4935 (2)

বন্ধুত্ত ২  ( Last Page) 
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়) 
.
নিরুর লাইফ  কেমন যেন এক অসহ্য যন্তনা ময়, ভালবাসার মানুষ টা তার সামনে দিয়ে অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করে বেড়ায় কিন্তু সে পারে না তাকে কিছু বলতে, না পারে সইতে।
এমন এক পৃথিবী তার কাছে অজানা। তবুও নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে সে।
.
চুপচাপ রাস্তা দিয়ে হাটছিলো সে, কে যেনো ডাক দিলো তাকে,
- জ্বি বলুন
- আমাকে চিনতে পারো নি
- নাতো
- আরে ভার্সিটি তে ডিবেডিং ক্লাবে একসাথে ছিলাম তো আমরা
- ও ও তুমি সেই আনাফ
- হুমম চিনতে পেরেছ তাহলে
- হুমম, তা কেমন আছো
- ভালো,  তুমি
- ভালো
- ডিবেডিং তো আবার শুরু হচ্ছে,  তুমি কিন্তু আমাদের টিমে থাকবে কেমন
- আবার শুরু হচ্ছে নাকি
- হুমম,,,  তুমি থাকছো তো
- দেখি  সময় আসুক তো
- ওকে তোমার নাম্বার টা দাও
- ফোন দাও

নিরু আনাফ কে নাম্বার টা দিয়ে বাসায় ব্যাক করলো।

কয়েকদিন ভালোই চলছিল সবার দিনকাল,

মাহির ছিলো রোজ কে নিয়ে, অন্য দিকে আনাফ ছিলো নিরু কে নিয়ে।
নিরু বিষয় টা বুঝতে পারতো কিন্তু ততটা গুরুত্ব দিতো না।
আনাফ কে সময় দিতো তবে সেটা লিমিট এর ভিতর।
.
মাহির আর রোজ এর ব্যাপার টা ছিলো সম্পুর্ন ভিন্ন। সুন্দর চলছিল তাদের মধ্যের সম্পর্ক।

তিন দিন পর,

মাহির রাস্তা ধরে হেটে যাচ্ছে, মন টা তার অনেক খারাপ।

সকাল থেকে রোজ কে অনেক বার ফোন দিয়েছে ব্যস্ত সে,
কারন কি রোজ তো এমন ছিলো না।

আনমনে হাটছে সে,

হঠাৎ ই তার পৃথিবী টা থমকে দারালো, সামনে তাকিয়ে অবাক সে, রোজ অন্য একটা ছেলের সাথে রিক্সায় ঘুড়ছে,
মাহির দৌড়ে গিয়ে রিক্সার সামনে গিয়ে দাড়ালো,
রোজ রিক্সা থেকে নামলো,
- এটা কি ছিলো,  আর এই ছেলেটা কে
- ওর সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে
- মানে কি আমি কি তাহলে
- তুমি কি মানে যাস্ট আমার ফেন্ড
- যাস্ট ফেন্ড
- হুমম,,  তার বাইরে কি
- না আর কি হতে পারি আমি,,, দোষ আমার ই ছিলো,  সরি

কথাটা বলে হাটা দিলো মাহির,  হাটতে গিয়ে রিক্সার সাথে ঢাক্কা খেয়ে হাতটা কেটে দিলো, মাহির তখন ও কিছু বুঝতে পারে নি, বাসায় এসে যখন রুমের দড়জা খুলবে তখন দেখতে পায় তার হাত কেটে রক্ত বের হচ্ছে ।
হাতে ব্যান্ডিস করলো ডাক্টারের কাছ থেকে ।
রাতে নিরুকে ফোন দিলো কিন্তু নিরুর ফোনও ওয়েটিং। নিরুর ফোন তো ওয়েটিং থাকে না, তবে আজ কেন।  মেজাজ টা গরম হয়ে গেল মাহিরের ফোন বন্ধ করে  একটা ঘুম দিলো।

বাসার থেকে বের হলো পরের দিন বিকালে,

ফুটপাত ধরে হাটছিল সে,
কে যেন ডাক দিলো তাকে, মাহির কোনো ভ্রুক্ষেপ করলো না। আবার ডাক দিলো, পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রোজ ডাকছে, কেন যেন দাড়াতে মন চাচ্ছে না তবুও থামলো।
- হুমম বলো
- হাতে কি হয়েছে
- তোমার না জালেও চলবে
- হুমম, রাগ করে আছো আমার উপর কিন্তু তোমার এই রাগের কোনো ভ্যালু নেই
- জানি
- মাহির  তুমি  হয়তো আজো বুঝতে পারো নি তুমি কাকে ভালবাসো। সারাক্ষন যার নামটি মুখ দিয়ে জব, যে মানুষটা তোমাকে ছায়ার মত ঘিরে রাখে, হুমম মনে রেখ তুমি তাকেই ভালবাস কিন্তু বুঝতে পার নি, আমি তোমার লাইফ থেকে সরে গিয়েছে কারন কি জানো, কারন তুমি আমার জন্য নয় তুমি নিরু জন্যই এই পৃথিবীতে এসেছো, একটা জিনিস চিন্তা করে দেখ তো কেন আজো নিরুর কোনো বয়ফেন্ড নেই।
বাসায় গিয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখবো সব ই তোমার আয়ত্তে চলে আসবে।
রোজের কথা গুলে শুনে নিরবে দাড়িয়ে থাকলো মাহির, তার মাথা কাজ করছে না, কি করবে সে
রোজ বাই বলে চলে গেল, মাহির বাসায় চলে আসলো।
ঠান্ডা মাথায় মাহির যখন ভাবে তখন পিছন ফিরে যায় সে অতিতে, এতগুলো নিরু কখনো তার উপর রাগ করে নি, তাকে ছায়ার মত করে রেখেছে, চিন্তা চিন্তা বাদ দিয়ে সবসময় সে মাহিরের চিন্তা করেছে। বিষয় গুলো আর যাই হোক ভালবাসার বাইরে কিছু না।
যেভাবেই হোক নিরুকে বলতেই হবে মনের কথা।

পরেরদিন,

নিরুকে কথা গুলো বলার জন্য মাহির বাসা থেকে বের হলো মাহির।  কিন্তু একি নিরু দেখি অন্য একটা ছেলের সাথে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে ,  কেন নিরু কি তাহলে নতুন রিলেশন করলো,  হতে পারে  , নিজেকে লুকিয়ে নিলো মাহির।
বাসায় গিয়ে দড়জা বন্ধ করে শুয়ে পড়লো, নিজেকে দোষ দিতে থাকলো, আজ হয়তো তার নিজের জন্যই নিরুকে সে হারিয়ে ফেললো ,  মনে মনে মাহির বলে অনেক দেরি করে ফেললাম।

পরের দুদিন মাহিরের সাথে নিরুর দেখা হলেও মাহির নিরুর সাথে কোনো কথা বলে না, কি হলো হঠাৎ মাহিরের বুঝতে পারে না নিরু,  কেন তাকে এত এভোয়েট করে মাহির ।
পরের দিন, রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখে নিরু গিয়ে মাহিরের পাশে বসলো,
- হাতে কি হয়েছে
- তোকে বলার কোনো ইচ্ছে নেই
- কেন নেই
- এমনি,
-  ওকে থাক তাহলে আমি যায়
নিরু উঠে যেতে চাইলে মাহির হাত টেনে নিয়ে বসায় তাকে
- কি
- তুই কি বুঝিস না যে আমি একটা বলদ
- নাতো তুই তো মানুষ ই ,  তবে তোর দোষ একটাই তুই মানুষ চিনতে ভুল করস
- তো এই পাগল টাকে একটু মানুষ চেনা শিখাতে পারোস নি
- পারতাম কিন্তু চেষ্টা করি নি
- কেন করিস নি, করলে তো আর আজ তোকে ছেড়ে অন্য কোনো মেয়ের পিছনে ঘুড়তে হতো না
- হুমম তা ঠিক, কিন্তু আমি জানতাম, একদিন তোকে ঠিকই আমার কাছে  ফিরে আসতে হবে আর আমি শুধু সেই মুহুর্তের জন্য দেরি করছিলাম।
- তাই না
- হুমম কথাটা বলতে গিয়ে নিরু মাহিরের হাতটা ধরলো
- ছাড় ছাড় ব্যাথা পাচ্ছি তো
- ও ও সরি রে সরি
- ব্যাথা দিয়ে এখন সরি না
- তো কি করবি ব্যাথা দিবি দে
- দিবোই তো
মাহির নিরুকে একটা চিমটি দিলো
- মারে,  শয়তান, যা তোর সাথে কথা নেই
- সরি
- ইটস ওকে
- চল একটু হাটি
- চল
- একটা কথা বলি, এখন তো আমরা কাপল তো আমরা তো তুমি আমি বলতেই পারি তাইনা
- আমি পারবো না, তুই পারলে
- চলনা চেষ্টা তো করে দেখি
- দেখ, দেখি কেমন পারোস তুই
-  তুমি কি আমাকে  ভালবাসো ( থেমে থেমে) 
- হুম আমি তোকেই ভালবাসি ( থেমে থেমে) 
- এই তো পারছিস,
- আমি পারবো না
- ওকে আমি ও পারবো না
- অই দেখ মেয়ে টা কি সুন্দর রে
- কোন মেয়েটা
- অই যে রিক্সা দিয়ে যাচ্ছে
- তবে রে