āĻŽāĻ™্āĻ—āϞāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ģ āĻāĻĒ্āϰিāϞ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

493

গল্পের নামঃ একটি অভিমানময় প্রেম
লেখকঃ Shuvro Sobuj
.
.
মিতু এক পা দু পা করে সামনে যেয়ে আবার ব্যাক হয়ে আমার সামনে চলে আসলো। আমার একটু চিন্তা লাগলো। মেয়েটা নিশ্চয় আমার সাথে আর কথাই বলবে না। আমি এমন কেন! ওভাবে রিএক্ট না করলে কি হতো?
তবে মনে মনে আশংকা যা করছিলাম তা হলো না। রিতু আমাকে বলল..
- যাও পড়তে বসো।
আমি অবাক হলাম। সেই সম্বন্ধে কিছু বলল না।তবে ও'র মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে, আমি নিশ্চিত।
.
রাত হলো।বই নাড়াচাড়া করছি।পড়ছি না।একদম পড়তে ইচ্ছে করছে না। মন বলছে মিতু ছাদে আছে। উঠে চলে গেলাম।
ছাদে এসে দেখলাম মিতু ছাদের এক পাশে ঠিক এক কোণে দাঁড়িয়ে এয়ারফোন কানে গুঁজে গান শুনছে আর ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত গাড়িগুলার আসা যাওয়া দেখছে। আমি পাশে যেয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মিতু আমার দিকে তাকিয়ে বলল..
- পড়া শেষ?
-হু।
- কিছু বলবে?
- হু।
- বলো?
- সরি!
- ইটস ওকে।খাইছো?
- না।
- আমি শুয়ে পড়বো। বাই।
.
মিতু কান থেকে এয়ারফোন খুলে নিচে চলে গেল।আমি চলে যাওয়া দেখতে থাকলাম। আমি জানি মিতু খুব কষ্ট পাইছে। তবে মিতু কি জানে আমিও সম পরিমাণের কষ্ট পাইছি মিতুকে ওভাবে দেখে!
.
বিকালে কলেজ থেকে ফিরতে দেখলাম মিতু এক ছেলের সাথে বসে বসে আইসক্রিম খাচ্ছে। খুব পাশাপাশি বসে। আমার কেন যেন এই জিনিসটা দেখে খুব খারাপ লাগলো। ছেলেটাকে আমি চিনি।মিতুর ক্লাসমেট। এরকমভাবে বসা আর ক্লাসমেট থাকায় আমার মনে হলো ছেলেটার সাথে মিতুর সম্পর্ক আছে। মিতুর কারো সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিলো।
তার কারণ হলো, মিতুর সাথে আমার সম্পর্ক নাই ঠিকি কিন্তু অন্যকারো সাথে ও'র সম্পর্ক থাকতে পারে না, কোনোভাবেই না।এই জিনিসটাই মনের মাঝে শক্তপোক্তভাবে গেঁথে গিয়েছিল।
.
আমার অজানা ছিলো না যে আমি মিতুর প্রতি দুর্বল নই।সেই কারণে কলেজ থেকে ফেরার পর সন্ধ্যার একটু আগে মিতু ছাদে এসে কাপড় নিতে যাবে।আমি তখন তাকে ডেকে বললাম..
- এই দাঁড়াও।
মিতু চোখ ভাজ করে আমার দিকে তাকালো। মিতুকে ছেলেটির সাথে দেখার পর খুব রাগ নিয়ে বাসায় চলে আসি।দুপুরে খাইও নি। ছাদে এসে বসেছিলাম।
- কিছু বলবে?
- হুম।
- বলো?
- ছেলেটি কে?
মিতু আমার দিকে অবাক চোখে তাকালো। কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকানোর পর স্বাভাবিক হয়ে বলল..
-  আমার ফ্রেন্ড। তুমি আমাদের দেখেছো নাকি?
- দেখায় খুব সমস্যা হলো, তাইনা?
- আশ্চর্য শুভ্র তুমি কি বলতে চাইছো?
- কিছুনা।
- কি বুঝাতে চাইছো।বলো?
মিতু অনেকটা জোরেই বলল।আমি রেগে গিয়ে বললাম..
- এক মানুষ হয়ে দুই নৌকায় পা দিতে যাইয়ো না।পা পিছলে পড়ে যাবে। ভালোই তো হষ্টিনষ্টি করতে পারো।
.
কথাটা শুনে মিতু মুখ কালো করে মাথা নুয়ে রইলো।তারপর কয়েক পা হেঁটে চলে যেয়ে এসে বলল, যাও পড়তে বসো।
আমি তখন নিজেকে কণ্ট্রোল করতে না পেরে একটু বেশিই বলে ফেলেছি।যা মোটেও ঠিক হয়নি। আমার সাথে মিতুর কোনো সম্পর্ক নেই, বিধায় ও'র যা ইচ্ছা করুক আমার তাতে কি!
আমার কেন এতো জ্বলে!
এইরকম কিছু বলবে ভাবছিলাম। কিন্তু তখন সেসব কিছু বলেনি।নিজেকে সামলিয়ে নিয়েছিল।
তবে রেগেছে ঠিকই, তাইতো এখন আমি আসায় দু-একটা কথা বলেই গান শুনা বাদ দিয়ে চলে গেছে।
.
আমার মনে হচ্ছে আমি বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি। মোটেও ঠিক না।ও প্রেম করতে চাইছে করুক।আমার সরে পড়া উচিৎ। আবেগকে কণ্ট্রোল করা উচিৎ।
.
মিতু আর আমরা একইদিন এই বাসায় উঠেছি। মিতু আমার এক ক্লাস ছোট। চিকন দেহ অথচ মায়াবী চেহারার মেয়েটিকে প্রথম দিন দেখেই মনে হয়েছিল এই মেয়েকে মনে হয় আগে বহুবার দেখেছি, অনেক পরিচিত। তাই হলো।
দু তিনদিন পর,,,ছাদে বসে গল্প বই পড়ছিলাম। মিতু একটু পর এসে এদিক- ওদিক চাওয়া চাওয়ি করে আমার থেকে একটু দূরে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে রইলো। আমি গল্প বই পড়ার মাঝেমাঝে ও'র দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছিলাম । দেখলাম মিতুও আমার দিকে মাঝেমাঝে তাকাচ্ছে। আমার বুঝতে কষ্ট হচ্ছিলো, মেয়েটা শুধু শুধু এইখানে দাঁড়িয়ে থাকবে কেন? আর আমার দিকে তাকাবেই কেন? পরিচিত হতে চাচ্ছে?
.
কিছুক্ষণ পর মেয়েটা নিচে চলে গেল। এভাবে মাঝেমাঝে দেখা হতো ছাদে, কিন্তু কথা হতো না। আমি ভেবেছিলাম মেয়েটা সম্ভবত চাপা স্বভাবের, ঠিক আমার মতোই। খুব প্রয়োজন ছাড়া কথা বলবনা।
.
এরকিছুদিন পর কথা হলো। তবে সেদিন আমি লজ্জাই পেলাম।
কলেজ যাবার জন্য আমি দাঁড়িয়ে আছি, মিতু কিছুক্ষণ পর এসে দাঁড়ালো। এর কিছুদিন আগে মিতু আমাদের কলেজে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়।তাই প্রতিদিন প্রায় একই সাথে কলেজ যাবার জন্য বের হতাম।সেদিন গাড়ি পাচ্ছিলাম না কেউই। কিছুক্ষণ পর একটা রিক্সা আসলে আমি উঠে যাই। আমি একটু আগ বাড়িয়ে দাঁড়িয়েছিলাম বিধায় রিক্সাটা আমিই পেলাম।তবে রিক্সাওয়ালা সম্ভবত আমাকে ও'র রিক্সায় দেখার চেয়ে মিতুকে দেখলে বেশি খুশি হতো।অন্ততপক্ষে ও'র মুখ দেখে তাই বুঝা যাচ্ছে।
- যাবে?
মিতু আমার দিকে অবাক চোখে তাকালো।আমি আবার বললাম..
- না মানে একই কলেজের তো তাই।আর লেট হয়ে যাচ্ছে।
মিতু বলল..
- সরি।যাব না।আপনিই যান।
কথাটা বলে একটু হাসলো।আমি একটু অপমানিত হলাম।কেন অচেনা মেয়েটাকে রিক্সা ভাগাভাগির কথা বললাম? কেন বেশি দরদ দেখাতে গেলাম?
.
ওইদিন বিকালে মিতু ছাদে বসে গান গাওয়ার চেষ্টা করছিল।আমি লক্ষ্য করিনি প্রথমে। আমি ছাদে গল্প বই হাতে ঢুকার পর বুঝলাম। ছাদের দরজার শব্দ শুনে মিতু আচমকা গান থামিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বেশ বিরক্তই হলো, চোখমুখ দেখে তাই বুঝা গেল। মিতু নিচে চলে গেল। শালার আবার অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়লাম। কেন এখন আসতেই হলো আমাকে? একটু পরে আসলে কি হতো? অন্তত মেয়েটা গানের রেওয়াজ ভালভাবে করতে পারতো।
.
এর কয়েকদিন পর। কলেজে আমলিগ, বেম্পির ছেলেরা একটু কথাকাটাকাটি থেকে বড় ধরণের কিছু একটা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। কলেজ থেকে বেরিয়ে দেখি মিতুও তড়িঘড়ি করে কলেজ থেকে বের হয়ে রিকশা, অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিল, কিন্তু পাচ্ছিলো না। রিকশা ও'র কাছে নিয়ে বললাম..
- উঠে পড়ুন। ভাল না অবস্থা।
মিতু ইতস্ততবোধ করলে আমি জোর করে হাতে ধরে উঠিয়ে নেই।
পরে বিকালে মিতুকে বলি "সরি হাত ধরে উঠানোতে।আসলে যা কাণ্ড হচ্ছিলো না, তাই।"
- না ঠিক আছে। আর আমিও সরি সেদিন আপনার সাথে কলেজে না যাওয়াতে।
এই কথা বলে মিতু চলে যায়। আমি স্বাগতমটুকু দিব কি আগেই চলে গেল।এতো চটরপটর করে কেন।
.
তারপর থেকে টুকটাক কথা হতো। অবশ্য এর মাঝে মিতুকে তুমি করে ডাকার কথা বলি।সাথে বলি বন্ধুর মতো তো তাই!
মিতু মেনে নেয়।নিবেই বা না কেন? এতোদিন একই বাসায় থাকার পর,প্রতিদিন একই সাথে কলেজ যাবার পর, টুকটাক কথা বলার পর মেনে না নেওয়ার কারণ নেই।.
.
তবে এবার সম্ভবত মিতু আর মানবে না। আজ বেশি করে ফেলেছি। রাত অনেক হওয়াতে আজকের মতো ঘুমাতে চলে গেলাম।
.
সকালে কলেজ যাবার জন্য রাস্তায় বের হয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখি আজ মিতু আসছে না।ব্যাপার কি!  ওহ বুঝলাম মিতু প্রচুর রেগে আছে আমার উপর সেজন্য হয়তো! আরেকটা জিনিস হতে পারে।মিতুর কাছ থেকে ওইভাবে কৈফিয়ত চাওয়ার পর মিতু কি কিছু আচ্ করতে পেরেছে আমার সম্পর্কে? টেনশন বেড়েই চলছে। হঠাৎ দেখি মিতু কলেজ যাবার জন্য বের হচ্ছে। হৃদয়ে একটু তৃপ্তির সুবাতাস বয়ে গেল। আমার দিকে একবার তাকিয়ে আর তাকালো না। আমার খুব মন খারাপ হয়ে গেল।
তাকাবেই বা কেন? ও'র তো এখন জুটে গেছে।তাকানোর কি দরকার! একসাথে দুটা রিকশা চলে আসায় রিকশা ভাগাভাগির প্রশ্ন আসলো না। এসেও লাভ নেই, মিতু আর আমার সাথে যাবে না।
.
কলেজ থেকে ফিরে দেখলাম মিতু আমাদের ঘরে বসে হিয়ার সাথে টিভি দেখছে। কলেজ থেকে ফিরতে আমার দেরি হয়ে গেল। প্র‍্যাক্টিকেল ক্লাস ছিল। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে হিয়াকে বললাম..
- রিমোটটা দে।একটা খেলা আছে।
মিতু ইশারা করলো না দিতে। হিয়া তাইই করলো।
- উফ ভাইয়া একটা নাটক দেখছি, দেখেছোনা?
তুমি খেয়ে আসো।তারপর দিবো।
.
আমি বিরক্তি নিয়ে চলে গেলাম।মিতু মেয়েটা না থাকলে জোর করেই রিমোটটা নিতাম।
রাতে শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপছিলাম। মিতু হঠাৎ করেই আমার রুমে চলে আসলো। এসে অবাক চোখে তাকালো।আমি উঠে বসলাম। আসলে এখন পড়ায় থাকার কথা।কিন্তু আমাকে মোবাইল টিপায় দেখে সম্ভবত অবাক হয়েছে। বলল..
- তোমার হাইয়ার ম্যাথের নোটখাতাটা দিবে? একটা চ্যাপ্টারের অংক আমার কাছে নেই।
আমি একটু থম ধরে ও'র দিকে তাকিয়েছিলাম। রাতে এসেই নিতে হবে? কোনোদিন তো মিতু আমাদের বাসায় রাতে আসেনি?  আমি যদি এখন না দেই তাহলে কেমন হয়? যদি বলি তোমার ওই বন্ধুটির কাছ থেকে নাও না! আমার থেকে না নিলেও চলবো।
মিতু আবার বলল..
- সরি। ওভাবে এইসময়ে তোমার রুমে আমার আসা ঠিক হয়নি। তোমাকে এসে তোমার গুরুত্বপূর্ণ কাজে ডিস্টার্ব দিলাম। খুব দরকার ছিল তাই।
.
আমি একটু হাসলাম। নীরব বাঁশ দিলো আমাকে।আমার গুরুত্বপূর্ণ কাজ মোবাইল চালানো নয় মেয়ে।আজ তোমার কথাই ভেবে আর পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। তুমি কি তা বুঝবে!
- না না ভালো করেছো এসে। ওই যে টেবিলের তিন নং সারিতে লাল খাতা দেখছো না? ওটাই।
.
মিতু একটু হেসে নিয়ে নিলো। দরজা পর্যন্ত যেয়ে আবার ঘুরলো।
- থ্যাংক্স।
আমি হাসি উপহার দিলাম। আচ্ছা এখন যদি ওই ছেলেটি খাতা দিতো তাহলে মিতু কি বলতো? সম্ভবত বলতো, " লাভ ইউ সোনা। খাতাটি আমি খুব যত্ন করে রাখবো।"
যেহেতু আমি মিতুর সোনাদানা নই তাই আমার খাতা ছ্যাছড়ার মতো পৃষ্ঠা উল্টাবে,নোংরা জায়গায় ফেলে রাখবে।
.
এভাবে কয়েকদিন চলে গেল। এরমাঝে মিতু ও আমার সাথে আগেরমতো আর ফ্রি হয়ে কথা বলেনি, আমিও বলিনি।
কলেজে সকালে যা দেখে বিরক্তি নিয়ে ক্লাসে ঢুকলাম। ক্লাস শেষ হবার পর কলেজ থেকে এখন বের হতে হতে তাই দেখছি।সকালে দেখি মিতু সেদিনের ছেলেটির পাশ ঘেষে কথা বলতে বলতে ক্লাসে ঢুকছে,  দেখে খুব অস্বস্তিবোধ করলাম। এখন আরো মারাত্মক অবস্থা। ছেলেটির গায়ে হাত মাঝেমধ্যে দিয়ে কথা বলতে বলতে হাটছে।তার একটু পিছনে ও'র বান্ধবীরা।আর ও'র বান্ধবীদের ঠিক পিছনে আমি।
নিজেই নিজেকে প্রচুর গালি দিচ্ছি।কেন প্র‍্যাক্টিকেল ক্লাসটা করতে গেলাম না।অন্ততপক্ষে এই দৃশ্য দেখতে হতো না।
আমি বুঝে গিয়েছি মিতু আমার কাছে শুধু বন্ধুর মতো থাকতে চেয়েছে, এর বেশি না। এর বেশি চাওয়ার আশংকা যেই পেল সেই থেকে আমার সাথে কথা বলা বাদ।
.
বাসায় এসে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।উঠে দেখি রাত ৮ টা হয়ে গেছে। ফ্রেশ হওয়ার জন্য যাব তখন মনে পড়লো ৭টায় তো বাংলাদেশের খেলা আছে। টিভির রুমে যেয়ে দেখি মিতু বসে টিভি দেখছে। হিয়া সম্ভবত অন্যকোথাও আছে। আমাকে দেখে মিতু একটু অপ্রস্তুত হওয়ার ভঙ্গি করলো। মিতুদের টিভিতে সমস্যা হয়েছে কয়েকদিন ধরে, তাই আসছে রাতে। আমি ঘুরেফিরে চলে যাব।তখন মিতু বলল..
- এই।
- হু।
- তোমার নোটখাতা। সরি দেরি করে ফেললাম দিতে।আসলে খাতা নিয়ে দেখি অনেক অঙ্ক নেই আমার।
- কোনো সমস্যা নাই।আমার তো এখন দরকার নেই।আগামী সপ্তাহ থেকে লাগবে।
এই বলে খাতা নিয়ে রুমে এসে গেলাম। পড়তে ইচ্ছা নেই তবুও বই খুলে নাড়াচাড়া করছি। খাতাটা খুলে উলট- পালট করার সময় শেষ পৃষ্ঠায় ঘুটিঘুটি হাতের লেখা দেখে বুঝতে অসুবিধা হলো না লেখাটা মিতুর।পড়ে দেখলাম। যা লেখা ছিল।
- ভালবাসা আসলে কি? কোথা হতে জন্ম নেয়? কিভাবে তার বিস্তৃতি!
-----বুঝলে না আমায়।
.
আমার রাগ উঠলো। মেয়ে এসব কথা আমার খাতায় লিখবে কেন? তোমার ওই ছেলেটির খাতা হলে ভিন্ন কথা।
টিভির রুমে যেয়ে দেখি মিতু নেই, চলে গেছে। অনেকদিন পর মিতুদের বাসায় আসলাম। মিতুর মা'কে মিতু কোথায় জানার পর মিতুর রুমে এসে দেখি মিতু পড়ছে।
- খাতাটা কি বাজারের কেনা পণ্য?
মিতু হঠাৎ স্তম্ভিত হয়ে আমার দিকে তাকালো। মিতু প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।খাতা খুলে মিতুকে লেখাগুলো দেখলাম।
- ওহ সরি। ভুল করে তোমার খাতায় লিখে ফেলছিলাম। ডায়েরিতে লিখতে যেয়ে...!
- তুমি আসলেই একটা খাটাশ মেয়ে।
একটু জোরেই বলে ফেললাম। মিতুর মা এসে যান।এসে খাতা দেখিয়ে মিতুকে গালি দেওয়াতে বুঝে যান খাতায় কিছু একটা আছে।খাতায় মিতুর লেখা আর সামনে আমার নাম,মানে আমার খাতায় এসব লেখা দেখে মিতুর মা মিতুকে বলেন..
- ওর খাতায় এসব কেন? বল? বল?
- ভুল হয়ে গেছে মা।
- ফাইজলামি করছিস?
মিতুর গালে চড় বসিয়ে দেন। আমি বুঝতে পারছিলাম না কি থেকে কি হচ্ছে।
- তুমি চলে যাও বাবা। ও ফাজলামির সীমা ছাড়িয়েছে।
.
আমি চলে আসলাম। আমার কি মনের ক্ষোভে পুরাতন ব্যথাহত হয়ে ছোট একটা বিষয় নিয়ে ওভাবে ও'র রুমে রাত্রেই চলে যাওয়া উচিৎ হলো? কেন যে ছেলেটা মাঝে ঢুকলো! নয়তো আজ মিতুর এই লেখাগুলো পরম আনন্দে সুন্দর করে ঘুছিয়ে রাখতাম। শেষ লেখাটি ছিল,"আমাকে বুঝলে না"। ছেলেটা কি মিতুকে বুঝে না?
.
বিকালে খাওয়ার পর ছাদে ঢুকবো দেখি মিতু উদাস হয়ে রেলিং ধরে সামনের দিকে চেয়ে আছে। চুলগুলো ছেড়ে দিয়েছে। ভীষণ ভাল লাগছে। মিতুর পাশে যেয়ে "সরি " বলতেই চমকে উঠলো। মিতুর চোখ লাল হয়ে আছে।কেঁদেছে খুব।নিজেই নিজেকে প্রচুর গালি দিতে লাগলাম। কেন এতো মাথা গরম করে ও'র বাসায় চলে যেতে হলো!
.
মিতু অন্যদিকে মুখ করে নিলো।
- লেগেছে খুব?
চুপ হয়ে রইলো। কিছু বলার লক্ষণই নাই।
- আসলে মাথা একটু বেশি গরম হয়ে গিয়েছিল।
- হুম। আমি আসি?
প্রশ্ন করে উত্তর না শুনে চলে গেল।এই মেয়ে এতো অভিমানী, দেমাগি কেন!
.
রাতে আটটার সময় পড়া থেকে উঠে টিভির রুমে এসে দেখলাম শুধুমাত্র মা আর হিয়া তাদের প্রিয় নাটক টা দেখেছে। আমি যাকে খুঁজছি সে আর আসলো না আজ।বড্ড মন খারাপ হয়ে গেল।
.
পরেরদিন কলেজ থেকে ফিরতে দেখি মিতু সেই ছেলেটার সাথে আর কথা বলছে না। ছেলেটা আরেকটা মেয়ের সাথে সামনে।তারপর মিতু আর তার ফ্রেন্ড।এর একটি দূরে আমি। ছেলেটা কি ছ্যাকা দিলো?  দিলে খুব ভাল করেছে। দেমাগি মেয়ে একটা।
.
এর পরেরদিন। ক্লাসমেট মেয়ে একটা খুব হেসে কথা বলছিল আমার সাথে। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম মিতু ও'র ক্লাসের বারান্দা থেকে আমাদের দেখছে। আমার মনে হলো তাকানোটা স্বাভাবিক নয়। আমি মনের মাঝে অন্যচিন্তা নিয়ে বাসায় চলে আসি।
- মেয়েটি কে ছিল?
- ক্লাসমেট। কেন?
- এমনিই।
কলেজ থেকে বাসায় ফেরার সময় মিতুর সাথে ফিরছি।অনেকদিন পর একসাথে ফিরছি। মিতুই আমার সাথে আসছে। আমি একসাথে আসতে চাইতাম না।মিতুর পিছে ছেলেটির ঘুর ঘুর কমে যাওয়াতে আসলাম।
- একটা কথা বলি?
- বলো?
- অনেকদিন পর একসাথে ফিরছি।তাইনা?
মিতু আমার কথা শুনে অল্প হাসলো।হাসার পর আবার আগের মত মুখ ভার করে ফেললো।
- ওইদিনের ঘটনা পরে এখনো রেগে আছো,তাইনা?
- কোনোদিনের?
- আমার খাতায় যে!
- ওহ।হুম।
-  অহ মাই গড! সত্যি রেগে আছো?
- হুম। আচ্ছা খাতায় লিখছি বলে মা'কে কৌশল করে আনিয়ে আমাকে চড় মারায়ে খুব খুশি,তাইনা? স্বার্থপর!
- স্বার্থপর কেন?
- দেখেছি স্বার্থপরতা তাই।
.
আর বেশি কথা হয়নি। আমি বুঝে গেলাম স্বার্থপর কেন বলছে।মিতুকে যে পাবোনা,তাই ভাবছে রেগে এসব করছি।আসলে ঠিক তাই।
আজ রাতে কয়েকদিন পর মিতু আসলো টিভি দেখতে। এই প্রথম আমি ওদের সাথে বসে টিভি দেখছি।মিতু আমাকে দেখে একটু হাসছিল। আমি নাটক না দেখে মিতুকে আড়চোখে বেশি দেখছি।মিতু বিষয়টা বুঝে গিয়ে কিছুসময় দেখে উঠে চলে গেল হিয়াকে "আসিরে"।
আমার মনের মাঝে এক চিলতে অভিমানের সুক্ষ্ম রেখা ছুঁয়ে গেল।রাগ করে উঠে গেলাম।হিয়া আমার দিকে কেমন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো।
.
- ও ভাবে না উঠে আসলে হতো।ওকে,তুমি টিভি দেখতে আসলে আমি আর দেখতে আসবো না।সত্যি বলছি।
.
রাত ১০টাত দিকে কারেন্ট চলে যাওয়াতে হিয়া, আমি আর মিতু ছাদে আসছিলাম। হিয়াকে মা ডাকায় আমি আর মিতু রয়ে গেলাম।মিতু নিচে চলে যাবে যাবে আমি ও'র হাতটা ধরে ওইকথা বললাম।
মিতু একটু হাসলো। বলল..
- মা অনেকক্ষণ ধরে একা একা রান্না করছেন।যাই প্লীজ?
মিতুর এভাবে বলার মাঝে আলাদা স্বাদ পেলাম।
- টিভি দেখতে আসিও প্রতিদিন। প্লীজ?
- আমাদের টিভিতো বিকালে বাবা ঠিক করে এনেছিলেন।
- তাহলে আসলে যে!
অদ্ভুতভাবে হেসে বলল..
- এমনি।হাত ছাড়ো না।মা ডাকবে তো।
আমি হাত ছেড়ে দিলাম। মেয়েটি কি গেইম খেলছে আমাকে নিয়ে! কখনো খুব মায়া নিয়ে কথা বলেতো কখনো ইগনোর করে কথা বলে।
.
কলেজে আসার পর এমন একটা ঘটনা যে ঘটবে জানতাম না। রিয়াদের সাথে মিতুদের ক্লাসে এসেছি একটা দরকারে। মিতুর পাশে মিতুর সাথে যে ছেলেকে দেখতাম সে আরো কয়েকটা ছেলে,মেয়ে গোল হয়ে আড্ডা দিচ্ছে।আমি আগাতাম না, কিন্তু আমার মনে হলো আমার নাম বলল মিতু।রিয়াদের পিছন অথচ আড্ডার একটু কাছে মিতু বা আড্ডার কেউ দেখবে না সেভাবে দাঁড়ালাম। ছেলেটি বলল..
- তুই একটু একটু কাছ আন আবার ইগনোর করে যা। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। মনিরাকে এভাবে পটিয়েছি।
- বান্দর!
যে বান্দর বলল সেই মনিরা নিশ্চিত।
- আমার এসব ভালোলাগেনা আর। আর কষ্ট দিতে ইচ্ছে হয়না রে। তোর সাথে অভিনয় করে দেখেছিস ফলাফল জিরো।বড্ড চাপা স্বভাবের।
মিতু বলল।
.
মিতুর কথাশুনে আমিতো আমিতে নেই। মিতু আমাকে নিয়ে বলছে তো! সত্যি আমাকে নিয়ে বলছে! আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না। রিয়াদের কাজ শেষে খুব সাবধানে বেরিয়ে আসলাম।
.
রাতে আটটা বাজার আগেই পড়া থেকে উঠে গেলাম। জানি আজ মিতু আসবে না।তাই ভেবেচিন্তে মিতুদের বাসায় ঢুকলাম।
আন্টি রানছে।আন্টিকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললাম..
- মিতু,  হিয়া তোমাকে ডাকছে। ও'র পা কেটে গেছে তাই আসতে পারছে না।
-কখন কাটছে বাবা?
- না আন্টি সকালে।তেমন একটা কাটে নি।
.
আসলেই সকালে হিয়া নখ ফেলতে চামড়ায় নখ কাটার বসিয়ে দিয়েছিল।তবে খুব সামান্যই কেটেছিলো।
- শুনে আস না মিতু।
মিতুর মা'র কথায় মিতু আমার সাথে আসলো। মিতু বাইরে আসতেই ও'র হাত ধরে ফেললাম।
- কি হচ্ছে এসব।
- হয়নি হবে।
- মানে।
- আমাকে এভাবে কষ্ট দিলে কেন? এভাবে বোকা বানালে?
- তুমি দাও নি?
- না।
- এহ। খাতায় দুটা লাইন কি এক লিখছিলাম। সেটার জন্য....!
- সেইজন্য তো সরি বলছিলাম।ওকে আবার বলছি সরি,সরি।
মিতুর দুটা হাত শক্ত করে ধরে বললাম।
- হুম।থাক আর সরি বলতে হবেনা।
নিচে থেকে কেউ উঠার শব্দ পেয়ে মিতু আর আমি আমাদের বাসায় ঢুকে গেলাম।
.
হিয়াকে কিছু না বলে হিয়ার পাশে মিতু বসে বলল..
- কয় পর্ব গেল রে।
- এক পর্ব। আরেকটু আগে আসতে!
- পড়া থেকে উঠে দেখি লেট হয়ে গেছে।
.
কি সুন্দর মিথ্যা বলল মিতু।আমার সাথেই তো দশ মিনিট ব্যয় করলো। দ্বিতীয়বার বিজ্ঞাপন আসায় মায়ের ডাকে হিয়া রান্না ঘরে যেতেই আমি মিতুর একদম কাছে এসে বসলাম। ও'র ডান হাতের ফাঁকে আমার বাম হাত ঢুকিয়ে টিভির দিকে তাকিয়ে রইলাম। মিতু হাতের দিকে একবার তাকিয়ে টিভি দেখায় মন দিলো। একটা বিজ্ঞাপনে পেপসোডেন্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করায় ছেলেটা মেয়েটাকে " ভালবাসি তোমাকে" বলতে পারলো।আমি মিতুকে বললাম..
- ছেলেটা কি বলল শুনছো?
মিতু একটু হেসে বলল..
- জানিনা। তুমি বলে দাও।
- তুমি বলো।
- না তুমি।
- মিতু,  হিয়া সময় গুণে গেছে।আড়াই মিনিট এডস দিবে।আর দশ সেকেন্ড। কুইক বলো।
- তোমাকে..
৫,৪,৩,২,১
হিয়া আসার শব্দ শুনে আমার জায়গায় অভিমান মুখ করে চলে গেলাম।
মিতু আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। আমি মুখ বাঁকালাম।
তবে মিতুর মুখ থেকে আগে শুনে ছাড়বোই। সেটা হয়তো কাল। নয়তো এই সপ্তাহে।
অনেক রাগ,অভিমান অবিশ্বাসের পর দুই অভিমানীর একে অপরের ভালবাসাটা উপভোগ করার সময় এসেছে!!!!

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ