ভালবাসার গল্প ( পারিবারিক গল্প )
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
.
- একটা কথা বলবো রাখবেন
- জ্বি বলুন
- আগে আপনি তাপনি বলা বাদ দিন তারপর বলবো
- ঠিক আছে বলো
- আমি ডাক্টারি পড়টা শেষ করতে চাই
- পরবে সমস্যা নেই তো
- কিন্তু আমি চাইছিলাম পড়াশোনা টা শেষ করে তারপর না হয় আমরা নিজেদের এক করতাম
- মানে
- আমি চাইছি পড়াশোনার আগে নিজেদের মাঝে কোনো শারিরিক সম্পর্ক না রাখতে
- ও এই বিষয়, নো প্রবলেম
- সত্যি তো
- হুমম, দিন একটা বালিস দিন
- ধন্যবাদ
নিরুর সাথে কথা বলে হাতে বালিস নিয়ে সোজা গিয়ে ছোপায় শুয়ে পড়লাম।
মন টাই খারাপ করে দিলো মেয়ে টা, বাসর রাতে কেউ এমন শর্ত দেয় নাকি। জানতাম না। কত স্বপ্ন ছিলো সব মাটি করে দিলো । তবে ইচ্ছা ছিলো বাসর রাতে বউয়ের চাওয়ার গুলো পুরন করার চেষ্টা করবো, তার জন্যই নিজেকে কন্টোল করলাম,
- কাথা লাগবে না
- না
- রাগ করছেন
- না তো আমার অনেক খুশি খুশি লাগছে
- আপনি যদি চান তো আমরা বাসর রাত পালন করতে পারি
- সত্যি
- হুমম
আমি বালিস নিয়ে গিয়ে বিছানায় রাখলাম, নিরু হাত টা ধরলাম নিরু কেমন যেনে কেপে উঠলো
- আমি নিরু মুখের কাছে মুখটা নিলাম, নিরু চোখ বন্ধ করে আছে,
- ভয় পাচ্ছো
- হুমম,
- আমি কিন্তু এখন স্বার্থপর হতে পারতাম কিন্তু এমন টা আমি হবো না।
- মানে
- মানে কিছু না, যা হবে তা তোমার পাশ করার পরই
- সত্যিই
কথাটা বলেই নিরু আমাকে জড়িয়ে ধরলো,
- আরে করছো কি
- সরি সরি নিজের আবেগ কে ধরে রাখতে পারি নি
- ইটস ওকে , দিন বালিস টা
- আজকের জন্য না হহয় এখানে শুয়ে পড়ুন, কাল আমি নিচে বেডের ব্যবস্থা করে দেব কেমন
- ওকে
- এত দুরুত্ব রাখলে কিন্তু বেডে থেকে পড়ে যেতে পারেন, নিরুর কথায় কান দিলাম না
ঘুমিয়ে গেলাম।
মাঝরাতের দিকে সত্যি সত্যি বেড থেকে পড়ে গেলাম,
সোজা হয়ে বসতেই দেখি নিরু বেডে বসে বসে হাসছে
- হাসার কি হলো
- আমি আপনাকে বললাম যে এত দুরুত্ব রেখে ঘুমায়েন না পড়ে যাবেন আপনি তো শুনলেন না
- হুমম, সেটাই তো দোষ
- উঠে আসুন
নিরুর কথা উপেক্ষা করে বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লাম,
সকালে কার যেনো হাতের স্পর্শ পড়লো হাতের উপর, চোখ খুলে দেখি নিরু
- হুমম,,বলো
- মা ডাকছে আপনাকে
- ওকে যাও আমি আসছি
- শোনেন না আপনি একটু মাকে বুঝিয়ে বলবেন যে আমি পড়াশোনা টা শেষ করতে চাই
- ঠিক আছে
নিরু চলে গেল, আমি ফ্রেস হয়ে বের হলাম।
-মা কই খাবার দাও
- বউ কে বল
- তোমার হাতের খাবার ছাড়া আমি খেতে পারি না তুমি জানো না
- জানি তো, কিন্তু এখন তো বউ এর হাতেই রান্না খেতে হবে
- কেন তুমি কি তাহলে আর রান্না করবে না
- করবো মাঝে মাঝে
- কিন্তু সমস্যা হয়েছে একটা
- কি
- নিরু তো ওর পড়াশোনা টা শেষ করতে চাই
- বিয়ে হয়ে গেছে এখন আর পড়াশোনা করে কি হবে
- বিয়ে হয়ে গেলেই যে পড়াশোনা বাদ দিতে হবে তা কিন্তু না, পড়াশোনা করবে নিজের জ্ঞান চর্চা হবে, মনুষ্যত্ব অর্জিত হবে, আত্নার পরি তৃপ্তি হবে
- ঠিক আছে পড়বে সমস্যা কি
- ধন্যবাদ মা ( আনন্দে কথা টা বলে উঠলো নিরু)
- বুজতে পারছি আরো একবছর সংসারের চাবি টা আমাকেই সামলাতে হবে
- হুমম মা বুঝতে পেরেছ
- বউমা খাবার গুলো প্লেটে দাও
- ওকে মা ( নিরু)
খাওয়া দাওয়া করে বেলকনি তে গিয়ে বসলাম
- কি করেন
- কিছু না, বসো
- হুমম...
- আচ্ছা তুমি যদি পড়াশোনায় করবে তো বিয়ে করলে কেন
- আমার ও তো ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা টা শেষ করে তারপর নিজের পায়ে দাড়াবো, তারপর না হয় বিয়ে, কিন্তু বাবার অসুখের কারনে পারলাম না।
- অসুখের সাথে পড়াশোনা না করার সম্পর্ক কি
- আসলে বাবার অসুখ টা গুরুতর ছিলো, তাই বাবা চাচ্ছিল তার কিছু হওয়ার আগেই যেন তিনি আমার বিয়ে টা দিয়ে দিতে পারেন, তাছাড়া জামাই হিসেবে যখন আপনাকে পেয়েছে তখন তো আর না করতে পারে নি বাবা, আর বাবার জোড়াজুড়ি তে আমি ও মানা করতে পারি নি।
- ওও, তো পড়াশোনা স্টার্ট করে দিন, সামনের বছর ডাক্টার হয়ে বের হয়ে প্রথম চিকিৎসা টা কিন্তু আমারই করতে হবে কেমন
- ওকে, আপনার চিকিৎসাই আগে করবো, কিন্তু আমার যে কিছু বই কিনতে হবে
- ঠিক আছে বিকালে বের হবো তখন কিনবো
- আমাকে নিবেন না
- তুমি গেলে নিবো সাথে
- আমি যাবো না কেন
- ওকে বিকালে বের হব
- ওকে
বিকালে,
- তুমি সাঝবে না
- কেন আমায় কি খারাপ লাগছে নাকি
- না তুমি তো এমনিতেই অনেক সুন্দর,
- চলুন
- ওকে চলো
বাসা থেকে বের হয়ে রিক্সা নিলাম,
- রাতের মত কিন্তু এবার রিক্সা থেকেও পড়ে যাবেন
- না পড়বো না
- চেপে বসুন
- বসছি তো
নিরু আমার হাত ধরে হালকা একটা টান দিলো, নিরুর একদম পাশেই গিয়ে বসলাম
- মামা চলেন
বিকালে বই কিনে খাওয়া করে বাসায় ফিরলাম
দড়জা খুলে,
- কি বউকে পেয়ে মাকে ভুলে গেলি নাকি
- কি যে বলো মা
- কি বলছি না
- এই দেখুন মা আপনার ছেলে আপনার জন্য খাবার এনেছে, আমি মানা করলাম মা হয়তো খাবে না, কিন্তু না সে শুনলোই না।
- খাবো না কেন, অবশ্য আমি খাওয়া দাওয়া করে ফেলেছি, আচ্ছা এখন রাখ পরে গরম করে খেয়ে নেব
আমি আর নিরু রুমে ঢুকলাম মা তার রুমে চলে গেল।
সুন্দর ই চলছিল সংসার।
নিরু কেমন যেন সব কিছু মানিয়ে নিয়েছে, ওক দেখলে মনে হয় না ও এই বাড়ির নতুন কেউ মনে হয় এই বাড়িটা ওর নিজের বাড়ি । সারাক্ষন মায়ের আসে পাশে থাকে। কিন্তু এত কিছুর মাঝে একটা জিনিস দেখলাম, নিরু কেমন যেনো পড়াশোনা করে না। পড়াশোনা না করলে তো পিছিয়ে পড়বে । তাই চিন্তা করলাম নিরুকে হোস্টেল এ পাঠিয়ে দেব। তাহলে হয়তো রাগ করে হলেও পড়াশোনা টা করবে।
এক সপ্তাহ পর,
- তোমার তো মনে হয় পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে তাই না
- হয় কিন্তু এটা ব্যাপার না, আমি মানিয়ে নিতে পারবো
- সমস্যা কেমনে মানিয়ে নেবে, তোমার অনেক সখ তুমি পড়াশোনা করবে সেটা এখানে থাকলে সম্ভব না
- তো কি করবেন
- ভাবছি তোমায় হোস্টেল এ পাঠিয়ে দেব
- আমি আপনাদের ছেড়ে হোস্টেল এ গিয়ে থাকবো না
- আরে বাবা ১ টা বছরই তো
- একটা বছরই কি আর একদিন ই কি আমি আপনাদের ছেড়ে অন্য কোথায় থাকবো না
- বোঝার চেষ্টা করো, এখানে থাকলে তোমার পড়াশোনার সমস্যা হবে, আমি সেটা চাই না, তোমার জন্য রুম ঠিক করে রেখেছি এই নাও চাবি
নিরুর চোখে পানি, এই পানি কষ্টের না, এটা হারানোর ভয়।
- আমি পড়াশোনা করবো না
- কেন
- আপনি আমাকে দুরে ঠেলে দিচ্ছেন কেন
- কই মাত্র তো এক বছর
- বুঝি তো
হঠাৎ মা এসে হাজির, নিরু গিয়ে মাকে জড়িয়ে কান্না শুরু করলো,
- কি হয়েছে মা, কান্না করো কেন,
- আপনার ছেলে বলছে আমায় নাকি হোস্টেল এ পাঠিয়ে দেবে
- কেন বাড়ির বৌ হোস্টেল এ থাকবে কেন
- ওর রেজাল্ট ভালোর জন্য এই ব্যবস্থা।
- লাগবে না আমার রেজাল্ট, আমি যাবো না
- নিরু এবার কিন্তু ভালো হচ্ছে না, তোমার ভালোই জন্যই তো করছি এসব
- আচ্ছা তুই যা আমি ওকে বুঝিয়ে বলছি।
- ওকে, কাল সকালে গাড়ি আসবে নিরুকে নিতে
- আচ্চা তুই যা এখন
রুম থেকে বের হয়ে এলাম।
পড়াশোনায় যে নিরুর মন নেই তা নিরুর মুখ দেখলেই বোঝা যায়। এখানে থাকলে নিরুর পড়াশোনা গোল্লায় যাবে, তখন দেখা যাবে এক বছর কেন আগামি ৪-৫ বছরেও আমি বাসর রাত পালন করতে পারবো না,
.
আমার নেওয়া ডিসিশনে নিরু যে অনেক কষ্ট পেয়েছে তা তার কান্না ভরা মুখ টা দেখলেই বোঝা যায়।
সারা রাত নিরু একটা কথা বলে নি আমার সাথে, শুধু কান্না করেছে। সারা রাতে এক ফোটা ঘুমাতে পারি নি নিরুর এই কান্নার কারনে।
সকালে দেখি নিরুর চোখ টা ফুলে এক এক টা লাড্ডু হয়ে গেছে
নিরু মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো, আমার সাথে একটা কথাও বললো না।
ডাইভারের পাশে বসে নিরুর হোস্টেল পর্যন্ত গেলাম তবুও কোনো কথা বললো না আমার সাথে
ওকে হোস্টেল এ রেখে যখন রিটার্ন করবো তখন ডাক দিলো নিরু,
- শুনছেন
- হুমম, বলো
- নিজের দিকে খেয়াল রাখবেন
- ওকে
- মায়ের দিকেও খেয়াল রাখবেন
- ওকে
- আর শোনেন কোনো মেয়ের দিকে তাকাবেন না
- ওকে
- সপ্তাহে একদিন এসে আমার সাথে দেখা করবেন
- ওকে
- আর কিছু বলবে
- না
- ওকে আমি যায়
- ওকে
নিরু কে হোস্টেল এ রেখে বাসায় ফেরত চলে আসলাম। বাসা টা কেমন যেন ফাকা ফাকা লাগছে, লাগবেই তো বাসার মালিক টাই তো নেই বাসায়। জানি কিছুদিন একা একা লাগবে, কস্ট হবে, কিন্তু বিষয় টাকে যে আমার সহ্য করতে হবেই
- কি ভাবছিস মাহির
- নিরুর কথা
- হুম বৌও মা ছাড়া বাড়ি টা একদম ফাকা ফাকা লাগে
- আমিও এটাই চিন্তা করতে ছিলাম
- শুধু শুধু ওকে হোস্টেল এ দিয়ে আসলি
-শুধু শুধু না মা, হোস্টেল এ না দিলে ওর পড়াশোনার লাটে উঠতো
- যা করেছিস ভালোই করেছিস, এখন কিছুদিন কষ্ট করে একা একা থাক
- হুমম সেটাই তো দেখছি
এক সপ্তাহ পর,
- নিরু তুমি একটু নিচে আসো তো
- ওকে আসছি
.
- দারোয়ান মামা তুমি উনার সাথে এমন করছো কেন
- দেহেন না আপা হেয় কই হ্যার বউ নাকি এখানে থাকে, কারোর বউ কি হোস্টেল এসে থাকে
- থাকে মামা, ওনিও আমার হাসবেন্ড
- ও ওকে
- তোমাদের দারোয়ানের ভয়ে কাল তোমার সাথে দেখা করতে পারি
- ফোন দিতেন আমি নিচে আসতাম
- ভেবেছিলাম তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দিবো, কিন্তু দারোয়ান তো ঢুকতেই দিলো না
- ওও, তা কেমন আছেন
- আছি কোনো মত তুমি
- ভালোই আছি, ভালোর জন্যই তো এত দুরে সরিয়ে দিয়েছেন
- রাগ করো কেন
- রাগ করবো কেন
- দেখ তোমার জন্য চলকেট এনেছি
- কই
- নাও
- ধন্যবাদ
- পড়াশোনা কেমন চলছে
- ভালো
- আমার একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ব্যাক করতে হবে, তোমার কিছু লাগবে নাকি
- না
- ওকে থাকো আমি যায়
- আচ্ছা
বাসায় চলে আসলাম
নিরুর প্রতি টান যেন ধিরে ধিরে বাড়তে শুরু করেছে। সারাক্ষন এখন ওকে দেখতে মন চাই কথা বলতে মন চাই।
কিন্তু ওর পড়াশোনার ক্ষতি হবে দেখে ফোন দেয় না। জানি না এর জন্য আবার নিরু রাগ করবে কিনা।
পরের দিন অফিসে বসে বসে কি যেনো একটা বিষয় নিয়ে চিন্তা করছিলাম,
- কি চিন্তা করেন ( কলিগ মিসকা)
- তেমন কিছু না, কিছু বলবেন
- জ্বি, একটা ফাইল দেখানোর ছিলো
- ঠিক আছে দিন
- এই নিন
- একি আপনার ফাইলে দেখি অনেক ভুল
- সরি স্যার, নতুন তো তাই বুঝতে পারি নি
- ঠিক আছে এদিক আসুন আমি আপনাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি
মেয়েটা বুঝে নেওয়ার ছলে আমার হাতটা দুই তিন বার স্পর্শ করলো, আমি তাড়াতাড়ি করে বিষয় টা বুঝিয়ে তাকে চলে যেতে বললাম
মেয়েটা চলে যেতে মাথায় একটা বিষয় খটকা লাগলো, নিরু কেউ হয়তো এমন কেউ ডিস্টাব দিতে পারে
বিকালে অফিস শেষে নিরুর হোস্টেল এর সামনে গিয়ে দাড়ালাম, চিন্তা করছি ভিতরে যাবো কি যাবো না, এমন সময় দাড়োয়ান মামা ডাক দিলো
- হুমম বলো
- ম্যাম তো হোস্টেল এ নাই
- কই গেছে
- জানি না তো
- ঠিক আছে
বাসায় দিকে রওয়ানা দিলাম। শুধু শুধু চিন্তা করছি, কে আবার নিরুকে ডিস্টাব দেবে। তবুও মনের মাঝের খটকা টা গেলো না।
- আমার জুনিয়র এক ভাই কে ফোন দিলাম
- হ্যা ভাই বলেন
- একটা কাজ করতে হবে
- কি কাজ
- নিরু দিকে নজর রাখতে হবে, আমার মনে হয় ওকে কেউ ডিস্টাব দেয়
- ওকে ভাই
২ দিন পর জুনিয়র ভাই টা একটা ইনফরমেশন দিলো, শুনে সামান্য অবাক হলাম। বিকালে অফিস শেষে নিরুর হোস্টেল এর সামনে গিয়ে দাড়ালাম, নিরু আসলো
- কেমন আছেন
- ভালো তুমি
- ভালো
- তোমাকে কেউ ডিস্টাব টিস্টাব দেই নাতো
- হঠাৎ এমন কথা বলছেন যে
- না এমনি বললাম, কেউ দেয় নাতো
- আছে কিছু বখাটে ছেলে আমি সকালে ভার্সিটি যাওয়ার সময় ডিস্টাব দেই
- আমাকে আগে বলো নি কেন
- আপনি শুধু শুধু চিন্তা করবেন বলে
- কাল সকালে তোমার সাথে আমিও যাবো
- ওকে
- তাহলে বাসায় যায় কেমন, নিজের খেয়াল রেখ
- হুমম... বাই
- বাই
.
সকালে নিরুর সাথে বের হলাম, আসার আগে পুলিশ কে ফোন দিলাম।
বাস ট্যান্ডের সামনে বসে আছে তিনটা পোলা, দেখতে এক একটা হিরো আলম,
নিরু কে দেখেই ওর কাছে এগিয়ে এলো
- তাহলে এরাই তোমাকে ডিস্টাব দেয়
- হুমম
- ওকে
- ওই এই দিকে আই
- কি সমস্যা কি
- তোরা নাকি মেয়েটাকে ডিস্টাব দেস
- মেয়েটাকে ডিস্টাব দেয় তো আপনার কি
দিলাম ঠাটিয়ে একটা থাপ্পর,
- তুই চিনোস ওরে ( কলার ধরে) চ্যালা দুইটা ফুটছে
- না
- ও আমার স্ত্রী
- ও ও সরি ভাই, আর ডিস্টাব দেব না ভাই
- এখন সরি বলে লাভ নেই বাছা, পিছনে তাকিয়ে দেখ তোরে মামার বাড়ির দাওয়াত দিতে এসেছে
ছেলেটাকে পুলিশের হাতে দিয়ে আমি অফিসে রওয়ানা দিলাম, আর নিরু ওর ভার্সিটি তে।
অফিসে বসে শান্তি নেই, মিসকা মেয়ে টা একদম জ্বালিয়ে মারে বসের রিলেটিভ বলে কড়া কোনো কথাও বলতে পারি না।
- আজ আবার কি চাই
- ফাইল টা একটু চেক করে দিবেন
- দাও, আর ওই খানেই চুপচাপ দাড়িয়ে থাকো
- মাহির সাহেব আপনি সব সময় আমার সাথে এমন করেন কেন
- কি করবো, তোমার তো ম্যানার কম
- কি
- হুমম...
মিসকা রাগ করে চলে গেল, মনে করেছিলাম বসকে বলে দেবে, না কিছুই বলে নি। যাক বাচা গেল।
.
ভালোই চলছিল দিনকাল
একদিন আমি রাতে নিরুর সাথে কথা বলতে ছিলাম, এমন সময় মিসকা ফোন দিলো,
- নিরু একটু ফোনটা রাখো তো আমার কলিগ ফোন দিছে
- ওকে
.
- হ্যা মিসকা বলো
- কি করেন
- কিছুনা, ফোন দিয়েছো কেন সেটা বলো
- চলেন না কাল কোথায় ঘুড়তে যায়
- তোমার সাথে আমি কেন ঘুড়তে যাবো তুমি অন্য কাউকে নিয়ে যাও
- আরে আপনার সাথে অন্য কারোর তুলনা হয় নাকি
- আমার সাথে তোমার ও যায়, আর শুনো রাতে কোনো সময় ফোন দিবা না বুঝছো
- না, আমি দিবোই
- ওকে তাহলে ব্লাক লিস্টে দিচ্ছি তোমার নাম্বার
- না না ফোন দিবো না
- রাখো
বলে রেখে দিলাম,
নিরু কে ফোন দিলাম,
- কথা তাহলে শেষ হলো আপনার
- হুমম
- কে ফোন দিয়েছিল
- বললাম না কলিগ
- ছেলে না মেয়ে
- মেয়ে
- জানতাম এমন টাই হবে
- কি এমন টা হবে হুমম..
- এই যে আমি কাছে নাই আর সাথে সাথে সুযোগ টা কাজে লাগিয়ে নিয়েছেন
- শুধু শুধু বাজে কথা বলো না
- উচিত কথা বলা দোষ
- তোমরা মেয়েরা সব এমন কেন অল্প জিনিস টাকে কিভাবে এত্ত বড় বানাতে হয় খুব ভালো করেই জানো
- হুমম এখন তো দোষ আমার
- আমি কি করবো মেয়েটাই তো আমাকে ডিস্টাব দেয়
- আপনাকে ডিস্টাব দেবে কেন
- আমি কি জানি, বসের রিলেটিভ বলে কিছু বলতেও পারি না
- ও এইবার বুঝতে পারছি, তো আপনি এক কাজ করুন
- কি
- আমাকে একদিন অফিসে নিয়ে গিছে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিন তাহলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
- ঠিক বলেছো
- কবে নিয়ে যাবেন
- তুমি যেদিন ফ্রি
- ওকে
নিরু কে নিয়ে অফিসে প্রবেশ করলাম
- বাহ ভাই ভাবি তো অনেক সুন্দর
- ভাবি আপনার ছোট কোনো বোন নাই থাকলে আমাকে একটু বলবেন
- কি মাহির ভাই, ভাবি কে নিয়ে আসলেন যে
এক এক জনের মন্তব্যের জ্বালায় অফিসে থাকা মুসকিল হয়ে গেল।
কিন্তু মিসকা কেন আসছে না, সেটা বুঝতে পারছি না,
আমি নিরুকে নিয়ে আমার রুমে ঢুকলাম, নিরুর সাথে বসে বসে চা খাচ্ছি আর আড্ডা দিচ্ছি,
- কই আপনার কলিগ
- মনে হচ্ছে তুমি এসেছো শুনে আমার রুমে আসতে ভয় পাচ্ছে
- হুমম, হতে পারে
ভালোই কিছুক্ষন আড্ডা দিলাম, হঠাৎ দড়জায় কে যেন নক করলো
- আসুন
মিসকা রুমে প্রবেশ করে কেমন যেনো একটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল
- আসুন, আপনাকে খুজছিলাম
- আমাকে কেন
- আসুন এখানে বসুন তারপর বলছি
.
- উনি কে ( মিসকা)
- আমার পিএ
- মানে আপনার আবার পিএ
- উনি মজা করছেন, আমি উনার স্ত্রী ( নিরু)
- মানে ( মিসকা)
- হুমম, কেন আপনি জানতেন না
- না তো
- যাক সারপ্রাইজ হয়ে গেলো একটা ( আমি)
- আমি যায় ( মিসকা)
- কই ( নিরু)
- কাজ আছে একটু
- ওকে বাই
নিরু চলে যেতেই হাসিতে ঢলে পড়লাম দুজন,
- মুখটা দেখেছো, কেমন পেচার মত হয়ে গেছে
- হুমম
- আচ্ছা কাজ তো হয়ে গেল, চলো তোমায় হোস্টেল এ রেখে আসি
- না পড়ে যাবো
- পড়ে যাবে মানে, তোমার না পড়া আছে
- একদিন না পড়লে কিছু হবে না।
- একদিনও পড়া বাদ দেওয়া যাবে না চলো
- না
- কই যাচ্ছো
- তোমার অফিস টা ঘুড়ে দেখবো
- ঠিক আছে চলো আমি দেখাচ্ছি
- ওকে আসেন
নিরু সবার সাথে পরিচিত হলো, মিসকা কে অফিসে খুজে পাওয়া গেল না, শেষে ঢুকলো বসের রুমে,
- কেমন আছেন
- একি তুমি বসো
- না আজ না অন্য একদিন, আপনি একটু উনার ছুটির ব্যবস্থা করে দিন আজকের জন্য
- কেন ছুটি দিয়ে কি করবে ( আমি)
- ওকে যাও ( বস)
- Thanq u
আমি আর নিরু বের হলাম গাড়ি টা নিয়ে,
- আজ এমন পাগলামি করছো কেন
- কই পাগলামি করলাম
- এইযে এতক্ষন যে কাজ গুলা করলে এগুলা কি ছিলো
- একটা দিন ই তো
- কই যাবে বলো
- আপনি যেখানে নিয়ে যাবেন, তবে ঘুড়বো কিন্তু সারাদিন ই
- ওকে
নিরুর সাথে সারাদিন ঘুড়লাম, খাওয়া দাওয়া করলাম
সন্ধার দিকে নিরুর হোস্টেল এর সামনে নিরুকে নামিয়ে দিতে এসেছি
- শুনুন
- হুম বলো
- আমি আপনার হাত টা একবার ধরতে পারি
- ধরো
নিরু আলতো করে হাতটা ধরলো
- আমি আপনাকে ভালবাসি অনেক অনেক অনেক বেশি
- জানি তো
- হুমম...
- মিসকা মেয়েটা কিন্তু অনেক কষ্ট পেয়েছে আজ
- ধুর আমি আপনাকে আমার মনের কথা বলছি আর আপনি আছেন মিসকা কে নিয়ে, যান বাসায় যান
- ওকে
নিরু কে একটু কষ্ট দিলাম, এই সব ভাললাগার কথা শোনার অনেক সময় পাবো সামনে , এই সব চিন্তা করে নিরু যেনো পড়াশোনা নষ্ট না করে তার জন্যই এটা।
.
বাসায় বসে আছি, এমন সময় মা আসলো
- কি করিস বাবা
- কিছুনা
- নিরুর পরিক্ষা কবে
- ২ মাস পর
- কতদিন হলো দেখি না ওকে
- ওর হোস্টেল এ গিয়ে তো দেখে আসতে পারো
- হুমম.. যাবো একদিন
- আচ্ছা আমি যায়, ঘুম ধরছে
- ওকে
মাস খানেক পর,
- প্রিপারেশন কেমন ছিলো
- এতদিন দেখা করেন নি কেন
- আমি বলি কি, আর তুমি বলো কি
- আমার উত্তর টা দিন, তারপর আপনার টা আমি দিবো
- অফিসের কাজে একটু বিজি ছিলাম তো তাই
- তাই বলে এক টা মাস আমার সাথে দেখা করবেন না
- হুমম,,, সুযোগ হয়নি সরি
- সরি বললেই কি সব শেষ নাকি
- তাছাড়া আর কি বলবো
- কিছুই বলতে হবে না
- তোমার চকলেট নাও
- দিন, আর খাওয়া দাওয়া করেন না নাকি এমন শুকিয়ে যাচ্ছেন কেন
- কি জানি
- কাজ বাদ দিয়ে একটু নিজের দিকে খেয়াল দিন, আর আমাকে তো ভুলেই যাচ্ছেন
- বাজে কথা বাদ দাও বলো, প্রিপারেশন কেমন হচ্ছে
- ভালো
- যাক ভালো হলেই ভালো
- কিছু লাগবে তোমার
- হুমম,আপনার নাক টা একবার ধরবো
- নাক কেন
- এমনি
- ওকে ধরো
- না থাক
- হাহা, আচ্ছা থাক তাহলে বাসায় যায় কেমন
- ওকে, নিজের খেয়াল রাখবেন ভালো করে
- ওকে
.
দেখতে দেখতে একমাস পার হয়ে গেল, নিরু মাঝে মাঝে দেখা করতে চাইতো কিন্তু দেখা করি নি, শুধু ফোনে কথা হতো,
নিরুর পরিক্ষাও শুরু হয়ে গেল। নিরু কে প্রতিদিন গাড়ি করে পরিক্ষার হলে রেখে আসি,
সারাদিনের সব কথা সে গাড়িতে বসে বসে বলে। মানা করি যে, পরিক্ষা দিবে এত আজু বাজু কথা না বললে হয় না। কিন্তু না, সে আমার কথা শুনলে তো। তার উত্তর একটাই, পরিক্ষার হলে যদি কিছু ভুলে যায়, আমার ফেস চিন্তা করলে নাকি সব কিছু মনে পরে যায় তার, কেমন সব আজগুবি যুক্তি । কথা বললে তাই এখন আর কিছু বলি না।
নিরুর শেষ পরিক্ষার আগের দিন, নিরুকে হোস্টেল এ রেখে বাসায় ব্যাক করছি, এমন সময় কিছু লোকজন পথ আগলে দাড়ালো
গাড়ি থেকে নেমে,
- কি চাই
- তোকে
কথাটা বলার আগেই ধামাধুম মাইর শুরু করে দিলো সবাই মিলে। কথা বলার কোনো সুযোগই পেলাম না। লোকজন এসে আমাকে সেভ করার আগেই মার খেলাম অনেক, মাথার একটা সাইট কেটে গেল, একটা হাতে অনেক ব্যাথা পেলাম, হয়তো হাত টা ভেঙ্গে গেছে। সবাই মিলে আমাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলো,
কললিস্টে নিরুর নাম্বার টা সবার আগে ছিলো তাই নিরু সবার আগে ঘটনা টা জানলো,
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি, কান্না চোখে রুমে ঢুকলো মা আর নিরু
- কেমন করে হলো ( মা)
- আপনার গায়ে কি শক্তি নেই, মার খেয়ে এসেছেন ( নিরু)
- আমি তো বুঝে উঠতে পারি নি, তার আগেই
- হুমম বুঝেছি সব ( নিরু)
- বেশি কিছু হয়নি তো
- দেখতেই তো পাচ্ছি, কিন্তু আপনাকে মারলো কে
- একজন কে অল্প একটু চিনতে পারছি, তোমাকে যে ছেলেটা তোমাকে ডিস্টাব দিতো সেই ছেলেটা
- ওরে যে কি করবো আপনি শুধু সুস্থ হয়ে উঠেন
- কিন্তু তোমার না পরিক্ষা কাল, তুমি হোস্টেল এ ফিরে যাও, আমার কিছু হয়নি
- হ্যা বৌওমা তুমি যাও আমি তো আছিই
- তাড়িয়ে দিচ্ছেন
- বোঝার চেষ্টা কর, তোমার পরিক্ষা খারাপ হবে
- হলে হবে আমি যাব না
- তুমি কিন্তু অনেক
- যাই কিছুই বলেন আমি কোথাও যাবো না
কি বলবো এই মেয়েকে, নাছড় বান্দা, কখনো কিছু চিন্তা করে না, আমি তো আজ বাদে কাল সুস্থ হয়ে উঠবো কিন্তু ওর যদি পরিক্ষা খারাপ হয় সেটা কি আর ফিরে আসবে।
- শোনো আমি তো আজ বাদে কাল সুস্থ হয়ে যাবো কিন্তু তোমার পরিক্ষা খারাপ হলে কিন্তু পরে আপসোস করবে
- ঠিক আছে চলে যাচ্ছি
- রাগ করো না প্লিজ
- রাগ করি নি
যাক শেষ মেষ নিরু কে পাঠানো সম্ভব হলো, না জানি পরিক্ষা টা কেমন দিবে, ওর তো সব টেনশন আমাকে নিয়ে, আমার এই অসুস্থতার মাঝে কেমন পরিক্ষা দেবে আল্লাহ ভালো জানে।
.
বেডে শুয়ে আছি, ডাক্টার কিছু চেকআপ করে আবার চলে গেল, মার চোখের কোনে পানি
- বাবা পুলিশে খবর দেই
- না থাক সামান্য ব্যাপার নিয়ে পুলিশে খবর দেওয়ার কি আছে
-সামান্য বলছিস
- বাদ দাও না, তুমি একটু নিরুকে ফোন দাও, ও হোস্টেল পৌছাই ছে নাকি
- ওকে
.
- হ্যা মা
- হোস্টেল এ গেছো
- হুম
দেখি মা আমার কাছে দাও তো, কথাটা বলে মার কাছ থেকে ফোন টা নিলাম।
- কি করো
- ফ্রেস হয়ে বই নিয়ে বসলাম
- রাগ করছো
- নাতো
- আমি জানি তুমি আমাকে ভালবাস, সেটা তোমাকে বলতে হবে না, আমি তোমার চোখের ভাষায় বুঝতে পারি, তুমি যখন এই সব কথা বলো আমি এড়িয়ে যাই কেন জানো, যাতে তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে পড়াশোনা নিয়ে চিন্তা করো, কাল পরিক্ষা শেষে তোমার প্রথম রুগি টা কিন্তু আমি, তুমি যেমন বলেছিলে ডাক্টারি পাশ করে প্রথম আমার চিকিৎসা করবে, আল্লাহ তার ব্যবস্থা করে দিয়েছে
- হুমম, বুঝতে পারছি
- এখন বলো তোমার কি করতে হবে
- ভালো করে পড়তে হবে
- হুমম,,,পড়াশোনা শেষ করে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ো, কেমন, আর রেজাল্ট যদি খারাপ হয় তবে কিন্তু
- হবে না, রাখলাম বাই
- ওকে
মা ফোন টা নাও, একি মা কই। আমাদের কথার মাঝে মা যেন কোথায় চলে গেছে
শরীরে ব্যাথার কারনে রাতে ঘুম টা ভালো হলো না।
মা নিজের হাতে রান্না করে এনেছে আমার জন্য,
- হাত ব্যাথা খাবো কি করে
- তোকে কে খেতে বলছে, আয় আমি খাইয়ে দিচ্ছি
- ওকে দাও
মা নিজের হাতে আমার মুখে খকবার তুলে। মুহুর্তে ছোট বেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। চোখ কোনে পানি জড়ো হয়ে গেল, আসলেই ভালবাসার অপর নাম মা।
- কিরে তোর চোখে পানি কেন
- কিছু না, তুমি ভাত দাও
- নে
বিকালের দিকে নিরু আসলো,
- কেমন হলো পরিক্ষা
- ভালো
- শুধুই ভালো,
- না অনেক ভালো
- গুড
- এখন কেমন বোধ করছেন
- ভালো না, বুকের বাম পাশ টাই একটু ব্যাথা করছে
- কই দেখি, কোথায়
- এই খানে
- ডাক্টার ডাকবো
- তুমি না বললে তুমি আমার চিকিৎসা করবে
- কিন্তু আমার কাছে তো মেসিডিন নাই
- আছে
- কই
- তুমি একবার বুকে মাথা রাখলেই কমে যাবে ব্যাথা
- পারবো না
- প্লিজ একবার
নিরু আমার কথা শুনে চারদিকে একবার তাকিয়ে বুকের উপর মাথা রাখলো, আমি দুই হাতের বাধনে আটকিযে ধরলাম তাকে
- আরে ছাড়ুন কেউ এসে পড়বে তো
- না
- ছাড়ুন বলছি
- না
- দাড়ান ব্যবস্থা করছি
- এই কাতুকুতু দিও না প্লিজ
- কেন এখন কেন
- প্লিজ
- কোনো ছাড় নেই
- আহ ( ব্যাথা পাইছি এমন মিথ্যা অভিনয় করলাম)
- কি হলো
- ব্যাথা পাইছি তো
- কই
- বাম পাশে
- তো
- মেডিসিন লাগবে
- ডাক্টার, ডাক্টার, তাড়াতাড়ি আসেন
- আরে করছো কি.....
নিরু শুধু একটা মুচকি হাসি দিলো....
.
পারিবারিক ভালবাসার গল্প গুলা এমন ই হয়। নিজে কে ভালবাসুন, নিজের ফ্যামিলিকে সময় দিন, ভালবাসাকে খুজে পাবেন।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ