4906

আমার ক্রাশ,  যে কি না আবার আমার ছোট বোনের বান্ধবী।

হঠাৎ করেই রাস্তায় দেখা হওয়ার পর বললো,

- ভাইয়া কেমন আছেন?

আনন্দে আটখানা হয়ে জবাব দিলুম,  ' হুম ভালো আছি।  তুমি?'

'- ভালো, ভাইয়া আপনাকে ফেসবুকে friend request দিয়েছি,   accept করেন নাই কেন? '

বলে কি বালিকা,  তার ফেসবুক আইডি আছে!  সেটা হতে আবার আমাকে ফ্রেন্ড রিকুও দিছে! আর আমি তাকে ঝোলায় রাখছি ফাঁসি'র আসামির মতো!  সব্বনাশ।

মোবাইল সাথে ছিল না।  বাড়িতে এসেই ফেসবুকে লগ ইন করলাম। লগ ইনকরে ক্রাশের ফ্রেন্ড রিকু এক্সেপ্ট করতেই ইনবক্সে ম্যাসেজ পেলুম,

-'tnk u vaia.....'

কি সাংঘাতিক!  এ দেখছি আমাকে নিয়ে ভাবছে বলছে।  খুশিতে আত্মহারা হয়ে রিপ্লাই দিলাম, 

-সত্যিই তুমি আমার কথা ভাবছো? কি সৌভাগ্য আমার।

-আশ্চর্য আমি আবার কখন বললাম আপনাকে নিয়ে ভাবতেছি?

- এই যে বললে  tnk ( থিঙ্ক )  u vaia....! এর মানে কি?

- kcuna.  apnk bjhte hbe na.

পরের বাক্যে লিখেছে- "আপনাকে বুঝতে হবে না," এটা বুঝলেও kcu na ঠিক কি তা বুঝলুম না । বানান করে অনেক চেষ্টার পর বুঝলাম kcuna হলো কচুনা!  কিন্তু মেয়ে আমাকে ' কচুনা ' বলবে কেন? কচুনা কি? বিষয়ট বোঝার জন্য তাই রিপ্লেই দিলুম -

- kcuna কি?

না আর রিপ্লেই পেলুম না।  কিছুক্ষনেরর মধ্যেই দেখলুম নিচে লেখা , "ইউ ক্যান নট রিপ্লেই দিস কনভারসেশন।

পরে এক বন্ধু জানালো,  " আরে গাধা,  tnk,  এটা থিঙ্ক হবে না,  এটা হলো থ্যাঙ্ক। আর  kcuna লিখে তোকে কচুনা বোঝায় নি,  বুঝিয়েছে কিছু না! "

শুনে বন্ধুকে বললাম,  "দোস্ত আমি অংকে ভীষন কাঁঁচা! "

আমাদের বাজারের হাতুরে সিং মহন্ত ডাক্তারের হাতের লেখা আমি আনায়াসে পড়তে পারলেও,  এমন ইংরেজি বাংলিশ এর সংক্ষিপ্ত রুপ মোটেই মগজে ধারন করতে পারবো না!  ভেবেই সিদ্ধান্ত নিলাম,  ক্রাশ হলেও -  ওর হতে দুরে থাকাই ভালো!  দু লাইন চ্যাটিং করতে যে হাল করেছে - তাতে ভবিষ্যতে বিয়ে করলে বাজারের লিষ্ট লিখে দিলে বাজার হতে বাসায় ফিরে ওর ঝাড়ুর বারি খেতে হতো! 

এর পর বহুদিন গেছে।  আমিও ভিষন ব্যস্ততম সময় পার করছিলাম,  তাই ক্রাশের খবর রাখতে পারি নাই। ঘরে শুয়ে ফেসবুকিং করতেছি,  ছোট বোন এসে ডাকলো, 

- ভাইয়া ।

এর আবার এই ভাইয়া ডাকটা আমার জন্য বিপদ সংকেত।  আবহাওয়ার পূর্বাভাসে যেমন ঘূর্নিঝড়ের জন্য বলে দশ নম্বর মহা বিপদ সংকেত,  আবার বোনের ভাইয়া ডাকটি তেমনই মহা বিপদ সংকেত। ভাইয়া ডাকার মানেই হলো - কিছু টাকা দে!  তাই ডাকটা শুনে চমকে উঠলুম।ওর দিকে না তাকিয়েই জবাব দিলুম -

- বল।

- কি করিস?

- কানা না কি?  চোখে দেখিস না,  শুয়ে আছি।

- রুনু এসেছে  ।  তোর সাথে  ওর কিছু জরুরি কথা আছে।   কিন্তু বলতে সাহস পাচ্ছে না।

রুনু?  সে তো আমার ক্রাশ! তার আবার জরুরি কথা?  কি হতে পারে?  মোবাইলের স্কিন হতে দৃষ্টি সরিয়ে বোনের দিকে তাকাতেই দেখলুম সেও দাড়িয়ে আছে বোনের পাশে।

- কেন সাহস পাচ্ছে না কেন?

- কেন আবার।  তোকে না কি ব্লক দিয়েছিল।  সেজন্য।

এতক্ষন মনে ছিল না কথাটা।  মনে হতেই তীব্র একটা অপমান বোধ হলো আমার। কি সামান্য কারনেই না ব্লক দিয়েছিল।  এর উচিৎ জবাব দিতে পারলে শান্তি পেতুম। কিভাবে শোধ নেয়া যায,?  মহুর্তেই সেটা পেয়ে গেলাম।  বললুম-

- এতে ভয়ের কিছু নাই।  কি বলতে চায় বলুক।

আমি বলতে বলায় বেশ কিছু সময় নিয়ে সে কথা বললো, 

- কেমন আছেন ?

- " G "     ( good)

-   জ্বি মানে?  জানতে চেয়েছি কেমন আছেন ?

- বললাম তো 'G'

-" কি জ্বি জ্বি করছিস তুই?"   আমার বোন জানতে চাইলো এবারে ।

- সেটা তোর বান্ধবীকে জিজ্ঞেস কর। kcu তে যদি কচু না হয়ে কিছু হয় - Good  কে G বলতে দোষের কি? আর সেটা বুঝি নি বলে আমাকে ব্লক দিয়েছিল। আজ G তে যে Good সেটা সে বুঝতে না পারায় তার কোন কথা আমি শুনছি না।  এখন আমার ঘর হতে বের হয়ে যাও দুজনে  । বিরক্ত করিস না।

#_শব্দ_সংক্ষেপণ

লেখা:  নুর আলম সিদ্দিক