নামটা না হয় আপনারাই দিলেন...
.
.
.
লেখক : Sajeeb Ahmed Arian ( অগোছালো ক্ষুদ্র লেখক)
.
.
.
< আচ্ছা আপনাকে না বলছি, রুমে
আসতে অনুমতি নিয়ে আসবেন?? অথবা
গলায় হালকা কাশি দিয়ে দিবেন,
তারপর রুমে আসবেন????
.
>আমার রুমে আমি আসবো এতে অনুমতি
নেওয়ার কি আছে??????
.
>না মা বলেছে এখন থেকে এই রুম
আমার আমাকে এই ঘরেই থাকতে
বলেছে।
.
> বললেই হলো নাকি?? আর আমি
আপনাকে রুম দিয়ে দিবো? কি করে
ভাবলেন?
.
> ভাবার কি আছে?? আমার অধিকার
আছে তাই বললাম। আর যা বললাম মনে
থাকে যেনো।
.
কথা হচ্ছে, সামান্তরিক আর বিন্দুর। আজ
দুপুরে ওদের বিয়ে হয়েছে, আর এসব কথা
হচ্ছে আজ সন্ধ্যায়।
.
বিন্দু বিছানায় বসে বসে ইয়ার ফোন
দিয়ে গান শুনতে লাগলো। আর
সামান্তরিক ল্যাপটপ নিয়ে কাজে
বসে। সামান্তর মা মানে বিন্দুর
শাশুড়ি মা এসে গল্প করতে থাকে
বিন্দুর সাথে। সামান্তরিককে সবাই
সামান্ত বলে ডাকে।
.
জানো মা সামান্ত ছোট্ট বেলায়
এতো দুষ্টু ছিলো, অন্যের কিছু দেখলে
সেটা ওর চাই, আর সেম জিনিস ছাড়া
নিতোনা। কত যে কষ্ট হয়েছে ছোট
বেলায় মানুষ করা। তবে আস্তে আস্তে
বড় হচ্ছিলো আর জিদ কমে যাচ্ছিলো।
একটা সময় আসলো তখন দরকারী জিনিস
চাইতোনা ঠিক মতো।
.
আমি আম্মার গল্প শুনে হাসতেছিলাম,
কারণ আমার আম্মু এই গল্প গুলো আগেই
শুনাইছে। আমার আম্মুর পছন্দে এখানে
সামান্তর সাথে বিয়ে দিয়েছে।
সামান্ত সম্পর্কে আমার বড় খালাম্মার
ছেলে। তবে তেমন যাতায়াত ছিলো
না, যে যার সংসার নিয়ে বিজি
ছিলো। ছোট থাকতে আসছি বড় হয়ে
আর আসা হয়নি। সম্পর্ক টাকে ধরে
রাখার জন্য আমাদের বিয়ে দিয়েছে,
বলা যায় দুজনকে জোর করেই।কথা গুলো
ভাবছিলো বিন্দু। তখনি সামান্তরিক
মা বলে উঠলো এই অনেক রাত হয়ছে, আর
গল্প না, আয় খেতে দেয়। আজ তোর কাজ
করতে হবে না, তোদের আজ বিশেষ
একটা দিন।
.
বিন্দু চুপচাপ শাশুড়িআম্মার সাথে যায়,
দেখলো আব্বু আম্মু, বাবা বসে গল্প
করছে। বিন্দু বকাঝকা করবে এই ভয়ে
আম্মু আমার রুমে যায়নি। বিন্দুকে
এখানে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে
এসে বিয়ে দিয়েছে। বিন্দু সরাসরি
না করে দিয়েছিলো, পরে বিন্দুর মা
বলেছিলো তুই আজ বিয়ে না করলে???
তোর পড়াশোনা বন্ধ। আর হোস্টেলে
থাকতে পারবিনা বাসায় বসে
থাকতে হবে। বিন্দু জানে ওর মা খুব
জিদি যা বলবে?? তাই করবে। সেই জন্য
বিয়েটা করে নেয়। যদিও বিন্দুর অনেক
ইচ্ছে ছিলো, অনেক জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে
বিয়ে হবে, তবে সেটা তিনবছর পরে।
কিন্তু কি দুঃখজনক আজই এইভাবে কোন
বন্ধু ছাড়া, অচেনা একটা ছেলের
সাথে বিয়ে হলো।অচেনা বলা
যায়না ছোট বেলায় দেখেছে বড় হয়ে
আর দেখেনি।
.
ডায়নিং এ বসে আছে, কারও সাথে
কথা বলছেনা,সামান্তর আম্মা ভাত
দিয়েছে। বিন্দুর আম্মু খাওয়াইয়ে
দিতে চেয়েছিল, বিন্দু অবশ্যই কিছু
বলেনি, অল্প একটু খেয়ে রুমে চলে
আসে। এতো সময় কিছু মনে হয়নি, এখন
কেন জানি হাত পা অবস হয়ে যাচ্ছে।
বিন্দুর মনের ভিতরে ঝড় শুরু হতে
লাগলো। এতোদিন কত বড়াই করে বলছে,
এতো আগেই বিয়ে করে জীবনকে হেল
করবোনা।বান্ধবীরা যারা বিয়ে
করতো? তাদের নিয়ে হাসাহাসি
করতো। নাহ হোস্টেলে যেয়ে কাউকে
কিছু বলা যাবেনা যে,আমার বিয়ে
হয়েছে। হোস্টেলের কথা ভেবে
বিন্দুর মন ভাল হয়ে গেলো। যাক তবু
তো হোস্টেলে যেতে পারবে।
.
--সামান্ত খেয়ে রুমে আসে, দেখে
বিন্দু শুয়ে আছে বিছানায়।
>কি ব্যপার??? আপনি বিছানায়?? আমি
কোথায় ঘুমাবো??????
>আপনার জায়গা ফ্লোরে, ঔই দেখেন
ওখানে কাথা আর বালিশ দেওয়া
আছে। ফ্লোরে বিছানা দিয়ে ঘুমান।
.
>বিন্দুর কথা শুনে সামান্ত অবাক, শুনেন
এটা আমার ঘর, আমি বিছানায়
ঘুমাবো। পারলে আপনি ফ্লোরে ঘুমান।
আর হ্যাঁ আপনি বিছানায় থাকলে
আমার কোন প্রবলেম নাই।
হাহাহাহাহা
.
>বিন্দু আর ঝগড়া করে না, ঠিক আছে
আপনিও বিছানায় ঘুমাবেন। তবে একটু
ওয়েট করেন আমি বিছানা ঠিক করে
দেয়। বিন্দু বিছানা ঠিক করে মাঝে
কোলবালিশ দিয়ে বলে, এইটুকু আপনার
জায়গা??? আর এইটুকু আমার জায়গা। যদি
কেউ কারও জায়গা ছেড়ে যায়???
তাহলে তাকে চিমটি দিয়ে শাস্তি
দেওয়া ।
.
>সামান্ত বলে ওকে ডান।
.
>সামান্তর ঘুমের ভিতরে হটাৎ পা চলে
যায়, আর অমনি বিন্দু চিমটি দিয়ে
দেয়।
>সামান্ত লাফ দিয়ে উঠে, চোখ কুচুরমুচুর
করে দেখে বিন্দু হাসছে,তখন রাতের
কথা মনে পরে গেলো।আর কি করা?
.
সামান্ত নেইলকাটার দিয়ে বলে,
তারাতারি আপনার নখ কাটবেন।
আমার হাতে যতবড় নখ, আপনিও ততবড়
করবেন। তাহলে দুজনের চিমটি এক
মাপের হবে।
.
>বললেই হলো নাকি????? আপনার ছোট
নখ দিয়ে যত জোরে দিবেন?? আমি বড়
নখ দিয়েও এতো জোরে দিতে
পারবোনা। আপনি বেশী শক্তি দিয়ে
দিবেন, আর আমার কম শক্তি হবে। এজন্য
দুজনে চিমটি সমান সমান হবে। আমি
এখন নখ কাটতে পারবোনা ব্যাস।
.
>সামান্ত আর কি করবে??? চুপচাপ শুয়ে
পরে, তবে এখন খুব সাবধানে ঘুমায়।
.
>সকালে উঠে সামান্ত, বিন্দুর হাতে
চিমটি দেয়, আর বিন্দু ঘুম ভেঙে যায়।
কি ব্যপার আপনার জায়গায় তো আমি
যায়নি??? তাহলে চিমটি দিলেন
কেন????
.
>আপনি দেননি??? কিন্তু আপনার
শাড়ির আচল কেন আমার জায়গায়
আসছে??? শাড়িতে তো আর চিমটি
কাটা যায়না??? এজন্য আপনার হাতে
দিয়েছি।
.
>বিন্দু রাগে কটমট করে, কিছু না বলে
ফ্রেশ হতে যায়।
.
>ফ্রেশ হয়ে আসার পরে এসে দেখে
বিন্দুর আম্মু বসে আছে।
>কিরে তোর এতো বেলা করে ঘুম
থেকে উঠতে হবে??? এই বদ অভ্যাস একটু
ছাড়িস এখন। সকালে উঠে আমার
বোনকে হেল্প করবি। এখন তুই বাসার
মেয়ে না??? বাসার বউ??? সো সেই
হিসাবে কাজ করবি। যা এখন আমার
বোনকে বল কি করতে হবে??? হাতে
হাতে কাজ করে দে।
.
বিন্দু কিছু না বলে রান্নার রুমে যেয়ে
বলে, আম্মা কি করতে হবে???? দেন
আমি সাথে করে দেয়।
.
>না মা তুমি রুমে যাও, তোমার কিছু
করতে হবে না।
>আম্মা আমাকে কিছু দেন আমি
পারবো তো!
>না তুমি রুমে যাও তো! যাও
>বিন্দু রুমে আসে,দেখে বাদুড় টা কার
সাথে যেনো কথা বলছে। সামান্তর
কথা বলা দেখে?? বিন্দু ওর বান্ধবীদের
কল দিয়ে কথা বলে।
.
তারপর আম্মা নাস্তা দেয়, নাস্তা
করার পর থেকে, আশেপাশের ফ্লাটের
লোকজন বউ দেখতে আসে। খুব বোরিং
এই কাজ গুলো। অসহ্য লাগছিলো সবার
সামনে চুপচাপ বোকার মত বসে
থাকতে। উফ্ আজকে দিন আর রাতটা
গেলে বাঁচি। আগামীকাল আমি
হোস্টেলে যাব, আহ আমি আবার
স্বাধীন।কথা মনে পরাতে আমার
ফুরফুরে আনন্দ বয়ে যাচ্ছে ।
.
আম্মা বিকেলে ঘুরতে যেতে বললো,
আমি যায়নি কারন ওই বাদুড়টার সাথে
যেতে হবে তাই যায়নি।
.
>রাতে সবাই বসে আলাপ করছে,
আগামীকাল আমাকে হোস্টেলে
যেতে দিবে কিনা???? সামান্তর মা,
বাবা রাজি। বলছে না বিন্দুর
পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, আসলে
এভাবে বিয়ে দেওয়া টা ঠিক হয়নি।
তবু ছেলে মেয়ে ভুল যাতে না করে??
এজন্য এভাবে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আর এখন পড়াশোনা করুক ঠিক মত,
সামান্ত মন দিয়ে ব্যাবসার কাজ করুক।
কিন্তু আমার মা খুতখুত করছিল, যে আর
কিছু দিন পরে যেনো যাই।শেষে
আমার জোরাজুরিতে রাজি হয়।
.
--আবার সেই অসহ্য রাত আসে,
গতকালের মতইই বিছানা ঠিক করা হয়।
সামান্ত এসে বলে আপনার জায়গায়
তো বেশি নিয়েছেন??? আমার
জায়গা এতো কম কেন???
.
>কই ঠিকি তো আছে??? আপনার চোখের
প্রবলেম আছে, আপনি চোখে চশমা দেন।
.
>আসলে সামান্ত রাগানোর জন্য এই
কথা বলছে। জোরে করে হেসে দেয়
সামান্ত, হাহাহাহাহা আমি তো
মজা করছিলাম আর আপনি রেগে
গেলেন???
.
>আপনি একদম হাসবেন না,
.
>আমি আমার মুখ দিয়ে হাসছি তাই
আপনার কি?????
>শুনেন আপনার হাসিটা দেখলে আমার
অসহ্য লাগে, যাইহোক আমার ঘুম
পেয়েছে এখন কোন কথা বলবেন না।
>আপনার সাথে কথা বলতে কে
যাচ্ছে??? আমিও এখন ঘুমাবো।
>আজ মাঝ রাতে সামান্ত হালকা করে
চিমটি কাটছে, একটু বিন্দুর হাত
আসছিলো তাই। কিন্তু বিন্দু খুবই ভয়
পেয়ে সামান্তকে জড়িয়ে ধরে
কান্না করতে থাকে। সামান্ত
নিজেও অবাক হয়ে যায়, বিন্দু যে
এতো ভয় পাবে বুঝতে পারেনি। তাই
বিন্দুকে বুঝাচ্ছিলো যে আমি
দিয়েছি ভয়ের কিছু নাই। বিন্দু শক্ত
করে সামান্তকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে
উঠছে। সামান্ত বারবার বুঝানোর
চেষ্টা করছে, কিছু সময় পরে বিন্দুর ভয়
কেটে যায়। তারাতারি সামান্তকে
ছেড়ে দিয়ে সরি বলে।
.
>সামান্ত নিজেও সরি বলে, আসলে
আপনি এতো ভয় পাবেন বুঝতে পারিনি
সরি।
.
>আচ্ছা ঠিক আছে, আপনার কোন দোষ
নাই। আমাদের যেটা নিয়ম ছিলো
সেটাই করছেন। ওকে ঘুমান।
.
>দুজনি যে যার মত ঘুমিয়ে যায়।
.
>সকালে নাস্তা খেয়ে বিন্দু সব
গোছাতে থাকে। শাশুড়িমা বলে
তুমি গুছিয়ে নাও সামান্ত তোমাকে
রেখে আসবে। না আম্মা আমি একাই
যেতে পারবো।
>তাই বললে কি হয়?? তুমি মেয়ে হয়ে
একা যাবে??? না, না তুমি রেডি হও
আমি সামান্তকে বলছি রেখে আসবে।
.
>আম্মা বেশি দূর তো না, তিন ঘন্টা
লাগবে যেতে, আমি একাই যেতে
পারবো। এসব বিন্দু বলছিলো এমন সময়
সামান্ত রুমে আসে।
>বাবা তুই রেডি হয়ে নে। বিন্দু আজ
হোস্টেলে যাবে তুই রেখে আয়।
.
>মা এর অডার দুজনের আর কিছু বলার
ছিলো না। দুজন বের হচ্ছে, বিন্দু সবার
কাছে বিদায় নেয়। বিন্দুর মা বিন্দুকে
অনেক উপদেশ দেয়, বাবা সহ অনেক
ভাল ভাল কথা বলে। শেষ পর্যন্ত বাসা
থেকে বের হয়।
.
>বাস ট্যান্ডে এসে বিন্দু বলে আপনার
আর আসতে হবে না।আমি এখন একাই
যেতে পারবো।
.
>কিন্তু , আম্মার অডার আমার মানতেই
হবে, আপনাকে হোস্টেলে দিয়ে দেন
বাসায় আসবো।
.
--বাসের মধ্যে যাচ্ছে, দুজন বেশ
জায়গা রেখে বসে আছে। দুইজনই
মোবাইল বের করে ফেসবুক চালাতে
থাকে।
.
>সামান্ত বলে আচ্ছা আপনার ফেসবুক
আইডি কি নামে????? আমরা দুজন এ্যাড
হলে তো আর প্রবলেম নাই?
>রাগারাগ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে
সামান্তর দিকে .....
>আচ্ছা ঠিক আছে এ্যাড হতে হবে না,
কিছু টা ভয় নিয়ে সামান্ত বললো।
.
>সম্পূর্ণ পথে তারা ফোন নিয়ে সময় পার
করলো।
>বাস থেকে নেমে একটা রিক্সা
নিলো, বিন্দু বললো দুটো রিক্সা
নিয়ে আসেন। একটাই আমি যাব,
অন্যটাই আপনি যাবেন।
>কিন্তু কেন??? আমি এতো মটা না যে
দুটো নিতে হবে। একটা রিক্সাই দুজন
ভালভাবে হয়ে যাবে।
.
>দেখেন আমি যা বললাম তাই করেন।
আমার ভার্সিটি দিয়ে আপনার সাথে
রিক্সায় যেতে পারবোনা। কেউ
দেখলে আমি কি বলবো????
.
>সেটা আপনার সমস্যা, আমার কিছুই না।
হাহাহাহাহা।
.
>ওই রিক্সা যাবেন????? বিন্দু নিজেই
অন্য একটা রিক্সা ঠিক করে।
>শেষে দুজন দুই রিক্সায় যায়, সামান্ত
বিন্দুকে হোস্টেলে দিয়ে বাসায়
আসে।
.
-- সামান্ত বাসায় আসার পরে, খাওয়া
দাওয়া করে রুমে যায়। সামান্তর আম্মু
বলে কিরে??? বিন্দুর কোন খবর
নিয়েছিস???
.
--মা আমি এতো খবর নিতে পারবোনা,
দরকার হইলে তুমি নাও।
.
--সেকিরে বাবা??বিন্দু তোর বউ। আর
দেখাশোনা, খোজ খবর নেওয়া তোর
দায়িত্ব।
.
--এটা বলেই সামান্তর মা বিন্দুকে কল
করে।
--হ্যালো আম্মা!!!
--হ্যাঁ মা।
- কেমন আছেন????
--এইতো মা ভাল আছি তুমি??
--আমিও ভাল আছি।
--আচ্ছা প্রতিদিন একবার হলেও
আমাদের খবর নিবে কেমন??
-- ঠিক আছে আম্মা। আপনি কি করেন?
--এইতো সামান্তর সাথে কথা
বলছিলাম, সামান্ত তোমার খবর নিতে
বললো। আমি কল দিয়ে তোমার খবর
নিচ্ছি।
.
--মা এর এমন কথাতে সামান্ত আশ্চর্য হয়।
.
-মা সামান্তর দিকে তাকিয়ে
মিটমিট করে হাসে। আচ্ছা মা সকালে
কল দিও এখন রাখছি।
-আচ্ছা।
.
--সামান্ত বাবা তুই অনেক ট্রয়াড এখন
ঘুমাহ।
.
--আচ্ছা।
.
--আম্মা চলে যাওয়ার পরে, সামান্ত গত
দুদিনের কথা ভাবছিলো আর
হাসছিলো। এখন যেনো ঘরটা খালি
খালি লাগছে।
.
--যাক ভালোই হয়েছে, আজ রাতে
শান্তি মত ঘুমাতে পারবো।
.
--সামান্ত আর বিন্দুর কখনো ফোনে
কথা হতোনা। সামনে বিন্দুর পরীক্ষা।
.
--বিন্দু রেগুলার শাশুড়ির খবর রাখতো।
একদিন কল দিয়েছে, সামান্তর মা
বাসায় নাই। রিং বেজেঁই যাচ্ছে,
সামান্ত যেয়ে দেখলো বিন্দু
কোলিং, তাই দেখে ফোন রিসিভ
করে।
.
--হ্যাঁলো আম্মা তো বাসায় নাই,
--কই গিয়েছে?
-- পাশের ফ্লাটে গিয়েছে।
.
--ও আচ্ছা (চুপচাপ রয়েছে বিন্দু কি
বলবে? )
--হ্যাঁ, আপনি কেমন আছেন? (সামান্ত)
-জী ভাল আছি। (বিন্দু)
-ও কি করছেন?? (সামান্ত)
-আচ্ছা এখন আমি পড়ছি, রাখি। (বিন্দু)
.
--সামান্তর কথা বলতে ভালোই
লাগছিলো, কিন্তু তিনি রেখে
দিলেন।
.
-সামান্ত রুমে যেয়ে বিন্দুর কথা
ভাবে, সেই রাতে ভয় পেয়ে জড়িয়ে
ধরেছিলো। এটাই মনে পরে বেশি, আর
নিজে নিজেই হাসে। সামান্তর মনে
অনেক টা জুড়ে বিন্দুর স্হান হচ্ছে।
সামান্ত নিজেও বুঝতে পারছে।
মাঝে মাঝে বিন্দুর মুখটা ভাসে। আহহ
মেয়েটাকে রাগলে অনেক দারুণ
লাগে।
.
--বিন্দুর পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে,
উনিশ তারিখে পরীক্ষা শেষ হবে। আর
পরীক্ষা শেষ হলেই সামান্ত আনতে
যাবে। এটাই দুই পরিবারের সিদ্ধান্ত।
.
-পরীক্ষা শেষ, বিন্দুর মা কল করে বলে
তোকে সামান্ত আনতে যাবে।
.
--আচ্ছা মা!! আমি কি একাই যেতে
পারিনা?? আগে কি একা যেতাম
না???
.
--আগে আসতি এখন আসবিনা ব্যাস।
সামান্ত যাচ্ছে তোকে আনতে আর
ওখান থেকে একবারে মার্কেট করে
আসবি।
.
--আচ্ছা দেখা যাবে।
.
-বিন্দু ফোন রেখে ভাবতে থাকে
কতদিন বাসায় যায়না। এখন ওই বাদুড় টা
নিতে আসলে সোজা শশুড় বাসায়
নিয়ে যাবে!! নাহ আমি আমার বাসায়
যাব এজন্য আগে বাবাকে রাজি
করাতে হবে। যেই কথা? সেই কাজ!
.
--বিন্দু কল করে বাবাকে রাজি কড়াই
কিন্তু বিন্দুর আম্মুর কথা, ঠিক আছে তবে
সামান্তর সাথে আমাদের বাসায়
আসবি।
.
বিন্দুর না করার সাহস ছিলো না। বলে
ঠিক আছে।
.
-সামান্ত বিন্দুর হোস্টেলের সামনে
আসে কতবার কল করে কল রিসিভ
করেনা। পরে মেসেজ দেয়, আমি
সামান্ত কল রিসিভ করেন।
.
-বিন্দু মেসেজ পেয়ে তারাতারি কল
রিসিভ করে,
.
--আপনি কই?? আপনার হোস্টেলের
সামনে অনেক সময় ওয়েট করছি।
.
--আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি ওয়েট করুন
আমি দুইমিনিটের ভিতরে আসছি।
.
--বিন্দু আসতে আসতে দশমিনিট পরে
একটা বড় ব্যাগ নিয়ে বের হয়।
.
--এই আপনার দুমিনিট হলো?? পুরো
দশমিনিট লেট করেছেন।
--আচ্ছা ঠিক আছে, এখন তো আসছি।
--আপনার হাতে এতো বড় ব্যাগ কেন?
--আমি বাড়ি যাব একবারে বের হলাম।
--আগে মার্কেট করে আসি তারপর
ব্যাগ নিয়ে যাওয়া যাবে।
--আপনি পাগল হয়েছেন?? আবার উল্টা
হয়ে এখানে আসবো???
.
--আচ্ছা ঠিক আছে, আপনার ব্যাগ আপনি
টানবেন আমি টানতে পারবোনা।
--আপনি কি বলছেন?? আমি এতো বড়
ব্যাগ টানতে পারবো??
--তো কি আপনার ব্যাগ আমি টানবো
কেন?
--তাহলে আপনি এখানে আসছেন
কেন??
--আমি আসছি আপনারে নিতে ব্যাগ
নিতে না।
.
--আচ্ছা ঠিক আছে, আমি মার্কেটে
যাব না। আমি একবারে বাসায় যাব
এইবার খুশি?
.
--আরে না না, আমি ব্যাগ নিচ্ছি তবু
চলেন।
-এই রিক্সা যাবেন? বাস স্ট্যান্ড?
--হ্যাঁ উঠেন।
-বাবা রিক্সা ঠিক করা হয়ে
গিয়েছে, থাক আজ বাসায় যায়। পরে
দুজনই রিক্সায় উঠে বাস স্ট্যান্ডে
আসে। দুটো টিকিট কাটে।
.
--দুজন বাসের ভিতরে যাচ্ছে। এক
জায়গায় থেকে বিন্দুর স্কুল বান্ধবী
উঠলো। বিন্দু দেখে তো সেই খুশি।
.
--আচ্ছা আপনি একটু ওই সিটে বসেন
আমার বান্ধবীর সাথে একটু গল্প করি।
অনেক দিন পরে তো দেখা হয়েছে।
.
-সামান্ত বলে শুনুন এটা আমার সিট আর
আমিই এখানে বসবো।
.
--প্লিজ একটু বোঝার চেষ্টা করুন, আচ্ছা
আপনি একটু পরে আপনার সিটেই বসেন।
অল্প একটু গল্প করিতো। প্লিজ ওই সিটে
বসেন।
.
--সামান্ত রাগারাগ করে ওই সিটে
বসে।
--কিরে দিয়া কেমন আছিস???
--এইতো ভাল আছি, আচ্ছা ওই ছেলেটা
কেরে????
--বাদ দে তোর শুনতে হবে না।
--না বলনা, আমি শুনবো।
.
--এদিকে সামান্ত মনে মনে অনেক
রাগে, যে ভাবছে সারাটা পথে
বিন্দুর পাশে পাশে থাকবে। তা আর
হলোনা। একসময় সামান্ত ঘুমিয়ে যায়।
.
--বিন্দু সব ঘটনা টা দিয়ার কাছে বলে।
ঘটনা শুনে দিয়া বুঝায়। দেখ মেয়েদের
জীবনে বিয়ে একটাই, হ্যাঁ বুঝলাম
তোকে জোড় করে বিয়ে দিয়েছে,
কিন্তু তুই কি তাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য
কোথাও বিয়ে করতে পারবি???
.
--হ্যাঁ, তুই যদি বিয়ে করিসও কিন্তু এই
সম্মান টা কারও কাছে পাবিনা। আর
তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে ছেলেটা
অনেক ভাল আছে। দেখতেও অনেক সুন্দর।
তোর আর কি চাই?? যা ওই ছেলের
মাঝে নাই???
.
-- দিয়া আমি এতো তারাতারি
বিয়ে করতে চাইনি। আমার ইচ্ছে
ছিলো পড়াশোনা শেষ করে যখন জব
করবো? কখন একটা রিলেশন করে বিয়ে
করবো।
.
--দেখ যেভাবে হোক বিয়ে টা এখন
হয়ে গিয়েছে, তাই তোর উচিত
হাজব্যান্ড হিসেবে মেনে নিয়ে,
ভাল করে সংসার করা। এমন কিছু করিস
না যাতে সারাজীবন কষ্ট পেতে হয়।
.
--তুই তো জানিস আসাদের কথা??
আসাদকে ভালবেসে বিয়ে
করেছিলাম, আর এখন ও আমাকে কত কষ্ট
দেয়?? ঠিক মত খোঁজ খবর রাখেনা। এটা
বলেই দিয়া কাঁদছে।
.
--আচ্ছা দিয়া কাঁদিস না। একদিন সব
ঠিক হয়ে যাবে।
.
--বিন্দু মনে মনে ভাবে, দিয়া কথা
গুলো খারাপ বলেনি।
.
--বাস এসে থামছে সবার নামতে হবে।
দিয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দুজন
রিক্সা নেয়। বিন্দুর এলাকার লোকজন
জানে, বিন্দুর বিয়ে হয়েছে, কিন্তু
এখনো ছেলে দেখেনি। আজ হটাৎ
বিন্দুর সাথে একটা ছেলেকে রিক্সায়
দেখে সবাই চেয়ে আছে, ভাবছে
এটাই বিন্দুর বর। এভাবে লোকজন চেয়ে
থাকা দেখে বিন্দুর অনেক রাগ হয়।
অসহ্য পরিবেশ এভাবে হা করে
তাকিয়ে থাকার কি আছে?? সবাই কি
চিড়িয়াখানার জীব জন্ত দেখছে?
যেভাবে তাকিয়ে আছে?? মনে হচ্ছে
তাই দেখছে।
.
--বাসায় যাওয়ার পরে বিন্দুর অনেক
ভাল লাগছে, অনেক দিন পরে আজ
বাসায় আসলো। বিন্দুর ছোট কাজিন
ভাই বিন্দুর বাসায় থাকে, নাম নিরব।
সবাই খুব ভালবাসে, আর বিন্দু অনেক
ভালবাসে। ছোট ভাইটার জন্য বিন্দু
একটা ঘড়ি কিনে নিয়ে আসছে।
ঘড়িটা পেয়ে নিরব অনেক খুশি
হয়েছে।
.
--এই প্রথম বাসায় মেয়ের বর এসেছে।
সামান্তর মা বা দুজনই জামাই আদর
নিয়ে বিজি আছে। সামান্তর মুটামুটি
নিরবের সাথে সময় পার হচ্ছে।
.
--রাতে ডিনার করে বিন্দু তার রুম
গুছাতে থাকে।
.
তখন বিন্দুর আম্মু সামান্তর সাথে করে
রুমে ঢুকে। এই বিন্দু তারাতারি
বিছানা ঠিক করে দে, ছেলেটা
অনেক ট্রায়াড।
.
--কি মা।!!এই রুমে ঘুমাবে?? আরও তো রুম
আছে। আমি এই রুমে ঘুমাবো। তুমি অন্য
রুম ঠিক করে দাও।
.
-সামান্ত অন্য রুমে ঘুমাবে কেন??? এই
রুমেই শুবে । বিন্দুর মা বুঝে দুজনের
বিয়ে হলেও তারা এখনো দুজন দুজনকে
মেনে নিতে পারিনি। তাই নিজের
সিদ্ধান্তর উপর অটল থাকলো।
.
--বিন্দু কোন উপায় না ভেবে,
বিছানা ঠিক করে দেয়। মাঝে একটা
কোলবালিশ দিয়ে দেয়। সেদিন দুজনই
সুন্দর করে ঘুমায়, কেউ কারও জায়গায়
যায়না।
.
--সকালে ঘুম থেকে উঠে সামান্ত
রেডি হয়ে নেয়, আম্মা আমার যেতে
হবে আজই। দরকারী একটা কাজ আছে।
.
--এদিকে সকালে সামান্তর মা কল
করে বিন্দুকে বলেছে, মা তোমাকে
অনেক দিন দেখিনা, তুমি সামান্তর
সাথে এসে দুদিন থেকে যাও আর
আমাদের দেখে যাও।
.
-বিন্দু ওর মা এর কাছে এসে বলে মা
আমিও যাব। কিন্তু দুদিন পরে তোমার
নিয়ে আসতে হবে। মেয়ের যাওয়ার
কথা শুনে মা একটু খুশি হয়। বিয়ে টা না
মানলেও শশুড় শাশুড়ির সাথে মেয়ে
ভাল ব্যবহার করে। এটা বুঝে ভালোই
লাগছে।
.
সকালের খাবার খেয়ে দুজন বের হয়।
.
--বাসে উঠে, বাসের ভিতরে দুজন
ঘুমিয়ে যায়, ঘুম ভেংগে দুজন দেখে
একজন একজনের কাঁধে মাথা রেখে
ঘুমাচ্ছে এবং দুজনের হাত ধরে আছে।
.
--দুজনই তাকিয়ে লজ্জা পেয়ে দূরে
দূরে বসে। আর পনেরো মিনিট পরেই
বাসা পেয়ে যাবে।
..
বাসায় যাওয়ার পরে সামান্তর মা তো
খুব খুশি। দুজনকে গোসল করে নিয়ে
দুপুরে খাবার খেতে বলে। দুপুরের
খাবার খেতে বসে তখন সামান্তর কল
আসে একটা, একটু দূরে যেয়ে কথা বলে।
.
--হ্যাঁলো রিয়াদ বল।
--সামান্ত তুই তো জানিস!!! আমার
বাবা অসুস্থ!!! আর রক্ত লাগবে ও
নেগেটিভ।আমি জানি তোর ও
নেগেটিভ। কোথাও রক্ত খুজে পাচ্ছি
না তাই বাধ্য হয়ে তোকে কল দিলাম।
প্লিজ তারাতারি মেডিকেলে চলে
আয়।
.
---আচ্ছা ঠিক আছে, তুই চিন্তা করিস
না আমি আসতেছি একটু অপেক্ষা কর।
.
--মা আমার বের হতে হবে।
--কেন বাবা কই যাবি??
--মা আমার একটা দরকারী কাজ আছে
এখুনি যেতে হবে।
--আচ্ছা ঠিক আছে যাবি। এখন খেয়ে
নে আগে।
--সামান্ত তারাতারি খেয়ে
মেডিকেলে চলে যায়।
.
--মাকে বলেনা রক্ত দান করবে। মাকে
বললে মা রাজি হবে না। কারণ রক্ত
দিতে হয় তিনমাস পরে পরে, আর আমি
দেড় মাস আগে রক্ত দিয়েছি। এজন্য মা
শুনলে দিতে দিবেনা।
.
--রক্ত দেওয়ার পরে সামান্তর শরির একটু
স্বাভাবিক লাগে জন্য মার্কেটে
যায়। পঁয়ত্রিশ জন বাচ্চাদের জন্য কিছু
নতুন পোশাক কিনে।
.
--নতুন পোশাক কিনে এক আত্মীয়র
দোকানে রেখে আসে।
.
বাসায় আসার পরে খুব ক্লান্ত লাগে।
সামান্ত যখন বাসায় আসে তখন বিন্দু
টিভি দেখতেছিলো।
--মা আমাকে কিছু খেতে দাও, শরির
ক্লান্ত লাগছে ঘুমিয়ে যাব।
.
--আচ্ছা আয় বাবা খেতে দেয়। বিন্দু
তুমি যদি খেতে চাও? তাহলে আসো
খেয়ে নিবা।
.
--না মা আমি এতো আগে কিছু
খাবোনা। পরে খেয়ে নিবো।
.
--সামান্ত খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে যায়।
বিন্দু টিভি দেখা শেষে খাওয়া
দাওয়া করে রুমে এসে দেখে সামান্ত
অনেক জায়গা জুড়ে ঘুমিয়ে পরেেছ।
.
--বিন্দুর এইটা দেখেই মেজাজ খারাপ
করে, বিন্দুর জন্য অল্প একটু জায়গা আছে।
এইটুকু জায়গায় ঘুমাতে পারেনা।
ফ্লোরে ঘুমাবে!!! নাহ ফ্লোরে পোকা
টোকা আসতে পারে। কি করবে???
ভেবে পাচ্ছে না।
.
---শেষে সামান্ত কে ডাকে, এই যে
শুনছেন?? এইযে শুনছেন?? নাহ! কোন
সাড়া শব্দ নাই। কি করি???? সামান্তর
হাত ধরে যেই টান দেয়??? অমনি
সামান্ত আহ্ বলে উঠে।
.
-বিন্দু কিছু টা ভয় পেয়ে যায়, আমি
তো জোড়ে হাত ধরিনি, তাহলে
আপনি ব্যথা পেলেন যে????
.
--না কিছু না, আপনি ঘুমিয়ে যান।
অনেক ট্রায়াড ছিলাম উল্টা পাল্টা
ভাবে ঘুমিয়ে গিয়েছি।
.
-সামান্ত ঠিক হয়ে বিন্দুকে জায়গা
দিয়ে ঘুমিয়ে যায়।
-বিন্দু যখন লাইট অফ করে ঘুমাতে
যাবে?? তখন দেখে সামান্তর হাতে
ছোট ব্যান্ডিজ করা। হাত তখন এ ওই পাশ
করা ছিলো জন্য দেখা যায়নি। এজন্য
হালকা ভাবে ধরাতে ব্যথা
পেয়েছে। কিন্তু কি হয়েছে হাতে???
.
-- কিভাবে জানবো?? সেতো আবার
ঘুমিয়ে গিয়েছে। বিন্দুর খুব জানতে
ইচ্ছে করছে, আর ঘুম আসছে না। এসব
ভাবছে তখুনি সামান্ত মুখে কিছু শব্দ
করতে থাকে। বিন্দু তাকিয়ে দেখে
ঘুমের মাঝে কেমন যেনো করছে আর
কিছু বলছে।
--এইযে আপনার কি হয়েছে???শুনছেন?
- কোন তো সাড়া শব্দ নাই।হাত ধরতে
যেয়ে দেখে অনেক গরম শরীর, বিন্দু
নিজেই কপালে হাত দিয়ে দেখে
গায়ের তাপমাত্রা অনেক। তারমানে
জ্বর হয়েছে। একটা কাপড় খুজে
বাটিতে পানি নিয়ে এসে সামান্তর
কপালে জলপটি করতে লাগে।
.
--কিছু সময় পরে পানি খেতে চায়,
বিন্দু পানি নিয়ে এসে মাথা উচু করে
পানি খাইয়ে দেয়। সামান্ত হালকা
হালকা তাকিয়ে বলে, কি ব্যপার
আপনি এখনো ঘুমাননি??? যান ঘুমিয়ে
যান, আমি ঠিক আছি।
.
--সামান্তর কথা বলা দেখে, বিন্দু
তারাতারি ঔষুধ নিয়ে এসে আবার
মাথাটা উচুঁ করে খাইয়ে দেয়।
.
--সামান্ত শুধু বলছিলো ঘুমিয়ে যেতে ,
বিন্দু বলে আপনি চুপচাপ ঘুমিয়ে যান
এতো কথা বলতে হবে না।
.
-আর কিছু সময় জলপটি করার পরে
তাপমাত্রা অনেক টা কমে যায়। তখন
বিন্দু ঘুমাতে আসে।
.
--বিন্দু ভাবতে থাকে, আচ্ছা আমি
তো এই বিয়ে মানিনা, আর একে
হাজব্যান্ড হিসাবে সম্মানই করিনা।
তাহলে এর অসুখে আমি ব্যাস্ত হয়ে
পরছি কেন??? কেন আমারও কষ্ট হচ্ছে সে
অসুস্থ জন্য!!!
.
.
--আচ্ছা তাহলে এটাই কি বিয়ের বন্ধন,
যেটা সেই তিনকবল পড়ার পরে মন চেন্জ
করে দেয়।এই কবুলের টানে সামান্তর
জন্য খারাপ লাগছে? তাহলে আমার
আগের মন আর এখনকার মন আলাদা????
হ্যাঁ আলাদা তো মনে হচ্ছে। আগের
বিন্দু এখন নাই, বিন্দুর মনে এখন সামান্তর
জায়গা হয়েছে কিছুটা।
.
-সামান্তর ঘুম ভেঙে দেখে বিন্দু
ঘুমিয়ে আছে। রাতের কথা মনে পরে।
কি যত্ন করে আমায় সেবা করলো। হ্যাঁ
আমি তো এমন একটা মেয়ে চাই যে
আমার অসুখ বিসুখে এভাবে যত্ন করে
আসবে।
.
সামান্ত অনেক টা মনের দিক দিয়ে
শান্তি পাচ্ছে।
.
-বিন্দুর ঘুম ভেঙে দেখে সামান্ত নাই,
একটু পরে আসে।
.
-আচ্ছা আপনাকে একটা কথা
জিজ্ঞাসা করবো???
..
--হ্যাঁ করেন।
-আপনার হাতে কি হয়েছে???
ব্যান্ডিজ লাগানো কেন?
.
--গতকাল এক বন্ধুর বাবাকে রক্ত
দিয়েছি এজন্য।
--হ্যাঁ রক্ত দিয়েছেন সেটা তো ভাল
কথা। বাসায় কি বলছেন??
-না বলিনি, আর আপনার কাছে আমার
রিকোয়েস্ট, কেউ যেনো না জানতে
পারে। বিশেষ করে মা যেনো না
জানতে পারে।
.
-কেন??? আম্মা জানলে কি প্রবলেম??
.
-আসলে রক্ত দেওয়ার নিয়ম তিনমাস
পরে পরে, আমি তো দেড়মাস আগে
দিয়েছি এটা মা জানে। এখন
দিয়েছি এটা জানলে বকাঝকা করবে।
.
-আসলেই তো আমি বলে দেবো।
আপনার কিছু হইলে তো আম্মা কষ্ট
পাবে।
.
-এই না বলবেন না, আসলে আমার জন্য
যদি কেউ সুস্থ হয়। তাহলে এটাই আমার
আনন্দ হবে, প্লিজ বলবেন না।
.
--আচ্ছা ঠিক আছে বলবোনা, তবে এরকম
কাজ কারার আগে বাসায় পারমিশন
নিবেন।
.
আচ্ছা। সামান্ত তাকিয়ে আছে বিন্দুর
দিকে .....
.
--বিন্দু জানালার পাশে যেয়ে
বাইরের প্রকৃতি দেখছে, আজ মনে হচ্ছে
প্রকৃতি টা বেশী সুন্দর। নাকি আজ
আমার মন ভাল জন্য প্রকৃতিকে সুন্দর
লাগছে।
.
-- সামান্ত তো অনেক ভাল ছেলে।
তাহলে কেন বিয়ের পরেও আমি
কাছাকাছি থাকি না?? আর গতকাল
থেকে সামান্তর প্রতি ভাল লাগা
কাজ করছে। সব সময় কেমন যেনো
পাশাপাশি থাকতে ভাল লাগছে।
দিয়ার কথা গুলো শুনার পর থেকেই,
সামান্তকে ভাল লাগতে শুরু করছে। আজ
যখন রাতে জ্বর হয়েছিল,, মনে হলো
আমার হয়েছে। এতোটা খারাপ
লাগছিলো।না আজ থেকে আর খারাপ
ব্যবহার করবোনা। ও যা বলে তাই মেনে
নিবো।
.
--সকালে বিন্দু নাস্তা তৈরি করে,
সামান্তর জন্য ইক্সট্রা করে চিংড়ির সুপ
রান্না করে।
- দুপুরের জন্য শাশুড়িকে বলে আম্মা
আমাদের শিং মাছ নাই????
-
-হ্যাঁ মা আছে তো।
--আমার শিং মাছ খেতে ইচ্ছে করছে।
--আচ্ছা ঠিক আছে, আজ সাথে শিং
মাছও রান্না হবে।
.
-আসল উদ্দেশ্য ছিলো শিং মাছ
সামান্ত কে খাওয়াবে। সামান্তর এখন
এসব জাতীয় খাবার বেশি বেশি
খেতে হবে।
.
--দুপুরে বিন্দু আম্মার সাথে রান্নায়
হেল্প করে।তখন সামান্ত একটা ঘুম দেয়।
ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নেয়।
এদিকে বিন্দুর রান্নার কাজে হেল্প
করে আগেইই গোসল করা হয়ে
গিয়েছে।
.
--এই বিন্দু, সামান্ত তোরা খেতে আয়।
ভাত দিয়েছি টেবিলে। দুজন আসে,
খাওয়া দাওয়া করে রুমে যায়।
.
--আজ আমার সাথে একজায়গায়
যাবেন????
.
-কোথায়???কিছুটা খুশির উচ্ছ্বাসে ...
-আপনাকে একজন দেখতে চেয়েছে।
--কে দেখবে??
--আমার ভালবাসার মানুষ আপনাকে
দেখতে চেয়েছে।
.
-মূহর্তে বিন্দুর মনটা মলিন হয়ে যায়।
যাকে নিয়ে ভেবেছিল, এখন থেকে
আর খারাপ ব্যবহার করবে। জীবনসঙ্গী
হিসাবে মেনে নিবে ..!আর সেই অন্য
জনকে ভালবাসে???
.
-কিন্তু আমি এখন কি করবো?? আমার
চিন্তা ভাবনা সবিই তো এখন
সামান্ত।
.
--কি ব্যপার?? কি ভাবছেন???
যাবেন???
.
--না মানে, আচ্ছা, ওকে যাব। কথা
কেমন যেনো উল্টা পাল্টা হয়ে
যাচ্ছে। দিয়া বলেছিল এমন কিছু করিস
না!! যাতে সারাজীবন কাঁদতে হয়।
এজন্য তো আরও সামান্তকে আপন করে
নিতে চেয়েছিল কিন্তু সেই সুযোগ টা
আর নেই।
.
--বিন্দুর চোখের কোনে পানি জমে
আছে, যখন তখন পানি গড়িয়ে যাবে।
পানি লুকানোর জন্য সামান্তর সামনে
থেকে চলে আসে।
.
-বাইরে এসে চোখের পানি না
মুছতেই, সামান্ত এসে বলে
তারাতারি তাহলে রেডি হয়ে নিন।
চারটার বের হবো, হ্যাঁ ভাল করে
সাজবেন কিন্তু!!!
.
--সামান্তর মুখে সাজার কথা শুনে,
যেমন কষ্ট হচ্ছে?? তেমনি রাগও হচ্ছে।
তার ভালবাসার মানুষের সাথে
দেখা করতে আমাকে কেন নিয়ে
যাবে?? সে একা গেলেই তো পারে।
.
--দুজন বের হয়েছে, একটা রিক্সা নিয়ে
যাচ্ছে।
.
--যাওয়ার পথে, সেই দোকান থেকে
পোশাক গুলো নিয়ে নেয়। বিন্দু
জিজ্ঞাসা করে এগুলো কি!????
.
--এগুলো আমার ভালবাসার মানুষের
নতুন পোশাক। সামনে ঈদ তাই এসব গিফট
করবো।
.
--বিন্দু আর কিছু বলেনা, মনটা ভীষণ
খারাপ। ও ভাবতেই পারছে না
সামান্ত অন্য কাউকে ভালবাসে।
তাকে দেখার পরে কিছু বলবো
নাকি?? না আমি কিছু বলবোনা।
আচ্ছা আজ দেখা করে আসি, দেন
সামান্তর বাসায় থেকে একেবারে
চলে যাব।
.
--এসব কথা ভাবছিলো, আর তখন দেখতে
পেলো রিক্সা টা একটি বস্তিতে
এসে থামছে। বিন্দু কিছুটা অবাক হয়।
.
--কি ব্যপার এখানে কেন আসলেন???
--এখানেই আমার ভালবাসার মানুষ
থাকে।
.
--রিক্সা থেকে নামার সাথে সাথে,
কিছু বাচ্চারা সামান্ত কে ঘিরে
ধরে বলে, সামান্ত ভাইয়া এসেছে কি
মজা!!!
.
--বিন্দু রিক্সা থেকে নেমে কিছুটা
আশচর্য হয়ে তাকিয়ে আছে।
--বাচ্চাদের উদ্দ্যেশ্য করে বলে,
তোমরা এতোদিন তোমার ভাবিকে
দেখতে চেয়েছিলে না????? আজ
তোমাদের ভাবিকে নিয়ে এসেছি।
এই দেখো তোমাদের ভাবি।
.
--বাচ্চারা যেয়ে বিন্দুকে জড়িয়ে
ধরে, বিন্দু সবাই কে মাথায় হাত
বুলিয়ে দেয়। বিন্দু সবার সাথে কথা
বলছে নাম কি তোমাদের??
.
--সবাই একে একে নাম বলছে, সামান্ত
বিন্দুর দিকে তাকিয়ে থাকে আর
অনেক খুশি হয়। সহজেই বাচ্চাদের
সাথে এভাবে মিশা দেখে ভাল
লাগে সামান্তর।
.
--সামান্ত বাচ্চাদের চকলেট দিয়ে
খেলতে দেয়। বাচ্চারা চকলেট নিয়ে
খেলতে থাকে।
.
-তখন সামান্ত বিন্দুর কাছে এসে বলে,
কেমন সারপ্রাইজ দিলাম??? আপনাকে
সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য মিথ্যে
বলেছি।
.
--বিন্দু এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে, এই
কথা ভেবে ভাল লাগছে যে কোন
গার্ল ফেন্ড নাই।
.
--জানেন আমি প্রতি সাপ্তাহে
বাচ্চাদের দেখতে আসি। আর ওদের
সাথে দুই ঘন্টা সময় দেয় প্রতি
সাপ্তাহে। পড়াশোনা সব বিষয়ে খবর
নেয় খুব ভাল লাগে যখন ওদের সময় দেয়,
ওরা আমাকে পেয়ে খুব খুশি হয়। এখন
আমি অনেক হ্যাপি থাকি।
.
--বিন্দু ভাবতে থাকে, আসলে সামান্ত
অনেক ভাল ছেলে। হয়তো সামান্তর
যোগ্য আমি না। এখন বাবা মার কথা
মনে পরেছ। তারা আমাকে যোগ্য
ছেলের হাতেই তুলে দিয়েছে। আমি
যতোই সামান্তর সাথে থাকছি?? ততই
ভাল লাগা কাজ করছে। মনে মনে
বাবা মাকে ধন্যবাদ দেয়। আর আল্লাহর
কাছে শুকরিয়া জানায়।
.
---এইযে কি ভাবছেন?? চলুন ওদের বাবা
মার সাথে দেখা করে আসি আর ওদের
নতুন পোশাক হাতে তুলে দেয়। আর আমি
চাই এই পোশাক গুলো আপনার হাত
দিয়ে শিশুদের হাতে তুলে দিবেন।
.
--বাচ্চাদের মা বা বিন্দু আর
সামান্তকে দেখে খুব খুশি। বাচ্চারা
নতুন পোশাক পেয়ে অনেক মজা করছে।
শেষে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে
চলে আসে।
.
--দুজন রিক্সায় বসে আছে, সামান্তর
ইচ্ছে করছে বিন্দুর হাতটা ধরতে। আবার
বিন্দুর মনে মনে তাহ ইচ্ছে করছে,
হাতে হাত রেখে রিক্সায় ভ্রমণ করা।
কিন্তু কেউ কাউকে কিছু বলতে
পারলোনা, শুধু দুবার চোখাচোখি
হলো। .
.
-- দুজনের মনে চাওয়া না পাওয়া
নিয়ে বাসায় আসে। সামান্তর মা
নাস্তা তৈরি করে খেতে দেয়।
সামান্তর অতিরিক্ত গরম লাগার
কারনে আবার গোসল করে।
.
--বিন্দু বসে বসে শাশুড়ি আম্মার সাথে
গল্প করে। আর টিভি দেখে, মাঝে
বিন্দুর কল আসে। দিয়া বান্ধবী কল
করেছে, একটু দূরে যেয়ে কথা বলে।
.
-কিরে বিন্দু? তোর খবর কি?
-এইতো মুটামুটি। তোর কি খবর?
-এখন ভাল আছি রে। তোদের সম্পর্ক ঠিক
হয়েছে?
-বিন্দু কি বলবে?? ভেবে পাইনা। তাই
বলে যে হ্যাঁ ঠিক হয়েছে। ও খুব ভাল
ছেলেরে তোর কথায় ঠিক। আরও অনেক
কথা বলে রেখে দেয়।
.
--রাতে খাবার খেয়ে দুজন ঘুমাতে
যায়। বিন্দুর আজ আর বিছানায়
কোলবালিশ দিতে ইচ্ছে করছে না।
থাক আর মাঝ দিয়ে কোন বাঁধা
দেবোনা বিন্দু এসব ভাবছিলো।
.
--বিন্দুর বিছানায় যাওয়ার আগেই
সামান্ত বিছানা ঠিক করে মাঝে
কোলবালিশ দিয়ে শুয়ে পরে।
.
-বিন্দু এসব দেখে মন খারাপ করে, তবু
মুখে কিছু বলতে পারেনা। দুজন শুয়ে
আছে,
.
-আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
(সামান্ত)
-কেন? (বিন্দু)
-আজ আমার সাথে গিয়েছেন, শিশুদের
সময় দিয়েছেন তাই (সামান্ত)
-আপনাকে তো আমার ধন্যবাদ দিতে
হবে, আপনি আমাকে নিয়ে গিয়েছেন
তাই শিশুদের সময় দিতে পেরে
নিজেরো ভাল লেগেছে।
.
--এসব কথা বলতে বলতে সামান্ত আগেই
ঘুমিয়ে যায়। সামান্তর শরির এখন অনেক
উইক তারাতারি ঘুমিয়ে গিয়েছে।
.
পরেরদিন সকাল সকাল বিন্দুকে নিতে
বিন্দুর পরিবার চলে আসে। বিন্দু
যেহেতু আগেই বলে আসছে ?
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ā§Šā§Ļ āĻāĻĒ্āϰিāϞ, ⧍ā§Ļā§§ā§
531
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧍:⧧⧧ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ