গল্প:#ক্লান্তিহীন
লেখক-গালিব হোসেন(রোমান্টিক ম্যাজিশিয়ান)
★
"কিছুটা নতুন শহর,কিছুটা নতুন পথ,কিছু নতুন মুখ পুড়নো শুধু স্মৃতি গুলো।
কতো না মায়া জড়িয়ে আছে অচেনার মাঝে চিরচেনা এই ছাদটার সাথে।কতো স্বপ্ন এঁকেছে পাশে রাখা দোলনায় বসে।"নিশ্চুপ বিকেলে ছাদে দাঁড়িয়ে রফি কথাগুলো ভাবছে।
গল্পের শুরুটা হয়েছিলো আজ থেকে সাত বছর আগে.....
(১)
"আমি কিন্তু আমার উত্তর পাইনি।"
কথাটা শুনে রফি পেছন ফিরে তাকিয়ে খেয়াল করলো রিহি দাঁড়িয়ে।মেয়েটার মুখে আতংকের এক চাপা ছাপ যেন নিঃসন্দেহে ভেসে উঠছে।
- কোন উত্তর?
- ভালবাসি।
- [নিশ্চুপ]
- কি হলো?
- আমার একটা কিউট গার্লফ্রেন্ড আছে,তাঁর কি হবে ভাবছি।
- মানে!কোন গার্লফ্রেন্ড!কিসের গার্লফ্রেন্ড!
- ছয় বছরের রিলেশন আমাদের।
- চাপা মারার জায়গা পাননা?ছয় বছরের রিলেশন হলে বয়স অনুযায়ী আপনি তখন ফাইভে পড়েন।
- হুম,তো কি?
- ফাইভে থাকতে তো আমার পেছন পেছন ঘুরছেন,তাহলে গার্লফ্রেন্ড আসলো কোথা থেকে!
- উঁহু,বুঝবেননা।
- বুঝায়ে বলেন।
- প্রয়োজন নেই।
- আপনার গার্লফ্রেন্ডকে দেখি।
- আমার লাভ!
- যা চাবেন তাই দিবো।[মন খারাপ করে]
রিহির কথায় রফি হাসতে হাসতে মোবাইল থেকে তাঁরি ছবি বেড় করে দেখালো।
এমন অবস্থায় বালিকা রাগ এবং হাসির মাঝামাঝি অবস্থায় অবস্থান করে নিমেষে ফিক করে হেসে দিলো।
সুযোগটা কাজে লাগিয়ে রফি রিহির হাতটা টেনে বুকে জড়িয়ে নিলো।
বালিকা কোনো বাঁধা দেয়নি।নিঠুর এই ভুবনে কে বা ভালবাসা পেতে না চায়!
সাহস পেয়ে রফি তখন রিহির কানের পাশ থেকে চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে বললো "শর্ত অনুযায়ী এবার যে তোমার ঠোঁটের স্পর্শ আমার চাই।"
- উম্ম,ওকে।কিন্তু!
- কি?
- এর বেশী ডিমান্ড করবানা।
- তবে প্রতিদিন ঠোঁটের স্পর্শ দিতে হবে।
- হিহিহি,ওকে।
.
শুরু হলো পথ চলা,রঙিন স্বপ্ন দেখা,ভালবাসার কথা বলা আরো কত কি।
পাশাপাশি ফ্লাট হওয়ায় খুব সহজে প্রতিদিন দেখাও হয়ে যেতো।
ভালো তো চলছিলো সুন্দর তাদের মুহূর্তগুলো।
ভাগ্যক্রমে,রিলেশনের তিন বছর পর কোনো এক ঝড় সবকিছু উড়িয়ে নিয়ে গেলো।ছিন্নভিন্ন করে দিলো দুটি জীবন।
- রফি আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।
- মানে কি!কখন!কিভাবে!
- মামাতো ভাই এর সাথে।আমিও কিছু জানতাম না,মাত্র শুনলাম।
- তুমি কোথায় এখন?
- মামার বাসায়।
- কবে গেছো?আমায়তো কিছু বলোনি!
- মামা অসুস্থ বলে আজকে বিকালে আসছি দেখতে।তখন মামা কি ভেবে হুট করে বিয়ের প্রস্তাব দিছে।আম্মু চোখ বন্ধ করে হ্যা বলে দিয়েছে।
- এখন কি পালাবা?
- সম্ভব না,আব্বু কাজি আনতে গেছে।মামা চাচ্ছে এখনি রেজিস্টার করে রাখতে।
- কি করবো এখন আমি।[কাঁপা স্বরে]
- আমায় ক্ষমা করে দিও প্লিজ।
- এটাই তোমার ফাইনাল ডিসিশন।
- আমি আব্বু আম্মুর বিপক্ষে যেতে পারবোনা।
"Enjoy your life" বলে রফি কল কেটে দিলো।
এবং সিম অফ করে দেয়।
.
স্মৃতি বুকে বাঁচা আর পাথর বুকে পথ চলা,একি ব্যাপার।
তাইতো রফি সব পেছনে ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।
ধীরেধীরে সেখানে বন্ধুবান্ধব-লেখাপড়া এবং পরবর্তীতে অফিস লাইফের ছোট্ট জীবন গড়েন তুলে।
এর মাঝে বাবা-মা হাজার বার বাসায় ফিরতে বলেছে তবে রফি যায়নি।কারণ একটা "স্মৃতি।"
কি লাভ সেগুলো মনে করে,যেগুলো ছিলো মরীচিকা মাত্র।
সে আর খোঁজও নেয়নি "মনের গহীনে থাকা মানুষটার কথা!"
কেউ রিহির ব্যাপারে কিছু বলতে গেলে ফোন কেটে দিতো।
তবে বাস্তবতার থেকে পালিয়ে থাকা এতো সহজ!নাহ্,এটা অসম্ভব মাত্র।
তাইতো বাবার অসুস্থতায় আজ আবার চাপা ব্যথার জগতে পা রাখা।
(২)
"তুমি আমায় এখনো ভালবাসো?"
মায়াবী কণ্ঠ শুনে পেছন ফিরে তাকাতে রফি অবাক।
রিহি!
এটা কিভাবে সম্ভব!
- আপনি?[অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে]
- ভালবাসো কি না?
- আপনার হাজবেন্ড কোথায়?
- ভালবাসো কি না?
- আমি কি মামা হয়ে গেছি?
"ঠাসসস"
চর খেয়ে রফি ছলছল চোখে রিহির দিকে তাকিয়ে বললো "এটা হয়তো বাকি ছিলো!"
- ভালবাসো কি না?
- কথাটা আমায় জিজ্ঞাসা করছো!যদি করে থাকো তবে আমি বলবো 'সবাইকে নিজের মতন সার্থপর ভেবোনা।'
- হ্যা আমি তো সার্থপর,তাই এখনো তোমার প্রিক্ষায় বসে আছি।সার্থপর বলে সেদিন সকল গুরুজনদের বিপক্ষে গিয়ে বিয়ে ভেঙে দিয়েছি।সার্থপর বলে সব ব্যথা হৃদয়ের মাঝে লুকিয়ে রেখে তোমার থেকে দূরে সরে থেকেছি।নাও,এই সার্থপরকে এখন তোমার হাতে সপে দিলাম।যা খুশি করো,শুধু শেষ নিশ্বাসটা তোমার বুকের মাঝে ফেলতে দিও।
রফি বাকরূদ্ধ হয়ে রিহিকে বুজে জড়িয়ে নিলো।
দুজনের চোখে অশ্রু ঝরে চলেছে।
সাত বছরে চাপা ব্যথার এইতো অন্তিম।
.
কিছুদিন বাদে ধুমধাম করে দুজনের বিয়ে হলো
এবং পালা এলো বাসরঘরের।
রফি খুবি আবেগের সাথে ঘরে প্রবেশ করে শক "রিহি নেই।"
মনের মাঝে আবার সেই চাপা ব্যথা শুরু হয়ে গেলো।
ঘটে চলা সবকিছু মরীচিকা রূপ ধারণ করতে লাগলো।
ঘরের প্রতিটা কোণায় খুঁজেও যখন রিহির দেখার নেই সে তখন খাটের মাঝে শুয়ে কান্নায় ভেঙে পরলো।
কিছুক্ষণ বাদে রিহি ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে দ্বিগুণ শক "ওই তুমি কান্না করছো কেনো।"
রফি পেছন ফিরে তাকিয়ে চোখ মুছতে মুছতে জিজ্ঞাসা করলো "কোথায় গেছিলা?"
- ওয়াশরুমে,তুমি কান্না করছো কেনো?
- ভাবছি তোমায় আবার হারিয়ে ফেলেছি।
- হায় খোদা,তুমি আসলে একটা পাগল।
- জানি,এরপর থেকে আমায় না বলে কোথাও যাবা না।
- আচ্ছা বাবা।
- এখন আসো আদর করি।
- হিহিহি।
*
জেদ-
চাপা ব্যথার আরেক নাম।
.....................<সমাপ্ত>………………
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ