তোকে এখন কিভাবে আমি তুমি বলবো
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
...
..
.
- আমি কি তোকে একটা হাগ করতে পারি
- অবশ্যই
....
- আরে ছার অনেকে দেখছে
(আমার কথায় নিরু আমাকে ছেড়ে দিলো, নিরুর চোখে পানি,তবে সেটা সে লুকানোর মিথ্যা চেষ্টা করছে)
- ভালো থাকিস
- হুম চেষ্টা করবো, তুই পৌছে একটা ফোন দিস
- ওকে, কথাটা বলে নিরু পিছন ফিরে হাটা শুরু করলো,
আমি এয়ারপোর্টে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবছি ফেলেআসা দিনগুলোর কথা।
কতই না সুন্দর ছিলো দিনগুলো
আজ থেকে ঠিক ৪ বছর আগের কথা,
আমি এসেছি ভার্সিটি ১ম বর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য । ১ম
দিনেই………
-হ্যালো ! শুনছেন …? ( মেয়ে)
-জ্বি -বলুন !
-একবার নিচের দিকে তাকিয়ে দেখুন তো…
-হ্যাঁ নিশ্চয় । sorry আমাকে ক্ষমা করবেন । আমি আসলে বুঝতে
পারিনি।
-পায়ের উপর পা দিয়ে কিসের sorry. Next time কখনো এমন ভুলটা
করবেন না। আর হ্যাঁ এখন আপনাকে সবার সামনে sorry বলতে
হবে ……
-না মানে ।
- কিসের মানে …এখন sorry বলতে হবে আপনাকে …
-Sorry . আর কখনো এমন ভুলটা করবো না ।
-আচ্ছা ঠিকআছে (মেয়ে)
[ তারপর আমি কিছু না বলে সমস্ত Form Complete করে
চলে আসি বাসায় । আর আমি নিয়মিত ভার্সিটিতে আসি ।
একদিন আমি ভার্সিটি তে এক কোনায় বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছি ।
হঠাৎ দেখি সেই মেয়েটি । আমি অন্য দিকে ঘুরে
দাড়ায় । কিন্তুু মেয়েটি আমাকে চিনতে পেরে..?
-আচ্ছা আপনি এখানে কি করছেন…? (মেয়েটি)
-প্লিজ আমাকে ক্ষমা করবেন । actually আমি বুঝতে পারিনি ।
Bye.……
[ সেখান থেকে আমি চলে আসি এবং পরের দিন আমি কলেজে
যায় । ভার্সিটিতে গিয়ে বন্ধুর সঙ্গে study নিয়ে গল্প করছি । ঠিক
এমন সময় ……]
-হ্যালো , শুনছেন …(মেয়েটি)
[আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি সেই মেয়েটি । ভাবলাম হয়তো অন্য
কাউকে ডাকছে , কিন্তুু আমি না যাওয়া আমার দিকে আসলো
এগিয়ে । আমাকে আজও
অপমান করতে পারে তাই আমি উঠে চলে যাবো কিন্তু ঠিক তখনই
সে এসে বলল …………]
-হ্যালো , আপনি কোথায় যাচ্ছেন …?
-জ্বি বলুন …
-আপনার নামটা কি আমি জানতে পারি …?
-হ্যাঁ নিশ্চয় ।আমার নাম মাহির? আপনার..??
-আমি নিরু.. আচ্ছা একটা কথা বলবো…?
-হ্যাঁ নিশ্চয় …
-actually সেদিন আপনাকে অপমান করার জন্য আমি দু:খিত ।
-না না । কোনো সমস্যা নাই । ভুল করেছিলাম তো আমি , আপনি
কেন sorry বলতে যাবেন …।
-আচ্ছা আমি কি আপনার সাথে friendship করতে পারি …?
- আমরা কি ফেন্ড নই নাকি, ক্লাসের সবাই তো একে অপরের বন্ধু।
- তা ঠিক কিন্তু আমি বলছে লাইক এ বেস্টফেন্ড
- বেস্টফেন্ড সেটার কিন্তু কিছু শর্ত আছে
- কি,
- সারাজিবন ফেন্ড হয়ে থাকতে হবে, দুঃখ কষ্টের ভাগীদার হতে হবে, সমস্যার সমাধান দিতে হবে
- ওকে চেষ্টা করে দেখবো, তবে শর্ত গুলো কিন্তু তোর জন্যেও প্রযোজ্য।
- অবশ্যয় মিস নিরু।
বন্ধুত্ত দিয়েই পথচলা আমাদের।
পরেরদিন ক্লাসে প্রবেশ করবো হটাৎ পিছন থেকে নিরু ডাক দিলো,
- কিরে আমায় রেখে কই যাস
- তোকে রেখে কই যাবো মানে
- আমায় রেখেই তো যাইতাছোস
- ঠিক আছে আই তাড়াতাড়ি ক্লাসে যাই
- শোন তোকে একটা কথা বলি, এখন থেকে কলেজে যদি তুই আগে আসোস তবে এখানে এসে দাড়িয়ে থাকবি, আর যদি আমি আসি তবে আমিও এখানে দাড়িয়ে থাকবো, দুজন একসাথে মিলিত হলেই তবেই ক্লাসে প্রবেশ করবো কেমন।
- এত কিছু বাদ দে তুই তোর নাম্বার টা দে আমি যখন বাসা থেকে বের হই ঠিক তখন তোকে ফোন দিবো তুইও তখন বের হবি
- ঠিক আছে নাম্বার টা লেখ ০১৭৭৮***১৭৭
- নিরুর কাছ থেকে নাম্বার টা নিয়ে দুজনে একসাথে ক্লাসে প্রবেশ করি,
সুন্দর ভাবেই ক্লাশ চললো,
ক্লাস শেষে ক্যাম্পাস গিয়ে বসলাম আমি আর নিরু।
নিরু - চল ফুসকা খাই
আমি - আমি ফুচকা খাই না
- কেনো
- ভালো লাগে না তাই
- আমার ভালো লাগলে তোর ভালো লাগবে না কেনো
- মহা ঝামেলা তো, মানুষের পছন্দ অপছন্দ তো ভিন্ন হতেই পারে
- ভিন্ন হবে কিন্তু তোর আমার টা কখনোই না
- এটা কি করে সম্ভব
- সম্ভব চল এক কাজ করি, পছন্দ অপছন্দের একটা তালিকা বানায়।
- পারবো না
- চল না,
বলেই নিরু হাত ধরে টেনে নিয়ে আমাকে একটা বেন্ঝে বসালো,
-ফুসকা নাকি চটপটি
- চটপটি
-কালো না সাদা
- সাদা
-ক্রিকেট না ফুুটবল
- দুটোই
- মেসি না নেইমার
- মেসি
নাচ না গান
- গান
.
-আরো অনেক কিছু আছে মনে করতে পারছি না। যাক বাদ দে এখন তুই যা যা পছন্দের বললি তার সব কিছুর উল্টো আমি
- তো
- তোর পছন্দ কে আমি আমার পছন্দ মনে করবো আর আমার পছন্দের গুলোকে তুই নিজের পছন্দের তালিকায় ঢুকিয়ে নিবি কেমন
- পারবো না
- থাপ্পর চিনোস, থাপ্পর দিবো একটা, আমি পারলে তুই পারবি না কেন,
- থাক থাপ্পর দিতে হবে না।
...
চলবে
পরবর্তি পর্ব আসছে,,,,,
তোকে এখন কিভাবে আমি তুমি বলবো ( পার্ট ২)
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
...
..
.
সত্যি সত্যিই মেয়েটা আমার পছন্দ গুলোকে নিজের অপছন্দ শর্তেও মেনে নিলো, আমিও নিলাম বাধ্য হয়ে।
ওর জন্য কখনো না খাওয়া ফুসকা খাওয়া শিখলাম, চিংড়ি মাছ খাওয়া শিখলাম, কতো কি।।।
একদিন রাতে শুয়ে আছি আমি, হঠাৎই নিরুর ফোন,
-কিরে তুই ঘুমাচ্চিস কেনো
- এতো রাতে ঘুমাবো না তো কি করবো
- খেলা স্টার্ট হচ্ছে তো
- কার খেলা
- ব্রাজিল আর চিলি
-তো খেলা দেখনা আমি কি করবো
- তুই ও খেলা দেখবি
- আমার অনেক ঘুম ধরছে আমি পারবো না, তুই দেখ আমি সকালে হাইলাইট দেখে নেব
- কথাটা বলেই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলাম।
সকালে নিরুকে ফোন দিলাম, ফোনটা রিসিভ ই করলো না। কলেজ গিয়ে দেখি ক্যাম্পাসে মুখ ফুলিয়ে বসে আসে,
- কিরে কি হইছে
-
কথা বল না
- তোর সাথে কোনো কোনো কথা নাই
- কেনো আমি আবার কি করলাম
- তুই খেলা দেখা বাদ দিয়ে ঘুমিযে গেলি কেন
- কি করবো বল, ঘুম ছিলো চোখে প্রচুর।
-তুই তো সবসময় তোর টা নিয়ে থাকোস
- আচ্ছা বাবা এখন থেকে সব খেলাই আমি সজাগ থাকবো কেমন এবার চল ক্লাসে যায় লেট হচ্ছে তো।
নিরুকে নিয়ে ক্লাসে গেলাম। ক্লাশ শেষে গিয়ে প্রতিদিন বসি কলেজ ক্যাম্পাসে, এটা নিরুর অন্যতম ইচ্ছা, যা এখন আমারও কনভার্ট করে নিতে হয়েছে।
বেন্ঝে বসলাম দুজনে,
- চলনা আজ একটু ঘুড়তে যাই
- কই যাবি আর তাছাড়া তোর বাড়ি থেকে কিছু বলবে না
- বাড়ির চিন্তা বাদ দে, চল আমার সাথে
নিরুর সাথে সাথে গেলাম ও যেখান টাই নিয়ে গেলো, জায়গা টা অনেকটা নির্জন, লোক জনগম খুব কম, কোনো হৈ হুল্লোর নাই, আর সবথেকে বেটার হলো, এখানে ছোট একটা নদি আছে, নৌকা আছে
নিরু কিছু বলার আগে আমি বললাম,
- চল নৌকায় উঠি
- হুমম চল
নৌকায় উঠলাম
- মাহির জানিস আমার সব থেকে প্রিয় জায়গা গুলোর মধ্যে এটা একটা
- আমার ও অনেক পছন্দ হয়েছে রে
বেশ কিছুক্ষন নৌকায় ঘুড়ে বাসায় চলে আসলাম আমি আর নিরু
পরেরদিন কলেজে নিরুর দেখানো জায়গায় দাড়িয়ে আছি, হঠাৎ নিরুর ফোন,
- কই তুই
- কলেজের সামনে
- ওইখানে দ্বারা আমি আসতাছি
- ওকে
কিছুক্ষন পর
- চল তারাতারি
- কই যাবি
- দরকার আছে তাড়াতাড়ি চলনা
- কলেজ
- একদিন কলেজ না করলে কিছু হবে না
কথা না বলে নিরুর সাথে হাটা দিলাম,
নিরু আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলো,
- কিরে হাসপাতালে আনলি কেন
- রক্ত দিতে হবে
- কার
- তোর
থমকে দাড়ালাম,
- কি হলো চল তাড়াতাড়ি, প্লিজ অনেক ইমারজেন্সি
- আমি কেনো
- সরি দোস্ত উপায় ছিলো না, অনেক খুজেছি যে রক্ত দিতে পারবে পাইনি তাই তোকে নিয়ে আসছি,
- তুই আমার রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানলি কেমনে
- তোর আইডি কার্ড থেকে
কথা বলতে বলতে ডাক্তারের সামনে গিয়ে দাড়ালাম,
ডাক্তারের রক্ত নেওয়ার ব্যবস্থা করলো,
- নিরু একটা কাজ করতে পারবি
- কি
- যতক্ষন রক্ত দেই ততক্ষন তুই প্লিজ আমার হাতটা ধরে রাখতে পারবি
- ওকে
নিরু পুরোটা সময় আমার হাতটা ধরে রাখলো,
রক্ত দিয়ে শরীর টা সামান্য দুলতে ছিলো তখনই সামনে দাড়ানো একটা ভাই আমাকে জরিয়ে ধরলো, আমি মনে করলাম হয়তে আমি পড়ে যাচ্ছি বলে ধরেছে কিন্তু না
রক্ত দিয়ে যাকে বাচালাম সে মহিলার স্বামী উনি
আমাকে জরিয়ে ধরে একদম কান্না শুরু করে দিলো,
- আরে ভাই কান্না করছেন কেনো
- আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা আমার নেই
- ধন্যবাদ দিতে হবে না ভাই এটা আমার দায়িত্ব ছিলো,তাছাড়া দিতে হলে নিরু কে দিন ঔই আমাকে এখানে এনেছে,
- ধন্যবাদ তোমাকে আপু
নিরু কিছু বললো না
- আজ বিকালে আমার স্ত্রীর ডেলিভারি, তোমরা এসে একবার বেবি টাকে দেখে যেও,
- হয়তো পারবো না তবে চেষ্টা করবো
- বুজতে পারছি তোমরা স্টুডেন্ট মানুষ, এক কাজ করো তোমার নাম্বার টা দাও পরবর্তি তে যখন পিচ্ছিটার জন্য অনুষ্ঠান করবো তখন এসো।
নাম্বার টা দিয়ে আমি আর নিরু চলে আসলাম তবে আসার সময় ভাই কিছু ফলমূল হাতে ধরিয়ে দিলো সেটাই খাচ্ছিলাম
- কিরে তুই এতো স্বার্থপর কেন
- স্বার্থপরতা কি করলাম
- এই যে একা একা ফল খাচ্ছিস
- কষ্ট করলাম আমি একা তাই একাই খাচ্ছি
- তুই আসলে স্বার্থপর
- মজা করলাম, এই নে
নিরু একটা আপেল বের করে নিলো, তবে আজকের এই কাজের জন্য নিরুর প্রতি আমার শ্রদ্ধা টা অনেক বেরে গেলো
বাসায় চলে আসলাম,
রাতে শুয়ে আছি এমন সময় এক অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসলো
- হ্যালো
- কে (মেয়ে)
- জানিনা
- জানেন না কেন
- আপনি কাকে চাচ্ছেন সেটাই তো জানি না
- আমি মাহির কে চাচ্ছি
- আমিই মাহির আপনি কে
- আপনি আমাকে চেনেন না
- চিনলে কি বলতাম আপনি কে
- সত্যি চেনেন না
-না
বলেই কেটে দিলাম ফোনটা। ফালতু যত্তসব
পরেরদিন সকালে ক্যাম্পাসে বসে আছি নিরুর জন্য,
নিরু আসলো,
- কাল রাতে একটা মেয়ে ফোন দিয়েছিলো বুঝছোস
- তাই নাকি কে সে
- চিনি না তো
- অচেনা মানুষের ফোন ধরেছিলি কেন
- আমি তো মনে করছি চেনা কেউ
নিরু আমার সাথে কথা বলছে আর মিটমিট করে হাসছে,
- তুই হাসছিস কেন
- কই
- মাত্রই দেখলাম, তুই ফোন দিয়েছিলি নাতো
- আমি দেব কেন
- ওকে বাদ দে, চল ক্লাসে যায়,
ক্লাস, ভার্সিটি, ঘোরা ফেরা, জগড়া অভিমান, বন্ধুত্ত্ব, খুুনসুটি এই সব কিছুর মাঝে পেরিয়ে গেলো ভার্সিটি লাইফ,
মেইন পরিক্ষা শেষে একদিন বসে আছি ক্যাম্পাছে,
- তাহলে পরিক্ষা কেমন হলো
- ভালো, তোর
- ভালো, কিন্তু সমস্যা হয়েছে একটা
- কি
-বাবা বলেছে বিদেশে গিয়ে হায়ার ডিগ্রী নিতে
- তো যা না, কত জনের ভাগ্য জোটে বিদেশে পড়াশোনা ( কথাটা বলতে গিয়ে মুখ দিয়ে সামান্য আটকে গেলো কথাটা)
- তুই ও বলছিস যেতে
- হুম জাবি না কেন, ভালো ভাবে পড়াশোনা করবি, দেশের নাম বড়ো করবি, তবে মাঝে মাঝে আমাদের ও একটু খোজ খবর নিস, তাহলেই আমরা খুশি,
- মাঝে মাঝে না, ওকে যা মাঝে মাঝেই খোজ নেবো,
নিরু রাগ করে চলে গেলো,
আমি কি করবো বল নিরু, তোর বাবা রাতে ফোন দিয়ে বললো তোকে বিদেশে যাওয়ার কথা বোঝাতে, এখন আমি তোকে কিভাবে না করি, বল,,,, কথা গুলে মনে মনে বললাম
কিছুক্ষন নিস্তব্ধ বসে থাকলাম, তারপর উঠে বাসায় চলে আসলাম
এক সপ্তাহ পর,
নৌকাই বসে আছি দুজনে, দুজনেই নিস্তব্ধ,
কাল নিরু চলে যাবে,,,,
- আমি চলে গেলে তোর কষ্ট হবে না
- হবে তবে তুই টেনশন নিস না আমি সয়ে নেব
- আমি নিতে পারবো না
- আমি পারলে তুই পারবি না কেন
-জানি না, তবে পারবো না যে এটা সত্য
- এটা কিন্তু ফেন্ড শীপের নিয়ম বহির্ভূত।
নিরু এবার চুপ
- মন খারাপ করিস না,সারাজিবনের জন্য তো আর যাচ্ছিস না মাত্র তো দুই টা বছর
- হুম, দুইটা বছর তো মাত্রই হই
- মাত্রই তো
- তুই আসলে একটা স্বার্থপর
- আমি স্বার্থপর কি করে,,, হুম
নিরু কোনো উত্তর দিলো না
পরের দিন এয়ারপোর্টের একদম ভিতরে দাড়িয়ে আছি,
সবার সাথে দেখা করা শেষ হলেই আমি নিরুর সাথে দেখা করবো, মিনিট দশেক পর নিরু এসে সামনে দাড়ালো,
- ভালো থাকিস
- ভালো থাকার জিনিস টা পাবো কই
- খুজে নিস একটা
- হুম খুজে নেবো, তুই ভালো থাকিস
- হুম আর ফোন দিস মাঝে মাঝে
- ওকে
- শোন একটা কথা বলি
নিরু আগ্রহের সাথে বললো, বল
-না থাক পরে কোনো সময়
- এখন বল
- না
তার পরের টুকু তো আপনারা জানেন ই
নিরু হাতের ট্রলি টানতে টানতে ভিতরে চলে গেলো
আমি পাশে থাকা একটা চেয়ারে বসে পড়লাম
চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো, কেনো যেনো মনে হচ্ছে কিছু একটা হারিয়ে যাচ্ছে আমার জিবন থেকে, যার মুল্যে আমার জন্য অনেক।
কতক্ষন এমন নির্বাক ছিলাম জানি না
হঠাৎ নিরুর ডাকেই বাক ফিরলো
- কিরে কাদছিস কেনো
- জানিনা একাই চোখ দিয়ে পানি পড়ছে
- তুই কারন না জানলেও আমি জানি
- কি
- শোন আমি জানি আমার লাইফে পড়াশোনার কতো টা গুরুত্ব, কিন্তু আজ যখন তোকে ছেড়ে যাচ্ছিলাম তখন বুঝতে পারলাম শুধু পড়াশোনা কেন আমার লাইফে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলি তুই। আমি জানি না তুই আমাকে কি ভাবোস, হয়তো সবসময় বন্ধু, কিন্তু আমি পারি না, বিশেষ করে যখন তোকে ছেড়ে যাওয়ার কথা উঠলো তখন বুঝতে পারলাম কি ছিলি তুই আমার লাইফে যা আমি হারিয়ে ফেলছি। তাইতো তোকে হারাতে পারবো না বলে আজ আমি ফ্লাইট টা মিস করলাম। তোকে ছাড়া আমার পক্ষে থাকা সম্ভব না , তুই কি আমাদের ফেন্ডশীপে, দুজনের একসাথে একই ছাদের নিচের থাকার শর্ত টা যোগ করতে পারবি
( আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না,তবে তোকে ছকড়া থাকা তো আমকর পক্ষেও সম্ভব না, তুই যখন সুযোগ টা দিয়েই দিলি তখন সেটা হাত ছাড়া করি কি করে)
- আমি কি তোকে একটা হাগ করতে পারি
- না করছে কে জরিয়ে ধর না
আমি নিরু কে জড়িয়ে ধরলাম, আজ যখন ও আমার বুকে তখন বুঝতে পারলাম কতটা পরিপূর্ন আমি,
- নিরু জানিস আমার পক্ষেও তোকে ছাড়া থাকা সম্ভব না
- তো আমি যখন যাইতে ছিলাম তখন বাধা দিলি না কেন
- কেমনে দেব শর্ত টা তো তখনও তুই যোগ করিস নি
- হয়ছে, এবার ছাড় আমাকে সবাই দেখছে
- দেখলে দেখুক তাই আমার কি
- তাই না
বলেই পিঠের উপর ধামাধুম বাজিয়ে দিলো
- আরে বাবা ছাড়ছি তো
- হুম....
- কিন্তু সমস্যা হলো তো একটা
- কি
- তোকে এখন কিভাবে আমি তুমি বলবো
Continue....
তোকে এখন কিভাবে আমি তুমি বলবো ( শেষ পার্ট)
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
...
..
.
এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়েই থমকে দ্বারালাম আমি আর নিরু।
নিরুর ফ্যামিলি এখন ও দাড়িয়ে আছে।
আমাকে আর নিরু কে একসাথে দাড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে যায় নিরুর মা বাবা।
- মা তুমি যাও নি
- না বাবা আসলে
- তুমি কি করে ফ্লাইট মিস করলে, তোমার কি মাথায় কোনো সমস্যা আছে নাকি, এখন কিভাবে ফ্লাইট পাবে, তাছাড়া আমার জানা মতে আগামি সাত দিন কোনো ফ্লাইট নেই, এদিকে তোমার ভর্তি তো ২ দিন পর, এখন কেমনে কি করবো
- সরি বাবা আমি পক্ষে বিদেশ যাওয়া সম্ভব না
- কেন সম্ভব না
- আসলে বাবা মাহির কে ছেড়ে কোথাও যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না
- মাহির মাহির করো না তো আমার সামনে। এই বদমাইশ টা তোমার মাথা টা খেয়েছে
আমাকে নিয়ে কথা হলেও আমি চুপ করে আছি, আমি কিছু বললে আবার আংকেল খেপে যেতে পারে
নিরুর মা বললো,
- আচ্ছা যা হবার হয়েছে, এখন বাসায় চলো, এখানে সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
- ঠিক আছে চলো
নিরু তার ফ্যামিলির সাথে চলে গেলো। আমি নির্বাক হয়ে গেলাম। আমি এখন কি করবো, নিরু মা বাবা নিশ্চয় আমাদের ব্যাপার টা মেনে নেবে না।
কেমন যেনো খারাপ লাগতেছে, নিরুর বাবা সামনে গিয়ে দাড়াবো কি মুখ নিয়ে, উনি আমাকে বলেছেন নিরুকে বুঝিয়ে বিদেশ পাঠাতে আর সেই আমি কিনা নিরুকে যেতে দিতে পারলাম না।
নিজের মাঝে একটা গিল্টি ফিল কাজ করতে ছিলো,
বাসায় চলে আসলাম, রাতে নিরু ফোন দিলো,
- কোনো সমস্যা হয় নি তো তোমার
- না তেমন কোনো সমস্যা হয়নি, তবে বাবা মা একটু বকা ঝকা করেছে
- এখন কি করবে
- মা বাবা কে অনেক কষ্টে বুঝিয়ে, তারা তোমাকে কাল দেখা করতে বলেছে,
- কেনো
- জানিনা তবে কোনো বিষয়ে হয়তো কথা বলবে
- কখন আসবো
- সকালে এসো
- ওকে
সকালে ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠলাম, সারা রাত ঘুমাতে পারিনি, না জানি কি বলবে আজ কে জানে
সকাল খাওয়া দাওয়া শেষে চলে গেলাম নিরুর বাসায়
ডয়িং রুমে সোফায় বসে আছি,
সামনে নিরুর বাবা মা আর নিরু
- কি করেছো আমার মেয়েটার, সারাক্ষন শুধু তোমার নাম জবে
- আমি কিছু করি নি
- তাহলে মেয়ে টা তোমার প্রতি এতো এডিক্টেড কেন
- আমি কেমনে বলবো, আপনার মেয়েকে জ্বিগ্গাসা করেন
- নিরু তো বললো তোমার কথা আর তুমি বলছো নিরুর কথা, এখন কার কথা শুনবো
- আমি জানি না আপনি কিসের কথা জানতে চাচ্ছেন, তবে এটা সত্য আমি নিরু কে ছাড়া থাকতে পারবো না, ওকে ভুলতে পারবো না, ওর প্রত্যেকটা কথা আমার কাছে ভালো লাগে, ওর প্রত্যেকটা ইচ্ছা আমার পুরন করতে মনে চাই, ওকে ছাড়া প্রত্যেক টা মুহুর্ত আমার কাছে একেক টা বছর মনে হয়, এগুলা যদি ভালবাসা হয় তাহলে আমি নিরু কে অনেক ভালবাসি
আমার কথা শেষ হতেই পুরো রুমে নিরবতা চলে আসলো কারোর মুখে কোনো কথা নেই, নিরুন চোখে পানি।
- শুধু ভালবাসি বললেই তো হলো না নিরুর জন্য কি করতে পারবে
- নিরুর সব চাওয়া পাওয়া পুরন করতে পারবো কিনা জানি না, তবে চেষ্টা করবো।
- মুখে তো সবাই বলে কিন্তু কিন্তু কাজ তো কেউ ই করে না
- আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন
- ঠিক আছে কাল থেকে তাহলে গিয়ে আমার অফিসে বসো কেমন
- অফিসে মানে
- অফিসে মানে,, আমার অফিসে গিয়ে বসবে আর কতো দিন অফিস চালাবো বয়স তো হয়ে গেছে
আমি তো অবাক, হচ্ছে টা কি, কিছুই বুজে উঠার আগেই নিরুর এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো
নিরুর বাবা ছোট করে একটা কাশি দিল
নিরু আমাকে ছেড়ে দিলো
আমাদের বিয়ে টা হয়ে গেল, নিরুর বাবা আর আমার বাবা মা সবাই এক সাথে থেকে আমাদের বিয়ে টা দিলো।
বাসর রাতে আমি আর নিরু বসে আছি বেডে
- কিরে তুই তো আমায় ছালাম করলি না
- তোকে আবার ছালাম করতে হবে কেন
- ছালাম করবি না আমায়, এখন তো আমি তোর স্বামী
- তো আমার সাথে তুই মুই কেনো বলছিস
- অনেক দিনের অভ্যাস তো তাি ভুলতে পারছি না
- আমি ও তো, শোনো না একটা কথা বলি রাগ করবে না তো
- না বলো
- প্রমিজ
- ওকে
- এত দিনের এই সব কিছু প্লান করা ছিলো
- বুজলাম না, কিসের কি প্লান করা ছিলো?
- এই যে আমার বিদেশ যাওয়া, তোমাকে বিয়েতে রাজি করা সব কিছু
- তার মানে তুমি ইচ্ছা করে সব কিছু করেছো
- তাছাড়া উপায় ছিলো না তো তুমি যে ভিতু তুমি তো কোনো দিন আমায় ভালবাসি বলতে না
- তাহলে তোমার বিদেশ যাওয়ার কাহিনি টা
- ওটা তো এমনি ছিলো যাতে তোমার মুখ থেকে ভালবাসি বের করার প্লান যা আমি বাবা করেছিলাম। কিন্তু তুমি তাও বলতে পারো নি, তুমি যে এত ভিতু।
- সবই প্লান ছিলো
- হুম
- তবে রে
- তুমি কিন্তু বলেছে রাগ করবে না
- যাও বেচে গেলে
- চলো না ছাদে যায়
- এখন এতো রাতে
- হুম চলো না
নিরুর সাথে ছাদে গেলাম । রাতের আকাশে চাদ একাই পাহাড়া দিচ্ছে, আমি আর নিরু তার সাথে যোগ দিলাম ।
- আসলে সব কেমন যেনো স্বপ্নের মতো লাগছে
- হুম তুমি আর আমি সারাজিবন এক সাথে থাকবো সেটা ভাবতেই কেমন যেনো লাগছে।
- চলনা নিচে যায়
- কেনো
- ইতিহাস খুজে দেখতে
- কিসের ইতিহাস
- নিচে গেলেই বুঝতে পারবে
- চলো
ইতিহাস টুকু নাই বলি
এর পর থেকে আমাদের সংসার টা ভালোই চলছিল
১ বছর পর
নিরু বাচ্চা হবে কিন্তু রক্ত লাগবে ২ ব্যাগ।
আমি নিরুর রক্তের জন্য গ্রুপে পোষ্ট করলাম।
আর সেইদিন বিকালে হাসপাতালে পুরো ২০ জন লোক হাজির হলো রক্ত দেওয়ার জন্য, তাদের মধ্যে একজন ছিলো আমি যাকে রক্ত দিয়ে বাচিয়ে ছিলাম তার স্বামী।
সত্যিই তাকে দেখে আমি অবাক হয়ে ছিলাম। লোকটা উপকারের কথা আজও ভুলে নি । শুধু ঔই লোক টা না হাসপাতালে আসা কোনো লোকই উপকারের কথা ভোলেনি।
তবে ঐই লোকের দেওয়া রক্তেই বাচানো হলো নিরুকে। তার একদিন পর দুনিয়ায় এলো আমাদের ছোট বেবি
( একটা নাম টা দরকার বেবিটার কেউ কি বলে দিতে পারেন কি নাম রাখা যায়)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ