গল্পঃ মেয়েটির ভালোবাসা।
.
.
-ওই কি করছো এখন। (অর্পিতা)
> বসে বসে বিড়ি টানছি (রিহান)
-এতো কমদামী জিনিষ খেতে নেই,দামী জিনিষ খাবে।(অর্পিতা)
> টাকা নাই দামী জিনিষ খাওয়ার। (রিহান)
-বিড়ি বাদ দিয়ে আরো ভালো ও উন্নত মানের সিগারেট আছে,ওগুলো খাবে এখন থেকে। (অর্পিতা)
> তোমার বাবা যদি টাকা দেই তাহলে খাবো। (রিহান)
-আমার বাবা সিগারেট কিনতে তোমাকে টাকা দেবো কেনো,আর শুনো আমার বাবা কেনদিনও সিগারেট খাই না।
> কেনো দিবে না টাকা,ওনার একমাত্র জামাই আমি,ওনার সবকিছুই তো আমার।
-আমি তোমাকে বিয়ে করলে তো সব পাবে,তার আগে তো আর পাবে না।
> বিয়ে তো আমাকে করবেই,আর তাহলেই তিনি তার জামাইকে সিগারেট কিনতে অব্যশই টাকা দিবে।
- আমি তোমাকে বিয়ে করবো না।
> কেনো,নতুন কাউকে পেয়েছো নাকি।?
- হুম পেয়েছি, তোমার থেকে অনেক ভালো,ও স্মার্ট।
> তাহলে আমার আর সিগারেট খাওয়া হলো না,
এখন সারাজীবন কমদামের বিড়ি খেয়ে চলতে হবে,
আচ্ছা তাহলে রাখি তুমি তোমার ওই নতুন ম্মার্ট ছেলেকে নিয়ে সুখি হও।
-না না ফোনটা কাটবে না প্লিজ।
.
রিহান আর কোন কথা না বলে ফোনটা কেটে দিলো।
ফোন কেটে দিয়ে রিহান আবারো ক্যারাম খেলায় মন দিলো।
এখন সে বাজারে ক্যারাম খেলছে,আর সেখান থেকে কিছুদুরেই অর্পিতার বাড়ি।
রিহান জানে আবারো অর্পিতা তাকে ফোন দেবে,শুধু একবার না এখনো অনেকবার অর্পিতা তাকে ফোন করবে।
হয়তো বেশিই ভালোবাসে তাকে,এইজন্য সে রিহানের এতো কেয়ার করে ।
.
.
আধাঘন্টা পরে আবারো ফোন বেজে উঠলো,
রিহান পকেট থেকে ফোন বের করে দেখলো অর্পিতা ফোন করেছে,
.
-হ্যাঁ বলো,আবার কেনো ফোন করেছো,ওই স্মার্ট ছেলেটার সাথে কি ঝগড়া হলো নাকি। (রিহান)
> ওই তুমি সবসময় বেশি বুঝো।
ওটা আমি মজা করেছিলাম।
তুমি এখন কোথাই আছো বলো। (অর্পিতা)
- বাজারে আছি কেনো?
> কি করছো বাজারে? (অর্পিতা)
- ক্যারাম খেলছি।
> ক্যারাম খেলা লাগবে না এখন,
এখনি বাড়িতে যাও।
-কেনো এখন বাড়িতে গিয়ে কি করবো,যাদের বউ আছে সেসব ছেলে আগে বাড়িতে যাবে।
> কেনো বউ ছাড়া বুঝি আগে বাড়িতে যায় না কোন ছেলে।
- আমার মতে না।
কারন ওদের বউ থাকলে ওরাই আগে বাড়িতে যায় কারন,বউয়ের সাথে দুষ্টুমী করবে ও বউয়ের ভালোবাসা পাবে।
> আসছেরে আমার বউ গবেষক,তোমাকে যা বলেছি তাই করো, আর একটি কথাও বলবে না,ভদ্র ছেলের মতন বাড়িতে যাও (রেগে গিয়ে)
-একটা বিড়ি খেতে মন চাইছে।
> মিথ্যা কথা বলা বাদ দাও,তুমি কোনদিনও বিড়ি সিগারেট খাবে না সেটা আমি জানি ।
এসব আমাকে বলে কোন লাভ হবে না।
এখন বাড়িতে যাও বলছি।
-ঠিক আছে যাচ্ছি,আর কিভাবে বুঝলে আমি বিড়ি সিগারেট খাবো না।
> তোমার প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস। আর হ্যাঁ,কতক্ষন লাগবে বাড়ি যেতে? (অর্পিতা)
- বিশ মিনিটের মতন লাগবে।
> আচ্ছা যাও।
.
অর্পিতা ফোন কেটে দিয়ে অপেক্ষা করে বিশ মিনিট সময়ের।
কারন বিশ মিনিট পরে সে রিহানকে আবারো ফোন দেবে।
.
রিহান মোবাইলেরর দিকে তাকিয়ে দেখে রাত্রি দশটা বাজে।
রাত্রি দশটা রিহানের কাছে কিছুই না।
প্রতিদিনি সে বেশি রাত করে বাড়ির বাইরে থাকে,
কিন্তু মাঝে মাঝে অর্পিতার জন্য পারে না।
.
অর্পিতার সাথে রিহানের সম্পর্ক দুই বছরের।
যেদিন থেকে ওদের সম্পর্ক শুরু হয়েছে,সেদিন থেকে অর্পিতা রিহানের পেছনে আঠার মতন লেগে আছে।
সেইজন্য রিহান কোন কাজ মনের মত করতে পারে না।
সবসময় অর্পিতা রিহানকে চোখে চোখে রাখে।
.
.
মেয়েরা এমন কেনো যাকে ভালোবাসে তাকে সবর্দা চোখে চোখে রাখে,তারা মনে করে ছেলেরা হচ্ছে ফাঁকিবাজ,তাদের চোখে চোখে না রাখলে অন্য মেয়ের সাথে আবারো প্রেম করতে পারে,
এইজন্যই মেয়েরা যাকে ভালোবাসে তার উপর কড়া নজর রাখে।
.
.
রিহান বাড়িতে এসে দেখে বাড়ির গেট বন্ধ করা।
রিহান এতে করে কোনরকম বিচলিত হয় না।
রিহান প্রায় দিনি দেখে বাড়ির গেট বন্ধ।
এটা এখন রিহানের কাছে একটা গেইম হয়ে গেছে।
রিহানের বাবা মা আগেই সবকিছু বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে।
সেইজন্য প্রতিদিন রিহান বাড়ির গেট বন্ধ পাই।
.
রিহান গেটের কাছে দাড়িয়ে আছে।
আবারো ফোন আসে রিহানের ফোনে,
.
-বাড়িতো গিয়েছো (অর্পিতা)
> গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি,(রিহান)
- কেনো গেটের কাছে দাড়িয়ে আছো, ভেতরে যাও।
> ভেতর থেকে গেট বন্ধ করা।
-তাহলে তোমার বাবা,অথবা মা কে ডাকো।
> ওদের ডাকা যাবে না এখন,তাহলে ওদের ঘুমের সমস্যা হবে।
-তাই বলে বাড়ির বাইরে থাকবে।
> না।
-তাহলে কিভাবে বাড়ির ভিতরে যাবে।
> বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে।
-না না তুমি এভাবে বাড়ির ভেতরে যাবে না,যদি তোমার কিছু হয়ে যায়।
> তুমি কিছু ভেবো না,আমার কিছুই হবে না।
-আচ্ছা সাবধানে করবে সব।
আমার অনেক ভয় হয়।
> ঠিক আছে তুমি চিন্তা করো না ।
- বললেই হলো চিন্তা করো না,তোমাকে ঘিরেই তো আমার সব।
তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি বাঁচবো না।
> কিছুই হবে না আমার, তুমি কিছুক্ষন পরে আমাকে ফোন দাও।
.
.
রিহান ফোন কেটে দিয়ে, প্রাচীরের উপর উঠে।
কারন এখন তাকে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে হলে এভাবেই বাড়ির ভিতর ঢুকতে হবে।
এটা সে প্রতিদিনি করে ।
প্রতিদিনই সে বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে।
যখন সে বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে,তখন নিজেকে সে চোর মনে করে।
কারন চোর প্রথমে এভাবেই বাড়িতে ঢুকে।তারপরেই চোর চুরি করে।
.
.
রিহান বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতেই আবারো অর্পিতা রিহানকে ফোন করে।
.
-বাড়ির ভেতরে গিয়েছো(অর্পিতা)
> হ্যাঁ।
-কোন সমস্যা হয়নিতো।
> না।
-এবার ফ্রেস হয়ে খেয়ে নাও।
> এখন খেতে ইচ্ছে করছে না।
-খেতে ইচ্ছে না করলেও তোমাকে খেতে হবে।
> জোর করছো।
-না।
>তাহলে খেতে বলছো কেনো?
-তুমি তো জানই,তুমি না খেলে আমিও খাই না।
> এমন করো কেনো।?
- তোমাকে ভালোবাসি বলে।
> ভালোবাসো বলে এমন করবে?
- কথা বাদ দিয়ে ভালো ছেলের মতন খেয়ে নাও,তাহলেই আমি খাবো।
.
রিহান ফোন কেটে দিয়ে ফ্রেস হয়ে খাবার খেতে বসে।
কারন প্রতিদিন টেবিলে তার জন্য খাবার ঢাকা থাকে ।
রিহান ফ্রেস হয়ে এসে খাবার টেবিলে বসে খাবার খেয়ে নেই।
রিহান একবার ভাবে খাবে না,কিন্তু সে না খেলে তো অর্পিতাও খাবে না।
সেইকথা চিন্তা করে রিহানও খাবার খেয়ে নেই।
.
খাবার খেয়ে রিহান অর্পিতাকে ফোন করে,
.
-হ্যাঁ বলো (অর্পিতা)
> আমি খাবার খেয়েছি,তুমি এবার খেয়ে নাও।
- সত্যি বলছো।
> হ্যাঁ সত্যি বলছি।
-আচ্ছা আমি খেয়ে তোমাকে ফোন করছি।
> ঠিক আছে রাখলাম তাহলে।
.
.
ওপাশে অর্পিতা ফোন কেটে দিয়ে খেতে শুরু করে,কারন অনেক আগেই তার মা তাকে খেতে বলেছে,কিন্তু অর্পিতা খাবার না খেয়ে খাবার নিজের রুমে এনে ঢেকে রেখেছে।
যদি রিহান খাবার খাই তাহলে সেও খাবার খাবে।
সেইজন্য রিহানের খাবার খাওয়ার কথা শুনে অর্পিতাও খেতে শুরু করে।
.
এপাশে,
.
রিহান ফোন হাতে নিয়ে অপেক্ষা করে কখন অর্পিতা তাকে ফোন দিবে।
রিহান জানে অর্পিতা তাকে অনেক ভালোবাসে।
সেইজন্যই তো সে এতো কেয়ার করে তার।
রিহান জানেনা তাদের সম্পর্কটা কতদিন বেঁচে থাকবে,তবে রিহান, নিজের জীবন থাকা পর্যন্ত অর্পিতাকে ভালো বেসে যাবে।
.
আবারো রিহানের ফোন বেজে উঠে,
.
-খেয়েছো তুমি(রিহান)
> হুম খেলাম এখন। (অর্পিতা)
- আমার জন্য তুমি না খেয়ে থাকো কেনো।
> বলতে পারবো না।
- এখন থেকে আর এমন করবে না।
> কেনো?
- এগুলো আমার পছন্দ না।
> তাহলে তোমাকে কোনদিনও আদর করবো না।
-অর্পিতা মজা করা বাদ দাও,আমার জন্য না খেয়ে থাকতে তোমার কষ্ট হয় অনেক।
তোমার এমন করা ঠিক না। নিজেকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ।
> মোটেও না,আমার কোন কষ্টই হয়না ।
এটা হলো আমার ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা।
তোমাকে ঘিরেই আমার বেঁচে থাকা।
তোমার জন্য যদি এই সামান্য কষ্ট শহ্য করতে না পারি,তাহলে আরো কঠিন কষ্ট কেমন করে শহ্য করবো।
তোমাকে ভালোবাসি বলেই আজো আমি বেঁচে আছি, নইতো অাগেই চলে যেতাম।
- আর এমন কথা বলবে না কোনদিন।
তুমি না থাকলে আমাকে কে দেখবে,এই পাগলটার সব দায়িত্ব কে নেবে,কে এই পাগলটাকে গুছিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
> তাহলে বলো আর কোনদিন আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাবে না,যা বলবো তাই করবে।
-হ্যাঁ করবো।
.
তাহলে আমাদের সম্পর্কের নাম দিলাম পাগল আর পাগলীর সম্পর্ক।
কথাটি বলেই অর্পিতা হাঁসতে শুরু করে।
.
অর্পিতার এমন কথা শুনে রিহানের মুখে কথা বন্ধ হয়ে যায়।
রিহানকে সে পাগল,ও নিজেকে পাগলী বানিয়ে দিলো।
রিহান বোবার মতন অর্পিতার সেই সুন্দর হাঁসির শব্দ উপভোগ করতে পারে।
পাগলীটা আসলেই সুন্দর করে হাঁসে।
রিহান ভাবে পাগলীটা এতো সুন্দর করে কিভাবে হাঁসে।
একদিন তাকে বলতে হবে তুমি এমন করে কিভাবে হাসো,আমাকে শিখিয়ে দিবে।
.
অর্পিতা হাঁসি বন্ধ করে বলে কিছু বলো,
.
রিহান বলে অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো,শুভরাত্রি।
.
ওপাশে থেকে শুধু এটুকু শোনা যায়, শুভরাত্রি,আর চুমুর শব্দ।
.
রিহান ফোন কেটে দিয়ে ভাবে,আসলেই সে অনেক ভাগ্যবান নাহলে এমন মেয়ে তার কপালে জুটতো না।
সৃষ্টিকর্তাকে সে অনেক ধন্যবাদ দেয় এমন একটি মেয়ে তার জীবনে পাঠানোর জন্য।
.
.
লিখা :- রাফি ( পড়া চোর)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ