ভালবাসি না বলেও ভালবাসা যায়
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
.
- শুনছেন আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো
- হুম,, বলেন
- কিভাবে যে বলি মাইন্ড করবেন না তো
- কথা টা আগে শুনি তবে বুঝতে পারবো
- ভয় করছে বলতে
- ভয় নাই বলেন
- আমি আপনাকে ভালবাসি
ঠাস......
- মাম্মি বলে একটা চিৎকার দিলাম অমনি ঘুম টা ভেঙ্গে গেল। গালে একবার হাত দিলাম, সত্যি সত্যি মারে নি তো । এর মাঝে মা চলে এলো চিৎকার শুনে,
- কি হয়েছে বাবা
- না মা, স্বপ্ন দেখছিলাম
- তাই বলে এতো জোড়ে চিৎকার দিলি
- যাও তো মা ভয় পাইছি তাই দিছি
- ওকে
মেয়েটা কে যাস্ট মনের কথাটাই তো বলছি তার জন্যই থাপ্পর মারতে হবে, মগের মুলক নাকি।
তবে বেচে গেছি থাপ্পর টা স্বপ্নেই মারছে। বাস্তবে হলে কতটা অপমানের হত।
কি ভাবছেন কে এই মেয়ে। অবশ্য ভাবার কথাই। মেয়েটাকে আমি ভালবাসি কিন্তু বলতে পারি না ভয়ে, যদি থাপ্পর মারে, নতুবা না বলে দেয়। এই ভয় টা আমাকে স্বপ্নেও জানান দিয়ে যায়।
নিরু মানে মেয়েটা আর আমি একি কলেজে একই ডিপার্টমেন্টে পরি। প্রথম দিন থেকে খেয়াল করছি তাকে, স্নিদ্ধ সুন্দরি বলতে পারেন, তবে গুন্ডি টাইপের একটা মেয়ে। প্রথম দিনই মনের ভিতর জায়গা করে নেয় মেয়েটা। তারপর থেকে ভাললাগা। ভাললাগা টা বারতে থাকলে এক পর্যায়ে তা ভালবাসায় রুপান্তরিত হয়।
যাই হোক গল্পে আসি,
সকাল বেলা ঘুম টা ভাঙ্গলো ভয় দিয়ে, না জানি সারাটা দিন কেমন কাটবে । ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করে রওয়ানা দিলাম কলেজের উদ্দেশ্য, কলেজের পথে নিরুর বাসা। নিরুর বাসার একটু আগে প্রতিদিন দেরি করি কখন নিরু বের হবে তাকে ফলো করতে করতে কলেজ যাবো।
দাড়িয়ে আছি নিরুর জন্য, আজ অনেক লেট হচ্ছে নিরুর বের হতে । অনেকক্ষন পর বাসা থেকে বের হলো। বের হয়ে একটা রিক্সা নিলো। আমিও একটা রিক্সা নিলাম। পিছু পিছু যাচ্ছি। কলেজ পথে নিরু হঠাৎ রিক্সা থেমে নামলো। বুঝে উঠার আগেই নিরু এগিয়ে গিয়ে দাড়ালো কিছু বখাটে ছেলের সামনে।
আমি রিক্সা থেকে নামলাম, বুঝতে পারলাম না কি কথা হলো তাদের মধ্যে। কিছুক্ষন পর খেয়াল করলাম নিরু এক পা এক পা করে পিছিয়ে আসছে আর বখাটে ছেলে দুটো তার সামনে সামনে আসছে। নিরুকে হয়তো কোনো বিষয়ে ভয় দেখাচ্ছে। আমি সোজা গিয়ে দাড়ালাম নিরুর পিছনে। ঢাক্কা খেল আমার সাথে। আমাকে দেখে কিছুটা স্বস্তি পেল সে।
- কি হয়েছে
- দেখেন না ছেলে গুলো কি সব আজে বাজে কথা বলছে
- কিরে তোদের ঘরে কি মা বোন নাই নাকি
- মা বোন আছে কিন্তু একটা বউয়ের অভাব
মারলাম একটা থাপ্পর, অমনি চ্যালা দুটো দৌড়ে পালালো
- কিসের দরকার
- সরি ভাই আর হবে না উনি তো আমার ছোট আপু
- হুমম যা ফোট
দৌড়ে পালালো ছেলেটা।
- ধন্যবাদ,
-
-আচ্ছা তুমি তো আমার ক্লাস মেট তাইনা
- হুমম
- বাহ তোমার তো ভালোই সাহস
- হুমম
- তো ক্লাসে তো তোমায় একটিভ দেখি না
- হুমম
কি হুমম হুমম করছো আর কোনো কথা জানো না নাকি বোবা
কি বলবো কিছু বুঝতে পারছি না, আসলে মুখের ভিতর কেমন যেন কথা টা আটকে যাচ্ছে।
- কি হলো
- কিছু না চলুন কলেজ যাই লেট হয়ে যাচ্ছে তো
- আপনি কেন তুমি বলো
- ওকে চলো
নিরু আর আমি একটা রিক্সা নিলাম।
ক্লাসে জোর করে বসিয়েছে ওর পাশে। আমি বসতাম না। দুরে বসলে তাও ওকে অনায়াছে দেখা যায় ও বুঝতে পারে না। কিন্তু ওর পাশে তো আর এমন টা সম্ভব না।
- কি ভাবো
- না কিছু না
কিছুক্ষন পর,
- কি দেখো
- তোমাকে
কথাটা বলে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম,
- সরি, তোমাকে দেখছি না
- তো আমার দিকে তাকিয়ে কি অন্য কাউকে দেখছো
- তোমার কানের দুলটা অনেক সুন্দর সেটাই দেখছিলাম।
- কই আমি তো কানে দুল পরি নি
- পড় নি না
- না
- ও...
এর মাঝে ক্লাসে স্যার চলে আসলো, একটু হলেও হাফ ছেরে বাচলাম।
ক্লাস শেষে বাসায় চলে আসলাম।
কিছুদিন এমনই চললো। নিজের মনের কথাটা সরাসরি নিরুকে বলতে পারবো না এটা বুঝে গেলাম এই কয় দিনে । কারন নিরুকে দেখলেই মনে হয় এই বুঝি একটা থাপ্পর মেরে দেবে। কিন্তু মেয়েটা মোটেও তেমন না। তবুও ভয় করে।
নিরুকে ইমপ্রেস করার একটা উপায় খুজছিলাম কিছুদিন হলো, পেয়েও গেলাম উপায় টা।
কলেজে বসে আছি আমি আর নিরু।
হঠাৎ একটা ছোট ছেলে এসে নিরুকে একটা চকলেট আর গোলাপ দিয়ে দৌড়ে পালালো।
নিরু সামান্য অবাক হলো। নিরু বুঝলো কেউ হয়তো এটা পাঠিয়েছে তাকে দেওয়ার জন্য। আর সে তার পরিচয় দিতে চাইনা।
- কে হতে পারে মাহির গেস করতে পারো কি
- না
- আমিও তো বুঝতে পারছি না
যাক বাচা গেল নিরু বুঝতে পারে নি কে পাঠিয়েছে।
এভাবে আরো তিন দিন, তিন টা ভিন্ন ছেলে কে দিয়ে ফুল পাঠালাম।
তিনদিন পর,
- যদি সামনে পেতাম মেরে একেবারে নাক ফাটিয়ে দিতাম
- কাকে
- যে প্রতিদিন এগুলা পাটায়
- কেন
- সামনা সামনি দিলে কি এমন হয় আমি কি রাগ করতাম না কি, এত লুকোচুরি আমার একদম পছন্দ না ।
যত টুকু সাহস যুগিয়ে ছিলাম তাও কর্পূরের মত উরে গেল।
- চলো ক্লাসে যায় মাহির
- ওকে চলো
মেয়েটাকে ইমপ্রেস করার এই প্লান বাদ দিলাম। না জানি কবে নাক ফাটিয়ে দেয়। একটা কঠিন উপায় বের করলাম।
প্রতিদিন কুরিয়ার করে পাঠানো শুরু করলাম নিরুর জন্য গিফ্ট। বিষয়টা একটু কষ্টের । জানিয়া খুশি হয় কিনা বেজার। তবে আমার খুবই ভালো লাগে ব্যাপার টা।
- মাহির আমি বুঝতে পারি না কে এই ছেলে যে আমায় প্রতিদিন একটা করে গিফ্ট দেয়
- আমি কি জানি
- তুমি তো কিছুই বুজো না
- তুমি কি ছেলেটার প্রতি ইমপ্রেস নাকি
- ইমপ্রেস না ছাই ওর মাথা ফাঠালে তবেই মনে শান্তি পাবো
- কি বলো ডাইরেক্ট মাথা ফাটিয়ে দিবা
- হুমম
- ভয়াবহ চিন্তা ভাবনা
- দুর এটা তো কিছু না, আচ্ছা বাদ দাও তোমার টেনশন করার দরকার নেই
টেনশন তো আমার ই সেটা তো তুমি বুঝবে না। মনে মনে বললাম।
প্রথমবার নাক ফাটাবে অার এখন মাথা ফাটাবে, কি সব চিন্তা ভাবনা নিরুর। কেমনে একে ইমপ্রেস করবো।
কুরিয়ারে গিফ্ট দেওয়া বাদ দিলাম।
নতুন কোনো উপায় বের করতে হবে।
একটা সিম কিনলাম। নতুন সিম দিয়ে প্রতিদিন নিরুকে গুড মর্নিং আর গুড নাইট লিখে মেসেজ করি।
সপ্তাহ পর,
- কি হয়েছে নিরু
- নতুন জামেলা ক্রিয়েট হয়েছে
- কি ঝামেলা
- কে যেনো প্রতিদিন সকালে রাতে ম্যাসেজ দেয়
- প্রতিদিন দেয় নাকি
- হুমম....
- এর কি ফাটাবে
- এর কি ফাটাবো মানে
- না মানে আগের বার যে দুজন ডিস্টাব দিলো তাদের মাথা আর নাক ফাটানোর কথা বললে তাই বলছি এবারে কি ফাটাবে
- না এবার আমি কিছুটা হলেও ইমপ্রেস
- বাহ ভালো তো
- হুমম,,, ছেলেটার ধৈর্য দেখে আমি অবাক, একটা দিনও এসএমএস বাদ যায় নি
- গুড
যাক শেষ একটা জিনিস তো নিরুর ভালো লাগলো ।
কলেজে ক্লাস প্রায় বাদ দিয়ে দিছি বললেই চলে। নিরু সাথে আড্ডা দিতে দিতে কেমনে যে পার হয়ে যায় সময় টা বুঝতেই পারি না।
- মাহির যাবে
- কোথায় যাবে
- ফুসকা খেতে
- ওকে চলো
নিরু ফুসকা খাই আমি তাকে দেখি
- ওভাবে দেখ না তো প্লিজ বেসম খাবো
বলতে বলতেই ঢেকর খেলো নিরু,
নিরুর পানির জন্য হাত বাড়ালো, আমি পানি নিয়ে খেয়ে ফেললাম। নিরু অবাক চোখে তাকালো আমার দিকে আমি হাত দিয়ে লাইক সাইন দিলাম নিরু দিকে। অবাক নিরু এবার যেনো ভ্যাবাচ্যাকা খেলো। হচ্ছে টাকি তার সাথে। নিরুর ডেকর টা বন্ধ হয়ে গেল
- এই পদ্ধতি শিখলে কোথা থেকে
- মুভি দেখে
- বাহ ভালো তো
- হুমম
দুদিন পর,
-নিরু তোমার পাশের এই ছেলে টা কে,( একটা পিক দেখিয়ে,)
- তোমাকে কেন বলবো
- তাও ঠিক আমাকে কেন বলবে
-হুমম,,
- তুমি তো আমার ফেন্ড, ফেন্ড হিসেবে তো বলতেই পারো
- ফেন্ড দের সব কথা বলতে নেই
- তাহলে কি বলবে না
- না
- আর কোনো উপায়
- একটা আছে
- কি
- আমাকে প্রপোজ করতে হবে
- তোমায় প্রপোজ করবো কেন
- তুমি না আমায় ভালবাস
- কে বললো
- তুমি নিজেই
- আমি কিভাবে
- তুমি ছাড়া আর কেউ নেই যে আমার সাথে মিশে, তাছাড়া তুমি যে পিচ্চি গুলোকে দিয়ে ফুল পাঠাতে তারা বলেছে,তুমি যে কুরিয়ার থেকে কুরিয়ার করতে তারাও তোমার কথা বলছে । আর সর্বশেষ তোমার নামে রেজিস্টেশন করা সিম, যেটা দিয়ে তুমি আমাকে ম্যাসেজ দিতে
- এখন বলো আমাকে ভালবাসো কিনা ( নিরু)
- বাসি
- তো ভালবাসো তা বলো নি কেন
- ভালবাসি না বলেও তো ভালবাসা যায় নাকি
- হুমম কিন্তু আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই ভালবাসার কথা
- বলতেই হবে
- হুমম
- ওকে চেষ্টা করি
হাটু গেরে,
- আমি তোমাকে ভালবাসি
ঠাস....
নিজেকে বিশ্বাস হচ্ছিল না। এটা কি হলো, একবার চিমটি কাটলাম হাতে।
- চর মারলে কেন
- তোমার ভয় কাটানোর জন্য
- মানে
- তোমার ডায়েরি টা একদিন পরেছিলাম, সেখানে লেখা ছিলো তুমি মেয়েদের হাতে থাপ্পর অনেক ভয় পাও
- তাই বলে এভাবে থাপ্পর মারবে
- হুম,
- ধুর
- তাছাড়া রিয়ারসেল টাও তো হলো গেল
- এটা আবার কেন
- নেক্সট টাইম তো আর মারবো তার জন্য
- নো ওয়ে আমি আমার প্রপোজ উইতড্রো করলাম বাই, আমি তোমাকে ভালবাসি না
- আরে বাবা যাচ্ছো কই দাড়াও না
- না পারবো না, আর তোমাকে আমি চিনি না, বাই,,,,,
.
.
ভুল ত্রুটিটি ক্ষমার চোখে দেখবেন....
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ