ভালবাসার জয় পরাজয়
....
@PM Abdullah Mahir ( Confusion)
...
..
.
আমি RJ মাহির
FB গল্পবাজে স্বাগতম আপনাকে,আপনাদের সাথে এই মুহুর্তে উপস্থিত আছে এই বছরের সেরা গল্পকার।
আজ তার মুখ থেকেই শুনবো গল্প।
-তো ভাই কেমন আছেন
- এইতে ভালো আপনি
- জ্বি ভালো। আপনার লাইফ সম্পর্কে জানার অনেক ইচ্ছা আমার, তবে সেটা পরে। এখন আমাদের দর্শকের উদ্দেশ্য একটা গল্প বলুন
- ঠিক আছে।
-গল্পটা যাকে নিয়ে সে সাধারন পরিবারের একটা ছেলে। বলতে গেলে আনস্মার্ট, গ্যাইয়া, অপরিষ্কার এরকম অনেক উপাদি তার নামে যায়। আপন বলতে তার কেউ নেই। সেই ছোট বেলা মারা গেছে বাবা, তারপর তার মা নিয়েছিলো তার দায়িত্ব। কিন্তু সেই দায়িত্ব টাও খুব বেশি দিন স্থায়ী হয় নি। স্কুলে উঠার পর মারা যায় তার মা। মা বাবা হিন একটা ছেলের লাইফ কত টা কঠিন তা তো সবাই জানেন। তবে সবার থেকে আলাদা ছিলো ছেলেটা। সাধারনত, বাবা মা মরা ছেলেদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা বখাটে হয়ে যায়, অসামাজিক কার্যক্রমে ঢুকে যায়। কিন্তু আয়ান ছিলো সেই দিক থেকে পুরো ভিন্ন। ছোট বেলা থেকে যেমন টা ছিলো ঠিক তেমন ই রয়ে গেলো। পরিবর্তন হলো তার লাইফের একটা দিকের, সেটা হলো নিজের লাইফের দায়িত্ব টা নিজের কাধে এসে পড়লো। কঠিন লাইফের সাথে এগোতে গিয়ে পিছে ফিরে তাকাই নি একবার ও আয়ান। তবে তার জীবন টা ছিলো বিষাধ ময়।টিউশনি করে চালিয়েছে জিবন। মাসের কিছু কিছু দিন চলে গেছে তার না খেয়ে। তবুও পথ টা কখনো বিপথে যায় নি। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে সে, ফলাফল টা তাই আল্লাহ ভালোই দিয়েছে, চান্স পেয়ে যায় জাবি তে।
নিজের লাইফ টা তখন কিছুটা হলেও সার্থক মনে হতো আয়ানের।
তবে লাইফে প্রেম বলতে তেমন কিছু ছিলো না আয়ানের, ক্রাশ কি সেটা বুজতোই না। কারন তেমন কেউ ছিলো না আয়ানের জিবনে যে তাকে ভালবাসবে, ভালবাসতে শিখাবে।
কিন্তু ভাসির্টি লাইফে এসে পরিবর্তন হয়ে গেলো তার ফিলিংস, হঠাৎ করে প্রেমে পড়ে গেলো ডিপার্টমেন্টের সব থেকে সুন্দর মেয়েটির। আয়ান হয়তো এতো টুকু বুজতে পারতো না যে, জেইনের মতো সুন্দর, স্মার্ট, কোটিপতি মেয়ে কখনো তার মতো গ্যাইয়া ছেলের প্রেমে পড়বে না। আসলে অজানা কিছু ফিলিংস তার মনে সারাক্ষন দোলা দিতো যার ফল মেয়েটার প্রতি এডিকটেড হয়ে পড়া। হুম আয়ান ছেলেটা এতোটাই এডিকটেড ছিলো যে যতক্ষন জেইনের আসে পাশে থাকতো ততক্ষন জেইনের দিকে তাকিয়ে থাকতো, রাস্তা দিযে হেটে যাওয়ার সময় ফলো করতো, কতো কি।
আয়ানের পাগলামি টা খুব তাড়াতাড়ি বুঝে যায় জেইন। তার প্রতি আয়ানের ভালবাসা টা তার কাছে হাসির মনে হয়, তবু কি ভাল তো বাসে মজা তো নেওয়ায় যাবে। এমন একটা চিন্তা ভাবনায় আয়ান কে নিয়ে গেইম খেলার প্লান করলো জেইন। ক্লাসের সব থেকে সুন্দরী মেয়ে জেইন, অলরেডি ইন এ রিলেশনশীপ, তার পরও কতো গুলা স্মার্ট ছেলে লাইন দিয়ে আছে তার জন্য, ডজন খানিক X. Boyfriend ও ছিলো তার, এমন একটা মেয়ের জন্য আয়ান বেমানান কিন্তু এই কথাটি আয়ান কে বোঝাই কে। ভালবাসা নাকি মানুষকে অন্ধ করে দেয়। কথাটি হুবহু মিল আয়ানের দিকে। আয়ান শুধু দেখতে পেয়েছে জেইনের সুন্দর ফেস টা, সুন্দরের ভিতরটা যে কতো টা কুৎসিত তা দেখতে পায় নি আয়ান।
আয়ান অন্ধের মতো শুরু করে দিলো জেইনকে ফলো করা, অন্যদিকে জেইন ও শুরু করে দিলো আয়ানকে নিয়ে গেইম খেলা, স্মার্ট কিছু ফেন্ডের তালে পরে সিগারেট খাওয়া শিখেছে জেইন, আয়ান কে দেওয়া তার প্রথম কাজ টা ছিলো এক প্যাকেট সিগারেট আনানো, আয়ান ও তেমন কিছু মনে করে নি, অনায়াসে দোকান থেকে এক প্যাকেট সিগারেট এনো দেয় জেইন কে, চলতে থাকে এমন ভাবেই, আয়ান টিউশনি করে যে টাকা বেতন পাই তার বেশির ভাগ চলে যায় জেইনের পিছনে, নিজে অনেক কষ্টে করে থাকা খাওয়া, চলা ফেরা করে, তবুও তার কোনো কষ্ট নেই কারন জেইন, তার একমাত্র সান্তনা জেইন , তার জন্যই তো কষ্ট।
জেইন এবার গেইম টাকে আরো কঠিন করে দিলো , সে এখন আয়ান কে নিয়ে নিজের খাবারের বিল, কাপড় চোপড় এমন কি মোবাইলের লোড পর্যন্ত করিয়ে নেই, মাহিরের তবুও কোনো সমস্যা নেই কারোর সব কিছু সে জেইনের জন্যই করছে।
এর মাঝে আয়ানের একটা ফেন্ড তৈরী হয়ে গেলো, নাম আসিফ। ছেলে টা অনেক ভালো, আয়ানকে কিছু দিনের মধ্যে আপন করে নেই আসিফ। জেইনের সম্পর্কে যখন জানতে পারে আসিফ তখন বুঝতে পেরে যায় আয়ানের ভবিষ্যত। আসিফ বুঝতে পারে এই মেয়েটা আয়ানকে নিয়ে খেলছে । আয়ান কে বোঝানোর অনেক চেষ্টা করলো আসিফ। কিন্তু সম্ভব হয়নি কিছু বুঝানোর। ভালবাসায় অন্ধ আসিফ শুধু জেইনের নকল রুপ নিযে আছে, তার চালাকি বুঝতে পারছে না।
আসিফ আয়ানকে প্রেম নামক জট থেকে মুক্ত করার জন্য একটা উপায় বের করলো, তা হলো জেইনকে বুঝানো যেনো আয়ানকে তার বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে দেয়। আসিফ সরাসরি গিয়ে কথা বললো জেইনের সাথে, তর্ক বিকর্তে ফলাফল আসলো নেগেটিভ, তার আর আয়ানের মাঝে বেরে গেলো দুরুত্ব। এর মুল কারন জেইন, ভালবাসায় অন্ধ আয়ানকে জেইন আবোল তাবোল কিছু একটা বুঝিয়ে দিয়েছে আসিফের সম্পর্কে।
সত্যি ছেলেটা পাগল, তা না হলে সামান্য একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝের দুরুত্ব বাড়িয়ে দেই কি করে, যেভাবেই হোক আয়ানকে রক্ষা করতেই হবে, মনে মনে পন করলো আসিফ।
আসিফ শেষ একটা উপায় বের করলো যে, করেই হোক আয়ানকে দিয়ে প্রপোজ করাতে হবে। হুম এটাই একমাত্র উপায় আয়ানকে বোঝানোর। আসিফ আয়ানকে দিয়ে প্রপোজ করালো জেইনকে, ফলাফল টা জানা ছিলো আসিফের, শুধু নিজের ভুল টা বুঝতে পারলো আয়ান।
ভালবাসা যার কপালে নেই সে কি করে ভালবাসা পাবে। নিজেকে সান্তনা দিলো আয়ান, বড়ো সাপোর্ট টা দিলো আসিফ। সারাক্ষন আয়ানের আশে পাশে থাকা থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়ার খোজ খবর ও রাখতো আসিফ। কিন্তু নিজের জিবনের এখন আর কোনো মানে খুজে পায় না আয়ান। কি লাভ বেচে থেকে যেখানে কেউ ভালোই বাসে না তাকে। নিজের উপর থেকে দায়িত্ব কর্তব্য গুলো তুলো নিলো আয়ান, এক বেলা খাই তো আরেক বেলা খাই না, আবার অনেক বেলা লেট করে খাই।
আয়ানের এই বেপরোয়া জিবন টাকে গোছানোর জন্য একটা বৃথা চেষ্টা করলো আসিফ কিন্তু কাজ হলো না, আয়ানকে গোছানো সম্ভব না যদি না সে নিজেকে নিজে না গোছায়। কিছুদিন পর আয়ান অসুস্থ হয়ে পড়ে, আসিফ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরও আয়ানের অবস্থা খারাপ হতে থাকে, আসিফ ডাক্টারের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে আয়ানের আলসার হয়ছে আর একটা কিডনী নষ্ট হয়ে গেছে, আয়ানের এই অবস্থার কথা শুনে বড় একটা ধাক্কা খেলো আসিফ, কি করবে এখন সে, কোথায় থেকে পাবে আয়ানের চিকিৎসার টাকা।
পেয়ে যায় একটা বুদ্ধি আসিফ, ভার্সিটি থেকে পযাপ্ত টাকা সংগ্রহ করে আসিফ কিন্তু শেষ রক্ষা টা করতে পারে নি।
সারাজিবনের জন্য হারিয়ে ফেললো আয়ানকে।
আসিফ বুঝতে পারলো না এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে সে তার বন্ধু কে হারায় , ডাক্টার তো বলেছিলো অপারেশনের মাধ্যমে আয়ানের অসুখ সারানো সম্ভব, এবং তার জন্য সময় ও টাকার হিসাব দুটোই দিয়েছিলো ডাক্টার কিন্তু সময়, টাকা থাকতে কিভাবে সে আয়ান কে হারায়। এত কিছু আসিফের মাথায় ঢুকে না, সে সরাসরি ডাক্টারের কাছে যায়।
অনেক জোড়াজুড়ি করার পর ডাক্টার বলে, তাদের হাসপাতালে নতুন একটা মেয়ে ভর্তি হয়েছে যার দুইটা কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো, আমরা কিনডির খোজে সব কিছু তন্ন তন্ন করে ফেলেছিলাম কিন্তু কোথায় তার খোজ পাই নি, শেষে আয়ান সাহেব খবর টা শুনে নিজে তার কিডনি দিতে রাজি হলো, আমরা অনেক মানা করলাম কিন্তু শুনে নি, বললো সে যদি বেচে থাকে তবেও কোনো লাভ নেই কারন তাকে ভালবাসার কেউ নেই, তার কোনো গুরুত্ব নেই এই পৃথিবীতে। মেয়েটাকে যেভাবেই হোক আপনি বাচান। আমরা অনেক বার না করলাম, অভিভাবকের কথা বললাম কিন্তু তবুও সে তার সিদ্ধান্তে অটল থাকলো, শেষ তার জোড়াজুড়িতে আমরা কিডনি নিতে বাধ্য হলাম।
আসিফের চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়তে লাগলো, কান্না জড়িত কন্ঠে ডাক্টারকে বললো, কে সেই মেয়ে আমায় একটু বলবেন প্লিজ।
ডাক্টার সাহেব নিজে নিয়ে গেলো আসিফকে মেয়েটার কেবিনে।
কেবিনে গিয়ে অবাক আসিফ, মেয়েটা আর কেউ না জেইন নিজেই।
আসিফ কি বলবে কিছু বুঝতে পারছে, যে ভালবাসে না তার জন্য অজানাতেই এতো বড়ো আত্নত্যাগ করলো আয়ান।
বন্ধুর জন্য গর্ব হতে লাগলো আসিফের কিন্তু কষ্ট একটা বন্ধুত্ত টা গাড়ো করতে পারলো না
আসিফ জেইনের সামনে গিয়ে দাড়ালো, অবাক হলো জেইন।
ছেলেটাকে মুক্তি দিয়ে দিলে তাও এমন ভাবে। আসলে তোমার দ্বারাই এমন টা সম্ভব।
জেইন বুঝতে পারলো না কি বলছে আসিফ।
আসিফ জেইনেক কোনো কথার রিপলে আর দিলো না, চোখে পানি নিয়ে বের হয়ে আসলো হাসপাতাল থেকে।
কিছু দিন পর জেইন ভার্সিটি তে এসে জানতে পারলো আয়ান আর বেচে নেই, নিজের ভিতর পষুত্ব টা মুহুর্তে হারিয়ে গেলো, আফসোসে নিজেকে নিজে দোষ দিতে লাগলো সে। সর্বশেষ যখন জানতে পারলো তাকে যে ব্যাক্তি টি জিবন দান করেছে সে আর কেউ না, আয়ান নিজে। তখন জেইন বুঝতে পারলো ভালবাসা টা কি, আজ পর্যন্ত যাদের সাথে সে ঘুড়েছে, চলেছে তারা কেউ তাকে সাহায্য করে নি করেছে গ্যাইয়া আনস্মার্ট ছেলেটাই। আসলে ভালবাসা টা চেহারায় হয় না এটা সম্পুর্ন মনের ব্যাপার।
.
চোখে পানি এসে গেলো মাহির ভাই। কাহিনি টা কি সত্যি নাকি।
-: হুম সত্যি কাহিনি
-: ধন্যবাদ ভাই, আমরা আবার আপনার গল্প শুনবো তবে সেটা অন্য কোনো একদিন। আজ আর নয়।
-: ওকে মাহির সাহেব, ধন্যবাদ আপনাকেও
যাওয়ার আগে দর্শকদের উদ্দেশ্য বলি কেমন হলো বলবেন আর নিজ দায়িত্বে পছন্দের একটা গান শুনে নেবেন।
বাই বাই।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ