঃখের নিস্তব্ধতা নেমে আসে মহুর্তেই। আবিরের বাবা,  একটা জলচৌকি এনে আঙিনায় রাখে  ।  আবির বাচ্চাটাকে  নামিয়ে তাতে শোয়ায়। 

- আমি তোর সাবের চাচাকে ডাকি। কবর খুড়তে হবে।  তুই কাপর,  গোলাপ আতরের ব্যবস্থা কর।

আবিরের বাবা বলে।  আবির চুপ করে থাকে । কোন কথা বলে না।  ছেলে কিছু বলবে আশা করেছিলেন,  কিন্তু ছেলেকে চুপ থাকতে দেখে,  মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলেন, 

- বাশ পাতা,  বড়ই পাতা দিয়ে একটু পানি গরম করতো মা।

বলেই বেড়িয়ে যায় বাসা হতে সাবের উদ্দিনকে ডাকতে ।

- আমি টাকা দিচ্ছি - কেউ গিয়ে কাপর আতর নিয়ে আসুক!

শ্বশুড়ের প্রস্থানের সাথে সাথে কথাটা বলে আবিরের বোন জামাই। আবির এই লোকটাকে একটুও পছন্দ করে না,  তার অবশ্য কারনও আছে। এই লোকটা বেশ কয়েকবার রুমিকে নিয়ে বাজে কথা বলেছিল ওর কাছে।  বলেছিল রুমিকে ছেড়ে দিতে। রুমিকে তালাক দিলে রুমির চেয়ে শতগুন ভালো মেয়ের সাথে শালার বিয়ে দিবে,   এটাই তার কথা। কিন্তু যতবারই এই কথাটা আবিরকে বলেছে ব্যাচারা,  ততবারই আবির বেশ দু দশ কথা শুনিয়েছে তাকে।  এখন সেই লোক যদি তার সন্তানের দাফনের কাপরের টাকা দিতে চায় তা কি সে নিবে? না।  বরং এই  শোকের মহুর্তেও সে রেগে ওঠে।

- কেন আমার টাকা নেই বুঝি?  বাবা  হিসাবে কোন দায়িত্বই তো পালন করতে পারলুম না,  অন্তত নিজের টাকায় নিজের ছেলের দাফনের ব্যবস্থা করতে পারবো । কারো টাকার দরকার নাই। আপনাদের জন্যই তো বাচ্চাটা নষ্ট হয়েছে আমার।

- আমাদের জন্য মানে?

আবিরের বোন জামাই প্রায় চিৎকার করে ওঠে।

- তা নয় তো কি?  মা কেন আপনাদের বাড়ি গেল?  ডেকেছেন বলেই তো গেছে।  আর বাসার এত এত কাজ করতে গিয়ে পেটে ব্যাথা পেয়েছে রুমি ।  যার কারনে এই দশা। চেয়েছিলেন তো ,  বাচ্চাটা নষ্ট হোক,  হয়েছে ; এখন টাকা দিতে চেয়ে কিসের দরদ দেখাতে চাচ্ছেন?

- আবির কি শুরু করলি?  ছোট বাচ্চা,  দাফনের ব্যবস্থা না করে কি ঝগড়া শুরু করবি? আর কাউকে আতর কাপর আনতে হবে না - তোর শ্বশুড় সব নিয়ে দিয়েছে।

প্রায় ধমকের সুরেই বলে আবিরের চাচী। হয়তো তর্ক,  রাগারাগি হতো - কিন্তু ধমকের পর তার পথ বন্ধ হয়ে যায়।  যে যার কাজ শুরু করে।

রাত একটা বাজতে বাজতে দাফনের কাজ শেষ হয়।   সাতজন মানুষকে নিয়ে জানাজা নিজেই করেছে আবির। ছেলেকে,  নিজের সপ্নকে দাফন করে এসে শুয়ে পড়ে আবির।  কিন্তু চোখে ঘুমের স্থানে জল এসে জমা হয়।

ভাবে,   যদি রুমি প্রশ্ন করে বাচ্চার কি হলো?  কি জবাব দিবে সে?  কি বলবে রুমিকে?  তার পর একে একে চোখের কোনে ভেসে উঠতে থাকে ওদের স্মৃতিময় দিন গুলি।  যেদিন রুমি ওকে প্রথম বললো,  সে বাবা হতে যাচ্ছে সেদিনের কথা।  তার পর কত গল্প,  কত সপ্ন!  মনে পড়ে তাদের বিবাহের কথা!  বিয়েটা স্বাভাবিক ছিল না।  যার কারনে ওর মা বাবা এখনো মনে প্রানে মেনে নেয় নি রুবিকে। অবশ্য যা অপরাধ,  যা ভুল সে আবিরেরি ছিল।  অথচ এর ফল ভোগে রুমি!  আবিরের চোখে ভেসে ওঠে বিবাহের সেই দিন টি।

(চলবে.....)

লেখা : নুর আলম সিদ্দিক

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ