গল্প:#ফিনিশR_3
লেখক-গালিব হোসেন(রোমান্টিক ম্যাজিশিয়ান)
★
দুদিন বাদে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর আড্ডায় ফিরে গেলাম।
দরজা দিয়ে ঢুকতে মন খারাপ হয়ে গেলো,আগের মতন আর কারো মুখে হাসি নেই।
তবে আমার দেখা পেয়ে ওদের মাঝে কিছুটা জোশ ফিরে এলো।
জাহিদ দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে বললো "বস্,সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেছে।খুব অসহায় লাগছে আজ।"
- ধুর পাগল,আমি আছিনা।
- প্লিজ কিছু করেন বস্।(জাহিদ)
- ল্যাপটপ নিয়ে আয়।
- ওকে বস্।
অতঃপর জাহিদ ল্যাপটপ নিয়ে এলো।
আমি সাথে সাথে ভিডিও ফাইলে ঢুকে এক এক করে সবার হাঁটার স্টাইল দেখতে লাগলাম।হঠাৎ মেয়লি টাইপের একটা হাঁটা মুখোশধারি লোকটার হাঁটার সাথে মিলে গেলো।
জুম করে থমকে গেলাম,ছেলেটা "আবির।"
<দশ বছর আগে>
বাহিরে অঝর বৃষ্টি ঝরছে,এদিকে বাসায় ফিরা দরকার।কূলকিনারা বলতে ভেজা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
তখনি ছাতা হাতে এক ছেলে এগিয়ে এসে বললো "গোল্ডেন ফ্লাশ" বাড়ির রোড কোন দিকে?"
প্রশ্ন শুনে আমি উলটো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বললাম "কেনো?"
- রফি ভাইয়ের নাম তো শুনেছেন,তাঁর কাছে যাবো।
- ওহ্,তো কি জন্য।
- আছে কিছু দরকারি কাজ।
- ওকে আমার সাথে আসেন।
তারপর ছেলেটার ছাতার আশ্রয় নিয়ে বাসা পর্যন্ত পৌছে বললাম "আমি রফি,কি কাজ বলেন।"
- আপনি মজা করছেন নাতো?
- আপনার ইচ্ছা হলে বলেন,না হয় আসতে পারেন।
- ব্লাক সেন্টাল গ্যাংয়ে যদি?
- তোর নাম কি?
- ভুল বুঝবেন না ভাই,আগে ভিকি গ্যাংয়ের সদস্য ছিলাম।কিন্তু আপনার গ্যাং অ্যাটাক স্টাইল দেখে প্রেমে পড়ে গেছি।
- ভিকি গ্যাংতো অনেক আগে গায়েব হয়ে গেছে।তুই বেঁচে আছিস কিকরে?
- মুখোশ।
- মানে?
- আপনায় বস্ বানাতে পারলে সব বলবো এক সময়।
- হাহাহা,ভালোলাগছে।তোর কাজ কনফার্ম।আড্ডায় গিয়ে কার্ড শো কর,সুমিত তোকে সব বুঝিয়ে দিবে।[হাতে একটা কার্ড ধরিয়ে দিয়ে]
- ঠিকানা?
- কার্ডে সব পেয়ে যাবি।এনিওয়ে,তোর নামটা কি যেন?
"আবির।"
সেই থেকে বালকের সাথে পরিচয়।
একি বয়সী হওয়ায় ধীরে ধীরে দুজনের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ এক সম্পর্ক গড়ে উঠে।সেটা আরো বেশী গাঢ় হয়,যেদিন নিজে মৃত্যুর সামনাসামনি দাঁড়িয়ে ওকে বাঁচিয়েছিলাম।
খুবতো চলছিলো আমাদের।
ভাগ্যক্রমে বেশী মাথায় তুলে ফেলেছিলাম।
আমার প্রতি গ্যাংয়ের সবার সম্মান দেখে আবির সহ্য করতে পারেনি।
হিংসা নামক মর্মান্তিক রোগে আক্রান্ত হয়ে সে এক সময় লুকিয়ে নিজের গ্যাং তৈরী করে।
এবং সেটা পরিচালনা করতে থাকে।
অবশ্য অজানা থাকেনি আমার,কিছুদিন বাদে যখন কাছে এক ছোটো ভাইয়ের থেকে জানতে পারি তখন আবিরকে সরাসরি ডেকে "কারণ" জিজ্ঞাসা করি।
উত্তর দিতে না পেরে মাথা নিচু করে আমার গ্যাং পরিত্যাগ করে সে চলে যায়।
ওর ব্যবহারে তুলনাহীন রাগ হয়েছিলো,তবে ভালবাসা ছিলো অবিরাম।
তাইতো চেয়েও মারতে পারিনি।
আজ বুঝছি সেটা কত বড় ভুল ছিলো আমার।সেদিন মেরে দিলে হয়তো প্রিয় চারজন ভাই এখন আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো।
.
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে জাহিদের কণ্ঠে ভেসে এলো "কি চিন্তা করছেন বস্?"
ছিটকে উঠে জবাব দিলাম "কিছুনা,আমি আসছি।"
- কোথায় যাবেন?(জাহিদ)
- যাবো এক মিশনে।
- ল্যাপটপে কিছু পেয়েছেন?(জাহিদ)
- হুম,অনেককিছু।
- তবে আমরাও যাবো আপনার সাথে।(জাহিদ)
- নাহ্।পুরনো কিছু হিসাবকিতাব আছে,মিটিয়ে আসি।
- আপনি পুরোপুরি সুস্থ না,আপনার কিছু হয়ে গেলে?(জাহিদ)
- কিছু হবেনা,9mm টা নিয়ে আয়।
- ওকে বস্।(জাহিদ)
তারপর পিস্তলটা নিয়ে বাইক স্টার্ট দিয়ে বেড়িয়ে পরলাম।
মাঝ পথে হঠাৎ দুটি প্রাইভেট কার ঘিরে ধরলো।পরবর্তীতে সামনে এসে আরো একটি প্রাইভেট কার থামলো।
কিছুক্ষণ বাদে কালো ব্লেজার গায়ে বেড়িয়ে এলো "আবির।"
আমি বাইক স্টান্ড করে হাসি সুরে বললাম "তুইতো আমার চেয়েও এগিয়ে।"
- তবুও তোকে শেষ করতে পারছিনা কেনো?
- এ কথা স্বপ্নেও ভাবিসনা,বাতাসে উড়ে যাবি।
- মুখ থেকে এখনো কথা বেড় হচ্ছে!
- বাদ দে,কাজের কথায় আসি।আমার গ্যাংয়ের চারজনকে মেয়েদের ফাঁদে ফেলে মেরে ফেললি কেনো?
- তোর সাথে হিসাব যে মিলানোর ছিলো।অনেকদিন ধরে সিয়ামের সাথে মিলে তোকে মারার প্লান করছি।কিন্তু সেদিন কয়েক মিনিটে সব মাটি করে দিলি!কি আর করার!প্লান চেঞ্জ করে প্রথমে তোর চার ভাইকে শেষ করলাম।তবে প্রতিশোধ নিতে যে তুই একা এভাবে ছুটে আসবি এটা প্লানের ভেতরে ছিলোনা,মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়ে গেলাম।
- মেয়েগুলো কে?
- আমার ফুফাতো চার বোন।
- তাদের দিয়ে তুই এমন কাজ করাতে পারলি?
- হুম পারলাম,এবার তোর পালা।"ফায়ার।"
বলতে না বলতে তুমুল গুলির শব্দ শুরু হয়ে গেলো।
দুমিনিট পর আবার নীরব।
তারপর এক এক করে আবিরের গ্যাংয়ের সবাই মাটিতে লুটিয়ে পরলো।
আমি অবাক হয়ে 9mm পকেটে রেখে পেছনে তাকিয়ে দেখি AK47 হাতে সুমিত,রাফসান,রিফাত,আকিল এগিয়ে আসছে।
এমতাবস্থায় নিজের চোখকে কয়েক সেকেন্ডের জন্য বিশ্বাস করতে পারলাম না।মনের অজান্তে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো।
To be continue.........
গল্প:#ফিনিশR_4
লেখক-গালিব হোসেন(রোমান্টিক ম্যাজিশিয়ান)
★
গ্যাংয়ের বিশেষ চারজনকে দেখে আমি যতটা না অবাক হয়েছি তার দ্বিগুণ অবাক হয়েছে আবির।
বাক রুদ্ধ আতংক মাখা চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কাঁপা স্বরে বললো "এগুলো কি হচ্ছে রফি?"
- সেটা আমি নিজেও জানিনা।আমার প্লানতো কিছু অন্য ছিলো।
- মানে!কি প্লান?
- আমার গ্যাংয়ের নিয়ম তো জানিস,প্লান কখনো ফাঁশ করা হয় না।কারণ আমি প্লান না প্লানিংয়ে বিশ্বাস করি।তবে.....
- তবে কি?
- মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করা যায়।
- হুম,তো!
- প্লান শুনে যে তোকে মরতে হবে।
- আমি তোর বন্ধুহই রফি।
- বন্ধু!চারিপাশ বিল্ডিং গুলায় খুব ভালোভাবে প্রতিটা কোণায় তাকিয়ে দেখ প্লান বুঝে যাবি।আশাকরি আর কিছু বলতে হবেনা,যতো হোক আমার শিষ্য বলে কথা।
- স্নাইপার![চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে]
- হাহাহা,তোর গ্যাংয়ের লোকেদের ডেট বডি চেক করে দেখ একটা করে স্নাইপার বুলেট পাবি।
- কিন্তু আমার কাছে যে খবর ছিলো তুই একা বেড় হচ্ছি!
- ভুলে গেছিস!আমার স্নাইপার সিকুরিটি কথা।
- তোকে বোঝা অসম্ভব।
- বস্,আপনাদের কথা শেষ হলে আমরা কিছু বলি?(সুমিত)
- হুম বল।
- প্রথম গুলিটা আমি করবো।(সুমিত)
- ওই তুই অফ যা,আঙুলে ব্যাথা পাবি।প্রথম গুলি আমি করবো।(রাফসান)
- আমার Ak47এ একটাই গুলি আছে।প্লিজ ভাই,নতুন ম্যাগাজিন ভরার সুযোগ করে দে।(রিফাত)
- তোদের দুই প্যাকেট করে গোল্ড লিফ দিবো।প্রথম গুলি আমায় করতে দে।(আকিল)
- ওই রফি কি বলছে ওরা!সরকারি পাইছে নাকি!(আবির)
"ভয় পাস না,প্রথম গুলি আমি করবো।" বলতে না বলতে মোবাইল বেজে উঠলো।স্ক্রিনে নিধীর নাম্বার।
ঘাবড়ে,সুমিতদের "আমি আসছি" বলে দূরে গেলাম।
তার কিছুক্ষণ বাদে গুলির শব্দ।কল কেটে দৌড়ে যেতে যেতে আবিরের বডি হাজার গুলি ফুটো করে বেড়িয়ে গেছে।
তবে নিশ্বাস এখন চলছে।আফছা আফছা মাথা উঁচু করে চেয়ে আছে আমার দিকে।
তখন ওর বুকের ওপর পা রেখে 9mm বেড় করে মাথার মিড পয়েন্টে গুলি করলাম।
.
আড্ডায় ফেরার পর সবার মুখে নতুন করে হাসি ফুটে উঠলো।হারিয়ে যাওয়া প্রাণ যেন আবার ফিরে পেলো কালো অন্ধকারে ঘেরা বিশাল এক গুডাউন।
সবাই উল্লাসে ব্যাস্ত।কিছুক্ষণ বাদে নীরব হওয়ার পর রাফসানকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলাম "মরে গিয়ে কিভাবে ফিরে আসলি বলতো?"
- হিহিহি,বলবো!(রাফসান)
- হুম,বল।
- তবে শুনেন....(রাফসান)
- ওই পেঁচ মারিস না।বস্ তেমন কিছু।জাস্ট একটা উত্তর দেন,কেউকি কখনো আমাদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে পালিয়ে যেতে পারবে?(সুমিত)
- মানে!
- আবিরের চার বোন আমাদের সাথে অভিনয় করতে গিয়ে সত্যি সত্যি ভালবেসে ফেলেছিলো।তবে বড় ভাইয়ের কথা তো রাখতে হয়।তাই আমাদের মারার নকল ভিডিও বানিয়ে আপনায় এবং আবিরকে দিছে।আর আপনারা তাতে বিশ্বাস করছে।বেচারি চার মেয়ের এখন আমরা ছাড়া কেউ নেই।ওদের বিয়ের ব্যবস্থা কে করবে?[নকল কান্না করে](সুমিত)
- বিয়ে আমি দেখবো।আগে বল,বেঁচে যখন ছিলি তবে আগে বললি না কেনো?
- সারপ্রাইজ বস্।(সুমিত)
- উম্ম..তোদের জন্যও সারপ্রাইজ আছে।
- কি?(চারজন একসাথে)
- বিয়ে করে ফেলবো।
- কবে বস্?(জাহিদ)
- পরশু।
- আমি শুধু সিংগেল থেকে যাবো।[আবেগের সাথে](জাহিদ)
- যাহ্,আমার ছোটো শালি তোর।
- সত্যি?নাম কি বস্?(জাহিদ)
- দ্বিপা।
সাথে সাথে পকেটে মোবাইল বেজে উঠলো।এবারো ম্যাডামের কল।
ম্যাডামের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর বিয়ের প্রস্তাব দিলাম।
ম্যাডাম চিল্লানি দিয়ে খুশিতে লাফাতে লাফাতে কল কেটে দিলো।
এ যেনো ভালোলাগার আরেক নাম।
উৎসবের সুযোগটা হাতছাড়া না করে,সবাইকে জানিয়ে দিলাম "আজ রাতে বিয়ার পার্টি।"
……………<সমাপ্ত……………
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ