সেদিন সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছিলাম। হঠাত্ করেই
বৃষ্টিটা শুরু হয়ে গেল। অসময়ের বৃষ্টিটাকে
প্রকৃতির উদার দান মনে করে বৃষ্টিতে ভিজে
ভিজেই রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম।সামনেই দিকে
চোখ পড়তেই দেখি একটি মেয়ে বৃষ্টি
থেকে নিজেকে বাচানোর জন্য সামনের
একটি দোকানের দিকে দ্রুত পায়ে হেটে
যাচ্ছে। মেয়েটির কাছাকাছি আসতেই দেখি
চশমা পড়া মেয়েটি আমার মতই পুরোপুরি
ভিজে গেছে ।
তবে আমার বৃষ্টিতে ভিজতে ভালই লাগছিল।
কিন্তু কেন জানি মেয়েটিকে অনুসরন
করেআমিও দোকানের সামনের অংশটায়
দাড়ালাম। বিধাতা হয়তো তেমন খুশি হলেন না ।
তাইতো মিনিট দশেকের মধ্যে বৃষ্টি টা
থেমে গেল। আর এতো টুকু সময়ের
মধ্যে মেয়েটি আমার দিকে ফিরে তাকালো
না ।আর বৃষ্টি উদাও হওয়ার সাথে সাথে
মেয়েটিও উদাও হয়ে চলে গেল।
বাবা সরকারি চাকরিজীবি হওয়ার বদৌলতে আমরা
পুরানোবাসাটা ছেড়ে নতুন সরকারি
কোয়াটারে উঠলাম । পুরাতন বাসাটা ছাড়ার জন্য
স্বভাবতই মনটা খারাপ লাগছিল । নিজের রুমে মন
খারাপ করে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে থাকিয়ে
ছিলাম। হঠাত্ করে দেখি একটি মেয়ে রিকশা
থেকে নেমে আমাদের বাসার দিকে
আসছে । একটু ভালো করে লক্ষকরতেই
দেখলাম সেদিনের বৃষ্টিতে ভিজা সেই
মেয়েটি। আমি অবাক হয়ে গেলাম । আরে
মেয়েটি এই দিকে আসছে কেন? আমার
ভাবনার সকল কৌতুহল কাটিয়ে দিয়ে মেয়েটি
পাশের বাসায় ঢুকল । অনুমান করতে পারলাম
হয়তো পাশের বাসাতেই থাকে ।তখন আমার
মনে আনন্দ নাকি বিস্ময় কাজ করছিল বুঝতে
পারছিলাম না ।
পরদিন সকাল বেলা অজানা কারনেই ছাদে উঠলাম
।কেমন জানি এক ঘেয়েমি লাগছিল। পাশের
বাসার ছাদের দিকে চোখ পড়তেই দেখি
সেই মেয়েটি চেয়ারে বসে আনমনে
একটা বই পড়ছিল । আমি ছাদের শেষ কোনায়
দাড়িয়ে মেয়েটিকে আড় চোখে
দেখছিলাম বার বার । মৃদৃ বাতাসে তার মাথার এক
পাশের চুল গুলো উড়ছিল । সে বইয়ের
মাঝেই ডুব মেরে ছিল । অন্যদিকে কোন
খেয়ালই নেই ।
প্রতি দিন এই সময় টা তেই আমি ছাদে উঠতাম ।
আর মেয়েটিকে দেখতাম একই জায়গায় একই
ভঙ্গিতে বই পড়ছে। জানি না কিসের টানে
আমিও প্রতিদিন নি র্লজ্জের মতো ছাদে
এসে দাড়িয়ে থাকতাম । আর ওকে দেখতাম
বারবার ।
মেয়েটি হয়তো আমার এই পাগলামিটা বুঝতে
পেরেছিল।কিন্তু কখনো ভুল করেও আমার
দিকে ফিরেও তাকাই নি ।
এভাবে দেখতে দেখতে অনেক গুলো
দিন চলে গেল। ওর প্রতি আমার আকর্ষনটা
ক্রমেই বাড়াতে লাগল। ওর সরল মুখ, নিষ্পাপ
দৃষ্টি আনমনা হয়ে নীরবে বসা থাকা সব কিছুই
আমায় পাগল করে দিচ্ছিল। বিশেষ করে আমার
দিকে ফিরেও না তাকানোর ব্যাপার ওর প্রতি
আমাকে আরও দৃবল করে তুলে। আস্তে
আস্তে আমি জানি কেমন হয়ে যেতে
লাগলাম। ওকে এক দিন না দেখলে আমার
অদ্ভৃত রকমের কান্না পেত। আমার সকল
ভাবনার কেন্দ্র বিন্দুতে শুধুই ও ছিল । একসময়
আমি আবিষ্কার করলাম ওকে আমি প্রচন্ড রকম
ভাবে ভাল বেসে ফেলেছি ।
প্রতিদিনই ভাবতাম আমার ভালবাসার ব্যাপার টা ওকে
জানিয়ে দেবো ।কিন্তু সাহসকরে উঠতে
পারতাম না। সব সময় একটা ভয় কাজ করতো ও
যদি আমায় না করে দেয় ।
অনেক ভাবনা চিন্তা করে সেদিন ছাদে উঠলাম
। বুক পকেটে একটা চিঠি যা কাল দীর্ঘ রজনী
জেগে লেখেছিলাম। মনে সাহস সষ্ণয়
করে বুক পকেট থেকে চিঠিটা বের করে
ওর দিকে ছুড়ে মারলাম। চিঠিটা ওর পায়ের কাছে
গিয়ে পড়ল। তারপর আমি অন্যদিকে না তাকিয়ে
তাড়াতাড়ি ছাদ থেকে নেমে আসি ।
মনে অনেক ভয় আর চিন্তার ভাজ নিয়ে পরদিন
যখন ছাদে উঠলাম দেখি ও নেই। চারদিকে
শুধুই শূন্যতা। ঘন্টার পর ঘন্টা ছাদে দাড়িয়ে
রইলাম। কিন্তু ও আর আসেনি। মনকে বুঝিয়ে
কোন রকমে রুমে আসলাম। কিন্তু আমার
বুকের ভেতরটাকেমন জানি ছটপট করছিল ।
আমি সারাটা রাত এক ফোটাও ঘুমাই নি। ওর মুখটাই
ভেসে উঠেছে বার বার ।
পরদিন আবার ছাদে গেলাম। সেদিনও ও
আসেনি। এভাবে দেখতে অনেক গুলো
দিন কেটে গেল। আমি সারাদিন ছাদে নয়তো
রুমের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতাম
ওকে এক নজর দেখার জন্য। আমাদের বাসার
কাজের মেয়েটার মাধ্যমে জানতে পারলাম
কয়েকদিন আগে ওর ফ্যামিলি ঔ বাসা ছেড়ে
অন্যত্র চলে যায়। মাঝখানে কি জানি হয়েছিল
ও বাসা থেকে বের হতো না। কারো সাথে
কথা বলতো না।
এই কথাগুলো শুনার পর আমি এড নরমালের
মতো হয়ে যাই । কিছুই ভালো লাগত না।
সারাদিন চুপচাপ বসে থাকি। আমার এই অব্স্থা
দেখে বাবা মা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে ।
আমার মা প্রতিদিনই আমার জন্য কান্নাকাটি
করতো ।আমাকে বুঝানোর অনেক চেষ্টা
করতো ।কিন্তু আমি আমার মনটাকে কিছুতেই
বুঝাতে পারতাম না ।
আমি আস্তে আস্তে আরও অসুস্থ হয়ে
পড়ছিলাম ।
হঠাত্ একদিন আমার নামে একটা চিঠি আসল ।
অবাক হয়ে চিঠিটা হাতে নিয়ে দেখলাম ওর নাম
লিখা ।আমার বুকের ভেতরটা যেন উলট পালট
হয়ে যাচ্ছিল ।
অধীর আগ্রহ নিযে কাপা কাপা হাতে চিঠিটা
পড়তে শুরু করলাম।
প্রিয় মৌ,
কেমন আছ? খুবই অবাক হচ্ছো,তাই না । হঠাত্
করে তোমায় চিঠি দিলাম কেন? তোমাকে
যে আমার না বলা কিছু কথা বলা দরকার। এতদিন
বুকের মাঝে খুব কষ্ট করে চাপা দিয়ে
রেখেছি ।
কিন্তু জীবনের শেষ সময়টায়এসে আর
চেপে রাখতে পারলাম না ।তাই বাধ্য হয়ে এই
চিঠি।
তোমাকে যেদিন বৃষ্টির মাঝে প্রথম
দেখেছিলাম সেদিন ওই তোমাকে খুব
ভালো লেগেছিল । প্রকৃতির কি অদ্ভূত নিয়ম।
আমাদের আবার দেখা হয়ে গেলো।
আস্তে আস্তে আমিও তোমার প্রতি দৃবল
হতে থাকি ।
কিন্তু আমাদের মতো মেয়েদের যে
ভালবাসার কোন অধিকার নেই। আমি তোমার
দিকে তাকিয়ে থাকার সাহস টুকুও পেতাম না ।
রুমে এসে শুধুই চোখের জল ফেলতাম।
আর যেদিন তুমি আমায় চিঠিটা দিলে সেদিন
রুমে এসে চিঠিতে তোমার ভালবাসার কথা
গুলো পড়ার পর চোখের জলে অশ্রু বৃষ্টি
হয়েছিল তাতে পুরো চিঠিটাই ভিজে
গিয়েছিল। বিশ্বাস কর সেদিন সৃষ্টিকর্তাকে
চিত্কার বলতে ইচ্ছে করছিল, কেনো আমার
জীবন টা এমন হলো। তোমায় ভালো বাসি
আমি তা কেন বলতে পারছি না ? কেনো
আমার কথা বলার সমস্ত শক্তি টুকু কেড়ে
নেওয়া হলো?
জন্মের সাত বছর পর আমার টাইফয়েড হয় এবং
আমি চিরতরে বাক শক্তি হারিয়ে ফেলি ।সেই
থেকে এই বিশাল পৃথিবীতে আমি খুব একা
হয়ে যাই ।
তোমার চিঠিটা পাওয়ার পর অনেক ইচ্ছে থাকা
স্বত্তেও নিজেকে তোমার কাছ থেকে
আরো গুটিয়ে নেই। ছাদে আসা বাদ দিয়ে
দেই। রুমে একা একা বসে থাকতাম আর
তোমার কথা ভাবতাম ।
তারপর একদিন খুব গোপনে আমরা বাসাটা
ছেড়ে চলে যাই । এই অভিশপ্ত জীবন
নিয়ে আমার বেচে থাকার সমস্ত ইচ্ছে শক্তি
গুলো আস্তে আস্তে মরে যেতে
থাকে । নিজের প্রতি নিজের বড়ো ঘৃনা
হতো ।
এই চিঠিটা তুমি যখন পড়বে আমি তখন অনেক
দূরে, অন্য কোনে ভূবনে। আমি
তোমাকে ছাড়া এভাবে একা একা থাকতে
পারছিলাম না। তাই এই পথটা বেছে নিলাম। প্লিজ
আমায় ভূলে যেও। আর আমায় যদি কখনো
খুব বেশি মনে পড়ে তাহলে রাতের
আকাশের দিকে তাকিও। আমি যে তারা হয়ে
তোমায় দেখবো আজন্ম কাল।
ইতি,
তোমার মৌ
চিঠিটা পড়ার আমার সমস্ত পৃথিবীটা
এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল।আমি বিশ্বাস
করতে পারছিলাম না এতো সূন্দর নিষ্পাপ একটা
মেয়ে কথা বলতে পারে না। সৃষ্টির এ
কেমন নির্মমতা।
আর কোন কিছুই না ভেবে রুমে এসে
দরজা বন্ধ করে দিয়ে অনেক গুলো ঘুমের
ঔষধ খেয়ে ফেললাম।
তখন আমি খুব কাঁদছিলাম। বার বার ওর নিষ্পাপ মুখটাই
ভেসে উঠছিল। আমার দৃষ্টিটা ঝাপসা হয়ে
আসছিল । এক সময় আমি গভীর ঘুমে
আচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম।
নিজেকে যখন হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার
করলাম দেখিপাশে মা বসা। শুধুই কাঁদছে। মুমূষু
অবস্থায় আমায় যখন হাসপাতালে ভর্তিকরা
হয়েছিল, আমায় বাচানো টা অসম্ভব হয়েই
দাড়িয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতির অদ্ভূত খেলায় আমি
বেচে গেলাম।
সময়ের স্রোত হয়তো আমাকে অনেক
দূর ভাসিয়ে নিয়ে এসেছে । কিন্তু আমি
এখনো মৌকে ভুলতে পারি না।
প্রতি রাতেই আমি আকাশের দিকে নিষ্পলক
তাকিয়ে অজস্র তারার মাঝে ওকে খুজার চেষ্টা
করি।
মাঝে মাঝে নিজের অজান্তেই চোখের
পাতা কখনো যে অশ্রুতে ভিজে যায়
বুঝতেই পারি না ।
.
আদনান পারভেজ
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŽāĻ্āĻāϞāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ģ āĻāĻĒ্āϰিāϞ, ⧍ā§Ļā§§ā§
471
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§ā§Ļ:ā§Ģā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ