- সেক্স চ্যাটিং করবা ?
ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করার পর মহুর্তেই ইনবক্সে আমাকে লিখলো লোকটা । কি রকম নোংরা প্রশ্ন! ঘৃনায় ইচ্ছে হলো থু থু নিক্ষেপ করি তার মুখে! কিন্তু ইচ্ছেটা পুরন হবার নয়। ভার্চুয়ালে সে সুবিধাটা নেই।
আমার ফেসবুক সম্পর্কে তেমন ধারনা নেই। ফেসবুকে আসার বয়সও মাত্র পনেরো দিন। এ সময়ের আগে আমার ভাবতেও লজ্জা লাগতো, আমার সব বান্ধবীদের ফেসবুক আইডি আছে, অথচ আমার নেই!
তাই, সেদিন ভাইয়াকে কথাটা বললাম। " ভাইয়া একটা ফেসবুক আইডি খুলে দিবি? "
" কি করবি? " ভাইয়ার প্রশ্ন।
' আমার সব বান্ধবীর ফেসবুক আইডি আছে। শুধু আমার নেই । তাছাড়া তুই না কি ফেসবুকে ভালো গল্প লেখিস! সে গুলোও পড়বো। আমার বান্ধবীরা পড়ে। ' জবাবে বলেছিলাম।
এর পর ভাইয়া একটা আইডি আমার নামে তৈরি করে- আমাকে লাইক দেয়া, কমেন্ট করা, পোষ্ট শেয়ার, ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করা বা সেন্ড করা, ইনবক্সে চ্যাটিং শিখিয়ে দেয়।
ফেসবুকে নতুন । আমার দিশেহারা অবস্থা। প্রতিদিন শত শত ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট আসা শুরু হলো। সবাইকে এক্সেপ্ট না করলেও বেছে বেছে একসেপ্ট করা শুরু করলাম।
তারই ধারাবাহিতায় উক্ত লোকটিকেও এক্সেপ্ট করেছিলাম। বাবার বয়সী লোকটা, এবাউট দেখে মনে হয়েছিল শিক্ষিত। কিন্তু এখন বুঝতে পারতেছি ফেসবুকে এবাউট আর টাইমলাইন দেখে চরিত্র সম্পর্কে ধারনা করাটা বোকামি।
রাগ হলো। একজন বাবার বয়সী পুরুষ যখন এমন কিছু বলে তখন রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। রেগে গিয়ে রিপ্লেই দিলুম,
-" আপনার মেয়ে অথবা মায়ের সাথে চ্যাটিং করুন, পারলে বেড শেয়ারো করুন। লম্পট। "
- " তুমিই আমার মেয়ে, এসো আমার বেডে, খুব মজা দিবো। " ভেবেছিলুম রিপ্লেই দিবে না, কিন্তু পরোক্ষনেই রিপ্লেই দিলো নোংরা লোকটা। রাগটা দ্বিগুন হলো। কিন্তু বুঝলাম, লোকটার এসএমএসের রিপ্লেই দেয়াটাই ভুল হয়েছে আমার। এর পর ইনবক্সে বেশ কয়েকটা নগ্ন নারী পুরুষের ছবি পাঠিয়ে দিল।
ছি:, নিজের উপরেই ঘৃনা হচ্ছিল। কেন লোকটার রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করলাম। আর করেছি বলেই তো লোকটা নোংরামি করছে। এ লোকটার পূর্বেও বেশ কয়েকজন এমন হীন কাজ করেছে। প্রেম নিবেদন করেছে। নোংরা ছবি পাঠিয়েছে ।
কিছুদিন পূর্বে ফেসবুক আইডি ছিল না বলে বন্ধুদের কাছে লজ্জা পেতাম, এখন ফেসবুক আইডিতে ইনবক্সে লজ্জা পাই। ঘৃনায়, রাগে ইচ্চে করে খুন করে ফেলি পশুগুলোকে। না ওদের পশু বললে অপমান হয়, পশুর চেয়েও নিচ ওরা।
এসব বন্ধ করা যায় কিভাবে? প্রশ্ন করলুম নিজেকে। কিন্তু ফেসবুক সম্পর্কে আমি প্রায় জানিই না কিছু। কি করা যায়? লোকগুলোকে ব্লক দেয়া যায়। কিন্তু কিভাবে? সমাধান ভাইয়া।
ভাইয়াকে বলবো কিভাবে? ভাবতেই সমাধান পেয়ে গেলাম। ভাইয়ার কাছে গিয়ে বললাম,
- " ভাইয়া, আমার আইডিতে লগ ইন করে দেখতো কি হয়েছে। কারো সাথে চ্যাটিং করতে পারি না কেন? " বলেই চলে এলাম।
- "শিউলি, এখানে আয় " কিছুক্ষন পর ভাইয়া ডাকলো ওর কাছে ।
- ' আসছি ভাইয়া। ' জবাব দিয়, দাড়ালাম ওর পাশে।
- " আর কখনো অপরিচিত ব্যক্তির ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করবি না। বুঝলি " ভাইয়া বললো।
- হুম।
- "আর যদিও কারো ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করিস, আর সে যদি তোকে ডিসটার্ব করে তাহলে আনফ্রেন্ড করে ব্লক দিবি। ব্লক দিতে পারিস তো?"
- ' না। " জবাব দিলাম।
- " শেখাচ্ছি " বললো ভাইয়া। তার পর আমাকে আমার ফ্রেন্ডলিষ্টের দুইজন ফ্রেন্ড কে ব্লক করে আমাকে শিখিয়ে দিলো।
- ' ভাইয়া, এত রিকুয়েষ্ট আসে কেন? ' ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম।
- ' ফেসবুক প্রাইভেসি সিটিং এ গিয়ে সিটিং চেঞ্জ করতে হবে। একটা অপশন আছে, কে তোমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিতে পারবে? সেটা সবার জন্য উন্মুক্ত করা আছে। চেঞ্জ করে ফ্রেন্ডস অফ ফ্রেন্ড করে দিতে হবে। আমি করে দিচ্ছি, তুই পারবি না।" ভাইয়া জবাবে বললো।
ভাইয়ার ওখান হতে ফিরে আসার সময় ভাইয়াকে প্রশ্ন করলাম, " ভাইয়া তোকেও কি ওভাবে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দেয়। ইনবক্সে খারাপ এসএমএস দেয় কেউ? "
- " না তো! আমাকে দিবে কেন?! "
- তাহলে আমাকে দেয় কেন?
- 'তুই যে মেয়ে, সেজন্যই দেয়। ' বেশ কিছুক্ষন নিরব থেকে ভাইয়া জবাব দিল।
চুপ করে চলে আসি। ভাবি, বাস্তবিক জীবনেও নারী লাঞ্ছিত হয় নারী হওয়ার কারনে। ভার্চুয়ালেও নারী লাঞ্ছিত হয় নারী হওয়ার কারনেই । নারীর কোথাও শান্তি নেই। নারীর কোথাও একটু স্বস্থিতে বিশুদ্ধতায় শ্বাস নেয়ার স্থান নেই। পুরুষ নামক কিছু হায়েনা শকুনের নৃত্য জীবনটা দুর্বিষহ করে তোলে নারীদের । এরা কবে মানুষ হবে? আর নারীরা কবে স্বস্তিতে বিশুদ্ধতায় শ্বাস নিবে? সেই অপেক্ষায়।
লেখা: নুর আলম সিদ্দিক
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ