ভালবাসায় তুমি আমি
.
@Confusion
.
সকাল টা যেনো আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে, প্রতিদিনের মতো আজও সব কিছু সাজানো গোছানো থাকলেও বাতাস টা মাতাল। সোন্দর্য টা বৃদ্ধির কারন ও এটায়। মাতাল হাওয়া টা যেন সব কিছু ওলট পালট করে দিতে চাচ্ছে । গাছ গুলো দোল খাচ্ছে, মাঝে মাঝে এক একটা করে পাতা বন্ধন ছেড়ে ঝরে পরছে । সন্ধি বাধছে গিয়ে রাস্তার ধুলো বালির সাথে । নতুন সঙ্গির সাথে ভাব মিলিয়ে দিব্যি উরে বেড়াচ্ছে ।
সব কিছু যেন সোন্দর্যের একটা চক্র।
.
তবে এই সৌন্দর্য টা দেখার বা বোঝার ভাগ্য হয়তো হতো না যদি এখানে এসে বসে না থাকতাম।
বসে থাকার অন্য আরেক টা কারন আছে যদিও, তবে কারনের অনুপস্থিতিতে এখানে অপেক্ষা করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করি। কেমন করে যেন পার হয়েছে যায় সময়টা ।
অপেক্ষার শেষ পান্তে আসে নিরু। হুম সে আসবে প্রতিদিন, আমার টানে না যদিও তবে ফুল কুরাতে অবশ্যয়।
.
আজকেউ ব্যতিক্রম নয়। কলেজের গা ঘেষে একটা মেয়ে আসছে ।
হুম এটায় নিরু। কলেজে আসলে এখানে আসবে । ফুল যে তার অনেক পছন্দ। বিশেষ করে কৃষ্ণচূড়া ।
তবে কয়েকটা ফুল কুড়িয়ে কেমন জানি স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে গেল । দাড়ানোর কারন টা অবশ্য আমি ।
.
কিছু কথা বলার ইচ্ছা ছিলো । কেমনে বলি । ভাবতে ভাবতে বের করে ফেললাম চিরকুট দেব। দিয়েও দিলাম ।
.
নিরু এবার কাগজ টা হাতে নিলো
লেখা ছিলো,
.
বলবো না তুমি রাজকন্যা
তবে বলবো তোমার মধ্যে আছে কিছু অজানা
যার বিশ্লেষণ আমি কখনো করতে পারবো না। .
কাগজ টা পড়ে কি যেনো কি ভাবলো। আর আসে পাশে চিরকুটের মালিক কে খুজলো।
.
আমি যে লুকিয়ে আছি । সেটা তো নিরু জানে না । কাউকে না পেয়ে মুখটা কালো করে চলে গেলো কলেজে। আমিও বের হয়ে কলেজে রওনা দিলাম।
কি ভাবছেন এই নিরুটা কে ?
.
ওকে এক সময় আমিও চিনতাম না, তবে এখন ও আমার সবথেকে বেশি আপন ।
.
আমি আর নিরু এক সাথে এক কলেজে একই ব্যাচে পড়ি।
অনেক দিন হলো কলেজে যাতায়াত করি, কিন্তু ওকে অমন ভাবে খেয়াল করি,
কিন্তু সপ্তাহ খানেক আগে যখন ওকে ফুল কুড়াতে দেখেছিলাম । ঠিক সেই মুহুর্ত টা মনের মধ্যে স্টাচুর মতো গেথে গেছে। এই ভাল লাগাটায় যেন ওকে ভালবাসার প্রধান কারন ।
.
সবাই ক্লাসে বসে আছে, আমি ও এনট্রি নিলাম, ভাবছি সুন্দর করে প্রবেশ করবো, না হুট করে কার যেনো পায়ের সাথে আটকে পড়ে যাচ্ছিলাম, সবাই হেসে উঠলো, নিজেকে সামলে নিলাম। তাকিয়ে দেখি নিরু হাসছে , যেই ধাক্বা দিক না কেন তার জন্য নিরুর এতো সুন্দর হাসিটা বিনামুল্যে দেখতে পেলাম । ধন্যবাদ তো দিতেই হয়।
.
ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য পিছনে তাকালাম। পিছনে তাকিয়ে দেখি, মিস্টার শত্রু মশায়।
.
শত্রু হোক উপকার তো করছো । ধন্যবাদ তো দিতেই হয়। ধন্যবাদ দিয়ে হাটা শুরু করলাম।
বেচারী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল । ক্লাসে সবার হাসি থেমে গেল, ক্লাসের একদম লাস্ট ব্রেঞ্জে বসার অভ্যাস আমার । বসলাম।
.
কিছুক্ষণ পর স্যার এসে ক্লাস নেয়া শুরু করলো। সবার মনোযোগ ক্লাসের দিকে আর আমার মনোযোগ নিরুর দিকে। এমনটা আমার নিত্য দিনের স্বভাব।
নিরুর প্রত্যেক টা মুভমেন্ট আমি খেয়ার করি।
ভালবাসা হয়তো এমনই কারোর একটা জিনিস ভালো লাগলে ধিরে ধিরে সব কিছু ভালো লাগতে শুরু করে। আমার তো নিরুর সব দিক ভালো লাগে । ওর ভালো খারাপ, ভুল সঠিক সব।
.
কলেজ শেষে বাসায় ফিরতে মন চায় না। কেমনে চাইবে বাসায় তো আর নিরু নেই । তবুও যেতে হবে ,
আবার তো দেখা হবে,
.
পরের দিন ঠিক সেই আগের দিনের মতো একটা চিরকুট রাখলাম,
কিন্তু আজ কোনো রেসপনস করলো না এমনকি চিরকুট টা হাতেই নিলো না।
আজ মনটা আমার খারাপ হলো,
.
আমিও যে ছাড়বার পাত্র নয়।
এইভাবে ঠিক একটা সপ্তাহ ওকে চিরকুট দিলাম, তারপর একটা রিপ্লে আসলো
----কে আপনি, আমায় কেনো চিরকুট দেন ---
পরিচয় দিলে তো ধরা পরে যাবো, তাই ফেক পরিচয় দিয়ে কথা বলা শুরু করলাম ।
.
শুরুটা যেন শেষের দিকে নিয়ে যেতে চাই মেয়েটা, শুধু দেখা করতে চায়,
.
দেখা তো করা যাবে না তাই
নিরুকে বললাম , সময় হলে ঠিকই দেখা হবে দুজনের,
.
নিরু বুজতে পারে যে আমি নাছোর বান্দা, তাই আর বায়না করে না।
প্রতিদিন কথা হয় মেয়েটির সাথে ।
.
দুরুত্বটা টা জায়গার থাকলেও নিজেদের মনের দুরুত্বটা একদম সংকির্ন হয়ে গেছে এখস। নিজেদের সকল সুখ, দুঃখের সকল কথা শেয়ার করি দুজনে ।
,
এতোদিন নিরুর এখানে আসার কারন ফুল ছিলো কিন্তু এখন উল্টো । কারন টা আমি । নিরু এখন আর ফুল কুড়ায় না কুড়াই চিরকুট।
.
এখন সে আমার জন্য প্রতিদিন একটা করে চিরকুট রেখে যায় , চিরকুটের মধ্যে যে কতো রকমের প্রশ্ন কত রকমের কথা লেখা থাকে কি বলবো, প্রতিদিন ওর প্রত্যেক টা প্রশ্নের উত্তর দিয় ।
.
আমাদের মাঝের দুরুত্বটা এতো তাড়াতাড়ি কমে যাবে বিশ্বাস ই করতে পারি নি। নিজেদের মনের কথা শেয়ার না করলে এখন আর ভালোই লাগে না ।
সব কিছু ঠিক ই চলছিল কিন্তু হঠাৎ কেন জানি সব কিছু উলট পালট হয়ে গেল,
নিরু আর এখানে আসে না, কোনো চিরকুটের উত্তর দেয় না। কেন এমনটা করছে বুজতে পারলাম না । কোনো সমস্যা হলো নাতো
.
খোজ খবর নিয়ে যা শুনলাম তাতে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো,
আমার শত্রু নাকি নিরুকে বলেছে চিঠি টা প্রতিদিন ও ওকে দেয়, নিরু এমনিতেই চিঠির অচেনা বালকের উপর দুর্বল ছিলো, তার উপর আমার শত্রু মশায় দেখতে মাশআল্লা।
সব মিলিয়ে নিরু কোনো কিছু না ভেবে সব কিছু একসেপ্ট করে নিয়েছে।
খবর টা শুনে নিজেকে এতো টা অসহায় লাগছিলো কি বলবো, চোখের কোনে জল গড়াগড়ি খাচ্ছিল।
এভাবে নিরুকে হারিয়ে ফেলবো ভাবতেও পারি নি।
.
একবার ভাবলাম নিরুকে সব খুলে বলি,
কোথা থেকে যেনো পিছুটান বাধ সাধলো,
কি হবে এখন আর বলে, নিরু তো আজ সব কিছু মেনে নিয়ে দিব্যি নিজের দিনকাল পার করছে । সুখেই তো আছে, যে সুখে আমি রাখতে চেয়েছিলাম সেই সুখে না হয় সে অন্যে অারেক জনে সাথে অাছে। থাক না ।
.
আমি না হয় কষ্টেই থাকবো, ভালবাসার মানুষের জন্য সব কষ্ট সহ্য করা যায় ।
.
নিজেকে কোনো মতো সামলে নিলাম।
এখানে থাকলে অনেক কষ্ট হবে তাই মায়ার স্থানটা ছেড়ে চলে যায় অনেক দুরে, অনেকটা দুরে, না ফেরার দেশে না, তবে নিরুর থেকে অনেক দুরে, যেখানে কোনো স্মৃতি থাকবে না নিরুর ।
.
.
2 মাস 18 দিন পর নিজেকে অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছি তবুও মাঝে মাঝে নিরুর কিছু স্মৃতি বুকের ভিতর ত্রিশুলের মতো বেধে, পারি না তখন নিজেকে সামলাতে । মনে হয় যদি একবার গিয়ে নিরুকে বলতে পারতাম , কেন তুমি বুঝতে পারলে না যে আগন্তুক টা আমি ছিলাম।
.
সেই একটায় পিছুটান । কষ্ট করে কষ্টকে ভুলতে হয়, খুব হারে হারে শেখা হয়ে গেল বিষয়টা।
.
তিন মাস পর ,
নিজেকে আজ একটু শান্ত লাগছে, নিরুকে হয়তো সম্পুর্ণ ভুলতে পারি নি, তবে আগের মতো আর আমায় ব্যাথা দেয় না ।
.
সুন্দর এই অনুভুতি টাকে প্রাকৃতির সাথে শেয়ার করতেই বের হয়েছি রাস্তায়
.
পিচধালা রাস্তার উপর দিয়ে পা গুনে গুনে হাটছি , আজ কেমন জানি নিজেকে ততোটাও একা লাগছে না যতোটা আগে লাগতো ।
খুব বেশি হাটতে পারলাম না, থমকে দারালাম
সামনের কোনো এক অচেনা মানুষকে দেখে,
.
আসলেই অচেনা কেউ নাকি, আমার সব থেকে চির চেনা কেউ ,
.
সামনে এগোবো সে শক্তিটুকু নেই, চুপচাপ দাড়িয়ে আছি,
সামনে যে মানুষটা দাড়িয়ে আছে সে আর কেউ না নিরু,
নিরু এখন, এখানে কি করে সম্ভব,
নিরু : খুব ভালো আসোছ তাইনা ।
আমি : হুম, চেষ্টায় আছি কিন্তু তুমি আমার সাথে এমন করে কেন কথা বলছো।
নিরু : তো, তোর সাথে কেমন করে কথা বলবো । তুই জানোস তুই আমাকে কতোটা কষ্ট দিয়েছিস।
আমি : আমি তোমাকে কেমনে কষ্ট দিলাম ?
নিরু : কেমনে , না । কেনো চিঠি লিখতি আমায় ।
আমি : ভালবাসতাম বলে
নিরু : তারমানে এখন আর ভালো বাসোস না। আমি : বাসি, কিন্তু বেসে লাভ কি ? তুমি তো অন্য একজন কে ভালবাসো ।
নিরু : আমি তো ভালবাসি তাকে যে আমাকে প্রতিদিন চিঠি লিখতো , যার জন্য প্রতিদিন ছুটে আসতাম , আমি সেই আগন্তুকের পাগল যে আমার জন্য কবিতা লিখতো ।কিন্তু কখনো ভাবি নি এমন ভাবে ভুল একটা মানুষের সাথে সম্পর্কে জরিয়ে পড়বো ।
আমি : কই সেই আমার শত্রু ?
নিরু : ওর সাথে ব্রেকাপ করেছি আজ আড়াই মাস হলো ।
আমি : কেনো
নিরু: আমি কি ওকে ভালবাসি নাকি আমি তো ভালবাসতাম তোকে, ওর সাথে রিলেশনোর কিছুদিন পরই তো বুজতে পারি যে এটা আমার মনের মানুষ হতে পারে না। কেমনে হবে তুই চিঠিতে তোর সম্পর্কে যা যা বলেছিলি ও ছিলো সেই সব কিছুর উল্টো। 15 দিন পর আমি পুরোপুরি বুজে ফেলি ও আসলে আমার সাথে চালাকি করছে, তারপর ওর কাছ থেকেই জানতে পারি তোর কথা।
( ভেতর টা কেমন যেনো করছো দাড়িয়ে থাকতে পারছি না )
তাই নিরুকে বললাম চলো কোথাও বসি আমার দাড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে ।
নিরু : চল ।
....
...
..
.
তারপর কেমনে আমার বাসার খোজ পেলে
নিরু : ব্রেকাপের ঠিক পর পরই তোর ঠিকানা নিয়ে তোর বাসায় গেলাম, কিন্তু তোকে সেখানে পেলাম না । আজ আড়াই মাস কষ্ট করেছি, কোথায় না গিয়েছি তোকে খুজতে, যে যেখানে তোকে দেখেছে সেই প্রত্যেকটা জায়গায় আমি গিয়েছি। শেষমেষ খুজে খুজে তোকে পেলাম কোথায় আমার নিজের গ্রামের বাড়িতে ।
নিরু : তুই এমন আহাম্মক কেন ছিলি? একবার গিয়ে কি সত্যি কথাটা বলতে পারতি না ।
আমি : পারতাম
নিরু : তো কেন বলোস নি
আমি : বলে লাভ হতো কি কোনো?
নিরু : হতো না হয়তো । তবে একবার চেষ্টা তো করতি?
আমি : সব ই বিফলে যেতো তখন।
নিরু : হুমম, তবে তুই জানোস তুই আমাকে কতোটা কষ্ট দিছোস।
আমি : এখনো রাগ কমেনি ।
নিরু : না
আমি : কি করলে কমবে ?
নিরু : তোকে মারবো ?
আমি : মারো
নিরু : না মারবো না যাও?
আমি : কেন?
নিরু : তোমাকে মারলে কষ্ট টা যে আমারই লাগবে ।
আমি : বাহ বা, এতো ভালবাসো
নিরু : হুম, এতো ভালোবাসি, তা নয়তো কি তোকে এতো কষ্ট করে খুজে বের করতাম।
আমি : হুম তাও ঠিক । কিন্তু যদি আমায় না পেতে তবে
নিরু : সারা জিবন খুজতাম?
আমি : সত্যি?
নিরু : অবশ্যয়।
আমি : তুমি পারোও,
নিরু : হুম পার....
শোনো না তোমায় নিয়ে একটা কবিতা লিখছি শুনবা
নিরু : হুম
---যদি চাও তোমার ইচ্ছে হবো
----যদি দুর হারাও তোমার সাথি হবো
----যদি আকাশ হও তো তোমায় ছুয়ে দেব
---- যদি আমায় ভালোবাসো তো সারাজিবন তোমায় ভালবাসবো
নিরু : অনেক সুন্দর । সত্যিই বলতে আমি তোমার কবিতার প্রেমের পড়েছিলাম।
তবে সব থেকে বেশি ভাললাগছে যে
অতঃপর তোমায় পেলাম
নিজেকে সামলাতে পারলাম না
অনেক দিনের পুশিয়ে রাখা কথাটা বলতে হবে
তাই নিরু সামনে গিয়ে হাটু গেরে চিৎকার করে
আই লাভ ইউ নিরু
নিরু : আই লাভ ইউ টু ।
সত্যিকারের ভালবাসা গুলা হয়তো এমনি হয় শতো কষ্টকে জিতেই তবেই ভালবাসার দারপান্তে পৌছায় ।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ