--------সপ্নে দেখা সেই ছেলে টি ----------
----পর্ব এক -----
,,
,,
আমার নাম আরশি । আজকে মন টা খুব খারাপ । কেন খারাপ হবে না !! আমার আজকে বাবা মায়ের সাথে দাদু বাড়ি যেতে হবে । আমার একদম ভাল লাগে না দাদু বাড়ি । আমার শহরে থাকতেই বেশি ভাল লাগে । আমার কতো বন্ধু । কতো মজা করি । আর যাওয়ার আসল কারণ হলো ,, দাদু অনেক অসুস্থ । তাই যেতেই হবে ।
,,
:-- কি রে আরশি !! এখনও রেডি হসনি কেন ?? সেই কখন তোর বাবা রেডি হয়ে বসে আছে ।
,
:-- বাবা তো রেডি হবেই । কারণ বাবা যাচ্ছে তাঁর বাড়ি ।
,
:-- হয়েছে ,, তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে । দেরি হলে আবার বকাবকি শুরু করবে ।
,
:--আচ্ছা মা !! আমার না গেলে হয় না ??
,
:-- কি বলিস !! পাগলের মতো । তোর বাবা কখনও তোকে রেখে যাবে না । তৈরি হয়ে নে । আমি গেলাম ।
,,
,,
আমার মা । যার সাথে এতো সময় কথা বললাম । আমি যানি ,, বাবা মা কেউ আমাকে রেখে যাবে না । কি আর করার যেতেই হবে ।
,,
আমি এবার ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পরছি । কিছু দিন আগে পরীক্ষা শেষ হলো । হাতে অনেক সময় । অনেক কিছু ভেবে রেখেছিলাম । কি কি করবো । কোন কোন বন্ধুর বাসায় যাব। কিন্তু সব মাটি করে দিল। ধুর আর ভাল লাগে না । আমার বাবা একজন ডাক্তার । তাই দাদুর চিকিত্সা নিজেই করতে চান। কি আর করার যেতেই হবে ।
,,
,,
আমি কোথায় যাওয়ার আগে আর কিছু করি বা না করি । মোবাইলে ফুল চার্জ দেওয়া । মোবাইলের চার্জার ঠিক মতো নেওয়া । এই সব ভুল করিনা । কারন আমি ফেসবুকে এক মূহুর্তে ও না এসে থাকতে পারি না । আর যেহেতু গ্রাম এ যাচ্ছি । আমার একটা ভাব আছে না ।
,
যাইহোক ,, অবশেষে সব কিছু ঠিক ঠাক মতো নিয়ে গাড়িতে উঠলাম । আমি গাড়িতে বসে মোবাইল অন করলাম । ফেসবুকে ঢুকলাম । কিছু দিন হলো একটা ছেলে খুব মেসেজ দিচ্ছে । অনেক বিরক্ত করে ছেলে টা ।
যে কোনও সময় ব্লক দেব ছেলে টাকে মনে মনে ঠিক করলাম । এমন সময় পাশের ছিট থেকে ভোস ভোস শব্দ পেলাম । পিছনে ফিরে দেখি একটা ভিষন হ্যান্ডসাম ছেলে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে । এতো হাসি পেল ,, আমি জোরে জোরে হেসে উঠলাম । আমার হাসি শুনে আশেপাশের সবাই আমার দিকে তাকাতে লাগলো । সেই হ্যান্ডসাম ছেলে টি লজ্জা পেয়ে অন্য দিকে সরে গেল ।
,,
আমি দাদু বাড়ি যেতে আট ঘন্টা সময় লাগে । অনেক ব বোরিং জার্নি । এতো সময় কি করে কাটাবো ভাবতে লাগলাম ।বাবা বেশ মজায় আছে । দেখলেই বুঝতে পারছি । মাকে ডেকে ডেকে এটা ওটা দেখাচ্ছে । মা ও খুব আগ্রহ নিয়ে দেখছে । কিন্তু আমার মেজাজ খারাপ হচ্ছে । কি করবো ?? ইয়ার ফোন এ গান শুনতে লাগলাম ।
,,
যাইহোক অবশেষে এসে পৌছালাম। এই চার বছর পর দাদু বাড়ি এলাম। নাহ ,, যতো টা খারাপ ভেবে ছিলাম এতো টা খারাপ না । এখন অনেক উন্নত হয়েছে । কিছু দিন থাকা যাবে তাহলে । আমাদের দেখে সবাই দৌড়ে এলো । মনে হচ্ছে আমরা কোনও বিশেষ গেস্ট । আমার অবশ্য ভালোই লাগছিল । সবাই অনেক আদর যত্ন করছে । আসলে গ্রামের মানুষেরা এমনই হয়। অনেক মিশুক ।
,,
রাতে খাওয়া দাওয়া করলাম । অনেক মজা করে । সব কিছু অনেক তৃপ্তি করে খেয়েছি । আমার বাবার আরো দুই টা ভাই আছে । মানে আমার বড় দুই চাচা । আর আমার ফুপু আছে দুই টা । সবাই এসেছে আমাদের খবর শুনে । সবার সাথে আমার আলাপ হয়েছে । আমার কাজিন গুলি ও অনেক মিশুক । রাতে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পরেছি। আমার বড়ো চাচার মেয়ে প্রভা কে আমার কাছে শুতে দেওয়া হলো । প্রভা আমাকে বললো ,,,,
,
:-- আরশি ,, তুমি অনেক বছর পর আমাদের গ্রামে এসেছো । আমরা অনেক খুশি হয়েছি। তোমার মনে আছে তুমি যখন ছোট্ট বেলায় আসতে ,, তখন কিছুতেই যেতে চাইতে না ।
,
আমি অবাক হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে । আমি আসতেই চাইনা । আর বলে কিনা আমি যেতে চাইতাম না । তারপর ও জিগ্যেস করলাম,,
,
:-- কেন যেতে চাইতাম না ???
,
:-- ও মা !! তোমার মনে নেই । তুমি শুধু অনিক ভাইয়ার বউ হতে চাইতে । আর আমরা শুধু তোমাকে নিয়ে মজা করতাম । তুমি অনেক ছোট্ট ছিলে । কিন্তু অনেক পাকা ছিলে । অনিক ভাইয়া কে ছাড়া খেতে না । ঘুমাতে না । সব কিছু তে অনিক ভাইয়া । এই তো কাল সকালে ভাইয়া আসছে । ভাইয়া স্কলার শিপ পেয়েছে । চায়না থাকে । কিছু দিনের জন্য আসছে । কেন তুমি যান না আমার বড়ো আপুর বিয়ে । এই জন্যই তো সবাই এসেছে ।
,,
,,
আমি প্রভার কথা শুনে হা হয়ে গেলাম । কি বলছে এই সব । আমি অনিকের বউ হতে চাইতাম । অনিক টা আবার কে ?? আর আমাকে মিথ্যা কথা বলে এনেছে । দাদু অসুস্থ না ছাই । সকালেই আমি বাবাকে মজা দেখাবো । আমার সাথে চালাকি । কিন্তু অনিকের কথা ভাবলেই লজ্জা লাগছে ভিশন । সকালেই অনিক আসছে নাকি । কি করে আমি মুখ দেখাবো । যদি সবার সামনে বলে দেয় আমি ছোট্ট থাকতে ওর বউ হতে চাইতাম ।
,,
,,
,,
,,
,,,
,,
( চলবে
------সপ্নে দেখা সেই ছেলেটি -------
----পর্ব দুই -----
,,
,,
আমি সকাল থেকে গাল ফুলিয়ে আছি। বাবার উপর রাগ করে । কেন মিথ্যা বললো । এমন সময় বাবা এলো ,,,,
,
:-- দেখতো মা !!! চশমা টায় আমাকে কেমন লাগছে ?? তোর বড় চাচা দিয়েছে ।।
,
আমি কিছু না বলে চুপ করে আছি । অন্য দিকে মুখ করে । এবার আমাকে ভাল করে দেখে বললো ,,,
,
:-- কিরে মুখ টাকে টমেটোর মতো করে ফুলিয়ে আছিস কেন ??
,
:-- বাবা তুমি আমার সাথে মিথ্যা বলেছো কেন ??দাদু দিব্বি সুস্থ আছে । আর আমাকে বলেছো অসুস্থ ।
বাবা এবার জোরে জোরে হাসতে লাগলো । বললো ,,
,
:--সব দোষ তোর মায়ের । সেই আমাকে বললো এই কথা বলতে।
,
:-- শোন বাবা পরশু চলে যাব। মনে থাকে যেন !!
,
:-- আচ্ছা ঠিক আছে । শোন তোকে তো বলা হয় নি । আমি আর তোর বড় চাচা অনিক কে আনতে যাচ্ছি ।
,,
আমার আবার অনিকের কথা মনে পড়লো । কেন যে ছোট্ট বেলায় এতো বলদ ছিলাম । কার না কার বউ হতে চাইতাম । এখন যদি সবাই কে বলে দেয় । তাহলে সবাই কি ভাববে । এই সব ভাবতে ভাবতে প্রভা এলো । আমাকে বললো ,,,,
,
:--আরশি চলো তোমাকে মেহেদি দিয়ে দেই।
,
:--কিন্তু আমি যে মেহেদি দেই না।
,
:--তাতে কি ,,, একটু পরে আপুর গায়ে হলুদ । সবাই আমরা হলুদ শাড়ি পড়বো । মেহেদি দিব।
,
:--কিন্তু আমি শাড়ি পড়বো না। আমি শাড়ি পড়তে পারি না।
,
:-- কিছু হবে না । আমি তোমাকে সব শিখিয়ে দেব।
,,
,,
মনে মনে বিরক্ত হলাম । কিন্তু কিছু বললাম না। সব মেনে নিলাম । এই জীবনে প্রথম শাড়ি পরলাম। মেহেদি লাগালাম। আমি নিজেই নিজেকে চিনতে পারছিলাম না। সত্যি আমি কতো টা সুন্দর আজকে বুঝতে পারলাম । সবাই আমাকে দেখছে। নিজের ও অনেক ভাল লাগছিল ।
,,
,,
এমন সময় সবাই চিৎকার করে উঠলো । অনিক এসেছে অনিক এসেছে বলে । আমি বুঝলাম না । অনিক কি যে এতো চিৎকার করতে হবে । সবাই বেশি বেশি করছে অনিক কে নিয়ে ।
,,
আমি আমার রুমে চলে এলাম। অনেক টা লজ্জার কারনে। আমি চুরি করে দেখতে লাগলাম অনিক কে। ওকে দেখে অবাক লাগলো । ঠিক আমার কল্পনার ছেলে টির মতো । যাকে আমি জীবন সাথী করে পেতে চাই।
,,
কিন্তু অনিক এদিক ওদিক তাকিয়ে কাকে যেন খুঁজছে । আচ্ছা ওর আবার ভাল বাসার কেউ নেই তো । থাকতেই পারে । আর সেই সব অনেক ছোট বেলার কথা । কারো হয়তো মনে নেই ।
,,
প্রভা এলো আমার কাছে । আমাকে বললো ,,,
,
:-- কি হলো চলে এলে যে বড়ো ???
,
:-- না এমনি ।
,
:-- বাইরে চলো । সবাই আনন্দ করবো ।
,
আমি আস্তে আস্তে প্রভার সাথে বাইরে এলাম। দেখলাম অনিক বসে আছে । প্রভা আমাকে অনিকের কাছে নিয়ে এলো । অনিক কে বললো ,,,
,
:-- দেখ তো ভাইয়া চিনতে পারিস কিনা ???
,
:-- চিনবো না কেন !!! ও আমাকে ভুলে যেতে পারে । কিন্তু আমি মনে রেখেছি।
,,
অনিকের কথা শুনে বুকটা কেঁপে উঠলো । তার মানে ওর সব মনে আছে । যদি সবাই কে বলে দেয় । এই সব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ অনিক বললো ,,,
,
:-- তুমি কিন্তু অনেক সুন্দর হয়েছো আরশি !!
,
ওর কথা শুনে একটা শিহরণ খেলে গেল । এই প্রথম একটা অজানা সুখ ছুঁয়ে গেল সমস্ত শরিরে।
,,
,,
,,
সারা দিন অনেক আনন্দ করে কাটালাম। সবার সাথে । আসলে এই রকম অনুষ্ঠানে এই প্রথম । তাই অনেক ভাল লাগলো। রাতে সবাই এক সাথে খেতে বসেছি। আমার বড় চাচা অনিক কে বললো ,,,
,
:-- তোর জন্য একটা মেয়ে দেখেছি । আমাদের সবার পছন্দ । তোর ও আর এক বছর আছে লেখাপড়ার । তাই ভাবছি তুই ফিরে এলেই বিয়ে দেব। আর তোর তো চাকরি ঠিক করাই আছে ।
,,
আমি চাচার কথা শুনে চমকে উঠলাম । অনিকের বিয়ে হবে । অনিকের দিকে তাকালাম । দেখলাম ও আমাকেই দেখছে। কিন্তু কেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে বুঝলাম না । আমার হঠাৎ মন টা খারাপ হয়ে গেল । সেইটা অনিকের দৃষ্টি এড়ালো না। ও চাচার দিকে তাকিয়ে বললো ,,,
,
:-- বাবা !!! এই সব কথা এখন বাদ দাউ। আগে পড়াশোনা শেষ করি । তারপর দেখা যাবে ।
,,
,,
,,
রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছি ,,, অনিকের বিয়ে । তাতে আমার কি । আমার কেন মন খারাপ হলো। আর ওই বা বিয়ের কথা বলতে আমার দিকে তাকালো কেন । এই সব ভাবতে ভাবতে প্রভা এলো । আমাকে বললো ,,,
,
:-- কি ভাবছো আরশি ??
,
:-- কি কিছু নাতো ।
,
:-- হুম সত্যি করে বলো তো কাউকে ভাল বাসো ???
,
:-- আরে নাহ কি বলো এই সব।
,
আমি হেসে উঠে ওকে বললাম । ও আবার বললো ,,,
,
:-- জানো ভাইয়া তখন কেন বাবা কে এই সব বলেছে ???
,
আমি এবার আগ্রহ নিয়ে ওর দিকে তাকালাম । ও বললো ,,,
,
:--ভাইয়া অনেক আগের থেকে একটা মেয়েকে পছন্দ করে । আর তাকেই বিয়ে করবে ।
,
আমি ছোট্ট করে জবাব দিলাম ,,,
,
:-- ও আচ্ছা ।
,,
কিন্তু আমার কেন কষ্ট হচ্ছে বুঝতে পারছি না ।আসলে আমি অনিক কে ভাল বেসে ফেলেছি। খুব বেশি ভাল ।
,,
আমি অন্য দিকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়লাম । সকালে সবার হইচই শুনে ঘুম ভেঙে গেল । বিয়ে বাড়ি বলে কথা । আমি ঘুম থেকে উঠে নাসতা সারতেই সবাই এলো । সবাই কে সাজিয়ে দিতে হবে । তাই করলাম । কেমন যানি সবার উপর একটা মায়া লাগতে শুরু করেছে । নিজে ও তৈরি হলাম । আর একটু পর বর পক্ষ আসবে । আমি বাইরে যেতেই অনিকের সাথে দেখা । ওকে আজকে ভিষন সুন্দর লাগছে । আমি বার বার ওর দিকে তাকালাম । আর প্রতি বার চোখাচোখি হতে লাগলো । কিন্তু আমার হঠাৎ রাগ হলো অনিকের উপর । ও অন্য একজন কে ভাল বাসে । তাহলে আমার দিকে তাকিয়ে কি দেখছে। আমার অনিকের উপর রাগ অভিমান দুইটাই হলো । তাই ঠিক করলাম সকালে ফিরে যাবো । বাবা কে রাতেই বলতে হবে । আমি চাইনা অনিকের উপর আরো দুর্বল হতে ।
,,
,,
,,
,,
(চলবে )
-------- সপ্নে দেখা সেই ছেলেটি ---------
---- শেষ পর্ব -----
,,
,,
রাতে বাবা আমার মন খারাপ দেখে বললো ,,,,
,
:-- কি রে মা !!! কি হয়েছে তোর ???
,
:--কিছু না বাবা । আমি আর থাকবো না । সকালে ফিরে যাবো ।
,
:-- তোর এখানে ভাল লাগছে না তাইনা ???
,
:-- না তা নয় । বন্ধু দের জন্য মন কেমন যেন করছে ।
,
:-- আচ্ছা ঠিক আছে । গুছিয়ে নে । কাল সকালে চলে যাবো । তোর মাকে গিয়ে বলি।
,
বাবা চলে গেল । আমি কখনও ভাবি নি। এখানে এসে এমন হবে । সকালে আমরা তৈরি হলাম । দাদু দাদী চাচা ফুপু সবার মন খারাপ হয়ে আছে । সবাই চাইছিল আরো কিছু দিন যেন থাকি। কিন্তু আমার মোটেই ইচ্ছে নেই ।অনিক কে কোথাও দেখলাম না ।
,,
আমরা খুলনা চলে এলাম। আমি এসে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলাম । নিয়মিত কলেজে যাওয়া । বন্ধু দের সাথে মজা করা । সব কিছু সেই আগের মতো । মাঝে মাঝে অনিকের কথা মনে পড়তো । কিন্তু ভাবতাম ও অন্য একজন কে ভাল বাসে । আমার এতে কিছু করার নাই।
,,
এভাবে কেটে গেল দুই বছর । আমি ইন্টার পরীক্ষা দিলাম । বি এ তে ভর্তি হলাম । এখন অনেক কিছু বুঝি। নিজের ভাল মন্দ । অনেক ছেলে আমাকে প্রপোজ করেছে । কিন্তু আমি কখনও রাজি হয় নি। কেমন যেন নিজের মধ্যে একটা শূন্য তা অনুভব করতাম । মনে হতো আমি কারো জন্য অপেক্ষা করছি । অথবা কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করছে ।
,,
আমার সাথে মাঝে মাঝে প্রভা কথা বলতো । ওর কাছেই শুনতাম অনিকের কথা । অনিক এখন একটা চাকরি করে । অনেক ভাল আছে নাকি । আমি ও চাইতাম ভাল থাকুক । অনিক যদি চাইতো আমি অনিক কে ফিরাতাম না । কিন্তু অনিক আমি আসার আগে কিছু বলেনি । আমি এতেই ধরে নিলাম ও অন্য কারো ।
,,
একদিন বাবা আমাকে বললো ,,,,
,
:-- আরশি !!! কাল আমাদের তোর দাদু বাড়ি যেতে হবে ।
,
:--হঠাৎ দাদু বাড়ি কেন বাবা ???
কিছু হয়েছে ??
,
:--তোর বড় চাচা ফোন করেছে । অনিকের বিয়ে । তাই বলেছে তোকে নিয়ে যেন অবশ্যই যাই ।
,,
আমার বাবার কথা টা শুনে খুব কষ্ট লাগছিল । অনিকের তাহলে সত্যি বিয়ে । আমি যেন বিশ্বাস করতে পারছি না । আমার মুখ দিয়ে কোনও কথা বের হচ্ছে না । আমি চুপ করে আছি। তাই দেখে বাবা আবার বললো ,,,,
,
:-- কি রে মা !!! কি ভাবছিস ??? যা তৈরি হয়ে নে । কাল সকাল সকাল যেতে হবে । আর শোন ,,, এবার কিন্তু বেশ কিছু দিন থাকবো । সেই ভাবে তৈরি হবি।
,
:-- আমার সেই রাতে ভাল ঘুম হয়নি । আমি চেয়ে ছি নিজের মতো করে থাকতে । কিন্তু পারিনি। আমি চেয়ে ছিলাম ভাল থাকার অভিনয় করে থাকতে তা ও পারিনি । এই শেষ সময় আমি নিজের কাছে নিজেই হেরে গেছি। নিজের অজান্তেই চোখ থেকে পানি পড়ছে ।
,,
আমরা এলাম দাদু বাড়িতে । অনেক দিন পর । আগের বারের অনেক কথা মনে পড়লো ।কতো মজা করেছিলাম । কিন্তু এবার এসেছি এক রকম বাধ্য হয়ে ।
,,
প্রভা আমাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরলো । আসলো মেয়ে টা আমাকে অনেক ভাল বাসে। ওর নাকি আর কিছু দিন পর বিয়ে । সে দিন ফোনে এই কথা বলেছিল ।
,,
এমন সময় দেখলাম অনিক এদিকেই আসছে । আমাকে দেখে বললো ,,,,
,
:-- কেমন আছো আরশি ??।
,
আমি ওর দিকে তাকাতে পারছিলাম না । কোনও রকম মাথা নেড়ে চলে গেলাম । আর একটু থাকলে হয়তো চোখের পানি দেখে ফেলতো ।
,
পরের দিন প্রভা বললো ,,,
,
:-- আজকে আমরা মেয়ে কে আংটি পড়াবো ।
,
:-- তাই ভাল তো । (আমি )
,
:-- যানো আরশি ,, মেয়ে টা আর কেউ নয় । আমার মামাতো বোন । আজ এসেছে আমাদের বাসায় । বিকেলে অনুষ্ঠান । এই বাসায় সব হবে । (প্রভা )
,
:-- ওহ আচ্ছা । (আমি )
,
:-- আর শোন তুমি কিন্তু সেই খানে থাকবে । যখন আংটি পড়ানো হবে । মনে থাকবে তো ???
,
আমি শুধু মাথা নাড়ালাম। তারমানে মনে থাকবে ।
,
অনিকের মামাতো বোন কে দেখলাম । ভারি মিষ্টি চেহারা । বিকেলে সবাই এসেছে । একটু পর আংটি পড়ানো হবে । সবাই বসে আছে ।
,
একটু পর আমার বড় চাচী দুই টা আংটি নিয়ে এলো । আমার আর বসে থাকা সম্ভব হলো না ।আমি উঠে চলে এলাম। নিজের রুমে বসে আছি চুপ করে । আর চোখ থেকে পানি পড়ছে । হঠাৎ কারো শব্দ শুনে ফিরে তাকালাম । দেখলাম আমার বড় চাচী আংটি হাতে দাড়িয়ে আছে । আমার কাছে এসে বললো ,,,,
,
:-- কিরে পাগলি ,, উঠে চলে এলি কেন । আমার তোকে আংটি পড়াতে এই পর্যন্ত আসতে হলো । চল অনিক বসে আছে । ওকে আংটি পড়াতে হবে ।
,,
আমি হা হয়ে আছি । কি শুনছি এই সব। আমি কেন আংটি পড়বো । আমার তো বিয়ে না তাহলে । আবার চাচী বললেন ,,,
,
:-- কিরে আর কতো দেরি করবি । চল সবাই বসে আছে ।
,,
আমি বোকার মতো চাচীর সাথে সাথে এলাম। দেখলাম সবাই খুব হাসাহাসি করছে। আর অনিকের মুখে দুষ্টুমির হাসি। তার মানে আমার আর অনিকের বিয়ে । কিন্তু এতো কিছু । আর এই মেয়ে টা বা কে ?????
,,
,,
আমি আর অনিক বসে আছি রাতে পুকুর পাড়ে । আকাশে সুন্দর চাঁদ উঠেছে । চার পাশে অসম্ভব সুন্দর লাগছে । আমার হাত অনিকের হাতের মুঠোয় । আমি অনিক কে বললাম ,,
,
:-- জানো অনিক !! আমার কাছে এখনও সব কিছু সপ্নের মতো মনে হচ্ছে ।
,
:-- তাই বুঝি ??
,
:-- কিন্তু ,, আমার সাথে সবাই চালাকি করেছো এমন কি বাবা ও ।
,,
আমার কথা শুনে অনিক হো হো করে হেসে দিল। বললো ,,,
,
:-- আমি সবাই কে নিষেধ করে ছিলাম বলতে । তোমাকে সারপ্রাইজ দেব বলে । তুমি কিন্তু ছোট্ট বেলা থেকেই আমার বউ হতে চাইতে । শেষ মেষ বউ হয়েই ছাড়লে ।
,,
অনিকের কথা শুনে আমার ভিষন লজ্জা লাগছিল । আমি লজ্জায় হাত দিয়ে মুখ ঢাকলাম। অনিক আমার হাত টা সরিয়ে দিয়ে বললো ,,,
,
:-- দেখি আমার লজ্জা বতী বউয়ের মুখ টা ।
,
এই বলে ও আমার আরো কাছে চলে আসলো । আমি একটু একটু করে সরে যাচ্ছি । আর অনিক ততো আমার কাছে সরে আসছে । আমি ওকে বললাম ,,,
,
:-- এই কি হচ্ছে ?
,
:-- আসলে তোমাকে এতো কাছে পেয়ে সব এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে ।
,,
এই বলে ও আমাকে জড়িয়ে ধরতে চাইলো । আমি বললাম ,,,
,
:-- এখন এই সব হবে না । আগে বিয়ে টা তো হোক ।
,
:-- বিয়ে তো সেই ছোট বেলায় করে রেখেছি।
,,,
এই বলে অনিক আমার কাছে আসতেই ওকে আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ছুটে পালাতে পালাতে বললাম ,,,,
,
:-- ইসসসসস রে আমার বয়েই গেছে তোমার বউ হতে ।।।।।।।
,,
,,
,,
(সমাপ্ত )
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ