āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ā§Šā§Ļ āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž

4939

গল্প ::নিরু
Mahir
.
নিরু : কই রে  তুই?
মাহির : এইতো শুয়ে আছি( হাল্কা কান্না কন্ঠে)
নিরু : কিরে কি হয়ছে ,, তোর গলাটা এমন  শোনাচ্ছে কেন?
মাহির : কই না তো মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম তো? 
নিরু : না ? আমার মনে হয় কিছু গরবর হয়েছে । কি হয়ছে বল  ?
মাহির : কিছু হয় নাই বাদ দে?
নিরু : অাচ্ছা বাদ দিলাম । আর মনে আছে তো দশটায় রেডি থাকিস,  আমি তোকে তোর বাড়ির  সামনে থেকে পিকআপ করবো
মাহির : ওকে
নিরু :  বাই অনেক Busy
মাহির : আচ্ছা
..
কলটা কেটে দিয়েছে মাহির কিন্তু রেষটা যেনো রয়ে গেছে , চোখের পানি অজোরে পড়ছে কোনো ক্রমেই আটকাতে পারছে না মাহির ।
অতিত গুলা কেন যেন আজ বেশি বেশি উকি দিচ্ছে
এক সপ্তাহ আগেও যে  নিরুর সাথে সারাদিন ঘুড়তো,  আড্ডা দিত মাহির  কিন্তু last akta weeks নিরুর সাথে কোনো কথা  বলা,  আড্ডা দেওয়া  নেই বললেই চলে ?
.
কেমন করে সব কিছু চেন্জ হয়ে গেলো, যেনো একটা চোখের পলক বন্ধ হলো আর খুললো ।
অতিতের  হাহাকারের নিস্তব্ধতা মাহির কে ঘিড়ে রেখেছে।  চিৎকার করে বলতে চেয়েও মাহির পারছে না  নিরুকে কিছু বলতে । বলার ক্ষমতাটাও  তার আর নেই।
.
মাহির কখনো ভাবতে পারে নি,  তার জিবনেও একদিন প্রেম আসবে। ছোট বেলা মা বাবা মারা যায়,  তার পর থেকেই কষ্ট শুরু মাহিরের।  এক চাচার কাছে থেকেছে শুধু,  তবে নিজের খাবারের ব্যবস্থা নিজেরই করতে হয়েছে, কখনো হোটেল,  কখনো গ্যারেজ,  আর এখন টিউশনি।    এতো কিছুর মাঝেও নিজের পড়াশোনা টা বন্ধ করে নি। সব সময় পরিক্ষা ভালো করতো,  বৃত্তি ও পেয়েছে অনেক।  বৃত্তির টাকা গুলো সে জমিয়ে রেখেছিলো, সেই টাকায় ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে। এমন একটা লাইফে প্রেম সে তো অসম্ভব।
.
কিন্তু ভার্সিটিতে এসে সেই কল্পনাকে হার মানিয়ে দিয়েছে নিরুর সান্নিধ্যে।  নিরুর সাথে দেখা হওয়ার প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত মাহির শুধু তাকে দেখে মুগ্ধ হয়েছে কখনো তার কাজ বা তার প্রতি কোনো অনিহা আসে নি। নিরুর জন্য কখন যে ভালবাসা কাজ করতে শুরু করেছে মাহির নিজেও বুজতে পারে নি।  কিন্তু নিয়তির খেলায় আজ সে পরাজিত।    কখনো মাহির ভাবতে পারে নি তার প্রথম ভালোবাসাকে সে নিজে সাক্ষী থেকে হারাবে। 
.
সাত  দিন আগে নিরুর কল এসেছিল মাহিরের কাছে
>> শোন মাহির আগামী সপ্তাহ আমি আর রাজ বিয়ে করছি কাজী অফিসে।  তুই কিন্তু থাকিস, সাক্ষী দরকার তো একটা।
মাহির শুধু কষ্ট করে হুমম টা বলে ছিলো,  কান্না ছেলেদের শোভা না পেলেও মাহির কেদেছে, অনেক কেদেছে।
একটা সপ্তাহ সে ঘোড়ের মধ্যে দিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে,  খাওয়া দাওয়া নেই, গোসল নেই টিউশনি যাওয়া বন্ধ। সব কিছু বাদ দিয়ে রুমে বসে থাকতো।   এক সপ্তাহ বাদে নিরু ফোনের জবাব দিতেই মুখ দিয়ে কথা বের হয়ছে মাহিরের।  এতোদিন শুধু চোখ কথা বলেছে।
.
অনেক স্মৃতিই আজ বন্ধ দরজায় শেষবারের মতো করা নাড়ছে
.
মাহির বেড থেকে উঠলো,  ব্রাশ টা হাতে নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো,  আয়নার সামনে দাড়াতেই মনে পড়ে গেল নিরুর সাথে দেখা হওয়ার প্রথম  দিন টা,
.
নিরুর সাথে প্রথম দেখা টা কেমন যেন ভিন্ন রকমের ছিলো
.
ভার্সিটি তে প্রথম দিনেই র্যাগিং এর স্বীকার হয় মাহির, কিন্তু কোথা থেকে যেন একটা মেয়ে এসে হাজির
.
>> এই যে
>> কি চাই
>> এখানে কি চলছে?
>> সেটা কি তোমাকে বলতে হবে নাকি । তুমি ছোটো মানুষ তুমি বুজবে না চলে যাও
>> তোমরা কি আমায় চিনো?
>> চেনার তো  কোনো দরকার দেখছি না
>> দরকার না থাকলেও হয়ে যাবে । আমার বাবার নাম কি জানো
>> কি মুজিবর সাহেব নাকি
>> না ,, আনিসুর রহমান
.
সরি আপু আমরা আপনাকে চিনতে পারি নাই, , সরি সরি
.
সবাই কেমন যেন আমতা আমতা করে চলে গেলো । হয়তো মেয়েটার বাবা অনেক পাওয়ারফুল কেউ।
চিন্তার অবসান তার ডাকেই
>> নাম কি
>> মাহির
>> কোথায় থাকো
>> ধানমন্ডি
> ওকে যাও , আমার মনে হয় তোমার আর কোনো সমস্যা হবে না
> >> ধন্যবাদ
..
চলে আসে মাহির
.
এখন ভার্সিটিতে অনেকেই তাকে ছালাম দেই,  অনেক সম্মান করে
.
ভালোই যাচ্ছিল দিন কাল

একদিন রাস্তা দিয়ে হেটে বাসায় যাচ্ছিল মাহির
হঠাৎ কে যেন ডাক দিল
.

পিছনে তাকিয়ে,
.
>> একি আপনি
>> হুম
>> কি হয়ছে গাড়ির
>> হটাৎ করে গাড়ি বন্ধ হয়ে গেছে, এখন আর স্টার্ট নিচ্ছে না।
>> ওকে আমি দেখছি,
.
কিছুক্ষন পর
.
>> নিন আপনার গাড়ি ঠিক হয়েছে
>> তুমি কি প্রফেশোনাল নাকি
>> না, তবে টুকটাক কাজ পারি
>> ওও ধন্যবাদ
>> আমি যাই
>> ওকে
..
>>তোমার বাসা কি  সামনে  ?
>> হুম
>> তাহলে  গাড়িতে উঠো আমি তোমায় ড্রপ করে দিচ্ছি
>> না না সমস্যা নাই
>> আরে উঠো তো
.
গাড়িতে,
.
>> নাম কি তোমার ?
>>মাহির
>> ও সরি এর আগে তো একবার বলছিলে
>> হুম
>> কি এখন কলেজে কেউ সমস্যা করে নাতো
>> না
>> তুমি তো অনেক সার্থপর
>> কেন
>> একটা ধন্যবাদ ও দিলে না
>> কেমনে দিবো,  আপনার সামনে দাড়াতেই ভয় করে
>> কেন ভয় করে
>> ভার্সিটির বড় বড় ভাই রা যেখানে ভয় পায় সেখানে আমি ভয় পাবো  না কি বলেন
.
>> হুম, তাহলে এখন ও কি ভয়ে আছো নাকি
>> অল্প
.l
>> ঔইতো সামনেই আমার বাসা
>> ড্রাইবার সাহেব  সাইট করুন তো
>> বাই
.
আলাপ চারিতার সমাপ্তি না হলেও গাড়ি থেকে নেমে আসে মাহির,
একটা ধন্যবাদ দিয়ে বাসায় চলে যায়
..

কিছুদিন পর মাহির বাসার সামনে এসে হাজির নিরু,
দাড়োয়ান দিয়ে ডাক দেয় মাহির কে,
মাহির আসে,
.
>> একি আপনি, গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে নাকি
>> না, তোমায় নিয়ে ঘুড়তে যাবো
>> আমায় নিয়ে কেন?
>> আমার তেমন কোনো ফেন্ড নাই তাই
>> আমিও তো আপনার ফেন্ড না
>> ফেন্ড না ভাবলে কি আসতাম
>> কি বলেন....
>> এখন তর্ক না করে তাড়াতাড়ি চেন্জ করে আসো
.
>> অনেকটা অবাক হয়ে মাহির চেন্জ করে আসলো
.
>> কোথায় যাবেন?
>> গাড়িতে বসো
>> ওকে
>> তুমি আমাকে তুুমি করে বললে খুশি হবো
>> ওকে চেষ্টা করবো। যাবেন কই
>> লং ড্রাইভ এ
>> ওকে । আপনার নাম তো নিরু
>> হুম,  সুন্দর না নামটা
>> হুম, কে রাখছে ।
>> আম্মু
>> একা একা আপনাকে সরি সরি তোমাকে বাসা থেকে বের হতে দেয় ?
>> না তবে আজ সবাই কে ফাকি দিয়ে চলে আসছি,
>> ভাইভার কে বললে তো ঘুড়িয়ে নিয়ে আসতো 
.
>> তোমার কি মাথা খারাপ আমি ডাইভারের সাথে লং ড্রাইভে যাবো আর গেলেও লাভ কি,  সে গাড়ি চালাবে আর আমি সিটে বসে বসে হাওয়া খাবো
.
>> হুম তা ঠিক,  তা যাবে কোন দিকে
>> কোথায় যাওয়া যায় বলো তো
>> দিয়া বাড়ির দিকে গেলে ভালো হয়,  একদম কোলাহল মুক্ত জায়গা তাছাড়া অনেক কাশফুল আছে
>>ওকে
কথা বলতে গিয়ে হটাৎ
নিরুর খোলা চুলের দুলনি খেয়াল করে  মাহির,  এতো কাছ থেকে কখনো একটা মেয়েকে খেয়াল করে নি মাহির ।  আসলে সুযোগ হয়নি,
>> কি দেখো
>> হুম ... না কিছু না
>> আমার চুলগুলো অনেক সুন্দর তাইনা
>> আমি কিন্তু তোমার চুলের দিকে তাকিয়ে ছিলাম না
>> আমি কি বলছি তুমি আমার চুলের দিকে তাকিয়ে আছো, তোমায় বলছি কেমন দেখতে তাই বলো
>> সত্যি বলতে অনেক সুন্দর
>>হুম, আম্মাও তাই বলে।
>> তোমার মা আর কি কি বলেছে
>> আরো অনেক ধিরে ধিরে সব বলবো
>> ওকে
>>নামো এবার গাড়ি থেকে
>> কেন
>> আমরা এসে গেছি তো
>> খেয়াল করি নি
>> কেমনে করবে তোমার খেয়াল তো আমার দিকে
অনেকটা লজ্জায় নিজেকে গুটিয়ে নিলো মাহির
.

3

গাড়ি থেকে নেমে কিছুদুর হাটাহাটি করলো মাহির নিরু । কিন্তু একটা প্রজাপতি দেখে তার তার পিছু দৌড়াতে  শুরু করলো নিরু
.
মাহির অবাক হয়ে দেখছে, নিরুকে যেন একটা শিশুর মতো লাগছে
.
নিরু অনেক দৌড়েও প্রজাপতি কে ধরতে পারলো না,
>> কি হলো মন খারাপ কেন
>> ধরতে পারলাম নাতো
>> ধরতে পারলে কি করতে
>> নিয়ে যেতাম বাসায়। আমার প্রজাপতি দেখতে অনেক ভালো লাগে
>> ওও, ধরতে তো পারলা না এখন আর মন খারাপ করে লাভ নেই
>> চলো সামনে যাই
>> সামনে ওই যে ফুসকার দোকান ফুচকা  খাবো
>> ওকে চলো
.
>>মামা অনেক ঝাল দিয়ে একটা আর তুমি
>> না আমি খাবো না
,
এইজে লন আপনার ফুচকা
>> হুম দিন
.
নিরু ফুচকা হাতে নিয়ে খাওয়া শুরু করলো
>>মামা পানি দেন তো
>> আফা পানি তো আনতে গেছে একটু দেরি করতে হইবো।
মাহির নিরুর দিকে তাকিয়ে দেখে নিরুর
চোখ দিয়ে প্রায় পানি বের হবার মতো অবস্থা
>> এক মিনিট ওয়েট করো আমি পানি আনছি
মাহির একটা দৌড় দিয়ে কোথা থেকে যেন হাপাতে হাপাতে এক বোতল পানি নিয়ে আসলো
>> এই নাও
>> কই থেকে আনলা পানি
>> কোথা থেকে আনছি শুনে আর কি করবে তুমি পানি খাও
.
খাওয়া শেষে দুজন আর কিছুক্ষন ঘুড়লো তারপর বাসার দিকে রওনা করে
.
নিরু
>> তোমার নাম্বার টা সেভ করে দাওতো
>> ওকে
.
কিছুক্ষন পর বাসা চলে আসলো মাহিরের
>> বাই
>> বাই  বাই
.
আজ প্রথম বার কোনো মেয়ের সাথে ঘুড়লো মাহির। বাসায় এসে অনেক ক্লান্ত লাগলো তাই ঘুমিয়ে গেল।
.
রাত 9:12
নিরুর ফোনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল মাহিরের।
.
>> কি করো
>>ঘুমিয়ে ছিলাম
>> ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিও?
>> ওকে,  কিন্তু তোমার বাসায় কোনো সমস্যা হয় নি  ??
>> সমস্যা বলতে একটু বকা দিয়েছে  , তবে আমি একটু মিথ্যা বলে পাশ কাটিয়ে নিয়েছি ।
>>  ভালো,
>> ওকে বাই,
>> বাই
.
ফোন টা রেখে খেয়ে দেয়ে আবার ঘুমিয়ে পরলো মাহির।
.
পরের দিন কলেজ ক্যাম্পাসে বসে আছি। 
কোথা থেকে যেনো নিরু এসে হাজির।
>> কেমন আছো ?
>> ভালো তুমি ?
>>ভালো,   কি করো?
>> এইতো বসে আছি।
>> আমি বসতে পারি।
>> অবশ্যয়
>> একা কেন ফেন্ডরা কই তোমার
>> আমার ভার্সিটিতে তেমন কোনো ফেন্ড নাই।
>> গালফেন্ড
>> সেটার চিন্তা কখনো আসে নি মাথায়।
>> ভালো, চলো
>> কই
>> আরে আসোই তো
নিরু মাহির কে নিয়ে তার বাবার কাছে গেলো
>> এটা দেখি প্রফেসর রুম
>> হুম, বসো।  আমি আসছি।
কিছুক্ষন পর নিরু আসলো, 
>> কার কাছে গিয়ে ছিলে
>> আমার বাবা আনিসুর রহমান
>> আ..আনিসুর রহমান ই তাইলে তোমার  বাবা।
>> ভয়ে কিছু নেই চলো ক্লাসে যায়
>> নিরু ওর ডিপার্টমেন্ট এ চলে গেলে আর আমি আমার
.
নিরু কেনো মাহিরের কাছাকাছি থাকতে চাই সেটাই মাহিরের মনে আচর তৈরী করে।  মাহির ক্লাস করে বের হয়। তখনই নিরুর ফোন,
.
>> ভার্সিটি গেইটের সামনে দাড়িয়ে আছি তাড়াতাড়ি এসো
>> ওকে

মাহির চলে যায় গেইটে,  গিয়ে দেখে নিরু দাড়িয়ে আছে

.
>> ফুসকা খাবা
>> না তুমি খাও আমি ফুসকা খায় না
>> একদিন খেয়ে দেখো না
>> না খাবো না
>> খাও খাও, মামা দুই প্লেট ফুসকা দিন তো।
অনেক জোড়াজুড়িতে খেতেই হলো মাহির কে
খাওয়া দাওয়া শেষে নিরু মাহির কে বাসায় ড্রপ করে দিলো
.
ফুসকা টা যে তার পেটে হজম হবে না সেটা মাহির জানতো  তাইতো বাসার আসার পর তাকে গুনে গুনে ৭ বার বাতুরুমে যেতে হলে। প্রাকৃতিক কাজ শেষ করে বেডে শুয়ে আছে মাহির। নিরু ফোন দিলো
>> কি করো
>> কিছু না।
>> ডিনার করছো
>> না তুমি
>> হুম
>> কাল ভার্সিটিতে একটু আগেই চলে এসো।
>> কেনো
>> দরকার আছে রাখি ভালো থেকো আর সময় মত চলে এসো
>> ওকে
পরের দিন সকালে মাহির ভার্সিটিতে একটু আগেই চলো আসলো,  এসে দেখে নিরু বসে আছে পুকুর পারের গাছটার নিচে।
>> হাই নিরু
>> হাই মাহির,  বসো
>> কি বলবা বলো
>> কিছু না এমনি গল্প করার জন্য ডেকে আনলাম
>> এটা কিছু হইলো আমি সকাল সকাল খাওয়া দাওয়া না করে চলে আসলাম।
>> আমি ও খাই নি চলো একসাথে খাওয়া দাওয়া করি
খেতে খেতে নিরু মাহির কে প্রশ্ন করলো একদিন আংকেল আন্টির সাথে দেখা করাও না
>> নেই তারা
>> নেই মানে
>> নেই মানে নিজেদের দায়িত্ব পালনের ভয়ে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে
>> সরি,,,,
>> ইটস ওকে।
>> তুমি কি বাসায় একাই থাকো
>> হুম।
>> তোমায় একটা কথা বলি।  রাগ করবে না তো
>> না বলো
>> এটা নাও
>> কি এইটা
>> তোমার জন্য গিফট

4
.
মাহির প্যাকেট টা খুলে দেখে ভিতরে দুইটা শার্ট আর দুইটা প্যান।
>> আমি এটা নিতে পারবো না
>> প্লিজ এটা আমি তোমার জন্য কাল পুরো মার্কেট ঘুড়ে ঘুড়ে কিনেছি,  প্লিজ রাখো।
>> আমি এটা নিবো তবে কখনো পরবো না।
>> পড়বে না কেন
>> এগুলা আমায় শোভা পায় না
>> ওকে তোমার ইচ্ছা না হলে পরো না।
.
সেদিনের মতো ভার্সিটি শেষে বাসায় চলে এসেছে মাহির।
মাহিরের মনের খটকা যেনো বেরে গেলো মাহিরের।  নিরু কি চাই।
ভাবনা টা মাহির কে ঘুমাতে দেয় নি,
সকালে ভার্সিটি গিয়ে মাহির তো পুরাই অবাক।
নিরু একটা পুরনো জড়া জির্ণ জামা পড়ে ভার্সিটিতে এসেছে। সবাই নিরুর দিকে তাকিয়ে কতো কি বলছে কিন্তু নিরুর কোনো ভুক্ষেপ ই নেই।
>> এই ড্রেস পড়ে এসেছো যে
>> ইচ্ছে,  তোমার কি
>> আমার কি হবে তবে তোমায় এতে শোভা পায় না।
>> জানি,  তবে আজ থেকে আমি এটায় পড়ে আসবো
>> তুমি কি আমার উপর রাগ করে এমনটা করছো
>> না তোমার উপর রাগ করে কেনো করবো
>> আচ্ছা যাও কাল থেকে তোমার দেওয়া ড্রেসটায় পড়ে আসবো
>> সত্যি
>> হুম
.
ঠিক এভাবে মাহির আর নিরুর বন্ধুত্ত টা বাড়তে লাগলো
.
তুমি আমি থেকে তুই মুই এ চলে আসলো সম্পর্ক টা।  পুরো ভার্সিটির কাছে পরিচিত তাদের বন্ধুত্ত।
.
ধিরে ধিরে নিরু মাহির কে তার নিজের মতো  করে  তৈরী করে নিলো,
.
মাহির বুঝতে পারতো না  কেনো এমন করে নিরু। নিরু কি তাহলে ভালবাসে মাহির কে ।  নাকি তার ফেন্ড গরিব বলে তার উপর দয়া করে।
.
তাছাড়া তার মত একটা গরীব,  আনস্মার্ট ছেলেকে সে নিজের বয়ফেন্ড হিসেবে মেনে নিবে না সেটাও যে মাহিরের  আরেক টেনসন।
.
মাহিরের চিন্তা টা ধিরে ধিরে বিশাল এক আকার ধারন করে,
কখনো  সে এই সম্পর্কের স্থায়ী নাম দিতে পারে না।
.
এভাবে চলতে চলতে ভার্সিটি লাইফ শেষের দিকে চলে আসলো।
.
কিন্তু আজকাল নিরুকে এক অপরিচিত এক জনের সাথে রোজ ই কথা বলতে দেখা যায়। ঘুড়তে দেখা যায়। 
.
এই বিষয় টা মাহিরকে অনেক কষ্ট দেয়।   মাহিরের নিজের ভিতর আগুন জ্বলতো  যখন নিরু কারোর সাথে কথা বলতো  কেন এমন হতো সেটা মাহিরের অজানা। তবে সে জানে নিরুর সান্নিদ্ধ্য ছাড়া কেনো যেনো তার  অসহায় লাগে।
.
লাস্ট দুইটা রাত এই টেনশনে  মাহির চোখের পাতা এক করতে পারে নি। নিরুকে যে সে ভালবাসে আর তা মাহিরের বুজতে বাকি নেই।
কিন্তু এটাও সত্য,  নিজের মনের কথা বলার ক্ষমতার তার নেই।  নিজেদের মাঝে বন্ধুত্তের সম্পর্কটা ক্ষীন হলেও আর সব দিক থেকে নিরুর সাথে তার পার্থক্য রাত দিনের।
.
তাই পিছুটানের সাথে বন্ধুত্ত করে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। তবে কষ্ট যে পিছুটানের পিছ পিছ মাহির কে আকড়ে ধরেছে সেটা মাহির নিজেও বুজতে পেরেছে। আর বন্ধুত্তের টান সে তো সব বাধাকে হার মানায়।
.
ভার্সিটি তে আর একটা মাস আছে তার পরই তো যে যার মতো যার যার দিকে চলে যাবে।  নিজেকে এই ভেবে এখন মাহির সান্তনা দেয় যে ভার্সিটি শেষ হলেই তো আর নিরুর সাথে দেখা হবে না তখন ঠিকই নিরু কে ভুলে থাকতে পারবে সে। কিন্তু ভুলতে যে সত্যিই পারবে না সেটা সত্যেই। তবু ও চেষ্টা।
.
নিরু এখন মাহির কে এড়িয়ে চলে,  খুব বেশি কথা বলে না,  ফোন দেয় না,  দিলেও অল্প একটু কথা বলে রেখে দেয়। খুব বেশি ঘোরাফেরা  হয়না।  পাশাপাশি হাটাহাটি তো বলার উপেক্ষা রাখে না।
.
চার বছর ধরে ঘটে যাওয়া প্রতিদিনের  প্রত্যেক টা কাহিনী মাহির কে যা কষ্ট দিতো,  তার থেকে বেশি কষ্ট দিতো নিরুর অবহেলা টা। নিরুকে যে ভালবাসে সেটা কি নিরু কখনো বুজতে পারে নি।   চোখ নাকি মনের কথা বলে, নিরু কি কখনো চোখের ভাষা পড়ার চেষ্টাও করে নি। মাহিরের চিন্তা ভাবনায় সব সময় এমন কিছুই উকি দিতো।
.কষ্ট কমানোর জন্য
নিজেকে নিরুর থেকে দুরের রাখার এক প্রচেষ্টায় অসুখের বাহানা ধরে বাসায় পড়ে থাকে। যেই নিরু তার অল্প একটু অসুখে দৌড়ে চলে আসতো, আজ তিন দিন হলো মাহিরের অসুখে সেই নিরুই তাকে দেখতে আসে নি।
.
মাহিরের কেনো যেনো মনে হচ্ছে আসলেই নিরু তাকে ভালবাসে না।
বাসলে তো একবার হলেও সে দেখতে আসতো। মাহিরের সারাজিবন কষ্ট করে এসেছে,  সব কষ্ট সে সহ্য করতে পারলেও এই একটা কষ্ট সে সহ্য করতে পারছে।
কষ্ট কে নাকি কষ্ট করেই ভুলতে হয় সেই প্রচেষ্টায় মাহির। 
.
খাওয়া দাওয়া প্রায় বাদ দিয়েছে মাহির, রাতের ঘুমের সাথে তার আড়ি বাদ। শুকিয়ে গেছে অনেক টা।
.
হঠাৎ কিসের যেনো শব্দ হলো মাহিরের রুমে।  শব্দের ফিকুয়েন্সি খুব বেশি না তবে মনোযোগ হারানোর জন্য যথেস্ট। 
.
মাহিরের চোখ দিয়ে পানি পড়েই যাচ্চে।  চোখ টা লাল হয়ে গেছে।  শব্দের উৎস খুজতেই বাতরুম থেকে বের হয়ে দেখে মার্জার মশাই তার জন্য রেখে যাওয়া খাবার টুকু খেয়ে ফেলেছে সাথে প্লেট টাকেও ভাংছে। তারই শব্দ।
.
একটু পড়েই নিরু চলে আসবে, আজ তার বিয়ে,  খারাপ কোনো ড্রেস পরে যাওয়া টা মোটেও মানান সই হবে না।  তাই নিরুর দেওয়া সবচেয়ে সুন্দর ড্রেস টা পড়েই রেডি হলো মাহির।  একটু পড়েই নিরুর গাড়ির আওয়াজ,  মাহির বাসা থেকে বের হয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠলো,
>> কিরে তোর শরিরের এই অবস্থা কেনো খাওয়া দাওয়া করিস না।
>> করি আবার করি না,, অসুস্থ তো
>> ও সরি আমি তোর অসুখের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।  কিন্তু চোখ টা এমন লাল হয়ে আছে কেনো
>> আর বলিস না চোখের ভিতর সাবান চলে গিয়েছিলো।
>> মিথ্যা বলিস না,
>> সত্যিই
>> তাহলে চোখ ফোলা ফোলা কেনো
>> একটায় কারন,  বাদ দে না
>> আচ্ছা যা বাদ দিলাম
নিশ্চুপ থেকেই রাস্তার বাকি পথ টুকু পার করলো মাহির আর নিরু।
.
কাজি অফিসের সামনে দাড়িয়ে মাহির।  চোখের পানিটাও বাধ ভাঙ্গার আওয়াজ তুলছে।  হয়তো এখনই বের হয়ে যাবে। নিজের ভালবাসাকে এভাবে হারাবে তা কখনো বিশ্বাস করতে পারছে না মাহির। তবুও সেটায় হচ্ছে।
.
ছোট ছোট পা ফেলে ভিতরে গিয়ে দেখে  রাজ নামের ছেলে টা চেয়ারে বসে আছে । নিরু চেয়ারে বসতেই কাজি সাহেব কাজ শুরু করলো।
.
>> ছেলে নাম কি
>> মাহির
>> মাহির মানে কি,  আমি তো জানতাম ছেলের নাম রাজ,  মাহির হবে কেনো রে নিরু
>> মেয়ের নাম
>> নিরু ।
>> নিন এখন এখানে একটা সাইন দিন
নিরু সাইন টা করে খাতা টা মাহিরের দিকে এগিয়ে দিলো।
মাহির অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।  তাহলে কি নিরুর সাথে রাজের না তার বিয়ে হবে।  সেটা তো মাহির কল্পনাও করতে পারে নি।  তাই সে খাতা টা হাতে নিয়ে রাজের দিকে দিতে লাগলো, 
>> খাতা ঐই দিকে কেনো দিচ্ছো
>> কেন
>> তুমি সাইন করো
>> আমি সাইন করবো মানে কি
>> হুম,  তুই সাইন করবি সাইন কর তাড়াতাড়ি
>> কিন্তু
>> কোনো কিন্তু নয়।  তাড়াতাড়ি
মাহির ভাবতেই পারছে যে নিরুকে আজ সে বিয়ে করতে চলেছে।  এতো কিছু প্লান করা ছিলো সেটা তার আর বুজতে বাকি রইলো না।
হঠাৎ,
>> কেমন লাগলো প্লান টা
>> তাকিয়ে দেখি নিরুর বাবা
>> স্যার আপনি
>> স্যার স্যার কেনো বলছো আব্বা বলে ডাকো
.
মাহিরের যে নিজের চোখকেও বিশ্বাসই হচ্ছে না। সব কিছু যেনো চোখের পলকে উলটে পালটে গেলো।
>> জি আব্বা ভালোই ছিলো
>> আমি আর নিরু মিলে করেছি প্লান টা। তো এখন চলো
>> কোথায়
>> আমাদের বাসায়।  সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে
.
ঘোড়ের আবছায়ায় আবদ্ধ মাহির সবার সাথে গাড়িতে গিয়ে বসলো, 
.
তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসলো। এসে দেখি সবাই সত্যিই তাদের জন্য ওয়েট করছে।  তারা যাওয়া মাত্র  বাড়িতে কেনো যেনো চেন্জ চলে আসলো,  হঠাৎ সানায় বেজে উঠলো,  সবার মুখে হাসি ফুটে উঠলো, সবার সকল কার্যক্রম যেনো নতুন ভাবে উদ্জিবিত হলো।
সকল কাজ শেষে বাসর ঘরে মাহির আর নিরু
>> কেমন ছিলো প্লান টা
>> মোটোও ভালো নারে
>> কেনো কেনো
>> তুই জানিস কতটা কষ্ট হয়েছে
>> এতোটুকু কষ্ট তেই এমন,  এখন যে সারাজিবন কষ্ট দেব তা সহ্য করবি কেমনে
>> পারবো রে সব ই পারবো যদি তুই থাকিস।
>> বা বাহ...
>> তোকে নিয়েই তো আমার পৃথিবী আজ নিরুময় রে পাগলী।
....
...
..
বাকিটুকু ইতিহাস! -......

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ