লোকটাকে সাংঘাতিক রকম ঘাবড়ে দেয়া
গেছে ভেবে যেই মূহুর্তে আমি নিজেই হেসে
উঠলাম তখনই পাশ থেকে তিথি বললো,
- এইটা কি হলো?
আসলে হয়েছে কি, আজ সকাল থেকে আমার
ফোনে একটা রঙ নাম্বার থেকে বারবার
ফোন আসতেছে। সাধারণত আমি অপরিচিত
নাম্বার ধরি না।পরিচিত নাম্বার যে ধরি
তাও অবশ্য বলা যায় না। তবে ২১ খানা কল
করার পর বাধ্য হয়ে কলটা ধরতেই পুরো
কাহিনী শুরু হয়ে গেলো।
- মায়া,, বাবু আমি কখন থেকে ওয়েট করছি
এখনো আসতেছো না কেনো? (সে)
- আসলে হয়েছে কি, মায়া আপনার কাছে আর
কখনোই যাবে না। কারণ মায়া এই মূহুর্তে
আমার কাছে আছে। আমরা নতুন রিলেশনে
জড়িয়ে পড়ছি। নিজে বলতে পারে নি
আপনাকে তাই আমাকে বলতে বললো। আচ্ছা
এখন রাখি।
- আরে শোনেন শোনেন।....
-টুট, টুট, টুট (ফোন কেটে বন্ধ করে দিলাম)
যে লোক নিজের "বাবু"র নাম্বারটা অবধি
মনে রাখে না এবং অন্য একজন কে টানা ২১
বার থুক্কু ২২ বার নিজের বাবু মনে করে কল
দেয় তারে এইটুক টেনশন দেয়াই যায়! কিন্তু
সমস্যা হলো তিথি এই সময় আমার সামনে
ছিলো মানে একসাথে দাঁড়িয়ে ফুসকা
খাচ্ছিলাম তখন।এবং আমার সবগুলো কথা
শুনে ও চোখ বড় বড় করে তাকানোর শেষে ওই
কথাটা বললো।
- এইটা কি হলো?
-অপু তানভীর নামে একজন লেখককে আমি
চিনি। তার একটা গল্পের লাইন ছিলো এমন
'অপদার্থ, মূর্খ মেয়ে মানুষ।এদের নিয়ে আর
পারা গেলো না।'
(যদিও এই লাইনটা ওনার গল্প মতে কোন এক
বইয়ে লেখা ছিলো, তাতে কি! একহাত
নেয়ার সুযোগ পাওয়া গেছে যখন তখন
পছন্দের কোন লেখকের বানীই নাহয় ধার
করলাম)
- মানে কি কাব্য? তুই আমাকে অপদার্থ,মূর্খ
মেয়ে মানুষ বললি?
- তোর যদি মেয়ে শব্দখানাতে আপত্তি
থাকে তাহলে পালটে দিতে পারি।এমনিতেও
তোরে খুব একটা মেয়ে মেয়ে মনে হয় নাহ!
তবে অপদার্থ এবং মূর্খ শব্দ দুটো পালটানো
অসম্ভব। অবশ্য সাথে বয়রা শব্দটাও যোগ করা
যেতে পারে।
- একে তো একটা লোককে এমন ভাবে ঘাবড়ে
দিলি আর এখন আমাকে একটার পর একটা
অপমান করে যাচ্ছিস পাইছিস কি তুই?
- নিজের চোখের সামনেই দেখলি একজন
অপরিচিত মানুষকে ঘাবড়ে দেয়া হলো তার
পরেও যদি জিজ্ঞাসা করিস এটা কি হলো
তাহলে কি তোকে শরৎ চন্দ্র হয়ে সাধু ভাষায়
বাংলা সিনেমার সাদাকালো ফ্লাশব্যাক
বলবো?
- এনাফ! তোর মত একটা মানুষের সাথে কোন
ভদ্র সভ্য মানুষ থাকতে পারবে না। আমি
গেলাম।তুই থাক!
- ফুসকার বিলটা দিয়ে যাস (আয়েশ করে
একটা ফুসকা মুখে দিয়ে বললাম)
- ইইইইইইইইইইইইই
দারুন একটা দাঁতখিঁচুনি দিয়ে নিজেরে
বানরজাতির যথার্থ উত্তরসুরি হিসেবে
প্রমান করে ফুসকার বিল বাবদ ৪০ টাকা
দিয়ে চলে গেলো হনহন করে। গেছে তো
গেছে। টাকাটা যে দিয়ে গেছে এইটাই বড়
কথা। দুনিয়ার এত এত পুরুষের পকেট যে
বান্ধবী,প্রেমিকা,বউ এদের জন্যে গড়ের মাঠ
হয়ে যায় সেসব দূঃখের ইতিহাসের কিছুটা
যে শোধ সমগ্র পুরুষ জাতির পক্ষ থেকে নেয়া
গেলো তাই ভেবেই আমি স্বস্তি বোধ
করলাম।হোক ৪০ টাকা মাত্র, তাতে কি?
ব্যাংকে তো কোটি টাকার পরেও মাত্র
লেখে। তাই বলে কি কোটি টাকা মাত্র হয়ে
গেলো? মোটেই না। সে অনুযায়ী ৪০ টাকাও
মাত্র হতে পারে না।
এত সুন্দর একটা যুক্তি খাড়া করে নিজেই
অবাক হয়ে গেলাম! নির্ঘাত আমার বংশে
কেউ যুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছে!
নাহলে এমন যুক্তি আমার মত মাথামোটা
ফিচেল হিমুটাইপ মানুষের মাথায় আসতেই
পারে না!
যাক গে। এখন নিজের পরিচয় দিই। আমি
কাব্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ছি।
পিবিএস ডিপার্টমেন্ট। তিথিও একই
ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্রী।সেই সুত্রেই পরিচয়
এবং বন্ধুত্ব। যদিও আমার ঘোরতর সন্দেহ
আছে যেখানে আমাকে দেখলেই মেয়েরা
ভয়ে ১৫ হাত দূরত্ব রেখে চলে সেখানে এই
মেয়ে আমার সাথে বন্ধুত্ব করলো কিভাবে!
অবশ্য ১৫ হাত দূরত্ব রাখবেই না কেনো,
আমাকে ওরা পাগল হিসেবেই জানে কিনা।
যদিও এই ১৫ হাত দূরত্বের ধারণাটা একান্তই
আমার!
এখন বাড়ি যেতে ইচ্ছে করতেছে না। কি
করা যায় ভাবতে ভাবতে দারুন একটা
আইডিয়া মাথায় আসলো। এখন টিএসসিতে
যেয়ে ১ টাকা মাত্র মূল্যের চা খাওয়া যেতে
পারে! পকেটে এই মূহুর্তে ৪৭ টাকা আছে। ১
টাকার ২ কাপ চা খাওয়ার পরে থাকবে ৪৫
টাকা। এরপর লাইব্রেরীর সামনে যেয়ে ৪০
টাকা দিয়ে এক প্লেট খিচুড়ি খাবো। হাতে
থাকবে ৫ টাকা! ব্যাপারটা ভালো লাগলো
না। ৫ টাকা কেনো পকেটে থাকবে? গতদিন
ফেসবুকে পড়লাম হিমুদের নাকি পকেটে
টাকা থাকা চলবে না। আমার আবার ইদানীং
হিমু হবার বেগ চাপছে! অবশ্য এমন বেগ আমার
মাঝে মধ্যেই চাপে। এই তো সেবার সুমন্ত
আসলামের দন্তন্য রুহমান পড়ে সেই লেভেলের
অনুপ্রানিত হয়ে ১ সপ্তাহের জন্যে নিরুদ্দেশ
হয়ে গেলাম।
এইসব ছাইপাশ যখন ভাবছি, তখন দেখি তিথি
আবার সামনে এসে দাড়াইছে! ব্যাপারটা
ভালো ঠেকলো না। একটু পরেই আমার খিচুড়ি
খাবার প্লান আছে। এবং মাসের শেষ বিধায়
পকেটে যথেষ্ট পরিমান টাকা নেই দুজনে
খাওয়ার মত। অবশ্য এক হতে পারে খিচুড়ি
খেয়ে ওরে দিয়ে বিল দেয়ানো যায়। তাও
অবশ্য আজ হবে না। একটু আগে ফুসকার বিল
দিচ্ছিলো যখন তখন দেখলাম ওর পার্সে ১০০০
টাকার নোট দুটো। আর যে ৪০ টাকা খুচরো
ছিলো তা ফুসকাওয়ালা চাচারে দিছে।এখন
৮০ টাকার খিচুড়ি খেয়ে ১০০০ টাকার নোট
দিলে যে গণপিটুনি খাবার একটা চান্স আছে
এইটাও উড়িয়ে দিলে তো হবে না। এত কিছু
ভাবার মাঝে আবার ও আমার পাশে বসে
পড়েছে। চুপ থাকা দেখে জিজ্ঞাসা করলাম,
- আবার ফিরে আসলি ক্যান?
- কেনো, টিএসসি কি তো বাবার সম্পত্তি?
- না তা হবে কেনো! তবে ঘুরে ফিরে আমার
পাশেই বসলি কিনা।
- তুই কি জানিস তুই একটা মহা ফিচেল টাইপ
ছেলে?
- এইটা আবার না জানার কি আছে? গত ১২
দিন সহ আগামী ১৮ দিন আমি ফিচেল থাকবো
বলেই ঠিক করেছি। এর পর অবশ্য শুভ্রটাইপ
হবার একটা সম্ভাবনা আছে। তবে সমস্যা
হলো শুভ্রর মত অত দেখতে ভালো না কিনা!
তাই নামখানা কালামানিক শুভ্র রাখবো
ভাবতেছি!
- আচ্ছা তুই কি ভাব নিচ্ছিস?
- মনে হয় না!
- তুই যে দেখতে এত্ত হ্যান্ডসাম এইটা
ডিপার্টমেন্ট এর সব মেয়েরা জানে।
- হঠাৎ পাম মারতেছিস কেনো (আড়চোখে
তাকিয়ে একপাশে সরে গিয়ে বললাম)
- কাব্য, তুই এমন কেনো? তুই কি সিরিয়াস হবি
না কখনো?
- সিরিয়াস হবার অনেক গুলো প্রবলেম আছে।
- মানে?
- পয়েন্ট করে করে বলি?
- হু বল।
- যেহেতু আমি একটা বেকার ছেলে এবং
মাসের বেশীরভাগ সময়টাই আমার কাছে
কানাকড়িও থাকে না এবং পড়াশোনার
পাশাপাশি আমাকে ১ টা প্রাইভেট পড়িয়ে
নিজের খরচ চালাতে হয় সেহেতু,
এক. যেহেতু আমি সিরিয়াস না, সেহেতু কেউ
আমি বেকার বলে মজা নিলে ক্ষেপে যাই
না।বরং উলটো মজা নিই।
দুই. কোনদিন তুই,কোনদিন নীল,কোনদিন
সায়রা এভাবে প্রায়দিনই একবেলা খাবার
তোদের খরচেই হয়ে যায়।সিরিয়াস হলে
এভাবে খাইতে পারতাম?
তিন. সিরিয়াস হলে রাজ্যের যত ডিপ্রেশন
মাথায় এসে ভর করতো। আমার কেনো
ডিএসএলআর নাই, কেনো হ্যান নাই, কেনো
ত্যান নাই, কেনো গার্লফ্রেন্ড নাই হানিফ
সংকেত, হানিফ সংকেত।
বাকিগুলা পরে মনে পড়লে বলবোনে।
- আচ্ছা কাব্য, আমি যদি তোর হাতটা ধরি
তাহলে আমাকে ধরতে দিবি?
- কেনো দেবো না? এই তো ধর।
- আমি এই ধরার কথা বলছি না।
- তাইলে কি?
- বিশ্বাস কর তোর চোখের দিকে তাকালে
কেউ চোখ ফেরাতে পারবে না, কেউ তোর
সাথে মিথ্যা বলতে পারবে না।
- এইটা বিশ্বাস করার কি আছে? এইটা তো
আমি জানি।
- আর তোর গলার গান শুনলে যেকারো মন
ভালো হয়ে যাবে।
- এইটা ঠিক শিওর না আমি।
- আমাকে বলতে দে। কথার মধ্যে কথা বলিস
না। তোর কথা নিয়ে খেলা যে কাউকে
দ্বিধায় ফেলে দেয়। আবার তুইই মাঝে মধ্যে
এত পাগলামী করিস। যেমন ধর মাঝে মধ্যে
নিজে ডেকে বন্ধুদের ট্রিট দিস, আবার
মাঝে মধ্যে এমন ভাব করিস যেনো তোর মত
ফকির দুনিয়ায় দুইটা নাই। ডিপার্টমেন্ট এ
সবসময় তুই ফার্স্ট। আমরা লড়ি সেকেন্ড
প্লেসের জন্য। অথচ তুই এমন একটা ভাব নিস
যেনো ফার্স্ট হওয়াটা রীতিমত অন্যায় এবং
তুই এই ডিপার্টমেন্ট এর লাস্ট বয়! সব মিলিয়ে
তোকে বর্ণণা করা কঠিন একটা ব্যাপার। তুই
একটা জটিল চরিত্র। মন চায় তোকে
ভালোবাসতে কিন্তু মস্তিষ্ক বলে এই বহুরুপী
ছেলের সাথে...............
(সকাল ৮:০০ টা)
- এই কাব্য ওঠ। ওঠ ওঠ। ওঠ বাবা। এরপর তোর
ক্লাসের দেরী হয়ে যাবে।
- উফ মা, দিলে তো ঘুমটা ভাঙিয়ে?
- এমন ভাবে বলতেছিস যেনো মহা অন্যায়
করে ফেলেছি!?
- করেছোই তো! কি সুন্দর একটা একের ভিতর
সব চরিত্রের মিশ্রনে একটা স্বপ্ন
দেখতেছিলাম। জীবনে প্রথম প্রোপজালটা
পেতে যাচ্ছিলাম এমন সময় তুমি ঘুমটা
ভাঙালে! ধুরর!
- প্রোপজাল মানে?
- আরে স্বপ্নে তিথি নামের একটা মেয়ে
আমাকে প্রোপজ করতে যাচ্ছিলো কেবল!
- তুই স্বপ্নে প্রোপজ পাচ্ছিলি বলে এমন
করছিস?
- হোক স্বপ্নে মা। তবুও প্রথম প্রপোজ তো!
- এখন আবোল তাবোল না বকে নাস্তা করে
ভার্সিটি যা। আজ তোর প্রথম ক্লাস তা মনে
আছে?
- এই রে! একদম ভুলে মেরে দিছি! থ্যাংক ইউ
এন্ড লাভ ইউ মা!!!!
(সকাল ১০:৩০ টা )
অরিয়েন্টেশন এ সমাপনী বক্তৃতা শেষে
ডিপার্টমেন্ট এর চেয়ারম্যান স্যার
ছাত্রপছাত্রীদের এক এক করে নিজের
পরিচয় দিতে বললেন। সবার বলা শেষ। মাত্র
১ টা মেয়ে বাকি। কাব্যর ঠিক পিছন দিকে
৩ সারি পিছন থেকে উঠে এসে মেয়েটা
সবার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করলো,
- আমি তিথি......................................
লেখক - Sajeeb Chakroborty
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŽāĻ্āĻāϞāĻŦাāϰ, ⧍ā§Ģ āĻāĻĒ্āϰিāϞ, ⧍ā§Ļā§§ā§
470
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§§ā§Ļ:ā§Ģā§Ē AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ